সূর্য ডোবার আগে পর্ব-১৮

0
1952

#সূর্য_ডোবার_আগে
পর্ব-১৮
লেখিকা ~ #সুমন্দ্রামিত্র
কঠোরভাবে প্রাপ্তমনষ্কদের জন্য।
.
.
.

কালিদাসের “কুমারসম্ভবম্” কাব্যে কথিত আছে পুরাকালে দেবাদিদেব মহাদেবকে পতিরূপে পাওয়ার জন্য হিমালয়দুহিতা পার্বতী তপস্যা করেছিলেন, কঠোর সে তপস্যা। দেবাদিদেবের আশীর্বাদ প্রার্থনায় দুর্গম কৈলাশের কোনো এক জনহীন অরণ্যে বছরের পর বছর তপস্যারত পার্বতী এক পর্যায়ে কেবল একটি ঝরে পড়া পাতা ভক্ষণ করে দিনযাপন করতেন, তাই তাঁর অপর নাম “অপর্ণা”।
.
.

তুলনা টানাই বাহুল্য!
তবে এ কালের কলিযুগে অতটা না হলেও, আমাদের তিন্নিও একটা ফোনের অপেক্ষায় গত দুই সপ্তাহ যেন কঠিন তপস্যা করছিল। হয়তো নিরাহারে নয়, কিন্তু প্রতিটি দিন চোখের জলে অর্ঘ্য সাজিয়ে ঈশ্বরকে নিবেদন করতো নিজের মনের গোপনতম প্রার্থনা, কাল রাতে সেই প্রার্থনা ওর পূরণ হয়েছে। সন্ধ্যেবেলায় অফিসফেরতা নয়, আজ কাকভোরে অফিস যাওয়ার সময়ই স্টেশনরোডে বিশালাক্ষী মন্দিরের সামনে রতনকাকুর রিকশা থেকে নেমে পড়লো তিন্নি। অত সকালে মন্দির খোলে নি তখনও, তা হোক! বন্ধ দরজাতেই মাথা ঠুকে, বাড়ি থেকে লুকিয়ে নিয়ে আসা ধুপকাঠি জ্বেলে খুব করে ভক্তিভরে পুজো দিয়েছে ও। তিন্নির জলভরা চোখ আর হাসিমুখের প্রার্থনা কি বন্ধ মন্দিরের ভেতরে কালো পাথরের মুর্তিকেও টলিয়ে দিল একটু? লোহার গ্রিলের ফাঁক দিয়ে যেটুকু দেখা যায় আর কি, কেন জানি তিন্নির মনে হল, বাসি ফুলপাতায় জড়ানো কঠিনপাষাণ মুর্তির মুখেও আজ হাসি লেগে আছে একটু। কৃষ্ণকালো চোখদুটি বুজিয়ে দুই হাতজোড় করে বিড়বিড় করতে লাগলো তিন্নি — “ওকে একটু দেখো ঠাকুর, ওকে ভালো রেখো। ওর কোনো চোট আসার হলে সে আঘাত আমায় দিও, ওর কোন ক্ষতি হওয়ার আগে সে ক্ষতি আমায় করো। শুধু ওকে ভালো রেখো তুমি, আর কিচ্ছু চাই না।”

অশ্রুসজল চোখে পাতলা ঠোঁটদুটো নড়ে চললো তিন্নির, বারবার একই প্রার্থনায়।
**************************__****************************

~ “আজ তিতলি বনকে ম্যয় চলি”

সকালে ঘুম ভাঙার পর থেকেই দুনিয়ার অগাবগা যতরকম থার্ডক্লাস হিন্দিগান আছে, ননস্টপ বেজে চলেছে তিন্নির মাথায়, আর নিজের অজান্তেই মুখে হাসি ফুটে উঠছে বারবার। কতবছর পর যে এমন শান্তির নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম ঘুমিয়েছে তিন্নি, ও নিজেও জানে না! সকাল থেকেই মনটা ফুরফুরে, অন্য রকমের আনন্দের জোয়ার শরীরে। অন্য শনিবারগুলো অফিস যেতে একদম ইচ্ছে করে না ওর, কিন্তু আজ যেন পালকের মতো হালকা মন। কোথায় সেই সদাবিষন্নতার কালো ছায়া?কিশোরী চপলতার হাসিতে ভরে তিন্নির মুখ, প্রাণশক্তির উচ্ছাসে চোখ জ্বলজ্বল করছে। লোকাল ট্রেন, অটোর লাইন সব পেরিয়ে সপ্তাহান্তের ভোরের আলসেমি মাখা সেক্টরফাইভের চোদ্দতলার অফিসে অন্যান্যদিনের মতো স্নিকার্সপায়ে হনহনে গম্ভীর পদক্ষেপ নয়, তিন্নি আজ অফিসে ঢুকলো প্রায় লাফিয়ে লাফিয়ে! সাদা কুর্তি, লাল-নীল-হলদে-গোলাপির বাঁধনি স্কার্ফ আর নীল ডেনিমে ও যেন এক উড়ন্ত প্রজাপতি, মুখে লেগে থাকা আলতো হাসি তখনও অমলিন! পারলে, এখনই ডানা লাগিয়ে উড়ে যায় সিকিমের পার্বত্য উপত্যকায়, মেজর অভিমন্যু সেনের পাশে। নেহাত তা সম্ভব নয় তাই আকাশউঁচু ঝাঁ চকচকে কর্পোরেট হাবের স্বল্পপরিসর ফ্লোরেই উড়ে বেড়াতে লাগলো তিন্নি। মিস “স্যাড ফেস” ওরফে মিস “ডাঁটিয়াল” সীমন্তিনী আচারিয়ার এহেন অকস্মাৎ পরিবর্তনে সকল সহকর্মীরাই একেবারে হাঁ। একরাতে হলোটা কি? তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে সবাই। যারা কোনোদিন তিন্নিকে ডেকে কথা অবধি বলে না, তারাও আজ বিভিন্ন কাজের ছুতোয় বারবার ওর ডেস্কে আসছে আর অবাক কান্ড, মিষ্টি করে হেসে তাদের সাথে কথা বলছে তিন্নিও! “সীমন্তিনী আচারিয়া – মিষ্টি হাসি – সবার সাথে কথা বলছে” এমন বাম্পার কম্বো অফার বোধহয় বুধবারের বিগবাজারের সেলেও পাওয়া যাবে না! হাসলে যে মেয়েটাকে এত মিষ্টি লাগে, তাই বা কে জানতো?

তিন্নির এক বয়ষ্ক কলীগ, প্রবাল’দা তো বলেই ফেললেন — “কি ব্যপার সীমন্তিনী, আজ এতো হাসিখুশি? তোমার কি বিয়ের ঠিক হয়ে গেছে?”

মুখে মিষ্টি হাসি লেগে থাকলেও তিন্নির মনটা সেই শানিত তরবারিই হয়ে আছে। একগাল হেসে জবাব দিল — “না প্রবালদা, তাহলে তো রসগোল্লার হাঁড়ি নিয়ে আসতাম। মেয়েদের কি বিয়ে ঠিক না হলে হাসতে নেই?”

রসগোল্লা নয়, তিন্নি যেন একআঁটি নিমপাতা ঢুকিয়ে দিয়েছে বয়ষ্ক সহকর্মীর মুখে। কোন জবাব না দিয়ে মুখ কালো করে চলে গেলেন প্রবালদা।

কিছুক্ষনের মধ্যে ফ্লোরে কানাকানি শুরু হয়ে গেল, আরো দু তিনজন এসে তিন্নিকে “বিয়ের জন্য“ কনগ্র্যাচুলেশন জানালো! এবার একটু একটু বিরক্ত লাগতে শুরু করেছে তিন্নির! আচ্ছা জ্বালা তো? নিজের মতো কি কেউ থাকতে দেবে না ওকে? কম্পিউটারের স্ক্রীনে চোখ এঁটে মন দিয়ে ডিবাগিং করছিলো, সায়ক উঠে এলো ওর কিউবিকলে, ধরা গলায় জিজ্ঞেস করলো — “কেমন আছিস সীমন্তিনী? সত্যি সত্যি তোর বিয়ের ঠিক হয়ে গেছে?”

বেঁচে থাকা ছিটেফোঁটা আনন্দটুকুতে যেন একফোঁটা চোনা পড়ে মন তেঁতো হয়ে উঠলো তিন্নির। সেই সিকিম থেকে ফিরে আসার পর এই প্রথমবার সায়ক কথা বলতে এগিয়ে এল! মাঝের দিনগুলিতে তিস্তা-ভাগীরথী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। সায়ক কি ভুলে গেল কখনো ভুল কোড লিখে, ইচ্ছাকৃতভাবে ডেডলাইন মিস করে, কখনো বা টিমলিডের কাছে কমপ্লেন করে পদে পদে কিভাবে অপদস্ত করার চেষ্টা করেছে তিন্নিকে এ’ কয়দিন? কম্পিউটারের স্ক্রীন থেকে চোখ না সরিয়েই তিতকুটে গলায় তিন্নি বললো – “নিজের সিটে যা সায়ক। আমার পার্সোনাল ম্যাটারে নাক গলানোর চেষ্টাও করবি না, তোর সাথে আমার কোনো কথা বলার নেই।“

আগের মতোই ধরা ধরা গলায় সায়ক বললো — “সেই দিনটার জন্য আই আ্যম রিয়েলি সরি সীমন্তিনী! অনেকবার বলবো বলবো করেও তোর কাছে ক্ষমা চেয়ে উঠতে পারি নি। আমরা কি একটু একা কথা বলতে পারি?”

— তোর সাথে আমার কোনো কথা বলার নেই সায়ক। মাইন্ড ইওয়োর ওন বিজনেস। আর কোন ভাষায় এ কথাটা বললে তোর কানে ঢুকবে?

সায়ক একবার চোখ বুলিয়ে নিল চারপাশে। দেড়মানুষপ্রমান কাঁচের জানলা দিয়ে দুরে নলবনের ভেড়ি দেখা যাচ্ছে, আকাশে ছাইরঙা মেঘ। রোদ নেই, বৃষ্টিও পড়ছে না।বাইরের দমবন্ধ করা গুমোট প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে সেক্টরফাইভের চোদ্দতলার এই সম্পূর্ন এসিফ্লোরও এখন প্রায় নিস্তব্ধ, তবে ছুঁচ পড়লে শব্দ শোনা যাবে না কারণ জুতোর তলায় নরম কার্পেট। চিরাচরিত অফিসের কলরব, গুন্জন নেই। চাপা কাশির আওয়াজ ভেসে এলো দু একটা। সায়ক লক্ষ্য করলো, দৃষ্টিসীমার মধ্যে অন্তত দশ বারোজোড়া কালো বাদামি চোখ ওদের দিকে তাকিয়ে, বাকিদের কান খাড়া! সবাই উৎকীর্ন ওদের কথা শুনতে। দমে গেল সায়ক, শুকনো হয়ে আসা ঠোঁট চেটে নিয়ে চাপা গলায় বললো — “সীমন্তিনী, কুল ডাউন প্লিজ! সবাই দেখছে এখানে। নীচে চল, আগের মতো চা খেতে যাই। তারপর খুলে বলছি সব…..”

জলন্ত দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকালো তিন্নি, সায়ক কথা শেষ করতে পারলো না! চারিদিকে চোখ না বুলিয়েই তিন্নি বুঝতে পারলো, সবার কান খাড়া হয়ে আছে ওর জবাব শোনার জন্য। যতটা সম্ভব নীচু গলায় বলা যায়, হিসিয়ে উঠলো তিন্নি — “দেখলে দেখুক, তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না সায়ক। তবে তোর সাথে আমার কোথাও যাওয়ারও নেই। ফারদার আমাকে বিরক্ত না করলেই খুশি হবো।“

খুক খুক শব্দে কাশি দিয়ে কেউ হাসি চাপার চেষ্টা করলো হয়তো। কিউবিকলের আশেপাশে দুই তিনটে পরিচিত মুখে ফুটে উঠলো তির্যক ব্যঙ্গ। এরপর আর দাঁড়িয়ে থাকা যায় না! পায়ে পায়ে নিজের কিউবিকলে ফিরে গেলো সায়ক। খিচড়ে যাওয়া মনটা আর ঠিক হলো না তিন্নির।

বহুদিনের অভ্যাসের মেকি হাসিটা ঠোঁটের আগে জোর করেও চিপকাতে পারলো না। মুখ বুজে ঝড়ের গতিতে ১০ পেজের কোডিং লিখতে বসে গেলো ও। প্রজেক্টের ডেডলাইন শেষ হওয়ার আগেই কাজ কমপ্লিট করা সীমন্তিনী আচারিয়ার অভ্যেস ও ভালোলাগা। অপরের সমালোচনা, নোংরা রাজনীতি আর PNPC না করেও এ অফিসে টিঁকে থাকতে হলে ভালো কাজ করতেই হবে।

**************************__****************************

সংসারে যে তাঁর রাশ আলগা হচ্ছে, বুঝতে পারছেন ভাস্বতীদেবী। তিন্নি চিরকালই মুখচোরা, উদাসীন “নন প্রব্লেমেটিক” চাইল্ড, শুভ ছিল ডানপিটে, মারকুটে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে ওনার প্রশ্রয়েই সেটা আরো বেড়েছে কিন্তু কি যে তিন্নি ঘুরতে যাবো বলে জেদ ধরলো ওর বাবার কাছে আর ভাস্বতীদেবীও কি এক দুর্বলতায় সম্মতি দিয়ে ফেললেন, ঘুরে আসার পর থেকে তিন্নি আমূল বদলে গেছে। আগের মতোই চুপ, কিন্তু নির্লিপ্ত! এ যেন শান্ত আগুন! ধিকিধিকি জ্বলছে, বাইরে থেকে আঁচ পাওয়া যাবে না কিন্তু হাত দিলে হাত ঝলসে যাবে। আজকাল তিন্নি আর ওনাকে কিছু “জিজ্ঞেস” করে না, নিজের কথাটুকু বলে ঘরে চলে যায়। নিজের ঘরেই থাকে, আবার অফিস না থাকলেও সন্ধ্যেবেলায় বেরিয়ে যায় মিনিট দশের জন্য! জিজ্ঞেস করলে স্পষ্ট উত্তর দেয় না, বলে “কাজ ছিল”। ভাস্বতীদেবী চেঁচালেও তাতে যেন কান যায় না তিন্নির, নির্লিপ্তভাবে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়, আবার ফিরেও আসে ঘন্টাখানেক পর। এমনকি শুভ যে শুভ, সেও যেন দিদিকে আজকাল এড়িয়েই চলছে, সমীহ করে কথা বলছে! মেয়েকে এবার যেন একটু ভয়ই পাচ্ছেন ভাস্বতীদেবী। চিরকালের নাস্তিক মেয়েটা নাকি আজকাল মন্দিরেও যায়!শুনেছিলেন বটে, সিকিমে কি সব বৌদ্ধমঠ আছে, তন্ত্রমন্ত্র শেখায় …..তিন্নি কি সেই সব শিখে এলো নাকি?

অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পর উশখুশ করছে তিন্নি। অফিসের খিঁচড়ে যাওয়া মুড্ ঠিক হয়ে গেছে অনেক আগেই, এখন মন আবার ফুরফুরে কিন্তু বুক দুরদুর। “কখন তোমার আসবে টেলিফোন” গানটার এই একটা লাইনই ননস্টপ বেজে চলেছে ওর কানে! তার সাথে পিটুইট্যারি নিঃসৃত হরমোনগুলোও আজ বাঁধন ছাড়া! পেটে উড়ছে বেশ কয়েকটা প্রজাপতি, সবমিলিয়ে তিন্নি আজ আর নিজেতে নেই। অন্যান্য দিনের মতো অফিসফেরতা আজ রঞ্জনবাবুর ঘরে গিয়ে বসে নি ও, নিজের ঘরেই ফোন নিয়ে কি’সব ঘুটুরঘুটুর করছিলো। রাতের খাবারটাও ঠিক করে খেতে পারছিলো না, বার বার ঘড়ি দেখছে। খাওয়ার টেবিলে টুকটাক কথাবার্তা হচ্ছে, রঞ্জনবাবুই মূলত বক্তা, কিন্তু যার উদ্দেশ্যে বলা সে বোধহয় এ জগতেই নেই। আর থাকতে না পেরে রঞ্জনবাবু চিন্তিত হয়ে বললেন – “কি হয়েছে রে মা? বার বার ঘড়ি দেখছিস কেন? আজ কি চন্দ্রগ্রহণ?

দেওয়ালঘড়ির দিকে অন্যমনস্ক হয়ে তাকিয়েছিল তিন্নি, রঞ্জনবাবুর কথায় আকাশ থেকেই পড়লো – “চন্দ্রগ্রহণ কেন হতে যাবে বাবা?”

— এতো রাতে তো কেউ বাড়ি আসবে না! কাল রোববার, তোর অফিস যাওয়ার তাড়া নেই! যে রেটে ঘড়ি দেখছিস, তাই ভাবলাম রাতে ছাদে উঠে চাঁদ দেখবি নাকি?

বাবা কি ইয়ার্কি করছে ওর সাথে? ঠিক বুঝতে না পেরে রঞ্জনবাবুর আপাত গম্ভীরমুখের দিকে অসহায়ের মতো তাকিয়েছিল তিন্নি। এদিকে ভাস্বতীদেবী খাবার দিতে দিতে তিন্নির অকস্মাৎ পরিবর্তনের কথা চিন্তা করছিলেন, অন্যমনস্ক হয়ে বললেন, — “না না, রাতে ওসব ছাদে ফাদে চন্দ্রগ্রহণ দেখতে হবে না। কে কোথায় তুকতাক করে রেখেছে, ডাকিনি যোগিনীরা ভর করবে!”

— “যত্তসব মিডলক্লাস ভাবনাচিন্তা আর আদিখ্যেতা!”
খেতে খেতেই বিড়বিড় করলো শুভ! আর পারে যায় নাকি! সবাই মিলে দিদিকে মাথায় তুলে নাচাটাই বাকি রেখেছে এবার।

মা-বাবা-ভাই তিনজনের তিনরকম প্রতিক্রিয়া দেখে ঘাবড়ে গেলো তিন্নি,এতক্ষন টেবিলে কি কথা হয়েছে ও কিছুই শোনে নি। ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে রইলো, শুধু হো হো করে হেসে উঠলেন রঞ্জনবাবু।

আচ্ছা জ্বালা হলো তো!
বিব্রত হয়ে খাবার খোঁটায় মন দিলো তিন্নি, কোনরকমকে প্লেটের খাবারগুলো পেটে চালান করে ডিনার টেবিল উঠতে পারলে যেন ও বাঁচে। খাওয়া শেষ করে ঘরে এসেই দরজা বন্ধ করে দিলো তিন্নি, ফোনটাকে চার্জ বসিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো কখন এগারোটা বাজবে।
**************************__****************************

টিক টিক। টিক টিক।
.

.

ঘড়ির কাঁটাগুলো পেরিয়ে যাচ্ছে।এগারোটা, সাড়ে এগারোটা ……. নির্ঘুম চোখে ফোনের দিকে তাকিয়ে বসে আছে তিন্নি। ঠিক এগারোটা বিয়াল্লিশে ফোনটা এলো, একটা রিং হওয়ারও আগে প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়লো তিন্নি ফোনটার ওপর

– “হ্যালো।“

এতো তাড়াতাড়ি ফোনটা রিসিভ হবে অভিমন্যু বুঝতে পারে নি, একটু হকচকিয়ে গেলেও হেসে সামাল দিলো – “ফোনটা হাতে ধরেই বসেছিলেন নাকি?”

কেমন এক নিষিদ্ধ লজ্জায় গালদুটো লাল হয়ে উঠলো তিন্নির। ফোনের আড়ালে থেকেও অভিমন্যুর কাছে বার বার কি’করে ওর আচরণগুলো ধরা পরে যায়? গলা স্বাভাবিক রাখার যথা সম্ভব চেষ্টা করে বললো – “কই? মোটেও না!”

— আ-চ্ছা?

দুজনেই হেসে ফেললো এবার। একজনের ধরা পরে যাওয়ার ছেলেমানুষির হাসি, আর অপরজনের সেই ছেলেমানুষিকে প্রশ্রয় দেওয়ার হাসি। তারপর দুজনেই একসাথে, একসুরে বলে উঠলো – “কেমন আছেন?”

আবারও হেসে উঠলো ওরা।
মেজর অভিমন্যু সেন কি বয়সে দশবছর পিছিয়ে গেলেন? কতবছর পর এতো স্বাভাবিক ভাবে হাসছেন উনি? একদিনের মধ্যে নিজের গম্ভীর কঠিন চরিত্রের পরিবর্তনে অবাক হয়েও সামলে নিলেন, সহজ গলায় বললেন – “ম্যাডাম আজ খুব খুশি মনে হচ্ছে?“

খুশি হবে না? তিন্নির মন যে ফড়িংয়ের মতো নেচে চলেছে আজ সকাল থেকে, একটি ফোনের অপেক্ষায়! ওর ছোট্ট প্রজাপতি মনে কত খুশি ধরা থাকতে পারে তা যদি মেজর অভিমন্যু সেন জানতে পারতেন! কিন্তু উত্তর কে দেবে? তিন্নি যে তখন ভাবসাগরে সাঁতরে বেড়াচ্ছে। অভিমন্যুর গলা শুনলে এই মেয়ে হারিয়ে যায় কোন প্রেমের উজানস্রোতে, ওকেও যে কথা বলতে হবে সেকথা মনেই থাকে না তিন্নির। বিভোর হয়ে ছিল, চটকা ভাঙলো অভিমন্যুর আওয়াজে –”মাঝে মাঝে কোথায় হারিয়ে যান বলুন তো?”

নিজের মনকে কষে ধমক দিয়ে লাগাম লাগলো উছলে পড়া স্ফূর্তিতে, ফোনে ফিরে এলো তিন্নি — “এইতো! এখানেই আছি।”

— কি করলেন আজ সারাদিন? অফিস হলো?

এবার একটু চমকে গেলো তিন্নি। গলার স্বরে মনের কথা পড়ে নেওয়া অবধি ঠিক আছে, কিন্তু অভিমন্যু কি করে জানলো শনিবার ওর অফিস থাকে? ও’ ই কি বলেছিলো আগে কখনো? মনে পড়ছে না তো! অভিমন্যুও নিজেকে চটজলদি সামলে নিলো

– ওহ! আজ তো শনিবার, ভুলেই গেছিলাম।

— আমাদের শনিবার অফিস থাকে, সোমবার ছুটি।

পাছে ঘরের বাইরে গলার আওয়াজ যায় সেই ভয়ে দরজার সাথে সাথে ঘরের জানলাটাও বন্ধ করে দিয়েছিলো তিন্নি, এদিকে মিসেস বিয়াঙ্কা আজ অন্যদিনের থেকে অনেক আগেই শুতে এসে জানলা বন্ধ দেখে তারস্বরে সারা পাড়া কাঁপিয়ে কাঁদতে লেগেছে, জানলাই আঁচড়ে চলেছে।

আচ্ছা জ্বালা হলো তো!
শান্তিতে দুটো কথাও বলা যাবে না? কতদিন পর অভিমন্যুর সাথে কথা বলার সুযোগ পেয়েছে তিন্নি, তাতেও এতো বাধা আর সহ্য হয়? এই প্রথমবার এতোবছরের আদরের পোষ্য বেড়ালকেও কষে দু ঘা লাগাতে ইচ্ছে হলো তিন্নির। কিন্তু উপায় নেই। পাছে মা আবার উঠে পড়ে, বাধ্য হয়ে ফোনে বললো – “ প্লিজ.. একটু হোল্ড করবেন? আমি মিসেস বিয়াঙ্কাকে জানলাটা খুলে দিয়ে আসি। জাস্ট এক মিনিট?“

ওপ্রান্তে শান্ত গলা, একটুও বিরক্তির ছিটেফোঁটা নেই – “ও.কে….।“

ফোনটা রেখে লাফিয়ে উঠে জানলা খুলে দিতেই ম্যাঁওওওও আওয়াজ করে মিসেস বিয়াঙ্কা মানে তিন্নির আদরের সাদাহলদে মেনী জানলা থেকে একলাফে সোজা ওর বিছানায় ল্যান্ড করলো। তারআগে মাঝপথে তিন্নিকে একটা বড়োসড়ো আঁচড় কাটতে ভোলে নি। জুলজুল করে তাকিয়ে আছে ওর দিকে, ভাবখানা এমন – “আমাকে অপেক্ষা করানো? জানলা বন্ধ করেছিলে কেন?” রামজ্বলুনি জ্বলছে আঁচড়ের জায়গাটা কিন্তু এখন ওসব দেখার সময় নেই তিন্নির। জানলাটা সজোরে বন্ধ করে দিয়ে আর এক লাফে খাটে ফিরে এলো তিন্নি। মিসেস বিয়াঙ্কাকে কোলের কাছে চেপে সাকুল্যে তিরিশ সেকেন্ডের মধ্যেই ব্যাক টু ফোন, বুক ধুকপুক করছে। কল কেটে যায় নি তো? ইশশ্! অভিমন্যু কি ভাবছে কে জানে! ব্যস্ত হয়ে বললো — “আছেন তো?”

আলতো হাসির আওয়াজ এলো একটা – “হুম…ম, আছি।“

তিন্নি বিব্রত গলায় বললো – “সরি, আসলে মিসেস বিয়াঙ্কা মানে আমার বেড়াল..,জানলা বন্ধ থাকলেই অমনি কান্নাকাটি করে রাতে যদি ঘরে ঢুকতে না পারে। খুব জেদী ও।“

— আপনার মতো?

— মা-আ-নে?

ফোনের মধ্যে প্রায় চেঁচিয়ে উঠতে উঠতেও কোনরকমে নিজেকে সামলে নিলো তিন্নি! ভাগ্যিস দরজা জানলা সব বন্ধ! ওপ্রান্তে হেসে ফেললো অভিমন্যু, প্রসঙ্গ পাল্টে বললো — এই মিসেস বিয়াঙ্কা নামটা কি করে এলো বলুন দেখি?

আজ অবধি কেউ জানতে চায় নি ওর কাছ থেকে এসব কথা। এমনকি বাড়ির কেউ’ও নয়। লজ্জা লজ্জা হাসি হাসলো তিন্নি — হার্জের টিনটিন পড়েছেন?

— অবশ্যই …?

মেজর অভিমন্যু সেন আর টিনটিন? ঠিক মেলানো যায় না! ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেললো তিন্নি। পায়েপায়ে যেন সাত সাতটা বছর পিছিয়ে গিয়ে ধীরগলায় বললো — “ছোটবেলায় আমার খেলতে যাওয়া মানা ছিল, ডাক্তারের কড়া নিষেধ ছিল ছুটোছুটি, দৌড়োদৌড়ি করায়। কোথাও বেড়াতে যাওয়া, পিকনিক, বন্ধুদের সাথে আউটিং স-ব বন্ধ তখন! বই ছিল আমার সবসময়ের বন্ধু। মাঝেসাঝে, বাবা একটা দুটি ছোটদের কমিক বই নিয়ে আসতেন অফিসেফেরত। সেখান থেকে টিনটিনের গল্প হয়ে উঠলো আমার সবসময়ের সাথী, নেশার মতো। ক্লাসমেটদের কাছে ধার করে কিংবা লাইব্রেরি থেকে আনিয়ে পড়তাম। বাইরে তো ঘুরতে যেতাম না, তাই টিনটিন ছিল আমার বাইরে বেরোনোর চাবিকাঠি! কোথায় যাই নি বলুন তো টিনটিনের সাথে? কঙ্গো, ইজিপ্ট, তিব্বত, চীন লোহিত সাগর…… সারা পৃথিবী! “

—- আর ….. মিসেস বিয়াঙ্কা ইজ বিয়াঙ্কা কাস্তাফিয়োরে?

কাউকে নিজের সামান্য ছোট ছোট কথাগুলো শেয়ার করার মধ্যেও যে আনন্দ লেগে থাকে, তা কি আগে জানতো তিন্নি? শিশুর মতো খুশিতে উচ্ছল হয়ে উঠলো —- “ওমনি বুঝে গেলেন তো?”

হেসে ফেললো অভিমন্যু — সরি ফর ইন্টারাপ্টিং ইউ….. প্লিজ কন্টিনিউ।

— আর কি বলবো? লং স্টোরি শর্ট, বছর সাত আট আগে বাড়ির সামনে একদিন একটি ছোট্ট বেড়াল কুড়িয়ে পেলাম, ছোট প্রাণ কিন্তু গলা বাঁজখাই! টিনটিনের বিয়াঙ্কা কাস্তাফিয়োরে এমন গান গাইতেন যে ওয়াইন গ্লাস ভেঙে যেত! ইনিও ঠিক তাই! কাঁচ তো ভাঙবেই, রাত্রিবেলায় জানলা বন্ধ করে রাখলে এমন চেঁচায়, পাড়াপড়শীও ঘুমোতে পারে না! তাই, প্রিয় গায়িকার নামে প্রিয় বেড়াল।

গল্প শেষ করলো তিন্নি, ওপ্রান্তে সবটুকু শুনে প্রাণখোলা স্বতঃস্ফূর্ত হাসি হেসে উঠলো অভিমন্যু

— দারুন ব্যাপার তো? বেশ মজা লাগলো শুনে।

অভিমন্যুর প্রাণখোলা হাসি শুনতে শুনতে আবারো কেমন হারিয়ে যাচ্ছিলো তিন্নি। খু-উব খু-ব ভালো লাগছিলো ওর। খালি মনে হচ্ছিলো,মুঠিফোনে মনের কথা বলা কি সহজ, তাই না? অবশ্যই ভৌগোলিক দূরত্ব, দেখা না হওয়ার কষ্ট – সেগুলো তো আছেই, কিন্তু সামনাসামনি কথা বলার সেই অস্বস্তি, কুন্ঠা বা কোনো জড়তাও যে নেই, -সেটাও তো সত্যি! অত দূরে থেকেও যেন কত কাছাকাছি আজ ওরা, যেন কতদিন চেনে একে অপরকে! সামলাতে না পেরে তিন্নি মুখ ফস্কে বলেই ফেললো – “অভিমন্যু, আপনার এই প্রাণখোলা হাসিটা খুব ভালো লাগে শুনতে, সব সময় এমনি হাসবেন!”

সহাস্য উত্তর দিলো অভিমন্যু — “সবসময় দাঁত বার করে রাখলে লোকে যে পাগল বলবে ম্যাডাম?”

— তবে আমার সাথে কথা বলার সময় হাসবেন।

— এমনি এমনিই?

— এমনি এমনিই!

দুজনেই চুপ করে রইলো, কথা খুঁজে না পাওয়ার জন্য নয়, কি এক পরিপূর্ণতার অনুভূতিতে ওদের দুজনের মনটাই যেন একই সুরে বাঁধা হয়ে গেছে, যেন জন্ম জন্মান্তরের সঙ্গী! ওদের দুজনের মনই যেন খুঁজে বেড়াচ্ছিল একে অপরকে, এতো বছরের প্রতীক্ষার পর আজ মিলেছে ওরা….. এ কি কোইন্সিডেন্স? না কি ডেস্টিনি?
নিস্তব্ধতা ভাঙ্গল অভিমন্যু — “ ম্যাডাম আবার হারিয়ে গেলেন যে! কি ভাবছেন?”

লজ্জা পেয়ে গেল তিন্নি, কিন্তু কি আশ্চর্য্য, কোনো জড়তা ছাড়াই নিজের মনের কথাটাও প্রকাশ করে ফেললো।
— ভাবছিলাম, আপনার কথা, “আমাদের কথা” ……… কেমন অদ্ভুতভাবে সব মিলে গেলো, তাই না?

কি জবাব দেবে অভিমন্যু? সে’ও যে এর উত্তর খুঁজে চলেছে। হাতের ঘড়ি দেখে নিজেকে সামলে নিলো অভিমন্যু, হেসে বললো – “এবার রাখি ম্যাডাম? আর কথা বললে তো ডিউটি থেকে তাড়িয়ে দেবে।“

এখনই? এতো তাড়াতাড়ি?
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনের শামুকখোলে গুটিয়ে গেল তিন্নি, ভেজা ভেজা মনখারাপে গলা ভারী হয়ে উঠলো ওর –“ সরি! আপনাকে বোর করলাম, না? কখন থেকে আমি একাই বকবক করে গেলাম, আপনি শুধু শুনেই গেলেন। কিছু বললেনও না।“

— তা কেন? শুনতেও বেশ লাগছিলো আমার। বেশ …..”অন্যরকম”।

— আপনি যে কথাই বললেন না।

— ফোনটা যে করলাম আপনার কথা শুনবো বলে।

— কাল আবার কল করবেন তো?
না চাইতেও গলা ধরে এলো তিন্নির , যেন ওর সবটুকু চাওয়াপাওয়া একটি ফোনকলে নিবদ্ধ। গলায় শব্দ করে হাসলো অভিমন্যু, আর একটু একটু করে সেই হাসিতে আবারো জ্বলন্ত মোমের মতো গলে যাচ্ছিলো তিন্নির নরম মন!
সুদুর উত্তর সিকিম থেকে দুইহাজার মাইল দুরে পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুরে বেতারতরঙ্গে ঘন হাস্কি স্বর ভেসে এলো
— না করলে যে আপনার এই খুশিমাখা গলাটা শুনতে পাবো না সীমন্তিনী।

আরএকবার বুকের রক্ত ছলকে উঠলো তিন্নির, ব্যাঙাচির মতো লাফিয়ে উঠলো হৃৎপিন্ডটা। যতবার অভিমন্যু ওর নাম ধরে ডাকে, শরীরের প্রতিটি রক্তকণিকা যেন অদৃশ্য গীটারের ঝঙ্কারে তা থৈ নেচে ওঠে! ফোন কানে লাল হয়ে উঠলো তিন্নি, তারপর মৃদু গলায় বললো – “আমার ডাক নাম তিন্নি।“

সারাশরীরে নেশা জড়ানো ঝিন ধরে যাবে এমনি স্থির দৃঢ় গলা ভেসে এলো অভিমন্যুর – “হোক্! সীমন্তিনী নামটা আমার আরো বেশী ভালো লাগে।“

আর একবার কেঁপে উঠলো প্রাণ। পিটুইট্যারি থেকে শিরায় শিরায় ছড়িয়ে যাওয়া আবেগের মাদক মিশ্রিত নীল আচ্ছন্নতা যেন গলার টুঁটি টিপে রেখেছে, কোনো সাড়া দিতে পারলো না তিন্নি।

— “রাখলাম তবে, গুডনাইট।কাল কথা হবে।“

মুখ ফুটে তিন্নি কোনোদিন অভিমন্যুকে “বাই” বলে না, আজও তার ব্যতিক্রম হলো না। তিনসেকেন্ড অপেক্ষা করে অভিমন্যু ফোনটা কেটে দেওয়ার পর ফোনের স্পিকারের জায়গায় হালকা করে নিজের ঠোঁটদুটি ছোঁয়ালো, যেন এখনো অভিমন্যুর উষ্ণ নিঃশ্বাসের শব্দ ভেসে আসছে। সিকিমের শীতল পার্বত্য উপত্যকায় মনে মনে পৌঁছে দিলো ওর কয়েকশো কোটি ভেজা চুম্বন, তারপর বালিশের পাশে ফোনটা রেখে অভিমন্যুর আর্মি জ্যাকেটটা জড়িয়ে ধরে ঘুমের অতলে ডুবে গেল তিন্নি।

.
.
.

“অসম বন্ধুত্ব” নাকি “ডিজিটাল প্রেম” নাকি “লং- ডিসটেন্স রিলেশনশিপ” – খাতায় কলমে হয়তো আরো হাজার একটা নাম কিন্তু এই সম্পর্ক যে কেবল একটি নাম দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না! তিন্নির ঠোঁটে লেগে থাকা হাসির আভাস এখনো মুছে যায় নি, বন্ধ চোখের কোন দিয়ে গড়িয়ে পড়লো এক ফোঁটা নোনতা গরম জল। দুঃখের নয়, বিচ্ছেদের নয় – এই জল পরিপূর্ণতার অশ্রু, খুশির অশ্রু, অনেক রাতের প্রার্থিত, বহুকষ্টে লব্ধ ভালোবাসার নয়ননীর।

ভালোবাসি, ভালোবাসি–
এই সুরে কাছে দূরে জলে স্থলে বাজায় বাঁশি॥
আকাশে কার বুকের মাঝে ব্যথা বাজে,
দিগন্তে কার কালো আঁখি
আঁখির জলে যায় ভাসি॥

সেই সুরে সাগরকূলে বাঁধন খুলে
অতল রোদন উঠে দুলে।
​ সেই সুরে বাজে মনে অকারণে​
ভুলে-যাওয়া গানের বাণী,
ভোলা দিনের কাঁদন-হাসি
ভালোবাসি, ভালোবাসি–

ক্রমশঃ
© সুমন্দ্রা মিত্র। ভালো লাগলে নামসহ শেয়ার করবেন।
**************************__************

বিঃদ্র – আপনাদের যারা এখনো “মন, তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম -Mon tomake chhunye dilam – লেখনী সুমন্দ্রা মিত্র ” পেজটি ফলো করেননি, তাদের সকলকে একান্ত বিনীত অনুরোধ মেনপেজটি লাইক ও ফলো করুনএবং পাশে গিয়ে SEE FIRST অপশনে ক্লিক করে রাখুন, পেজে পোস্ট হওয়ার সাথে সাথেই নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন। এছাড়াও Facebook Storyতে চোখ রাখতে পারেন, মেনপেজে কিছু পোস্ট হলে এই পেজের storyতেও লিঙ্ক দেওয়া থাকে। আপনাদের বন্ধু ও পরিবারবর্গদেরও Invite করুন মেনপেজটি লাইক ও ফলো করতে। লিংক 👇
https://www.facebook.com/মন-তোমাকে-ছুঁয়ে-দিলাম-লেখনী-সুমন্দ্রা-মিত্র-110448980674312/

***********************__******************************

সকল পর্বের লিঙ্ক~
Video Teaser
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/145475543838322/?vh=e&d=n
Part 1
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/145129087206301/?d=n
Part 2
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/145859077133302/?d=n
Part 3
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/146221053763771/?d=n
Part 4
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/146595433726333/?d=n
Part 5
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/147293876989822/?d=n
Part 6
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/148075966911613/?d=n
Part 7
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/148530310199512/?d=n
Part 8
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/148951006824109/?d=n
Part 9
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/149405760111967/?d=n
Part 10
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/150313546687855/?d=n
Part 11
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/151106323275244/?d=n
Part 12
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/151923336526876/?d=n
Part 13
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/152353663150510/?d=n
Part 14
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/154065792979297/?d=n
Part 15
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/156163186102891/?d=n
Part 16
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/157132182672658/?extid=QdVQFGSjLzQUsE31&d=n
Part 17
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/157444422641434/?extid=fI3jIc0PCiYXDa0N&d=n
Part 18
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/158095955909614/?extid=1E2JOZfMCmqscBoi&d=n
Part 19
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/158831902502686/?extid=R8zo6L2l274CIQ7r&d=n
Part 20
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/159626782423198/?extid=0e8jrLLhsuLqgsQX&d=n
Part 21
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/160047349047808/?extid=e9DIdFXAkqxTg77U&d=n
Part 22
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/160963752289501/?extid=EgYDh0z3hVr5TCBY&d=n
Part 23
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/161833698869173/?extid=gRK0HHMoLW0bu0gK&d=n
Part 24
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/162740122111864/?extid=KIR9o3zetBHgH9mt&d=n
Part 25
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/163061178746425/?extid=fhzBxEjnlA7n6Ulu&d=n
Part 26
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/163695728682970/?extid=tm0Y81ykORQhpsq9&d=n
Part 27
https://www.facebook.com/110448980674312/posts/164305438621999/?extid=WsYE2BjXkYvPmqyF&d=n

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here