শেষ বিকেলের আদর❤️পর্ব : ১১

0
4113

#শেষ বিকেলের আদর❤️
#রিত্তিকা ইসলাম
#পর্ব : ১১

🌸
আকাশটা থমথমে হয়ে আছে।বিশাল আকাশ জুড়ে ভেসে বেড়াচ্ছে কালো মেঘের দলা।বোধ হয় বৃষ্টি হবে।কিছুক্ষণ আগেও আকাশ ছিলো পরিষ্কার, ঝকঝকে।মস্ত বড় চাঁদ আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে মিটমিট করে জ্বলতে থাকা অসংখ্য তারার মেলা।হঠাৎ করেই কিছু কালো মেঘ এসে ওদের ঢেকে দিয়ে গেলো।আকাশের বোধ হয় হঠাৎ করেই মন খারাপ হয়েছে।যেমন রোশনির হয়েছে।কিছুক্ষন পর নিশ্চয় মন খারাপটা বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়বে মাটিতে।আকাশ যতো সহজে কান্না করতে পারে রোশনি তা পারে না।ওর যে কান্না করার অধিকার নেই।কান্না তো দূর্বলতা প্রকাশ করে।কিন্তু ও যে দূর্বল নয়।ওকে তো দূর্বল হলে চলবে না।এই পৃথিবীতে যে দূর্বলদের জায়গা নেই।নিজেকে যতোই শক্ত দেখাক না কেন,,,দিনশেষে নিজেকে সেই দূর্বল আর অসহায়ই মনে হয় রোশনির।বাবা,মা ছাড়া একা বেচে থাকাটা যে বড্ড যন্ত্রনার।প্রতিটা মুহূর্ত লড়াই করে যেতে হয় নিজের অধিকারের জন্যে।রোশনি যে অনাথ আশ্রমে থাকতো সেখানে একজন মহিলা থাকতেন।রোশনি তাকে মনিমা বলেই ডাকত।উনিও রোশনিকে ভিষন আদর করতেন।রোশনি যখন নিজের বাবা মায়ের কথা মনে করে মন খারাপ করতো তখন মনিমা ওকে সব সময় একটা কথা বলতো।

“”পৃথিবীটা একটা যুদ্ধক্ষেত্র রোশনি।এখানে জিবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে লড়াই করতে হয়।কোনো কিছুই তুমি আপনা আপনি পাবে না।আদায় করে নিতে হবে।সব সময় মনে রাখবে,,,,দুনিয়াতে দুই ধরনের মানুষ থাকে।এক উইনারস আর দুই লুজারস।কিন্তু জিবন প্রত্যেক লুজারসকে একটা সুযোগ অবশ্যই দেয়।যাতে সে উইনার হতে পারে।কারন হারের পরেই তো জিত।আর কখনও নিজের চোখের পানি ঝরতে দিও না।এটাই তোমাকে বারবার দূর্বল প্রমান করবে।আর তুমি তো দূর্বল নও সোনা।তুমি তো আমার স্ট্রং মেয়ে”””””””

রোশনির আজ ভিষন ওনার কথা মনে পড়ছে।ওনার কথাগুলো মনে রেখেই তো চোখ থেকে পানি বেরোতে দেয় না রোশনি।ওর যে অনেক দায়িত্ব কাধে।ও কিভাবে দুর্বল হতে পারে? চারপাশে তখন কালো অন্ধকারে ঢেকে গেছে।মেঘের মৃদু আওয়াজও শুরু হয়ে গেছে।রোশনি একটা লম্বা নিশ্বাস ফেলে বারান্দা থেকে রুমে চলে এলো।এরপর আয়াশের পাশে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লো।আজ সাহিল আর নাতাশার এংগেজমেন্ট ছিলো কিন্তু সকালে চৌধুরি ম্যানশন থেকে ফোন করে জানিয়েছে এংগেজমেন্ট কাল হবে।কারন নাতাশার বাবা মা একটা কাজে আটকে গেছে তারা এখনো বিডিতে আসতে পারে নি।তাই এংগেজমেন্ট একদিন পেছানো হয়েছে।তাই আজ সারাদিনই রোশনি বাড়িতে ছিলো।বিকেলের দিকে পিয়া এসে কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে গেছে।কালকের ঘটনার পর রোশনি ভিষন আপসেট হয়ে আছে।বারবার ওই ঘটনা গুলোই চোখের সামনে ভেসে উঠছে।রোশনির মন আর মস্তিষ্ক শুধু এটাই ভেবে চলেছে যে,,, ওই ছেলেটা বেচে আছে তো..? আর বাকি ছেলে গুলোরই বা কি অবস্থা..? আচ্ছা,,,অধির বাকি ছেলেগুলোরও ওই একই অবস্থা করে নি তো…?এমন নানা প্রশ্ন ঘুরে বেরিয়েছে মস্তিষ্কে।

রাত তখন দুইটা বাজে।অধির বিছানায় শুয়ে ছটফট করছে।কিছুতেই ঘুম আসছে না।আজ সারাদিন তার শুধু রোশনির কথায় মনে পড়েছে।মেয়েটা দিন দিন কেমন ওর অস্তিত্বে মিশে যাচ্ছে।অধিরের ভাবনা চিন্তা জুড়ে শুধু রোশনিই ঘুরে বেড়াচ্ছে।এই মুহূর্তে অধিরের রোশনিকে দেখতে ইচ্ছে করছে।ওর কথা শুনতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু মেয়েটা আজ আসলোই না।বিছানায় কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ করে উঠে দাড়ালো অধির।মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো সে রোশনির বাড়িতে যাবে।অধির গাড়ির চাবি নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলো।বাড়ির মূল দরজা থেকে বেড়িয়ে মেইন গেটের কাছে আসতেই ছুটে এলো একজন গার্ড।এতো রাতে অধিরকে বেরোতে দেখে ব্যস্ত হয়ে বলে উঠলো…

__স্যার,,,? এতো রাতে আপনি কোথায় যাচ্ছেন..? না মানে একা কেন বেরোচ্ছেন..? আমিও যায় আপনার সাথে..? শত্রুপক্ষ কখন কোন দিক দিয়ে এ্যাট্রাক করে….

গার্ডের কথা থামিয়ে দিয়ে অধির গম্ভীর গলায় বলে উঠলো…

__ডোন্ট ওয়ারি।তোমার যেতে হবে না।আর এমনিতেও আমি যেখানে যাচ্ছি সেখানে আমায় একায় যেতে হবে…

তবুও যেন গার্ডটা স্বস্তি পেলো না।অত্যান্ত করুন গলায় বলে উঠলো….

__কিন্তু স্যার….

__বললাম তো শাহিন,,,ডোন্ট ওয়ারি।আমার কিচ্ছু হবে না।তুমি বাড়ির দিকে খেয়াল রেখো।

__ওকে স্যার….

অধির গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে গেলো।আর শাহিনও একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের কাজ করতে লাগলো।এদিকে অধির রোশনির রুমে ঢুকে দেখে রোশনি গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে।ওর পাশেই আয়াশ শুয়ে আছে।রোশনির মুখে লাল,নিল অনেক রকম আলো এসে পড়ছে।অধির ভ্রু কুচকে উপরে তাকাতেই দেখতে পেলো সিলিং এ অনেকগুলো স্টার ঝুলানো।সেগুলোতেই লাল,নিল,হলুদ,সবুজ আলো জ্বলছে।অধির কয়েক কদম এগিয়ে গেলো।এরপর রোশনির পাশে গিয়ে টুল পেতে বসলো। নিষ্পলক তাকিয়ে রইলো রোশনির মুখের দিকে।এই মেয়েটার মধ্যে কি আছে কে জানে..? মেয়েটাকে দেখলেই অধিরের দুনিয়া থমকে যায়।হৃদপিন্ড তুমুল গতিতে চলতে থাকে।ইচ্ছে করে ওই মুখটার দিকেই তাকিয়ে থাকতে।অধিরের দৃষ্টি স্থির।গভির ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ও রোশনিকে।যেটা ও কখনো কোনো মেয়েকে করে নি।সব সময় মেয়েদের থেকে ডিসটেন্স মেইনটেইন করেই চলেছে ও।বলতে গেলে মেয়ে ঘটিত ব্যাপার গুলো অধিরের কাছে এলার্জির মত ছিলো।কিন্তু সেই অধিরকেই এই মেয়ে পুরো এলোমেলো করে দিচ্ছে।দিনে দিনে কেমন উন্মাদ করে তুলছে।নাহলে এতো রাতে একটা মেয়ের রুমে ঢুকে তাকে এতো গভির ভাবে পর্যবেক্ষণ করা অধিরের পক্ষে কোনো ভাবেই সম্ভব ছিলো না।কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার,,,,আজ সেই অধির চৌধুরিই এগুলো করছে।রোশনির মুখের পর কিছু ছোট চুল এসে পড়েছে।অধির ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে ডান হাত তুলে চুলগুলো আলতো হাতে সরিয়ে দিলো।হাত সরাতেই চোখ গেল তুথনিতে থাকা টকটকে লাল তিলটার দিকে।সাথে সাথেই শরির জুড়ে বয়ে গেলো ঠান্ডা বাতাস।অধিরের চাহনি আরো গভির হলো।তিলটাকে ছোয়ার লোভ জাগলো মনে।ডান হাতটা এগিয়ে তিলটাকে স্পর্শ করতে যেতেই চোখ পিটপিট করে তাকালো রোশনি।ঘুম জড়ানো দৃষ্টিতে তাকাতেই মনে হল ওর সামনে অধির বসে আছে।কিন্তু এত রাতে অধির এখানে কি করে আসবে? রোশনি মনের ভুল ভেবে আবারো চোখ বন্ধ করলো।খানিক বাদেই ওর মনে হলো ওর দিকে কেউ গভির ভাবে তাকিয়ে আছে।কারো গরম নিশ্বাস ওর মুখের উপর পড়ছে।রোশনি অনুভব করছে ওর সামনে কেউ তো অবশ্যই আছে।এতো রাতে রুমে কে থাকবে..?আর কেউ ঢুকবেই বা কি করে? ও তো দরজা বন্ধ করেই ঘুমিয়েছিলো।ওর স্পষ্ট মনে আছে।তাহলে কে…? সাথে সাথেই রোশনির ঘুম কেটে গেলো।বুঝতে পারলো ওর শরির ভীষন ভাবে ঘামতে শুরু করেছে।রোশনি আস্তে আস্তে তাকানোর চেষ্টা করতেই অধিরের মুখটা স্পষ্ট হলো ওর কাছে।অধিরের মুখটা দেখতেই পুরোপুরি চোখ খুলে জোরে চেচিয়ে উঠলো..।

__আপনি…?

রোশনির এমন হঠাৎ চিৎকারে চমকে উঠলো অধির।নিজেকে সামলে তাড়াতাড়ি রোশনির মুখ চেপে ধরলো।অধির রোশনির মুখ চেপে ধরতেই চোখ বড় বড় করে তাকালো ও।রোশনির মুখে হাত রেখেই মিনমিনিয়ে বলে উঠলো অধির…..

__আস্তে।চেঁচিয়ো না…..

অধির রোশনির মুখ থেকে হাত সরাতেই তড়িঘড়ি করে উঠে বসলো রোশনি।এরপর ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো….

__আপনি এখানে কি করছেন…?

রোশনির কথা শুনে অধির উঠে দাড়ালো।এখন রোশনিকে কি বলবে ও? সত্যিই তো সে কেন এসেছে এখানে…?অধিরকে চুপ থাকতে দেখে রোশনি বিছানা ছেড়ে নেমে দাড়ালো।অধিরের দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আবারো বলে উঠলো…

__কি হলো,,,,? বলুন আপনি এখানে কি করছেন…? আর তার থেকেও বড় কথা,,, আমার যতো দূর মনে আছে আমি ঘুমানোর আগে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়েছিলাম।তাহলে আপনি আমার রুমে কি করে এলেন…?

কথাটা বলতে বলতেই রোশনির চোখ গেলো জানালার দিকে।জানালার গ্রীল সরিয়েও এই রুমে ঢোকা যায়।রোশনি নিজেও অনেক বার জানালা দিয়ে ঢুকেছে রুমে।চাচির চোখ ফাকি দিয়ে।তবে কি অধির জানালা দিয়ে রুমে ঢুকলো…?

__জানালা…? আপনি জানালা দিয়ে রুমে ঢুকেছেন…?

অধির এবার সোজা হয়ে দাড়ালো।রোশনির চোখের দিকে তাকিয়ে ফুল এ্যাটিটিউড নিয়ে বলে উঠলো….

___এসেছি তোমাকে এটা বলতে যে কাল সকাল সকাল চৌধুরি ম্যানশনে চলে আসবে।মনে রেখো অধির চৌধুরির ভাইয়ের এংগেজমেন্টের দায়িত্ব নিয়েছো।সো সব কিছু পার্ফেক্ট হওয়া চাই।পার্ফেক্টের কম আমি পছন্দ করি না।আর পার্ফেক্ট এর বেশি আমি প্রত্যাশা করি।সো,,,,,আই ওয়ান্ট এভরিথিং টু বি পার্ফেক্ট। আর এমনিতেও,,আমি জানালা দিয়ে নয় দরজা দিয়ে আসা ওয়ালাদের মধ্যে একজন। অধির চৌধুরি কেবল দরজা দিয়ে প্রবেশ করে।

অধিরের এমন এ্যাটিটিউড ভরা কথা শুনে মেজাজটাই চটে গেল রোশনির।রোশনির কাছে মনে হয় অধির চৌধুরির পা থেকে শুরু করে মাথা পর্যন্ত সবকিছুই এ্যাটিটিউডে ভরা।অসহ্যকর….লোকটা আস্ত একটা মাথা ব্যাথা।রোশনি নিজের মনেই বিড়বিড় করে বলে উঠলো….

__তা এই কথাটা তো আপনি ফোন করেও বলতে পারতেন।এখানে আসার কি দরকার ছিলো…? ও আপনার কাছে আমার নাম্বার নেই তাইনা…? দাদির কাছে তো ছিলো।ওনার থেকে নিয়ে নিতেন।এতো রাতেই কেন আসতে হবে….?

রোশনির কথায় চোখ রাঙিয়ে তাকালো অধির।অধিরের চোখ রাঙানো দেখে বোকা হাসলো রোশনি।তারপর নিজের মনেই বিড়বিড় করতে লাগলো,,,,,

___কাকে কি বলছি আমি.? এই লোকটা যে পরিমান ঘাড় ত্যারা।এখনো কেমন এ্যাটিটিউড নিয়ে দাড়িয়ে আছে দেখো…?মোরাল অফ দা স্টোরি হলো,,,,পরিস্থিতি যায় হোক এ্যাটিটিউড সবার আগে।কোথা থেকে আসে এতো এ্যাটিটিউড…? আর কথায় কথায় এমন অধির চৌধুরি অধির চৌধুরি বলে চিল্লানোর কি আছে…? আমরা জানি তোর নাম অধির চৌধুরি।তাই বলে কি সবার কানের পোকা বের করে দিবি নাকি এটা বলে…?মনে হয় যেন ওনার নামের শক্তিতে সবাই ভয়ে কাপে….।হুহ….

__ ঠিকই বলেছো।অধির চৌধুরির নাম শুনেই সবাই কাপে।চলার ক্যাপাসিটি আর বাচার স্ট্রেন্থ,,,, একাউন্টের ব্যালেন্স আর নামের পাওয়ার,,,,কখনও কম হতে নেই।আর একটা কথা……মানুষ আমার পিঠ পিছে কি বললো তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না।ব্যস এটুকুই যথেষ্ট যে আমার সামনে কারোর মুখ খোলার সাহস থাকে না।

অধিরের কথায় চমকে উঠলো রোশনি।ও তো নিজের মনে মনে বলছিলো কথা গুলো তাহলে এই লোকটা বুঝলো কি করে..?রোশনি বাম হাতে কপালের ঘামটুকু মুছে নিয়ে সোজা হয়ে দাড়ালো।দুজনেই নিশ্চুপ দাড়িয়ে আছে।এই নিশ্চুপতা কাটাতে শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি।বৃষ্টির শব্দে ওরা দুজনেই জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো।বেশ জোরে বৃষ্টি পড়ছে।রোশনিদের বাড়িটা ইটের হলেও উপরটা টিনের।টিনের উপর বৃষ্টির ফোটা পড়তেই অদ্ভুত এক শব্দের সৃষ্টি হচ্ছে।অধিরের কাছে বেশ লাগছে শুনতে।জানালা দিয়ে বৃষ্টির পানির ছাঁট আসছে।রোশনি গিয়ে জানালাটা বন্ধ করে দিলো।এরপর আয়াশের গায়ে কাথাটা ভালো করে দিয়ে আবারো আগের মত দাড়িয়ে রইলো।কিছুক্ষন চুপ থাকার পর রোশনি মিনমিনিয়ে বলে উঠলো….

__একটা কথা জিজ্ঞেস করবো…?

রোশনির ভীত গলায় করা প্রশ্নে ভ্রু কুচকে তাকালো অধির ওর দিকে।

__হুম বলো….

রোশনি হাতের আঙুল মুচড়াতে মুচড়াতে বলে উঠলো….

__ওই ছেলেগুলোকে কি করেছেন…?

অধির না বুঝার ভান করে বলে উঠলো….

__কোন ছেলেগুলো….?

রোশনি ভীত গলায় কোনো রকমে বলে উঠলো…

__ওই যে ওই রাতের ছেলেগুলো…..

অধির এবার সোজা হয়ে দাড়ালো।দাড়িতে হাত ঘষতে ঘষতে বলে উঠলো….

__তুমি এখনো ওই ছেলেগুলোর জন্যে চিন্তা করছো…? ইন্টারেস্টিং,,,,ভেরি ইন্টারেস্টিং।

অধিরের কথায় চুপ হয়ে গেলো রোশনি।কিছুক্ষন চুপ থেকে অধির বলে উঠলো….

___অধির চৌধুরি যার জিবনে আসে তার জিবনের গতিপথ বদলে যায়।হয় তার আমার সাথে দেখা হয়ে যায় নয়তো উপরওয়ালা সাথে…..

অধিরের কথায় আর বুঝতে বাকি রইলো ছেলেগুলোর কি অবস্থা করেছে অধির।বেচে আছে নাকি সত্যি সত্যিই উপরওয়ালা কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে এই খাটাস লোক কে জানে..? রোশনি আর কোনো কথা বললো না।চুপচাপ বিছানায় গিয়ে বসলো।বৃষ্টি ক্রমেই বাড়ছে।অধিরকে বলতেও পারছে না চলে যেতে।এই বৃষ্টির মধ্যে কাউকে চলে যেতে বলা নিশ্চয় ভদ্রতার মধ্যে পড়ে না।রোশনি মুখ ফুলিয়ে খাটে হেলান দিয়ে বসে রইলো।এরপর কখন যে ঘুমিয়ে গেছে বুঝতেই পারে নি।এদিকে বৃষ্টি কমার নামই নিচ্ছে না।অধির হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখ চারটা বেজে গেছে।ওর বাড়ি ফেরা দরকার।অধির পিছনে ফিরতেই দেখে রোশনি ওভাবে বসেই ঘুমিয়ে গেছে।অধির ভ্রু কুচকে তাকালো।এই তো কিছুক্ষন আগেও তো জেগে ছিলো মেয়েটা তাহলে এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে ঘুমিয়ে গেল….?এতো তাড়াতাড়িও কেউ ঘুমাতে পারে তা অধিরের জানা ছিলো না। অধির কয়েক পা এগিয়ে এসে রোশনিকে ঠিক করে শুইয়ে দেয়।মুখের উপর থেকে আলতো করে চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে গায়ে কাঁথা টেনে দেয়।এরপর আর এক মুহূর্ত দেরি না করে সোজা রুম থেকে বেরিয়ে আসে।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here