পারমিতা” পর্ব-১৯

0
1821

#পারমিতা
পর্ব ১৯
_নীলাভ্র জহির

প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরা মানে জাগতিক সব দুশ্চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে একটা প্রশান্তির সন্ধান পাওয়া। এই জিনিসটাই অনুভব করলো রোদ ও পারমিতা। যখন তারা একে অপরকে ছেড়ে দিলো, কেউই কারও দিকে তাকাতে পারছিল না। পারমিতা মাথা নিচু করে রইল। চোখ দুটো ছলছল করছে ওর। রোদ ইতস্ততগ্রস্ত অবস্থায় বলল, আসছি আমি।
বাসা থেকে বেরিয়ে গেল রোদ। পারমিতা দরজা বন্ধ করে দিয়ে অনেক্ষণ দরজার পাশে দাঁড়িয়ে রইল। অজান্তেই এ কি হয়ে গেল ওর! কেনই বা ওরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছিল তার কোনো উত্তর খুঁজে পেলো না পারমিতা। ওর বুকের ভেতর ভয়ানক দহন শুরু হয়েছে।

বিছানার উপুড় হয়ে শুয়ে অনেক্ষণ কাঁদলো পারমিতা। আজকের পর থেকে রোদ জেনে যাবে সেও রোদকে ভালবাসে। নয়তো তার দিক থেকে জড়িয়ে ধরার সাড়া যেতো না।
মোবাইল বাজছে। কল দিয়েছে রোদ। পারমিতা কিছুতেই ফোন ধরবে না ভেবে ফোন সাইলেন্ট করে রাখল। দশ মিনিট পর ফোন হাতে নিয়ে দেখল রোদ আবার কল দিয়েছে। পারমিতা কল কাটলো না। ফোন দূরে সরিয়ে রাখলো। আধা ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর মোবাইল নিয়ে পারমিতা দেখল, রোদ নয়বার কল দিয়েছে। একটা মেসেজ। মেসেজে লেখা, Sorry. Amake maf kore dio. Ajker ei baparTar jonno ami nijeke khoma korte parbo na. Tumi amake maf kore dao Paromita.b

মেসেজটা দেখে পারমিতার কান্না থামলো। রোদ অনেক ভদ্র একটা ছেলে। অন্য কোনো ছেলে হলে কখনো সরি বলতো না ওকে। রোদ সরি বলে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছে ও সবার চেয়ে আলাদা। কিন্তু রোদকে ঠকানো ঠিক হচ্ছে না। এখনো ওর কাছে ডিভোর্স ও প্রীতুলের ব্যাপারটা লুকানো মানে রোদকে ঠকানো। সারা রাত দুশ্চিন্তায় কেটে গেল ওর। ফোন বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ল ও।

ঘুম ভাংল বেলা এগারোটায়। তড়িঘড়ি করে বিছানায় উঠে বসলো ও। নিশ্চয়ই সামান্তা বারবার কল দিয়ে ওকে না পেয়ে টেনশন করছে। প্রীতুল আবার কান্নাকাটি করছে না তো?
পারমিতা দ্রুত ফোন অন করে হাতমুখ ধুয়ে এলো। মিথ্যে নয়, সামান্তা সাত বার কল দিয়েছিল, মিসড কল এলার্টের মেসেজ দেখে নিশ্চিত হয়ে কল দিলো সামান্তার নাম্বারে।
সামান্তা বলল, তোর ফোন অফ কেন ছিল? চিন্তায় মরে যাচ্ছিলাম।
– আমি অফ করে ঘুমাইছিলাম। লেট হয়ে গেল উঠতে।
– তাই বল!
– প্রীতুল কান্নাকাটি করেছে?
– না। ও আমার কাছে কান্নাকাটি করবে বলে তোর মনে হয়? আমি তো ওর আসল মা।
– হ্যাঁ তুইই ওর আসল মা। খেয়েছিস তোরা?
– হ্যাঁ রে। প্রীতুল তো বারবার এটা সেটা খাচ্ছে। তুই তারাতাড়ি বের হয়ে চলে আয় আমার বাসায়। রেডি হতে হবেনা।
– আরে কি বলিস। আমি রেডি হয়ে আসছি।
– ঠিক আছে। চলে আয়। আর একটা কথা বলত, তোর নাম্বার অফ ছিল কেন? রাতে তো বললি রোদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। কোনো ঝামেলা হয়েছে?
– না। ঝামেলা হয়নি। রোদকে সব বলে দেয়া দরকার। আমি আর ওকে ঠকাতে পারছি না।
– কিন্তু কথা ছিল রোদ তোকে প্রপোজ করলে তারপর তুই ওকে সব বলবি।
– আমি চাইনা ও আমাকে প্রপোজ করুক। চাইনা ও আমাকে আর ভালবাসুক। ও অনেক ভালবাসে আমায়। এটা বলার অপেক্ষায় থাকা মানে ও আমাকে আরও ভালবেসে ফেলবে। তখন যদি ওকে বলি আমি ডিভোর্সি, আমার একটা বাচ্চা আছে। রোদ কিছুতেই এটা মেনে নিতে পারবে না। ও আমাকে প্রতারক ভাব্বে। এতদিন ওর সঙ্গে মিশেও ওকে এটা জানাই নি বলে ও আমাকে ঠকবাজ ভাববে। এটা ওকে আগেই জানালে নিশ্চয়ই ও আমাকে ভালবাসতো না। আমি ওকে এত কষ্ট দিতে পারবো না। সবকিছু ওকে জানিয়ে দিতে চাই।
– শোন, মাথা ঠাণ্ডা কর। তুই আমার এখানে আয়। তারপর আমরা ঠিক করবো কোনটা করবি।

পারমিতা শাওয়ারের নিচে অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো। ওর কষ্ট হচ্ছে আজ। তীব্র কষ্ট। একা একা জীবন যাপন করতে গিয়ে নানান রকম প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছে ও। টাকা পয়সা ছিল না, না খেয়ে থেকেছে অনেক রাত, কখনো আবার একাকীত্বের কষ্ট, জীবনের ঘানি বয়ে বেড়ানোর কষ্টগুলো ওকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। কিন্তু রোদের জন্য ওর যে কষ্টটা হচ্ছে, সেটা সব কষ্টকেই ছাড়িয়ে গেছে। তারমানে কি রোদের জন্য তার ভেতর একটা সফট কর্ণার তৈরি হয়েছে? সে কি রোদের জন্য দুর্বল হয়ে যাচ্ছে? আর ভাবতে পারছে না পারমিতা। মানসিক এই ব্যাপারগুলো জীবনটাকে ভীষণ প্যারাদায়ক করে তোলে।

গোসলের পর অনেক ফ্রেশ লাগছে। পারমিতা আয়নার সামনে দাঁড়ালো। একটা কামিজ স্যালোয়ার পরে আয়নায় নিজেকে দেখলো। তার মনে হলো সে আগের তুলনায় অনেক সুন্দর হয়ে গেছে। নিজের যত্ন না নেয়ার অবহেলায় তার চেহারা ও স্বাস্থ্য দুটোই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এখন দুটোই আবার পূর্ণতা ফিরে পেয়েছে। পারমিতা একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। হালকা সাজগোজ করলো ও। আযান হচ্ছে। পারমিতা চমকে উঠল। এটা জোহরের আযান। সে আজকে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠায় দিনের শুরুটাই হয়েছে দুপুরবেলা।

মোবাইল হাতে নিয়ে দেখল অসংখ্যবার মিসড কল উঠে আছে। একুশ বার। রোদ কল দিয়ে যাচ্ছে। পারমিতার বুক চিনচিন করে উঠল। রোদ কি ভাবছে পারমিতা তার ওপর রাগ করে আছে বলে ফোন ধরছে না? হায়রে ভাগ্য। পারমিতা রোদের ওপর রাগ করেনি। রাগ করেছে নিজের ওপর। এভাবে আর রোদকে সে ঠকাতে পারবে না। তাকে সত্যিটা জানিয়ে দেবে। কিন্তু হুট করেই এত বড় একটা সত্য তাকে জানানো যাবে না। পরিবেশ বুঝে জানাতে হবে। সেটারই অপেক্ষা করছে পারমিতা। কিন্তু রোদ হয়তো নিজেকে অপরাধী ভাবছে। তাই এতবার ফোন দিচ্ছে ও।

দুইটা মেসেজও দিয়েছে রোদ। একটিতে বারবার করে ক্ষমা চাওয়ার কথা লেখা আছে। আর অন্যটিতে লিখেছে, আমি নিজের ভেতর অপরাধবোধে ভুগছি। জানি আমার এই কাজে তুমি অনেক কষ্ট পেয়েছো। হয়তো আমাকে খারাপ ভাবছো। হয়তো ভাবছ আমি এডভান্টেজ নিয়েছি। আমাকে এমন ভেবো না পারমিতা। প্লিজ একবার ফোন ধরো। তোমাকে অনেক কথা বলার আছে। প্লিজ পারমিতা। আমাকে মাফ করো।

পারমিতা চমকে উঠল। অনেক কথা বলার আছে! রোদ কি আজকেই ওকে প্রপোজ করতে চায়? গতকাল সন্ধ্যাতেও এই প্রপোজাল পাবার বিষয়টা ওকে আনন্দিত করেছে। কিন্তু আজকে মনে হচ্ছে, রোদ যদি প্রপোজ করার পর পারমিতা ওকে বলে, আমি ডিভোর্সি, রোদ এই কষ্ট কি করে সইবে? রোদের সামনে দিয়ে কিভাবে অফিসে যাবে ও?

সবকিছু ভাবতে ভাবতেই পারমিতা সামান্তার বাসায় পৌঁছে গেল। প্রীতুল দৌড়ে এসে কোলে উঠল ওর। কোলে উঠেই শুরু করল গল্প। গতকাল থেকে নানু ওকে কত কি বানিয়ে খাইয়েছে তার গল্প। পারমিতা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। যেখানে ওর নিজের নানুরই ওকে এত আদর করার কথা!
সামান্তার মা অনেক যত্ন করে পারমিতাকে ভাত খাওয়ালেন। গরুর মাংসের তরকারি সঙ্গে শিং মাছের ঝোল। অনেকদিন পর মনে হচ্ছে মায়ের হাতের রান্না খেলো পারমিতা। বাড়ির খাবারে এত তৃপ্তি! সে তো রান্নাই করার সময় পায় না। সামান্তার রান্না খেয়ে এত তৃপ্তি পায়নি কখনো। মা তো মা-ই। মায়ের তুলনা হয় না।
পারমিতা খুশিতে আন্টিকে জড়িয়ে ধরলো। তিনি ভীষণ খুশি মেয়ের বিয়ে ঠিক হওয়াতে। অবশেষে মেয়েটাকে তার পছন্দের মানুষের হাতে তুলে দিতে পেরেছেন। এটাই তো একজন মায়ের চাওয়া। তার মেয়ে যেন সুখে থাকে, আরামে থাকে।
আন্টি আচারের বয়াম নিয়ে এসে বললেন, নাও মা। খাও। তুমি এটা নিয়ে যেও।
– আন্টি বসেন। আপনার সঙ্গে গল্প করি।
– কাজ আছে মা। অনেক কাজ এখন। সামনে মেয়ের বিয়ে। আত্মীয় স্বজন সবাই আসবে বিয়ের দু একদিন আগে। তাছাড়া নিজের কাজ তো আত্মীয় স্বজন করবে না। বুঝো না? কত কাজ এখন।
– আন্টি আমার অফিস না থাকলে আমি এসে পড়ে থাকতাম। সামান্তার বিয়ে। আমাকে কাজ করতে হবে না? নিজে যদি ওর বিয়েটা দিয়ে দিতে পারি, আজীবন কৃতজ্ঞ থাকতাম।
– এভাবে বলছো কেন মা? সামান্তা তো বলল তুমি অফিসে কথা বলবে। বলোনি এখনও?
– আসলে আন্টি, একটা প্রজেক্টে কাজ করছি। তাই একটু ব্যস্ত। হয়তো ছুটি পাবো না। আমাকেও বিয়ের আগের দিন চলে আসতে হবে।
– তা হয় কি করে মা? সামান্তার কাছের মানুষ কে? আমাদের পরে তুমিই ওর সব। ও তো আমাদের পর করে দিয়ে চলে যাচ্ছে। এখন যদি তুমি ওর পাশে না থাকো, কষ্ট তোমাদের দুজনেরই হবে।
– আপনার কথায় অনেক সম্মানীত বোধ করছি আন্টি। আমি অফিসে কথা বলে দেখি।
– তুমি কালকে অফিসে গিয়েই কথা বলো। পাঁচ ছ’দিন ছুটি নিলে কিছু এমন হয়ে যাবে না।

পারমিতা স্তব্ধ হয়ে বসে রইল। ওর এখন অফিস থেকে ছুটি পেলে ভালোই লাগবে। রোদের মুখোমুখি হতে হবে না। কোনো লজ্জাজনক পরিস্থিতিতেও পড়তে হবেনা। আজ অথবা কালকের মধ্যেই রোদকে সবকিছু খুলে বলতে হবে।
আন্টি কাজে চলে গেলে সামান্তা পারমিতাকে বলল, তারপর কালকে কি হল বল? তোরা কোথায় গিয়েছিলি?
– চা খেতে। গল্প করলাম অনেক্ষণ।
– এভাবে বলছিস কেন? ভালো লাগেনি তোর?
– ভালো লেগেছে। আমার মনে হয়েছে জীবনের সবচেয়ে সেরা সময় কাটাচ্ছি। রাসিফের সঙ্গেও কখনো এত ভালো সময় কাটাইনি।
– সত্যি!
– হ্যাঁ রে।
– তাহলে তো প্রেম হয়ে গেছে বলা যায়।
– না। আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। প্রেম বিষয়ক কথাবার্তা বলিনি। নিজেদের নিয়ে কথা বলছি। লাইফ নিয়ে, ভালোলাগা খারাপলাগা নিয়ে। রোদ অনেক ভালো মানুষ রে। আমার সবকিছু খুলে বলা উচিত ওকে।
– পারমিতা, তুইও অনেক ভালো মানুষ। অনেক অসাধারণ একটা মেয়ে। তুই সেটা নিজেও জানিস না। রোদ তোকে চিনেছে, তাই ও তোকে এত ভালবাসে। তুই মোটেও ওকে ঠকাচ্ছিস না। তোর জায়গায় থাকলে আমিও এমন করতাম। যেকেউ এই বিষয়টাকে হাইড করতো।
– কি করবো এখন?
– রোদের সঙ্গে কথা বল। সবকিছু স্বাভাবিক রাখ। তারপর সময় নিয়ে ওকে খুলে বল এটা।
– কিন্তু সবকিছু স্বাভাবিক রাখার আর যে সুযোগ নেই। অলরেডি সব অস্বাভাবিক হয়ে গেছে।
– মানে!
– গতকাল থেকে আমি ওর সঙ্গে যেমন বিহ্যাভ করছি, এখন চাইলেই হুট করে সব স্বাভাবিক করা যাবে না। হয় এখনই ওকে সব বলতে হবে। আর নয়তো সব এখানেই থামিয়ে দিতে হবে।
– তাহলে ওকে সব বলে দে।
– আজই?
– হ্যাঁ। সম্ভব হলে আজই।

পারমিতা কিছুক্ষণ বসে বসে ভাবলো। ওকে সব বলতেই হবে। নয়তো রোদ কষ্ট পাচ্ছে। এরপর আর ওর মুখোমুখি হওয়া যাবে না। পারমিতা ফোন বের করে দেখল রোদ আবারও বেশ কয়েকবার কল দিয়েছে। অপরাধবোধে ভুগছে ছেলেটা। এই একই অপরাধবোধে ভুগছে পারমিতা নিজেও।
ও অনেক ভেবেচিন্তে একটা মেসেজ লিখল, আপনার সঙ্গে আমার অনেক কথা আছে। আজকে কি একবার দেখা করতে পারবেন?
রোদ সঙ্গে সঙ্গে কল ব্যাক করলো। পারমিতা কল কেটে দিলো। এইমুহুর্তে রোদের কণ্ঠে ব্যকুলতা টের পেলেই ও নিশ্চিত রোদকে ফিল করতে শুরু করবে। তাই কল ধরবে না ও।
পারমিতা আরেকটা মেসেজ পাঠাল, আপনি কখন সময় দিতে পারবেন বলুন। যেখানে দেখা করতে চান সেটা বলে মেসেজ দেবেন। আমি ঠিক সেই সময়ে আপনার সঙ্গে দেখা করবো। অনেক কঠিন কিছু কথা বলবো আপনাকে। শোনার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন। আর কল দেবেন না প্লিজ। দেখা হলে সব বলবো আমি।
রোদ মেসেজ পাঠালো, আমাকে এত টেনশন কেন দিচ্ছেন আপনি? আমার সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখতে চান না, সেটা স্পষ্ট করে বলে দিতে চান? সেজন্যই দেখা করবেন?
পারমিতা কি বলবে বুঝতে পারল না। তাই বাধ্য হয়েই কল দিলো রোদকে। সামান্তা প্রীতুলকে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে ওকে কথা বলার সুযোগ করে দিলো। পারমিতা বিছানায় এসে শুয়ে পড়ল।
রোদের কণ্ঠ শুনে সমস্ত শরীর ঝনঝন করে উঠল ওর। রোদ অস্থিরতার সঙ্গে বলল, ফোন অফ ছিল? কেন আমার সঙ্গে এমন করছেন?
– বলবো। সব বলবো আপনাকে। আমার আপনাকে অনেক কিছু বলার আছে। দেখা হলে বলবো। ফোনে এতকিছু বলা সম্ভব না।
– ঠিক আছে। আমরা আজকেই দেখা করবো। এখনই। কোথায় আসবো বলুন?
– এখন তো সম্ভব না। সন্ধ্যায়। অথবা রাতে।
– ওকে। কিন্তু তার আগে বলুন, আপনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করার কথা ভাবছেন না তো?
– না। এর বাইরেও জীবনে অনেক কিছু থাকতে পারে। অনেক সত্য থাকতে পারে। আপনার সবকিছু জানা দরকার।
– ওকে। আমি সব শুনতে চাই। সন্ধ্যায় তাহলে আমরা দেখা করি।
– হুম।

পারমিতা চুপ করে রইল। রোদও চুপ করে আছে। কণ্ঠ শান্ত হয়েছে রোদের। কিন্তু ফোন কানে ধরে রাখতে পারমিতার ভালো লাগছে। গতকাল থেকে চলা অস্থিরতা দূর হয়েছে। শান্তি অনুভব হচ্ছে। রোদের নিশ্বাসের শব্দ ওর ভালো লাগছে। রোদ আরও অনেক্ষণ ফোনে কানে ধরে রাখল। কেউ কোনো কথা বলল না। শুধু ফোন কানে ধরেই চুপ করে রইল। নিরবতারও হয়তো ভাষা থাকে!

চলবে কি?
জানিনা পাঠকের মনে গল্পটি কতটুকু জায়গা করে নিতে পেরেছে। এক লাইনে অথবা কয়েকটি শব্দ লিখে অনুভূতি জানাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here