শেষ বিকেলের আদর❤️পর্ব : ২৯

0
3914

#শেষ বিকেলের আদর❤️
#রিত্তিকা ইসলাম
পর্ব : ২৯

🌼
রোশনি ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে দেখলো অধির সোফায় বসে তার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাঁসছে।রোশনি ভ্রু কুঁচকে তাকালো।কিঞ্চিৎ রাগ দেখিয়ে বললো,

-একদম হাঁসবেন না বলে দিলাম।আপনার হাসি দেখলে আমার গাঁ জ্বলে যাচ্ছে।

অধির হাঁসতে হাঁসতেই জবাব দিলো।বললো,

-আমি কোথায় হাঁসছি? হাঁসছি না তো।

-মানে? আপনি হেঁসে হেঁসে বলছেন আপনি হাসছেন না? এই তো আপনি আমার কথায় আবার হাসছেন। আর একবার হাসলে খুন করে দেবো বলে দিলাম।

অধিরের হাসি কমলো না।আগের মতোই ঠোঁট চেপে হাসতে লাগলো।রোশনি চোখ মুখ ফুলিয়ে বিছানায় গিয়ে ধপ করে বসে পড়লো।বললো,

-এতে এতো হাসির কি আছে? আমি কি ইচ্ছে করে আপনার কাছে গিয়েছি নাকি? ঘুমের মধ্যে কখন চলে গেছি বুঝতেই পারি নি।তবে আমার মনে হচ্ছে আপনিই আমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে আমাকে আপনার কাছে টেনে নিয়েছেন।এটা হতেই পারে।যে জোর করে বিয়ে করতে পারে সে এটাও করবে এতে সন্দেহের কি আছে।

-সব সময় এই কথাটা না বললে হয় না? আর বাই দা ওয়ে আমি তোমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে তোমাকে আমার কাছে আনি নি।যদি ঘুমের সুযোগ নিতাম তাহলে অনেক কিছুই করতাম।ঘুমের মাঝে তুমিই এসেছিলে আমার কাছে।

রোশনি ভ্রু কুঁচকে সন্দিহান চোখে তাকালো।বললো,

-আপনি বুঝতে পেরেছিলেন ঘুমের মাঝে আমি নিজে থেকে আপনার কাছে গেছি? তাহলে আপনি আমায় সরিয়ে দেন নি কেন?আপনি প্রমিস করেছিলেন।

অধির উঠে দাঁড়ালো।আলমারি থেকে শার্ট বের করতে করতে বললো,

-আমি কেন সরাবো।আর তুমি মনে হয় ভুলে যাচ্ছো। আমি প্রমিস করেছিলাম আমি তোমার কাছে যাবো না।তবে তুমি আমার কাছে আসলে আমি তোমায় সরিয়ে দেবো এটা তো প্রমিস করি নি বোধ হয়।তাইনা?আর এমনিতেও নিজের বউকে কাছে পাবার সুযোগ হাত ছাড়া কেন করবো সুইটহার্ট?

অধির চোখ টিপে শার্ট প্যান্ট হাতে ওয়াশ রুমে চলে যেতেই রাগে ফেটে পড়লো রোশনি।হাতের টাওয়ালটা দূরে ছুড়ে মারতে গিয়েও থেমে গেলো সে।অধিরের উপর রাগটা অযথা টাওয়েলের উপর দেখিয়ে লাভ নেই।প্রায় আঁধা ঘন্টা পর অধির আর রোশনি রুম থেকে বের হলো।দুজনে পাশাপাশি সিঁড়ি দিয়ে নামতেই টেবিলে বসা সবার চোখ পড়লো ওদের দিকে।আনোয়ারা চৌধুরি মুচকি হাসলেন।দুজনকে বেশ মানিয়েছে।সাহিল নাতাশাও সবার অগোচরে হাসলো।আদি একগাল হেসে সিটি বাজাতেই দিদাম চোখ রাঙিয়ে তাকালো। আদি সেদিকে খুব একটা পাত্তা না দিয়েই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালো।

-ওয়েলকাম ওয়েলকাম মিষ্টার এন্ড মিসেস চৌধুরি।আপনাদের জন্যেই আমরা অপেক্ষা করছিলাম।এবার এখানে বসে এই অধম বান্দাকে আপনারা ধন্য করুন।

অধির আদির মাথায় গাট্টা মারলো।বললো,

-ওয়ে ড্রামাবাজ।সকাল সকাল চালু হয়ে গেছিস? নিজের জায়গায় গিয়ে বস।

আদি অধিরের কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো,

-ভাইয়া,,,তুমি একবার শুধু ওই চুড়েলের মুখটা দেখো।কি লাগছে দেখতে।থ্যাংক ইউ ভাইয়া।তোমার জন্যেই ওকে এখন থেকে জ্বালাতে পারবো।চুড়েল বহুত জ্বালিয়েছে এতোদিন।সব শোধ তুলবো এবার।

অধির চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই আদি নিজের জায়গায় এসে বসে পড়লো।অধির চেয়ার টেনে রোশনিকে বসতে বলতেই দিদাম চোখ রাঙিয়ে রোশনির দিকে তাকালো।অধিরকে উদ্দেশ্য করে বললো,

-অধির বেবি…? আমার আর তোমার মাঝে এই মেয়েটাকে কেন ঢুকাচ্ছো তুমি? ওদিকে দেখো আরো চেয়ার খালি আছে ওদিকটাই বসতে বলো ওকে।এই মেয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছো কেন? যাও ওদিকে গিয়ে বসো।

রোশনি আর এক সেকেন্ডও দেরি না করে অধিরের পাশের চেয়ারটাতেই আরাম করে বসে পড়লো।রোশনির কাজে দিদাম রেগে গেলেও অধিরের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটলো।তার বউটা আসলেই সিংহী। আদি বেশ আরাম করে বসে তাকিয়ে রইলো দিদামের মুখের দিকে।এবার তার ভাই যে তাকে ঠান্ডা মাথায় ঝাড়বে আর তাতে দিদামের রিয়্যাকশন কেমন হবে সেটাই দেখার পালা।দিদামের একটা এক্সপ্রেশনও দেখা মিস করবে না সে।অধির নিজের চেয়ার টেনে বসলো।রোশনির প্লেটে খাবার তুলতে তুলতে বললো,

-এখন আর তুমি আমার ফিয়ন্সে না দিদাম।তাই এই অধির বেবি ডাকাটা বন্ধ করো।আর একটা কথা। আমার আর তোমার মাঝে রোশনি আসেনি। বরং রোশনি আর আমার মাঝে তুমি আসছো।তোমার সাথে বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো বাট হয় নি। ব্যস কাহিনি শেষ।তাই তুমি রোশনির পেছনে লাগাটা বন্ধ করো।আমি এটা সহ্য করবো না।আর তোমার সাথে আমার এমন কোনো গভির সম্পর্কও ছিলো না যে তুমি মুভ অন করতে পারবে না।ফ্রেন্ড তুমি আমার।আগেও ছিলে এখনও আছো।কিন্তু বার বার যদি আমার বউকে পিঞ্চ করে কথা বলো তবে আমি সেটা মেনে নেবো না।আর সেটা তোমার জন্যেও খুব একটা ভালো হবে না।তার থেকে ভালো সব কিছু ভুলে যাও আর মুভ অন করো।সেটা তোমার জন্যেই ভালো।

দিদাম কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো।মিসেস ঝুমা চৌধুরি চোখের ইশারাই দিদামকে চুপ থাকতে বললেন।

দু’দিন পর আজ নিজের বাড়িটাকে দেখে বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠলো রোশনির।কিছুক্ষন থম মেরে দাঁড়িয়ে থেকে ছুট লাগালো বাড়ির ভেতর।বসার ঘরে পৌঁছাতেই সামনে এসে দাড়ালেন চাচি।চোখ মুখ শক্ত করে বললেন,

-এই মুখপুরি কোথায় ছিলি দু’দিন? এখন বাইরে রাত কাটানোও শিখে গেছিস ফাজিল মেয়ে।তোর জন্যে বাইরের মানুষের কাছে মুখ দেখাতে পারছি না।বল কি কূকর্ম করে করে এসেছিস?গতো দুদিন ধরে ভাই বোন দুজনেই উধাও।একটাকে তো কিছুক্ষন আগে একজন লোক এসে দিয়ে গেল।আর তুই আমার মুখে চুনকালি লাগিয়ে এখন ফিরছিস। তোর এ বাড়িতে আর জায়গা নেই।আমার বাড়িতে থেকে এসব অকাম কূকাম করা যাবে না।বেরিয়ে যা এক্ষুনি।দূর হয়ে যা এখান থেকে।

চাচি রোশনির হাত ধরে ধাক্কা দিতেই রোশনি গিয়ে পড়লো অধিরের বুকে।অধির রোশনিকে দুহাত দিয়ে ধরে বলে উঠলো,

-ঠিক আছো তুমি?

রোশনি মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললো।অধির রোশনির গালে হাত রেখে আদুরে গলায় বললো,

-আয়াশ ভেতরেই আছে।যাও।

রোশনি আর দেরি করলো না।ছুটে চলে গেল ভেতরে।রোশনি চলে যেতেই চোখ মুখ শক্ত করে দাড়ালো অধির।রোশনির চাচি অধিরকে চিনতে পেরেই মুচকি হাসলো।কিন্তু অধিরের চোখ মুখ দেখে ভয়ে গলা শুকিয়ে এলো তার।তিনি বুঝতে পারছেন না অধির চৌধুরি এখানে কেন এসেছে?আর রোশনিকেই বা চেনে কিভাবে? অধির ভেতরে এসে বেতের সোফায় গিয়ে বসলো।রোশনির চাচি ভয়ে ভয়ে সামনে দাঁড়াতেই অধির মুখ খুললো।বললো,

-রোশনির সাথে আগে যা করেছেন করেছেন।এখন থেকে ভুলেও এসব করতে যাবেন না। নয়তো এর ফল ভিষন খারাপ হবে।

অধির কয়েকটা টাকার বান্ডিল টেবিলের উপর ছুঁড়ে মারতেই চোখ মুখ চিকচিক করে উঠলো ওনার।টাকা গুলো ধরতে যেতেই অধিরের কথায় থেমে গেলেন উনি।

-ওয়েট চাচিজান।টাকা গুলো এমনি এমনি দিচ্ছি না।আজ থেকে আয়াশের সমস্ত দেখাশোনা আপনি করবেন।যদিও কয়েক দিনের মাঝেই আমি ওকে এখান থেকে নিয়ে যাবো।যতো দিন আয়াশ এখানে থাকবে ততো দিন ওর সমস্ত দেখাশোনার দায়িত্ব আপনার।সেই সাথে এই বাড়িটা দেখাশোনা করার কাজটাও আপনার।প্রত্যেক মাসে এর জন্যে মোটা অংকের টাকা পেয়ে যাবেন।

উনি অধিরের কথায় মাথা নাড়িয়ে টেবিল থেকে টাকার বান্ডিল গুলো তুলে নিলেন।বান্ডিল গুলো হাত দিয়ে নেড়ে চেড়ে দেখে অধিরের দিকে তাকালেন।বললেন,

-আপনি যা যা বলবেন সব করবো আমি।টাকার জন্যে এটুকু করবো না? কিন্তু আপনি ওদের জন্যে এতোকিছু কেন করছেন? আর রোশনিকেই বা আপনি চেনেন কি করে?

-রোশনিকে কিভাবে চিনি সেটা আপনার না জানলেও চলবে।শুধু এটুকু জেনে রাখুন রোশনি এখন মিসেস রোশনি অধির চৌধুরি।

অধিরের কথায় যেন আকাশ থেকে পড়লেন উনি।অধির চৌধুরির বউ রোশনি? কথাটা যেন কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না ওনার।কোথায় অধির চৌধুরি আর কোথায় রোশনি? এটাও কি সম্ভব?

এদিকে রোশনি রুমে এসে দেখে আয়াশ বিছানায় বসে চকলেট খাচ্ছে।রোশনি ছুটে গিয়ে আয়াশকে জড়িয়ে ধরেই কেঁদে দেয়।সারা মুখে আদর দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে।আয়াশ হেসে রোশনিকে নিজের থেকে ছাড়ায়।বেধে বেধে বলে,

-উফফ বাডি।তুমি এমন ছিঁদকাদুনে কবে থেকে হলে? এমন ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কাঁদছো কেন?

আয়াশের কথায় কান্না থামালো রোশনি।আয়াশের দিকে তাকিয়ে বললো,

-নকুল তুই ঠিক আছিস তো সোনা? ওরা তোকে ব্যাথা দেয় নি তো? বল না ভাই তুই ঠিক আছিস তো?

রোশনি আয়াশের মুখ, হাত-পা ভালো করে দেখতে নিতেই আয়াশ বিরক্ত হয়ে বলে,

-বাডি আমি ঠিক আছি।কিন্তু আমি তোমার উপর রেগে আছি।তুমি দু’দিন কোথায় ছিলে হ্যা? বলো কোথায় ছিলে?

রোশনি কিছু বলবে তার আগেই পেছন থেকে কারো গলার স্বর শুনে পেছনে ফিরে তাকালো রোশনি।পিয়া দাড়িয়ে আছে।

-এসব কি রোশনি? অধির চৌধুরি এখানে কেন? আর উনি কি বলছেন এসব?

রোশনি আয়াশের দিকে তাকালো।বললো,

-নকুল সোনা বাইরে গিয়ে খেলো।আমি পিয়াদির সাথে কথা বলে আসছি।

-ওকে।

আয়াশ চলে যেতেই পিয়া আগের মতোই থমথমে মুখে প্রশ্ন ছুড়লো,

-তোরা বিয়ে করেছিস? মানে কি এসবের? কাল পর্যন্ত তুই জয়কে ভালোবাসলি আর আজ এমন কি হয়ে গেলো যে তুই অধির চৌধুরিকে বিয়ে করে নিলি?

-পিয়া আমি তোকে সবটা বলছি।প্লিজ একটু শান্ত হয়ে আমার কথাটা শোন।

-কি বলার আছে আর তোর?কেন ঠকালি ছেলেটাকে? পাগলের মত ভালোবাসে ছেলেটা তোকে।ওর ভালোবাসা চোখে পড়লো না তোর? কেন বিয়ে করলি অধির চৌদুরিকে? টাকার জন্যে? সামান্য টাকার জন্যে তুই জয়ের ভালবাসাকে বিক্রি করে দিলি রোশনি? আমার আজ ঘেন্না হচ্ছে তোকে বন্ধু ভাবতে।ছিঃ রোশনি।

পিয়ার কথা গুলো সোজা কলিজায় গিয়ে বিঁধলো রোশনির।সে জানতো সবাই তাকে ভুল বুঝবে।কিন্তু ভরসা ছিলো পিয়া তাকে কখনোই ভুল বুঝবে না। কেউ পাশে না থাকলেও পিয়াকে তার পাশে পাবে।রোশনি কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলো,

-আমি জয়কে ঠকায় নি পিয়া।ঠকায় নি আমি।আমি টাকার কাছে ওর ভালোবাসাকে বিক্রি করি নি।বিশ্বাস কর। কোনো ভুল না করেও আজ আমি সবার কাছে দোষী হয় গেলাম রে।সবাই আমাকেই অপরাধী বানিয়ে দিলো।

রোশনি কথা গুলো বলতে বলতেই হাটু গেড়ে বসে পড়লো।চোখ থেকে অনবরত নোনা পানি গড়িয়ে পড়ছে।পিয়া রোশনির এমন বিধ্বস্ত রুপ সহ্য করতে না পেরে ছুটে চলে গেলো রোশনির দিকে।দুহাতে রোশনিকে বুকের সাথে চেপে ধরে শান্ত করার চেষ্টা করলো।এদিকে রোশনির কান্নার আওয়াজ শুনে বসার ঘর থেকে ছুটে এসেছে অধির।রোশনির কাছে আসতেই দেখলো পিয়া রোশনিকে শান্ত করার চেষ্টা করছে।অধির একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে গেলো।ওদের কিছুক্ষন একা বলা দরকার।অধির জানে পিয়া আর রোশনির সম্পর্ক কতোটা গভির।

-রোশনি প্লিজ কাঁদিস না। আই এম সরি।আমি সবটা না শুনেই রিয়্যাক্ট করে ফেলেছি।প্লিজ কাঁদিস না সোনা।আমি সহ্য করতে পারছি না।শান্ত হ প্লিজ।এবার কিন্তু আমিও কান্না করে দেবো বলে দিলাম।তখন কিন্তু তুই থামাতে পারবি না।চুপ কর না জান।

বন্ধুত্বের সম্পর্কগুলো এমনই।বন্ধু মানে গোপন কথার অনেক খানি ভাগ।প্রান খোলা হাসির সাথে একটু খানি রাগ।বন্ধু মানে দুষ্টুমি আর একটু অভিমান।বন্ধু মানে কোথায় যেন একটু খানি টান।

পিয়ার কথায় কিছুটা শান্ত হলো রোশনি।দুহাতে পিয়াকে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে উঠলো। পিয়া নিজের থেকে রোশনিকে ছাড়িয়ে পানির গ্লাস এগিয়ে দিলো।রোশনি পানি খেয়ে ছলছল চোখে পিয়ার দিকে তাকাতেই পিয়া বললো,

-সরি দোস্ত।অধির চৌধুরি যখন তোর চাচিকে বললো তুই এখন মিসেস রোশনি অধির চৌধুরি তখন সহ্য করতে পারি কথাটা।জয়ের কথা মনে পড়ে গেছিলো।তাই বাজে কথা বলে ফেলেছি।প্লিজ ক্ষমা করে দে।তুই তো জানিস বল তুই আমার মনে কতোটা জুড়ে আছিস। প্লিজ ক্ষমা করে দে।

-ইটস ওকে পিয়া।তোর জায়গায় আমি থাকলেও হয়তো এমনই রিয়্যাক্ট করতাম।অযথা গিল্টি ফিল করিস না।

-কিন্তু তুই ওনাকে বিয়েটা কেন করলি এটাই তো বুঝতে পারছি না।দুদিন ধরে তোকে ফোনে পাচ্ছি না।কিভাবে হলো বিয়েটা?

রোশনি সবটা পিয়াকে বলতেই পিয়া যেন আকাশ থেকে পড়লো।অধির যে এমন একটা কাজ করতে পারে সেটা সে কল্পনাও করে নি কখনো । অধির চৌধুরির প্রতি বিতৃষ্ণায় ভরে গেল মন।সেই সাথে জয়ের প্রতি খারাপ লাগাটাও তীব্র ভাবে বেড়ে গেলো।কে জানে সব শোনার পরে জয়ের কি রিয়্যাকশন হবে।কিভাবে সামলাবে নিজেকে।রোশনিকে গত দুদিন যাবত ফোনে না পেয়ে পিয়াকে রিতিমত পাগল করে ছেড়েছিলো জয়।অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে থাকায় রোশনির বাড়িতেও আসতে পারে নি সে।আর এদিকে পিয়াও আরাফের সাথে তার গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলো।তাই সেও রোশনির বাড়িতে আসতে পারে নি।ফোন করেছে অনেকবার।কিন্তু বন্ধ পেয়েছে ।আজ যখন ঢাকায় ফিরেছে তখন সোজা এখানে চলে এসেছে সে রোশনির খোজ নিতে।ভেবেছিলো এসে আচ্ছা রকম কথা শুনিয়ে দেবে মেয়েটাকে।কিন্তু এখানে এসে পুরো কাহিনিই পাল্টে গেলো।পিয়ার এখন ভয় হচ্ছে জয়কে নিয়ে।ছেলেটা কি করবে এসব জানার পরে সেটা ভেবেই হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে তার।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here