মনের মানুষ❤️পর্ব-১৭

0
639

#মনের_মানুষ❤️
#সপ্তদশ_পর্ব❤️
#কলমে_সাঁঝবাতি🌸

চাঁদের স্বচ্ছ জোৎস্নায় সবকিছু দিনের আলোর ন্যায় পরিষ্কার…..ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আহেলি।একটু আগেই এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে আর তারপর কালো মেঘের আবরণ সরে গিয়ে আকাশ একদম পরিষ্কার….আজ পূর্ণিমা ছিলো।প্রতিটা মাসের মতো এমাসেও আহেলির বাড়িতে সত্য নারায়নের পুজো হয়েছে।আহেলিদের ঠাকুরঘরটা তিনতলায় যার জন্য ওর মা সবসময় উঠতে পারে না…..পুজোর বেশিরভাগ কাজ আহেলি নিজের হাতে করে।আজকেও তাই হয়েছে…..প্রতিবার পুজো হয়ে যাওয়ার পর আহেলির মা নিজের হাতে প্রসাদ গুছিয়ে পাঠিয়ে দিতেন ঋষভ এর বাড়িতে।আজ সে ঘটনার পরিবর্তন হয়েছে……আর আজকেই প্রথম আহেলি ঋষভ এর চোখে চোখ রেখে কথা বলেছে।এতদিন যে কথাগুলো ওর মনের মধ্যে কাঁটার মতো বিধেছিলো সেগুলো উগরে দিতে পেরেছে ঋষভ এর সামনে।কাল রাত্রে আহেলির বাবা সবটা বাজার করে আনা সত্বেও হটাৎ করেই দেখা যায় পুজোর একটা সামগ্রী নেই।আহেলি তখন নিজেই বেরিয়ে যায়…..দশকর্মার দোকানটা আহেলিদের বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরেই।দোকান থেকে বেরিয়ে আহেলি স্কুটিতে বসবে তখনই ওর সামনে দাঁড়ায় ঋষভ…..হটাৎ করে ঋষভ কে দেখে আহেলি অবাক হলেও কোনো কথা না বলেই স্কুটি স্টার্ট দিচ্ছিলো।তখন ঋষভ নিজে থেকেই বলে,,,,

“কেমন আছিস আহেলি?”

ঋষভ এর এই একটা কথা আহেলির মাথায় আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিলো…..প্রথমে চুপ থাকার কথা ভাবলেও পরক্ষনে সিদ্ধান্ত বদলায়।এতদিন ধরে মনের মধ্যে যেসব কথা জমিয়ে রেখেছিলো আজ তা ঋষভ এর সামনে বলে দেয়……ধীর অথচ শান্ত গলায় আহেলির শ্লেষমাখানো কথাগুলো শুনে ঋষভ পাথরের মূর্তির মতো চুপ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো।আহেলি নিজের কথা শেষ করে ফেরার পথ ধরলেও ঋষভ ওখানে দাঁড়িয়েই ছিলো।সকালের কথাটা ভাবতেই আহেলি ছোট্ট একটা নিশ্বাস ফেললো……ঠাকুরঘর থেকে ধুনো আর রজনীগন্ধা ফুলের ভেসে আসছে।বড়ো করে একটা নিশ্বাস নিয়ে আহেলি মনেমনে ভাবলো,,,,

“আজ যখন তোমার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পেরেছি,কাল ঠিকই তোমায় ভুলে যাবো।তোমার অনেক দোষ থাকার সত্বেও আমি নিজের মতো করে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতাম।কিন্তু আর তা হয় না…আমাদের সম্পর্কটা কখনোই ছিলো না ঋষি দা।তাই তার ভাঙার কোনো দরকার নেই।ভালো থেকো তুমি ওই মেয়েটার সাথে।”
🌸🌸🌸🌸

যুবনেতা ঋষভ হটাৎ করেই বিরোধী পক্ষের নেতার সাথে দেখা করার জন্য তার বাড়িতে উপস্থিত হয়েছে কথাটা জানা মাত্রই বেশিরভাগ নিউস চ্যানেলের প্রতিনিধিরা ওই নেতার বাড়ির সামনে ভিড় জমিয়েছে…..হটাৎ করে ঋষভ কেনো এবাড়িতে?তা নিয়ে জল্পনার শেষ নেই।

বাড়ির মধ্যে ড্রয়িং রুমের একটা সিঙ্গেল সোফা দখল করে বসে আছে ঋষভ….আর উল্টোদিকের সোফায় সেই প্রবীণ নেতা।এছাড়াও ওনার দলের আরো কয়েকজন ব্যক্তি…..ঋষভ যদিও একাই এসেছে।সামনে কাঁচের সেন্ট্রাল টেবিলে শরবত আর মিষ্টি সাজিয়ে রাখা…..ঋষভ এক পায়ের ওপর আরেক পা তুলে মুচকি হেসে বললো,,,,

“এতদিন আপনাকে সকলে যখন বুদ্ধিহীন বলতো তখন আমার বেশ খারাপ লাগতো কিন্তু…..ভাবতাম আপনার মতো একজন বর্ষীয়ান নেতাকে নিয়ে এভাবে ট্রোল করা ঠিক নয়।তবে আজ আমার মনে হচ্ছে আপনাকে নিয়ে বড়োই কম ট্রোল হয়েছে।বুদ্ধিহীন তো একটা বিশেষন মাত্র…..আপনাকে ডেসক্রাইব করার জন্য ব্যাকরণে নতুন শব্দের উৎপত্তি করতে হবে।কারণ আপনার তুলনা একমাত্র আপনিই…..”

“তুমি ঠিক কি বলতে চাইছো?”

“উত্তেজিত হবেন না….শান্ত হয়ে বসুন।আমি জানি আপনার দল থেকে আপনাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো আমার চরিত্রে কলঙ্ক লাগানোর জন্য।আপনি ভেবেছিলেন একজন কলগার্লকে আমার কাছে পাঠিয়ে তার স্ট্রিং অপারেশন করবেন আর সেটা মিডিয়ার হাতে তুলে দেবেন।সবটা কি এতটাই সহজ?তাই তো আপনি কাকে বাছলেন না আমার প্রাক্তন প্রেমিকা কে….ভালো খোঁজ খবর নিয়েছেন কিন্তু।”

“তুমি কিসব যাতা বলছো?আমি কিন্তু তোমার নামে….”

“আরে থামুন তো….বেকার এসব বলে কি লাভ?আপনি কি ভাবলেন আমি ঘাসে মুখ দিয়ে চলি?অনেকগুলো বছর পর আমার প্রাক্তন প্রেমিকা ফিরে আসবে আর আমি তাকে এক্সসেপ্ট করে নেবো?তার সমন্ধে কোনো খোঁজ নেবো না…..আপনি সত্যিই ভীষণ বোকা।আমি শ্রেয়ার সাথে কথা বলার দ্বিতীয় দিনেই ওর সমস্ত কথা জানতে পেরেছিলাম….আমি তখনই পারতাম ওকে জেলে ভরতে বা আপনাকে সামনে আনতে কিন্তু সমস্যা হলো অন্য জায়গায়।আমি মন্ত্রী মশাইকে মেয়েটার ছবি দেখিয়ে ছিলাম……যাতে উনি কোনো স্টেপ নেন।সমস্যা বাঁধলো এবার এখানেই…..মন্ত্রী মশাইও আপনার মতোই মেয়েটার সাথে হোটেলে যেতো।মেয়েটাও কিন্তু ভীষণ চালাক জানেন……ও আবার চালাকি করে মন্ত্রী মশাইয়ের সাথে একটা ভিডিও রেখেছিলো যাতে ওনার থেকে টাকা আদায় করা যায়।কথাটা জানার পর আমি ভাবলাম শ্রেয়া যদি কোনোভাবে আপনাকে এই ভিডিওর কথা জানিয়ে দেয় তাহলে তো আপনি পুরো লটারি পেয়ে যাবেন…কোথায় আপনি আমায় চরিত্রহীন করতে চেয়েছিলেন সেখানে মন্ত্রী মশাই।তখন ভাবলাম বিষয়টা নিয়ে একটু খেলা যাক……আর তাই আমি ইচ্ছা করে শ্রেয়ার পাতা ফাঁদে পা দিই।ও আপনাদের আড়াল করার জন্য বলতো ও নাকি পদের লোভে আমার কাছে এসেছে……আমি সবটা শুনেই গেছি শুধু।একটাও কথা বলিনি।আমি চাইছিলাম ওর বিরুদ্ধে একটা প্রমান….শ্রেয়ার কললিস্ট ঘেটে কিছু পায়নি।কিন্তু ভুলটা শ্রেয়া নিজেই করে বসলো…..ওর মতো মেয়েরা স্বার্থের জন্য অনেককিছুই করতে পারে।ও জানতো আপনার হয়ে কাজ করলে শুধুমাত্র টাকা পাবে…..এদিকে কথার কথা হলেও একটা পদ যদি কোনোভাবে পায় তাহলে ওর লাইফ সেট।তখনই ও বিট্রে করলো আপনাদের সাথে….আমায় ভিডিওর ভয় দেখিয়ে বললো আমি যদি ওর কোনো ব্যবস্থা না করে দিই তাহলে ও আমার সাথে থাকা ভিডিও লিক করে দেবে।আমি রাজি হলাম….শ্রেয়া ভাবলো ও ওর প্ল্যানে সাকসেসফুল।তাইতো কথার মাঝেই বলে ফেললো আমার কাছে আসাটা একটা চাল….আমার প্রিয় বিরোধী পক্ষের চাল।ব্যাস এটাই জানতে চেয়েছিলাম…..আপনার সাথে ওর কথা হয় সম্পূর্ন অন্য একটা নাম্বারে যেটা বেশীরভাগ সময় অফ থাকে।আমার এতদিনের ভয় পাওয়ার অভিনয় সার্থক হলো…..আমি কাল শ্রেয়াকে আমার অফিসে ডেকে পাঠাই।ও ভেবেছিলো হয়তো আমি ওকে ব্যাপারটা চাপা দেওয়ার জন্য টাকা দিতে ডেকেছি কিন্তু তা নয়…..সবসময় অভিনয় করতে কার ভালো লাগে বলুন তো?আমি ভালো করেই জানতাম ওর কাছে কোনো ভিডিও নেই কারণ আমরা তো ইন্টিমেট হয়নি….শ্রেয়া ভয় দেখানোর জন্য আমায় ভিডিওর কথা বলেছে।শ্রেয়া যতটাই চালাক আবার ততটাই ভীতু….ও জানে রাজনীতির মারপ্যাচে ওর কি হাল হতে পারে।তাইতো ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে আপনার সাথে যোগাযোগ করার তথ্য দেওয়া থেকে শুরু করে মন্ত্রী মশাইয়ের ভিডিও অব্দি ডিলিট করেছে।আপনি ওকে আমার পেছনে লাগিয়েছিলেন অথচ শ্রেয়াই আমাদের উপকারে লাগলো….আমার কাছে এই মুহূর্তে যা প্রমান আছে তাতে আপনি যে উদ্দেশ্যপ্রনদিত ভাবে এসব করেছেন তা সকলেই বুঝে যাবে….তখন আপনার কি হবে?আপনি ফেঁসে গেলে দল পাশে দাঁড়াবে তো?”

“ঋ-ঋষভ!তুমি…..তুমি কি করতে চাইছো?”

“তেমন কিচ্ছু না….আপনি সত্যিই মূর্খ নাহলে এরকম একটা প্ল্যান কেউ বানায়?যাইহোক আপনি যদি চান সম্মানের সাথে থাকতে তাহলে আজকেই দল পরিত্যাগ করবেন।নাহলে আপনার সমস্ত তথ্য যাবে মিডিয়ার কাছে……”

“দল পরিত্যাগ করলে আমার কি হবে?আমি কোন দলে যাবো?”

“দ্যাটস ইউর প্রবলেম….তবে আজ নয়।আরো দুদিন পর করবেন নাহলে আবার আমায় নিয়ে টানাটানি হবে।সকলে বলবে আমি এমন কিছু বলেছি যাতে আপনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন”

“ঋষভ….ঋষভ তুমি অন্যকোনো উপায় বলো।দল ত্যাগ করলে আমার কি হবে?ভোটের আগে কে নেবে আমায়?এখন তো টিকিট অব্দি পাবো না”

“সেটা আগে ভাবতে হয়….আজ যদি সত্যিই আপনি আমায় ফাসিয়ে দিতেন তাহলে আমার অবস্থাও অনেকটা এরকম হতো।তাই নিজেও বুঝুন আমার কতো বড়ো ক্ষতি আপনি করছিলেন…..তবে মিডিয়ার সামনে বলবেন দল থেকে উপযুক্ত সম্মান না পেয়ে আপনি দলত্যাগ করছেন।আমি এলাম….সুস্থ্য থাকবেন।”

ঋষভ বেরিয়ে যেতেই লোকটা ধপ করে বসে পরলো সোফায়।বাড়ির গেট থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় একঝাঁক রিপোর্টার ঘিরে ধরলো ঋষভ কে…..সকলের একটাই প্রশ্ন ঋষভ এখানে কি করছে।ঋষভ গাড়িতে উঠতে জানলা দিয়ে ওর কাছে মাইক ধরলো….ঋষভ এবার মুচকি হেসে বললো,,,,

“তেমন কিছুই নয়…আমি শুনলাম ওনার শরীর ভালো নয়।বিরোধী পক্ষ হলেও উনি একজন সম্মানীয় প্রবীণ নেতা….তাই ওনার শরীরের খবর নিতেই এসেছিলাম।ওনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে খবর নিলাম……এখন ভালো আছেন উনি।তবে মনেহলো মনখারাপ।ভালো লাগলো ওনার সাথে সময় কাটিয়ে।”

ঋষভ গাড়ির কাঁচ তুলে স্টার্ট দিতে বললো…সিটে হেলান দিয়ে হাসলো।এতদিন ধরে করে আসা সমস্ত অভিনয় আজ স্বার্থক হলো…..মন্ত্রী মশাই এবার তো খুশি হবেন।গাড়িটা একটা জ্যামে আটকা পরতেই ঋষভ এদিক ওদিক দেখছিলো….হঠাৎই ওর নজর গেলো রাস্তার ধারে একটা ফুচকার দোকানে।দুটো ছেলেমেয়ে ফুচকা খাচ্ছে…..তৎক্ষনাৎ আহেলির ফুচকা খাওয়ার জন্য বায়না করা মুখটা মনে পড়লো।একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো ঋষভ এর বুক চিড়ে…..এক জীবনে হয়তো সব শখ পূরণ করে না ভগবান।কিছু দিয়ে পরিবর্তে অন্যকিছু কেড়ে নেয়…..তবে একবার কথা বলতে হবে আহেলির সাথে।ফেরা হয়তো হবে না কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিটা দূর করতে হবে।
🌸🌸🌸
আহেলি আজ একটা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য খুব সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলো…..পরীক্ষা শেষ হতে বেশ বেলা হয়ে গেছে।সেন্টার থেকে বেরিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলো গাড়ির জন্য…..অথচ একটাও ট্যাক্সির দেখা নেই।এমন একটা জায়গা যে কোনো ক্যাব আসতে চাইছে না।দুপুর তিনটের সময় রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আহেলি বেশ বিরক্ত…..হটাৎ বাইকের হর্ন কানে আসতেই আহেলি মুখ তুলে তাকালো।কালো রঙের একটা বাইক….আরোহী মাথা থেকে হেলমেট সরাতেই আহেলি অবাক হয়ে বললো,,,

“আপনি?এখানে কি করছেন?”

“আপনাকে ফলো….”

“উফফ….সত্যি করে বলুন না কি করছেন?”

“আমি একটা অপারেশনের জন্য এদিকের একটা হসপিটালে এসেছিলাম।”

“ওহ!তবে আপনি যে বাইক চালান এটা ভাবিনি….”

“কেনো?আমায় দেখে বাইক চালাই বলে মনেহয় না?”

“না তা নয়….”

“আপনি এখানে?”

“চাকরির পরীক্ষা…..রিটেন এক্সাম সেন্টার এদিকে।”

“গাড়ি তো পেলেন না….তো এই বাইকে লিফ্ট দিলে চলবে?”

“সেটা করলে সত্যিই খুব ভালো হয়।আমি অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে।অন্তত কোনো একটা বাস স্টপেজে নামিয়ে দিলেই হবে।”

“বড্ড বাড়ি ফেরার তাড়া….”

“অনেক সকালে বেরিয়েছি….এদিকে কিছু খাওয়া অব্দি হয় নি।”

“তাহলে আর দাঁড়িয়ে কেনো?আমার বাইকের খালি সিটে বসে নিজেকে ধন্য করুন।”

মুচকি হেসে আহেলি বসলো।প্রান্তিকও বাইক স্টার্ট দিলো…..শীতল হাওয়ায় আহেলি স্বস্তিবোধ করলো।

“আপনার বাড়ি যেতে যেতে আপনার খিদে কিন্তু দশগুন হয়ে যেতে পারে,তারচেয়ে ভালো হবে আপনি আমার বাড়ি চলুন।”

“আপনার বাড়ি?কি দরকার?আপনি আমায় কোনো একটা স্টপেজে নামিয়ে দিন তো?”

“তা বললে কি হয়?এবার বলুন আপনি ওটস বা নুডলস দিয়ে লাঞ্চ করবেন নাকি ভাত?”

“মানে?”

“যদি আমার ফ্ল্যাটে যান তাহলে ওই ওটস নয়তো নুডলস পাবেন…..আর আমার মায়ের বাড়িতে নিয়ে গেলে দারুন দারুন সব রান্না।মায়ের বাড়িটা কাছেই….এবার আপনি বলুন কোথায় যাবেন?”

“আপনার মায়ের বাড়ি মানে?আপনি আপনার মায়ের সাথে থাকেন না?”

“থাকতাম…..আজ থেকে দশবছর আগে অব্দি থাকতাম।মা সেটেল্ড করার পর ওদের একা ছেড়ে দিয়েছি।সারাজীবন তো একহাতে আমার মতো একটা বাউন্ডুলেকে সামলালো এবার অন্তত নিজের জন্য আর নিজের বরের জন্য সময় বের করুক।আমি মাঝেমাঝে গিয়ে আদর খেয়ে আসি।”

আহেলির অবাক হওয়া মুখের দিকে তাকিয়ে হাসলো প্রান্তিক।মেয়েটা যে অবাক সেটা বুঝতে পেরেছে তাই তৎক্ষনাৎ বললো,,,,

“আমার যখন পাঁচবছর বয়স তখন বাবা মা আলাদা হয়ে যায়…..আমায় মানুষ করার দোহাই দিয়ে মা কোনোদিন নিজের কথা ভাবেনি,আর আমিও ছোটো ছিলাম বলে কিছু করতে পারেনি।কিন্তু যখন আমার মতামত দেওয়ার বয়স হলো তখনই আমি মাকে বললাম জীবনটা এভাবে নষ্ট না করে সেটাকে উপভোগ করতে নয়তো আফসোস থেকেই যাবে।আমি মাকে মায়ের জীবনসঙ্গী এনে দিয়েছি….বাকি গল্পটা মায়ের সামনেই হবে।”

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here