শেষ বিকেলের আদর❤️পর্ব : ১০

0
4309

#শেষ বিকেলের আদর❤️
#রিত্তিকা ইসলাম
#পর্ব : ১০

🌸
অধিরকে দেখতেই যেন ভয়টা কমে গিয়ে এই নিকৃষ্ট মানুষরুপি জানোয়ারদের হাত থেকে বাচার এক আশা খুজে পেলো।চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া পানি গাল বেয়ে পড়ছে।দুর থেকে আসা সোডিয়ামের আলোয় যা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে অধির।এতো রাতে এখানে রোশনিকে আশা করে নি অধির।রোশনির চোখে পানি আর মুখের অসহায়ত্ব ভাব অধিরের বুকে যেন কাটার মত বিধছে। অধিরের মনে হলো ওর বুকে কেমন চিনচিন ব্যথা হচ্ছে।কেন হচ্ছে এমন অদ্ভুদ অনুভূতি তা অধিরের জানা নেই।অধির এখনো শক্ত করে রোশনির হাত ধরে আছে।রোশনি হিচকি দিতে দিতে অন্য হাত তুলে অধিরের বুকের কাছে জ্যাকেট খামচে ধরলো।রোশনির চোখের পানি মোছার জন্যে অধির হাত তুলতে যেতেই কারো কথায় থেমে গেলো।পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখতে পেলো চার পাচটা ছেলে দাড়িয়ে আছে।ছেলেগুলোকে দেখে বুঝতে বাকি রইলো না ছেলেগুলো বখাটে।আর রোশনির এভাবে দৌড়ানোর কারনটাও বুঝতে পারলো অধির।ছেলেগুলোকে দেখেই অধিরের বুকের সাথে লেগে দাড়ালো রোশনি।বামহাতে অধিরের বুকের কাছটা আরো জোরে খামছে ধরলো।অধির এখনো শান্ত হয়ে দাড়িয়ে আছে।না কিছু বলছে আর না কিছু করছে।তবুও রোশনির মন বলছে অধির থাকতে তার কোনো ক্ষতি হবে না।হয়তো এই কয় দিনে এতটুকু বিশ্বাস অধিরের প্রতি হয়েই গেছে রোশনির।কয়েক সেকেন্ড পর হাসি মুখেই প্রশ্ন করলো অধির….

__কি চাই….?

ওদের মধ্যে কালো পাতলা একটা ছেলে বিশ্রী হেসে বলে উঠলো….

__এই ফুলের কুঁড়িটাকে চাই বস…

কথাটা বলেই আবারো সেই বিশ্রী ভাবে হাসতে লাগলো।ছেলেটার কথা শুনে কোনো রিয়্যাকশন দেখা গেলো না অধিরের মধ্যে।আগের মতোই শান্ত গলায় বলে উঠলো…

__ওহ আচ্ছা।তা এই কুঁড়ি দিয়ে কি করবে শুনি…?

তখনি অন্য একটা ছেলে বলে উঠলো…

___কি আর করমু মামা….? কুঁড়ি থেকে পুরোপুরি ফুল তৈরির ব্যবস্থা করমু…..

বলেই বিশ্রী হেসে কালো করে ছেলেটার সাথে হাইফাইভ করলো।পাশ থেকে লম্বা করে একটা ছেলে বলে উঠলো…

___তোমার এতো জাইন্না মামা লাভ নাই।ওরে আমাগো কাছে রাইখা এইখান থেইক্কা কাইট্টা পড়ো।তারপর ওর লগে আমরা কি করমু সেইটা আমরা বুইঝা নিমু নে।

ছেলেটার কথা শেষ হতেই কালো করে ছেলেটা বলে উঠলো…

___মাইয়াডারে দিয়া কাইট্টা পড়ো মামা।আইজ আমগো রাইতডা রঙিন হইয়া যাইবো রে।কি ফিগার মাইরি….উফফ…..

ছেলেটার কথা শেষ হতেই সবাই মিলে বিশ্রীভাবে জোরে জোরে হাসতে লাগলো।আর রোশনির ভয়টা আরো কয়েকগুন বেড়ে গেলো।অধির যে কেন কিছু করছে না সেটাই বুঝতে পারছে না।এদিকে ছেলেগুলোর বাজে কথাগুলো শুনে অধিরের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো।এতোক্ষন দমিয়ে রাখা রাগটাকে আর কিছুতেই নিজের মধ্যে আটকে রাখতে পারছে না।চোখ দুটো লাল টকটকে হয়ে গেছে সেই সাথে কপালে থাকা রগটাও ফুলে উঠেছে।অধির চোয়াল শক্ত করে ওদের উদ্দেশ্যে বলে ওঠে….

___ওকে ডান।ওকে শুধু ছুয়ে দেখা।আই প্রমিস,,,,তোদের মধ্যে কেউ যদি ওকে টাচ করতে পারিস আমি ওকে রেখে চলে যাবো।আর যদি না পারিস,,,,,আই ডোন্ড নো তোদের কি অবস্থা করবো।

অধিরের কথা শুনে হাসিতে ফেটে পড়লো ওরা সবাই।একে অপরের দিকে তাকিয়ে খানিক হেসে বলে উঠলো…

__সেটা তো আমরা টাচ করবোই।তুই চাইলেও করবো আর না চাইলেও।

বলেই ওদের মধ্যে একজন এগিয়ে এলো।হাত তুলে রোশনির দিকে এগুতেই রোশনি চোখ খিচে অধিরের বুকের সাথে মিশে দাড়িয়ে রইলো।ভয়ে ওর সারা শরির কাপছে।রোশনি পারলে যেন অধিরের বুকের মধ্যেই ঢুকে যায়।ছেলেটা হাত তুলে রোশনিকে ছুতে নিলেই অধির ওর হাত শক্ত করে ধরে আটকে দেয়।ছেলেটা ব্যথায় ককিয়ে ওঠে।অধির চোয়াল শক্ত করে দাতে দাত চেপে বলে ওঠে…..

___ডোন্ট ইউ ডেয়ার….

কথাটা শেষ করেই ছেলেটার হাত মুচড়ে ধরে।ব্যথায় ককিয়ে উঠে কয়েক কদম পিছিয়ে যায় ছেলেটা।ব্যথায় আওয়াজ করে ওঠে।ছেলেটার আওয়াজ কানে যেতেই চোখ খুলে তাকায় রোশনি।মুচড়ে যাওয়া হাত ধরে সমানে ককিয়ে উঠছে।রোশনি ছেলেটার থেকে চোখ সরিয়ে অধিরের দিকে তাকায়।অধিরের চোখ মুখ শক্ত।যেন হিংস্র ঘায়েল সিংহ।ছেলেগুলোর মধ্যে একজন এগিয়ে এসে অধিরকে অাঘাত করার জন্যে হাত তুলতেই অধির সোজা ওর বুকের উপর লাথি মারে।সাথে সাথেই দুরে গিয়ে ছিটকে পড়ে ছেলেটা।এবার বাকি ছেলেগুলো কিছুটা ঘাবড়ে যায়।তবুও সাহস করে বাকি তিনজন সামনে এগিয়ে আসে।অধির রোশনিকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে ওদের সামনাসামনি দাড়ায়।অন্ধকারে এতোক্ষন অধিরের মুখ দেখতে পায়নি ছেলেগুলো।কিন্তু অধির সামনে এগিয়ে আসতেই অধিরের মুখ ওদের কাছে স্পষ্ট হলো।সাথে সাথেই ভয়ে জমে গেলো সবগুলো।ওদের মধ্যে কালো করে ছেলেটা অস্পষ্ট স্বরে বলে উঠলো….

___অধির চৌধুরি…..!!!!

অধিরকে দেখে সবার কাপাকাপি শুরু হয়ে গেছে।ওদের এমন কাপতে দেখে অধির বাকা হেসে বলে উঠলো….

___এই ভয়টাই তো দেখতে চেয়েছিলাম তোদের চোখে।আমার নামটাই যথেষ্ট তোদের মত মানুষদের ঘাম ছুটানোর জন্যে….

অধিরের কথা শেষ হতেই সবাই হাত জোড় করে ক্ষমা চাইতে শুরু করলো।অধির বাকা হেসে কালো করে ছেলেটার কলার চেপে ধরতেই বাকি গুলো ওকে ফেলে ছুটে পালিয়ে গেলো।ছেলেটা অধিরের দিকে ভীত চোখে তাকিয়ে সমানে ক্ষমা চেয়ে চলেছে কিন্তু অধিরের মনে কোনো দয়া হলো না।এক হাতে কলার চেপে ধরে অন্য হাত দিয়ে সমানে ঘুসি দিতে লাগলো অধির।সাথেই নাক মুখ থেকে ছিটকে রক্ত বেরিয়ে এলো।ঘুসি মারার তালে তালে বাড়তে লাগলো রক্তের পরিমান।ছেলেটা ব্যথায় চিৎকার করছে কিন্তু অধিরের মনে মায়া হচ্ছে না।লাগাতার ঘুসি দিতে দিতেই বলে উঠলো….

___কুঁড়ি থেকে ফুল ফুটাবি তাইনা..? এতো বড় সাহস..?অধিরের বুকে থাকা ফুলের গায়ে হাত দিতে চেয়েছিস..?এতো বড় কলিজা কোথায় পেলি সেটাই দেখছি…..

অধির ওকে মেরেই যাচ্ছে।ছেলের নাক মুখ থেকে বেড়িয়ে আসা রক্তে অধিরের হাতও রক্তাক্ত হয়ে গেছে।অধিরের এমন হিংস্র রুপ দেখে স্তব্ধ রোশনি।মানুষ এতোটা হিংস্র কি করে হতে পারে?কি নৃশংসভাবে মেরে চলেছে ছেলেটাকে।ছেলেটার অবস্থা ভিষন খারাপ হয়ে গেছে।আর কিছুক্ষণ এরকম চললে হয়ত মরেই যাবে।এদিকে অধিরও যেন প্রতিজ্ঞা করে বসেছে ছেলেটা না মরা পর্যন্ত সে থামবে না।রোশনি ছুটে এসে অধিরকে আটকানোর চেষ্টা করে।কিন্তু অধির কিছুতেই থামছে না।অধিরকে অনেক চেষ্টা করেও যখন থামাতে পারলো না রোশনি তখন জোরে চেচিয়ে উঠলো রোশনি।রোশনির এমন চিৎকারে থেমে গেলো অধিরের হাত।রোশনি কাদতে কাদতেই চিৎকার করে বলে উঠলো….

__পাগল হয়ে গেছেন আপনি?মরে যাবে ছেলেটা..? এতোটা নৃশংসভাবে কেউ কাউকে কি করে মারতে পারে?ছেড়ে দিন ওকে….

রোশনির এমন কথায় আরো রেগে গেলো অধির।ছেলেটাকে জোরে একটা ঘুসি মেরে ছেড়ে দিতেই রাস্তায় লুটিয়ে পড়লো ও।ছেলেটা অনেক আগেই জ্ঞান হারিয়েছে।ছেলেটা মাটিতে লুটিয়ে পড়তেই চোখ বন্ধ করে শক্ত হয়ে দাড়িয়ে রইলো রোশনি।এমন রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলেটাকে ও দেখতে পারছে না।অধির রোশনির দিকে এগিয়ে এসে রোশনির দুই বাহু শক্ত করে চেপে ধরে কঠিন গলায় বলে ওঠে….

___দরদ…? ওই জানোয়ার গুলোর জন্য দরদ দেখাচ্ছো..?ওদের ওপর দরদ দেখিয়ে মহান সাজার চেষ্টা করছো…?সুপার ওমেন এর ট্যাগ নিতে চাইছো…?আজ আমি যদি ঠিক সময়ে না আসতাম তাহলে ওরা তোমার কি অবস্থা করতো ধারনা আছে তোমার..?আজ আমি যদি না থাকতাম তাহলে ওর জায়গায় তুমি ওর মত পড়ে থাকতে।ওরা তোমার উপর কোনো দরদ দেখাতো না।কাল নিউজ পেপারের হেড লাইন হতো তোমার ধর্ষন আর মৃত্যুর খবর।আর তুমি ওদের উপর দরদ দেখাচ্ছো….?

অধিরের চোখ দিয়ে যেন আগুন ঝড়ছে এই মুহূর্তে।তবুও রোশনি কাপা কাপা গলায় বলে উঠলো…..

__আমি মানছি ওরা খারাপ।ওদের উদ্দেশ্য খারাপ।তাই বলে আপনি ওদের এভাবে মারবেন? যদি মরে যেত……?

রোশনির কথায় আরো শক্ত করে চেপে ধরলো োর বাহু।চোয়াল শক্ত করে বলে উঠলো….

__মরে গেলে মরে যেত।আই ডোন্ট কেয়ার।আর এমনিতেও ওই সব পশুদের বেচে থাকার কোনো অধিকার নেই।অধির চৌধুরির কাছে এই সব পশুদের শাস্তি একমাত্র মৃত্যু….।

কথাটা শেষ করেই রোশনিকে ছেড়ে দুরে দাড়ালো অধির।রাগে ওর মাথা ফেটে যাচ্ছে।আজ যদি ও এদিক দিয়ে না যেত তাহলে কি হতো রোশনির তা ভেবেই পুরো শরিরে কাটা দিচ্ছে অধিরের।অধির পকেট থেকে ফোন বের করে কাউকে একটা কল দিলো।তারপর গম্ভির গলায় বলে উঠলো…..

___একজন অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পড়ে আছে।আমি লোকেশন পাঠিয়ে দিচ্ছি ওকে ইমিডিয়েট হসপিটালে নেওয়ার ব্যবস্থা করো।কিছুতেই যেন না মরে।আর ওর জ্ঞান ফিরলে ওর থেকে বাকি ছেলেগুলোর খোজ নিয়ে বাংলোতে নিয়ে যাবে।আমি কালকেই সবগুলোকে দেখতে চাই…..

কথাগুলো বলেই ফোন কাটলো অধির।রোকটাকে লোকেশন সেন্ড করে রোশনির দিকে তাকালো।এদিকে রোশনি পুরো জমে আছে।ও বুঝে গেছে বাকি ছেলেগুলোরও এই একই অবস্থা করবে অধির।অধির রোশনির দিকে এগিয়ে আসতেই রোশনির চোখ যায় অধিরের রক্তাক্ত হাতের দিকে।সাথে সাথেই মুখ থেকে অস্ফুট স্বরে বেরিয়ে আসে….

__রক্ত…?

রোশনির কথায় ভ্রু কুচকে নিজের হাতে দিকে তাকায় অধির।তারপর অন্য হাত দিয়ে রোশনিকে টেনে এনে গাড়িতে বসিয়ে দেয়।গাড়িতে থাকা পানির বোতল থেকে পানি নিয়ে হাত ধুয়ে নেয়।তারপর গাড়ির দরজা খুলে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়ে।গায়ের জ্যাকেটটা খুলে পেছনের ছিটে ছুড়ে মারে।তারপর ড্রাইভিং শুরু করে।রোশনি মাথা নিচু করে বসে আছে।খানিক বাদে অধির গাড়ি থামায়।সামনের দিকে তাকিয়েই গম্ভির গলায় বলে ওঠে….

___এতো রাতে বাড়ি থেকে কেন বেড়িয়েছিলে…?

রোশনি মুখ তুলে অধিরের দিকে তাকালো।অধিরকে আবারও ভিষন রাগান্বিত দেখাচ্ছে এই মুহূর্তে।রোশনি কি বলবে সেটাই ভাবছে।ভয়ে জড়ো সড়ো হয়ে বসে আছে ও।রোশনিকে চুপ থাকতে দেখে চোখ রাঙিয়ে ওর দিকে তাকালো অধির।কঠিন গলায় বলে উঠলো….

__আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি রোশনি।কেন বেড়িয়েছো একো রাতে বাইরে।তাও একা…?

রোশনি আবারো কেপে ওঠে।অধিরের এমন রাগের সাথে ও পরিচিত নয়।অধিরের এই হিংস্র রুপটা কিছুতেই সহ্য হচ্ছে না রোশনির।তবুও কাপাকাপা গলায় কোনো রকম বলে উঠলো….

__এমনি হাটতে বেড়িয়েছিলাম….

রোশনির কথা শুনে মাথায় রক্ত উঠে গেলো অধিরের।এতো রাতে নাকি তিনি হাটতে বেড়িয়েছেন তাও একা।অধির আর কিছুতেই নিজের রাগ আটকাতে পারলো না।সজোরে রোশনির গালে থাপ্পড় মেরে বসলো।আকস্মিক ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে বসে রইলো রোশনি।রাগে,কষ্টে আর অপমানে চোখ থেকে গড়িয়ে পড়লো নোনা পানির ধারা।সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিলো অধিরের থেকে।অধির আগের মতোই শক্ত গলায় বলে উঠলো….

__গেট লস্ট….

অধিরের কথায় আবারো চোখ তুলে তাকালো রোশনি।অধির সামনের দিকে তাকিয়ে আছে।রোশনি অধিরের কথাটা বুঝা মাত্র বাইরে তাকালো।গাড়িটা ওদের বাড়ির সামনেই দাড় করানো।এতোক্ষন খেয়ালই করে নি ও।রোশনি আর এক সেকেন্ড দেরি না করে দরজা খুলে দৌড়ে বাড়ির মধ্যে চলে গেলো।একটা বার পিছনে ফিরেও তাকালো না।এদিকে রোশনি চলে যেতেই গাড়ির স্টেয়ারিং এ সজোরে বাড়ি মারলো অধির।মাথায় শুধু একটা কথায় ঘুরছে।আজ ও সময় মত না গেলে কি অবস্থা করতো ওরা রোশনির?অধির দ্রুত ড্রাইভ করে বাড়ি চলে আসে।রাত তখন প্রায় বারো টার মত বাজে।অধির ড্রয়িংরুমে ঢুকতেই দেখে মিসেস আনোয়ারা চৌধুরি,সাহিল,আদিল,নাতাশা আর দিদাম বসে আছে।অধিরকে দেখেই নাতাশা ছুটে এসে অধিরের সামনে দাড়ায়।তারপর ন্যাকা স্বরে বলে ওঠে….

__বেবি,,,কখন থেকে তোমার অপেক্ষা করছি।এতো দেরি করলে কেন…? আর তোমায় এমন দেখাচ্ছে কেন? হোয়াট হ্যাপেন্ড বেবি…?

অধিরের এমন রাগি চেহারা দেখেই সবাই বুঝতে পেরেছে কিছু একটা হয়েছে।কিন্তু কেউ কিছু বললো না।চুপ করেই রইলো।আদি আস্তে করে বলে উঠলো….

__দাদি,,,,আমি তো শুধু নামেই লেডি কিলার।কিন্তু আমার সিক্সথ সেন্স বলছে ভাইয়া এই ইউনিভার্সকে মেরে সত্যি সত্যিই লেডি কিলার হয়ে যাবে।কাম অন ভাইয়া,,,,তোমার ফেমাসওয়ালা রাগ দেখাও।কান অন,,, কাম অন…..

আদির কথায় সবাই ওর দিকে তাকালো।সাহিল আদির পিঠে চাপড় মেরে চুপ থাকতে বললো।এদিকে অধিরের মাথা এমনিতেই গরম হয়ে আছে।আর দিদামের এমন ন্যাকা ন্যাকা বেবি ডাক শুনে আরো গরম হয়ে যাচ্ছে।অধির গম্ভির গলায় বলে উঠলো….

___আই এম টায়ার্ড। সো প্লিজ,,,ডোন্ট ডিস্টার্ব মি….

কথাটা বলেই নিজের রুমে চলে গেলো অধির।রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে রুমের সমস্ত জিনিস ভাঙতে শুরু করলো।টিভি,ড্রেসিংটেবিলের আয়না,ফ্লাওয়ারভাজ,,, কাচের জিনিস পত্র,শো-পিচ সবকিছু।অধিরের রুম সাউন্ডপ্রুভ হওয়ায় কেউ কোনো আওয়াজ শুনকে পেলো না।রাগটাকে কিছুতেই কমাতে পারছে না অধির।তাি ওয়াশরুমে চলে গেলো ও।শাওয়ার ছেড়ে ওর নিচে দাড়িয়ে রইলো।

অধির বেলকোনিতে দাড়িয়ে আছে প্রায় একঘন্টার মত।হঠাৎ করেই দরজায় কেউ নক করলো।অধির রুমে এসে দরজা খুলতেই হুরমুড়িয়ে রুমে ঢুকলো সাহিল আর আদিল।রুমের এমন করুন অবস্থা দেখে ওরা দুজন দুজনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করলো।সাহিল অধিরের সামনে দাড়িয়ে বলে উঠলো…

__কি হয়েছে অধির…? রুমের এমন অবস্থা করেছিস কেন..?আর এতো রেগেই বা কেন আছিস…?

__সাহিল,,,এই ব্যাপারে কাল কথা হবে।আমি একা থাকতে চাচ্ছি।তোরা যা এখন এখান থেকে।আই নিড টু সাম স্পেস….

সাহিল আর কোনো কথা বাড়ালো না।”ওকে” বলে চলে যেতে নিলেই আদি বাচ্চাদের মত করে বলে উঠলো….

__স্পেস চাই।এতোই যখন স্পেস চাই তাহলে এ্যাস্ট্রোনট হয়ে যেতে।ওখানে শুধু স্পেস আর স্পেস….

আদির কথায় সাহিল হেসে উঠলো।আদির পিঠে বারি মেরে বলে উঠলো…

__সব সময় শুধু বাচ্চাদের মত কথা। কবে বড় হবি বল তো…?

__শোন,,,,,আমি যতই বড় হই না কেন থাকবো তো সেই ছোট ভাই হয়েই।আর আমায় যখন ছোটই থাকতে হবে তখন বড় হয়ে কি ফাইদা…? ওহ,,,লজিক…!!! আই এম এ জিনিয়াস ইয়ার….

আদির কথায় ভ্রু কুচকে তাকালো অধির।আগের মতোই গম্ভির গলায় বলে উঠলো….

__আদি,,,,যেতে বলেছি…

সাহিল আদির হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে নিলেই আবারো আদি বলে উঠলো….

___সাহিল দেখেছিস,,,ওই ইউনিভার্স আসতে না আসতেই ভাইয়া কেমন পর হয়ে গেছে।আমাদের রুম থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে।হে আল্লাহ,,,ভাই আমাদের সত্যি সত্যিই পর হয়ে গেলো গো…..

আদির কথায় অধির চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই সাহিল আদিকে টেনে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।আর অধির দরজা বন্ধ করে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো।চোখ বন্ধ করতেই আবারো ভেসে উঠলো তখনকার ঘটনা।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here