গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৩৩

গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৩৩
#নুসরাত_জাহান_অংকুর

অনি: কি শুনলি তুই ?
রেহান : পরে বলছি আগে চল

রেহান গাড়ি চালিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যায়। দুইজন গাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখি মিহাদ দাড়িয়ে আছে ।

মীহাদ : তাহলে এতক্ষণে আসার টাইম হলো
রেহান : কি অবস্থা ?
মিহাদ: চিৎকার করে তো মাথা শেষ করে দিলো
রেহান : চল

রেহান অনি আর মিহাদ ভিতরে গিয়ে একটা অন্ধকার রুমে ঢুকলো । এখনো চিৎকারের আওয়াজ আসছে

রেহান : এত চিৎকার কেনো করছিস অন্যকে কষ্ট দেওয়ার আগে মনে থাকে না

লোকটা কাপা কাপা ঠোঁটে বলে

লোকটা : কে আপনি আমাকে এখানে কেনো আনছেন ছেড়ে দিন
রেহান : ছেড়ে দেবো তবে আমাদের কিছু প্রশ্নের উত্তর দে তাহলে ছাড়বো
রাইহান: কি প্রশ্ন ?
রেহান: রিহা তুলে নিয়ে যেতে চাইছিলি কেনো ?
রাইহান : রিহা অসুস্থ হয়ে পড়েছিল তাই বাসায় পৌঁছে দিতে চাইছিলাম

অনি লবণ নিয়ে কাটা জায়গায় ছিটিয়ে দেয় আর রাইহান ব্যাথায় কুকড়ে উঠে ।

রেহান : ভালোভাবে বলে দে তাহলে আর এত কষ্ট পেতে হবে না
রাইহান : আমি সত্যি জানি না আমাকে শুধু ওকে তুলে নিয়ে যেতে বলেছিল
রেহান : কে বলেছিল ?
রাইহান : অন্তরা
রেহান : কিসের জন্য কিছু জানিস ?
রাইহান : না রিহা কে আমি লাইক করতাম কিন্তু ও married জানার পর ওর থেকে দূরে সরে আসি অন্তরা আমাকে বলে ও আপনার সাথে সুখী না আমি যেনো ওকে উদ্ধার করি আমি রাজি হয়নি কিন্তু অন্তরা আম্মু আমাকে বলে যে রিহাকে আপনার কাছ থেকে বাঁচাতে তার জন্য ওকে সবার কাছে খারাপ বানাতে হবে পরে আপনি ডিভোর্স দিলে ওকে নিয়ে অনেক দূরে চলে যেতে আর অন্তার সাথে আপনার বিয়ে হবে বিশ্বাস করুন আমি খারাপ ভেবে কোনো কিছু করিনি (ব্যাথায় কুকড়ে)

রেহান অনিকে ইশারা করে ডক্টর ডাকতে বলে। অনি রেহান এর ইশারা অনুযায়ী ডক্টর এনে রাইহান কে অন্য রুমে নিয়ে যায়।

মিহাদ : মানুষ এত টা খারাপ কি করে হতে পারে আমার ভাবতে ও ঘৃণা লাগছে ছি তুই রিহা কে এখান থেকে নিয়ে যা
রেহান : এত সহজে না যারা আমার রিহা কে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে চাইছিল তাদের তো এর শাস্তি পেতেই হবে ওদের শাস্তি রেহান দেবে না #গ্যাংস্টার_রেহান দেবে
মিহাদ : তুই কি করতে চাইছিস বল তো
রেহান : তেমন কিছু না রহস্যের সমাধান করতে চাইছি (ডেভিল স্মাইল দিয়ে)

অনি এসে বলে
অনির্বাণ : তো কি ঠিক করলি?
রেহান : কি নিয়ে?
অনি : বাসায় কবে যাবি
রেহান : খেলা যখন শুরু হইছে শেষ না করে কি করে হয়
অনি : মানে কি তুই রিহা কে এই বিপদে রাখবি
রেহান : কিসের বিপদ খেলা তো হবে ঢাকায় গিয়ে
অনি : তোর কথা আমার মাথায় ঢুকছে না
রেহান : আমার ও
মিহাদ : যেতে হলে কিন্ত আজ বা কাল যেতে হবে লকডাউন তো জানিস
রেহান : হুম চল এখন বাসায় যেতে হবে রিহা জেগে গেলে আমার খবর শেষ আর রাইহান এর দিকে নজর রাখিস সুস্থ হলে আমায় খবর দিস
মিহাদ : তুই চিন্তা করিস না
অনি : এখন আসি
রেহান : সাবধানে থাকিস
মিহাদ : হুম

রেহান আর অনি বিদায় নিয়ে চলে ।

ওরা বাসায় পৌঁছে যে যার রুমে যায় । রেহান দরজা খুলে দেখে রিহা খাটের উপর বসে আছে।

রেহান : কিহলো তোমার ঘুম ভেংগে গেছে ?
রিহা : আপনি কোথায় গিয়েছিলেন?
রেহান : কোথায় না এই সামনে ছিলাম
রিহা : মিথ্যে কেনো বলেন আপনার গাড়ি ছিল না
রেহান : হুম আমি একটু বাইরে গিয়েছিলাম ঘুম আসছিলো না তো তাই একটু বেড়াতে গিয়েছিলাম সন্ধ্যা থেকে তো অনেক ঘুমালাম
রিহা : একা কেনো গেলেন আমাকে নিলে কি হতো ?
রেহান : তুমি তো ঘুমাচ্ছিলে
রিহা : তাই বলে কি ডাকা যেত না

রেহান বুঝে যায় এখন ওর সাথে কথা বললে নির্ঘাত ঝগড়া বাঁধবে তাই কিছু না বলে শুয়ে পরে।

রিহা : একি আপনি শুয়ে পড়লেন কেনো উঠুন আমি কিছু বলছি তো
রেহান : রিহা ঘুম পাচ্ছে ঘুমাও
রিহা : আর কত ঘুমাবো

রেহান কিছু বলে না রিহা কিছুক্ষণ চুপ থেকে উঠে বাথরুমে যায়। রেহান একবার দেখে আবার শুয়ে পড়ে। রিহা বাথরুম থেকে ওযু করে নামাজ আদায় করে।

রেহান রিহাকে দেখে সে ও তাহাজুতের নামাজ পড়তে বসে।

কিকুক্ষণ পর ফজরের আযান দেয়। দুইজন ফজরের নামাজ আদায় করে।

দুইজন নামাজ শেষ করে একে অপরকে কে দেখে হাসে । রেহান শুয়ে পড়ে আর রিহা ছাদে যায় সূর্য দেখতে

সকাল বেলা ফজরের নামাজ পড়ে বাইরে একটু হাটাহাটি করলে মন টা ফ্রেশ থাকে আর সারাদিন খুব ভালো লাগে।

রিহা কিকুক্ষন হাটাহাটি করে ঘরে যায়। রেহান তো বেঘোরে ঘুমাচ্ছে । রিহা কি মনে করে বাইরে গিয়ে দুই কাপ কফি নিয়ে আসে রেহান কে ডাকতে যাবে তার আগে রুশা আসে।

রুসা: কি করিস ?
রিহা : কিছু না তুই হটাৎ
রুশ : ছাদে চল ও কফি

বলে রিহার হাত থেকে একটা কফির মগ নেয়। আর রিহা কে টানতে টানতে ছাদে নিয়ে যায় ।

রিহা : কিহলো এভাবে টানাটানি করছিস কেন?
রুশ: চুপ কর তো দেখ পরিবেশটা কি সুন্দর।
রিহা : হুম (চারিদিক তাকিয়ে) এখন বল কি বলবি
রুশ : কাল কি হইছিলো ? (কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে)

রিহা কালকের সব ঘটনা খুলে বলে । রুশ তো মাথায় হাত দিয়ে পড়ে

রুশ : এত কিছু হলো আচ্ছা তোর কি মনে হয় এটা ভুল করে
রিহা : একদম না
রুশ : তাহলে এখন কি করবি ?
রিহা : খুঁজতে হবে আসল রহস্য
রুশ : ওকে তো আজ থেকে শুরু করা যাক তার আগে কিছু শাস্তি দিবি না
রিহা : আসল অপরাধী বের করি তারপর না হয় দেখা যাবে কি করা যায় ।
রুশ : ওকে

দুইজন আরো অনেক গল্প করতে লাগলো।

এদিকে
রেহান ঘুমিয়ে আছে আর ওর পাশে অন্তরা বসে রেহান কে দেখছে । অন্তরা আনমনে নিজের হাত রেহান এর মুখে দিতেই রেহান হাত নিয়ে বুকে ধরে। অন্তরা কিছুটা কেপে উঠে।

রেহান চোখ খুলে তাকাতেই লাফিয়ে উঠে অন্তরা ও দূরে সরে যায়।

রেহান : তুমি এখানে (ভ্রু কুচকে)
অন্তরা : না মানে আসলে
রেহান : কি আমতা আমতা করছ (ধমক দিয়ে)
অন্তরা : আম্মু ডাকছিল তো তাই আমি এখন যাই

অন্তরা চলে যেতে গেলে রেহান ডাক দেয়

রেহান : দাড়াও খালামণি এখন ডাকছিল
অন্তরা : হুম

বলে আর না দাড়িয়ে চলে যায়। রেহান ফ্রেশ হয়ে। ওর খালামনির রুমে যায়।

গিয়ে দেখে কেউ নেই রেহান এই সুযোকে পুরো ঘর সার্চ করে। কিন্ত কিছু পায় না শেষে আলমারি খুলতে গেলে লক করা।

রেহান আর না পেরে খাটে বসে থাকে । হটাৎ ওর চোখ যায় সান সেটের উপর রাখা একটা বক্স এর দিকে । দেখে মনে হচ্ছে অনেক পুরনো কিন্ত রোজ পরিষ্কার করা হয়।

রেহান ওটা নামিয়ে খুলতে গেলে লক করা । তালা ভেংগে ফেলে। বক্স টা খুলে দেখে অনেকগুলো ছোট মানুষ এর জামা কাপড় । দেখে বুঝা যাচ্ছে এটা অন্তরার। রেহান দেখে অনেক গুলো ছবি সব অন্তরার ।

রেহান থুয়ে দিতে গেলে দেখে একটা ফ্যামিলি ছবি । রেহান সব দেখে রেখে দেয়।

রেহান বক্সটা নিজের জায়গায় রেখে বেরিয়ে আসতে গেলে দেখে রাইসা খান দরজায় দাড়িয়ে আছে। রেহান কিছুটা অপুস্তু হয়ে যায় ।

রাইসা খান : রেহান তুই এখানে ?

নিজেকে সাভাবিক করে
রেহান : হা খালামণি অন্তরা বললো তুমি ডাকছিল এসে দেখি কেউ নেই wait করছিলাম পরে ভাবলাম বাইরে আছো তাই
রাইসা খান : ওহ আচ্ছা আমি ডাকছিলাম সকাল থেকে তো দেখা করলি না তাই আর কি
রেহান : ঘুমিয়েছিলাম অন্তরা গিয়ে ডেকে আনলো।
রাইসা খান : অন্তরা কিন্ত সেই ছোট বেলার মত আছে আগে ও যেমন তুই বলতে পাগল ছিল এখন ও

রেহান বিনিময়ে মুচকি হাসি দিলো।

রেহান : আচ্ছা আমি এখন যাই
রাইসা খান : আচ্ছা ঠিক আছে

রেহান ওখানে থেকে এসে যেনো হাফ ছেড়ে বাচল।

ঘরে এসে দেখে রিহা নেই

রেহান : কি বেপার সকাল বেলায় কোথায় গেলো রুশার সাথে আছে মনে হয়।

রেহান কাউকে একটা ফোনে করে।

রেহান : হুম একটা কাজ আছে
….
রেহান : একজনের ছবি দিচ্ছি তার সব ডিটেলস আমার চাই
…..
রেহান : তাড়াতাড়ি হয়ে গেলে ভালো হয়

রেহান ফোনে কেটে একটা ডেভিল স্মাইল দেয় । ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করতে বসে

এদিকে
রুশ আর রিহা রাইসা খান এর ঘরে উকি মারে। রাইসা খান বসে আছে ।

ওরা কিছুক্ষণ উকি মারে।

রুশ : এভাবে উকি মেরে কিছু হবে না ওই বুড়ি বের হবে না
রিহা : তো এখন কি করবো
রুশ : চল আগে খেয়ে আসি

রিহা আর একটু উকি মেরে রুশ এর সাথে যায়।

খাবার সময় সবাই বসে খাচ্ছে ।

রেহান : আমি একটা কথা বলতে চাই
রাইসা খান : হা বল কি বলবি
রেহান : আমাদের ফিরে যেতে হবে অনেক দিন তো আসলাম আর ওই দিকটা ও সামলাতে হবে
মাইশা চৌধুরী : আমি ও তাই ভাবছিলাম অনেক দিন তো হলো

রিহা চিৎকার দিয়ে উঠে।

রিহা : নাআআ

সবাই ভ্রু কুচকে তাকায়।

রেহান : কি হলো এভাবে চিৎকার দিলে কেনো?
রিহা : না মানে বলছিলাম কি আর কিছু দিন

রিহার শেষ করার আগেই বলে

অন্তরা : আমি ও রিহার কথায় রাজি
রুশ : হুম এটাই ভালো হবে

রেহান : আমি একবার বলেছি তো বলেছি

কথাটা বলে রেহান উঠে যায় ।
রুশ : এখানে কি করছিস যা ওকে বুঝা

রিহা আর কথা না বাড়িয়ে রুমে যায়। রুমে গিয়ে কিছু বলার আগেই রেহান বলে

রেহান : আমি এই নিয়ে কথা বলতে চাইছি না গুছিয়ে নাও

রিহা বলতে যাবে তার আগেই রাইসা খান আসে।

রাইসা খান : রেহান আমি বলছিলাম কি
রেহান : খালামণি আমাদের যাওয়া দরকার
রাইসা খান : এতদিন পর তোমার সাথে দেখা আর এখন চলে যাবে
রিহা : চলে গেলে তো সব খেলা শেষ (আনমনে)

রেহান আর রাইসা খান ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে ।

রেহান : কি বললে?

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here