#খুনশুটি_ভালোবাসার💞❤️💞
#Nishi_khatun (Angel_Frozen)
#part:_06
আরিয়ান চলে যাবার পর স্নেহা নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে!আজ আমার হিরোর কি হলো?এভাবে হুট করে চলে গেলো?আপুর বিয়ের খবর শুনে আমার এমন বোকামি টাইপের কথা শুনে কি সে রাগ করছে?রাগ করলেই বা আমার কী হুহ।
অনু নিজের রুমে এসে সব কিছু উল্টাপাল্টা করতে থাকে।স্নেহা রুমে এসে অনুকে এমন কাজ করতে দেখে চিৎকার করে নিজের বাড়ির সবাই কে তাদের রুমে ডাক দেয়।
অনুর বাবা-মা আবির সাবাই এসে তো অনুর এমন কাজ দেখে আবাক।
অনুর বাবা বলে,”অনু তুমি কী এখনো ছোট বাচ্চা আছো?যে বাচ্চাদের মতো ভালতু ব্যবহার করছো?”
অনুর মা বলে,”এই সব কিছু হয়েছে তোমার অতিরিক্ত আদরের কারণে!এবার তুমি দেখো তোমার মেয়ের এমন ভালতু কাজ।”
অনু তার বাবার সামনা সামনি দাঁড়িয়ে বল,”বাবা হুট করে কেউ বিয়ের প্রপোজাল আনলে তাকে হ্যা করে দিতে হবে?একটু কী আমার মতামত নেওয়ার আগ্রহ হলো না তোমাদের?”
অনুর বাবা :- তোমার কী অন্য কারো সাথে সম্পর্ক আছে?অথবা অন্য কাউকে পছন্দ করো?
অনু বলে,”বাবা আমার এমন কোনে কিছুই নেই।”
অনুর বাবা :-এসবের কোনো কিছুই যখন নেই!তখন এ বিয়েতে তোমার সমস্যা কোথায়? আর হ্যা একটা কথা আমরা তোমার বাবা-মা! আমরা যা সিদ্ধান্ত নিবো তা তোমার ভালোর জন্য নিবো।
অনু :-তাই বলে বিয়ের মতো একটা সম্পর্কে বেঁধে দেওয়ার আগে একটি বার আমার মতামত জানতে চাইবে না?
অনুর মা অনুকে থাপ্পড় দিয়ে বলে,”বেয়াদব মেয়ে বাবার মুখে মুখে তর্ক করো?এই শিক্ষায় বড় করছি এতোদিন? ”
অনু অশ্রুসিক্ত নয়নে সবার দিকে তাকিয়ে থাকে।
অনুর বাবা বলে,”ভেবেছিলাম কিছুদিন পর তাদের আমাদের মতামত জানাবো!তবে তোমার এমন ভালতু ব্যবহারের কারণে আজকেই তাদের আমার মতামত জানিয়ে দিবো।দেখি তুমি কি করে আটকাও এই বিয়েটা!”
বলেই অনুর বাবা অনুর রুমের বাহিরে চলে যায়।
আবির বলে,”তোর বেশি পাকনামির জন্য নিজের গর্তে তুই নিজেই পড়িস। তোকে কে বাঁচাবে।ভেবেছিলাম বাবার সাথে কথা বলবো।কিন্তু না তোর মাঝে তো কোনো ধৈর্যের নমুনা নেই।”
অনু কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।কেনো আমার সাথে হঠাৎ করে এমন ব্যবহার করছে সবাই?আমি কী এমন ভুল করেছি?কোনো মেয়ের পরিবার যদি এমন কাজ করে।তাহলে কি সেই মেয়েটার একটু রাগ করার ও অধিকার নেই?না কি আমি মেয়ে বলে আমার কোনো স্বাধীনতা নেই।না তারা আমার বাবা-মা বলে সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধু তাদের?
অনু অনেকটা সময় নিজের রুমের বসে বসে বিলাপ করতে থাকে।
স্নেহাও বোনকে শান্তনা না দিয়ে পাশের রুমে গিয়ে ফোনে বান্ধবী দের সাথে আড্ডা দিতে থাকে।
অনুর ফোনে আরিয়ান কল দেয়।অনু একরাশ মনের মাঝে কষ্ট নিয়ে আরিয়ানের কলটা রিসিভ করে।
আরিয়ান :-জানো বেদনাগ্রস্ত মনের কোনো মলম নেই আমার কাছে।যদি থাকতো তাহলে তোমাকে সেই মলম টা দিয়ে আসতাম।
অনু :- আমার জন্য এতো দরদ উতলে পড়ছে কেনো আপনার?
আরিয়ান :- কারণ যার সাথে শয়তানি করে মজা নিতে পারি।সে যদি কষ্টভোগ করে তাহলে আমার কী ভালো লাগতে পারে বলো?
অনু :- সবাই নিজের স্বার্থের জন্য আমাকে ব্যবহার করছেন। আমি কি টিসু? যে যার যখন ইচ্ছা ব্যবহার করে ফেলে দিবেন।
আরিয়ান বলে,”তুমি নিজের কবর নিজে খুঁড়েছ। তাতে আমার কী?সময় হলে যাবো তোমার কবরে একমুঠো মাটি দিয়ে আসতে।”
অনু :- আমাকে কবরে পাঠানোর চিন্তাও কমপ্লিট আপনার?কী মনে করছেন! বাবা-মা উপর রাগ করে আমি আত্মহত্যা করবো?জীবনেও না!আমি কেনো মরতে যাবো?মরলে মরুক ইবলিশ শয়তান। আমি রাগের বসে আত্মহত্যা করে জাহান্নামি হতে রাজী নাই।এই রাখেন তো ফোন।
আরিয়ান ফোনের লাইন টা কেটে দিয়ে নিজের বিছানার উপর হাসিতে গড়াগড়ি খেতে থাকে।এই অনুটাও না একদম বোকা।বুঝতেও পারলো না ওর মন ভালো করার জন্য আমি একটু উল্টাপাল্টা কথা বলেছি।গাধীর তো সব সময় আমার কথার মানে না বুঝে খুনশুটি তে মেতে ওঠে।যাক তাতেই ভালো।
“একটু খুনশুটি যদি মেয়েটার মন-খারাপ কম মেডিসিনের কাজ করে তাহলে এই খুনশুটি ভালো।”
অনু ফোনটা রেখে বলে,”এই একটা লোক আমার সব থেকে বড় শত্রু। আমার খারাপ দিনটাও ঝগড়াটে করে দিবে।আবার আমার ভালো খুশির দিনেও খুনশুটি পাকিয়ে নিয়ে বসে থাকবে।মাঝে মাঝে মন ডা বলে আরিয়ান ভাইরে খুন করে গুম করে দেই।কিন্তু এই সব খুনখারাপি করলে সারাজীবন জেলখানাতে বন্ধী থাকতে হবে।
আবির ভাবতে থাকে অনু কি কোনো দিন ও বড়দের মতামত কে সম্মান দিবে না?ছোট থেকে একটু আলাদা তবে মনটা ভালো।মাঝে মাঝে এমন কিছু কাজ করে যা কেউ সহজে হজম করতে পারে না।
ইরাদ বাড়িতে গিয়ে ভাবতে থাকে।প্রথম কাজটা কমপ্লিট। বেয়াদব মেয়েটা কে আমি আমার খাঁচায় সারাজীবন বন্দী করে রাখার ব্যবস্থা করেছি।এবার শুধ শুভ পরিণামের অপেক্ষা।দেখি কে বাঁচাইয়া লইয়া যায় আমার ময়নাপাখিরে।
কিছু সময় সুন্দরিদের বন্দী করে রাখাতেও মজা আছে।আমার সাথে পাঙ্গা নিয়েছিল। তার জন্য কিছুই বলি নাই।তবে ছেড়ে দিবো এমন কথাও কখনো বলি নাই।
তাসনিয়া ভাবছে,যাক অবশেষে আমাদের বাড়িতে তাহলে বিয়ের শানাই বাজবে।আহা কী মজা আকাশে বাতাসে।আমার ভাইয়ের বিয়ে বলে কথা।আহা কী মজা।পার্লারে যাবো প্রেত্নী সাজ দিতে।ভাইয়ের বিয়ের সময় সাজার শখ পূরণ হবে।
এভাবে মনোমালিন্যের মাঝে বেশ কিছুদিন কেটে যায়।
এই ঘটনার কিছুদিন পর এক রাতে হঠাৎ করে কেনো জানি অনু প্রচুর পরিমাণে কান্না করতে থাকে।নিজের বাড়িটা তার কাছে জেলখানা মনে হচ্ছিল।
(গঠনমূলক মন্তব্য আশা করবো)
‘
‘
‘
চলবে….