# ছায়াকরী
# পর্বঃ৩৮
লেখনীতেঃতাজরিয়ান খান তানভি
জেহেনকে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সন্দিহান চোখে তাকাল নুয়ায়াম। ভার কণ্ঠে বলল—
“ব্যস্ত?”
জেহেন ভনিতা ছাড়াই বলল—
“না তো।”
“কথা আছে তোমার সাথে।”
“অবশ্যই।”
“এসো আমার সাথে।”
মুচকি হাসল জেহেন। নুয়ায়াম তেমন কিছু আঁচ করল না, আসলে সে আঁচ করতে চায়নি। আপাতত সে একটা বিষয় নিয়ে দ্বিধান্বিত। তা উগরে দিতে চায় জেহেনের কাছে। ভগ্নিপতি কম ভাই মানে জেহেনকে নুয়ায়াম। এত বড়ো মহলে হাতে গোনা কয়েকটা মানুষ। তবুও তাদের অন্তঃপুরে জটিল গোলযোগ। একে অপরের কাছে থেকেও সূদুরে অবস্থিত।
সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় চারদিকে সতর্ক নজর জেহেনের। অনিতার পালক যখন তার হাতে এসে যায় তখনই সে ভেবে নিয়েছিল, সে বাজপাখি সাধারণ কোনো পাখি নয়। কারণ, সাধারণ বাজপাখি আকারে ছোটো হয়। এটা দৈর্ঘ্যে ছিল বিশাল। আর সকালে অনিতার হাতের ক্ষত দেখেই সে বাকিটুকু বুঝে নিয়েছে। তেহজীবের ছোড়া দৃষ্টিতে ফুলদানির করুন দশাও জেহেন দেখেছে। দেখেছে, মেহেকের অস্থিরতা। কোনো কিছুই তার অগোচরে রইল না। জেহেন নিশ্চিত হলো তার ভাবনা সম্পর্কে।
নুয়ায়াম একটা কাগজ দিলো জেহেনের হাতে। আলতো হেসে সেটা নিজের হাতে নিল জেহেন। তার চোখ দুটো অকস্মাৎ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। কাগজ থেকে চোখ সরিয়ে নুয়ায়ামের দিকে তাকাতেই দেখতে পেল, এক লজ্জামিশ্রিত হাসির হলকা লেগেছে নুয়ায়ামের অধরে। ওষ্ঠাধরের কোণ বাঁকালো জেহেন। ফিচেল গলায় বলল—
“নাম?”
নুয়ায়াম খানিকটা আবেশিত ভঙ্গিতে বলল—
“আরওয়া।”
“কোথায় দেখেছ তাকে?”
নুয়ায়াম আনন্দিত হলো। প্রসন্ন হেসে অবারিত গলায় বলল—
“ডক্টর আরইয়াজের কথা বলেছিলাম না তোমাকে, তার ভাগ্নি। আরওয়া নাম তার।”
“এক দেখায় উন্মাদ?”
নুয়ায়াম ভিমড়ি খেল। কণ্ঠরোধ হলো তার। মিইয়ে গলায় বলল—
“তেমন কিছু নয়। মেয়েটা অদ্ভুত !”
জেহেন হাসল। বিছানার দিকে তাকাল। ছায়াকরী দাঁড়িয়ে আছে। মজার ছলে বলে উঠে জেহেন—
“সত্য।”
কপাল কুঁচকে বলে উঠে নুয়ায়াম—
“তুমি কী করে বুঝলে?”
চোখ ফেরাল জেহেন। ছোট্ট করে হেসে কাগজটার দিকে তাকাল। আরওয়ার মুখচ্ছবিটাতে গাঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল—
“বন্য ও উন্মত্ত হও, প্রেমে মাতাল হও!
বেশি সাবধান হলে প্রেম তোমায় খুঁজে পাবে না।”
মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি (রহঃ)
ছবি আঁকার দারুন প্রতিভা নুয়ায়াম। কারো চোখ দেখেই তার মুখাবয়ব অঙ্কন করার ক্ষমতা রাখে সে। কোনো মানুষের ঠোঁট দেখেই তার পুরো মুখচ্ছবি কল্পনা করে আঁকতে পারে। অবশ্য তা সবটা না মিললে, অনেকটা মিলে যেত পূর্বে। কিন্তু এখন তার সেই ক্ষমতার প্রখরতা দ্বিগুন হয়েছে। আর আরওয়াকে তো প্রত্যক্ষদর্শন করেছে।
,
,
,
মহলের বাইরের দিকের সিঁড়িতে ধপ করে বসল তোভিয়া। তার কপালে, চোয়ালে চকচক করছে মুক্তোর মতো ঘাম। কণ্ঠদেশ কাঁপছে। হাপাচ্ছে সে। তার পাশে মহলের স্তম্ভের সাথে পিঠ ঠেলে দাঁড়াল তেহজীব। তার মোহিত দৃষ্টি তোভিয়ার দিকে। তোভিয়া হাপাচ্ছে, কিন্তু তার অধর বিস্তৃত হচ্ছে আপন ভঙ্গিতে। হেসে হেসে বলল—
“শুধু শুধু তোমাকে দিয়ে কষ্ট করালাম। কোথাও কিছু পেলাম না।”
তেহজীব মায়াময় হেসে বলল—
“আর কোথাও দেখতে হবে পদ্মকুমারী?”
তোভিয়া খিলখিল করে হেসে বলল—
“না, জনাব। আমি কৃতজ্ঞ আপনার প্রতি।”
আবারও হাসল তোভিয়া। এই তূরন্ত হাসির ঝর্ণা ঝপঝপ করে ভিজিয়ে দিলো তেহজীবের মরুভূমির মতো হৃদয়কে। তীব্র পিপাসায় ওষ্ঠাগত প্রাণে এক আঁজলা প্রাণসঞ্জিবনী হয়ে নামলো তোভিয়ার হাসি। তেহজীব স্তম্ভ থেকে সরে হেসে তোভিয়ার পাশে বসল। তোভিয়া একধাপ নিচের সিঁড়িতে পা রেখে বসে আছে। তার শাড়ির আঁচল লেপ্টে আছে মেঝেতে। তার দীঘল কালো চুল ঢেউ খেলছে মেঝের পাটাতনে। প্রভাকরের তীর্যক হলদে আভা টুক করে ছুঁয়ে গেল তোভিয়ার আঁখিদ্বয়। সে মাথা ঘুরাল। হাতের আচ্ছাদনে সূর্যরশ্মি টলাতে চাইল। ঘুরে তাকাতেই সর্ব প্রথম তেহজীবের মুখটা দেখল সে। তেহজীব অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সে দৃষ্টিতে ছিল মাদকতা। তোভিয়া হালকা গলায় বলল—
“এভাবে তাকিয়ে আছ কেন?”
“তুমি আমার কেন হলে না তোভিয়া? জেহেন ছিনিয়ে নিল তোমাকে আমার কাছ থেকে!”
তোভিয়ার চাহনি ব্যথিত হলো। সে সহজ গলায় বলল—
“আমি তোমার কখনো ছিলাম না তেহজীব।”
“যদি ছিনিয়ে নেই তোমাকে আমি?”
“ভালোবাসা ছিনিয়ে নেওয়ার জিনিস নয়। সৃষ্টিকর্তার তৈরি সবচেয়ে রহস্যময় সৃষ্টি। যার সৃষ্টির শুরু কোথা থেকে তা আজও কেউ জানে না। ভালোবাসা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিশুদ্ধ ছোঁয়া, যার ছোঁয়ায় পাথরও মোমে পরিণত হয়। ভালোবাসা অবিমিশ্র সেই অনুভূতি, যার গহন অনুরণন পশুতে মনুষ্যত্বের জন্ম দেয়।”
তেহজীব চেয়ে রইল। হৃদমোহিনীর কণ্ঠে যেন প্রাণের উল্লাস, জাগতিক মায়া হতে বিচ্ছিন্ন হতে ইচ্ছে হয়! প্রেমডোরে বাঁধতে ইচ্ছে হয় নিজেকে। সপে দিতে ইচ্ছেহ
য় জীবন। কী এমন ক্ষতি হতো, যদি সে সাধারণ কেউ হতো! কী এমন হতো যদি তার জন্ম এই সুন্দর পৃথিবীর বুকে হতো! কী এমন হতো ওই পদ্মকোমল নারীর বক্ষস্থলে লুকিয়ে থাকা হৃদয়ে তার নামে পদ্মফুল ফুটলে!
তেহজীব নির্নিমেষ চেয়ে রইল। মৃদু সমীরণে তোভিয়ার কপালে অবাধ্য উড়ে যাওয়া চুলের নেশার, তিরতির করে কেঁপে যাওয়া ওষ্ঠাধরে গহন ছোঁয়ার, প্রেয়সীর সারা অঙ্গে বিচরণ করার অভিপ্রায়ে অসহায় হয়ে ওঠা কণ্ঠে তেহজীব বলল—
“তোমাকে ভালোবেসে ভুল করেছি আমি?”
“ভালোবাসা কখনো ভুল হয় না তেহজীব। ভালোবাসার অপর নাম শ্রদ্ধা, সম্মান। প্রেমের পরিণতি শুধু পরিণয় নয়, অবিনাশী ভরসা, দূরে থেকেও কাছে থাকা। একে অপরের জন্য অনুভব করা।”
“তোমাকে চাওয়াটা কী আমার ভুল ছিল? প্রতি ক্ষণে নিজেকে ব্যক্ত করেছি আমি। তুমি কখনো সাড়া দিলে না। অযোগ্য আমি তোমার?”
“তুমি অযোগ্য নও। আমার হৃদয় তোমার অযোগ্য। যে হৃদয়ে আমি জেহেনের নামে ভালোবাসার বীজ রোপন করেছি, তার শিকড় জন্মেছে বহুদিন পূর্বেই। সেই শিকড় উপড়ে ফেলতে পারব না আমি। তাহলে যে আমি বাঁচব না। ভগ্ন এই হৃদয়ে তোমার নামে ভালোবাসার বীজে কখনো অঙ্কুরোদ্গম হবে না। ”
তেহজীবের মনে হলো সে অপার্থিব কোনো মায়াজালে আটকে পড়েছে। তার চোখের সম্মুখে যে যোষিতা বসে আছে তাকে পেতে হলে তাকে আরেকবার জন্ম নিতে হবে।
সূর্যের বিগলিত রশ্মি সিঁড়ির অনেকটা নিচে নেমে গেছে। ছায়া পড়তে শুরু করেছে ওপরের দিকটায়। ঘোরগ্রস্তের মতো সেই নিস্তব্ধ ছায়াচ্ছন্ন পরিবেশে দুটো মায়াবী চোখের দিকে চেয়ে রইল তেহজীব। তোভিয়ার শ্বাস ভারী হচ্ছে। তেহজীবের এই অকুণ্ঠিত আহ্বান, প্রকাশিত ভালোবাসার বাণী, এই শান্ত, স্নিগ্ধ মলয়ে আচ্ছাদিত পরিবেশে তোভিয়ার কিছু হলো। সে নিমেষহীন চাহনিতে চেয়ে রইল তেহজীবের গাঢ়, গম্ভীর, শুশ্রূষার মতো দুই চোখে। তেহজীব এগিয়ে এলো তোভিয়ার ওষ্ঠাধরের কাছে। তিরতির করে কাঁপছে তোভিয়ার ঠোঁট। চোখের চাহনি অস্থির। তেহজীব আলতো করে তোভিয়ার চোখের পল্লবে মেখে থাকা চুল সরিয়ে দিয়ে ছুঁয়ে দিতে চাইল তার আকাঙ্ক্ষীত সেই স্থান। তদ্দণ্ডে মহলের ভেতর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে এসেছে অনিতা। সিঁড়ি আর মহলের মূল দরজার মাঝে থাকা দাওয়া দিয়ে চঞ্চল পায়ে ছুটে গেল কোণার দিকটায়। সেখানের দণ্ডায়মান স্তম্ভকে একহাতে জড়িয়ে রেখে ঝুঁকে গিয়ে গলগল করে বমি করতে থাকে। চকিতে চেতন ফিরে পায় তোভিয়া। সে চট করে সোজা হয়ে বসে। মিনিটেই কয়েকটা বড়ো বড়ো শ্বাস ফেলল। শুষ্ক ঠোঁট চেপে ধরল ভেতরের দিকে। তার চাহনি এলোমেলো, অন্তঃকরণ অশান্ত, ব্যাকুল। আড়চোখেও সে তেহজীবের দিকে তাকাতে পারছে না। অনুরাগ, অনুযোগ অচ্ছেদ্য বলয়ে আবৃত করে নিল তোভিয়াকে। তেহজীবের কবোষ্ণ শ্বাসের নিচ্ছিদ্র স্পর্শ তোভিয়ার গ্রীবাদেশে আঁছড়ে পড়ছে। অনিতার করা বিদঘুটে শব্দে চট করে সেদিকে তাকাল তোভিয়া। উদ্বিগ্ন চোখে তাকিয়ে দ্রুত উঠতে গেলে তার হাত চেপে ধরে তেহজীব। তোভিয়া তাকাতেই বলল তেহজীব—
” তোমাকে যেতে হবে না। ভেতরে যাও। আমি দেখছি।”
স্থির, অচঞ্চল, অমায়িক ভঙ্গিতে বলল তেহজীব। তোভিয়া তার হাত টেনে ছাড়িয়ে নিল। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে। চিনচিন করছে তার হৃৎগহীনে। ওয়াক শব্দে আরও কিছু গলা দিয়ে বের করল অনিতা। তার দিকে বিচলিত দৃষ্টিতে তাকাল তোভিয়া। তেহজীব উঠে দাঁড়াল। মোলায়েম স্বরে বলল—
“তুমি যাও তোভিয়া। শাড়িতে কাঁদা লেগেছে তোমার। বদলে নাও।”
তোভিয়া এতক্ষণে খেয়াল করল তার কর্দমাক্ত পায়ের ছাপ বসেছে সিঁড়িতে। এমনকি শাড়ির নিচের অংশে কাঁদায় মাখামাখি। এই মুহূর্তটা কেমন অদ্ভুত লাগছে তোভিয়ার কাছে। সে কোনো কথা বলতে পারছে না। যতবার তেহজীবের দিকে তাকাচ্ছে, ততবার মনে হচ্ছে, ওই চোখ দুটো তাকে আজ নিঃশেষ করে দেবে। এক অদেখা অতলান্ত প্রেম সায়রে ডুবিয়ে দেবে। তোভিয়া পেছতে লাগল। একটু একটু করে আড়ষ্ট, নিরুদ্যম ভঙ্গিতে। আচানক দেয়ালে পিঠ ঠেকতেই সে চমকিত হলো। পেছন ফিরে দরজা দেখতে পেয়েই দৌড় দিলো। তেহজীব হাসল। রহস্যময় হাসি।
,
,
,
কক্ষের ভেতরে ঢুকেই শ্বাস ফেলল তোভিয়া। জেহেন বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। তোভিয়া অধৈর্য গলায় বলল–
“জেহেন, শীঘ্রই চলুন। অনিতা কেমন করছে!”
জেহেন হালকা মাথাটা তুলে তোভিয়াকে দেখল। তারপর পূনরায় বিছানায় মাথাটা রেখে বলল—
“কেমন করছে?”
জেহেনের পা ঝুলে আছে বিছানা থেকে। সে মৃদুছন্দে তা নাড়িয়ে যাচ্ছে। তোভিয়া ভয়ভীত গলায় বলল—
“অনিতা মুখভর্তি বমি করছে। কিছু হয়েছে ওর।”
ছড়িয়ে রাখা দুই হাত মাথার নিচে রাখল জেহেন। কৌতুকমাখা কণ্ঠে বলল—
“গিয়ে দেখো, তেহজীব কিছু করেছে কি না!”
তোভিয়া নাক ফোলাল। অসংগতিপূর্ণ কথাবার্তা! সে তেজ দেখিয়ে বলল—
“বাজে কথা বলছেন কেন?”
জেহেন মিহি হেসে বলল—
“অসম্ভব কিছু নয়। পুরুষ সে।”
তোভিয়ার ভীষণ রাগ হলো। চোখ দুটো খিচে ধরে মুক্ত গলায় বলল—
“পুরুষ তো আপনিও। আপনার দ্বারা তো কিছুই হয় না। তাহলে কী বুঝে নেব আপনারা দ্বারা সম্ভব নয়?”
জেহেন উঠে বসল। তোভিয়ার হাত ধরে তাকে পাশে বসাল। একরাশ ঘন অরণ্যে নাক ডুবিয়ে দিয়ে নেশায় বুঁদ হয়ে বলল জেহেন—
“কী হয় না আমার দ্বারা?”
তোভিয়া তাচ্ছিল্য সাথে মুখ বাঁকিয়ে বলল—
“কিছুই না।”
জেহেন তার দন্তপাটির ব্যবহার করল তোভিয়া কাঁধের নরম মাংসে। মৃদু শব্দ করে বলল তোভিয়া—
“কী করছেন? লাগছে আমার!”
“ব্যস, এইটুকুই! পুরোটা সামলাবে কী করে?”
তোভিয়া কঠোর কণ্ঠে বলল—
” ওসব নিয়ে আপনাকে চিন্তিত হতে হবে না। আপনি আগে চলুন আমার সাথে। অনিতাকে দেখবেন।”
জেহেন দুই হাতে বিছানায় ভর দিয়ে মাথাটা পেছনে হেলে দিয়ে বসল। বলল—
“তেহজীব সামলে নেবে।”
“ও কী ডাক্তার?”
“আমি বৈদ্য নই।”
তোভিয়া মাথা ঘুরিয়ে তাকাল জেহেনের দিকে। উদাস চোখে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আছে জেহেন। তোভিয়া নম্র গলায় প্রশ্ন করল—
“কী হয়েছে আপনার?”
জেহেন গাঢ় হাসল। তোভিয়া চমকিত। সে ভ্রূ কুচকে তাকিয়ে রইল। জেহেনের হাসি বিস্তৃত হলো। সে মাথাটা নিচের দিকে এনে তোভিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল—-
“তোমার ভাই প্রেমে পড়েছে। লাস্যময়ী এক দুঃসাহসী নারীর প্রেমে মত্ত হয়েছে। বিনাশ করে ছাড়বে তাকে। সাবধান!”
চলবে,,,