#সুখের_সন্ধানে
#পর্ব_৩৭
খুব ব্যস্ত সময় পার করছি আমি। আজ আমার প্রিয়র বিয়ে বলে কথা। সেলিমের খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড রশীদ পাটোয়ারি ,উনি ইতালি প্রবাসী। ইতালীতে বিশাল ব্যবসায় তার। বাংলাদেশেও ব্যবসায়ের শাখা প্রশাখা ছড়িয়েছে ব্যাপকভাবে। সেলিমের সাথে বেশ ভালো ব্যবসায়িক সম্পর্ক। সেই ভাবেই এনার সাথে প্রিয়র পরিচয়। এনা দশ বছর বয়স থেকেই বাবা মায়ের সাথে ইতালিতে থাকে। বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। দেখতে শুনতেও খুব সুন্দর আর স্মার্ট। সবদিক থেকেই প্রিয়র বউ হবার যোগ্য। কিন্তু তারপরেও এনাকে আমি কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারছি না। মেয়েটা একটু বেশিই স্মার্ট আমার দৃষ্টিতে। তার উপর ঠোঁট কাটা স্বভাবের। বড় ছোট কাউকে দেখে না । নিজের কোনো আচরণে কেউ মনে কষ্ট পাবে কি পাবে না সেটাও তোয়াজ করে চলে না একদম। আমি ওর নানুর বাসাতে যেয়ে একদিন নিজেই দেখে এসেছি।
আমি যে ওকে ছেলে বউ করতে রাজি না সেকথা সেলিমকে জানিয়েছিলাম। আমার সাথে সেলিমের কয়েক দফা কথা কাটাকাটিও হয়েছে এ নিয়ে। এনা বাংলাদেশে আসে মাস ছয়েক আগে। এসে ওর নানির বাড়িতে থাকছে। দেরিতে হলেও আমি বুঝেছি এনার বাংলাদেশে আসার পেছনে মূল কারণই হলো প্রিয়। একটা বিজনেস মিটিং এটেন্ড করতে সেলিম আর প্রিয় ইতালিতে গিয়েছিল । তখন রশীদ ভাইয়ের বাসায় ওদের ডিনারের দাওয়াত দেয়া হয়েছিল। প্রিয়কে দেখেই পছন্দ করে ফেলে এনার মা। এরপরে উনারাই প্রথমে এনা আর প্রিয়র সম্পর্কের কথা তোলে। আমাকে কিছু না জানিয়েই সেলিম তাদের সাথে মোটামুটি কথা ফাইনাল করে আসে। প্রিয়র জীবনের এত বড় একটা সিদ্ধান্তে আমাকে একপাশে রেখেই কথা দিয়ে এল। আমার মতামতের কথা একবারও ভাবল না।
সেলিমের সাথে কথা বলাই বন্ধ করে দিয়েছিলাম কিছুদিন। কিন্তু তাতে সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন হবে না। তাই শুধুশুধু নিজেকে কষ্ট দিয়ে লাভ কি!
সেলিমের থেকে বেশি রাগ হয়েছিল প্রিয়র উপর । প্রিয় কী আমার মতামতের জন্য অপেক্ষা না করেই ওর বাবার সিদ্ধান্তে তাল মিলিয়ে চলে এল? ওর সাথেও অনেকদিন কথাবার্তা বলিনি। নিজেকে একদম সবকিছু থেকে আলাদা করে ফেলেছিলাম। বাপ বেটা যা খুশি করুক ! ওদের নিয়ে ভেবে ভেবে সারাজীবন পার করেছি অথচ ওদের কাছে আমার মূল্য যে এতটা তলানিতে সেটা স্বপ্নেও ভাবিনি। নিজেকে আর নিচু করতে মন চাইল না। অঝোরে কেঁদেছি দিনের পর দিন আমি। নিজেকে এতটা একা কখনো মনে হয়নি আমার।
মিথিলা এ বাড়িতে এসেছিল বেশ কয়েক মাস আগে একবার। বিয়ের পরে ওই মাত্র একবারই এসেছিল এ বাড়িতে। ডেঙ্গু জ্বর হয়ে আমার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ হয়ে পড়েছিল তাই দিন কয়েক থেকে আমার খুব সেবা শুশ্রূষা করেছিল মেয়েটা। ওই ক’টা দিন মনে হয়েছিল আমি আমার মায়ের কাছে আছি যেন! ও আমার মাথায় যখন হাত বুলিয়ে দিত এতই ভালো লাগায় ডুবে যেতাম যে কখন চোখ বন্ধ হয়ে যেত নিজেই টের পেতাম না। আমাকে এটা সেটা তৈরি করে নিজ হাতে খাইয়ে দিত। নিজের পেটে মেয়ে না থাকার অভাবটা ওকে পেয়ে কিছুটা হলেও মেটানোর ভাগ্য হয় আমার। মিথিলাকে ডাকলেও কেন যেন আসতে চায় না এ বাড়িতে। আমি বুঝতে পারি হয়ত সে নিজেও চায় না আসতে অথবা সাজিদও চায় না। প্রিয় আর মিথিলার ব্যাপারটা তো আর সাজিদের কাছে অজানা নয়।
সেদিনের পর থেকে অনিকেতের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার যেন শেষ নেই। ছেলেটার উপর ভরসা করে আমি ভুল করিনি। সাজিদ ধীরে ধীরে মিথিলার প্রতি অভিমানটুকু ভুলে অনিকেতের কথাগুলিকে অনুভব করার চেষ্টা করে। আর মিথিলাও এখন সাজিদের ঘরের খুব ব্যস্ত একজন ঘরণী । ওর শাশুড়ি তো ওকে চোখে হারায়! হারাবেই বা না কেন? এমন লক্ষী মেয়ে সাত জন্ম সাধনা করলেই তবে মিলে। মিথিলারা সেদিনই ঘুরে এল সিলেট থেকে। সাজিদ অডিটের জন্য যেখানেই যায় সাথে করে মিথিলাকেও নিয়ে যায়। মিথিলার ননদ শান্তা তো আগে থেকেই ভাবির জন্য পাগল , ওর দেবরটাও ভাবিকে খুব সম্মান করে। মিথিলার পড়াশুনাও চলছে সমান তালে। মেয়েটা ওর সংসারে যে মনোযোগী হতে পেরেছে এটা ভেবেই খুব শান্তি পাই মনে। আজকাল মেহরাবও থাকে ওখানে। বিয়ের কয়েক মাস যেতেই মিথিলা আর সাজিদ আমাকে খুব করে ধরল ওকে ওদের ওখানে নেবার জন্য। আমি প্রথমে রাজী না হলে মেহরাবও দেখলাম সেখানে যাবার জন্য খুব আগ্রহী! তাই আমি আর না করলাম না। আসলে এখানে মেহরাবেরও মন টিকত না সেটা আমিও টের পেতাম। মিথিলাকে ছাড়া ওর কষ্ট হতো সেটা বুঝতাম বলেই ওকে মিথিলার কাছে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে দিলাম । তাছাড়া ওর কলেজটাও মিথিলার বাসার কাছাকাছি। তাই আর আটকালাম না। একদিন তো ওকে যেতেই হতো। মায়ার বাঁধনে কতকাল আটকে রাখব? শুধুশুধু মায়া বাড়িয়ে কষ্টই বাড়বে।
ছেলেমেয়ে দুটি চলে যাবার পর থেকে আমার মনে হয় এ বাড়িতে আমার থাকাটাই বুঝি অর্থহীন। চারপাশের আপন মানুষগুলি বড্ড বেশি স্বার্থপর । এদের মাঝে দম নিতে খুব কষ্ট হয় আজকাল। কিন্তু যাবই বা কই? এই বয়সে আর ঘর ছাড়ার মনে জোর নেই।
সেলিমের সাথে সম্পর্ক এখন আবার সেই আগের মতই নামকাওয়াস্তে চলছে। মিথিলার রিসেপশান শেষে সেদিন বাসায় ফিরে সেলিম আর আমার শাশুড়ির সাথে আমার খুব তর্কাতর্কি হয়। প্রিয়ও ছিল পুরোটা সময়। সেলিম আর শাশুড়ি মিলে কী করে মিথিলা আর প্রিয়র সম্পর্কটাকে কুঁড়িতেই মেরে ফেলেছিল সেকথা নিয়ে কম শোনাই নি তাদের। সেদিন আর কাউকে ছাড় দেইনি। আমার শাশুড়ি কী করে ছেলের সাথে তাল মেলাল সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে কার্পণ্য করিনি। সেলিমের একটাই কথা , সে তার ছেলের জন্য মিথিলাকে কোনোদিক থেকেই উপযুক্ত মনে করেনি তাই সে তার কাছে যে কাজ করা উচিৎ বলে মনে হয়েছে সেটাই করেছে। সে কারো কাছে কৈফিয়ত দেবার জন্য বাধ্য নয়।
প্রিয় একটা প্রশ্নও তোলেনি সেদিন। সে শুধু নিরব দর্শক হয়ে আমার ওর বাবার তর্ক শুনেছিল। কোনো কথা না বললেও আমি ওর চোখে বেদনার ছাপ স্পষ্ট দেখতে পেয়েছি ।
সেলিম মিথিলার পরিচয় নিয়ে খুব বেশি অপমানজনক কথা বললে আমি সহ্য করতে না পেরে সেলিমের অতীতের কথা বলতে শুরু করেছিলাম । সেলিমও খুব ক্ষেপে গিয়ে যা মুখে এসেছে তাই বলে গিয়েছে।সময়মত প্রিয় এসে আমাকে থামিয়ে না দিলে সেলিমের আর হেলেনের বাচ্চার প্রসঙ্গ নিয়ে এসেছিলাম প্রায়। পরক্ষণেই বুঝতে পারছিলাম কত বড় ভুল করতে যাচ্ছিলাম আমি। রাগের মাথায় নিজেকে সংযত করতে পারছিলাম না।
আমাদের থামাতে প্রিয় এসে ওর বাবা আর আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে , “ আমি মিথিলাকে পছন্দ করতাম এরমাঝে বিন্দুমাত্র মিথ্যে নেই । এটা আমি অস্বীকার করছি না। তবে মিথিলা এখন অন্য কারো ওয়াইফ। আমি এসব বলে ওর ম্যারিটাল লাইফে কোনো ধরণের প্রবলেম ক্রিয়েট করতে চাই না।
মিথিলাকে ভুলতে হয়ত আমার কয়েকদিন সময় লাগবে। হয়ত খুব কষ্ট পাব কিছু সময়। আমি সব সয়ে নিব। কারণ আমিও আমার সব পাস্ট ভুলতে চাই। এজন্য আমি কাজে পুরোপুরি ডুবে যেতে চাই। আমি চাই না তোমরা আমার কোনো বিষয় নিয়ে নিজেদের সম্পর্কটাকে নষ্ট করো। ছোটোবেলা থেকে তোমাদের শুধু ঝগড়া ফ্যাসাদই দেখেছি। এই বয়সে এসব তোমাদের সাথে আসলেই যায় না। প্লিজ, এসব ছেড়ে একটু মিলেমিশে থাকো।
আম্মু , তোমাকে বলছি! তুমি মিথিলাকে নিয়ে চিন্তা করো না। সাজিদ খুব ভালো ছেলে । মিথিলাকে সে ঠিকই বুঝবে। আর মিথিলাও সাজিদের জন্য একদম পার্ফেক্ট। আমার মতো একটা উড়নচণ্ডী টাইপের পাগলা টাইপের মানুষের সাথে মিথিলা কোনোদিনই সুখী হতো না। এই যে আব্বু বলছে , মিথিলা আমার উপযুক্ত না! এটা সম্পূর্ণ ভুল কথা। আমিই মিথিলার জন্য আনফিট। মিথিলার মত এমন বুদ্ধিমতি আর লক্ষী একটা মেয়ের জন্য সাজিদই পার্ফেক্ট। তুমিই তো বলেছ। আল্লাহ যা করে তার মধ্যেই বান্দার ভালো আছে। তিনিই হয়ত চাননি আমাদের মিল হোক! মিথিলার জন্য যেটা ভালো সেটাই করেছেন ওর সাথে। তাই তুমি একদমই আপসেট হবে না , প্লিজ। ওর জন্য দোয়া করো শুধু।
আর আব্বু, তুমি আমার জন্য খুব চিন্তায় থাকো আমি জানি। সব বাবারই ইচ্ছা ছেলেকে এতটা উপযুক্ত দেখা যেন তাকেও ছাড়িয়ে যায় তার ছেলে। আমি হয়ত তোমার মত হতে পারব না। ছাড়িয়ে যাওয়া থাক দূরের কথা। তবে আমি প্রমিজ করলাম, আমি আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করব । এই ব্যবসায় দাঁড় করাতে তোমার আর দাদভাইয়ের এতদিনের কষ্টের কথা, অবদানের কথা আমি কোনোদিনই ভুলতে পারব না। আমি আমার সাধ্যানুযায়ী আমার জায়গা থেকে সচেষ্ট থাকব।
আর আমার বিয়ে নিয়েও একদমই টেন্সড হতে হবে না। ভয় নেই কাউকে ভালোবেসে আর ভুল করব না। তোমার যাকে পছন্দ হবে তার সাথেই বিয়ে করব। তুমি তোমার স্টাটাসের সাথে বজায় রেখে পাত্রী খুঁজতে থাকো। পেলে আমাকে শুধু জানিও । বাকী কাজের জন্য যা কিছু করতে হবে সেদিক আমিই সামাল দিতে পারব। তাই প্লিজ, তোমরা নিজেদের মাঝে আর ঝামেলা করো না।
আমি সেদিন খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। সত্যিই আমার ছেলেটা বড় হয়েছে। অন্তরের ক্ষতটাকে লুকাবার জন্য মুখে একটা চওড়া হাসি দিয়ে কথা বলা শিখে গেছে আমার ছেলেটা।
এজন্যই হয়ত সেলিমের পছন্দের সাথে এডজাস্ট করার চেষ্টা করে এনার সাথে বিয়েতে কোনো আপত্তি করেনি। আমি আমার ছেলেটাকে দেখেছি চুপসে যেতে। সেদিনের পর থেকে সেই পুরানো প্রিয়কে হারিয়ে ফেলেছি আমি। সেই সদা হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণ চঞ্চল ছেলেটা আমার যেন খোলসের মাঝে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে । আমি ওর সামনে যেয়ে ওর চোখের দিকে তাকালেই মনে হয় ওর সুখটুকু আমি কিনতে পারলাম না। বড় অপারগ মা আমি।
এনাকে প্রিয়র পাশে খুব বেশি পছন্দ করতে না পারলেও প্রিয় যেহেতু বিয়েতে সম্মতি দিয়েছে তাই আমি আর রাগ করে থাকতে পারলাম না। আমার একমাত্র সন্তানের বিয়ে। শহরের কত নামিদামি মানুষ আসবে। সেলিম কোন কিছুতে কোন কমতি রাখছে না।
সব কষ্ট অভিমান ভুলে যে সেলিমের পাশে দাঁড়ালাম।
বিয়ের এ টু জেড সেলিম নিজে তদারকি করছে।
তার একটাই কথা, সারা মানুষ যেন মনে রাখতে পারে বিয়ে হয়েছিল সেলিম সাহেবের একমাত্র ছেলে প্রিয়র!সেভাবেই চলছে আয়োজন। আমাকে সাহায্য করার জন্য মিথিলাকে ডাকতে চাইলে সেলিম টেকনিক্যালি আমাকে না করে দেয়।
সে আমাকে বলে, মিথিলা এ বাড়ির গেস্ট, প্রিয়র কাজিন। ভুলে যাও কেন সে তোমার মেয়ে না। তাদেরকে বিয়ের কার্ড পাঠানো হয়েছে তারা গেস্ট হিসেবে আসবে। শুধু শুধু তাদেরকে বিরক্ত করার কোন মানে হয় না। তোমার কোনো সাহায্য লাগলে আমার অফিস থেকে আমি এক্সপার্ট মেয়েদের পাঠিয়ে দিব। ওদেরকে দিয়ে করিয়ে ফেলবে। কোন সমস্যা হবে না।
আমি কোন কথা বলতে পারিনি সেলিমের কথার প্রত্যুত্তরে। শুধু মুখ বন্ধ করে শুনেছিলাম।
বিয়ের শপিং এবং সব অ্যারেঞ্জমেন্ট নিয়ে কোনোকিছু করার আগেই এনার এবং তার পরিবারের মতামত নেওয়া হচ্ছে । আমি বেশ অবাক হলাম কারণ এতটা গুরুত্বপূর্ণ তো এখন পর্যন্ত আমিই হইনি। কি রঙের ফুল এনার পছন্দ, কোন ধরনের কালারের ড্রেস পছন্দ করে, তার গয়নাগুলো কোথা থেকে আনা হবে, তার বেডরুমটা কি রংয়ের হবে, বেড রুমের ফার্নিচারগুলো কেমন হবে প্রত্যেকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিসের তদারকি করছে সেলিম। সেই হিসেবে প্রিয়র রুমটাকে সাজানো হয়েছে। কিছু নতুন ফার্নিচার ঢুকেছে। এনা গত রাতে এসে নিজেই সবকিছু দেখে গেছে।
মেয়েটার স্বভাব-চরিত্র আমার কেন যেন খুব একটা ভালো ঠেকছে না। এখনই কেমন যেন ডমিনেটিং’ স্বভাবের। প্রিয়র সাথে শাসনের সুরে কথা বলে। এটা ওনার পাকনামি নাকি ন্যাকামি এটা বুঝতে পারছি না। তবে মেয়েটার চেহারার মাঝে এক ধরণের মায়া আছে এটা অস্বীকার করছি না।
চলবে…
বিঃ দ্রঃ ( আমার পুচকু মায়ের এক্সাম চলছে। তাই আর্লি উঠতে হচ্ছে প্রতিদিনই। যে কারণে ঘুমের ঝিমানিও বেড়েছে আমার। এজন্য এইটুকুই দিলাম। বানান কতদূর কি ভুলভাল লিখেছি জানা নেই। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, প্লিজ। )
পর্ব-৩৬
https://www.facebook.com/111576077291737/posts/379064690542873/