মশারি পর্ব-১০

0
1032

বর বউয়ের রোমান্টিক ঝগড়ার গল্প :

♠♥♠ #মশারি ♠♥♠

♣♣ পর্ব : ১০

গল্পকার : #গল্প বুড়ি তিলোত্তমা
!
!
!
!
ভাবীর কাছে জিনিস টা চাইতেই…..
ভাবী এমন ভাবে আমার দিকে তাকালো,….
মনে হয় জিনিষ চাওয়াতে ভাবী একপ্রকার শক খেলো..””””
আর বললো তোর শরীর ঠিক আছে তো”””:
তুই চাইছিস এটা আমার কাছে….
আমি তো নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছি না””””
!
আমি বললাম প্লিজ দাও না…… #মশারি টা “”””””
!
বড় ভাবী : ১০ বছর হয়েছে এ বাড়ীতে বিয়ে হয়ে এসেছি। এ ১০ বছরে জীবনে দেখলাম না তোকে মশারির নিচে ঘুমাতে। তুই তো সেই মেয়ে, যে শীতের দিনেও এত মশার মধ্যে #মশারি টানিয়ে কি মশারির নিচে অব্ধি ঘুমায় নি । সে কি না আজ এই গরমে দিনে #মশারি চাইছিসে। আজ তোর হল টা কি বলতো।

!
আমি : ভাবী তুমি এমন ভাব করছো যেন, সারা দুনিয়া মনে হয় আমি উল্টে দিয়েছি। আর হ্যা তোমার কাছে #মশারি চেয়েছি। তোমার কলিজা চাইনি ভুনা করে খাওয়ার জন্য।
!
ভাবী : তা চাইলেও এত শক্ড পেতাম না। কারন এত দিন মাথা চিবিয়ে খেয়েছিস তো। কলিজাটা আর বড় কি ?
!
আমি : মানে “””””। এই থাক তোমাকে দিতে হবে না। আমি বরং আম্মুর কাছে গিয়ে চাই।

!
যখনি এই কথা বললাম, ভাবী আমাকে পিছন থেকে টেনে ধরে বলল, এই কি আম্মাকে মারতে চাইছিস নাকি ? তোর #মশারি চাওয়া শুনলে, নির্ঘাত আম্মা আব্বা দুজনেই স্টক করবে। আগে তুই সব কথা আমাকে খুলে বল । তুই #মশারি চাইছিস কেন ?
!
ভাবীর প্রশ্নের উত্তর দিতে, আমার বর এবং শ্বাশুড়ী মায়ের ইতিহাস শুনালাম। এই কথা শুনে, ভাবী তো হাসতে হাসতে শেষ। এর সাথে যোগ হলো, আমার ছোট ভাইয়া তুহিন আর তার বউ। ওরা ও তো শুনে খুব হাসছে।
!
কথায় বলে না,
কারো বা পৌষ মাস
আর কারো বা সর্বনাশ “””””
!
আমি ছোট ভাইয়াকে বললাম, ভাইয়া তুমি আর দাঁত কেলিয়ে হেসো না তো “””””
তোমার দাঁত কেলানি দেখলে আমার রাগে গা জ্বলে “”””!
!
অমনি ভাইয়া হি হি হি করে বলে উঠলো, সবি আমার অভিশাপের ফল। তুই যদি সে দিন আমায় মশারি টানিয়ে দিতি। তবে তোর আজ এই দিন দেখতে হত না।
!
ওর কথা শুনে আমিও বললাম, শোনো কাউকে অভিশাপ দিলে না, নিজের ওপর ও পরে। এই জন্যই তো, আজ পর্যন্ত তুমিই #মশারি টানাও ! ভাবী জীবনেও টানালো না। আর দোয়া করি, বাকি জীবনটাও যেন, তুমিই টানাও ভাবী যেন না টানায় ।
!

ভাবী আমার হাতে বেগুনী কালারের এক #মশারি দিয়ে বলল,, এই নি তোর বরের জন্য #মশারি। আর হ্যা তোর এই #মশারি টানোর গল্পটা তো, তোর ভাইয়ার ফোন দিলে,তার কাছে অবশ্যই বলতেই হবে।এই বলে, ভাবী আবার হেসে হি হি হি করে উঠলো “””””
!
আমিও বললাম, ভাইয়া যদি এই কথা শুনে , অজ্ঞান হয় বড় গিন্নী । তবে মাথায় পানি দেবে কে?
!
কারনটা হচ্ছে, I hate #মশারি ,! আর আমার মশারি টানানোটা এতটা আশ্চর্যের বিষয়, যেমন টা
পানিতে থেকে ব্যাঙ এর সর্দি লাগাটা একই বিষয়।
!
আরেক কথা তো বলাই হয়নি আপনাদের, আমার বড় ভাইয়া হলেন প্রবাসী। সে প্রায় ১২ বছর যাবত সৌদিআরব থাকেন। তার এ বছর আসার কথা ছিল। কিন্তু আসেনি। কারন মা বাবা হজ্ব করতে যাবেন তো, তাই ভাইয়া এবছরের ছুটি ক্যান্সেল করেছে।
আর আমার বড় ভাইয়াটা অনেক ভাল। আমাকে অনেক আদর করে। ছোট ভাইয়াটার মত আমাকে রাগায় না।
!
হঠাৎ ছোট ভাবী চেঁচিয়ে বলে উঠলো, ঐ তাড়াতাড়ি যা, দেখ তোর বরকে আবার মশায় উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে kiss করা শুরু করলো নাকি।
আবার বড় ভাবী বলল, তবে কিন্তু তোর শ্বাশুড়ী তোর নামে ছেলে নির্যাতন আর অপহরণের মামলা দিবে।
!
আর এই কথা শুনে আমরা অনেক হাসাহাসি করলাম। সত্যিই হাসি মজা করতে করতে রাত প্রায় সারে দশটা বেজে গিয়েছে। আমিও আর দেরি না করে রুমে চলে এলাম।
!
রুমে এসে দেখছি সাহিল ঘুমাচ্ছে। ওর ঘুমন্ত মুখটায় আমার চোখ পরতেই কেমন জানি একটা মায়া পরে গেল। চেহারার মাঝে নীরহ নীরহ ভাব। খোঁচা খোঁচা দাড়িগুলো লাইটের আলোতে চিকচক করছে।
ফ্যানের বাতাসে ওর চুলগুলো বারবার কপাল ছুঁয়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে ক্রাশ খাওয়ার মত।
মনে হয় আমি এই প্রথম কোন ছেলেকে দেখে ক্রাশ খাইলাম।
!
কথায় আছে না,
ক্রাশ খাইলে, বাঁশ খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়।
!
আমার হয়েছে সেই অবস্থা।
কারন মশারিটা তো নিয়ে আসলাম। এখন এটা টানাবো কি করে। আমার রুমে তো মশারি টানানোর কোন ব্যবস্থাই নাই।
!
কি করি কি করি ভেবে মরছি।
ভাবতে ভাবতে, তিন কোন লাগালাম। কিন্তু এক কোনা লাগাতে খুব হিমশিম খাচ্ছি। ঐ কোনা টা লাগাতে হবে ওয়াল ফ্রেমের তারকাটাতে।
আর আমার যে হাইট তাতে তো সম্ভবই না।
ভাবলাম চেয়ারের উপর দাড়িয়ে লাগাই। কিন্তু খেয়ার করে দেখলাম রুমে চেয়ার তো দূরের কথা, আমার ড্রেসিং টেবিলের টুলটা অব্দি নেই।
মনে হয় সবাই এসেছে বলে, এ জন্য সবার বসার জন্য টুল চেয়ার যা আছে সব নিয়ে নিছে আমার রুম থেকে।
!
এখন এতটা রাগ হচ্ছে, বরটার উপর কি বলবো।
সব তো তার জন্যই হচ্ছে!
মনে মনে রাগ করে তো বোকতে বোকতে ওনার চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করলাম।
!
বেটা , বান্দর, কুত্তা বিলাই, শয়তান, হনুমান, তেলাপোকা, টিকটিকি, জলহস্তী।
!
গন্ডারের মত নাক উঁচু করে
শান্তিতে আরাম করে ঘুমাচ্ছে। আর এদিকে আমার আরাম হারাম করে দিয়েছে ।
আর কয়দিন যেতে দে না তোর শুধু আরাম না জিনা হারাম করে দিবো।
!
আমার জীবনটা পুরাই পান্তা ভাতের পানি করে দিল।
তোরে বদদোয়া দিচ্ছি, তোর
কপারে যেন, একটা দজ্জাল মার্কা বউ জুটে।
!
হায় আল্লাহ আমি একি দোয়া দিলাম। আমিই তো এই লোকটার বউ।
!
চিন্তায় কোন কূল কিনারা না পেয়ে ওয়াশরুমের ভিতরে প্লাসটিকের মোড়ার কথা মনে পরলো। এখন এটা দিয়েই কাজ চালাতে হবে। মোড়াটা এনে তার উপর দাড়ালাম। তারপরও একটুর জন্য নাগাল পাচ্ছি না।
আমার খুব কান্না পাচ্ছে, আর বলছি আল্লাহ গো আমারে অদৃশ্য করে দাও।
!
ওমা! এ কথা বলতেই দেখি, আমি অটোমেটিক উঁচু হয়ে, মশারির কোনাটা তারকাটায় লাগালাম।
!
মনটা বেশ খুশি খুশি লাগছে।
হঠাৎ অনুভব করলাম, আমার কোমড়ে ধরে কেউ উঁচু করে রাখছে।
ভয়ে বুকটা ধুপ ধাপ করছে। ভিষন অস্থির লাগছে। এসব ভয় হচ্ছে সনি টিভির আহট দেখার রিএ্যাকশন।
!
এর মধ্যেই ধাপ করে নিচে নামালো। আমি ভয়ে পিছোন ফিরতেও ভয় পাচ্ছি। যদি পিছন ফিরতে নিলে ঘাড় মোটকে দেয়””””
!
তারপর ও সাহস করে পিছনে তাকালাম…,…
পিছন ফিরে দেখি আমার শয়তান বরটা আমাকে দেখে হাসছে “”‘
কারন আমার চেহারাতে স্পষ্ট ভয়ের ছাপ দেখা যাচ্ছিল।
!
আমি : আ……. প….. নি””””
আপনি কখন উঠলেন ? আপনি না ঘুমিয়ে ছিলেন।
!
সাহিল : ঘুম থেকে চোখ মেলে দেখি বউটা আমার পাশে নেই। এদিক ওদিক তাকিয়ে না পেয়ে সামনের দিকে তাকাতেই দেখি বউটা আমার বিড়বিড় করে কি কি যেন সব বলছে। কি বলছে তা শুনিনি, কিন্তু মুখের ভঙ্গিমায় বুঝলাম বোকে কারো চৌদ্দ গুষ্ঠী উদ্ধার করছে। তারপর দেখলাম মশারির কোনাটা লাগাতে গিয়েও লাগাতে পারছে না। তাই ভাবলাম বউটার একটু উপকার করি।
!
আমি : এই আপনি আমার কি উপকারটা করলেন শুনি। বরং আমার অপকার করছেন। আমাকে ভয় দেখিয়েছেন।
!
সাহিল : কি মিথ্যুক রে বাবা ! আমি ৪৫ কেজি ওজনের মানুষটাকে উচু করে ধরলাম। তারপরও বলছে আমি নাকি উপকার করিনি। আমাকে দেখে নাকি ভয় পেয়েছে ! আমার এরকম নিরহ চেহার দেখেই যদি এত ভয় পান । তবে ভূত দেখলে কি অবস্থা হবে আল্লাহ জানে !
!
বলেই হি হি হি করে হেসে দিলো।
!
আমি : এভাবে সেনাপতি বিটকেলের মত দাঁত কেলিয়ে হাসলে কে না ভয় পাবে শুনি। আরেকটা কথা আমার ওজন নিয়ে একদম খোটা দিবেন না। এত উপকার করার ইচ্ছে থাকলে, নিজেই কোনাটা লাগাতে পারতেন। এতে করে কষ্ট করে ৪৫ কেজি ওজনের মানুষটাকে উচু করতে হত না।
!
!
সাহিল : তা ঠিক। কিন্তু বউয়ের কোমর ধরার মজাটা তো পেতাম না।
!
!
আমি রাগ করে বিছানায় এসে শুয়ে পড়ি। আর মনে মনে বলি আস্ত একটা লুচু মার্কা লোক। মিনমিনে মিচকে শয়তান। এর পর ছুঁয়ে দেখনা ৪৪০ বোল্টের কারেন্ট শক্ দিয়ে দিবো।
!
সাহিল : মনে মনে বকা দেয়া শেষ হলে একটা কথা বলি।

!
আমি : আপনাকে মনে মনে বোকছি তা আপনি জানলেন কিভাবে ?
!
!
সাহিল : আমি শুনেছি আপনার যখন কারো ওপর রাগ হয়। তখন আপনি তাকে মনে মনে বোকে তার গুষ্টির স্রাধ্য করেন।

!
আমি : এই আপনি বলেন তো, আপনাকে আমার সম্পর্কে এ information দেয় কে। তার নাম টা বলেন দেখি।
!
!
সাহিল : তার নাম বললে, কি করবেন শুনি ?
!

আমি : আগে নামটা বলেন না, তাকে পেলে লবন মরিচ লাগিয়ে কাঁচাই খেয়ে ফেলবো।
!
!
সাহিল : মাথা খারাপ নাকি !
আমি তার নাম বলি, আপনি তার এই হাল করেন। ক্রমশ প্রকাশ্য—
!
!
আমি : থাক আপনাকে বলতে হবে না। আমি নিজেই বের করে নিবো। আর হ্যা আপনি জানি কি বলতে চাইলেন।

!
সাহিল : হুম! আপনার নামটা মিষ্টি রেখেছে কে ?
!
!
আমি : কেন।? হঠাৎ এ প্রশ্ন । বলছি আমার দাদীমা রেখেছিল।

!
সাহিল : না বলছি……লাম আরকি তার কি ডায়বেটিকস্ ছিল?
!
!
আমি :হ্যা ! তা আপনি জানলেন কিভাবে ?
!
!
সাহিল : না……… মানে আর কি “””””
সে মনে হয়, ডায়বেটিকস্ হওয়ার পর মিষ্টির স্বাদ টা ভুলে গিয়েছিল। তা না হলে, আপনার মত পাজি আর দুষ্ট মেয়ের নাম মিষ্টি রাখে।
( একদমে সাহিল কথাটা বলল)
!
!
আমি : বললাম মানে…….?
আপনি কি বলতে চাইছেন।

!
রাগে মনে মনে বলছি, ঘুমা একবার।রাতে মুখের ওপর বালিশ চাপা দিয়ে আবার ছেড়ে দিবো। তবে বুঝবি, #তাসফিয়া তিলোত্তমা মিষ্টি কি জিনিষ।
আর কার সাথে লাগতে এসেছিলে বাছা!
!
!
সাহিল : ওহ ম্যাম।! আমার সকালের পাওনা টা কিন্তু বাকি আছে।
!
!
আমি : আপনি জানেন না,
বাকির নাম ফাঁকি “””
এই বলে ওড়না দিয়ে মুখটা ঢেকে শুয়ে রইলাম।
!
!
সাহিল : তা বুঝলাম ! কিন্তু যে কোনদিন #মশারির বাহিরে মুখ ঢেকে ঘুমায় না।
সে আজ মশারির ভিতর মুখ ঢেকে শুয়ে আছে।
ব্যাপার টা কি?
!
!
আমি : মশারির বাহিরের চেয়ে মশারির ভিতরে ভাইরাসজনিত মশা আছে তো। তাই মুখ ঢেকে রাখলাম। কখন না কখন গালে মুখে কামড় বসিয়ে দেয়। তার জন্যই এই protection.

!
সাহিল : ওহ এবার বুঝলাম।
!
!
আমি লাইটা অফ করে দিলাম একটা ঘুম। নিজের রুমে ঘুমানোর শান্তি টা একদম অন্যরকম।
একবারে ফযরের আযানের শব্দে ঘুম ভাঙ্গল। তাড়াতাড়ি ওঠে দুজনেই ফ্রেশ হয়ে ওযূ করে নামায আদায় করলাম।
তারপর আবার একটা ঘুম দিলাম। বাবারবাড়ি বলে কথা।
!
হঠাৎ করে কারো জড়িয়ে ধরাতে সকালে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল””””
চোখ মেলতেই তো আমি অবাক”””””””’
!
!
!
চলবে””””””‘

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here