খুনশুটি_ভালোবাসার পর্ব ১০

0
1918

#খুনশুটি_ভালোবাসার💞❤️💞
#Nishi_khatun (Angel_Frozen)
#part:_10

আজ অনুর বিয়ে!
অনু বউয়ের সাজে নিজেকে সজ্জিত করছে এটা ভাবাটা আপনাদের ভুল হবে।অনু বউয়ের সাজে নিজেকে সাজাবে না বলে জিদ ধরে।তবে পরিবারের চাপের সামনে নিজের জিদ বজায় রাখতে পারে না।লাল টকটকে বিয়ের বেনারসি শাড়িটা শুধু কোনে রকম পড়ে।না আছে বিয়ের কোনো সাজ না আছে গায়ে কোনো গহনাগাঁটি।অনুর চোখেরজল গড়িয়ে পুরো মুখটা কালো হয়ে যায়।

স্নেহা নিজের বোনের এমন অবস্থা দেখে অনেক কষ্ট পাচ্ছে।

স্নেহা আরিয়ানের কাছে গিয়ে বলে,”ভাইয়া একটা কথা বলেন তো! সব সময় মেয়েদের জোড় করে কেনো বিয়ে দেওয়া হয়?”

আরিয়ান নিরবতা পালন করে।

অনুর বিয়ে তাই ওদের বাড়িতে কাছের অনেক আত্মীয়া এসেছে।এদিকে বিয়ে বাড়িতে নানারকম কাজে সবাই ব্যস্ত।

এদিকে আজ আরিয়ানের সামনে তার প্রাক্তন প্রেমিকা দাঁড়িয়ে আছে।হ্যা আরিয়ান একজন কে খুব পরিমাণে ভালোবাসতো। তার সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়েটাও ঠিক হয়েছিল। সে বিয়ের কথা তার বন্ধু মহলের কেউ জানে না।কারণ তখন আরিয়ান আর আনিসার বয়স কম ছিলো।তবে ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস আজ সেই মেয়েটা তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।পাঁচ বছর আগে অনু যেই মেয়েটার বিয়ে ভাঙ্গতে সাহায্য করেছিল সেই মেয়েটা আনিসা।আনিসা অনুর চাচাত বোনের মামাতো বোন।সেই সূএে অদের সম্পর্ক টা অনেক ভালো।তবে সেদিন আনিসা আরিয়ানের ভালোবাসাকে দূরে ঠেলে দিয়েছিল। তার জন্য আরিয়ান কখনো কিন্তু আনিসার কাছে প্রতিশোধ নিতে যায়নি।

আরিয়ান বিশ্বাস করে ভালোবাসার মানে সম্মান করা।ভালোবাসার মানুষটা দূরে থাকলেও তাকে দূরে থেকে ভালোবাসা যায়।

স্নেহা আরিয়ান কে দেখিয়ে বলে,”আনিসাপু উনি হচ্ছেন আমার হিরো!আরিয়ান ভাইয়া।”

আনিসা বলে,”কেমন আছেন আরিয়ান ভাইয়া?”

আনিসার মুখে ভাইয়া ডাক শুনে আরিয়ানের কলিজার মাঝে ব্যাথায় মোচড় দিয়ে ওঠে।
বুকের মাঝে চাপা কষ্ট আর সহ্য হচ্ছিল না।

আরিয়ান বহু কষ্টে ঠোঁটের কোণায় মলিন হাসির রেখা একেঁ বলে,”আলহামদুলিল্লাহ আপু!আপনি?”

আনিসা বলে, ”জ্বি ভালো!সারাবছর অনু আর স্নেহার মুখে আপনার নামে নানারকম কথা শুনেছি।আজ আপনার সাথে দেখা হয়ে খুব ভালো লাগছে।”

আরিয়ান চুপচাপ….

স্নেহা ওদের দু জনকে কথা বলতে দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।

আনিশা হঠাৎ করে আরিয়ান কে বলে,”এখনো ভালোবাসো আমাকে?”

আরিয়ান ভ্রু কুঁচকে বলে,”তোমার কি মনে হয়?”

আনিসা :-আমার মনের খোঁজখবর তোমার না জানলেও চলবে।যে প্রশ্ন করেছি তার উওর দাও।

আরিয়ান :-যদি বলি হ্যা এখনো ভালোবাসি তোমাকে তাহলে কি করবে?

আনিসা :- ফুলের মালা পড়িয়ে তোমাকে জীবনেও গ্রহণ করবো না।তাই তুমি ভালোবালেও আমার কিছু না।

আরিয়ান একটা তাচ্ছল্যের হাসি দিয়ে বলে,”তুমি আমার প্রাক্তন! আর আমি প্রাক্তন কে কখনো বর্তমান বানাবো না।আমার ভবিষ্যৎ হবে অন্য কেউ তুমি সে হবার যোগ্যতা রাখো না।কারণ যে কারো ভালোবাসাকে সম্মান করতে পারে না তাকে জীবনে দ্বিতীয় বার ফিরিয়ে আনার ভুল করবো না।”

আনিসা কিছু বলবে তখন আরিয়ান Excuse me বলে সেখান থেকে চলে যায়।

এদিকে আনিসা রেগেমেগে অনুর কাছে চলে যায়।

অনু আনিসাপু কে জড়িয়ে ধরে চুপচাপ বসে থাকে।আনিসা তখন নিজে থেকে বলে,”আরিয়ান পাঁচ বছর আগেও ভালোবাসার মানে জানতো না এখনো জানে না।”

অনু তখন বলে,”তুমি ভালোবাসার মানে জানো তো আপু?”

আনিসা বলে,”মানে কি বলতে চাইছিস তুই?”

অনু :- আজকে আমার বিয়ে!

আনিসা ;-হ্যা তো কি হয়ছে?প্রতিটা মেয়ে বিয়ে করে পরের বাড়িতে চলে যাবে এটাই স্বাভাবিক।এতে এতো কান্নাকাটির নাটকের কী আছে?”

এবার অনু একটু রেগে গিয়ে বলে,”বাহ দারুণ!তোমার মুখে এমন কথা মানাই না বুঝলে?পাঁচ বছর আগে যদি আমি সেদিন তোমার হয়ে আরিয়ান ভাইয়ার সাথে কথা না বলতাম তাহলে এতো দিনে দশ বাচ্চাদের মা হয়ে যেতে।সেদিন তোমাকে সাহায্যদান করাটা আমার বড় বেশি বোকামি ছিলো।আরিয়ান ভাইয়া ঠিক কথা বলে।সেদিন যদি তার বিয়েটা হয়ে যেতো তাহলে ভালো হতো।পাঁচ বছর আগে ভাইয়াকে কষ্ট দিয়েছি বলে আজ নিজে কষ্ট পাচ্ছি। হ্যা মানুষেরা সঠিক কথা বলে।সময় মানুষকে সব কিছু সুদেআসলে ফিরিয়ে দেয়।সেদিন করা ভুলের মাসুল আজ আমাকে দিতে হচ্ছে।”

আনিসা অনুকে কিছু বলতে যাবে তখন আবির এসে বলে,”আনিসা তাড়াতাড়ি অনুকে রেডি করো,নিচে বরযাত্রী চলে আসছে।একটুপর কাজী সাহেব বিয়ের কাজ শুরু করবে বলে চলে যায়।”

আনিসা অনুকে সাজাতে এগিয়ে যায়।তখন অনু আনিসা কে থামিয়ে দিয়ে বলে,”প্লিজ আমাকে রংচং মাখিয়ে মডেল সাজাতে আসবে না।”

এরপরে আলমারি থেকে একটা ক্রীম কালারের মাঝে গোল্ডেন সুতার কাজ করা শাড়ি বাহির করে লাল বেনারসি টা খুলে ফেলে দিয়ে ক্রীম কালারের শাড়িটা পড়ে নেয়।

আনিসা বলে,”বিয়ের দিন এমন শাড়ি না পড়ে সাদা শাড়ি পড়লেই পারতে।”

অনু কোনো কথার উওর না দিয়ে একটা গোল্ডেন কালারের হিজাপ পড়ে।

আরিয়ান অনুকে বধু সাজে দেখার জন্য ওর রুমে আসে।সেখানে এসে অনুর এমন সাজ দেখে একটু অবাক হয়।এতো হাসিখুশিতে থাকা মেয়েটার চেহারায় আজ বিষণ্ণতার ছাঁপ। সেখানে যে আনিসা আছে সেদিকে কোনো খেয়াল নেই আরিয়ানের।

আরিয়ান অনুর সামনে গিয়ে বলে,”সারাজীবন হাসিখুশিতে থাকবে বুঝলে পাগলি! ”

অনু কেনো জানি আজকে হঠাৎ করে আরিয়ান কে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়।
অনুর এমন কাজে আরিয়ান হচকিত হয়ে যায়।

অনু নিজেই আরিয়ান কে ছেড়ে দিয়ে একটু দূরে সরে এসে বলে,”আপনার সাথে এতোদিন অনেক খারাপ ব্যবহার করেছি তার জন্য মাফ করে দিবেন। আর আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে এই বিয়েতে আর কিছু পাই বা না পাই মনে একটু শান্তি যেনো পাই।বাবা-মার সম্মান যেনো সব সময় রাখতে পারি!”

আরিয়ান কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারে না।খুব ইমোশনাল হয়ে যায়।এইতো সেদিনের কথা আনিসার
সাথে বিয়েটা ভেঙ্গে যাবার পর থেকে অনুর সাথে ফাইজলামি করে এতোগুলো বছর পাড় হয়ে গেছে।মেয়েটাকে কতোই না জ্বালিয়েছি।একটু যদি শান্তিতে থাকতে দিয়েছি।আজ মনে হচ্ছে কেউ কলিজাটা দূরে নিয়ে যাচ্ছে। হ্যা অনু আরিয়ানের হাসির কারণ ছিলো।মন ভালো করার মেডিসিন ছিলো।তবে সব মেডিসিন সারাজীবন কাজ করবে এমন তো নয়।আরিয়ান ইমোশনাল হয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে চলে যায়।

এদিকে অনুকে নিচে বিয়ের আসরে নিয়ে আসে তাসনিয়া, স্নেহা, আনিসা,মৌ এরা সবাই মিলে।
বউয়ের এমন সাজ দেখে অনেকেই রেগেমেগে আগুন। কেউ কেউ তো কটু কথা বলেই দেয় অনুর সামনে।তাতে অনুর কোনে ভ্রূ ক্ষেপ নেই।সে চুপচাপ গিয়ে বউয়ের আসনে বসে পড়ে।

ইরাদ অনুকে এমন সাজে দেখে একটু রেগে যায়।তারপর মনে মনে বলে,”বিধবা সাজবার খুব শখ না?বিয়ে করে আমার সাথে চলে তারপর সারাজীবনের মতো এমন সাজের শিক্ষা দিয়ে দিবো।এখানে কিছুই বলবো না ময়নাপাখি আমার।”

(আমি ব্যস্ততার কারণে দুইদিন গল্পটা দিতে পারি নাই।চেষ্টা করবো গল্পটা রেগুলার দিতে।আর তাছাড়া গল্পটা লেখার আগ্রহ পাচ্ছি না)



চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here