মশারি পর্ব-৬

0
1244

বর বউয়ের রোমান্টিক ঝগড়ার গল্প :

♠♥♠ #মশারি ♠♥♠

♣♣ পর্ব- ৬

গল্পকার :#গল্প বুড়ি তিলোত্তমা
!
!
!
!
যখনি মশারি ভাজ করতে যাবো। তখনি মশারিটা হাতে নিয়ে চোখ দুটো ছানাবড়া হয়ে গেল………
!
!
হায় আল্লাহ ! মশারির এ কি অবস্থা। আমি হতবাক হয়ে দুহাত দিয়ে মশারিটা টেনে ধরে রেখেছি । এই ছেড়া মশারির ফাঁকার সামনে এসে সাহিল দাড়িয়ে আছে । আর আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে
তাকিয়ে হাসছে। আর বলছে, আজ যে অত্যাচার টা হলো এ মশারির উপরে। এ অবস্থা তো হওয়ারি কথা ছিল । মশারি টা দেখে মনে হচ্ছে, এটার ভিতরে কোন কৈ মাছ আটকা পরেছিল।
!
!
আমি : মানে? আপনি কি বলতে চাইছেন? যা বলার পরিষ্কার ভাবে বলেন ?
!
!
সাহিল : না মানে…… আর কি। আপনাকে কিছু বলিনি আমি।
!
!
আমি : না আপনি বলেছেন। এবার কিন্তু আমি মুখ খুলবো।
!
!
কি পাজি লোকরে বাবা, আমাকে বলে কিনা।
আমি কৈ মাছ। নিজে যে একটা জলহস্তী তার বেলায়।
!
!
সাহিল : আমি আবার কি বললাম । নিজে মনে হয় মুখে কুলুপ এটে বসে আছেন।
!
!
আমি : হ্যা ! কুলুপ এটেই তো বসে ছিলাম । আপনার জন্যই তো মশারিটা ছিড়লো। আপনার মত একটা জলহস্তী যদি মশারির ভিতর ঢুকে, তবে কি তা আর আস্ত থাকে।
!
!
সাহিল ; আমি স্যালেন্ডার করলাম। সব দোষ আমার । এবার খুশিতো।
!
!
আমি: হুম । নিজের দোষ শিকার করার জন্য ধন্যবাদ।
!
!
সাহিল : দোষ শিকার না করে উপায় আছে না কি। আমি তো আগেই জানতাম আপনার যুক্তিতে আমি পেরে উঠবো না ।

!
আমি : মানে ।
!
এ লোকটা আমার সম্পর্কে এত কথা জানে কিভাবে । জিজ্ঞেস করি তো। আর যখনি জিজ্ঞেস করতে যাবো । তখনি কে যেন দরজাতে নক করলো। আমি তাড়াতাড়ি করে মশারিটা খাটের ড্রয়ারে রাখলাম। এর মধ্যে সাহিল দরজা খুলে দিল। আমি তাকিয়ে দেখি দরজার সামনে সায়লা….
!
!
সায়লা : গুড মর্নিং মিষ্টি ভাবী । তা কেমন ঘুম হলো তোমার ?
!
!
আমি : মর্নিং। হুম! ভাল।
তা তোমার ঘুম কেমন হলো ?
!

আমি দেখছি সায়লা রুমের চারপাশটা ভাল ভাবে দেখছে আর বললো….
!
!
সায়লা : হুম ! ভাল। কিন্তু ভাবী ! আমি কি ভাইয়ার রুমে এসেছি, নাকি অন্যকারো রুমে এসেছি?
!
!
সাহিল সায়লার মাথায় টোকা দিয়ে বলে, এই ফকিন্নি তুই আমার রুম চিনিস না। তোর চোখে কি ছানি পরছে নাকি?
!
!
সায়লা : না চোখে ছানি পরে নাই বলেই তো বলছি, তোর গোয়াল ঘরটা আজ কেন জানি ঘর ঘর মনে হচ্ছে তাই ।
!
!
সায়লার এ কথা শুনে, সাহিল ওকে আবার মারতে এলে। সায়লা আমার পিছনে এসে আমার কাঁধে হাত রাখে। আর ওর ভাইয়াকে ভেংচি কাটে। এদের কান্ড দেখে আমি হেসে দেই। আমার সাথে সায়লা ও হিহিহি করে হেসে দেয়। সত্যিই বেচারা সাহিলের মুখটা দেখার মত ছিল । আর মনে মনে, বলছিলাম জলহস্তী থেকে গরু । বে…. চারা ।
!
!
সাহিল : যা আমার রুম থেকে বের হয়ে যা।
!
!
সায়লা : দেখ ভাইয়া । আমি তোর রুমে এমনিতেই আসিনি। আম্মু তোদের ডেকেছে তাই এসেছি। আর শোন, এই রুমটা এখন তোর একার না,এটা আমার মিষ্টি ভাবীর ও রুম । বুঝলি…..
!
!
এই বলে সায়লা চলে গেল। আমি ভাবলাম, রুমের বাহিরে যাওয়ার আগে আম্মুর সাথে একটু ফোনে কথা বলি । কিন্তু কাল ফোনটা যেন কথায় রেখেছি মনে করতে পারছিনা । রুম গুছাতে গিয়ে ও তো দেখলাম না । তবে এখন কোথায় খুঁজি । তাই উপায় না পেয়ে সাহিল কে বললাম, আপনার ফোনটা দেন তো, আমার ফোন খুজেঁ পাচ্ছি না। রিং দিয়ে দেখি ফোনটা কোথায় আছে। আর আম্মুকে ফোন দিবো

!
সাহিল : তো । আমার ফোন থেকে কল করো ।
!
আমি : না মানে… আম্মুর নতুন নাম্বার তো আমার মুখস্ত নেই। আপনি বরং আপনার ফোনটা আমাকে দেন। আমি ফোনে কল করে দেখি আমার ফোন টা কই।
!
!
এ কথা বলার সাথে সাথে, সাহিল তার ফোনটা আমার হাতে দিল। আমি ফোনটা হাতে নিয়ে আমার নাম্বারে কল করতেই অবাক হয়ে গেলাম ….
কারন আমার ছবি দিয়ে আমার নাম্বার তার মোবাইলে সেভ করা । আমি যেন হতবাক হয়ে ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে রইলাম। ঐ দিকে আমার ফোনে রিং বেজেই চলছে। সে দিকে আমার কোন খেয়ালি নেই। হঠাৎ লাগেজের চেইন খোলার শব্দে ধ্যান ভাঙ্গলো….
!
!
আমি : এই আমার লাগেজে হাত দিবেন না। আমি দেখছি।
!
কাল কাপড় বের করতে গিয়ে কাপড় আর ফোনটা এক সাথেই রেখেছি, মনেই নেই আমার। আর আমার লাগেজে আমার পার্সোনাল জিনিষপত্র আছে। সে গুলো সে দেখলে আমি লজ্জা পাবো না বুঝি।
!
!
সাহিল : এই যে মিসেস, আপনার লাগেজে হাত দেয়ার কোন ইচ্ছেই আমার নেই।
নেহাৎ আপনার ফোনটা খুজছিলেন তাই
!
!
আমি : আপনার এই হেল্পের জন্য থ্যাংকস ।
!
সাহিল : most Welcome.
!
এই বলে সাহিল ওয়াশরুমে চলে গেল শাওয়ার নেয়ার জন্য। আমিও এই ফাকেঁ আম্মুর ফোনে রিং দিলাম । রিং বাজতেই আম্মু ফোন রিসিভ করলো….
!
!
আম্মু : হ্যালো কেমন আছিস মা।
!
আমি : আসসালামু আলাইকুম আম্মু ।
!
আম্মু : ওয়া আলাইকুম আসসালাম। কেমন আছিস তা তো বললি না।
!
আমি : আলহামদুলিল্লাহ ভাল। তোমাদের জিজ্ঞাসা করবো না তোমরা কেমন আছো ।
!
আম্মু : কেন রে মা । রাগ করেছিস ?
!
আমি : না রাগ করবো কেন ? তোমরা তো ভালই আছো। কারন আমাকে বিদায় করেছো না ভালই তো থাকবে । আর বাবা তো মনে হয় সব থেকে বেশি ভাল আছে । যাই হোক তাজ আর তাহা কেমন আছে ।
!
তাজ হচ্ছে আমার বড় ভাইয়া তুষারের ছেলে আর তাহা হচ্ছে ছোট ভাইয়া তুহিনের মেয়ে। এ দুটোর আমার জন্য জান যায়। আমিও এ দুটোকে খুব ভালবাসি
!
!
আম্মু : তোর বাবাকে তুই নিজেই দেখেই বলিস। সে কেমন আছে। আর ও দুটো তো তুই যাওযার আগে ঘুমিয়েছে, এখনো ওঠেনি। তা সব মিলিয়ে তুই ভাল তো। আর জামাই বাবাজী কেমন আছে।
!

আমি : হুম সব ভাল আর সবাই ভাল আছে । আম্মু তনুর কি খবর । ও কি কুমিল্লা থেকে ফিরছে ।
!
!
আম্মু : না । ও নাকি আজ ফিরবে । আর শোন চিন্তা করিস না, বাড়ির সবাই তোর শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে । শুধু আমি যাবো না। আচ্ছা তাহলে রাখি।
!
আমি : হুম আম্মু। আল্লাহ হাফেজ।
!

ফোনটা রাখতেই দেখি সাহিল ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসেছে। সাদা টাউজার পরা আর খালি গায়। গলায় তোয়ালে ঝুলানো। সে মাথায় হাত দিয়ে চুল ঝাকাচ্ছে আর সেই চুলের পানি ছিটা আমার উপর পড়ছে । হঠাৎ তার পিঠের দিকে আমার চোখ পরতেই, আমি আমার জিহ্বায় কামড় দিলাম……..

!
!
!
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here