#অদ্ভুত_প্রেমোমোহ_তুমি
#পর্বঃ১২
✍️ তাজরিয়ান খান তানভি
বর্ষার আমেজ শেষ হওয়ার পথে।ঝিরিঝিরি বৃষ্টি সারাদিন লেগেই থাকে।একবার শুরু হলে বন্ধ হওয়ার নাম নেই।এই এক পশলা সব চুইয়ে নিলো বলে।আর কিছুদিন পর আসবে নীল আকাশের শুভ্রতা নিয়ে কাশফুল ছোয়া ঋতু শরৎ।সাদা মেঘের খেলা হবে আকাশ জুড়ে।
বিছানায় পা ছড়িয়ে বসে আছে প্রহর।সে কখন আজরাহান শাওয়ারে গিয়েছে।বের হওয়ার নাম নেই।অদ্ভুত মানুষ!!পুরুষ মানুষের এতো সময় লাগে??
পুরুষ নয় মেয়েব্যাটা।তাই এতো সময় লাগে ওর রাহান ভাইয়া।নাকের ডগা ফুলিয়ে এইসব ই ভাবছে প্রহর।
ওয়াশরুমে দরজা খুলে বের হয় আজরাহান।
“এতো সময় লাগে,,কি করেন আপনি ওয়াশরুমে??
অন্য সময় হলে এর কড়া জবাব আজরাহান দিতো।কিন্তু এখন সে নিরুত্তর।প্রহর এর দিকে তাকাতেই দেখে আজরাহান এর চোখ দুটো লাল হয়ে আছে।মুখটাও কেমন এলোথেলো।
প্রহর গলার স্বর নিচু করে বলে–
“কি হয়েছে রাহান ভাইয়া??
শরীর খারাপ লাগছে??
“নাহ।”
“তাহলে এমন কেনো দেখাচ্ছে আপনাকে??রাতে ঘুম হয়নি??
“তেমন কিছু নয়।তুই যা হাত মুখ ধুয়ে নে।”
আজরাহান এর ধমকে প্রহর অভ্যস্ত।কেনো যেনো ওর এই শান্ত ব্যবহার ওর একদম ভালো লাগছে না।
“কি হয়েছে আপনার?শরীর ভালো লাগছে না?আমি ছোট আব্বু কে ডেকে আনবো??
আজরাহান ভীষন চটে যায়।
“এতো কথা কেনো বলিস তুই,,একটু শান্তিতে থাকতে দিবি না আমাকে??
এইবার প্রহর এর ভালো লাগছে।তার রাহান ভাইয়া ঠিক আছে তাহলে।শান্তি!!
ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে যায় প্রহর।আজরাহান অফিসের জন্য তৈরী হয়।
নিচে এসে খাবার টেবিলে বসে।কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না ওর।কেমন যেনো গা গুলিয়ে আসছে।কুহেলিকা ছেলেকে দেখে কিছু আন্দাজ করলেন।
“কিরে না খেয়ে বসে আছিস কেনো??কিছু লাগবে তোর??
“না, মা।”
“তাহলে??
“কিছু না।”
প্রহর এসে দাড়ায় আজরাহান এর পাশে।আজরাহান সবে এক টুকরো রুটি মুখে দিয়েছে ওমনেই ওর গা গুলিয়ে উঠে।দৌড়ে যায় কিচেন রুমের সাথে লাগোয়া কমন বাথরুমে।
সবাই চিন্তিত।
কুহেলিকা দরজায় কড়াঘাত করেন।আজরাহান কিছুতেই দরজা খুলছে না।বাহিরে বের হয়ে আসে আজরাহান।চোখের কোন থেকে পানি পড়ছে।বমি করে বেরিয়েছে সে।কেনো যেনো আজকাল তার কোন কিছুই খেতে ইচ্ছে করে না।কেমন অস্বস্তি লাগে।মাথাটাও ঝিমঝিম করে।কোনো কাজে বেশিক্ষন মনোযোগ দিতে পারে না।
“কি হয়েছে তোর বাবা,,;কি হয়েছে তোর??
“কিছু হয়নি আমার।আমি ঠিক আছি।”
“মায়ের সাথে মিথ্যে বলা হচ্ছে।কি অবস্থা করেছিস চেহারার।”
কুহেলিকা আজরাহান কে চেয়ারে বসিয়ে মাথায় হাত বুলাতে থাকে।নন্দিতা একগ্লাস লেবুপানি নিয়ে আসে।
“এইটা খেয়ে নাও আজরাহান।ভালো লাগবে।”
“না ভাবী।কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না।”
“তোমার শরীর ঠিক আছে তো??
“আমি ঠিক আছি।মনে হয় গ্যাস্টিক টা বেড়েছে।”
নুরাইসা দৌড়ে গিয়ে একটা গ্যাস্টিকের ট্যাবলেট নিয়ে আসে।
“এইটা খেয়ে নাও আজরাহান।”
আজরাহান ঔষধ টা খেয়ে নেয়।
সানোয়ার আহমেদ সব দেখছেন।ওর ছেলেটা সবার প্রান হয়ে দাড়িয়েছে।আর হবেই বা না কেনো ছেলেটাই তার এমন।ছোটবেলা থেকে অন্যায় কিছু করেনি সে।গুরুজনদের সম্মান করা,ছোটদের স্নেহ,কারো বিপদে এগিয় যাওয়া।একজন আদর্শ পুরুষ হওয়ার সব গুনই বিদ্যমান।কিন্তু আজকাল তার ছেলে স্মোকিং শুরু করেছে।তাকে সে প্রশ্ন করে নি।সে জানে তার ছেলে কোনো ভুল করতে পারে না।
একটু দুরেই দাড়িয়ে আছে প্রহর।খারাপ লাগছে ওর।ঔষধ টা তো ওর আনা উচিতে ছিলো।আজরাহান এর কাছে এসে দাড়াতেই প্রহর কে ধাক্কা মেরে সরায় কুহেলিকা।
“একদম কাছে আসবিনা আমার ছেলের।এই মেয়ে যখন থেকে আমার ছেলের জীবনে এসেছে তখন থেকেই আমার ছেলেটার কোনো না কোনো বিপদ হয়।কত করে বললাম এই অলক্ষী কে বিয়ে করিস না।”
“মা তুমি চুপ করবে।ভালো লাগছে না আমার।আর সরো,যেতে দাও আমাকে।অফিসের দেরি হচ্ছে।
আর খবরদার একটা কথাও কেউ আর বলবেনা এই বিষয়ে।”
আজরাহান বাড়ির বাইরে আসে।প্রহর ও ওর পিছু পিছু আসে।
“আজ না গেলে হয়না??
“অফিসের বস তো আমার কেয়ামতের আগের দিনের শশুর,আমাকে জামাই আদর করতে চাকরি দিয়েছে।”
“আপনার শরীর তো ভালো নেই।”
“আমি ঠিক আছি প্রহরিনী।”
”
আপনি নিজের খেয়াল কেনো রাখেন না বলুন তো??
“তাহলে তোকে কেনো বিয়ে করেছি??
আজরাহান বাইকে উঠে বসে।চাবি হাতে নিয়ে প্রহর এর দিকে আবার তাকায়।
“কিছু লাগবে তোর??
প্রহর মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানায়।
“কি লাগবে??
প্রহর লাজুক চোখে বলে–
“কেনো আপনি জানেন না??
আজরাহান একটা শ্বাস ছাড়ে।
“কবে শেষ হয়েছে??
“গতমাসেই।”
“তাহলে আগে কেনো বলিস নি??
“সবকিছু বলে দিতে হবে,,আপনি কিছু বুঝেন না??
“এখন কি তোর এইসব এরও খেয়াল রাখতে হবে আমাকে??
“তাহলে বিয়ে করেছেন কেনো আমাকে??
এখন আমার সব খেয়াল আপনাকেই রাখতে হবে।আর এইটা মেয়েদের সবচেয়ে জরুরী জিনিস বুজলেন আর তার খেয়াল স্বামী কেই রাখতে হয়।”
“আচ্ছা,,নিয়ে আসবো।এতো জ্ঞান দিতে হবে না।”
প্রহর খিলখিলিয়ে হাসে।
“হাসিস কেনো তুই??
“আমার ইচ্ছে।”
“যা বাসায় যা।
আমার আসতে দেরি হলে না খেয়ে থাকবা না।খেয়ে নিবি।আর একটা কথা,একদম মায়ের সামনে যাবি না আর নুরাইসার আশেপাশেও না।”
“হুম।”
“আরেকটা কথা,সূর্য্যি কে নিয়ে একদম ছাদে যাবি না।পাশের বাড়ির তিনতালার নতুন ভাড়াটিয়ার ছেলে সারাক্ষন বারান্দায় দাড়িয়ে থাকে।আমি যেনো তোকে আর ছাদে না দেখি।”
“তাহলে কি করবেন??
“তোর ঠ্যাং ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখবো।”
প্রহর হি হি করে হেসে উঠে।
ঘরের ভিতর পা রাখতেই সামনে এসে দাড়ায় নুরাইসা।
“এই তুই আজরাহান এর সাথে কি করছিলি??
“আমার স্বামীর সাথে আমি কি কথা বলি তা দিয়ে তুমি কি করবে নুরা আপু??
“এই এই একদম আমাকে নুরা বলে ডাকবি না।আমাকে নুরা বলে একমাত্র আমার আজরাহান ডাকবে।”
সানোয়ার আহমেদ অনেকদিন যাবৎ এই দুই অপরিপক্ক নারীর ঝগড়া দেখে যাচ্ছেন।প্রহর আগে চুপ থাকলে এখন তার পুরো অধিকার আছে তার রাহান ভাইয়ার উপর।তাই সে তার সদ্ব্যবহার করে।
“রাহান ভাইয়ার আশা ছেড়ে দাও নুরাইসা আপু।”
“এক চড় মারবো।”
“আর আমি বুঝি হাত গুটিয়ে বসে থাকবো??
“প্রহর,,,,,
“হু,,ভ্যা।”
ওকে ভেঙচি কেটে সামনে যেতেই ধপাস করে পড়ে প্রহর।
“ও মাগো,,,কোমড়টা আমার গেলো রেএএএএ।”
নন্দিতা দৌড়ে এসে দেখে প্রহর ফ্লোরে পড়ে আছে।আর সেখানে তেল ছিটানো।
“কি রে পড়লি কি করে?
“আমার কোমড়,,আহ,,গেলো রে,,। রাহান ভাইয়ার এবার কি হবে??
আর আমার ফুটবল টিমের।”
“চুপ কর।পাজি মেয়ে কোথাকার।”
নুরাইসার মুখে হাসি চিক চিক করে।এক হাতে ওড়নার একপ্রান্ত নিয়ে তা ঘুড়াতে ঘুরাতে নিজের ঘরে চলে যায়।
প্রহর ফিক করে হেসে দেয়।
“হাসিস কেনো তুই??ব্যাথা পেলে কেউ হাসে?
“আরে দুর,,আমি কি ব্যাথা পেয়েছি নাকি।ওটাতো নুরাইসা আপু কে দেখানোর জন্য করলাম।বেচারি কতো কষ্ট করে আমার জন্য এতো আয়োজন করেছে।”
আবার ও হাসতে থাকে প্রহর।
নন্দিতা ওর গাল টেনে বলে–
“দুষ্টু মেয়ে।বড্ড পেকে গেছিস।”
“হি হি।”
,
,
,
হসপিটালে নিজের ক্যাবিনে বসে আছে শিহরণ।মন ভালো নেই তার।কি হবে এখন??
তার পিচ্চি কি করে তার কলিজার কাজলচোখী হতে পারে!!
মেয়েটাকে বড্ড ভালোবাসে ও।আর মারশিয়াদ কেও।ও কাউকে হারাতে পারবে না।না তার পিচ্চি কে না তার কলিজা কে।তার পিচ্চি কি করে তার কলিজার কাজলচোখী হতে পারে!!!!
মারশিয়াদ আর শিহরণ এর জন্ম দুই মায়ের গর্ভে হলেও তাদের শরীর একই রক্ত বয়ে চলছে।
শিহরণ যখন সান ফ্রান্সিসকো ছিলো তখন এক রেপড কেসে এ ফেসে যায়।দূর্বৃত্তরা প্রমান লোপাট করতে শিহরণ কে রক্তাক্ত করে রাস্তায় ফেলে যায়।আর সেখান থেকেই ওকে মারশিয়াদ হসপিটাল নিয়ে যায় এবং নিজের রক্ত দিয়ে তাকে বাচায়।
ন্যায়ের আদালতে তাদের বিচার না হলেও মারশিয়াদ এর আদালতে তাদের বিচার হয়।কাউকে বাচতে দেয়নি সে।
তখন থেকেই মারশিয়াদ এর সব কাজে শিহরণ তার ছায়া হয়ে রয়েছে।কিন্তু আজ,,,
আজ কি করবে সে।একদিকে তার ভালোবাসা অন্যদিকে তার প্রানের চেয়ে বেশি প্রিয় বন্ধু।যাকে সে কোনোকিছুর বিনিময়ে হারাতে পারবেনা।
এক গোলকধাঁধায় শিহরণ।
মোবাইল বেজে চলছে তার অনবরত।সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই।ধুম করে মোবাইলটা হাতে নিয়ে সুইচ অফ করে দেয়।আর মায়া বাড়াতে চায় না শিহরণ।পারবেনা সে তার বন্ধুকে ধোকা দিতে।
হসপিটালের ওয়ার্ডবয় নক করে দরজায়।
“স্যার আসবো??
“আসুন।”
“স্যার,নয় নাম্বার বেডের পেশেন্টের বুকের ব্যাথা টা আবার বেড়েছে।”
“আপনি যান আমি আসছি।”
শিহরণ একজন কার্ডিওলজিস্ট।যাকে বাংলায় বলে হৃদয়ের ডাক্তার।কিন্তু আজ যে তার হৃদয় ক্ষত বিক্ষত।তার চিকিৎসা করবে কে????
,
,
,
রাত প্রায় দশটা,
হালকা গতিতে চলছে আজরাহান এর বাইক।সোডিয়ামের বাতি গুলোর আবছা আলোয় বেশ লাগছে।রাতে যেনো ঘুমন্ত ঢাকা শহর আরো জেগে উঠে।মানুষের বিচরণ অবিরত।কেউ নাড়ির টানে কেউ নারীর টানে।
আজরাহান এর উদ্দেশ্যে এখন সামনের এলাকার একটা আবাসিক হোটেল।বাইক থামিয়ে হোটেলের সামনে দাড়ায় আজরাহান।হোটেল ‘ব্লু মুন’।দরজা কে পুশ করে ভিতরে ঢুকে আজরাহান।ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশ।বেশ চুপচাপ।সব কিছুই পার্ফেক্ট।রিসিপশন এ একজন সুন্দরী যুবতী কে দেখতে পান।লং স্লীভ এর একটা হোয়াইট শার্ট পড়া।তাকে গিয়ে কিছু প্রশ্ন করলো আজরাহান।তারপর তার পারমিশন নিয়ে সেখানেই সোফায় বসে।খুব ক্লান্ত সে।
কিছুক্ষন পর হাসতে হাসতে সেখানে উপস্থিত হয় সামান আর অরিধা।দুজনকেই বেশ খুশি সাথে ক্লান্তও লাগছে।লাগারই কথা,তাদের রতিক্রিয়া যে মাত্র শেষ হলো।
আজরাহান কে দেখে এক নিদারুণ ধাক্কা খায় সামান।
“এতো তাড়াতাড়ি শেষ??
“কেনো এসেছিস এখানে??
“দেখতে এলাম আমার মায়ের আজ্ঞাবহ ছেলে কি মহৎ কাজে ব্যস্ত।”
“তোর এইসবে নাক গলানোর কোনো প্রয়োজন নেই।”
আজরাহান ম্লান হাসে।
“তুমি যদি আজ আমার বড় ভাই না হতে তাহলে তোমার গালে একটা চড় মারার আগে আমি দ্বিতীয় বার ভাবতাম না।”
অরিধার দিকে তাকিয়ে বলে–
“আমার পরিবার আমাকে মেয়ে মানুষের গায়ে হাত উঠাতে শেখায় নি তাই আপনিও বেচে গেলেন।নাহলে আমার দেবীর মতো ভাবীর যে ক্ষতি আপনি করেছেন তার জন্য আমি আপনার কি অবস্থা করতাম তা আপনি ভাবতেও পারবেন না।”
“আজরাহান,,,
“শিষষষ,,মিস অরিধা।আপনার ওই নোংরা মুখে আমার মায়ের দেয়া নামটা নিয়ে তাকে কলুষিত করবেন না।”
সামান কন্ঠ ভারী করে বলে–
“আজরাহান বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে।”
“বাড়াবাড়ি তো তুমি করছো।সেদিন তোমাকে আমি সাবধান করার পরও তুমি কেনো ছাড়লে না এই মেয়েকে??
“তোকে ভাবতে হবে না।”
“আমিই তো ভাববো।মিসেস নন্দিতা সামান আহমেদ কে তো আমি ভাবী মনে করিনি বড় বোন মেনেছি।আর আমার বোনের কোনো ক্ষতি তো আমি হতে দিবো না।”
আজরাহান চোখ ছোট করে শান্ত কন্ঠে অরিধা কে বলে–
“সেদিন আমি ভেবেছিলাম,আমার ভাই আপনাকে ফাসিয়েছে কিন্তু আমি ভুল।আপনাদের মতো কিছু মেয়েদের জন্য পুরো নারী জাতি কলঙ্কিত।
কি পেয়েছেন বলুন তো এই অবৈধ সম্পর্ক থেকে।ত্রিশ থেকে চল্লিশ মিনিটের শারীরিক সুখ আর কিছু টাকা।এইসবই কি একজন নারীর জন্য যথেষ্ট??
নাহ।নারী মেয়ে,নারী বোন,নারী স্ত্রী,নারী মা।প্রত্যেক রুপেই তারা মহীয়ান।
একবারও কি ভেবেছেন যে পুরুষ ঘরে স্ত্রী সন্তান রেখে আপনাতে মত্ত হয়েছে সে কয়দিন পর আপনাকে ছেড়ে অন্য নারীতে মত্ত হবে না তার কি গ্যারান্টি??
কি পরিচয়ে বাচবেন আপনি??রক্ষীতা নাকি ধর্ষিতা??
নারী সব পারে।পুরুষদের চেয়ে তাদের ধৈর্য্য দশ গুন বেশি।পুরুষ হলো মৌমাছির মতো ফুলে ফুলে ঘুরে মধু আহরন করাই তার কাজ।তাই সময় থাকতে নিজেকে সংযত করুন।আসি।”
আজ প্রথম অরিধা তার ভুল বুঝতে পেরেছে।অক্ষীনীর উপচে উঠে তার।
আজরাহান নিজেকে হালকা বোধ করে।বাইকে উঠে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হয়।আর ভাবতে থাকে,,,,,
নারী তো যৌনক্ষুধা মিটানো কোনো যন্ত্র নয়।তাহলে আমরা পুরুষরা কেনো তাদের ভোগ্যপন্য মনে করি।নারী তার সব সম্পর্কে মহীশ্বরী।নারীই পারে পৃথিবীকে স্বর্গে পরিনত করতে।
মহান আল্লাহ বলেছেন–নারী তার পুরুষের পাজরের হার থেকে তৈরী করছেন।তাহলে পুরুষ কেনো তাকে পায়ের জুতা মনে করে।তার স্থান বুকে।
হাদিসে আছে–মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।তাহলে সন্তান হয়ে আমরা কেনো আমাদের মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসি।ইংরেজীতে স্ত্রীকে বলা হয় বেটার হাফ মানে অর্ধাঙ্গিনী।কারন নারী ছাড়া পুরুষ কখনই পরিপূর্ন নয়।
কবি বলেছেন—পৃথিবীতে যত সৃষ্টি চির কল্যানকর,অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।তাই নারী কে ভোগ্যপন্য নয় ভালোবাসতে শিখুন।
আমরা শুধু দেশকে দোষ দেই।দেশ তো কোনো মানুষ নয়।কিন্তু আমরা মানুষরা এখন অমানুষ।
বায়েজিদ বোস্তামী (রা) এর মা তার কাছে পানি চেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।মায়ের ঘুমের ব্যঘাত হবে বলে তাকে না ডেকে সারারাত তার শিয়রে পানি হাতে দাড়িয়ে রইলেন।আর আমাদের দেশের পুরুষরা কি করে নিজের স্ত্রী কে ঘুমের ঔষধ দিয়ে নিজের মেয়েকে ধর্ষন করে।হাস্যকর ব্যপার।যার জন্ম তারই ঔরষে তাকে দেখে কি করে তার যৌনতা জেগে উঠে!!!
মাদার তেরেসা সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে হয়েও নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন অসহায় মানুষের তরে।
দেশকে নয় নিজেদের বদলাতে হবে।নিজেদের চিন্তা ধারাকে বদলাতে হবে।নারীকে তার যোগ্য সম্মান দিতে হবে।তাহলে বদলাবে দেশ।বদলাবে আমাদের জীবন।
চলবে,,,