মশারি পর্ব-৪-৫

0
1330

বর বউয়ের রোমান্টিক ঝগড়ার গল্প :
♥♠♥ #মশারি ♥♠♥

♣♣পর্ব- ৪,৫

লেখিকা: #গল্প বুড়ি তিলোত্তমা
!
!
!
!
তড়িঘড়ি করে উঠতে গিয়ে আরেক বিপত্তি ঘটালাম….
আর ভাল্লাগেনা “””!!!!!
!
আমার মশারির নিচে শোয়ার অভ্যাস নেই। তাই বিছানা থেকে নামতে গিয়ে মশারির সাথে জড়িয়ে গিয়েছি । তার উপর ওনি ও আমার সাথে সাথে মশারির সাথে জড়িয়ে গিয়েছে। কি যে এক হযবরল কান্ড কি আর বলবো ।
আমার জীবন তো শেষ। এত বড় একটা মানুষ, আমার গায়ের উপর পরেছে । আল্লায় জানে শরীরের হাড়গোড় কয়টা যে ভাঙ্গছে। বর্তমানে দুজনের অবস্থা কারেন্ট জালের ভিতর থাকা মাছের মত । আমি তো বের হওয়ার জন্য ছটফট করছি। কিন্তু পারছি না।
আরেক জন দিব্যি চুপচাপ আছে।
!
!
আমি : ওরে আল্লাহ কি ভারী মানুষরে বাবা !
এই আপনি আমার উপর থেকে সরবেন না।
ধ্যাত এভাবে থাকা যায় নাকি ?
!
!
সাহিল : আমার কিন্তু বেশ লাগছে । মনে হচ্ছে এক খাঁচার ভিতর দুই পাখি ।
!
!
আমি : এই ঢং বাদ দিয়ে উঠলেন ! দাড়ান আমি উঠতেছি ।
এই বলে শরীরের সব শক্তি দিয়ে ধাক্কা মেরে উঠতে গেলাম….
ঠিক তখনি চুলের মধ্যে টান লাগলো..
ওহ্ মাগো বলে চেচঁয়ে উঠলাম ।
!
!
সাহিল : আবার কি হলো ? আমি কিন্তু কিছু করিনি …
!
!
আমি: আপনি কিছু না করলে কি হবে, আপনার জিনিষপত্র সব তো বেপরোয়া ! আমার চুল কোথায় যেন আটকে গিয়েছে ? আমি এখন নড়তে চড়তে পারছিনা। আর ওনি আমার এত কাছাকাছি যে,আমি তার গরম নিঃশ্বাস অনুভব করতে পারছি….
!
!
সাহিল : ওহ্ তাই বুঝি ! আমার জিনিষপত্র গুলো বেপরোয়া। তা সে গুলো শুধু আপনার সাথেই এমনটা কেন করছে ?
!
এই কথা বলে, ওনি যখন উঠতে যাবেন । ঠিক তখনি, তার মাথার সাথে আমার মাথা এমন ভাবে লাগলো । মনে হয় আমার মাথার সব যন্ত্রপাতি গুলো লুস হয়ে গিয়েছে । রাগে আমি আবার উঠার চেষ্টা করলাম। ঠিক তখনি আবার চুলে টান খেলাম ।
!
!
আমি : এই আপনি কিছু করবেন না ? নাকি এভাবেই থাকবেন ? আর আপনার ফোনের টর্চটা জ্বালিয়ে আবার নিভিয়েছেন কেন? আমার মনে মনে এত রাগ হচ্ছে যে কি আর বলবো। ,মনে হয় ঘুষি মেরে লোকটার নাকটা থেতলে দেই।
!
!
সাহিল : আমি তো কিছু করতেই চাই আপনিই তো…
!
আমি ; মানে ?
আপনি কি বলতে চাইছেন ….
!
!

সাহিল : না কি আর বলবো, আপনি তেলাপোঁকার মত যেভাবে….
!
কথাটা বলতেই আমার গলা শুকিয়ে আসছে !
!
!
আমি: তেলাপোঁকা মানে….
কোথায় তেলাপোঁকা ? তেলাপোঁকা দেখে আমি ভিষন ভয় পাই… প্লিজ টর্চটা জ্বালান না ! “”
!
!
সাহিল : হা হা হা
তেলাপোঁকা কোথায় মানে !
মশারির ভিতরেই তো আস্ত একটা তেলাপোঁকা …
!
!
আমি ভয়ে তার, পিঠ আকরে ধরলাম । দুজনে দুজনার বেশ কাছাকাছি আছি।
দুজন দুজনের গরম নিঃশ্বাস অনুভব করতে পারছি । এ যেন এক অন্যরকম অনুভূতি….
হঠাৎ তার টর্চের আলো আমার মুখে পরতেই আমি দেখি, সাহিল আমার দিকে অপলক দৃষ্টতে তাকিয়ে আছে । তার তাকানো দেখে আমি লজ্জায় আমার চোখের পলক নিচে নামাই ।
!
!
সাহিল কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে, তার শার্টের বোতাম থেকে আস্তে করে আমার চুল ছাড়িয়ে দেয় । আর কানে কানে বলে আমি তো আপনার কথা বলেছি, তেলাপোকার মত ছোটাছুটি করেন ।
!
!
কথাটা শুনতেই আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল। তার মানে আমি…..
!
!
সাহিল: জ্বী আপনিই সেই তেলাপোঁকা।
!
!
কথাটা শুনে এত রাগ হচ্ছে যে,আমাকে কি না তেলাপোঁকা বানিয়ে দিল । দাড়া পরে বুঝাবো মজা।
!
তারপর দুজনে অবশেষে মশারি থেকে বের হলাম।
এরপর দুজনে ফ্রেশ হয়ে ফজরের নামায আদায় করলাম….
!
কিছুক্ষন পর পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনতে পেলাম,,,,
এই তো একটু পরের হতে চলেছে, আমার বিবাহিত জীবনের প্রথম সূর্যোদয়…..
!
!
!
চলবে
.
বর বউয়ের রোমান্টিক ঝগড়ার গল্প :
♠♥♠ #মশারি ♠♥♠
♣পর্ব :৫
♦গল্পকার: #গল্প বুড়ি তিলোত্তমা
!
!
!
কিছুক্ষন পর পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনতে পেলাম,,,,
এই তো একটু পরেই হতে চলেছে, আমার বিবাহিত জীবনের প্রথম সূর্যোদয়…..
!
বারান্দার গ্রীল ধরে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছি, আর ভাবছি, জায়গা ভেদে সকালগুলো কতটা অন্যরকম হয়। যেমন গ্রামের সকাল টা হয় পাখির কিচিরমিচির শব্দে আর মানুষের ব্যতি ব্যস্ততার মাঝে। কিন্তু শহরের সকালগুলো হয় নিরব নিঃস্তব্দ। নেই মানুষের আনাগোনা নেই কোন কোলাহোল । শুধুই কিছু পাখির আর যানবাহনের শব্দ । সত্যিই ব্যাপারটা খুবি interesting.
!
হঠাৎ মনে পরে গেল, মেয়েদের জীবনটাও কত টা বিচিত্র। কাল ছিলাম কোথায়, আজ আছি কোথায় । আবার ভবিষ্যতে কোথায় থাকবো তাও জানি না। এসব ভেবে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লাম।

এখন সময় প্রায়, ভোর সারে ৫ টা। এই সময় তো আর ঘুমানো যাবে না । তাই ভাবলাম কিছুটা সময় বারান্দায় থাকি । তাই বারান্দায় রাখা চেয়ারটাতে একটু হেলান দিয়ে বসলাম। আর আজকের ঘটনাগুলো মনে করে চুপিচুপি হাসছি। আবার একটু একটু রাগ আর লজ্জাতেও মূর্ছা যাচ্ছি। এসব ভাবতে ভাবতেই আবার চোখ দুটো লেগে আসলো…..
ঘুমের ঘোরে হালকা হালকা বাতাস অনুভব করছি।
যে বাতাসটা আমার চোখ মুখ চুল ছুঁয়ে যাচ্ছিল।
!
!
সাহিল বারান্দায় উকিঁ দিয়ে দেখে আমি চেয়ারে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছি । আমার সামনের ছোট ছোট চুলগুলো আমার চোখমুখ ছুঁয়ে আছে।
!
সাহিল: মেয়েটার চেহারাটা একবারে মায়াবিনী মায়াবিনী লাগছে। একদম শিশুর মত মুখ। ও দেখতে এমনিতেই বাচ্চা বাচ্চা।
!
এসব ভাবতে ভাবতে সাহিল আমার মুখের উপর ফু দিয়ে চুলগুলো সরিয়ে দিচ্ছে । এর মাঝে সাহিলের এক অন্যরকম ভাললাগা কাজ করছিল । যে ভাললাগা টা সাহিল এর আগে অনুভব করে নি।
!
!
এর মাঝে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। আমি চোখ মেলে সাহিলকে দেখতে পেয়ে হটাৎ চমকে উঠি। কারন আমাদের মুখ দুটো খুব কাছাকাছি ছিল। তাই আমি চমকে উঠে বললাম..

!
আমি : আ.. আপনি ।
আপনি কি করছেন ?
!
!
সাহিল কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেল। আর বলল…
!
!
সাহিল : না মানে “! কিছু না
এর আর কি দেখছিলাম বউটা আমার বে ঘোরে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিল। তাই দেখছিলাম আর কি।
!

আমি : কি? আমি নাক ডাকি । আপনি এত বড় মিথ্যা কথা বলছেন আমার নামে । মিথ্যুক একটা!
!
!
সাহিল : হা হা হা । আমি তো যা সত্যিই তাই বললাম । আর কেউ নাক ডাকলে, সে নিজে জানে না কি?
!
!
আমি : মোটেও না!
আপনি মিথ্যা বলছে। এই বলে চেয়ার থেকে তাড়াতাড়ি করে উঠতে যাবো ।
!
ঠিক তখনি ওর পায়ের সাথে পা লেগে পরে যেতে নিলাম….
আর অমনি সাহিল ওর হাত দিয়ে আমায় ধরলো….
আর ভয়ে আমি চোখদুটো বন্ধ করে নিলাম।
!
!
সাহিল : এই যে মিসেস চোখটা খুলুন। আপনি ঠিক আছেন। আর হ্যা আপনাকে কি আমি এমনিতেই তেলাপোকা বলি । শুধু তেলাপোকার মত লাফ মেরে উঠেন।
!
!
আমি : কি আপনার এত বড় সাহস আমাকে তেলাপোঁকা বলা । আর আপনি যে একটা জলহস্তীর মত সব সময় আমার সামনে এসে দাড়ান। তার বেলায় কি ? হুম বলেন?
!
!
সাহিল : হা হা হা।
আমার মত এমন একজন সুপুরুষকে কি না বলে জলহস্তী । মনে হয়, আজ রাতে মাথায় ঠোকা লেগে পুরা মাথাটা গিয়েছে।
!
!
আমি : ওরে আমার সুপুরুষ । দেখতে পুরা জিরাফের মত লম্বা। মিচকে শয়তান একটা ( মনে মনে)
হ্যা মাথাটা যাবে না এত বড় জলহস্তীর সাথে লেগেছে যে। ,এই বলেই মুখ ভেংচি দিলাম।
!
!
সাহিল :ওহ্ তাই বুঝি ।
তাহলে তো আরেকটা ঠোকা দিয়ে মাথাটা ঠিক করে দিতেই হয়।
!
!
যেই কথা, সেই কাজ। অমনি আমার মাথার সাথে মারলো আরেক ঠোকা।
!
!
আমি : ওরে আল্লহ! ামার মাথা শেষ । আসলেই আপনি একটা, যা ইচ্ছা তাই।।
!
এই বলে তাকে ধাক্কা দিয়ে রুমে এলাম । রুমটা পুরা অগোছালো । অগোছালো রুমটা দেখেই আমার অস্বস্তি হচ্ছে। কারন আমি খুব টিপটাপ থাকতে পছন্দ করি। তাই রুমটা গোছাতে লাগলাম । প্রায় পুরা রুমটাই গোছালাম, বিছানা থেকে শুরু করে সব । এখন শুধু মশারি টা ভাজ করবো।
যখনি মশারি ভাজ করতে যাবো। তখনি মশারিটা হাতে নিয়ে চোখ দুটো ছানাবড়া হয়ে গেল………

!
!
!
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here