মনের কিনারে তুই পর্ব : ০৯

0
3687

মনের কিনারে তুই
লেখিকা: Tarin Niti
পর্ব :০৯

রাফি হেসে বলে,”তুমি এইসব বিশ্বাস করো নাকি?”

“জানি না কিন্তু আমি চাই না আমার মাথায় শিং গজাক,,সো রিক্স নিতে চাই না”

“হাহাহাহা…ওকে ওকে”

এটা বলে রাফি ওর মাথাটা একটু এগিয়ে এনে ইশার মাথায় বারি খায়।

.
আরিয়ান ক্যান্টিন এ গিয়ে দেখে রাইমা একা বসে আছে।আরিয়ান রাইমাকে বলে,

“হেই কিউটি তোমার ফ্রেন্ড কই?”

রাইমা বুঝতে পারে আরিয়ান কার কথা বলছে তবু ও না জানার ভান করে বলে, “কোন ফ্রেন্ড? ”

“তোমার কয়টা ফ্রেন্ড?”

“আমার তো অনেক ফ্রেন্ড। আপনি কাকে খুঁজছেন?”

আরিয়ান একটু মাথা চুলকে এদিক ওদিক তাকিয়ে বল,
“ইয়ে মানে ইশা কই?’

রাইমা হেসে বলে,
“ও আপনি ইশাকে খুজছেন? ইশা তো ক্লাসে
ওর একটু লেখা বাকি আছে ওইটা শেষ করছে”

আরিয়ান হেসে বলে, “ধন্যবাদ’

তারপর আরিয়ান ইশার ক্লাসের দিকে যায়।

.
এইদিকে ইশা আর রাফি একসাথে হেসে উঠে।তারপর রাফি বলে,

“ইশা তোমাকে দেখে মনে হয়না তুমি এতটা চঞ্চল! সবসময় তোর ক্লাসে চুপচাপ থাকো ‘

ইশা বলে,
“আমি আসলে চট করে কারো সাথে মিশতে পারি না। কিন্তু যে আমার সাথে মিশে তার মাথা খারাপ করে দি কথা বলতে বলতে”

এই বলে ইশা ফিক করে হেসে দে,রাফিও সাথে হাসে।
ওরা হাসাহাসি করছিল এই মুহূর্তে আরিয়ান এসে।
এসে ইশার সাথে একটা ছেলেকে দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকায়,পরমুহূর্তে রাগ উঠে যায়।আরিয়ান বলে,

“তোমরা দুজন ফাঁকা ক্লাসে কি করছো?’

তারপর রাফির দিকে তাকিয়ে বলে,
“এই ছেলে, কে তুমি?”

রাফি বলে,
“আসলে ভাইয়া আমি ওর থেকে নোট নিচ্ছিলাম আর আমার নাম রাফি”

আরিয়ান রাফিকে বলে,
“অন্য কারোর থেকে নোট নিবে,আর যেন ওর সাথে কথা বলতে না দেখি”

রাফি অবাক হয়ে আরিয়ানের দিকে তাকায় তখন ইশা বলে,

“এই আপনি ওর সাথে এভাবে কেনো কথা বলছেন?ও তো আমার থেকে শুধু নোটই চাইছে আমরা কি প্রেম করছি নাকি?”

ইশার সাথে রাফি কে দেখে আরিয়ান এমনিতে রেগেছিল তার উপর এই কথাটা।আরিয়ানের রাগ আরো গুণ বাড়িয়ে দেয়।আরিয়ান দাঁতে দাঁত চেপে ইশাকে বলে,

“তুমি শুধু আমার আর কোনো ছেলের সাথে যেনো তোমাকে কথা বলতে না দেখি, ক্লাসমেট দের সাথেও না।মাইন্ড ইট”

আরিয়ানের রেগে কথা বলায় ইশা একটু ভয় পেয়ে যায়।
রাফি আবার বুঝতে পারে এখানে কাহিনীটা কি!
ও হেসে আরিয়ান কে বলে,

“ভাইয়া চিন্তা করবেন না আমি এখানে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে আসিনি।জাস্ট নোট নিতে এসেছিলাম। আমার কাজ শেষ, আসছি ”

বলে রাফি চলে যেতে নে তারপর আবার ফিরে এসে আরিয়ান আর ইশাকে বলে,

“বাই দ্যা ওয়ে আপনাদের দুজনকে কিন্তু খুব সুন্দর মানাবে”
এটা শুনে ইশা রেগে রাফিকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই রাফি চলে যায়।

ইশা রাগে গজগজ করতে করতে বিড়বিড় করে বলে,
“খচ্চর একটা।আমি তোকে নোট দিলাম আর তুই আমাকে বাঁশ দেস, একবার পাই তোকে..”

এদিকে আরিয়ান মিটিমিটি হাসছে এটা দেখে ইশার আরও রাগ উঠে যায় ও ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যায় ক্যান্টিনের উদ্দেশ্যে।
আরিয়ান ইশার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ও পিছু পিছু যায়।

.
এদিকে ক্যান্টিনে রাইমা গপগপ করে খেয়ে যাচ্ছে তখন ওখানে রিহান আসে।এসে বল,

“এই রাক্ষসী টা কোত্থেকে এলো রে আজকে তো মনে হচ্ছে পুরো ক্যান্টিনে খাবার শেষ করে দিবে”

এটা শুনে রাইমা ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে রিহান দাঁত কেলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তখন রাইমা বলে,

“আপনি কে এটা আমাকে বলেন ?”

রিহান ভাবলেশহীনভাবে রাইমার পাশের চেয়ারে বসে বলে,
“তো এখানে আর কে রাক্ষসের মতো খাচ্ছে?”

এটা শুনে রাইমা রেগে যায়।তারপর বলে,
“আমি আমার বাপের টাকায় খাচ্ছি তাতে আপনার কি?”

“না না আমার কি হবে তুমি খাও খাও”

রাইমা একবার রিহানের দিকে তাকিয়ে খাওয়ায় মনযোগ দে।

কিছুক্ষণ পর,,
রিহান এখনো রাইমার দিকে তাকিয়ে আছে।খাওয়ার সময় একটা মেয়েকে এতো সুন্দর লাগে ওর জানা ছিলো না।ও একমনে তাকিয়ে আছে।
রাইমা এবার খেয়াল করে যে রিহান ওর দিকে তাকিয়ে আছে।এটা দেখে রাইমা রিহানকে বলে,

“আপনি এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেন আমার পেট খারাপ হবে তো”

হঠাৎ এই কথায় রিহান হকচকিয়ে যায়। তারপর বলে,
“কই তাকিয়ে ছিলাম?”

রাইমা রিহানের দিকে তাকায় তারপর একটা বার্গার রিহানের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে, “খাবেন?”

রিহান একটু ভেবে বলে,
“দিচ্ছো যখন খাবো না কেনো,দাও”

রাইমা রিহানের দিকে একটা ভালো বার্গার এগিয়ে দেয় কিন্তু রিহান রাইমার অর্ধেক খাওয়া বার্গার নিয়ে খেতে শুরু করে।
রাইমা অবাক হয়ে রিহানকে বলে,

“আরে আরে আপনি আমার খাওয়া বার্গার টা কেনো খাচ্ছেন?”

রিহান কোনে কথা না বলে খেতে থাকে।
এর মধ্যে এখানে ইশা আসে।ও রিহানকে বলে,
“রিহান ভাইয়া কেমন আছেন?”

এটা শুনে রাইমা মুখ বেঁকিয়ে বলে,
“ওনি তোর কোন জন্মের ভাই রে?’

রিহান একবার রাইমার দিকে তাকায় তারপর ইশাকে বলে,
“ভালো,তুমি কেমন আছো?”

ইশা হেসে বলে, “জী ভালো”

তারপরই ইশা ওদের পাশের চেয়ারে বসে পড়ে।ইশার পিছু পিছু আরিয়ানও আসে।
ইশা একবার আরিয়ানের দিকে তাকায়।আরিয়ান আড়চোখে ইশা কে দেখছে।
রাইমা খাবার খাচ্ছে আর একবার ইশার দিকে আরেকবার আরিয়ানের দিকে তাকাচ্ছে।

কিছুক্ষণ পর ইশা রাইমা কে বলে,
“কিরে তোর খাবার এখনো শেষ হয়নি? তাড়াতাড়ি শেষ কর,আমি চলে যাচ্ছি না হলে”

রাইমা তাড়াতাড়ি খাবার মুখে দিয়ে চিবোতে চিবোতে বলে,
“আর এ ইশা তো তুই খাবি না?”

ইশা বলে, “না ”
এটা বলতেই রাইমা ইশার মুখে একটা বার্গার ঢুকিয়ে দে।তারপর দাঁত কেলিয়ে ইশারায় খাওয়ার জন্য বলে।ইশা রাইমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকায় তারপর বার্গার খেতে থাকে।
আরিয়ান ইশার খাওয়া দেখছে আর মিটিমিটি হাসছে।রিহান অবাক হয়ে আরিয়ানের দিকে তাকায়।ও কিছুটা হলেও বুঝতে পারছে যে আরিয়ান ইশাকে পছন্দ করে।
খাওয়া শেষে ইশা টেবিলের উপর পানির বোতল হাতে নিতে যায় তখন আরিয়ানও বোতলটা ধরে..ফলে দুজনের হাত স্পর্শ হয়। ইশা তড়িতগতিতে হাত সরিয়ে নেয়। আরিয়ান সেদিকে তাকিয়ে একটা বাঁকা হাসি দে।
ইশা আরিয়ান এর থেকে পানির বোতলটা নিয়ে ঢকঢক করে পানি দিয়ে খেয়ে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যায়। রাইমা ইশা কে বের হয়ে যেতে দেখে ইশার পিছনে ছুটে।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here