গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৩৫

#গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৩৫
#নুসরাত_জাহান_অংকুর

রেহান ঠিকানা অনুযায়ী যায় । বাড়ির ভিতরে গিয়ে দেখে আফজাল সাহেব আর একটা লোক বসে আছে ।

আফজাল : আর রেহান ভিতরে আসো
রেহান : আসসালামুয়ালাইকুম
আফজাল : ওয়ালাকুমসালাম রিহা কে নিতে আসছ?
রেহান : না মানে আসলে
আফজাল : মেয়েটা আমাকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হয় তাই খবর পাওয়া সাথে সাথেই তোমাদের না জানিয়ে চলে আসছে উপরের ডানদিকে রুমে আছে

রেহান নিশ্চিত হলো যে রিহা ওদের কিছু বলেনি।

রেহান : আচ্ছা ঠিক আছে আমি আসছি

রেহান তাড়াতাড়ি উপরে যায় গিয়ে দেখে রিহা উবুর হয়ে শুয়ে আছে । রেহান একটা নিশ্বাস নিয়ে রিহাকে ডাকে

রেহান : রিহা

রিহা পিছনে তাকাতেই দেখে রেহান । লাফ মেরে উঠে বসে

রিহা : আপনি এখানে কেনো আপনাকে এখানের অ্যাড্রেস কে দিছে

রেহান কিছু বলছে না শুধু রিহার দিকে তাকিয়ে আছে ।

রিহা : কিহলো ওভাবে কি দেখছেন আপনি চলে যান আমি আব্বুর সাথে থাকবো
রেহান : খুব সাহস বেড়েছে তোমার তাই না আমাকে রেখে কোথাও যেতে পারবে না এতদিন কিছু বলিনি বলে অনেক সাহস বেড়েছে তোমার তাই না
রিহা : আমার সাহস বরাবরই বেশি আপনি জানেন না আর আপনাকে ও এতদিন কিছু বলিনি বলে অনেক অধিকার দেখাচ্ছেন কি ভেবেছেন কি জোর করে বিয়ে করবেন জোর করে সংসার করাবেন আর আমি চুপ করে থাকবো না কখনই না এই সম্পর্কের কোনো মানে নেই তাই এটার ইতি টানতে চাই (অন্য দিকে ফিরে)

রেহান কিছু না বলে ওই ভাবেই দাড়িয়ে আছে

রিহা : কিহলো আমি কিছু বলছি
রেহান : শুনছি তো (কলার ঝাড়া দিয়ে)
রিহা : শুনছি মানে
রেহান : তোমার কি বলা শেষ তাহলে এখন বাড়ি যেতে পারি

রিহা তো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো

রিহা : হা হা বাড়ি তো যাবেন আপনার প্রাণের অন্তরা আছে তো যান যান
রেহান : ড্রামা কি শেষ তাহলে এখন চলো
রিহা : কোথাও যাবো না আমি
রেহান : বিয়ের দিনের কথা তোমার মনে আছে ওটা কি আবার রিপিট করতে হবে
রিহা : আমার উপর কেনো এত অধিকার যান তো ওর কাছে
রেহান : যাবো তো তুমি তো আমায় ভালোবাসো না কিন্ত অন্তরা আমাকে কত ভালবাসে (রিহাকে খেপাতে )
রিহা : সেটাই তো
রেহান : এখন ঘরে না পেলে তো বাইরে যেতেই হবে । তুমি তো আর আমাকে ভালোবাসো না তো কি করার

রিহা কিছু বলে না শুধু মাথা নিচু করে দাড়িয়ে থাকে । রেহান রিহার দিকে তাকিয়ে থাকে রেহান পিছনে ফিরতেই রিহা বলা শুরু করে

রিহা : আমি খুব সেলফিশ । সারাদিন লাফিয়ে বেড়াই অনেক দুষ্ট বড়দের সম্মান করতে পারিনা মুখে যা আসে তাই বলি অন্তরার আপুর মতো ভালো ভালো রান্না করতে পারি না কিন্ত খাওয়া যায় তেমন রান্না করতে পারি অন্তরা আপুর মতো শান্ত না অন্তরা আপুর মতো ওতো ভালো না আমি তাও কি আমাকে মেনে নেওয়া যায় না আপনার যেমন মামনি ছাড়া কেউ নেই তেমনি আমার ও আব্বু আর আপনি আর মামনি ছাড়া কেউ নেই । জানিনা এই কই দিন কি হইছে তবে আপনার কথা ভাবতে আমার ভালো লাগে কাউকে সহ্য করতে পারি না আপনার পাশে ,কি করে পারবো যেখানে আমার চকলেট কাউকে দিতে চাইনা না সেখানে আপনাকে কি করে দেবো পারবো না কিছুতেই না মরে যাবো তাও না

রেহান রিহাকে ভালো করে দেখে চোখে পানি টলমল করছে নাক এর গুঁড়া লাল হয়ে আছে । ঠোঁট ও লাল । রিহাকে এভাবে দেখতে রেহান এর বুক ফেটে যাচ্ছে । রিহা আবার বলতে শুরু করলো

রিহা : যখন আপনি অন্তরা আপুর পছন্দের শার্ট পড়েছেন তখন আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছিল মনে হচ্ছিল এই দুনিয়ায় আমি সব থেকে ও সুখী আমার মত অভাগা কেউ নেই । যদি বলেন এই অনুভুতির নাম ভালোবাসা তাহলে তাই হা ভালোবাসি আপনাকে i love you রেহান

রেহান এর দিকে তাকিয়ে । রেহান তো স্তব্ধ হয়ে গেছে ওর ছোট্ট পরী আজ ওকে ভালোবাসার কথা বলছে রেহান এর কাছে সময় টা থেমে গেলে ভালো হতো। রিহা রেহান এর দিকে তাকিয়ে আছে উত্তর এর আশায় ।

রেহান এর কোনো রেসপন্স না পেয়ে রিহা পিছনে ঘুরতেই রেহান রিহাকে জড়িয়ে ধরে।

রেহান : i love u too little princess তুমি ছাড়া আমি আর কাউকে কখনো ভালোবাসতে পারিনা তুমি আসার আগে ও আমি তোমাকে ভালবাসতাম আর এখন ও বাসি। আমার শান্ত মেয়ে চাইনা না আমার তোমাকে ভালো লাগে । যে sad স্টোরি পড়ে কেঁদে দেয়। যার কথায় তেজ থাকে আর যে সবসময় বাড়িটা মাতিয়ে রাখবে খুব ভালোবাসি তোমায় খুব । এই মুহূর্ত আমার জীবনের সব থেকে বড় মুহূর্ত সেই কবে থেকে অপেক্ষা করেছি তোমার মুখে এই কথা শুনার জন্য । তোমাকে ছাড়া এক মুহুর্ত অনেক কষ্টকর

রিহা ও রেহান কে জড়িয়ে ধরে ।

রিহা : আমাকে কখনো ছেড়ে যাবেন না তো
রেহান : আমার শরীরে এক ফুটা রক্ত থাকা অবস্থায় তোমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবতে পারি না । পাগলী একটা এই অনুভূতি বুঝতে এত সময় লাগে
রিহা : হা লাগে আমি যেমন তেমন থাকবো আর সেই ভাবে আপনাকে মেনে নিতে হবে
রেহান : না নিলে কি করবে ভালোবাসা না দেওয়ার কেস করবে
রিহা : হা তাই করবো
রেহান : একটু আগে না কত কি বললে এখন আবার হুমকি
রিহা : ওটা তো ফিল্ম থেকে শিখেছি

রেহান হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না । কপালে হাত দিয়ে বলে

রেহান : হায় কপাল আমার বউ যে পুরাই ফিল্ম খর
রিহা : হু এখন চলুন বাসায় যাবেন না
রেহান : আর একটু আজ প্রথম তুমি নিজে থেকে ভালোবাসার কথা বললে
রিহা : কেনো অন্তরা আপু বুঝি বলে না
রেহান : ধুর
রিহা : এখন চলুন

রিহা রেহানকে টানতে টানতে নিচে নিয়ে আসে।

আফজাল সাহেব : কি রে মা এখন কি বের হবি তোরা
রেহান : হা আব্বু এখন যেতে হবে

রিহা আফজাল সাহেব এর কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।

রিহা : i miss u so much
আফজাল : i miss u too সাবধানে থাকবে কেমন আর মাইসার সাথে সাথে থাকবে
রিহা : হুম তুমি কবে আসবে আমরা সবাই এক সাথে থাকবো
আফজাল সাহেব : আসবো খুব তাড়াতাড়ি

আফজাল সাহেব মেয়ের কপালে ভালোবাসা দিয়ে রেহান এর কাছে যায়

আফজাল : আমি জানি রিহার কোনো ক্ষতি তুমি হতে দিবে না নিজের থেকে ও বেশি বিশ্বাস করি তোমায়
রেহান : সেই বিশ্বাস রাখার দায়িত্ব আমার
আফজাল : জানি তো পারবে দোয়া করি যেই কাজে নেমেছে সেই কাজে যেনো সফল হতে পারো

রেহান আফজাল সাহেব কে সালাম করে । বিদায় নিল।

গাড়িতে রিহা চুপচাপ বসে আছে। হটাৎ রিহার মাথায় কি আসল কে জানে

রিহা : রেহান অন্তরা আপু ভালো না আমি বেশি ভালো ?
রেহান : তুমি আবার শুরু করলে
রিহা : কি করলাম বলুন না
রেহান : আমার রিহার সাথে কারোর তুলনা হয় না আর যে আমার কলিজা কে মারতে চাইছে তাকে তো শেষ করে দিতে চাই
রিহা : মানে
রেহান : বাসায় চলে আসছি

রিহা সামনে তাকিয়ে দেখে তাই । রেহান কে রেখেই রিহা ভিতরে যায় । মাইশা চৌধুরী কে জড়িয়ে ধরে

রিহা : i miss u
মাইশা চৌধুরী : বাবা তাহলে মনে পড়লো আমি ভাবছি বাবকে পেয়েছে এই বুড়ির কথা কি মনে থাকে
রিহা : আর ধুর মনে থাকবে না কেনো তাই তো চলে আসলাম
মাইশা চৌধুরী : হুম টা ভাইজান কবে আসবে
রিহা : বললো তো তাড়াতাড়ি আসবে । এখন খেতে দাও খুদা লাগছে
মাইশা চৌধুরী : ফ্রেশ হয়ে আয় আমি দিচ্ছি
রিহা : ওকে

রিহা ফ্রেশ হতে যায় তখন গিয়ে দেখে অন্তরা ওর রুমে এটা সেটা দেখছে ।

রিহা : তুমি এখানে কি করছ আপু

অন্তরা তো লাফিয়ে উঠে

রিহা : কিহলো ভয় পেলে নাকি আমার রুমে কি করছ
অন্তরা : না মানে দেখছিলাম আর তুমি এত তাড়াতাড়ি আসলে কেনো

রেহান : রিহা কি থেকে গেলে তোমার ভালো হতো (দরজায় দাড়িয়ে)

অন্তরা আমতা আমতা করে বলে
অন্তরা : না মানে আমি সেটা বলিনি আমি আসছি পরে কথা হবে

কাউকে কিছু বলতে না দিয়ে অন্তরা চলে যায় ।

রিহা : এড়িয়ে গেলো
রেহান : বাদ দাও তো যাও ফ্রেশ হয়ে আসো
রিহা : ওকে

রিহা ফ্রেশ হতেই রেহান ফ্রেশ হতে যায় ।

রিহা রেহানকে রেখেই নিচে গিয়ে টেবিলে বসে থাকে । রেহান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে রিহা না

রেহান : এই মেয়ে একটু দাড়ালে কি হতো বাসায় এসে আমার কোনো পাত্তা নেই

রেহান নিচে গিয়ে রিহার পাশে বসে।

রেহান : ঐই আমার জন্য একটু wait করলে কি হতো
রিহা : আমার খুদা লাগছিল তো আর আপনি কি বাচ্চা যে কোলে করে নিয়ে আসতে পারে
রেহান : আজ দেখব কত খেতে পারো

রিহা ভেংচি কাটে

অন্তরা : এই তোমরা কি ফিসফিস করছো ?
রিহা : সব কথা সবাই কে শুনতে নেই

অন্তরা আর কিছু বলে না মাইশা চৌধুরী খাবার নিয়ে আসলে । রেহান অনেকগুলো খাবার রিহার পেলেতে দিতে থাকে । রিহা অবাক হয়ে দেখছে

রিহা : আপনি কি করছেন ?
রেহান : কেনো তোমরা না খুদা লাগছে আজ সব খাবে
রিহা : ওই আমাকে কি আপনার মত রাক্ষস পাইছেন এত আমি খেতে পারি
রেহান : আমি রাক্ষস আর তুমি কি পাটকাঠি ফু দিলে উড়ে যাবে

(এই ডায়লগ আমি বেশি শুনি 😑)

রিহা : ওলে বাবা হাত আইছে মামনি তোমাদের সব সম্পত্তি তো উনি খেয়ে শেষ করছে তাই না
রেহান : আমি তো খাবার খাই তুমি ত মানুষের মাথা খাও (হাসতে হাসতে)
রিহা : কি আমি মাথা খাই

বলে চিকেনের একটা লেগ পিচ রেহান এর মুখে ঢুকিয়ে দেয়

মাইশা চৌধুরী : এই তোরা থামবি
রিহা : মামনি তোমার ছেলে কে সরাও নাহলে কাউকে খেতে দেবে না রাক্ষস একটা
রেহান : আম্মু আজ মনে হয় ঝর উঠবে রিহাকে বেধে রাখো নাহলে উড়ে যেতে পারে

রেহান এর কথায় সবাই হেসে দেয়।

মাইশা চৌধুরী : রেহান চুপচাপ খাও

রিহা রেহান এর পায়ে একটা লাথি মারে ।

খাওয়া মাঝে হটাৎ রিহা বলে উঠে

রিহা : আচ্ছা অন্তরা আপু আপনার আর রেহান এর বয়স তো এক তাই না
অন্তরা : হুম
রিহা : তাহলে আপনি বিয়ে করছেন না কেনো ? মেয়েদের তো আগে আগে বিয়ে হয়
রাইসা খান : আমার মেয়ের বিয়ে নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না
রিহা : কেনো আপুর উনার কি শারীরিক প্রবলেম আছে

রিহার কথায় রুশ হ্ন হ্ন হ্ন করে হেসে দেয়। বাকিরা ও মুচকি হাসছে ।

রাইসা : এই মেয়ে তোমার কি মাথা গেছে কি বলছো আমার মেয়ের বিয়ে আমি দেখবো
রিহা : দেখেন কিন্ত পরে যেনো খুব দেরি না হয়

কথাটা বলে রিহা উঠে আসে। রিহার পাশাপাশি রেহান ও উঠে যায়।

ঘরে গিয়ে দেখে রিহা শুয়ে আছে ।

রেহান : শুয়ে পড়লে যে
রিহা : তো কি সবাই কে দাওয়াত দিয়ে শুয়ে শুয়ে থাকবো ঘুম আসছে
রেহান : আচ্ছা ঘুমাও

রিহার পাশে রেহান ও শুয়ে পড়ে। রিহা রেহান এর বুকে মাথা দিয়ে ঘুমের দেশে চলে যায়।

সকলে সূর্যের আলো চোখে পড়তেই রিহার ঘুম ভেংগে যায় । পাশে রেহানকে না দেখতে পেয়ে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে যায় ।

রেহান রিহাকে দেখে ডাক দেয় । রিহা তো রেগে ফায়ার । আজ রেহান এর মাথা ফাটিয়ে ছাড়বে ।

রিহা : দাড়ান দেখাচ্ছি

বলে রেহান এর পিছনে ছুটতে লাগলো। সারা বাড়ি দুইজন ছুটছে । সবাই ওদের দেখে হাসছে মাইশা চৌধুরী কে দেখে রেহান মাইশা চৌধুরী পিছনে যায় ।

রেহান : আম্মু দেখ তোমার পাগলী খেপছে
রিহা : মামনি দেখ আমাকে কি সব বলছে
মাইশা চৌধুরী : রেহান ওকে কি ব লছিস
রেহান : কিছু না তো

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here