শেষ রাত পর্ব-১৪

0
1554

#শেষ_রাত
#পর্বঃ১৪
#সাইয়ারা_হোসাইন_কায়ানাত

একের পর এক ধাক্কা খেয়ে নিজেকে সামলাতে সময় লাগলো মিনিট খানেক। সাদাফের ভয়ংকর রাগী রূপ হজম করার আগেই এখন আবার আরেক নতুন চমক। আজ বোধহয় সবাই আমাকে চমকে দিতে দিতেই মা’রার প্ল্যান করেছে। মাথার মধ্যে ভনভন করেই ঘুরে যাচ্ছে হাজারো প্রশ্ন। ধ্রুব কেন হাসিমুখে জড়িয়ে ধরলেন সাদাফকে? আর সাদাফই বা স্বাভাবিক আছে কি করে! অতীতকে পিছু ছাড়তে চাচ্ছি তাহলে কেন অতীত এসে আমার বর্তমানে মিলে যাচ্ছে? এসব অতীত আর বর্তমানের মাঝে যেন পিষে যাচ্ছি আমি। অসহায় হয়ে পরেছি পরিস্থিতির কাছে। কে উদ্ধার করবে আমাকে এই দোটানার মধ্য থেকে!

‘তুলতুলের আম্মু এদিকে আসো।’

সাদাফের পাশ থেকেই ধ্রুব আমাকে দেখে হাত নাড়িয়ে ডাকলো। স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি সেদিকে। সাদাফের দৃষ্টি আমার মাঝেই নিবদ্ধ সেটাও বুঝতে পারছি স্পষ্ট৷ ধ্রুব আবারও আমাকে ডাকলো। আর কোনো উপায় না পেয়ে আমি থমথমে পায়ে ধ্রুবর দিকে এগিয়ে যেতে গেলাম। ধ্রুবর তর সইলো না। সে নিজেই দ্রুত পায়ে এগিয়ে আসে আমার দিকে। আমার হাত ধরেই টেনে নিয়ে যায় সাদাফের কাছে। সাদাফের সামনে দাঁড় করিয়ে আমাকে এক হাতে আলতো করে জড়িয়ে ধরলেন তিনি। আমি যেন আরও স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। বরফের ন্যায় জমে গেলাম আমি। তবে ধ্রুব বেশ আনন্দিত গলায় বললেন-

‘এই হলো আমার ওয়াইফ অনন্যা। কিছুদিন আগেই আমাদের বিয়ে হয়েছে।’

সাদাফ তাকিয়ে আছে নিষ্পলক। তার চেহারাতে স্পষ্ট প্রকাশ পাচ্ছে তার চমকিত ভাব। আমাকে হয়তো এখানে আশা করেনি। হয়তো কল্পনাও করেনি অন্য কোনো পুরুষের বাহুতে দেখবে নিজের অনুপাখিকে। এমনটা না ভাবারই কথা এতটা বছর ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল আমাদের মাঝে৷ আর এখন কি-না আমি অন্য কারও স্ত্রী!
ধ্রুব আবারও বেশ উৎসাহ নিয়ে আমার উদ্দেশ্যে বললেন-

‘ওর নাম সাদাফ। আমি লাস্ট ইয়ার ট্যুরে খাগড়াছড়ি গিয়েছিলাম সেখানেই ওর সাথে পরিচয়। সপ্তাহ খানেক এক সাথেই ঘুরে বেড়িয়েছি আমরা। খুব ভালো বন্ডিং হয় আমাদের মধ্যে।’

আমি অবাক হলাম। তার চেয়েও বেশি হলো রাগ। ইচ্ছে করছে দুজনকে একসাথে সারাজীবনের ট্যুরে পাঠিয়ে দেই। ট্যুর ট্যুর করে এরা দুজন আমাকে পাগল বানিয়ে ফেলবে হয়তো। ধ্রুব আমাকে অস্বস্তিতে মিইয়ে যেতে দেখে বললেন-

‘তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে তুলতুলের আম্মু?’

আমি রবোটের মতো ডানে বায়ে মাথা নাড়লাম। সাদাফ মুখ খুললো। তার চমকিত ভাব চাপা দিয়ে ক্ষীণ স্বরে প্রশ্ন করে-

‘কিছুদিন আগে বিয়ে হলো অথচ এখনই তুলতুলের আম্মু মানে!’

ধ্রুব তার সহজাত সহজ সরল হাসি দিয়ে বললেন-

‘পূর্নতার ডাক নাম তুলতুল। পূর্নতার কথা তো বলেছিলাম তোমাকে।’

সাদাফ নিম্নস্বরে আনমনা হয়ে ‘ওহ আচ্ছা’ বলেই আবারও চুপ করে রইলো। ধ্রুব ফের আমার হাত নিজের মুঠোয় নিয়ে নিলেন। আমার দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে সাদাফকে বললেন-

‘আচ্ছা আজ যাই। তুলতুলের আম্মু ধুলোবালিতে বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। এল্যার্জির প্রব্লেম হয়। তোমার সাথে অন্য কোনো একদিন সময় করে আড্ডা দিবো। আজ আসি।’

সাদাফ মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানাতেই ধ্রুব আমাকে গাড়িতে বসিয়ে দেয়। উনি নিজেও ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলেন। সাদাফ অপলক তাকিয়ে আছে আমার দিকে। কয়েক সেকেন্ডের মাঝেই চোখের আড়াল হয়ে গেল সাদাফের অস্তিত্ব। দূরে, অনেকটাই দূরে চলে আসলাম সাদাফের কাছ থেকে। চুপচাপ জানালার দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে বসে রইলাম। মনে মনে ভাবতে লাগলাম ধ্রুব সাদাফের আসল পরিচয় পেলে কেমন রিয়েক্ট করবেন। তাদের বন্ধুত্ব নিশ্চয়ই থাকবে না। ধ্রুবকে কি এখন বলা উচিত সাদাফ আমার প্রাক্তন যাকে তিনি সহ্য করতে পারেন না। আচ্ছা পরে যদি সাদাফের কাছ থেকে সত্যটা জেনে যায় তখন কি তিনি আমাকে ভুল বুঝবেন! এসব কোনো প্রশ্নের উত্তরই আমার জানা নেই।
বেশ খানিকটা সময় পর ধ্রুব নিরবতা ভেঙে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বললেন-

‘কি ব্যাপার! আপনি এতো চুপচাপ কেন আজ?’

ধ্রুবর কথায় শুনেই আমার রাগ হলো। মনে পরে গেক তার ট্যুরে যাওয়ার কথা। আমি ক্ষিপ্ত গলায় প্রশ্ন করলাম তাকে,

‘আপনি ট্যুরে যান?’

‘হ্যাঁ যাই তো।’

ধ্রুব নির্লিপ্ত জবাবে আমার রাগ তরতর করেই মাথায় উঠে যায়। যে আমি কখনও রাগ প্রকাশ করতাম না। আজ সেই আমিটাই ধ্রুবর সামান্য কথাতেই রাগ প্রকাশ করছি। আমার অধিকার নেই জেনেও আমি অনুচিত কথা বলে ফেললাম মুখ ফসকে।

‘আপনি আর কখনও এসব ট্যুর ফুরে যাবেন না বলে দিচ্ছি। আমার এসব মোটেও ভালো লাগে না। অসহ্য লাগে ভীষণ।’

কথা গুলো বলেই আমি থমকে গেলাম। আমি ধ্রুবর শর্তের বিরুদ্ধে গিয়ে তার লাইফে হস্তক্ষেপ করছি এ কথা মনে পরতেই নিজের ভুলের জন্য অনুশোচনা হলো। ধ্রুব হাসলেন অমায়িক ভঙ্গিতে। সামনের দিকে দৃষ্টি রেখেই শান্ত গলায় বললেন-

‘বউ বাচ্চা নিয়ে গেলে নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা হবে না তাই না!’

আমি চুপ করে রইলাম। তার কথার প্রতিত্তোরে টু শব্দটিও করলাম না। তবে ধ্রুব মুচকি হাসি আমার দৃষ্টির আড়াল হলো না। কেন হাসছেন তিনি তার কারণ বুঝতে পারলাম না।

‘অনু তুলতুলকে আমার কাছে দে আমি ওকে খাওয়াচ্ছি। তুই বরং ধ্রুবর সাথেই খেয়ে নে অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে।’

আমি তুলতুলের মুখে খাবার দিয়ে মনি মা’কে বললাম-

‘এখন আমার খিদে নেই মনি মা। তুমি এখন খেয়ে নাও আমি আজ খাবো না।’

মনি কিছুটা সময় চুপ থেকে শাসনের সুরে বললেন-

‘দুপুরেও তো ঠিক মতো খেলি না। খাওয়া দাওয়া নিয়ে হেয়ালি আমার একদম পছন্দ না অনু। তুলতুলকে খাওয়ানো শেষ হলেই তুই আমার সাথে খাবি।’

আমি মলিন মুখে মনি মা’র দিকে চেয়ে হতাশ নিঃশ্বাস ফেললাম। আড় চোখে পাশে তাকিয়ে ধ্রুবর চাপা হাসি দেখেই আমার গাঁ জ্বলে গেল। মনি মা আমাকে বকা দিলেই যেন উনি সব চেয়ে বেশি খুশি হোন। ধ্রুব এখনও ঠোঁট চেপে হাসছেন। হয়তো আমার তাকিয়ে থাকা দেখেই আরও বেশি করে রাগাতে চাচ্ছেন। আমি ওনার হাসি পাত্তা না দিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেই। তুলতুলের মুখে আবারও খাবার তুলে দিতেই তুলতুল তার সরু দাঁত দিয়ে আমার আঙুলে কামড় বসিয়ে দেয়। সাথে সাথেই আমি মৃদুস্বরে আর্তনাদ করে হাত সরিয়ে নিলাম। ধ্রুব, মনি মা আর আব্বু তিনজনই চমকে তাকালেন আমার দিকে। মনি মা আর আব্বু এক সাথেই জিজ্ঞেস করলেন-

‘কিরে! কি হলো?’

আমি আঙুলের দিকে তাকাতেই দেখলাম তুলতুলের দাঁতের ছাপ পরে গেছে। আমি হাল্কা হাসার চেষ্টা করে ক্ষীন স্বরে বললাম-

‘তুলতুল কামড় দিয়েছে।’

হঠাৎই ধ্রুব ঝুঁকে এলেন আমার দিকে। আমার ডান হাত ধরে নেড়েচেড়ে দেখতে লাগলেন। গম্ভীরমুখে তুলতুলের দিকে চেয়ে বললেন-

‘তুলতুল পাখি তোমাকে বলেছি না মাম্মাকে ব্যথা দিবে না! তুমি দিন দিন পঁচা হয়ে যাচ্ছো। এই যে দেখো তোমার মাম্মাকে কামড় দিয়ে লাল করে ফেলেছো।’

আমি ধ্রুবর হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে মনি মা আব্বুর দিকে লাজুক চোখে তাকাই। তাদের ঠোঁটের কোণে চাপা হাসি দেখে আরও লজ্জা পেলাম। ধ্রুব আঙুল উঁচু করে তুলতুলকে নানান কথা বলে শাসন করছেন। তুলতুলের দিকে চেয়ে দেখলাম মেয়েটা ঠোঁট উল্টে ফোপাঁচ্ছে। হয়তো এখনই কান্না দিবে মেয়েটা। বিরক্তিতে ভাঁজ পরলো আমার কপালে। ধ্রুবর দিকে চেয়ে বিরক্তির স্বরে বললাম-

‘আহহ! বকছেন কেন মেয়েকে? ও বুঝেশুনে ব্যথা দিয়েছে না-কি!’

ধ্রুব সরু চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন-

‘বকা দিচ্ছি না বোঝাচ্ছি যেন আবারও কাউকে ব্যথা না দেয়।’

ধ্রুব আবার তুলতুলের দিকে তাকিয়ে শাসনের সুরে বললেন-

‘আবারও কামড় দিলে মাম্মার হাতে খাওয়া বন্ধ করে দিবো। আমার কথা মনে থাকে যেন তুলতুল পাখি।’

তুলতুল এবার ফোপাঁতে ফোপাঁতেই চিৎকার দিয়ে কেঁদে দিলো। আমি তুলতুলে ভালো করে কোলে নিয়ে তার পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম। জ্বলন্ত চোখে চাইলাম ধ্রুবর দিকে৷ ক্ষিপ্ত গলায় বললাম-

‘আজব মানুষ তো আপনি! শুধু শুধুই মেয়েটাকে কাঁদালেন।’

আমার কথা শেষ হতেই মনি মা তিক্ত গলায় বললেন-

‘একদম বাপের মতো হয়েছে। যেমন বাপ তেমন তার ছেলে।’

‘এই ফাজিল ছেলে একদমই আমার হয়নি। আমি কোনো কালেই ধ্রুবর মতো বেপরোয়া ছিলাম না। ধ্রুব তো তোমার মতো হয়েছে।’

তৎক্ষনাৎ আব্বু প্রতিবাদ করলেন মনি মা’র কথায়। আব্বুর প্রতিবাদে তেঁতে উঠলেন মনি মা। রাগান্বিত হয়ে বললেন-

‘একদম বাজে বলবেন না ধ্রুবর বাবা। ধ্রুব হুবহু আপনার মতো হয়েছে। মনে নেই ধ্রুব ছোট বেলায় খেলনার গাড়ি দিয়ে আমার মাথায় বাড়ি দিয়েছিলো বলে ওর পিঠে থাপ্পড় দিয়ে পাঁচ আঙুলের ছাপ বসিয়ে দিয়ে ছিলেন!’

ধ্রুব এতটা সময় নিশ্চুপ থালকেও এবার বিস্ফোরিত চোখে তাকায় আব্বুর দিকে। খানিকক্ষণ স্থির থেকে তীক্ষ্ণ গলায় জিজ্ঞেস করলেন-

‘আব্বু! মা কি সত্যিই বলছে?? তুমি আমাকে মেরেছিলে?’

আব্বু হকচকিয়ে গেলেন। মনি মা’র কথাই সত্যি সেটা তার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। আমি বোকার মতো বসে তাদের তর্ক করা দেখছি। তুলতুলও এখন কান্না থামিয়ে তাদের কান্ডকারখানা দেখছে। আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে তুলতুলকে খাওয়ানো শুরু করলাম। যাকে নিয়ে ঝগড়ার শুরু তার দিকেই এনাদের খেয়াল নেই। কি অদ্ভুত মানুষ। একজন আরেকজনের সাথে যেন সাপেনেউলে সম্পর্ক। ঝগড়া আর ধমকা ধমকি মাঝেই যেন এনারা একজন আরেক জনের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেন।

‘তুমি নিজ ইচ্ছেতে বিয়ে করনি তাই না অনুপাখি? আমি জানি তুমি কখনই অন্য কাউকে বিয়ে করতে রাজি হবে না।’

সাদাফের মেসেজ দেখেই খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে পরলাম। সাদাফের নাম্বার ব্লক ছিল। এখন আবার অন্য নাম্বার দিয়ে মেসেজ দিয়েছে। আমি পাশ ফিরে তাকালাম খুব সাবধানে। ধ্রুব ঘুমিয়ে আছে। তুলতুলকে আজ মনি মা নিয়ে গেছে। মনি মা’র মনে হচ্ছিলো আমি ঠিক নেই তাই আমাকে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরার হুকুম দিয়েছে। তবে মনি মাকে কীভাবে বলি আমার ঘুম হবে না। ঘুম এসে ধরা দিবে না আমার চোখের পাতায়। আমার ভাবনার মাঝেই আবারও মেসেজ টোন বেজে উঠল। আমি মেসেজ না দেখেই তাড়াহুড়ো করে নাম্বার ব্লক করে দিলাম। ফোনটা বালিশের নিচে রেখে চোখ দুটো বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। মিনিট খানেক পর আবারও ফোন বেজে উঠল। অচেনা নাম্বার থেকে কল এসেছে। আমি খানিকটা বিরক্তি নিয়ে ফোন রিসিভ করতেই সাদাফ হড়বড়িয়ে বলল-

‘আমার নাম্বার ব্লক করে দিচ্ছো কেন অনন্যা?’

ভীষণ রাগ হলো। রাগে চিড়বিড়িয়ে উঠলো আমার সারা শরীর। মস্তিষ্কের নিউরনে নিউরনে বয়ে তীব্র রাগ। আমি সাদাফের প্রশ্নের কোনো জবাব না দিয়েই ফোন কেটে দিলাম। সাথে সাথেই আবারও ফোন আসলো। এবার আর রাগ সামলাতে পারলাম। হাতের ফোনটা ছুড়ে ফেললাম মেঝেতে। ফোন ভাঙার ঝংকার তোলা শব্দে ধ্রুব খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই উঠে আমার দিকে ফিরে বসলেন। ওনার চোখ মুখ আর উঠে বসার ভঙ্গি দেখে মনে হলো না তিনি এতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলেন। আমার দিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে থেকে অত্যন্ত শীতল কন্ঠে জিজ্ঞেস করলেন-

‘কেমন আছো সানসাইন?’

ওনার কন্ঠে আর ওনার প্রশ্নে অদ্ভুত কিছু ছিল। আমার রাগ জেদ নিমিষেই উবে গেল। ক্লান্ত বোধ করলাম খুব। হাঁপিয়ে উঠেছি প্রতিদিনের এত ঝামেলা আর সবার সামনে অভিনয় করতে করতে। ভীষণ অসহায় হয়েই কান্না শুরু করে দিলাম। ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠলাম আমি। খানিকটা সময় পর ধ্রুব আমার পাশে এসে শুয়ে পরলেন। আমাকে টেনে ওনার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলেন খুব যত্নসহকারে। আমাকে আগলে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে শান্ত গলায় বললেন-

‘আমার পারসোনাল বুকটা আজ থেকে তোমার সাথে শেয়ার করলাম সাইনসাইন।’

কান্নার মাঝেও শান্তি অনুভব করলাম আমি। এত এত কষ্টের মাঝেও শেষ রাতে এসে কারও বুকে ঠাঁই পেলাম। মাথায় কারও ভরসার হাত পেলাম। চোখেরজলে কারও একজনের বুক ভেজা ওর অধিকার পেলাম খুব। শান্ত হলাম আমি। সকল কষ্ট, বিষন্নতা যেন বিদায় নিলো ধ্রুবর কাছে এসে।

চলবে…

[বিঃদ্রঃ যারা সাদাফ চরিত্রটাকে চাচ্ছেন না। ধ্রুবর সাথে তাড়াতাড়ি মিল চাচ্ছেন তাদের জন্য কিছু কথা-
১. সাদাফ অনন্যার এক্স ছিল না। যদিও সাদাফ ট্যুরে ছিল তবে তাকে ভালোবাসা অবস্থায় ধ্রুবর সাথে অনন্যার বিয়ে হয়েছে। তাই সাদাফের বিষয়টা এখনও পুরোপুরি অতীত হয়নি। সাদাফ বর্তমানে আসবে এটাই স্বাভাবিক ছিল। আর হ্যাঁ একজনকে ভালোবাসার পর অন্যজনকে তো আর এত সহজে ভালোবাসা যায় না তা-ই না? তাই ধ্রুব ‘অনন্যার সম্পর্কেও একটু সময় লাগবে।
২. তাড়াতাড়ি সাদাফকে বিদায় করে দিয়ে ধ্রুবর সাথে অনন্যার মিল দিলে তো গল্পই শেষ। তাহলে আমি লিখবো কি??🙄 আপনারা বুলেট ট্রেনের মতো গল্প চাইলে তো আমি দশ পর্বেই শেষ করতে পারতাম।
৩. এটা আমার লেখা গল্প। আমি চাইলেই সাদাফের চরিত্রটা স্কিপ করতে পারি তবে আমার এটাও খেয়াল রাখতে হবে তাড়াহুড়ো করে যেন গল্পটা খাপছাড়া করে না ফেলি। গল্প লেখি বলে তো এমন না যে একদিনেএ একজনের ভালোবাসা অন্যজন্ব্র প্রতি ট্রান্সফার করে দিবো।
আশাকরি সবাই আমার কথা বুঝতে পেরেছেন। কথা গুলো সবার জন্যই বলেছি। তাড়াতাড়ি করে গল্পের বিষয় গুলো স্কিপ করলে সেটা এলোমেলো হয়ে যাবে। তাই সবাইকে অপেক্ষা করার অনুরোধ রইলো৷ কথা গুলো কারও খারাপ লাগলে আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here