#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ২৭
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমরা পাঁচজন রানী আফরিয়েল এর সাথে এ্যারসাকে যাচ্ছি। অবশ্য আমি যাচ্ছি না আমাকে রানী নিজেই জরিয়ে ধরে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ব্যাপরাটা অনেক লজ্জাজনক যে এক সময় আমি ডেভিল কিং ছিলাম কিন্তু এখন উড়তে পারি না। অবশ্য ডেভিল কিং আমি আগের জন্মে ছিলাম, যেটার রিয়েলিটি এটা থেকে সম্পূর্ন ভিন্ন। আর আমাকে সেটা ভিন্নই রাখতে হবে। আপাতোতো আমার কাছে ইগড্রাসিল এবং ভ্যালিরা রয়েছে। অবশ্য তাদের শক্তির তলোয়ার রয়েছে আমার কাছে। ইগড্রাসিলও বোধ হয় আগের রিয়েলিটি সম্পর্কে কিছুই জানে না। তাই তার সাথে সেটা নিয়ে কথা বলে লাভ হবে না। আপাতোতো আমি এই দুনিয়াতে কি করবো সেটা বুঝতে পারছি না। সাধারন ভাবে বলতে গেলে এতোদিন আমি জ্যাক ছিলাম এবং এখন জ্যাকসন ব্রিট, যার মাঝে আগের এবং এই দুই রিয়েলিটির স্মৃতি আছে, যদিও এই রিয়েলিটির অনেক স্মৃতি আমার কাছে নেই, তারপরও আমি অনেক কিছু জানি। এতোদিন আমি যেটা ভেবেছি সেটার এখন আমার কাছে কোনো দাম নেই বললেই চলে, যেমন রয়েল গার্ড হওয়া, রাজাকে হত্যা করা। সবার থাকার মতো একটা সুন্দর রাজ্য বানানো, এসবের কোনো কিছুতেই আর আমার ইচ্ছা নাই। আপাতোতো আমাকে নতুন কোনো কিছু করতে হবে। নতুন কোনো কিছু খুজতে হবে করার জন্য। এ্যারসাকে যাওয়াটা খারাপ হচ্ছে না। নতুন কিছুর উদ্দেশ্য পাবো হয়তো। আপাতোতো আমি আমার সাথে হ্যারি, লুসি, লুসানা এবং এনাকে দেখতে পেয়ে অনেক খুশি হলাম। আফরিয়েলও এখানে আছে। জেসির সাথেও সেদিন দেখা হয়েছিলো। সেদিন আমার স্মৃতি ফিরে আসলে ওর সাথে কথা বলতাম। ওর কথা শুনে আমি বুঝতে পারছি এখন ও আগের দুনিয়ার সম্পর্কে সব কিছুই জানে। শুধু আমরা দুজনই না হয়তো অনেকেই আগের দুনিয়া সম্পর্কে জানে। আমাকে সেটারও ব্যালেন্স রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। কারন আমার মধ্যে আগে যে ডেভিল ক্ষমতা ছিলো, তার মধ্যে একটা ছিলো রিয়েলিটি কন্ট্রোল করা। অবশ্য তখন একটা রাজ্যের রিয়েলিটি বদলানোর ক্ষমতা ছিলো আমার কাছে, তবে সেটাই সমস্যা হতো, যদি বেশীর ভাগ লোকজন আগের রিয়েলিটি সম্পর্কে জানতে পারতো। অর্ধেকের মতো লোকজন যদি আগের রিয়েলিটি সম্পর্কে জানতে পারতো তাহলে তখন সেই নতুন রিয়েলিটি ভেঙে যাবে। আর এই নতুন দুনিয়াতে যে রিয়েলিটি স্পেল কাজ করছে আমার ধারনা ঔটার মতোই কাজ করে। তারজন্য বেশীরভাগ লোকজন আগের জীবন সম্পর্কে না জানলেই ভালো। কারন এটা সম্পূর্ন নতুন একটা দুনিয়া। যদি এটার রিয়েলিটি ভেঙে যায় তাহলে এই দুনিয়া পুরো ক্রাইসিসে পরে যাবে। সব জায়গায় তখন যুদ্ধ এবং যুদ্ধ হবে। এবং আবারো এই একটা দুনিয়া আলাদা হয়ে এগারোটা কিংবা আরো বেশী দুনিয়ায় পরিবর্তন হতে পারে। জেসির স্বপ্নটা আমি বুঝতে পারছি। ওর কাজের প্রতি আমি রাগ করছি না। কারন এটা পুরো স্বপ্নের দুনিয়া যেটা ও তৈরী করেছে। এভাবে সকল গোত্রের প্রানীদের একসাথে বাস করা হয়তো আগের রিয়েলিটিতে কখনো সম্ভব হচ্ছে না। আমি জানি না তবে, অনেক ভালো লাগছে আগের টা থেকে। এখানে এক দুনিয়া থেকে অন্য দুনিয়া ট্রাভেল করতে হবে না আমাদের অন্য গোত্রের সাথে দেখা করতে। বরং সবাই একসাথেই থাকে এখানে। তবে এই দুনিয়াও আলাদা হচ্ছে সেটা আমি বুঝতে পারছি। এ্যারসাক এবং আরসাক দুটো আস্তে আস্তে আলাদা হয়ে যাচ্ছে। আর এটা একজন এন্জেলের মাধ্যমেই হয়েছে। লড়াই বন্ধ করার জন্য হয়তো এই একটা রাস্তাই মাইকেলের কাছে ছিলো। অবশ্য মাইকেল বেচারা বেঁচে গেছে। তার থেকে অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া আমার বাকি ছিলো। কিন্তু বেঁচে থাকলেও হয়তো সেটা পেতাম না। কারন তখন আগের সব ভুলে যেতো।
।।।
।।।
যাইহোক কিছুটা উপরে উঠার পর রানী আফরিয়েল একটা স্পেল পড়লো। আর সাথে সাথে আকাশে একটা সাদা দরজা দেখা দিলো। রানীর স্পর্শ পাওয়ার সাথে সাথে দরজাটা খুলে গেলো। এবং আমরা চলে পা রাখলাম এ্যারসাকে। অবশ্য এ্যারসাক বলা যাবে না এটাকে। আগের হ্যাভেন এটা। ঠিক হ্যাভেন যেরকম ছিলো সেরকমই এ্যারসাক। সাদা পাথর এবং কাঠ দিয়ে সকল বাসা তৈরী করা হয়েছে। অনেক বড় বড় এট্টোলিকা বানানো রয়েছে। এ্যারসাকের সকল এন্জেল উড়েই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া আসা করে। আর সেটাই দেখতে পাচ্ছি। ইগড্রোলিয়ার ক্যাপিটাল সিটির দশটার সমান হয়তো এই পুরো এ্যারসাক। হয়তো আমার গননা ভুলও হতে পারে। যাইহোক অনেকগুলো গার্ড আমাদের কাছে চলে আসলো। সবাই অবাক হয়ে গেছে, কারন রানী নিজে আমাকে জরিয়ে ধরে উড়িয়ে নিয়ে এসেছে। তাদের রাগ হচ্ছে সেটা তে বুঝতে পারছি। এটা হয়তো তাদের কাছে অসম্মানের ব্যাপার। আর এদিকে যে প্রিন্সেস এলিনা রাগে ঢোল হয়ে গেছে সেটাও বুঝতে পেরেছি আমি। এনার সাথে এখনো ভালো করে কথা বলি নি আমি। আমি এখনো সিওর না যে ওর আগের কিছু মনে আছে কিনা। কিন্তু কিছু কিছু সময় স্বপ্নে আমাকে দেখার কথা উল্লেখ করেছে ও। আর তাতে বোঝা যাচ্ছে ওর কাছে হয়তো আমার ছোটখাটো কিছু স্মৃতি থাকতে পারে। এখনো আমি সিওর না। বের করতে হবে আদৌও কি ও সব কিছু জানে, নাকি জানে না। সেটা জানার জন্য ওর সামনে একটু আগের মতো অভিনয় করতে হবে। আমরা প্যালেসের মধ্যে চলে গেলাম। ঠিক আগের দুনিয়ায় পৃথিবীর তাজ মহল যে ভাবে বানানো হয়েছে এ্যারসাকের প্যালেসটাও এরকম। তবে অনেক বড় সাইজে। তাজমহলের থেকে হয়তো তিনগুন সাইজের হবে প্যালেস।
।।।
।।।
আমার সত্ত্বাগুলো এখন আগের দুনিয়ার মতো কাজ করে না। কারন এই দুনিয়ার রিয়েলিটি ভিন্ন। এটা আমি লক্ষ করেছি, কারন আমার মাঝে আমার ভ্যাম্পায়ার সত্ত্বা থাকার পরও আমার দাঁত একটা আগের মতো বড় হচ্ছে না। তাছাড়া কালকে আমি ব্লাডও দেখেছি, তাতে আমার সেটা খেতেও মন চাই না। এর একটা মানেই বুঝতে পারছি আমি যে আমার মাঝে সত্ত্বাগুলো নেই আগের মতো। তাদের ক্ষমতা গুলো শুধু এসেছে আমার কাছে, যেহেতু আমি মানুষ তাই আমার ভ্যাম্পায়ার এর ক্ষমতা থাকার পরও আমার দাঁত একটা বড় হয় নি, কিংবা ভ্যাম্পায়ারদের মতো আমার স্বভাব হয় নি। আবার এন্জেলদের ক্ষমতাও আমার কাছে আছে, তবে আমার পিঠে ডানা হয় নি, কারন তাতে আমার স্বভাব অনেকটা এন্জেলদের মতো হয়ে যাবে। এই দুনিয়া আগের মতো চলে না। তাই কেউ মানুষ হয়ে এন্জেল হতে পারবে না। আবার এন্জেল হয়ে ডেভিল হতে পারবে না। এক গোত্রের কেউ অন্য গোত্রের ক্ষমতাও অর্জন করতে পারবে না। তবে আমার ক্ষেত্রে একটু ভিন্ন। আমি মানুষ হয়ে অন্য কোনো গোত্র হতে পারবো না ঠিকই। তবে অন্য গোত্রের ক্ষমতা আছে আমার কাছে। বিষয়টা সম্পূর্ন রূপে আমাকে জানতে হবে।
।।।।
।।।।
আমরা প্যালেসের মধ্যে ঢুকলাম। অন্য কথায় তাজমহল 2.0 তে ঢুকলাম। পুরো এ্যারসাকই অনেক পবিত্র। বাসা বাড়ি সব একটা থেকে অন্যটা কিছুটা দূরত্বে থাকায় এই রাজ্যটাকে অনেক সুন্দর লাগে। আর সব কিছুর রং শুধু সাদায়। অন্য রং ব্যবহার হলেও সেটা বাসার ভিতরে। বাইরে থেকে সব কিছুই সাদা রঙের ব্যবহার করা হয়। প্যালেসের ভিতরে সব রকম রঙেরই বিভিন্ন জিনিস দেখতে পাচ্ছি। আমাদের থাকার জন্য নির্দিষ্ট্য রুম দিয়ে দিলো। রুমে এসে বসলাম আমি। কাঠের ব্যাগ থেকে ভিরুদা এবং ভ্যালিকে বের করে বিছানার উপরে রাখলাম। আমি জানি না আফরিয়েল আমাকে এখানে কেনো এনেছে। আমার সেই স্পেশাল ক্ষমতা যেটাই অনেক হাত বের হয় পিঠ থেকে, সেটাকে গডহ্যান্ড বলছিলো রানী। হয়তো সেটার জন্য আমাকে নিয়ে এসেছে। হয়তো সে আমাকে ব্যবহার করতে চাচ্ছে। ডেভিল কিং এর কাছে খুব সহজেই সে হেরে যাচ্ছিলো। হয়তো সে আমাকে ডেভিল কিং এর বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে।
।।।
।।।
আমার আপাতোতো কোনো ইচ্ছাই নাই কিছু করার। ডেভিল কিং কে? সে কি চাই? হ্যানত্যান বিষয় অনেক বোরিং। ডেভিল কিংদের কাজ সে করবে। এন্জেলদের কাজ ডেভিল কিং দের বিরুদ্ধে কাজ করা। দুনিয়ার সবারই কিছু না কিছু কাজ আছে। কিন্তু এই নতুন দুনিয়াতে আমার কাজ কি সেটাই আমি বুঝতে পারছি না।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
অপেক্ষা করুন পরবর্তী পার্টের জন্য। ছোট হয়েছে সেজন্য দুঃখিত। মাথা ঘুরতেছে গরমে আজকে। কালকে বড় করে দেওয়ার চেষ্টা করবো।