#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১৯
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
একটু পরেই সাজ্জাদ আদ্রিতার থেকে দূরে সরে গেলো। সে চাইলে ও নিজেকে আদ্রিতার থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারছে না। সাজ্জাদের সাথে আদ্রিতার বয়সের পার্থক্য দশ বছরের মতো হবে। তাই সাজ্জাদের কাছে আদ্রিতা নিতান্তই একটি বাচ্চা। যদি ও আদ্রিতা কলেজে পড়ে। কিন্তু সাজ্জাদের মনে হয় আদ্রিতা অনেক ছোট সব কিছুতে ভুল করবে। তাই সব সময় আগলে রাখার চেষ্টা করে। গাড়ির সিট থেকে আদ্রিতাকে উঠেয়ে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরলো একবার। আদ্রিতার ঠোঁটে হাত দিয়ে স্পর্শ করলো। আদ্রিতা হিজাব পড়া খোলা চুলে থাকলে হয়তো সাজ্জাদ চুলের গন্ধ শুঁকে নিতো।আদ্রিতার ঠোঁটের দিকে আার মুখ বাড়িয়ে ও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলো আদ্রিতাকে আবার সিটে বসিয়ে দিলো। সাজ্জাদ ঘন ঘন শ্বাস নিলো নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলো। আদ্রিতার দিকে তাকালো হাত দিয়ে আদ্রিতার ঠোঁট স্পর্শ করলো। ঠোঁটটা মুছে দিলো। আনমনে বলে উঠলো আর কিছু দিন পর তোমার উপর সম্পূর্ণ অধিকার আমার থাকবে। তুমি শুধু আমার। আর কারোর নও। সাজ্জাদ খেয়াল করলো আদ্রিতার চোখ পিটপিট করছে হয়তো এখনি তাকাবে সাজ্জাদ দ্রুত আদ্রিতা থেকে দূরত্ব বজায় করে নিলো।
চোখ খুলে গাড়িতে নিজের অবস্থান দেখে বুঝতে পারলাম এটি সাজ্জাদের গাড়ি।
এখানে কেনো নিয়ে এসেছেন? আলো, তানহা আর আবির কোথায়? (আদ্রিতা)
সকালে খাও নি কেনো? (সাজ্জাদ)
আবির খাবার এনেছিলো তার জন্যই পানি আনতে রুমে যাচ্ছিলাম এর আগে পরে গেলাম।(আদ্রিতা)
আবির আদ্রিতার জন্য খাবার এনেছে কথাটা কেনো জানি সাজ্জাদের পছন্দ হলো না। শান্ত গলায় বললো আবিরের আনা খাবার খাওয়া লাগবে না। আমি খাবার এনেছি খেয়ে নেও।
সাজ্জাদের কথা শুনে আদ্রিতা চিন্তা করছে সাজ্জাদ কি আদ্রিতাকে নিয়ে জেলাস?
আদ্রিতা মুখ ফোসকে বলে দিলো, বাই এনি চান্স আপনি কি জেলাস ফিল করছেন? (আদ্রিতা)
একজন মানুষ হিসেবে শুধু অপর একটি মানুষকে সাহায্য করছি আর কিছু না। (সাজ্জাদ)
সাজ্জাদের কথা শুনে আদ্রিতার মনে অভিমান তৈরি হলো।
গাড়ির দরজা খুলুন আমি বাইরে যাবো। ওদের সাথে অনেক কাজ বাকি আছে আমার। (আদ্রিতা)
খেয়ে নেও (সাজ্জাদ)
আমি খাবো না আপনার খাবার কথাটি বলে আদ্রিতা নিজেই দরজা খোলার চেষ্টা করতে লাগলো।
সাজ্জাদের রাগ বাড়তে থাকলো আদ্রিতার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কোলে বসিয়ে দিলো শক্ত করে এক হাত দিয়ে আদ্রিতার কোমড় জড়িয়ে ধরলো।
কি করছের ছাড়ুনননননন । ভুলে যাবেন না আপনার সাথে দির বিয়ে ( আদ্রিতা)
হুশশশ আদ্রিতার ঠোঁটে সাজ্জাদের আঙুল রেখে সাজ্জাদ বলল কার সাথে কে ভাগ্যে আছে এইটা আল্লাহ ভালো জানেন। এখন আমি সামিরার ব্যাপারে কোনো কথা চাই না। এই সময়টা শুধুই তোমার আর আমার।
আদ্রিতা নামার জন্য জিদ করতে নিলে সাজ্জাদ বলে উঠলো বন্দুকের কথা ভুলে গেছো বুঝি?
আদ্রিতা কথাটি শুনে একদম শান্ত হয়ে গেলো।
সাজ্জাদ মৃদু হাসলো সে জানে আদ্রিতার দুর্বলতা। সাজ্জাদ শক্ত করে একবার জড়িয়ে ধরলো আদ্রিতাকে।
এখন লক্ষী মেয়ের মতো খেয়ে নেও (সাজ্জাদ)
সাজ্জাদ আদ্রিতার সামনে খাবারটি রাখলো। গরম গরম লুচি আর আলুর দম।
বন্দুকের কথাটি শুনে আদ্রিতা আবার ভয় পাচ্ছে মনে হচ্ছে এখনই সাজ্জাদ আবার ওর মাথায় বন্দুক ঠেকাবে। কাঁপা কাঁপা হাতে আদ্রিতা লুচির দিকে হাত বাড়াচ্ছে।
সাজ্জাদ বুঝতে পারলো ভয় পাচ্ছে।
আমি খাইয়ে দিচ্ছি। (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা আর কিছু বললো না।
সাজ্জাদ এক হাত দিযে আদ্রিতার কোমর জড়িয়ে ধরে রেখেছে অন্য হাত দিয়ে আদ্রিতাকে যত্ন সহকারে খাইয়ে দিলো। মাঝে মধ্যে লুচির অর্ধেকটা আদ্রিতাকে খাইয়ে বাকিটা নিজে খেয়ে নিলো।
ম্যাডামের কি আমার কোলে বসে থাকতে অনেক ভালো লাগে নাকি? কথাটি বলে সাজ্জাদ আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো আদ্রিতাকে।
ইস একে ত নিজে আমাকে নিজের কাছে বসাবে এখন আবার নিজেই লজ্জা দিচ্ছে, অ*সভ্য লোক একটা।
আদ্রিতা মিনমিনিয়ে বললো ছাড়ুন না
যদি না ছাড়ি? ( সাজ্জাদ)
ছাড়ুন ( আদ্রিতা)
বাসায় কি জানে কয়টায় বাড়ি ফিরবে? (সাজ্জাদ)
সন্ধ্যায়। (আদ্রিতা)
ঠিক আছে চলো আজকে তোমাকে নিয়ে ঘুরবো সারাদিন। (সাজ্জাদ)
কিন্তু? আমি ওদের সাথে যাবো। (আদ্রিতা)
সব কাজ ওরা সামলে নেবে তুমি আমার সাথে চলো। (সাজ্জাদ)
এমনি ও আজকে ক্লাস করতে আসে নি তারা শুধুমাএ অনুষ্ঠানের বিষয়ে কথা বলতে এসেছে। তাই আদ্রিতা থ্রি-পিস পড়া।
এখন ছাড়ুন আমাকে (আদ্রিতা)
ছাড়তে ইচ্ছে হচ্ছে না। আর ও কাছে যেতে ইচ্ছে করছে। (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। সাজ্জাদ মুচকি হাসলো। তারপর আদ্রিতা সিটে বসিয়ে দিলো।
গাড়ি আপন গতিতে চলছে আদ্রিতার মনে তোলপাড় বয়ে যাচ্ছে। এই মানুষটার রহস্য সে বুঝতে পারছে না।
গাড়ি এসে একটি লেকের পাড়ে থামলো।
নামো (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা নেমে গেলো। অনেকদির ধরেই কোনো লেকের পাড়ে যেতে ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু এইভাবে যে ইচ্ছে পূরণ হবে তা ভাবতে পারে নি।
চলো হাঁটি (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা নিশ্চুপ সাজ্জাদের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটা শুরু করলো। কারোর মুখে কোনো কথা নেই।
ভালোবাসো আমায়? (সাজ্জাদ)
আদ্রিতার মুখে কথা নেয়।
সামিরার ব্যাপার নিয়ে ভেবো না। যা হচ্ছে সেভাবে চলতে দেও। দিন শেষে তুমি যা চাও তা ঠিকই পাবে। কথাগুলো একটু গভীরে চিন্তা করে দেখো। আশা করি বুঝতে পারবে। (সাজ্জাদ)
মানুষটা রহস্যময়। তাকে বোঝার ক্ষমতা আমার নেই।
হঠাৎ একটি ছোট মেয়ে আসলো সাজ্জাদকে বললো,
ভাইয়া গাজরা নিবেন? আপনার বউ এর হাতে পড়িয়ে দেন।
লজ্জায় মুখ লাল হয়ে উঠলো। আদ্রিতা কিছু বলতে নিবে তার আগে সাজ্জাদ বললো,
হ্যাঁ দেও কথাটি বলে সাজ্জাদ একটি গাজরা কিনে নিলো।
কেনো কিনলেন? (আদ্রিতা)
কেনো শুনো নি? মেয়েটি বললো আমার বউকে কিনে দিতে তাই। (সাজ্জাদ)
আমি কি আপনার আদ্রিতা আর কিছু বললো না।
আমি কি একবার ও বলেছি যে আমি তোমার জন্য কিনেছি? (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা আর কিছু বললো না।
*******
সামিরা তার বেস্ট ফ্রেন্ডকে কল দিয়ে সব কথা খুলে বললো। সামিরার বেস্ট ফ্রেন্ড বললো তুই পাগল হয়ে গেছিছ?, তোর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে আর এখন কিভাবে সম্ভব?
সামিরা বললো, জানিনা এই #অজানা_অনুভূতির মানে আমি খুঁজে পাচ্ছি না।
*******
স্বাধীন ঢাকার বাইরে আছে কিন্তু তার মনটা পরে আছে অসময়ী বৃষ্টির জন্য। সাজ্জাদ নিজে ত নিজের বউের সাথে সময় কাটানোর জন্য আমাকে একা ঢাকার বাইরে পাঠিয়ে দিলো আর আমি ও চলে আসলাম। আমার অসময়ী বৃষ্টি কেমন আছে? স্বাধীনের কাজে মন টিকছে না।
******
দুপুর হয়েছে সামনে রেস্টুরেন্ট আছে চলো লান্স করে নেই। (সাজ্জাদ)
সাজ্জাদের কথা শুনে আদ্রিতা কি বলবে বুঝতে পারছে না। কারন আদ্রিতার কাছে পর্যাপ্ত পরিমানে টাকা নেই।
আমি বাসায় গিযে লান্স করে নিবো। (আদ্রিতা)
সন্ধ্যা পর্যন্ত কি না খেয়ে থাকবে নাকি? চুপচাপ খেতে চলো।
আদ্রিতা শান্ত গলায় বললো,আমার কাছে রেস্টুরেন্টে খাওয়ার মতো টাকা নেই।
আমার কাছে কি তোমার টাকার হিসেব দিতে হবে? আমি জানতে চেয়েছি নাকি টাকার কথা? যেতে বলেছি চলো। (সাজ্জাদ)
আদ্রিতা সাজ্জাদের কথা অনুযায়ী সাজ্জাদের সাথে গেলো।
সাজ্জাদ আর আদ্রিতা রেস্টুরেন্টে বসে আছে। হঠাৎ একটি মেয়ে এসে সাজ্জাদকে জড়িয়ে ধরলো। সাজ্জাদ বলে উঠলো মিম।
#চলবে
[ সাজ্জাদের কাছে বন্দুক কেন থাকে? আজকের পর্বটা একটু রোমান্টিক করার চেষ্টা করেছি 🫣
এই মিম মেয়েটাকে আমার সামনে আমার সাজ্জাদকে জড়িয়ে ধরলো 😤 ]