বর বউয়ের রোমান্টিক ঝগড়ার গল্প :
♠♥♠ #মশারি ♠♥♠
♣♣ পর্ব : ৯
গল্পকার: #গল্প বুড়ি তিলোত্তমা
!
!
!
গাড়িতে আমি আর ওনি পাশাপাশি বসেছি । আমি জানি তো বদমাইশটার মনে লাড্ডু ফুটছে।
কারন একটা প্রাইভেট কার শুধু আমাদের জন্য আনা হয়েছে ।
কিন্তু কে জানতো , তার বাড়া ভাতে ছাই পরবে –…..
ভেবেই আমার খুব খুশি খুশি লাগছে….
কারন টা হচ্ছে, তাজ আর তাহা আমাদের সাথে এ্যাড হয়েছে । এই দুটো বায়না ধরেছে, আমাদের সাথে যাবে। কিন্তু ভাবীরা কিছুতেই আমাদের সাথে দিতে রাজি হচ্ছিল না। তারা হয়তবা আমাদের প্রাইভেসি দিতে চেয়েছিল। তাই বললাম ওরা যাক না আমাদের সাথে। এই শুনে ভাবী আমাকে ধমক দিলেন। আর বললেন, যেটা বুঝিস না সেটা নিয়ে চুপ থাকাই ভাল। তাই তুই চুপ থাক।
!
মনে মনে এত রাগ হ্চ্ছিল, এখানে আবার এত আধ্যিকক্ষেতার কি আছে বুঝলাম না। তাই চুপ করেই বসে রইলাম ।
!
সাহিল বলে উঠলো, কেন ভাবী ওরা আমাদের সাথে গেলে কোন পবলেম আছে কি ? বরং ওরা আমাদের সাথে আসলে বেশ ভাল লাগবে।
আমার ভাবীরা ননদাই এর কথা ফেলতে পারিনি। তাই রাজি হয়েছে।
আমিও এই সুযোগে সায়লাকে আমাদের সাথে নিলাম। ও সামনে সিটে বসলো ।
যাক আমার তাহলে কথা বলার একজন হল।
মিঃ সাহিল তো কথা বলার সুযোগ ই পাবে না ।
কারন তাজ আর তাহা যে পরিমানে প্রশ্ন করতে পারে। বেচারা তো প্রশ্নর উত্তর দিতে দিতেই হাপিয়ে উঠবে। এদের প্রশ্নের শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই ।
!
গাড়িও স্টার্ট হলো আর বাচ্চা বাহিনীর প্রশ্ন ও শুরু হল। বাহিরে যা দেখছে তাই নিয়ে প্রশ্ন করছে ।
আমি বুঝতে পারছি, আজ বেচারাটা নাজেহাল অবস্থা হবে।
এদিকে আমি আর সায়লা ও খেজুরে আলাপ জুড়ে দিলাম।
কথা বলতে বলতে ই গাড়ি, বাড়ির গেটের সামনে থামলো।
!
গাড়ি থেকে নামতেই যেন, মনের ভিতর এক অন্য রকম প্রশান্তি বিরাজ করলো ।
আমাদের গাড়ির শব্দ পেয়ে বাড়ির সবাই এগিয়ে আসলো, আমাদের রিসিভ করার জন্য।
আমাদের বলছি কেন।? তাদের প্রাণ প্রিয় আদরের জামাইকে রিসিভ করতে এসেছে ।
এরা মনে হয় আমাকে চেনেই না । সবগুলো মানুষ জামাই জামাই বলে অস্থির হচ্ছে।
আমিও কারো সাথে কোন কথা না বলে বাসার ভিতরে গেলাম । ভিতরে গিয়ে দেখি আব্বু দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে। আব্বুর মুখের দিকে তাকাতেই দেখলাম, মুখটা এতটা মলিন হয়ে আছে। যা আমি আগে কখনও দেখিনি।
আব্বুর কাছে যেতেই আব্বু আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে দিলো। আমিও নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। আমি আব্বুর সাথে কেঁদে দিলাম। আমাদের কান্নার শব্দ শুনে সবাই এগিয়ে এলো।
আর আম্মু আব্বুকে বকতে শুরু করলো, মেয়েটা আসতে না আসতেই কি শুরু করলে শুনি। জামাই যে এসেছে, সে দিকে কোন খেয়াল আছে তোমার।
আম্মুর কথা শুনে হুঁশে ফিরে এলাম।
!
সাহিল এসে আব্বুকে সালাম দিল আর বুকের সাথে বুক মেলালো।
তারপর সবাই মিলে ঘরে গেলাম। ড্রইং রুমে সবাই মিলে বসলাম।
সবাই তাদের আদরের জামাইকে কি করবে,কি খাওয়াবে সেই নিয়েই ব্যতি ব্যস্ত হয়ে পরলো। আমিও সবার সাথে কোন রকমে সাক্ষাত করে, এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত খেয়ে নিলাম।
আর ভাবীকে বললাম, আমি কিন্তু এবার হিট স্টক করবো। তাই তাড়াতাড়ি আমাকে ফ্রেশ হতে হবে।
ভাবী বলে উঠলো, এখন গোসল দিয়ে কি করবি ? একবারে রাতে দিলেই তো হবে। শুধু শুধু ডাবল কষ্ট করবি কেন?
এই বলে হি হি হি করে হেসে দিল।
!
আমি আর কথা না বাড়িয়ে সোজা আমার রুমে দিকে এলাম।
আর বললাম আধা ঘন্টার আগে আমাকে কেউ ডাকবে না।
ভাবী কোন কিছু বলার আগেই দৌড়ে এসে রুমে ঢুকেই দরজা লক করলাম।
!
তারপর শরীর থেকে চটের বস্তা মার্কা শাড়ী আর গহনাগুলো খুলে রাখলাম। এরপর আমার আলমারি থেকে একটা পালা্জো আর মোটামুটি লম্বা একটা টপস্ বের করলাম। কারন এ দুই দিনে গরমে শাড়ী পরে আমার অবস্থা কাহিল । তাই আর দেরি না করে ওয়াশরুমে ঢুকে, ফ্রেশ একটা শাওয়ার নিলাম। শাওয়ার নিয়ে মাথায় তোয়ালে পেঁচিয়ে বের হতে না হতেই, দরজায় উড়া ধুরা নক শুনতে পেলাম।
আমার বুঝতে বাকি রইলো না কে এসেছে ?
বদমাইশ দুটো ছাড়া আর কেউ হবে না ।
তাই তারাহুরা করে দরজা টা খুলে দিতেই দুটো আমার উপর ঝাপিয়ে পড়লো।
আমিও ব্যলেন্স রাখতে, না পেরে দুটো কে নিয়ে বিছানায় পরে গেলাম।
!
তারপর শুরু হল দুটোর বদমাশি । আমাকে নাজেহাল করার কায়দাটা দুটোর ভালই রপ্ত করে রেখেছে।
কারন আমাকে কাতুকুতু দিলে আমি সহ্য করতে পারিনা। আর এ দুটো সেই কায়দাটাই কাজে লাগানো শুরু করলো।
আর আমার মনে হচ্ছে হাসতে হাসতে দম আটকে আসছে । আমি এতটা দুর্বল হয়ে গিয়েছি যে, ওদের কিছু বলতেই পারছিনা।
আর বলছি আল্লহ বাঁচাও!
!
এর মধ্যেই দরজায় নক করে সাহিল রুমে ঢুকলো।
সাহিলকে দেখে দুটো, আমাকে ছেড়ে ওকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো।
আমিও হাফ ছেড়ে বাচলাম।
!
সাহিলের একটা দিক আমার ভালই লাগলো ও বাচ্চাদের সাথে খুব তাড়াতাড়ি মিশতে পারে। আর বাচ্চা সামলাতে ওর ধৈর্য্য শক্তি আমার চেয়ে বেশি।
!
হঠাৎ দেখলাম সাহিল আমার দিকে তাকিয়ে চোখটা নিচে নামালো।
আর মুচকি মুচকি হাসছে।
!
!
আমি oh shit !
আমার শরীরে তো ওড়নাটাই নেই।
আমি তাড়াতাড়ি করে আমার বিছানায় রাখা শাড়ীটা জড়িয়ে নিলাম।
আর বললাম আপ…….. নি
!
সাহিল : হুম আমি।
ভূত দেখলেন না কি ?
”
!
আমি মনে মনে বলি, ভূত দেখলেও ভাল ছিল। অনতত পক্ষে আমার ইজ্জতের তো ফালুদা হত না।
!
এর মধ্যেই বড় ভাবী এসে তাহা তাজ দুটোকে কানে ধরে নিয়ে গেল। আমাদের রেস্ট নিতে বললো। আর বললো সায়লা ভাবীর রুমেই আছে, তুই সাহিলের কি লাগবে দেখ । এই বলে দরজাটা লক করে ভাবী চলে গেল।
!
আমি ওনাকে বললাম, এই শুনুন আপনি আমাকে আপনি করে বলবেন না। ভাবী শুনলে আবার আমাকেই বকবে। আর হ্যা ঐ যে ওয়াশরুম, ফ্রেশ হয়ে আসেন।
!
সাহিল : এটা কি সূচক বাক্য বললেন, আদেশ নাকি অনুরোধ।
!
আমি : আপনার যা ইচ্ছে তাই ভাবতে পারেন । ার আমি বলেছিনা আমাকে আপনি করে বলবেন না।
!
সাহিল : হুম…. কথার স্বরে তো আদেশসূচক মনে হচ্ছে। কিন্তু ম্যাডাম আমি আপনার আদেশ মানতে বাধ্য নই। আর আপনি যে পর্যন্ত আমাকে তুমি না করে বলবেন, সে পর্যন্ত আমিও আপনাকে তুমি করে বলবো না।
!
আমি : আপনি তো একটা যা তা লোক। আপনি আর আমি কি এক ?
আপনি আমার চেয়ে বড় তাই আপনি আমাকে তুমি করেই বলবেন।
!
সাহিল : ওহ্ তাই বুঝি। তা আপনায় কথায় তো মনে হয় না আপনি ামার থেকে ছোট। সবসময় তো আপনার কথাই আমার কথার থেকে বড়। হ্যা আরেকটা কথা বড়রা যা বলে তা যে শুনতে হয়। সেটা কি আপনার জানা আছে?
!
আমি : মানে ? এই শুনুন আপনাকে তুমি করে বলতে হবে না । আর আমাকে এত ভাষণ দিতে হবে না। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হন। যখন তখন কেউ ডাকতে পারে।
!
সাহিল : ঠিক আছ ম্যাম ।
!
এই বলে ও ওয়াশ রুমে ঢুকলো । আমি ও আমার জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখলাম। আর আজ নামাযগুলো সব কাযা হয়েছে। তাই আম্মুর রুমে গিয়ে ওযূ করে নামায পড়ে নিলাম।
কারন নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল।
!
না পড়ার চেয়ে কাযা করে পড়াও ভাল।
নামায পড়া শেষ করে আমার রুমে এলাম। রুমে এসে দেখছি তিনিও নামায পড়ছেন।।
কারন আমার ওয়্যারড্রোবের ওপর সব সময় একটা জায়নামায থাকে। তাই জায়নামায খুজে পেতে তার কোন অসুবিধা হয়নি।
তার নামায শেষ করে আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমি নামায পড়েছি নাকি ?
!
আমি মাথা নাড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিলাম।
!
এর মধ্যেই ছোট ভাবী খেতে ডাকলো আমাদের।
আমরা খেতে ডাইনিং রুমে চলে গেলাম । ডাইনিং রুমে গিয়ে চোখ তো আমার কপালে উঠলো। এতগুলো খাবারের আইটেম !
কই আমার জন্য তো দেখলাম না পাঁচটা আইটেম করতে । আর আজ জামাই এসেছে বলে, আইটেমের কারনে টেবিলে জায়গা হয় না।
!
এজন্য তো বলে,
আমার ঘরে আমি মেম্বার
পরের পোলা চেয়ারম্যান ।
!
ও বাবা বিয়া দিলা ক্যান””””””রে বাবা
বিয়া দিলা ক্যান””””””
!
মনে চাইছে খেতেই বসবো না। কিন্তু কি করার ক্ষিধেতে পেত চুচু করছে।
তাই খেতে বসলাম।
ওদিকে মা,ভাবী, চাচীরা সবাই মিলে বেচারাকে এমন ভাবে জোর করে খাওয়াচ্ছে যে, পরে মনে হয়, বেচারা খাবার দেখলেই না দৌড়ে পালায়।
আমি আর সায়লা তো এ দেখে খুব মজা নিচ্ছি।
বেচারার চেহারাটা দেখার মত ছিল।
একদম ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মত।
!
পরছে এইবার মাইনকা চিপায়।
কিছু বলতেও পারছেনা, আবার সইতেও পারছেনা।
আহা! একেই বলে গ্যাড়াকল””””
!
আমরা সবাই খাবার শেষ করে কিছুক্ষন আড্ডা দিলাম।
বড় ভাবী বেচার অবস্থা বুঝতে পেরেছে। তাই তাকে নিয়ে আমাকে রুমে যেতে বললো।
!
আমিও সাহিলকে নিয়ে রুমে চলে এলাম। বেচারার অবস্থা বড়ই করুণ। তিনি এসে তাড়াতাড়ি করে বিছানায় শুয়ে পরলেন। আর বললেন, আমার মনে হয় আগামী একমাস রোযা না রাখলে এ খাবার হজম হবে না।
!
এ কথা শুনে আমি একটু জোরেই হেসে দিলাম।
আর বললাম কাল সকালে তবে কি করবেন ? হুম!
হা হা হা
!
সাহিল মুগ্ধ নয়নে আমার হাসি দেখছিল । আর বলছিল, এ রকম হাসি দেখলে তো আস্ত একটা গরুঅ হজম করতে পারবো।
!
আমি : এ্যা….
!
সাহিল: এ্যা না হ্যা।
!
আর বললো, আপনার রুমটা খুব গোছানো আর টিপটপ ।
!
আমি : হুম। আমি গোছানো আর টিপটপ থাকতে পছন্দ করি। অগোছালো কোন কিছুই আমার ভাল লাগে না।
!
আর আমি তো আপনার মত ঘরকে গোয়াল ঘর করে রাখি না বলেই আবার হেসে উঠলাম।
!
!
সাহিল : বললো এজন্য তো রবীন্দ্রনাথ বলেছে,
রমনী অনর্থক হাসে
তাহা দেখিয়া পুরুষ অনর্থক কাঁদে
অনেক পুরুষ ছন্দ মিলাইতে বসে
আবার কেহ গোলায়া দড়ি দিয়ে মরে !!!! “””””
!
!
আমি খুব মুগ্ধ হয়ে ওর ছন্দটা শুনছিলাম…….
ওর বলাতে এক অন্যরকম এক মোহমায়া কাজ করছিল। সত্যিই আবৃত্তিটা অসাধারন ছিল।
আমি কিছুটা সময়ের জন্য বাক্যরুদ্ধ হয়ে রইলাম…..
!
!
ও আমার মুখের সামনে তুরি মেরে বললো এই যে ম্যাম কোথায় হারালেন।
!
!
আর হ্যা আমি অগোছালো বলেই তো, আমার জীবনটা গুছিয়ে দিবে এমন একটা মানুষ বেছে নিয়েছি! “””””
!
!
আমি কিছু না বলে ওঠে দাড়ালাম। হঠাৎ মনে পরলো, ঘুমানোর আগে তো জিনিষটা আমার লাগবে। এর আগে কখনো দরকার পরেনি। তাই আমার রুমে নেই।
!
!
এজন্য ভাবীর রুমের দিকে গেলাম। ভাবীর কাছে জিনিস টা চাইতেই…..
!
ভাবী এমন ভাবে আমার দিকে তাকালো,….
!
মনে হয় জিনিষ চাওয়াতে ভাবী এক প্রকার শক খেলো..””””
আর বললো তোর শরীর ঠিক আছে তো”””:
তুই চাইছিস এটা আমার কাছে….
!
আমি তো নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছি না””””
!
আমি বললাম প্লিজ ভাবী দাও না……..
!
!
চলবে