মন_পাড়ায় পর্ব_১৮

মন_পাড়ায়
পর্ব_১৮
#নিলুফার_ইয়াসমিন_ঊষা

দূর থেকেই জানাব তোমায় হৃদয়ের আখ্যান
মেঘের খামে লিখে পাঠাবো ভালোবাসার উপাখ্যান।’

প্রভা অর্কের দিকে তাকিয়ে রইলো বিস্ময় নিয়ে। আবার চোখ নামিয়ে এক পা পিছনে যেতে নিলেই অর্ক প্রভার পিঠে হাত রেখে বলল, “আমার থেকে সবাই দূর যেতে চাও কেন শুধু? একদিকে সৈকত অন্যদিকে তুমি।”

প্রভা অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো অর্কের দিকে। সে বুঝতে পারছে যে সৈকতের জন্য অর্কের কষ্ট লাগছে। কিন্তু তার ভীষণ অস্বস্তি লাগছে অর্কের কাছে আসায়। যা তার মুখে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

অর্ক প্রভার মুখে অস্বস্তিপূর্ণতা স্পষ্ট দেখতে পারলো। সে প্রভাকে ছেড়ে এক পা পিছিয়ে গেল। মৃদু কন্ঠে বলল, “সরি, একটু আগে সৈকতের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল….সরি।”

অর্ক হাঁটতে শুরু করল। প্রভা হাঁটল না। সে সেখানেই দাঁড়িয়েই বলল, “চলুন ফেরত যাই।”

অর্ক ফিরে তাকালো প্রভার দিকে। তার হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বলল, “তুমি বলেছিলে সামনে ছোট একটা বিল আছে। গন্তব্য না দেখা পর্যন্ত যাওয়া হচ্ছে না।”

প্রভা নিজের হাতের দিকে তাকালো। ছাড়াতে চাইলো। কিন্তু অর্ক তো তার স্বামী, কোন কারণ দেখাবে তার অস্বস্তির?
প্রভা হাঁটতে শুরু করলো। ভাবলো এখন অর্ক হাত ছাড়বে সে ছাড়লো না।

তাকে হাত ছাড়তে বলতে চায় কিন্তু কোন বাহানায়? এটা যে এখনো সে তার প্রথম স্বামীকে ভালোবাসে? তার ছাড়া অন্যকোনো পুরুষের ছোঁয়ায় তার অস্বস্তি লাগে। সে যতই বিশ্বাসঘাতক হোক না কেন তার সাথে আটবছরের সংসার ছিলো। সে শুরু থেকেই ইন্ট্রোভার্ট ধরনের। ভীষণ লাজুক তাই কখনো বেশি মানুষের সাথে কথা হয় নি। গার্লস স্কুল ও কলেজে থাকায় কোনো ছেলের সাথেই তার পরিচয় ছিলো না। এমনকি নিজের কাজিনদের সাথে কথা বলতেও লজ্জা লাগতো। বিনয় ছিলো তার প্রথম পুরুষ, যাকে সে ভালোবেসেছে। বিয়ের পর থেকেই বিনয়ের প্রতি বিন্দু বিন্দু করে ভালোবাসার সমুদ্র তৈরি করেছে। সে জায়গাটা অন্যকাওকে কীভাবে দেয় সে?
তবুও অর্ক তার হাত ধরতে চাইলে সে মানা করতে পারে না। অধিকার আছে তার প্রভার উপর। অর্ক চাইলেই তার সাথে জোরজবরদস্তি করতে পারতো। সে তার স্বামী, কিছু বলতেও পারতো না সে। কিন্তু অর্ক এমনটা করলো না। পরক্ষণেই মনে পড়লো তার, অর্ক তো তাকে ঘৃণা করে তাই তার উপর অধিকার না জমানোটাই স্বাভাবিক। সে তো শুধু তার সাথে তার ভালোবাসার মানুষের জন্য, নূহার জন্য। আর রইলো হাতের কথা। সম্ভবত ধরে ভুলে গেছে। তাই ছাড়ছে না।

প্রভা অর্কের সাথে পথ চললো। সে জ্যোৎস্নাময় রাতের সৌন্দর্যটা বোধহয় আরও বেড়ে গেল।
.
.
বাসে উঠে বসলো সৈকত ও ঝিনুক। ঝিনুককে রাগান্বিত দেখাচ্ছে। সে মুখ ফুলিয়ে জানালার ওপারে তাকিয়ে আছে। বাস ছেড়েছে। অনেকক্ষণ যাবৎ সৈকত ঝিনুকের রাগ খেয়াল করছিলো। অবশেষে জিজ্ঞেস করে নিলো, “মেডাম মুখ ফুলিয়ে আছেন কেন?”

ঝিনুক যেন সৈকতের এই প্রশ্নেরই অপেক্ষায় ছিলো। প্রশ্নটা করতেই সৈকতের দিকে তাকিয়ে বলল, “অর্ক ভাইয়ার সাথে এইভাবে কথা বললে কেন?”

সৈকত অপ্রভাবিত হলো এই প্রশ্নে। তার হাসি হাসি মুখখানা বিরক্তি ভাব ধারণ করলো। সে সামনে তাকিয়ে বলল, “স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলেছি।”

“স্বাভাবিকভাবে? এই তোমার স্বাভাবিক ভাবে কথা বলার ধরণ?”

“আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার দখল দিও না ঝিনুক।”

“দিব, দিব, দিব। একশোবার দিব। আমি তোমার বউ। আমি না দিলে কে দখল দিবে শুনি?”

সৈকত সাথে সাথে ঝিনুকের দিকে তাকালো। ভ্রু নাচিয়ে বলল, “আবার বলো তো কী বললে? আমার বউ তাই না? তাহলে মিসেস বউ বাকি সময় আমার বউপনা কোথায় উড়ে যায়?”

ঝিনুক ভ্রু কুঁচকে তাকালো সৈকতের দিকে। মুখ ফুলিয়ে সিটে আবার পিঠ ঠেকিয়ে হাত আড়াআড়ি ভাঁজ করে নিলো বলল, “ফালতু একটা।”

সৈকত হেসে দিলো। বলল, “উওর না থাকলে এমনই হয়।”

ঝিনুক আবারও রাগে সৈকতের দিকে তাকিয়ে জানালা খুলে দিলো। যা সৈকত উঠে বন্ধ করে দিলো। ঝিনুক আবারও খুলে দিলো, সৈকত বন্ধ করলো। অবশেষে সৈকত জানালা বন্ধ করার পর যখন ঝিনুক আবার তা খুলতে যাবে তখন সৈকত তাকে নিজের বাহুতে আবদ্ধ করে নিলো। বলল, “এইবার খুলে দেখাও।”

ঝিনুক নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করা করলো খুব। না পেরে বলল, “ছাড়, নাহয় এখন চিৎকার করব।”

“আমি মানা করেছি না’কি? যা ইচ্ছা কর। তুমি না একটু আগে বলেছিলে তুমি আমার বউ। বউকে জড়িয়ে ধরতে কী সমস্যা? আর বেশি সমস্যা হলে খালুকে একটা ফোন দিলেই হবে।”

খালুর কথা শুনে ঝিনুক নড়াচড়া করা বন্ধ করে দিলো। বাধ্য মেয়ের মতো সৈকতের কথা মানল।
সৈকত হেসে আশেপাশে তাকাতে শুরু করল।
বাতি বন্ধ ছিলো। কিন্তু বাহিরের আলো একটু পর পর উঁকি মারছিল। সৈকত দেখল তাদের পাশের সিটের এক লোক তাদের দিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে। সে বলল, “আংকেল আমি আমার বউকে বুকে নিয়েছি এইখানে এইভাবে তাকিয়ে থাকার কী আছে? আপনার বউ থাকলে আপনিও নিন। আমি কিছু মনে করব না।”

ঝিনুক লজ্জায় মরে যাচ্ছিলো যেন। এই ছেলেটার লজ্জা শরম নেই বললেই চলে।
ঝিনুক সৈকতের জ্যাকেটের ভেতর মুখ লুকিয়ে নিলো।

কিছুক্ষণের মধ্যে সে অবস্থাতেই ঘুমিয়ে পড়ে ঝিনুক।
.
.
অর্ক হাত ছাড়ছেই না। তারা চলে এসেছে একটি ছোট বিলের পাড়ে। তবুও অর্ক তার হাত ছাড়লো না। উল্টো আগের থেকে শক্ত করে ধরলো যেন। প্রভা তাকিয়ে আছে তার হাতের দিকে। যে হাত অর্ক ধরে রেখেছে। তা ছাড়ার অপেক্ষায় সে। অথচ অর্কের হাত ছাড়ার নাম নেই।

বিলের পাশটায় যেয়ে অর্ক বলল, “অসম্ভব সুন্দর জায়গাটি।”

প্রভা সামনে তাকালো। মুহূর্তে তার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল। বিলের পানিতে চন্দ্রমার প্রতিচ্ছবি এসে বিরাজ করেছে। চারপাশে গাছ-গোছালিতে ভরা, অন্ধকার রাত্রি। সে অন্ধকার রাতে একরাশ জ্যোৎস্না এসে পড়ছে জলে, যা দেখতে লাগছে অসাধারণ।

সে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রইলো সেদিকে। বিস্মিত কান্ড ঘটলো, প্রভাও অর্কের হাতটা ধরলো। অন্যহাত দিয়ে অর্কের কনুই ধরলো। অর্কের কাঁধে মাথাটা রাখলো। একরাশ মোহ নিয়ে দৃশ্যটা উপভোগ করছিল।

অর্ক চমকে উঠলো। তার হৃদয়ে অদ্ভুত এক শিহরণ হলো তার হৃদয়ে। স্পন্দনের গতি হলো অস্বাভাবিক। সে পাশে তাকাল, প্রভাকে দেখলো। চন্দ্রমার একরাশ জ্যোৎস্না তার মুখে এসে পড়ছে। তাকে মোহময় দেখাচ্ছে। এই দৃশ্যের কাছে পৃথিবীর সব সৌন্দর্য তুচ্ছ। তার ঠোঁটের কোণে নিজ অজান্তেই হাসির রেখা এঁকে উঠলো। সে তাকিয়েই রইলো প্রভার দিকে, আর প্রভা তার সামনের দৃশ্যের দিকে।

তার এই হাসিটা বেশিক্ষণের জন্য স্থির রইলো না। প্রভা বলল, “দেখ না এই জায়গাটা কত সুন্দর! আমার জন্মদিনের রাতে আমরা এখানে এসে জ্যোৎস্না বিলাস করব, ঠিকাছে বিনয়?”

অর্কের মনে হল তার হৃদয়টা কেউ চেপে ধরে রেখেছে। এতটা কষ্ট! এতটা ব্যাথা!

অর্ক কেশে বলল, “আমি অর্ক বিনয় না।”

চমকে উঠে মাথা তুললো প্রভা। বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলো অর্কের দিকে। হুস ফিরে আসার সাথে সাথে অর্ককে ছেড়ে পিছিয়ে গেল। ভীষণ অস্বস্তিতে ভুগতে দেখা গেল তাকে। সে আশেপাশে তাকাতে শুরু করলো। বলল, “ক্ষমা করবেন আমি……আমার মাথা নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। আবারও ক্ষমা চাইছি। চলুন বাড়িতে ফেরত যাই।”

উওর না নিয়েই চলে গেল প্রভা। একবার ফিরে অর্কের দিকে তাকালও না। অর্ক সেখানে দাঁড়িয়ে রইলো কিছুক্ষণ। প্রভা ফিরে এলো না। অর্ক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাড়ির দিকে রওনা দিলো।
.
.
বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে বাজল তিনটা। সৈকত তার মা’কে কল দিয়েছিল দরজা খোলার জন্য। কিন্তু দরজাটা খুলল তার বাবা। তার ঠিক পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলো তার মা। অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে।
সেই মুহূর্তেই সৈকত বুঝতে পারলো এখন বড় কোনো এক তামাশা হতে যাচ্ছে এই মধ্যরাতে।

সৈকতের গালে একটা চড় বসিয়ে রাগান্বিত স্বরে সৈকতের বাবা বলল, “তুই ফাইজলামি পেয়েছিস? এত দামী বাইক আমার অনুমতি ছাড়া কীভাবে বিক্রি করলি তুই?”

সৈকত উওর দিলো না। মাথা ঝুঁকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
সৈকতের দাদিমা বলল, “আহা তোর ছেলে কী এখনো বাচ্চা না’কি? বউয়ের সামনে কেউ এত বড় ছেলেকে মারে?”

“বয়স হিসেবে কাজও তো করতে হয় আম্মা। আমি আর ওর ভাই দিনরাত খেটে টাকা কামাই করব আর এই সাহেবজাদা বসে বসে উড়াবেন।” আবার সৈকতের মা’য়ের দিকে তাকিয়ে বলল, “কী বলেছিলে ও বাইক নিয়ে গেছে ওর শশুড়বাড়িতে। কই বাইক কই? বেয়াই সাহেব ফোন দিয়ে বলে দিয়ে বলেছিল ওরা বাস দিয়ে আসছে। জিজ্ঞেস করায় তো জানা গেল সে বাইক নিয়ে যায় নি। এখন এত আরামে বলছে যে বিক্রি করে দিয়েছে। ছেলেকে তো শিখিয়েছ শুধু টাকা উড়ানো। নিজে ছোট পরিবার থেকে আসছ দেখে এখন……. ”

সামনে কিছু বলার আগেই সৈকত উঁচু স্বরে বলল, “মিস্টার মাহমুদ,” ঝিনুক অবাক হয়ে তাকালো সৈকতের দিকে। সে আসলে তার বাবাকে নামে ডাকছে! সৈকত তার কথা শেষ করলো, “আপনার বাইকের টাকা আমি আপনাকে চারমাসে ফেরত দিয়ে দিব। কিন্তু আপনি আমার মায়ের সঙ্গে এইভাবে কথা বলার সাহস করবেন না, নাহয় আমি ভুলে যাব যে আপনি সম্পর্কে আমার পিতা হন।”
বলেই সৈকত চলে গেল। ঝিনুক অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো সৈকতের দিকে। সে আগে কখনো সৈকতকে এতটা রাগে দেখে নি। এই প্রথম। আর এই বিষয়টা তার জঘন্য লাগলো।

সৈকতের বাবা বললেন, “কী বানিয়েছ ছেলেকে দেখেছ তুমি? নিজের বা….বাবার সাথে কোন ছেলে এভাবে কথা বলে?”
ঝিনুক সৈকতের মা’য়ের দিকে একপলক তাকালো। সে মাথা ঝুঁকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিছু বলছে না। সে বলল, “আংকেল প্লিজ মনে নিয়েন না কথাগুলো। ওর হঠাৎ কী হলো আমিও বুঝতে পারছি না। আমি কথা বলছি ওর সাথে।”

“বুঝাও একটু যদি জ্ঞান বুদ্ধি হয়। ওর মা তো ভালো শিক্ষা দেয় না তুমি যদি বুঝাতে পারো।” বলেই চলে গেল। ঝিনুক নিজের রুমে এসে দেখে সৈকত হাত মুখ ধুঁয়ে তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতেছে। সে উঁচু স্বরে বলল, “তোমার মাথা খারাপ? নিজের বাবার সাথে এত বাজে ভাবে কথা বলে কেউ?”

সৈকত উওর না দিয়ে বিছানার কাছে গেল। ফোনটা হাতে নিয়ে কিছু একটা করছিলো ঝিনুক ফোনটা নিয়ে বিছানার উপরই ছুঁড়ে মারলো। বলল, “যখন আমাদের কাছে কিছু থাকে তার কদর হয় না তো, তাদেরকে জিজ্ঞেস কর যাদের বাবা-মা কেউ নেই। তোমার এত ভালো বাবা আর ভাই আছে অথচ তোমার কাছে তাদের মূল্য নেই। আর আংকেল ভুল কী বলেছে তারা এত কষ্ট করে টাকা কামায় আর তুমি তা উড়িয়ে দিচ্ছো? বাইক বিক্রি করে টাকা কী করেছ? মেয়েদের উপর লুটিয়ে এসেছ না’কি?”

সৈকত বিস্ময় নিয়ে তাকালো ঝিনুকের দিকে। ঝিনুক আবারও বলল, “আংকেল সত্যি কথা বলেছে দেখে গায়ে লেগেছে তোমার?”

সৈকত দীর্ঘশ্বাস ফেললো। নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করে বলল, “না আমার মা’কে উল্টাপাল্টা বলছিলো দেখে গায়ে লেগেছে আমার। আমি আমার মা’কে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি এই পৃথিবীতে। উনার সাথে কেউ খারাপ ব্যবহার করলে তাকে আমি ছাড়ব না। তোমাকেও না। উনি নিজের জন্য কিছু বলে না দেখে এই না যে তার কষ্ট হয় না। কষ্ট সবার হয়। কিন্তু সবাই নিজেরটাই দেখে। আর তোমার মতো যারা তারা সবচেয়ে বেশি। আমার বাবা আর ভাইও তোমার মতোই।”

“আমার মতো মানে?”

“তোমার মতো মানে তোমার মতো সেলফিশ মানুষ। যে শুধু নিজেরটা ভাবে ও নিজেরটা বুঝে।”

“সৈকত বেশি হয়ে যাচ্ছে।” ঝিনুক উঁচু স্বরে বলল।

সৈকত উওর দিলো, “তুমি সারাটা জীবন নিজের কষ্ট গুণতে গুণতে শেষ হয়ে গেলে। ঠিকাছে তোমার মা-বাবা নেই কিন্তু তোমার খালামণি আর খালু যে তার ছেলে মেয়ে থেকে বেশি তোমাকে ভালোবাসে তার কী?”

“সৈকত এক কথায় অন্য কথা নিবে না।”

“তুমি নিজে যা দেখতে চাও শুধু তাই দেখ। তোমার ভাই যে তোমার প্রতি এত ওভার প্রটেক্টিভ তা বুঝতে চাও না। আমার প্রতি একটা তথ্য পেয়ে এত সহজে ব্রেকাপ করে নিলে একবারও জানতেও চাইলে আসল সত্যি কী?”

“আমি খোঁজ নিয়ে প্রমাণ পেয়েছি।”

“এমনকি যে বোন তোমাকে এত ভালোবাসে তার কষ্টটাও তুমি দেখতে পাও না, নাহয় দেখেও বুঝতে পারও না। আমি এত বোকা মানুষ আমার জীবনে দেখি নি।”

“হাউ ডেয়ার ইউ? তুমি আপির প্রতি আমার ভালোবাসাতে প্রশ্ন তুলছো?”

“আর তুমি আমাকে বলছ আমি কোন মেয়ের উপর টাকা লুটিয়ে এসেছি? আমি তো এটাও বলতে পারতাম তোমার তোমার সো কল্ড ভাইয়ের উপর ফিলিংস আসছে দেখে আমাকে দোষ দিয়ে তার সাথে প্রেম……” কথাটা শেষ করার পূর্বেই ঝিনুক জোরে এক থাপ্পড় দিলো সৈকতের গালে। সৈকত ঝিনুকের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, “ব্যাথা লাগে তাই না? সবারই এমন মন থাকে, সবারই কষ্ট হয়। শুধু সবাই নিজের কষ্টকেই প্রাধান্য দেয়। এই পৃথিবীতে সব কষ্ট আছে, শুধু তোমার একার নয়। তুমি যা বুঝ সব সঠিক হবে তা ঠিক নয়। সবারই কষ্ট হয়। শুধু নিজের দিক থেকে ভাবলে হয় না, আমাদের সাথে যারা যুক্ত তাদের সবার দিক থেকে ভাবতে হয় আমাদের।”

সৈকত তোয়ালেটা বিছানায় রেখে দরজার দিকে এগোল। মাঝে থেমে গেল। পিছনে তাকিয়ে বলল, “তুমি সেই ঝিনুক না যাকে আমি ভালোবেসেছিলাম। তুমি আমার সে ঝিনুককে তোমার মাঝে হারিয়ে দিয়েছ। প্লিজ আই বেগ ইউ, ডোন্ট মেক মি আনলাভ ইউ। বিকজ দেন আই উইল হেইট মাইসেল্ফ।”

সৈকত চলে গেল। ঝিনুক বসে পরলো বিছানায়। চোখ বন্ধ করে নিলো। তার দম যেন আটকে আসছে।

চলবে……

লেখাটা শেষ করা একটু আগেই মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাই ঠিক মতো এডিট করতে পারি নি। অপেক্ষা করা সত্ত্বেও আবার পড়তে পারছি না। সরি।

[আশা করি ভুল ক্রুটি ক্ষমা করবেন ও ভুল হলে দেখিয়ে দিবেন।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here