#অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২)part:29
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
.
.
🍁
.
গালে হাত দিয়ে বসে আছে আয়ান।মারাত্মক চিন্তার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সে…ফাহিম পাঞ্জাবির হাতা গুটাতে গুটাতে ওর পাশে বসলো।
.
কি রে?গালে হাত দিয়ে বসে আছিস কেন?রিয়ার কাছে শুনলাম বাবা হচ্ছিস।।শালা!!তুই তো দেখি সেইরম খেলোয়ার।।কোন দিকে কি হয়ে গেলো বুঝতেই পারলাম না।
.
আবে থাম।আমি ওকে টাচ পর্যন্ত করি নি।।উপপস্ সরি…টাচ করেছিলাম…জাস্ট কিস করেছিলাম তাও একবারই।
.
আয়ানের কথায় ভ্রু কুঁচকে তাকালো ফাহিম।এতোক্ষণ সে মজা করছিলো কিন্তু এখন তো দেখা যাচ্ছে কেঁচো খুড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে এসেছে।তারমানে সত্যিই A, B, C,D চলছে এদের মধ্যে।। ফাহিম সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলো-
.
কই কিস করছিস রে??
.
কই কিস করছি মানে??(ফাহিমের দিকে তাকাতেই) ছিহ্ তুই কি চিপ মাইন্ডের ফাহিম।আমি জাস্ট ওর ঠোঁটে কিস করছি আর কোথাও না।
.
আমি চিপ মাইন্ডের??হুহ!!বিয়ে করা বউকেও জড়িয়ে ধরা ছাড়া অন্যকিছু করলাম না আর তুই বলছিস আমি চিপ!!আর নিজে যে গার্লফ্রেন্ড বানানোর আগেই সব করে ফেলছিস সেটা কিছুই না?বাহ্ অসাধারণ।
.
কিসের সব করে ফেলছি??আরে..সত্যি আর কিছু করি নি রে।।ও কি ওই টাইপ মেয়ে নাকি??
.
হুহ!!আমিও তাই ভাবতাম তুই টাইপ দেখেই এসব করিস।বাট এখন তো দেখছি উল্টো….
.
তুই ও??এমনি টেনশনে বাঁচতাছি না।।
.
মহিলাদের মতো টেনশন করছিস কেন?তুই যেহেতু কিছু করিস নি সো জাস্ট চিল।।বমি করলেই প্রেগনেন্ট হয়ে যাবে তার কোনো মানে হয় না।।ওটা রমনীদের বাড়াবাড়ি বলতে পারিস। চুপচাপ বস ডক্টর এসেছেন দেখছেন।।সো কাম ডাউন।।
.
আর যদি সত্যি ও প্রেগনেন্ট হয় তো?
.
ফাহিম কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনই রিয়া দৌড়ে এলো…
.
এই চলুন না…অদিতি আপুর চেকাপ শেষ।।ওয়াও নতুন বেবি আসবে।।কি মজা।(এক্সাইটেড হয়ে)
.
রিয়ার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে উঠলো ফাহিম…
.
রিয়া বেবি…এতো এক্সাইটেড হয়ো না।।তাহলে নিজের টাইমে এক্সাইটমেন্ট কম পড়বে তো সোনা।
.
ফাহিমের এমন খাপছাড়া কথায় রাগী চোখে তাকালো রিয়া।ততক্ষণে আয়ান হাঁটা দিয়েছে অদিতির ঘরের দিকে।।ফাহিমও শয়তানী হাসি দিয়ে রিয়ার হাত চেপে ধরে সেদিকে পা বাঁড়ালো।।
.
.
এতো টেনশনের কিছু নেই।ফুড পয়জনিং এর জন্য বারবার বমি হচ্ছে নাথিং ইল্স।।খাবারের দিকে খেয়াল রাখবেন আর মেডিসিন গুলো ঠিকভাবে নিবেন।তাহলে কালকের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবেন।
.
ডাক্তারের কথায় অদিতির মা সেন্সলেস হয় হয় অবস্থা।উনি ভেবেই নিয়েছিলেন যে অদিতি প্রেগনেন্ট…. মনে মনে খুশিই হয়ে ছিলেন তিনি…এই ওসিলায় মেয়েটা এটলিস্ট বিয়ে তো করবে ।।কিন্তু তার ভাবনায় এক টাংকী পানি ঢেলে দিলো এই ডাক্তার সাহেব।সবাই মুখ কাচুমাচু করছে…সবাই ই মেন্টালি প্রিপেয়ার ছিলো ব্যাপারটার জন্য…কিন্তু শেষ মেষ এমন কিছু হবে কে জানতো??একমাত্র ফাহিমই ব্যাপারটাকে লাইটলি নিয়েছিলো।।এই মুহূর্তে পেট ফেটে হাসি পাচ্ছে তার।কন্ট্রোল না করে হুহা করে হেসেই উঠলো সে।।তার সাথে ধীরে ধীরে সবাই…আয়ানের মুখটা দেখে মনে হচ্ছে সদ্য সন্তানহারা পিতা সে…বেচারা!!!
.
.
.
ছাদে দাঁড়িয়ে আছে ফাহিম রিয়া।।আধ ঘন্টা যাবৎ হেসে চলেছে ফাহিম।।আর রিয়া রেলিং এ ঠেস দিয়ে এই অসম্ভব সুন্দর হাসিটাই দেখে চলেছে।।আচ্ছা,,মানুষ এতো সুন্দর করে কিভাবে হাসে??বুকে যে ব্যাথা করে রিয়ার….
.
আপনি এমন পাগলের মতো হাসছেন কেন বলুন তো??(মুখ গোমড়া করে)
.
হাসি পেলে হাসবো না??
.
না হাসবেন না।।আমার গোমড়া মুখো জামাই ই ভালো লাগে।।আমি আপনাকে মুখ অফ অবস্থায় দেখেই ক্রাশ খেয়েছি….সো অফ করেই থাকেন।
.
রিয়ার কথায় ফাহিম একটু এগিয়ে এসে একটানে নিজের সাথে জড়িয়ে নিলো তাকে।।চুলগুলো কানে গুঁজে দিতে দিতে নরম স্বরে বলে উঠলো-
.
এখন তো আর গোমড়া জামাই সাজতে পারবে না সে।।তোমার গোমড়া মুখো জামাই বউ পেয়ে রোমান্টিক হয়ে গেছে তো।।এখন শুতে,, জাগতে শুধু রোমান্সই মাথায় আসে।।আর কিছু আসেই না।।(বা চোখ টিপে দিয়ে)
.
ফাহিমের কথায় রিয়া লজ্জায় লাল। ইশশ…কি বলবে এখন সে??কি লজ্জা,, কি লজ্জা!!ফাহিম রিয়ার লজ্জা দেখে মুচকি হেসে ওকে কোলে তোলে নিয়ে ছাদের রেলিং এর উপর বসিয়ে কপালে কপাল ঠেকাল।।
.
রিয়া?তোমাকে আমি প্রথমবার ৫ বছর আগে দেখেছিলাম নাদিয়ার বিয়েতে।।পিচ্চি একটা মেয়ে ছিলে।আমি তখন ভার্সিটির নিউ টিচার আর তুমি…
.
আর আমি তখন ক্লাস নাইনের স্টুডেন্ট।
.
সত্যি ভাবা যায়??তোমার আর আমার বয়সের কতো ডিফারেন্স।আমি তখন ভাবতেই পারি নি এই পিচ্চি মেয়েকে বউ বানানোর জন্য এতোটা পাগল হবো আমি।।উফফ..আগে জানলে আরেকটু দেখে নিতাম তোমায়।।মনে হচ্ছে তোমাকে ভালোবাসার জন্য আমার কাছে যতটুকু সময় আছে তা খুবই কম।।
.
(লাজুক হেসে)আমিও জানতাম নাকি তখন…আপনার জন্য এতোকিছু করবো।।তখন তো বাচ্চা ছিলাম… আপনাকে দেখে কোনো ফিলই আসে নি।
.
এখম আসে বুঝি ফিল??(দুষ্টু হাসি দিয়ে) ও বউ?বলো না…আসে ফিল??
.
রিয়া লজ্জায় মুখ লোকালো ফাহিমের বুকে।।ফাহিমও কম যায় না।।তার মুখ চলছে তো চলছে…আর তার একেকটা কথায় লজ্জায় কুঁকড়ে উঠছে রিয়া!!!
.
.
বিছানায় বসে পানি খাচ্ছিল অদিতি।বিয়ে বাড়িতে প্রচুর মানুষ।কিন্তু অদিতির অসুস্থতার জন্য রুমটাকে আপাতত ফাঁকা রাখা হয়েছে।।রাত ১২ টার আগে কেউ এই রুমে আসবে না।।ততক্ষণ অদিতির রেস্ট।।হঠাৎ জানালা দিয়ে কেউ একজন ঢুকেই অদিতিকে হুটহাট কোলে নিয়ে হাটা দিলো।।অদিতি চিৎকার দিতে গিয়েও আয়ানের মুখটা দেখে চুপ হয়ে গেলো।।আয়ান অদিতিকে কোলে নিয়েই জানালা টপকে গার্ডেনে চলে এলো।। কোনো কথা না বলে অদিতিকে দোলনায় বসিয়ে মুখ গোমড়া করে পাশে বসে রইলো৷। অদিতি ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকেই বলে উঠলো-
.
কি হয়েছে??
.
হলোটা কই??হলোই না তো!!তুমি প্রেগনেন্ট হলে কি এমন হতো?আমি কতোটা আশা করেছিলাম।।ধেৎ!!
.
আয়ানের কথায় অদিতি চরম অবাক।।অবাকের প্রহর শেষ করে হালকা জোড়েই বলে উঠলো সে-“কিহ??” আয়ানের কথায় আয়ান নিজেই অপ্রস্তুত ফিল করছে।।কি থেকে কি বলে ফেললো কে জানে??কথা ঘুরাতে কিছু একটা তো বলতেই হবে।।এবার আরো একটা অদ্ভুত কথা বললো সে-“আই ওয়ান্ট টু কিস ইউ…”কথাটা শোনার সাথে সাথেই অদিতির শরীরে বিদ্যুৎ বয়ে গেলো। কি অদ্ভুত কথা!!!
.
#চলবে…🍁
.
(এখন যারা বলবে পার্ট ছোট কেন দিলেন??তাও এতোদিন পরে।।তারা প্রেত্যেকটাই আক্কেলের আছাড়ি এক নাম্বারের আহাম্মক।।হুহ!!)