ধর্মের দেয়াল পর্ব:১০

0
1261

#ধর্মের_দেয়াল
-নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ১০

-নাফিসা এই অবস্থা দেখে রোজ
রুপমের দিকে ক্ষুদ্র হয়ে তাকিয়ে বলল
রুপম এখনও বলছি নিজের চেহেরায়
ফিরে আসো তানাহলে Mom কে বলে
দিব।
.
.
-Sis আমিতো সব বিদ্যা প্যাক্টিস
করছি। তুমি ওকে কেন এই রুমে নিয়ে
আসলে।
আর ও কে! এখানেই বা কেন?
.
.
. রোজ রুপমকে বলল বেশি পাকামো
করবেনা বুঝছো! ছোট ছোটর মত থাকবা।
get out…..
.
.
– রুপম চলে যাওয়ার পর রোজ একটা
গ্লাসে পানি এনে নাফিসার মুখের
উপর সামান্য ছিটে দিতেই ওর ঙ্গান
ফিরে এলো।
.
.
.
-নাফিসা চট করে উঠে বলল ওটা কি
ছিল রোজ?
– কিছুনা পরে নিজেই বুঝতে পারবা
বলে ওকে ওর রুম দেখিয়ে দিল।
.
.
.
– রোজ ওকে কিছু ড্রেস দিয়ে বলল
এগুলো ফ্রেস হয়ে এসে পড়ে নাও
আপাতত এর পর নিচে এসো খেতে।
.
.
– নাফিসা ওয়াসরুমে সাওয়ার নিল
এবং ড্রেস পড়তে গিয়ে দেখল সব
আধুনিক পোষাক।
– এগুলো সে কেমনে পড়বে। তারতো
সালোয়ার কামিজ পড়ে অভ্যস্ত।
.
.
– নাফিসা টাওয়াল পড়েই ওয়াস রুম
থেকে বের হয়ে আন্টি কে দেখল।ও
ভিষন লজ্জা পেল এই অবস্থায় ওনাকে
দেখে।
.
.
.
-মিনা বলল আমি বুঝতে পারছি আগেই
তুমি এগুলো পড়তে পারবেনা। তাই
স্কার্ট এনেছি। আর এগুলোই এখানে
পড়তে হবে।
.
.
-নাফিসা আর কিছু না বলে সেগুলো
পড়ে নিচে গেল।
.
.
.
-গিয়ে দেখল ‘রোজ’ সোফায় বসে
আছে। নাফিসাকে নামতে দেখে
রোজ বলেই উঠল হেই ইউ আর বিউটিফুল
গার্ল। আর এত্ত লম্বা কারও চুল হয়? I am
surprised
.
.
.
– বাই দ্যা ওয়ে তেমার নাম আমার
কিন্তু জানা হলে না।
– মিনা চট করে বলে উঠল ওর নাম
নাফিসা। ও একটা মুসলিম মেয়ে
আমাদের মত কিন্তু খ্রিষ্টান না।
.
..
.
– রোজ বলল ওয়াও অন্য ধর্মের সে!
– নাফিসা তো অবাক। আজগড় তাহলে
ঠিকি বলেছিল ওরা অন্য ধর্মের। সেটা
ব্যাপার না কিন্তু আমার যে খুদা
লাগছে। এরা কি খাবার দিবেনা?
.
.
.
– মিনা সারভেন্ট কে ডেকে বলল ওকে
খাবার দাও।
-নাফিসা খাবার দেখে লোভ
সামলাতে পারল না
সব মাছের আইটিম ছিল খাবার মেনুতে।
.
.
.
রোজ বলল তোমার খুব খুদা লাগছে না।
এই কথাটি শুনে নাফিসা বিষম খেল।
মিনা ওকে পানি এগিয়ে দিয়ে রোজ
কে বলল সব সময় বেশি কথা বল তুমি।
.
.
.
– খাবার শেষ করে নাফিসা ওর রুমে
চলে গেল। বাসাটি ২ তলা ছিল এবং
অনেক চমৎকার ছিল। এমন বাসা
নাফিসা জীবনেও দেখেনি।
– খুব ক্লান্ত বিধায় ঘুমে পড়ল নাফিসা।
.
.
.
.
– রুপম মিনাকে বলল Mom who is she?
-মিনা বলল সে তোমার আর একটা sis। ও
কিন্তু আমাদের মত না ও সাধারন মানুষ।
ওকে ডিস্টার্ব করবা না কখনও।
.
.
.
.
.
-মধ্য রাতে নাফিসার ঘুম ভেঙ্গে গেল।
ঘড়িতে তাকিয়ে দেখল ১ টা বাজে।
রুমের দিকে এক নজর চোখ বুলে দেখল
রুমটি অনেক সুন্দর করে সাজানো।
অনেক দামি জিনিস পএ। নিজের
অতিত মনে করে কিছুক্ষন কাদল।
বিথীকে এবং রাফীকে খুব দেখতে মন
চাইছে।
.
.
.
.
– এমন সময় ওর নাকে খুব সুন্দর ঘ্রান আসল । ও
প্রথমে ওয়াস রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে ওযু
করে নিল। পুরো দিনের নামায কাযা
গেছে সেগুলো কাযা পড়ে নিল।
.
.
.
. তবুও সেই মনমাতানো গন্ধের কমতি
নেই।
.
.
..
.
– এবার ও এই সুগন্ধের সন্ধান করতে রুম
থেকে বের হলো।
-ও নিচে নেমে আসলো কিন্তু কাউকে
দেখতে পেলনা। অনেক খোজা খুজির
পর ও কিচেনে গেল খাবার খুজতে।
.
.
.
.
সবে ফ্রীজ খুলবে এই সময় একটা পুরুষ কন্ঠ
বলে উঠল বুয়া…… দেখতো কি কি মেনু
আছে?
.
.
.
– নাফিসা চমকে উঠে পিছন ফিরে
দেখল একটা পুরুষ অসম্ভব চেহারার
অধিকারী। এমন পুরুষ পৃথিবীতে আছে
বলে নাফিসার জানা নেই।
.
.
.
. নাফিসা
চট করে মাথা নিচে নামাল। মাথায়
হয়ত নাফিসা ঘোমটা টানা ছিল বলে
হয়ত একে কাজের বুয়া মনে হয়েছিল।
.
.
.
– নাফিসাকে ছেলেটি বলল মাংস
আছে?
– নাফিসা বলল হম, আপনি বসেন আমি
সার্ভ করে দিচ্ছি।
.
.
.
.
. নাফিসা ওভেনে মার্টন গরম করতে
দিয়ে ওনাকে প্লেট এগিয়ে দিল।
– ছেলেটি প্লেট নিয়ে বলল হইছে!
নাফিসা মার্টন এনে দিতেই ওনি
উঠে পড়ল।
.
.
.
.
– আপনি জানেন না আমি কি খাই বলে
পানির গ্লাস ছুড়ে ফেলল। আর বলল
আপনি আমার চোখের সামনে থেকে
চলে যান।
.
.
.
.
– নাফিসা খুব কষ্ট পেল। মানুষের সাথে
মানুষ এভাবে ব্যবহার করে! খুব কান্না
পাচ্ছিল।
.
.
.
– নাফিসা সোজা দৌড়ে উপরে
উঠছিল। এমন সময় ছেলেটি বলল আপনি
কি নতুন কাজের বুয়া! উপরে শুধু
আমাদের ফ্যামিলি থাকা আলাউ
আছে আপনার জন্য না।
.
.
.
.
– নাফিসা কথা গুলো কানে নিলনা।
দৌড়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল।
মানুষ যত সুন্দর এদের মধ্য অহংকার তত
বেশি।
.
.
.
– হঠাৎ নাফিসার মারিয়ামের কথা
মনে পড়ল এবং ওর দেওয়া ব্যাগটা বের
করল।
.
.
.
.
-ব্যাগের মধ্য দেখল একটা সেই রুপার
বক্স। তারপর কিছু টাকা এবং একটা
আয়না।
– আয়না কেন দিয়েছে সেটা বিশ্ময়কর
ব্যাপার।
.
.
.
-রুপার বক্সটি কেমনে খুলবে সে
চাবিতো নেই।
– বিসমিল্লাহ্ বলে হাত দিতেই খুলে
গেল আর সাথে সাথে বাসাটা নড়ে
উঠল।
..
.
.
.
– রুপার বক্সের মধ্য ২ টা চিঠি, ১ টি
খাম এবং ২ ইঞ্চি পরিমান আরও একটা
বক্স কিন্তু এটা সোনালী কালার।
.
.
.
.
-বক্সে হাত দিতেই সেটা অদৃশ্য হয়ে
গেল। এবার আর অবাক হলো না কারণ
এত দিনে অনেক কিছু দেখছে সে।
.
.
.
.
– নাফিসা খামটি খুলে দেখল ২ টি
সিডি এবং একটি আকানো মেয়ের
ছবি।যা পেন্সিল দিয়ে আকা।
.
.
.
.
– মেয়েটা অনেক সুন্দর হাসি দিয়ে
তাকিয়ে আছে।
– বাকি ২ টা চিটি মধ্য একটা অন্য
ভাষায় লেখা যেটা ওর পক্ষে পড়া
সম্ভব না। অন্যটা বাংলা ভাষায়
লেখা।
.
.
.
.
.
প্রিয় আমার প্নিসেস
তুমি যখন চিঠিতা পড়ছ তখন আমি এবং
তোমার ড্যাড দুনিয়াতে নেই। আমরা
ভালবেসে বিয়ে করছিলাম। কিন্তু
ওরা আমাদের বাচতে দেয়নি।
আকানো যে ছবিটি দেখছো ওটা
আমি। বাকি যেই চিঠিটা আছে ওটা
বিশ্বাস যোগ্য কাউকে দিয়ে পড়ে
নিবে।
২ টা সিডি দেখে নিও।
ইতি তোমার মম
.
.
.
.
এই টুকুই লিখা ছিল। ঠিটিটা পড়ে
নাফিসা ছবিটা নিয়ে কাদতে
লাগল। আর একের পর এক চুমু খেতে লাগল।
.
.
মায়ের ছবি বুকে নিয়েই সারা রাত
কাটিয়ে দিল।
.
.
.
– সকালে রোজ এসে নক করে।
নাফিসার একটু চোখ ধরছিল কিন্তু ঘুম
ভেঙে গেল।
– নাফিসাকে খুব খুশি দেখাচ্ছিল।
রোজ বলল কি ব্যাপার এত্ত খুশি কেন
লাগছে।
.
.
.
.
– নাফিসা বলল রোজ আমার মাকে
দেখবা?
এই বলে রোজকে ওর মায়ের ছবিটি
দেখাল।
.
.
.
– ছবিটি দেখে রোজ নাফিসার
দিকে তাকিয়ে বলল ওনি তোমার মা
হয়?
.
.
.
-নাফিসা ছবিতে চুমু দিয়ে বলল হ্যাঁ
উনি আমার মা।
– রোজকে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছে।
নাফিসা ওকে ধাক্কা দিয়ে বলল কি
হইছে তোমার।
.
.
.
– রোজ বলল না কিছু না চল নিচে সবাই
ওয়েট করছে।
আমাদের ফ্যামিলির সবার সাথে
পরিচয় করে দিব বলেই হাত ধরে
নাফিসাকে টেনে নিচে নিয়ে
গেল।
.
.
.
.
– মিনা সবাই কে বলল দেখ এই মেয়েটি
আমাদের অতিথী। ওর একটা সমস্যার জন্য
এখানে বেশ কিছু দিন থাকবে।
.
.
.
.
– নাফিসা দেখল ঐ ছেলেটি কে তার
পর সবাইকে গুড মনিং বলল।
.
– মিনা বলল এইটা তোমার আঙ্কেল
তাকিয়ে দেখলাম আজগড়। আমিতো
অবাক। আল্লাহ একে আঙ্কেল বলে
ডাকতে হবে?
.
.
.
.
কিন্তু আন্টি বলল ওনার
নাম সিড বলল। আমি আরও অবাক।
তারপর
বলল আমার বড় ছেলে ‘রুপ’ এবং ছোট
ছেলে রুপম আর রোজ কে তো চিন।
.
.
.
.
– রুপ! নামটাতো বেশ। চেহারার সাথে
নামটি ভালয় যায়।
– রুপ আমার দিকে একবার তাকিয়ে
আবার খাওয়া শুরু করল। এমন ভাব
দেখালো যে গতরাতে তার সাথে
আমার কিছুই ঘটেনি।
.
.
.
.
– রোজ নাফিসার হাত থেকে ওর
মায়ের ছবিটি নিয়ে ওর মাকে
দেখালো।
.
.
.
.
-মিনা এবং সিড বেশ অবাক হয়ে একে
অপরের দিকে তাকালো…….
চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here