Child Of Night part-7

0
1837

#Child_Of_Night
Writer : Tanjima Islam

[8]

সারাটাদিন বাসায় বসেবসে বোর হয়ে গেছে নীরা। দুপুরে সোফায় বসে মুভি দেখতে দেখতে মিলিয়ান ঘুমিয়ে পড়েছে।
এখন সে একা একা বসে কি করবে বুঝতে পারছেনা। মিলিয়ানের গায়ে ব্লানকেটটা ভালো করে দিয়ে রুমে চলে এলো সে।
ল্যাপটপ অন করে দেখল, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রামে টেক্সট আর নোটিফিকেশনের বন্যা বয়ে চলেছে।

নীরা ইদানীং সোস্যাল মিডিয়াতে তেমন এক্টিভ থাকেনা।
ইন্সটাগ্রামে ঢুকে দেখল মরিসের বার্থডে পার্টির ছবি, সাথে তাকে ট্যাগ করা।
ছবিতে নীরাও আছে। নীরা ছবিটা স্কিপ করে ইনবক্স চেক করল।

মরিসের টেক্সট সবার ওপরে। ইনস্টাগ্রাম থেকে বেরিয়ে মেসেঞ্জারে ঢুকল সে।
ফ্রেন্ডস আর কাজিনদের টেক্সটের ভিড়ে সোফিয়ার টেক্সটটা তার চোখে পড়ল। টেক্সটে ট্যাপ করে দেখল,

” নীরা! আ’ম সো স্যরি! পার্টিতে একটু বেশিই ড্রিংকস করেছিলাম। ঘুম ভেঙেছে আজ সকালে। উঠে শুনলাম তুই রাতেই বাসায় চলে গেছিস!

নীরা জলদি উত্তর দিল,” ইটস ওকে।

টেক্সট সেন্ড করেই মেসেঞ্জার থেকে বেরিয়ে এলো সে। হোয়াটসঅ্যাপ এর টেক্সট গুলো আর চেক করতে ইচ্ছে করছে না।
কেন জানি আজ কিছুই ভালো লাগছে না তার। নীরা ল্যাপটপ রেখে যেই উঠতে যাবে ঠিক তখনই হোয়াটসঅ্যাপ এ কল এলো।
নীরা স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখল, তার মা ভিডিও কল দিয়েছে।
নীরা কল কেটে অডিও কল দিল। কল রিসিভ করেই নাজনীন বলে উঠল,

” হ্যালো নীরা!

” হ্যাঁ আম্মু! কি খবর! কেমন আছো?

” যেমন রেখেছিস তেমনই আছি। ফোন করে তো একটাবার খোজও নিস না। আগে তো তুই এমন ছিলি না!

” আম্মু আমি একটু ব্যস্ত ছিলাম। কেন কি হয়েছে!?

” ভিডিও কল কেটে দিয়ে বলছিস কি হয়েছে! গত রাতে খুব খারাপ স্বপ্ন দেখেছি আমি। ভোর থেকে কল দিয়েই যাচ্ছি রিসিভই করছিস না।

” আম্মু সামান্য স্বপ্নই তো! এতে এতো হাইপার হওয়ার কি আছে! তুমি শান্ত হও। বলো স্বপ্নে কি দেখেছো শুনি!

” আমি শান্ত হতে পারছিনা নীরা। আমি দেখলাম একটা খোলা প্রান্তরে তুই একা দাঁড়িয়ে আছিস। আমাকে বারবার ‘মা’ ‘মা’ বলে ডাকছিস! আমি যেই তোর কাছে যেতে নিলাম। ঠিক তখনই সবকিছু অন্ধকার হয়ে গেলো। কিচ্ছু দেখতে পেলাম না। আমি তোকে কত ডাকলাম। কিন্তু তোর কোনো সাড়াশব্দ পেলাম না।

নাজনীনের এতক্ষণ রাগ মিশ্রিত কন্ঠঃ ধীরে ধীরে কান্নায় পরিণত হল। ফুপিয়ে কাদতে কাদতে বলল,

” নীরা মা! তুই বাড়ি ফিরে আয়। আমার কেমন যেন লাগছে। ভয় হচ্ছে খুব।

নীরা কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা। মীরা মারা যাওয়ার আগেও মা এমন অদ্ভুত স্বপ্ন দেখে মাঝরাতেই উঠে কান্নাকাটি করতো।
তারপর থেকে সে প্রায়ই এমন দুঃস্বপ্ন দেখে। নীরার ধারণা আদরের বড় মেয়ের সাথে সম্পর্কের বিচ্ছেদ তার মা মন থেকে মেনে নিতে পারেনি।

তাই সারাক্ষণের দুশ্চিন্তা থেকেই এমন অদ্ভুত স্বপ্ন দেখে সে।
নীরা কতবার তার বাবাকে বলেছে, মাকে ভালো একটা সাইকিয়াট্রিস্ট দেখাতে।
কিন্তু সে কি করছে কে জানে। তাকে একবার দেশে গিয়ে সবটা না দেখলে হবে না।
নাজনীনের কান্নার বেগ বেড়েই চলেছে। নীরা তাকে শান্ত করার জন্য বলল,

” আম্মু তুমি শুধু শুধু চিন্তা করছো। আমি ঠিক আছি।

” না। আমি কিচ্ছু শুনতে চাইনা। তুই ভিডিও কল দে। আমি তোকে দেখবো।

” আচ্ছা আমি দেশে আসছি।

” কি! সত্যিই তুই দেশে আসবি!? কবে আসবি!? কখন?

” আম্মু আমি যখন বলেছি আমি আসবো। তারমানে আমি আসবো। তুমি এখন চিন্তা না করে একটু রেস্ট নাও তো।

” আচ্ছা ঠিকাছে। কিন্তু বাচ্চাটাকে কি করবি? কোনো অরফানেজ ঠিক করেছিস?

” না। মিলিয়ানও আমার সাথেই আসবে।

” মানে কি?

” ঠিকই শুনেছো আম্মু। আমি এখন রাখছি।

কল কেটে দিল নীরা। সে ভেবে নিয়েছে মিলিয়ানকে নিয়েই দেশে যাবে।
নীরা মিলিয়ানের স্কুলের ওয়েবসাইটে দেখল, পরশু থেকে মিলিয়ানের সামার ভ্যাকেশন শুরু হবে।
আর ওদেরও এই সপ্তাহের শেষে শুরু হবে। এই ভ্যাকেশনেই দেশে যাবে নীরা।
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
কলিংবেলের শব্দ পেয়ে দরজা খুলে দিল নীরা। ডিনারের জন্য অনলাইনে অর্ডার দিয়েছিলো সে। ডেলিভারি ম্যান লোকটা প্যাকেট হাতে দাঁড়িয়ে আছে। নীরা তাকে বলল,

” আপনি একটু ওয়েট করুন। আমি টাকা নিয়ে আসি।

লোকটা চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। মিলিয়ানের এখনও ঘুম ভাংগেনি।
সোফায় গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে সে। নীরা ঘরে ঢুকে পার্স খুজতে লাগল।
ব্যাথা পা নিয়ে এক সেকেন্ডের দূরত্বও যেতে তার এক মিনিট লাগছে।
নীরা পড়ার টেবিল থেকে শুরু করে বেডের নিচ পর্যন্ত খুজেও পার্স পেলো না।

কিন্তু সন্ধ্যায়ও তো পড়ার টেবিলের ওপরই ছিলো। ওদিকে ডেলিভারি ম্যান দাঁড়িয়ে আছে।
দরজাটাও বোকার মতো খুলে এসেছে সে। দরজার কথা মনে পড়তেই নীরার ভয় হতে লাগল।
রাত প্রায় দশটা বাজে। সে বাসায় একা একটা মেয়ে। মিলিয়ান ঘুমিয়ে আছে।

লোকটা যদি ঘরে ঢুকে খারাপ কিছু করে বসে! সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে রুম থেকে বের হওয়ার জন্য পা বাড়ালো নীরা।
সাথেসাথেই ইলেক্ট্রিসিটি চলে গেলো। অন্ধকারে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে রইলো সে।
ঘুটঘুটে অন্ধকারে সে কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। অন্ধকারে চোখ সয়ে আসার আগেই কারোর পায়ের শব্দ পেয়ে চমকে উঠল নীরা।

ভারী ধাপ ফেলে ফেলে নীরার দিকে এগিয়ে আসছে কেউ! শব্দটা যতই এগিয়ে আসছে ততই নীরার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
চিৎকার করারও শক্তি পাচ্ছে না সে। কি হতে চলেছে এখন! নিশ্চয়ই ঐ ডেলিভারি ম্যান লোকটা দরজা খোলা পেয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েছে।
কি উদ্দেশ্য তার! সে কি চুরি করে পালিয়ে যাবে! নাকি বাড়িতে একা একটা মেয়েকে পেয়ে তাকে ভোগ করার চেষ্টা চালাবে!

কিছুই বুঝতে পারছেনা নীরা। তার এখন কি করা উচিৎ! পায়ের শব্দটা ক্রমশ তার দিকেই এগিয়ে আসছে।
নীরার মনে পড়ল গত রাতের সেই ভয়ংকর দৃশ্য! কিভাবে ঐ পশু গুলো তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছিলো! তারপর! নাহ আর ভাবতে পারছেনা।

প্রচন্ড ভয়ে থরথর করে কাপছে তার শরীর। এই বুঝি হুড়মুড়িয়ে পড়ে যাবে ফ্লোরে!
ঠিক তখনই ইলেক্ট্রিসিটি ফিরে এলো। আলোয় আলোকিত হয়ে গেলো চারপাশ।
এতো আলোতেও ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছেনা নীরা। মাথা ঘুরছে তার।
ধীরে ধীরে আলো চোখে সয়ে আসতেই দেখল, ড্রয়িং রুমে কারা যেন দাঁড়িয়ে আছে!

কারা এসেছে তার বাসায়! আর ওখানে দাঁড়িয়ে কি করছে!
নীরা টলতে টলতে ঘর থেকে বেরিয়ে এলো। মাথা ঘোরানো কমে গেলেও চোখ ঝাপসা হয়ে আছে।
স্পষ্ট কিছু দেখতে পাচ্ছে না সে।
রুম থেকে বেরিয়ে ড্রয়িং এ আসতেই দেখল, সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা সবার মধ্য থেকে একজন সুদর্শন যুবক এসে বলল,

” ঘুমিয়ে পড়ুন মিস নীরা।

নীরা জ্ঞান হারানোর আগে দেখল ছেলেটার অসম্ভব ফর্সা ত্বকটা যেন রূপোর ন্যায় চকচক করছে। তার কন্ঠঃটাও খুব পরিচিত।
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
সূর্যের আলো মুখে এসে পড়তেই নীরার ঘুম ভেঙে গেল।
আড়মোড়া ভেঙে ঘড়িতে তাকিয়ে দেখল সকাল নয়টা বাজে। সাথেসাথে ধড়ফড়িয়ে উঠে বসল সে।
আজও মিলিয়ানের ক্লাস মিস গেল সাথে তার ক্লাসও। নীরা বেড থেকে নেমে দেখল তার পায়ে ব্যথা নেই! একদম ঠিক হয়ে গেছে!

হাতের ক্ষত গুলোও মিলিয়ে গেছে! নীরা কি ভেবে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে কপাল থেকে ব্যান্ডেজ খুলে দেখল সেখানেও ক্ষত মিলিয়ে গেছে!
কিন্তু এ কিভাবে সম্ভব! সে তো গত রাতেও চেঞ্জ করার সময় দেখল কপালে গভীর ক্ষত!
গত রাতের কথা ভাবতেই নীরার মনে পড়ল সেই ডেলিভারি ম্যানের কথা!

তারপর ইলেক্ট্রিসিটি চলে গেলো! তারপর ঘরে সেই অচেনা লোক গুলো!
নীরা এক ছুটে রুম থেকে বেরিয়ে ড্রয়িং এ এসে দাড়ালো। কেউ নেই এখানে।
সোফাতেও মিলিয়ান নেই। মিলিয়ান কোথায়! নীরা এবার মিলিয়ানের রুমের দিকে যেতে যেতে ডাকল,

” মিলিয়ান! মিলিয়ান!

রুমের দরজা ভেজানো ছিলো। নীরা দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখল মিলিয়ান নেই!
নীরা এবার ওয়াশরুমে ছুটল। ওয়াশরুমেও মিলিয়ান নেই! কোথায় গেলো মিলিয়ান!
ভয়ে আতংকে মুষড়ে পড়ল নীরা! মিলিয়ানের রুম থেকে বেরিয়ে মেইন ডোরের দিকে ছুটল।
মেইন ডোর ভেতর থেকে লক! নীরা এবার চেচিয়ে উঠলো,

” মিলিয়ান! মিলিয়ান কোথায় তুমি!

নীরার চিৎকার বাড়ির চার দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে আবার তার কাছেই ফিরে এলো। নীরা আবার চেচিয়ে উঠলো,

” মিলিয়ান! দেখো এটা কিন্তু হাইড এন্ড গো সিক খেলার সময় না! দেখো মাম্মা ডাকছে তোমাকে। শিগগিরই সামনে এসো। নাহলে কিন্তু মাম্মা আর কখনো তোমার সাথে কথা বলবে না।

বলতে বলতে কাদতে লাগল নীরা। অজানা ভয়ে শিউরে উঠছে সে।
নীরার কান্নার শব্দ চাপা পড়ে গেলো ফোনের রিংটোন পেয়ে। নীরা কান্না থামিয়ে রুমে ছুটল।
বেড থেকে ফোন হাতে নিয়ে দেখল, মিলিয়ানের স্কুল থেকে কল করেছে।
নীরা দ্রুত কল রিসিভ করেতেই ওপাশ থেকে মহিলা কণ্ঠে বলে উঠল,

” মিস নীরা! আজ দু’দিন হল মিলিয়ান স্কুলে আসছেনা!? মিলিয়ানের হটাৎ অনুপস্থিতির কারণ কি জানতে পারি!

নীরা যতটা আশা নিয়ে কল রিসিভ করেছিলো ততটা আশাভঙ্গ হয়ে বলল,

” মিলিয়ান একটু অসুস্থ। সুস্থ হলেই আমি ওকে স্কুলে নিয়ে যাবো।

” ওকে মিস নীরা। কাল থেকে সামার ভ্যাকেশন শুরু। দুই সপ্তাহ পর স্কুল খুলবে।

” ওকে।

নীরা কল কেটে দিল। সে কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা। গত রাতে কি হল, মিলিয়ান বা কোথায় গেল আর গেলেও ডোর ভেতর থেকে লক হয় কিভাবে!
কিছুই তার মাথায় ঢুকছে না। আর সেই পুরুষ কন্ঠ! কে ছিলো সে!
ওরহান! না না, ওরহান অত রাতে কি করতে আসবে। এছাড়া সে তো বাসার ঠিকানাও জানেনা।

আবার জানতেও পারে। যেহেতু সে মিলিয়ানকে আগে থেকেই চেনে।
নীরা ফোনে ওরহানের নম্বর বের করে কল দিতে গিয়েও থেমে গেল।
সে কি ওরহানকে কল দেবে! নাকি আগে পুলিশের কাছে মিসিং ডায়েরি করে রাখবে।
কিন্তু পুলিশকে কি বলবে সে! ডোর তো ভেতর থেকে লক!

সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে পুলিশকে কল দিল। থানা থেকে তাকে জানালো, কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা এখানে আসবে।
নীরা বাসা থেকে বেরিয়ে আশপাশের প্রতিবেশিদের বাসায় খোজ নিতে লাগল।
কিন্তু মিলিয়ান কারোর বাসায় যায়নি। এমনকি পলদের বাসায়ও না।

কিন্তু সারলোটকে দেখে মনে হচ্ছিলো সে নীরাকে কিছু বলতে চাচ্ছে।
পুলিশ অফিসার ফেলিক্স আর তার এসিস্ট্যান্ট লিউকা মিলিয়ানের কেসটা তদন্ত করছে।
তারা এসে আগে মিলিয়ানদের বাসাটা ঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করল।
কিন্তু সন্দেহজনক কিছুই পেলো না। আশপাশের প্রতিবেশিদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করল কিন্তু তাদের কাছ থেকেও আশানুরূপ কোনো ইনফরমেশন পাওয়া গেলো না।

এদিকে সকাল পেরিয়ে বেলা বারোটা বেজে গেছে। নীরা মিলিয়ানের চিন্তায় সকাল থেকে কিছু খায়নি। টেনশনে তার মাথা যন্ত্রণা করছে।
সে বারবার গত রাতের ঘটনা মনে করার চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই মনে পড়ছেনা।
তার অগোছালো বয়ান শুনে পুলিশ ভাবছে নীরা মানসিক ভাবে কিছুটা অসুস্থ হয়ে গেছে।
হয়তো ছেলের চিন্তায়। তাই পুলিশ অফিসার ফেলিক্স তাকে বলেছে,

” আপনি আগে স্বাভাবিক হন। তারপর আপনার বয়ান নেবো। আর চিন্তা করবেন না। আমরা খুব শীঘ্রই মিলিয়ানকে খুজে বের করবো।

পুলিশের গাড়ি চলে গেছে। একে একে প্রতিবেশীরাও চলে যাচ্ছে নিজ নিজ কাজে।
নীরা মেইন ডোরে বসে সিড়ির ধাপে তাকিয়ে আছে। সে ভেবেই পাচ্ছেনা লোক গুলো কারা ছিলো।
আর তারা যদি মিলিয়ানকে কিডন্যাপ করে থাকে তাহলে মেইন ডোর ভেতর থেকে লক করল কিভাবে! এমন অবাস্তব ঘটনা কি আদৌ ঘটে! নাকি তার কোথাও ভুল হচ্ছে!

নীরার ভাবনায় ছেদ ঘটিয়ে ছোট ছোট একজোড়া পা এসে দাড়ালো তার সামনে।
সাথেসাথেই নীরার চিন্তিত ভ্রু জোড়া বিস্ময়ে কুচকে গেলো।
নীরা দ্রুত সামনে তাকিয়ে দেখল, তার সামনে মিলিয়ান দাঁড়িয়ে আছে!
নীরা বিস্ময়ে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছে। মিলিয়ান অবাক হয়ে বলল,

” কি হয়েছে মাম্মা! তুমি কি কান্না করেছো?

” মি’মিলিয়ান!

” হুম।

নীরা আর কিছু বলতে পারলো না। মিলিয়ানকে টেনে নিয়ে জাপটে ধরল বুকে।
মিলিয়ান বুঝতে পারছেনা তার মাম্মার হটাৎ কি হল। নীরা কাদতে কাদতে সামনে তাকিয়ে দেখল ওরহান ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে গেট দিয়ে ঢুকছে। নীরা এবার মিলিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,

” কোথায় ছিলে মিলিয়ান! সেই সকাল থেকে তোমাকে খুজে মরছি। পুলিশে কমপ্লেইন করেছি। কোথাও তোমাকে পাওয়া যাচ্ছে না!

” কিন্তু কেন মাম্মাম! আমি তো আংকেল ওরহানের সাথে গেছিলাম।

” মানে! তুমি স্কুলে না গিয়ে একা একা সি সাইডে গেছিলে!

ওরহান এসে দাড়িয়েছে সিড়ির ধাপে। নীরাকে দেখে সে বেশ অবাক হয়েছে।
নীরাও অবাক হয়ে ওরহানের দিকে তাকালো। মিলিয়ান একবার ওরহানের দিকে তাকিয়ে আবার নীরার দিকে তাকিয়ে বলল,

” তুমিই তো বললে আজ স্কুলে যেতে হবে না পিয়ানো ক্লাসে যাও।

নীরা কিছুই বুঝতে পারছেনা। মিলিয়ান কি বলছে এসব। ওরহান ব্যাপারটা বোঝার জন্য জিজ্ঞেস করল,

” এনিথিং রঙ! মিস নীরা!?

নীরা তার জবাব না দিয়ে মিলিয়ানকে বলল,” তুমি সি সাইডে গেলে ডোর ভেতর থেকে লক হল কিভাবে!?

মিলিয়ান কিছু বলার আগেই ওরহান বলল, ” আপনিই তো আমাকে কল করে বললেন এসে মিলিয়ানকে নিয়ে যেতে। পরে আমি ওকে নিয়ে গেলে আপনি ডোর লক করে দিলেন। ক্লাস শেষে মিলিয়ানকে আবার বাসায় দিতে এলাম। কিন্তু আপনি এসব জিজ্ঞেস করছেন কেন?

নীরার মাথায় বাজ পড়েছে এমন অবস্থা। কখন হল এসব! আর হলেও তার মনে নেই কেন! কি হচ্ছে এসব তার সাথে!
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
[চলবে]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here