গল্প: ভুলের মাশুল
পর্ব: ৬
লেখক: হানিফ আহমেদ
অর্ণব: তোকে নিয়ে পতিতালয়ে যাবো?
অর্ণির মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরলো, কি বলছে অর্ণব এসব।
অর্ণি: কি বললে?
অর্ণব: হুম তোকে পতিতালয়ে নিয়ে যাবো, আরো চার পাঁচটা পুরুষের সাথে তুই একি বিছানায় শুইবি, দেখতে চাই আমি, ওরা তোকে আমার চেয়ে বেশি সুখ দিতে পারে কি। আর আমিও আমার পুরুষত্ব এর প্রমাণ দিতে আরো ৪&৫টা নারীর সাথে শুইবো। তুই দেখবি আমার,,,
(অর্ণব আর কিছুই বলতে পারে নি, তার আগেই ঠাস করে দুটু শব্দ হলো, হুম অর্ণবের গালে দুটু থাপ্পড় মেরেছে অর্ণি)
অর্ণি: লজ্জা করলো না তোমার এমন কথা বলতে? কিভাবে পারলে এমন কথা বলতে? আম তোমার বিয়ে করা বউ হই, পবিত্র কালেমা পড়ে আমরা এই পবিত্র স্বামীস্ত্রী এর মধুর বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। তুমি এই কথাগুলো বলার আগেও একবার ভাবলে না কি বলছো তুমি?
আমি মানছি আমি ভুল করেছি, অনেক বড় ভুল, যার শাস্তি তুমি আমার শরীরের প্রতিটা অংশে দিয়েছো। সব সহ্য করেছি, শুধু আমার ভুল আমি বুঝতে পেরেছি, আর তোমায় ভালোবাসি বলে। আমার সাথে যা করো সব আমি সহ্য করতে পারি! কিন্তু এই পবিত্র সম্পর্কে এমন অপয়া কথা বললে তোমার সাথে আমি কি করবো নিজেই জানি না।
অর্ণব কিছু না বলে চুপ করে বসে আছে,
অর্ণি আবার বললো”
অর্ণি: অর্ণব সত্যি আমি তোমায় অনেক ভালোবাসি, না জেনেই ভুলটা করে ফেলছি, আমি ফোনটা কিনে নেই তারপরেই ভিডিও ডিলিট করে দেবো। আর কখনো এমন ভুল করবো না। শুধু তোমার একটু ভালোবাসা দাও আমায়?
অর্ণব অর্ণির কথায় শুধু শুকনো একটা হাসি দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
অর্ণি অর্ণব এর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
অর্ণি জানে না হয়তো অর্ণব এর মনে কি চলতেছে।
অর্ণব অর্ণির পাশ থেকে চলে বরাবর ছাঁদে চলে যায়।
আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে অর্ণব।
আকাশটাও আজ মেঘলা, মেঘের আড়াল থেকে চাঁদটা মাঝেমধ্যে উঁকি দিচ্ছে, চাঁদের কি এতো কষ্ট যে এভাবে উঁকি দিচ্ছে, নাকি সেও আমার মতো কষ্টে আছে দিবারাত্র?
কেন তুমি চলে গেলে আমাদের ছেড়ে, যাবার আগে একবারো ভাবলে না এই অপদার্থ ছেলেটার মনের কথা, তুমি কি আমার চোখের ভাষা কখনো বুঝো নি? কেন ১বছর ধরে তিলেতিলে শেষ করে দিলে আমাদের, আর কি কখনো আমাদের সামনে আসবে না তুমি? সন্ধের তারার মতো তুমি হঠাৎ ডুবে গেলে কেন? সব প্রশ্ন যে তোমায় করার ইচ্ছে করছে? জানতে চাচ্ছে তুমি কি সুখে আছো?
পিছন থেকে অর্ণব এর কাদে কেও হাত রাখাতে অর্ণব ভাবনার চিন্তা থেকে বের হয়ে এসে পিছনে থাকালো।
অর্ণব এর পিছনে অর্ণি ধারিয়ে আছে।
অর্ণি: এই তুমি কান্না করছো কেন? আমার কথায় কষ্ট পেয়েছো?
অর্ণব: এখানে কেন এসেছো আমায় একটু একা থাকতে দাও, যাও এখান থেকে।
দুজনের মধ্যে গভীর নীরবতা, হঠাৎ হালকা বৃষ্টি আসলো, এই হালকার মধ্যে যেন ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো,
অর্ণি: চলো বৃষ্টিতে ভিজলে অসুস্থ হবে।
অর্ণব কথা বলছে না
হাত দুটু পাখির পাখার মতো করে বৃষ্টি উপভোগ করছে, অর্ণি ওরে কি বলছে তার কানে কিছুই পৌছাচ্ছে না।
অর্ণি অর্ণবের হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে আসলো।এরি মধ্যে দুজনি কাকভেজা হয়ে গেছে।
অর্ণি অর্ণব এর হাত ছাড়তেই অর্ণব অর্ণিকে টাটিয়ে চর মারে।
অর্ণব: তোমাকে শাস্তি দিতে বিয়ে করেছি। অধিকার দেখাতে এসো না, আর কখনো আমার কোনো কাজে বাধা দিবে তো, তাহলে আমি তোমাকে কি করবো আমি নিজেই জানি না।
অর্ণব ওয়াশরুমে চলে যায় একবারে গোসল করে এসে ঘুমিয়ে যায়
রাত ৪ টা হতে আর মাত্র কয়েক মিনিট আছে, অর্ণির চোখে ঘুম নাই, সে ব্যথায় এপাশ ওপাশ করছে, অর্ণব অর্ণিকে এমন ভাবে ব্যবহার করছে যে এভাবে কোনো পাগল ও করে না।
অর্ণি চোখ দুটু মুঝে নেয়, একটু শান্তি দরকার ওর সকালে মিরার কাছ থেকে ব্যথার ওষুধ খেয়ে নেবে।]
বর্তমানে,
~ তুই অর্ণিকে ওর ভুলের চেয়েও বেশি শাস্তি দিয়ে ফেলছিস? ও তো ওর ভুল বুঝতে পারছে।
~ হাহা, সবাই আমাকে দেখলে বলে হি**, আমার সব সম্মান ও নষ্ট করে দিছে , আর তুই বলছিস ও ওর ভুল বুঝতে পারছে। এখনো ওর আইডিতে ভিডিওটা আছে না জানি আরো কতো জায়গায় ভিডিওটা ছড়িয়ে রয়েছে।
~মৌ ত ওর ফোন ভেঙে দিছে তাই ভিডিও ডিলিট করতে পারে নি, কিন্তু তুই তো কম শাস্তি দিলিনা ওরে। হুম আরো একটা কথা?
~ কি?
~তোরা তো একে ওপরকে বিয়ে করেছিস, বৈধ ভাবেই একে ওপরকে ইউজ করেছিস তাইলে তুই এটাকে ধর্ষণ বললি কেন?
(অর্ণব অট্টহাসিতে মেতে উঠে)
~ হাসছিস কেন?
~অর্ণিকে নিয়ে যখন বাসায় আসি ,মৌ আর মিরাও আমাদের বাসায় আসে অর্ণির সাথে, আম্মু আর নিধী ওরে দেখে খুব খুশি বাট আব্বু খুশি হননি। বাসায় আসার পর আম্মু নিধী সবাই অর্ণিকে নিয়ে ব্যস্ত , নিচে আমি আর আব্বু বসে কথা বলছিলাম । তখনি হঠাৎ কলিংব্যল বেজে উঠে।
~ তারপর?
~ আব্বু দরজা খুলে দেখে পুলিশ এসেছে। তাও আমাকে খুঁজে।
~কেন?
~কথার মাঝখানে প্রশ্ন করিস না তো?
~হুম।
~ আমি নাকি অর্ণিকে ধর্ষণ করেছি সারারাত, পুলিশের কাছে নাকি মামলা হয়েছে আমার নামে অর্ণিকে ধর্ষণ করার জন্য।
~ কে করেছে মামলা, অর্ণির বাবা মা নাকি?
~ না রাফি করেছে, আব্বু আর অফিসার এর মধ্যে তর্ক লেগে যায়। ওদের চিল্লানি শুনে অর্ণি আম্মু সবাই চলে আসে।
~তারপর কি হলো কথার মাঝখানে এভাবে থামছিস কেন,
অর্ণব আবার বলতে লাগলো
{বাসায় পুলিশ কেনরে অর্ণব? (কথাটা অর্ণবের মা জাহানারা বেগম বললেন)
অর্ণব: আম্মু আমি নাকি তোমার বউ মাকে ধর্ষণ করেছি? তাই পুলিশ আসছে!
অর্ণি: কি তুমি আমায় ধর্ষণ করেছো, অফিসার কে বলেছে আপনাকে এসব?
অফিসার: আপনার বাবা।
অর্ণি: কি আব্বু বলেছে, এক মিনিট, অর্ণব তোমার ফোনটা দাও তো?
অর্ণব: এই নাও।(ফোনটা এগিয়ে দিয়ে বললো)
অর্ণবের ফোনে কোনো লক নেই তাই সহজেই অর্ণি ফোন দিয়ে তার বাবার কাছে ফোন দিলো
রিং হওয়ার পর ওপাশ থেকে ফোন রিসিভ করা হলো।
অর্ণি: হ্যালো! আব্বু
ওপাশ থেকে
সাহিল: আমি তোর ভাইয়া বলছি। আব্বু গোসলে, বল আমার কাছে কি বলবি? আর এতো রেগে আছিস কেন?
অর্ণি: ভাইয়া অর্ণব নাকি আমায় ধর্ষণ করেছে, আব্বু নাকি থানায় অর্ণব এর নামে ধর্ষণের মামলা করেছে?
সাহিল: কি বলছিস এসব আব্বু তো বাসা থেকেই বের হননি।
অর্ণি: তাহলে, কে করেছে?
সাহিল: বুঝেছি, রাফি করেছে এসব।
অর্ণি: কিহ
সাহিল: হুম, তুই কাল ফোন রাখার পর রাফি এসেছিলো( সাহিল অর্ণিকে সব বললো)
অর্ণি রেগে গিয়ে
অর্ণি: ওরে তো আমি দেখে নেবো। তুমি ফোন রাখো?
সাহিল: হুম
অর্ণি ফোন রেখে দেয়
আর
অর্ণি: অফিসার মামলাটা কে করেছে?
পাশের থানার ওছি রাফি আহমেদ করেছে।
অর্ণি: আপনি রাফিকে গিয়ে বলবেন যে আমায় ধর্ষণ করা হয় নি। আমরা কালকেই বিয়ে করেছি।
অফিসার: কিন্তু মামলাটাতো হয়ে গেছে?
অর্ণি: আমি নিজেই সাক্ষী দিচ্ছি তারপর আবার কিসের মামলা।
তারপর পুলিশরা চলে যায়}
~ তাই তুই বলছিস তুই অর্ণিকে ধর্ষণ করেছিস?
~হুম, খবরের কাগজেও অর্ণি কে ধর্ষণ করেছি এই খবর বের হয়েছে। এটাও নাকি রাফি করেছে টাকা দিয়ে।
~ আচ্ছা রাফিটা অর্ণির চাচাতো ভাই তাই তো?
~ হুম
~ দেখ ওই রাফির আমি কি অবস্থা করি।
এই বলে আমি আমারর ফোনটা বের করে মৌ কে ফোন দিলাম
~ হ্যালো! কেমন আছিস রে?
~ কই ছিলি এই কয় দিন, কুত্তা এতো কিছু হয়ে গেলো, জানিস সব একা সামলিয়েছি আমি,ওই কুত্তা চারটাও কোনো কাজের না।
~হু, অর্ণব সব বলেছে আমায়। অর্ণব আর আমি এক সাথেই বসে আছি।
~ আমায় তোরা ফোন দিলি না আমিও আসতাম।
~ মনে নাই । আচ্ছা একটা কথা বলতো।
~ কি?
~ তই থানায় রাফিকে বলছিলি যে তোমার চাকরি আর ঠিকলো না মিস্টার রাফি। এই কথাটা কিসের উপর ভিত্তি করে বলছিলি
~ আমি ওইসব আমার ফোন দিয়ে ভিডিও করছিলাম, ওই রাফি বেশি বেড়েছে , ওরে কিছু কর তুই
~ ওর চাকরি সত্যিই এবার গেলো, ৬ মাসের মতো জেলে থাকার ব্যবস্থা করবো ওর।
~কি করবি
~আমি না, আব্বু আর দুলাভাই সব করবে। তুই ভিডিওটা মেসেঞ্জারে দে।
~হুম দিচ্ছি ফোন রাখ তুই?
~ হুম, আই লাভ ইউ মৌ!
~ লুচ্চামি শুরু করে দিলি? বায় বায়।
অর্ণব আমাকে বললো
~ যা তুই রাফির ব্যবস্থা আজ রাতের ভিতর কর। আর হ্যা কাল সকালে অর্ণির মা বাবারা আসবে, তুই সকাল সকাল চলে আসবি?
~হুম।
এখন বাসায় যা?
অর্ণব চলে যায়
হানিফ তার আব্বুকে আর দুলাভাইকে ওই ভিডিওটা দিয়ে দেয়,ওর চাকরি যেন না থাকে ৬ মাসের জেল ও চায় ওর জন্য।
সকালে
অর্ণব এর বাসায় অনেক মেহমান, কিন্তু অর্ণব এর ফ্রেন্ডরা কেওই আসেনি এখন, ১০ টা বেজে গেছে কিন্তু ওরা এখনো আসে নি।
এই দিকে অর্ণির ফ্যামিলির সবার আসার টাইম হয়ে যাচ্ছে।
চলবে,,,,,
(গল্পের ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন? এই গল্প লেখার দুনিয়াতে আমি নতুন এক হাত। তাই অনেক ভুল হতে পারে লেখায়, ভুল গুলো ধরিয়ে দিলে অনেক উপকৃত হবো। আর সবার উৎসাহ পেলে ইনশাআল্লাহ ভালো ভালো গল্প উপহার দিতে পারবো আপনাদের। আশা করি সবাই গল্পের পাশেই থাকবেন।)
ভালো থাকবেন
ঘরেই থাকবেন