Sunday, December 14, 2025
Home Blog Page 4

ডেভিল-বর #পর্ব – ৯ #শিফা_আফরিন

0

#ডেভিল-বর
#পর্ব – ৯
#শিফা_আফরিন
.
.
🍁
রুমে এসে আঁচল পিছন ফিরে দেখে রেহান দাঁড়িয়ে দু’হাত পকেটে গুঁজে মুচকি হাসছে। আঁচল আর কিছু না বলে রুম থেকে চলে আসে।

সারা দিন আঁচলের ভালোই কাটে। রিমির সাথেও অনেক গল্প করে। তাছাড়া কালকে আঁচলের বাড়ি থেকে লোক আসবে ভাবতেই আঁচলের খুশি খুশি লাগছে।

রাতে…

আঁচল ভয়ে ভয়ে রুমে ঢুকে দেখে কেউ নেই।

আঁচল – যাক বাবা বাঁচা গেলো। অসভ্য টা রুমে নেই। আমি এই সুযোগে চেঞ্জ করে আসি। এই সব শাড়ি টারি পড়ে কি ঘুমানো যায় নাকি। আজিব।

আঁচল নিজের লাগেজ থেকে একটা লং টপস্ আর একটা প্লাজো বের করে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।
এদিকে রেহান বেলকনিতে ছিলো কেউ এসেছে ভেবে রুমে আসতেই দেখে কেউ নেই।
রেহান ওয়াশরুমের দরজায় ধাক্কা দিতেই বুঝতে পারে ভেতর থেকে লক করা।

রেহান – ওহহ। মহারানি নিশ্চয় ওয়াশরুমে আছে। রেহান বিছানার বসে পড়ে। কিছুক্ষণ পরই আঁচল ওয়াশরুম থেকে বের হয়।
রেহান আঁচলকে দেখে একদম হা!!
রেহানের মুখ থেকে আচমকা বেড়িয়ে আসে… মাশআল্লাহ।

আঁচল রেহানের কথায় বিরক্ত হয়নি বরং এই প্রথম বার রেহানের মুখের কথায় আঁচলের ভালো লাগছে।

রেহান ধীর পায়ে আঁচলের দিকে এগুতে থাকে।
রেহানের এগুনো দেখে আঁচল ভয়ে ঢোক গিয়ে। আঁচল শক্ত হয়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে।

রেহান আঁচলের অনেক টা কাছে চলে আসে। রেহানের প্রতিটা হার্টবিট যেনো আঁচল গুনতে পারছে। আঁচল চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে আছে।

রেহান আঁচলের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে….

রেহান – বেইবি আমাকে পাগল করার জন্য তুমি তৈরি দেখছি!!
বলেই আঁচলের কানে চুমু দেয়।

আঁচল যেনো ফ্রিজড হয়ে গেছে রেহানের ঠোঁটের ছোঁয়ায়।
রেহান আঁচলের কোমড় জড়িয়ে ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে।

আঁচল এবার খনিকটা বিরক্ত হয়ে যায়।

আঁচল – আপনি কেমন মানুষ বলুন তো! আমার অতীত টা জানার পরও আপনি কেনো আমার সাথে এমন করছেন? হ্যা মানলাম আপনি আমার স্বামী। আমার উপর আপনার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। কিন্তু তাই বলে প্রথম দিন থেকেই আপনার অধিকার দেখাবেন? আমাকে কি একটু সময় দেয়া যেতো না? (চিৎকার করে)

আঁচলের এমন রিয়েক্টে রেহান চুপ মেরে যায়। আঁচল কে একপ্রকার ধাক্কা দিয়েই দূরে সরিয়ে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
রেহান চলে যাওয়ার পর আঁচল বিছানায় একপাশে শুয়ে কেঁদে যাচ্ছে। রেহানের এমন অধিকার ফলানো টা যেনো আঁচল কিছুতেই মানতে পারছে না।
প্রায় দু ঘন্টা পার হয়ে যায় রেহান রুমে আসে না। আঁচল ও কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ে।

এদিকে রেহান ছাদের রেলিং ধরে আকাশের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে।

রেহান – আঁচল কি আমায় কোনো দিনও মেনে নিতে পারবে না? আমি কি এতোটাই খারাপ। এতোটাই অযোগ্য। ও কি কোনে দিনও জিসান কে ভুলতে পারবে না। ও শুধু আমার রাগটাই দেখলো অত্যাচার টাই দেখলো। আমি যে ওকে প্রথম দিন থেকেই ভালোবেসে ফেলেছি বুঝতে পারেনা ও!!
আমিও তো চেয়েছিলাম ওকে সময় দিতে। কিন্তু ভয় হয়েছিলো যদি ও আমায় ছেড়ে জিসানের কাছে চলে যায়। তাই তো ওকে সময় দিই।
ও কি শুধু ঘৃণা করেই যাবে আমায়। আমার রাগের মাঝে লুকানো ভালোবাসা টা বুঝতে পারবে না কোনো দিনও!!! (ভাবতে ভাবতেই রেহানের চোখ দিয়ে দু’ফোটা অশ্রু ঝড়ে)

নাহ! আমি এভাবে ওর ঘৃণার কাছে হেরে যাবো না। বরং আমার ভালোবাসা দিয়েই ওকে নিজের করে নিবো।

রেহান ছাদ থেকে রুমে এসে দেখে আঁচল গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে। রেহান আঁচলের পাশে বসে আঁচলের ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে আছে।

” সত্যিই এই মুখটায় জাদু আছে। যখনই দেখি শুধু আমাকে কাছে টানে “।

রেহান আঁচলের কপালে চুমু দিয়ে আঁচলকে টেনে নিজের বুকে নিয়ে এসে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে….

আঁচলের ঘুম ভাঙতেই নিজেকে রেহানের বুকে আবিষ্কার করে। আঁচল কাল রাতের কথা ভাবছে।

আঁচল – কাল রাতে তো উনি রুম থেকে চলেই গিয়েছিলো। আমিও ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
তাহলে কখন আসলেন? আমিও বুঝতে পারিনি।

এইসব ভাবতে ভাবতে রেহানের দিকে তাকাতেই দেখে রেহান আঁচলের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।

আঁচল কিছু না বলে রেহানের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।

আঁচল – কেস টা কি হলো। অসভ্য টা একবারও আটকালো না। বাবা! ভালো হয়ে গেলো নাকি!

আঁচল শাওয়ার নিয়ে চুল মুছতে মুছতে বের হয় ওয়াশরুম থেকে।
রেহান উঠে আঁচলের কাছে গিয়ে টাওয়েল
টা নিয়ে নেয়।

আঁচল – কি হলো?

রেহান – আমি মুছে দিচ্ছি বসো।

রেহান আঁচলকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে দিয়ে নিজে আঁচলের চুল মুছে দিচ্ছে। আঁচল রেহানের এমন কাজে অবাক না হয়ে পারে না।

রেহান – আচ্ছা বেইবি তুমি এতো সকাল সকাল শাওয়ার নিলে কেনো বলো তো। কাল রাতে তো কিছুই হয়নি।

আঁচল রেহানের কথা শুনে ভ্রু কুচকে রেহানের দিকে তাকায়।

রেহান – হুম সত্যিই তো। কাল রাতে কিছুই হয়নি। তুমি যা রেগে ছিলে বাপরে!

আঁচল – (আমিও কি ভাবি এই অসভ্য আজীবন অসভ্যই থেকে যাবে। কি সব বলে যাচ্ছে দেখো! মনে হই লজ্জা বলতে যে একটা শব্দ আছে সেটা উনি জানেনই না। হুহহহ….)

রেহান আঁচলের চুল মুছে দিয়ে আঁচলের চোখে কাজল দিয়ে দেয়।

রেহান – ব্যাস। এবার আমার মিষ্টি বউয়ের উপর কারো নজর লাগবে না। (মুচকি হেসে)

আঁচল চুপ করে আছে। রেহান আঁচলকে চুপ থাকতে দেখে বলে….

রেহান – আমার পারিশ্রমিক টা দিবে না?

আঁচল – মানে? ( অবাক হয়ে)

রেহান – ও বাবা! এতো কষ্ট করে চুল মুছে দিলাম। কাজল দিয়ে দিলাম তার বিনিময়ে আমি কিছুই পাবো না?
সেটা কি করে হয় বেইবি। (মুচকি হেসে)

আঁচল বুঝতে পারে রেহান কি চাইছে। আঁচল কিছু বলার আগেই রেহান আঁচলের ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়।

আঁচল – অসভ্য। বলেই রেগে রুম থেকে চলে আসে। আঁচল নিচে চলে আসতেই রিমির সাথে দেখা হয়।

রিমি – বাহ ভাবি। তোমাকে অনেক কিউট লাগছে।

আঁচল – হয়েছে এবার চলো। আজ আমি রান্না করি।

রিমি – কিন্তু মা!

আঁচল – মাকে আমি পরে যা বলার বলবো তুমি চলো তো।

রিমি আঁচলকে নিয়ে রান্না ঘরে চলে যায়।
আঁচল সবার জন্য ব্রেকফাস্ট বানায় রিমিও আঁচলকে সাহায্য করে। হটাৎ বেল বাজতেই দিতেই রিমি বলে…

রিমি – ভাবি তুমি বরং ব্রেকফাস্ট টেবিলে সাজাও। আমি দেখে আসি কে এসেছে।

রিমি দরজা খুলতেই দেখে একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে।

রিমি – কাকে চাই?

ছেলেটা – আঁচলকে!

চলবে…

ডেভিল – বর #পর্ব – ৮ #শিফা_আফরিন

0

#ডেভিল – বর
#পর্ব – ৮
#শিফা_আফরিন
.
.
🍁
—- তাই বুঝি বেইবি।

কথাটা শুনতেই আঁচল পেছন ফিরে তাকায়…..

আঁচল – আআআআআ….

রেহান দ্রুত এসে আঁচলের মুখ চেঁপে ধরে।

রেহান – এই মেয়ে এভাবে চেঁচাচ্ছো কেনো?

আঁচল – আপনি কি বলুন তো? আপনি নিশ্চয় কোনো আত্মা। না হলে এভাবে সব সময় আমার কথার মাঝ খানে চলে আসেন কিভাবে?

আঁচলের কথা শুনে রেহান হাসবে না কাঁদবে বুঝে উঠতে পারছে না। এই মেয়ে বলে কি!!

রেহান – আমি তোহ তোমার কিউট বর। (মুচকি হেসে)

আঁচল – আরে রাখেন আপনার বর টর। ঐ রিমি টা কোথায় গেলো। ও তো এখানেই ছিলো আমার সাথে।

রেহান – তুমি এমন ভাবে টেডি দেখায় মন দিয়েছিলা তোমাকে যদি কেউ কিডন্যাপ করে নিয়ে যেতো তাহলেও তুমি টের পেতে না।
অবশ্য আমি থাকতে কেউ তোমাকে নিয়ে যাবে দূরে থাক টাচ ও করতে পারবে না। বুঝলে বেইবি। (মুচকি হেসে)

আঁচল – ওফফ….আপনার এই সব কথা বন্ধ করুন তো। রিমি কোথায় সেটা বলুন। (বিরক্তি নিয়ে)

রেহান – আহারে এই টুকু বুদ্ধি নেই আমার বউ টার। আচ্ছা আমরা রোমান্স করার সময় রিমি এখানে থেকে কি করবে বলো তো?
আমার তো সমস্যা নেই কিন্তু তুমি তো লজ্জা পাবে তাই না। (চোখ মেরে)

রেহানের কথা শুনে আঁচলের চোখ বড় বড় হয়ে যায়। এই পাগল টা বলে কি!!

আঁচল – আপনি সত্যিই একটা ডেভিল। অসভ্যের দুলাভাই। যত্তসব অসহ্য। বলেই রুম থেকে চলে যেতে নেয়।

রেহান আঁচলের হাত ধরে টান মেরে বিছানায় ফেলে দিয়ে নিজে দু’হাতের উপর ভর দিয়ে আঁচলের দিকে ঝুঁকে পরে।
আঁচল ভয়ে কয়েকটা ঢোক গিলে। না জানি এই অসভ্য টা কি করে বসে আল্লাহ মালুম। (মনে মনে)

রেহান – বেইবি অসভ্য বলেছো যখন একটু অসভ্যতামি তো করতেই হই কি বলো! (মুচকি হেসে)

আঁচল – (এই রে সেরেছে! এবার পালাবো কি করে আমি। মনে মনে)

রেহান নেশার দৃষ্টিতে আঁচলের ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আছে।
আঁচল বিষয় টা খেয়াল করতেই বলে উঠে…….

আঁচল – এ মা রিমি….! তুমি কখন এলে?

রেহান আঁচলের কথা শুনে হেসে দেয়। আঁচলের বোকামি দেখে বেচারার হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার অবস্থা।

আঁচল অবাক হয়ে যায় রেহানের এমন কান্ডে।

রেহান – বেইবি তুমিও না!! ভালো করে তাকিয়ে দেখো দরজা টা ভেতর দিয়ে লক করা। তুমি কি ভেবেছো আমি দরজা খুলা রেখেই তোমার সাথে রোমান্স করবো।

আঁচল তাকিয়ে দেখে সত্যিই তো দরজা তো লক করা। কিন্তু আমার কি দোষ! আমি তো এই অসভ্যর কাছ থেকে পালানোর জন্য মিথ্যা বলেছিলাম।
যাই হোক এই সুযোগ এ আমি বরং পালাই। যেই ভাবা সেই কাজ।

রেহান এখনো বিছানায় শুয়ে হেসেই যাচ্ছে। আঁচল এক লাফে শুয়া থেকে উঠে পালাতে নিলেই রেহান আঁচলের শাড়ির আঁচল ধরে ফেলে।

রেহান – পালানোর ধান্দা তাই না। পালানোর জন্যই রিমি এসেছে বলেছিলে? এবার পালাও তো দেখি! (মুচকি হেসে)

আঁচল – ছাড়ুন আমায়।

রেহান কিছু না বলেই শাড়ির আঁচলটা ধরে টান দেয়।
আঁচল ও বাধ্য হয়ে রেহানের কাছে চলে যায়।
রেহান আঁচলকে নিজের উপর নিয়ে আসে আঁচলের কোমড় শক্ত করে ধরে….

রেহান – তোমার এই একটা রোগ জানো আঁচল!!
রোমান্স করার সময় মুড নষ্ট করে দাও।

আঁচল – তো এখন আপনার রোমান্স করার টাইম নাকি আজিব!! (বিরক্ত হয়ে)

রেহান – তাহলে কখন শুনি? রাতে ? (মুচকি হেসে)

আঁচল – আপনার সাথে কথা বললেই আমার মাথা নষ্ট হয়ে যাবে। ছাড়ুন আ…..

রেহান আঁচলকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আঁচলের ঠোঁট আকড়ে ধরে। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ার পরও রেহান আঁচলের ঠোঁট ছাড়ছে না।
এদিকে আঁচল বেচারির যেনো নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা।

আঁচল না পেরে রেহানের হাতে জোরে নখ দিয়ে আঁচড় কাটে। যেহেতু আঁচলের নখ গুলো চাইনিজ কুড়াল কেও হার মানাবে রেহানের অবস্থা কি হয়েছে সেটা রেহানই বুঝতে পারছে।

রেহান – আহহহ আঁচল! তুমি কি পাগল! এভাবে কেউ আঁচড় কাটে? (ধমক দিয়ে)

রেহানের ধমক শুনে আঁচল কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। ভয়ে ভয়ে রেহানের কাছ থেকে চলে আসতে নিলেই রেহান পেছন থেকে আঁচলের কোমড় ধরে টেনে বিছানায় ফেলে দিয়ে নিজে আঁচলের উপর উঠে শরীরের ভার ছেড়ে দেয়।

রেহান – সাহস তো কম না তোমার! আমার হাতের ১২ টা বাজিয়ে দিছো। এর শাস্তি তো পেতেই হবে। (রেগে)

আঁচল – (এ মা…. না জানি আবার কোন শাস্তি দিবে আল্লাহই জানে। মনে মনে।)

আঁচল কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই রেহান আঁচলের গলায় মুখ গুঁজে দেয়।আঁচল ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে।
রেহান আঁচলের গলায় চুমু দিয়ে জোরে কামড় বসিয়ে দেয়।

আঁচল – আউউচচ….. মরে গেলাম গো…. এ তো আস্ত রাক্ষস…. আমাকে খেয়ে ফেলতে চাইতে গো মা….. (ভ্যা ভ্যা করে কান্না করে দিয়ে)

রেহান আঁচলের উপর থেকে উঠে যায়…..

রেহান – এটাই হলো তোমার শাস্তি বুঝছো। স্টুপিড…. বলেই হনহন করে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

আঁচল গলায় কিছুক্ষন হাত বুলিয়ে বিছানা থেকে উঠে আয়নার সামনে গিয়ে দেখতে থাকে।

আঁচল – রাক্ষস কোথাকার! আমার এতো সুন্দর গলায় দাঁত বসিয়ে দিলো। ইচ্ছে করছে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে মারি।

—- কি বলো ভাবি! আমি ভাইয়ে মারার প্লান করছো বুঝি?

আঁচল কারো কন্ঠ শুনে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে রিমি।

আঁচল – এই তুমি কোথায় গিয়েছিলে বলো তো? (কিছুটা রেগে)

রিমি – বারে!! আমি না গেলে রোমান্স করতে কিভাবে শুনি? (আঁচলের গলার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে)

আঁচল তারাতারি করে গলা টা ঢেকে রেগে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
রিমি আঁচলের কান্ড দেখে হাসছে।

আঁচল – ধুর রিমিটার কাছে থাকলেও এখন জ্বালিয়ে মারবে। আর রুমে গেলে তো ঐ ডেভিল টা! ওহহহ আল্লাহ দড়ি ফালাও আমি উপরে চলে যাই!!

আঁচল আর কিছু না ভেবে রুমে চলে যায়। গিয়ে দেখে রেহান বিছানায় আধশোয়া হয়ে শুয়ে বই পড়ছে।
আঁচলকে আসতে দেখে একবার আঁচলের দিকে তাকিয়ে আবার বই পড়ায় মন দেয়।

আঁচল – যাক বাবা ডেভিল টার মাথা থেকে আমাকে জ্বালানোর ভুত দূর হয়েছে।
আঁচল বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ায়।

রেহানের বেলকনি টা সত্যিই অনেক সুন্দর। আর এই সুন্দর্য টাকে বাড়িয়ে দিয়েছে ফুল গাছ গুলো।
বেলকনিতে অনেক গুলো ফুল গাছ। বোধহয় রেহান এই গাছ গুলোর যত্ন করে।

আঁচল ফুল গুলোতে হাত দিয়ে দেখে বেলকনির গ্রীল ধরে দাঁড়িয়ে আছে। হালকা বাতাসে আঁচলের চুল গুলো উড়ছে।
আঁচলের অনেক ভালো লাগছে এই পরিবেশ টা। সে এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।

অনেকক্ষণ আঁচলকে রুমে আসতে না দেখে রেহান বই টা রেখে উঠে দাড়ায়।
বেলকনির সামনে আসতেই আঁচলকে দেখে রেহানের চোখ আটকে যায়।

রেহান চুপিচুপি বেলকনিতে গিয়ে দাড়ায়।
আঁচলের চুল গুলো উড়ে রেহানের চোখমুখে পড়ছে।
এতে রেহান মোটেই বিরক্ত হচ্ছে না। বরং অজানা এক ভালোলাগা কাজ করছে রেহানের মনে।

হটাৎ পেটে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে আঁচল চমকে উঠে। পিছন ফিরে বুঝতে পারে রেহান।
রেহান আঁচলের কাছে গিয়ে পেছন থেকে আঁচল কে জড়িয়ে ধরে আঁচলের চুলে মুখ ডুবায়।

আঁচল রেহান কে ছাড়াতে চাইলে রেহান আরও শক্ত করে আঁচলকে জড়িয়ে ধরে।

আঁচল – কি হচ্ছেটা কি! ছাড়ুন আমায়। (বিরক্ত হয়ে)

রেহান আঁচলের কথা শুনে কিছু না বলে আঁচলকে ছেড়ে দেয়। আঁচল সেখান থেকে চলে আসে।

রুমে এসে আঁচল পিছন ফিরে দেখে রেহান দু’হাত পকেটে গুঁজে মুচকি হাসছে।
আঁচল আর কিছু না বলে চলে আসে রুম থেকে।

চলবে….

ডেভিল – বর #পর্ব – ৭ #শিফা_আফরিন

0

#ডেভিল – বর
#পর্ব – ৭
#শিফা_আফরিন
.
.
🍁
আঁচল – ঠিক আছে কি শাস্তি দেবেন বলুন। (মাথা নিচু করে)

রেহান – যা শাস্তি দিবো মেনে নিতে হবে। রাজি? (মুচকি হেসে)

আঁচল – অসহায় ভাবে রেহানের দিকে তাকিয়ে হ্যা বলে।

রেহান আঙুল দিয়ে ঠোঁট ইশারা করে দেখায়।

আঁচল – কী? (অবাক হয়ে)

রেহান – কি বুঝো না। ওকে বুঝিয়ে দিচ্ছি। গিভ মি আ কিস।

রেহানের কথা শুনে আঁচল চোখ বড় বড় করে রেহানের দিকে তাকায়।

আঁচল – মানেএএএ….!

রেহান – এতে এতো রিয়েকশন করার কি আছে আজিব।

আঁচল – আমি পারবো না।

রেহান – পারতে তো তোমাকে হবেই বেইবি। টাইম ওয়েস্ট করো না। কুইক…..

আঁচল – বললাম না পারবো না। আমি কি এমন ভুল করেছি যে এই সব বলছেন? আর যদি শাস্তি দেয়ার এতোই ইচ্ছে থাকে তো অন্য ভাবে দিন। এইসব পারবো না ব্যাস৷

রেহান – আর ইউ শিঅর অন্যভাবে দিবো! (বাঁকা হেসে)

রেহানের হাবভাব আঁচলের মোটেই ভালো লাগছে না। আঁচল কিছু একটা বলে রেহানের কাছ থেকে পালাতে পারলেই বাঁচে।

আঁচল – আমার ক্ষুধা পাচ্ছে। আমি নিচে যাই? (করুন সুরে)

রেহান – আহারে আমার বেইবি টার কষ্ট হচ্ছে ক্ষুধায়। আগে বলবা তো নাকি। ওয়েট আমি তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি। (মুচকি হেসে)

আঁচল – আপনি খাইয়ে দিবেন মানে। খাবার তো নিচে! খেতে হলে তো নিচে যেতে হবে তাইনা। আচ্ছা ঠিক আছে চলুন তবে।
বলেই চলে যেতে নেয়।

রেহান আঁচলের হাত ধরে টান দিয়ে নিজের বুকে নিয়ে আসে। আঁচলের কোমড় জড়িয়ে ঠোঁটে আলতো করে চুমু দেয়।

রেহান – ব্যাস। আমার খাওয়ানো শেষ। (মুচকি হেসে)

আঁচল – (এই লুচু দেখছি শুধু লুচুই না পাগল ও। মনে মনে)

রেহান – এইভাবে তাকিয়ে থাকবে নাকি আমার পাওনা টাও দিবে। (আঁচলের নাকে নাক ঘষে)

আঁচল – আপনি কি আমায় ছারবেন!!! আপনি না খেয়ে থাকলে থাকুন। আমায় অন্তত যেতে দিন। (কিছুটা রেগে)

রেহান আঁচলের কথা শুনে মুচকি হাসে….

রেহান – ওকে বেইবি চলো। তবে রাতে কিন্তু ছাড় পাবা না সব সুদে আসলে চাই। (মুচকি হেসে)

আঁচল – ওফফফ অসহ্য….. বলেই চলে যায়।

রেহান – বেইবি অসহ্য বলো আর যাই বলো তোমার মনে তো আমি জায়গা করে নিবোই।

আঁচল নিচে যেতেই রিমি বলে উঠে…..

রিমি – ভাবি তুমি কোথায় চলে গিয়েছিলে? আমি ফোন এনে দেখি তুমি নাই।

আঁচল – আর কেথায় যাবো তোমার অসভ্য ভাই তো…..
সবটা না বলেই থেমে যায়।
(ধুরর কি করছি আমি। রিমি কে সব বলেই দিচ্ছি। লজ্জা শরম কি হানিমুনে গেলো নাকি ধ্যাতত….. মনে মনে)

রিমি – আহারে বেচারি…. হয়ছে আর লজ্জা পেতে হবেনা। এবার চলো খেয়ে বসবে।

আঁচল রেহানের মার কাছে যায়।

আঁচল – আন্টি আমাকে দিন। আমি সবাইকে সার্ভ করে দিই। আপনি বরং বসুন।

রেহানের মা আঁচলের কথা শুনে ডানে বামে তাকিয়ে দেখে উনার সাথে আরও কেউ আছে কি না।

আঁচল – কাউকে খুঁজছেন আন্টি?

রেহানের মা – না মানে দেখছিলাম আন্টি কাকে ডাকছো। আমার সাথে আর কেউ আছে কিনা।

রেহানের মার কথা শুনে আঁচল মাথা নিচু করে ফেলে।

আঁচল – আসলে অভ্যেস নেই তো তাই। আস্তে আস্তে শিখে যাবো মা।

রেহানের মা আঁচলের কথা শুনে মুচকি হাসে।

রেহানের মা – ঠিক আছে তুমি বসো। খেয়ে নাও অনেক বেলা হয়ে গেছে।

আঁচল – বলছিলাম যে আপনি বসুন না। আপনারা খেয়ে নিলে না হয় আমি বসবো।

রেহানের মা – আহা কথা বলো না তো বসো তুমি। (আঁচলের হাত ধরে টেনে বসিয়ে দেয়)

কিছুক্ষন পরই রেহান আসে। রেহান আঁচলের ঠিক বিপরীত পাশের চেয়ার টেনে বসে পরে।

রেহানের মা সবাইকে সার্ভ করে দেয়। রেহান আঁচল ও খেতে শুরু করে।

হটাৎ রেহানের মাথায় দুষ্টুমির বুদ্ধি আসে। রেহান ওর পা দিয়ে আঁচলের পায়ে স্লাইভ করে।

হটাৎ কেউ এমন করায় আঁচল বিষম খায়।

রিমি – কি হলো ভাবি? নিশ্চয় তোমার বাড়ির মানুষ তোমার কথা মনে করছে।

আঁচল রেহানের দিকে তাকিয়ে দেখে রেহান মুচকি হাসছে।

আঁচল – (ওহহ তাহলে এই কথা!! অসভ্য কোথাকার খেতে এসেও শান্তি দিচ্ছে না। মনে মনে)

রেহান খাওয়া শেষ করে উঠে যায়। আঁচল উঠে রেহানের রুমে না গিয়ে রিমির রুমে যায়।

রিমি – আরেবাস! তুমি এসেছো! ভালো হয়েছে। গল্প করতে পারো কি বলো?

আঁচল – হুম সে জন্যই তো আসা।

রিমি – আচ্ছা ভাবি আমার ভাই টাকে কেমন লাগে গো?

আঁচল – এ আবার কেমন কথা?

রিমি – মানে আমার ভাই মানুষ হিসেবে কতটা ভালো? আমার ভাইয়ের মন টা কেমন? এই সব নিশ্চয় তুমি একটু হলেও বুঝতে পেরেছো।

আঁচল – ভালো না ছাই। আস্ত একটা লুচু।
(এই রে আবার কি সব বলে দিলাম। ওফফ আমার মাথা টা ইচ্ছে করে বারি মেরে ফাটাই দিই। কিছু নাই মাথায়…. মনে মনে)

রিমি – ও মা কি বলো লুচু…!

এদিকে রেহান অনেকক্ষণ ধরে দেখছে আঁচল রুমে আসছে না….

রেহান – এই মেয়েটা যে কি! আমাকে সময়ই দিতে চায় না। সব সময় পালিয়ে বেড়ায়। এখন নিশ্চিত রিমির সাথে আছে।
দেখি গিয়ে দুজন কি করছে। (বলেই রিমির ঘরে যায় রেহান।)

রিমি – ভাবি বলো না লুচু কেনো বললে? আমি তো জানি আমার ভাই কারো সাথে কোনো দিন রিলেশন ও করেনি। তাহলে! তুমি এই কথা বললে কেনো। (বলতে বলতে দরজার দিকে চোখ যেতেই দেখে রেহান দাড়িয়ে আছে। রেহান রিমিকে আঙুল দিয়ে ইশারা করে বলছে চুপ করে থাকতে)

আঁচল রিমির খাটে রাখা টেডি গুলো দেখছে আর কথা বলছে। রেহান কে আঁচল খেয়াল করে নি।

রেহান রিমি কে ইশারা করে বলে চলে যেতে। রিমিও চুপচাপ উঠে চলে যায়। আঁচল টেরও পায়নি যেহেতু বেচারি টেডি দেখা নিয়ে ব্যাস্ত।

আঁচল – লুচুকে লুচু বলবো না তো কি বলবো? জানো তোমার ওই ডেভিল ভাই আমাকে সারাক্ষণ জ্বালিয়ে মারছে।

—- তাই বুঝি বেইবি…..

কথাটা শুনেই আঁচল পেছন ফিরে তাকায়…

চলবে…

ডেভিল-বর #পর্ব- ৬ #শিফা_আফরিন

0

#ডেভিল-বর
#পর্ব- ৬
#শিফা_আফরিন
.
.
🍁
তুমি রাজি তো বেইবি? (মুচকি হেসে)

রেহানের কথা শুনে আঁচলের কাশি উঠে যায়।
(এই অসভ্যটা বলে কী! এবার আমি কি করবো? নিজের কথায় যে নিজেই ফেঁসে গেলাম। ধুরর… ভাল্লাগেনা.. মনে মনে)

রেহান – তোমার ভাবনা শেষ হলে আমার কথার উত্তর দাও। (দাঁতে দাঁত চেপে)

আঁচল – কী উত্তর দিবো বলুন? আমি তো প্রথম দিনই আপনাকে বলে দিয়েছি আমি আপনাকে স্বামী মানতে পারবো না। শুধুমাত্র জিসানকে ভালোবাসি এবং ওকেই ভালোবাসবো।
এই সহজ কথাটা কেনো বুঝতে পারছেন না আপনি বলুন তো?

আঁচলের কাছ থেকে রেহান এমন উত্তর আশা করেনি। আঁচলের কথা গুলো শুনে রেহানের প্রচন্ড রাগ উঠে গেছে।
আঁচলের মুখে আবার জিসানের নামটা শুনে রেহানের রাগের পরিমাণ টা যেনো দ্বিগুণ হয়ে গেছে।

আঁচল রেহানের মুখের দিকে তাকিয়ে ভয়ে জমে গেছে।
এতোখন আঁচল রেহান কে শুধু কথা শুনিয়েই গেছে। একবারও রেহানের দিকে তাকায় নি। এখন তো বেচারির যায় যায় অবস্থা।

আঁচল – আসলে আমি ই……

আঁচলকে আর কিছু বলতে না দিয়ে রেহান আঁচলের গলা চেঁপে ধরে।

রেহান – কি ভাবিস নিজেকে হ্যা। তোর এখন বিয়ে হয়ে গেছে। তুই এখন অন্য কারো স্ত্রী। তোর মুখে অন্য ছেলের নাম আসে কি করে?
লজ্জা করে না তোর? বার বার নিজের স্বামীর সামনে অন্য ছেলের নাম নিস।
এতোই যখন জিসান জিসান করিস তাহলে আমার সাথে বিয়েতে রাজি হয়েছিলি কেনো?
আমি কি তোকে জোর করে বিয়ে করেছিলাম?

রেহান আঁচলের গলা চেঁপে ধরেই রেগে কথা গুলো বলছিলো।
এদিকে আঁচলের নিশ্বাস যেনো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে এখুনি মরে যাবে।
আঁচল নিজের দু’হাত দিয়ে রেহানের হাতটা সরাতে চাইছে কিন্তু পারছে না।
আঁচলের দুচোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।

রেহান আঁচলের চোখে পানি দেখে আঁচলকে ছেড়ে দেয়।

রেহান – ( উফফফ.. কেনো যে আঁচলকে কষ্ট দিতে গেলাম। এমনিই ওর মনে আমার কোনো জায়গা নেই। তার মধ্যে বার বার ওকে কষ্ট দিয়ে আরও দূরে সরে যাচ্ছি। কিন্তু আমিই বা কি করবো। আমি তো চাই ওকে নিজের ভালোবাসায় বাঁধতে। ওর মুখে বার বার অন্য ছেলের নাম সহ্য করতে পারি না আর,,,,,, মনে মনে)

রেহান আঁচলের গলা ছেড়ে দিলে আঁচল কাশতে থাকে। আঁচলের চোখ দিয়ে এখনো পানি পড়ছে যা রেহান স্পষ্ট বুঝতে পারছে।

আঁচল – ছেড়ে দিলেন কেনো? মেরে ফেলুন আমায়। অন্তত আপনার এই রুপ টা আর দেখতে হতো না।

রেহান – তুমিই তো ছাড়াতে চাইলে!! না হলে তো আজ সত্যিই মেরে ফেলতাম তোমায়। (আঁচলের কান্না থামাতে ঠাট্টা করে বলে)

আঁচল – একদম ফাইজলামি করবেন না বলে দিলাম। আপনি আসলে একটা বাজে লোক। আপনাকে বিয়ে করতে রাজি হওয়াটাই আমার সবচেয়ে বড় ভুল। আর হ্যা… বলছিলেন না আপনাকে কেনো বিয়ে করলাম?
বিয়ে করেছি শুধুমাত্র মা বাবার কথায়। নয়তো আপনার মতো একটা অমানুষ কে বিয়ে করার কোনো ইচ্ছেই ছিলো না আমার।

রেহান – ওহহহ তাই? আমি অমানুষ? তো তুমি বিয়ের আগেই কি করে জানতে আমি অমানুষ?
নিশ্চয় আমার সম্পর্কে সব খুজ খবর নিয়েছো? হ্যা…. নিতেই পারো। এতো হ্যান্ডসাম ছেলেকে কেউ হাতছাড়া করতে চায় বলো। (বাঁকা হেসে)

আঁচল – হ্যান্ডসাম মাই ফুট…. (রেগে) বলেই চলে আসতে নেয়।
রেহান আঁচলের হাতটা ধরে ফেলে। আঁচলকে টেনে দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরে।

রেহান – যাই বলো না কেনো বেইবি আমাকেই ভালোবাসতে হবে তোমার। যদি নিজে থেকে ভালোবাসো ভেরি গুড… আদারওয়াইজ জোর করে ভালোবাসা আদায় করবো। (মুচকি হেসে)

আঁচল – জোর করে ভালোবাসা পাবেন? হাসালেন!!!!

রেহান – রেহান চৌধুরীর কাছে কোনো কিছুই অসম্ভব নয় বেইবি। জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ। ভালো তো তুমি আমাকেই বাসবে। (বাঁকা হেসে)

আঁচল – ওফফফ অসহ্য।

রেহান আঁচলের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে…..

রেহান – তুমি তো আমাকে স্বামী মানো না তাই না তার মানে তো এটাই দাড়ায় তুমিও আমার বউ না।
আর তাই আমি কাজ ও করবো না। যেদিন বলবে স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছো। সেদিন আমিও আমার উপার্জন করা টাকায় আমার বউ কে খাওয়াবো।
আর তুমি নিশ্চয় বুঝতে পারছো সারা দিন আমি বাসায় থাকলে তোমার কি হাল করবো।
আফটারওল কাল রাতে তো দেখলেই….. (বলেই আঁচলের কানের লতি তে হালকা করে কামড় দেয়)

আঁচল – আই ডোন্ট কেয়ার…. আপনি কাজে যান বা জাহান্নামে যান আমার দেখার কিছুই নেই।

রেহান – উহুম….. কাজেও যাবো না জাহান্নামে ও যাবো না। সারা দিন তোমার কাছেই থাকবো। এখন খুশি তো? (মুচকি হেসে)

আঁচল রেহানের কথায় চরম বিরক্ত হয়ে রেহান কে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে চলে আসতে নেয়।

রেহান পিছন থেকে আঁচলকে জড়িয়ে ধরে আবার নিজের কাছে নিয়ে আসে।
আঁচলের ঘাড়ে আলতো করে চুমু দিয়ে থুতনি রেখে বলে…..

রেহান – চলে যাচ্ছো যে? শাস্তি তো এখনো দিই নি। (আঁচলের ঘাড়ে নাক ঘসে)

আঁচল রেহানের এমন আচরণে বেশ অসস্থি ভোগ করে..

আঁচল – ক..কিশের শাস্তি?

রেহান আঁচলের ঘাড়ে চুমু দিয়ে বলে….
রেহান – ভুলে গেলে বেইবি। শাস্তি তো দিবোই। প্রথমত আমাকে মাথা ব্যাথার কথা বলে বোকা বানিয়ে চলে গেছো। আর দ্বিতীয়ত আমাকে কাজের জন্য খুটা দিয়েছো।

চলবে…

ডেভিল বর #পর্ব – ৫ #শিফা_আফরিন

0

#ডেভিল বর
#পর্ব – ৫
#শিফা_আফরিন
.
.
🍁
আঁচল বুঝতেও পারেনি রিমি চলে গেলেও বাহিরে দাঁড়িয়ে একজন সব শুনছে।

আঁচল – ওহো রিমি তো বলেছিলো বাবা নাকি সকালে চা খায়। আমি বরং বাবার জন্য চা করে নিয়ে যাই। নিশ্চয় উনি দেখে অনেক খুশি হবে।

আঁচল রেহানের বাবার জন্য চা বানাতে থাকে আর রেহান কে বকতে থাকে।

আঁচল – আস্ত একটা ডেভিল। কোনো কাজ করে না বাবার টাকায় বসে বসে খায়.. লজ্জাও করেনা নাকি।
বিয়ে করেছে কোথায় বউ কে নিজের টাকায় খাওয়াবে তা না সারা দিন বাসায় থেকে ঢ্যং ঢ্যং করে… ধুররর।
ওই লুচু ব্যাটা কাজে না গেলে তোহ আমার ১২ টা বাজাবে।

হায় খোদা এই ডেভিল টাকে বিয়ে না করে ইঁদুরের বিষ খেয়ে মরে যেতাম তাও ভালো ছিলো। আমার জীবন টাই শেষ করে দিলো হুহহহ।

—- তাই বুঝি? থামলে কেনো বলো বেইবি,,,

আঁচল চা হাতে নিয়ে যেই রান্না ঘর থেকে বের হতে নিবে অমনি কারো কন্ঠ শুনতে পেয়ে থমকে দাঁড়ায়।
রেহান এতক্ষন বাহিরে দাঁড়িয়ে সব শুনছিলো আঁচল বুঝতেও পারেনি।

রেহান চোখ মুখ শক্ত করে কথাটা বলে। রাগে রেহানের চোখ দু’টো রক্তবর্ণ ধারন করেছে।

আঁচল রেহানকে দেখা মাত্রই ভয়ে হাতে থাকা চার কাপ টা ফেলে দেয়….

আঁচল – আহহহ….

চার কাপ টা ফেলে দেওয়ায় অনেকটা চা আঁচলের পায়ে পড়ে। বেচারির পা টা বোধহয় পুরেই গেলো।

রেহান দ্রুত আঁচলের কাছে আসে।

রেহান – আঁচল…. কাপটা পড়লো কিভাবে? সাবধানে কাজ করবে তো নাকি..

আঁচল – আ..আপনি ক…কখন এসেছেন? (ভয়ে ভয়ে)

রেহান – অনেক আগেই এসেছি আর তোমার সব কথাও শুনেছি।
এবার রুমে চলো আগে তোমার পা ঠিক করি তার পর তোমার শাস্তি।

আঁচল – কিশের শাস্তি? (কাঁদো কাঁদো হয়ে)

রেহান – আমাকে যে এতক্ষন এতো কথা বললে তার শাস্তি। (রেগে)

আঁচল – সরি। আর হবেনা। (কেঁদেই দিলো)

রেহান – আগে চলো তো তার পর বুঝাচ্ছি। (বলেই আঁচলকে কোলে নিতে নেয়)

আঁচল – আরে কোলে নিবেন কেনো?
আমি হেঁটে যেতে পারবো। এতোটাও লাগেনি।

রেহান – আমি নিশ্চয় তোমার কাছে জানতে চাইনি। (দাঁতে দাঁত চেপে)

রেহানের রাগ দেখে আঁচল চুপ মেরে যায়। রেহান আঁচলকে কোলে তুলে নিয়ে রুমে চলে যায়।

রুমে এসে রেহান আঁচলকে বিছানায় বসিয়ে দেয়।

রেহান আঁচলের সামনে ফ্লোরে বসে পরে।

রেহান – দেখি পা টা…

আঁচল – আরে বললাম না আমার বেশি লাগেনি। সামান্য গরম। আসলে হটাৎ করে পরে যাওয়াতে ভয়ে চিৎকার করে উঠেছিলাম।

রেহান – আমি তোমাকে ইন্টারভিউ দিতে বলিনি। পা দেখাও। (দাঁতে দাঁত চেপে)

আঁচল রেহানের দিকে পা টা একটু এগিয়ে দিতেই রেহান আঁচলের পা টা নিজের হাঁটুর উপর রেখে দেখতে থাকে বেশে লেগেছে কিনা।

রেহান – জ্বলছে বেশি?

আঁচল – সামান্য গরম। জ্বলবে কেনো…

রেহান – তাও অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে নিলে ভালো হবে যদি দাগ পড়ে যায় তো…..

আঁচল – ঠিক আছে আমি পরে লাগিয়ে নিবো নি।

রেহান আঁচলের কথার কোনো জবাব না দিয়ে নিজে অয়েন্টমেন্ট এনে আঁচলের পায়ে লাগিয়ে দেয়।

আঁচল উঠে যেতে নিলেই রেহান আঁচলের হাত ধরে ফেলে….

রেহান – কোথায় যাচ্ছো?

আঁচল – (এই রে ঠিক আটকে ফেলেছে। ভেবেছিলাম কেটে পরবো।)

রেহান – কি হলো চুপ করে আছো কেনো?

আঁচল – ইয়ে মানে…. নিচে যাবো। বাবার জন্য চা করতে।

রেহান – বাবার চা এতক্ষনে নিশ্চয় রিমি দিয়ে এসেছে। তুমি বরং তোমার শাস্তির জন্য তৈরি হয়ে নাও। (মুচকি হেসে)

আঁচল – শাস্তি! (ভয় পেয়ে)

রেহান – হুম। কি জেনো বলছিলে। আবার বলো।

আঁচল – ক…কি ব….বলছিলাম (ভয়ে ভয়ে)

রেহান – তুমি বলবে নাকি আমাকেই বলতে হবে। (রেগে)

আঁচল – আ..আমি বলছিলাম যে.. আপ…আপনি কোনো কাজ ক..করেন না। এটা তো ঠিক না তাই না। (তোতলাতে তোতলাতে)

রেহান – ওহ.. এখন ঠিক ভুল তুমি শিখিয়ে দিবে আমায়?

আঁচল – না একদমই না।

রেহান – তোমার তো অনেক সাহস হয়েছে দেখছি। আমি কাজ করিনা বলে কথা শুনাচ্ছো। তুমি জানো… আজ পর্যন্ত আমার মা ও কাজ নিয়ে কথা শুনায় নি। আর তুমি কাল এসে আজই খুটা দিচ্ছো?

আবার বলছিলে বউ কে নিজের টাকায় খাওয়াতে…. তাই না

আঁচল – না… মা.মানে হ্যা

রেহান – তার মানে তুমি মেনে নিয়েছো যে তুমি আমার বউ।
আর আমি তোমার স্বামী। তাই তো?(মুচকি হেসে)

আঁচল – আমি সেটা কখন বললাম? (অবাক হয়ে)

রেহান – তুমিই তো বললে… ” বিয়ে করেছে কোথায় বউ কে নিজের টাকায় খাওয়াবে তা না “…… বলো নি?

আঁচল রেহানের কথা শুনে যেনো সপ্তম আসমান থেকে ঠাস করে জমিনে পড়েছে।

আঁচল – (এএএ মা এই ডেভিল টা বলে কি। এ তো পুরো আমার কথায় আমাকেই ফাঁসিয়ে দিলো… মনে মনে)

রেহান – কি হলো বেইবি। বলো?

আঁচল – হ্যা বলেছি।

রেহান – তুমি যদি মেনে থাকো তুমি আমার বউ তার মানে আমি তো তোমার স্বামী হবোই তাই না।

আমি না হয় আমার বউ কে নিজের টাকায় খাওয়াবো।
কিন্তু তার জন্য তো আমিও আমার বউয়ের কাছে কিছু চাইতেই পারি কি বলো?
তুমি রাজি তো বেইবি? (মুচকি হেসে)

রেহানের কথা শুনে আঁচলের কাশি উঠে যায়….

চলবে…

ডেভিল বর #পর্ব – ৪ #শিফা_আফরিন

0

#ডেভিল বর
#পর্ব – ৪
#শিফা_আফরিন
.
.
🍁
রেহান আঁচলের কথা কানে না নিয়ে এক হাতে আঁচলের কোমড় ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয় অন্য হাতে আঁচলের ঠোঁটে স্লাইভ করতে থাকে।
রেহানের নিশ্বাস আঁচলের নাক মুখে পড়ছে। আঁচলের মুখ থেকে কথা বের হচ্ছে না।

আঁচল – আ..আমায় যেতে দিন। (খানিকটা বিরক্তি নিয়ে)

রেহান – চুপ….. বলেই আঁচলের ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।
কিছুক্ষন পর রেহান আঁচলের ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে আঁচলের গলায় কিস করে।

আঁচল রেহানকে ছাড়াতে চেষ্টা করতেই থাকে। রেহান আঁচলের হাত দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরে।

রেহান – তোমার প্রবলেম টা কি বলবে আমায়? তুুমি কি ভাবছো তুমি বললেই আমি তোমায় ছেড়ে দেবো।

কালও বলেছি এখন ও বলছি তুমি আমাকে মানতে পারো বা না পারো আই ডোন্ট কেয়ার। আমি তোমাকে চাই ই চাই। আর আমার কোনো কাজে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করবে না কখনো। তাহলে কিন্তু ফল ভালো হবেনা আঁচল। (দাঁতে দাঁত চেপে)

আঁচল রেহানের কথায় অনেক টা ভয় পেয়ে যায়। রেহান আঁচলের ভয় পাওয়া দেখে মুচকি হেসে আঁচলকে কোলে তুলে নেয়।

রেহানের কান্ড দেখে মূহুর্তেই আঁচলের চোখ দু’টো রসগোল্লা হয়ে যায়।
(কোলে নিলো কেনো এই লুচু ব্যাটা৷ হায় আল্লাহ না জানি আবার কি করতে চাইছে। নাহ….কিছু একটা করতে হবে. মনে মনে)

রেহান আঁচলকে কোলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়।
আঁচলের শরীর টা রেহান নেশাভরা দৃষ্টিতে দেখেই যাচ্ছে।
আঁচল রেহানের চাহনি দেখেই বুঝতে পারছে রেহান কি করতে চাচ্ছে।

আঁচল রেহান কে কিছু বলতে যাবে তার আগেই রেহান আঁচলের ঠোঁটে আলতো করে চুমু দেয়।
আঁচল চোখ মুখ খিচে আছে।

আঁচল – বেশি হয়ে যাচ্ছে। এক্ষুনি কিছু একটা করতে হবে.. মনে মনে

রেহান – বেইবি তুমি তৈরি তো? সেকেন্ড টাইম শাওয়ার নিতে। (মুচকি হেসে)

আঁচল – ওওওওও মা গো…..

রেহান হটাৎ আঁচলের চিৎকার শুনে কিছুটা চমকে যায়।

রেহান – কি হলো আঁচল। চিৎকার করলে যে? বলো আমায় কি হয়েছে?

আঁচল – জানিনা হটাৎ করেই মাথা টা অনেক ব্যাথা করছে।

রেহান এবার চিন্তায় পরে যায়। কি হলো মেয়েটার এতো খন তো ভালোই ছিলো।

রেহান – তুমি শুয়ে থাকো। আমি রুমে তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসছি সাথে একটা পেইনকিলার ও নিয়ে আসবো। তুমি উঠো না কিন্তু।

রেহান আঁচলের কাছ থেকে সরতেই আঁচল শুয়া থেকে উঠে এক দৌড়ে রুমের বাহিয়ে চলে আসে।

রেহান বেচারা বেকুবের মতো দাড়িয়ে আছে।

রেহান – কি হলো এটা! ওর না মাথা ব্যাথা করছিলো? ওহহহহ…..বুঝেছি আমায় বোকা বানানো হয়েছে তাই না। এই টুকুনি একটা মেয়ে আমাকে বোকা বানালো আর আমি বুঝতেই পারলাম না! ধুররর……
দাড়াও না একবার হাতের মুঠোয় পাই তোমার খবর আছে।

আঁচল এক দৌড়ে নিচে আসতেই (রেহানের বোন) রিমির মুখোমুখি হয়…

রিমি – কি গো ভাবি এভাবে দৌড়াচ্ছো কেনো?

আঁচল – ইয়ে মানে এমনি… (ধুর কেনো যে দৌড়ে আসলাম! এখন ও কি ভাববে? নতুন বউ কিনা দৌড়াদৌড়ি করে… ভাবা যায়…! মনে মনে)

রিমি – উহুম….এমনি এমনি কেউ দৌড়ায় নাকি। নিশ্চয় কারন আছে। তা কারন টা কি ভাবি? কেউ কি তাড়া করছিলো নাকি.. (চোখ মেরে)

আঁচল – আরেহহ না না। যাকগে বাদ দাও ওসব কথা। তুমি তো দেখতে অনেক সুন্দর। আচ্ছা তোমার নাম টাই তো জানা হয়নি।

রিমি – হুহহ…. কথা ঘুরাচ্ছো তাই না। আমার চোখে ফাঁকি দেয়া কিন্তু এতো সহজ না মেরি ভাবিজি।
বাই দ্য ওয়ে আমার নাম রিমি। আর আমি তোমার কি হই জানো তো? একমাত্র ননদিনী।

আঁচল – হুম সেটা তো জানি।

রিমি কথা বলতে বলতে হটাৎ আঁচলের ঠোঁটের দিকে নজর যায়…

রিমি – এ মা ভাবি। তোমার ঠোঁট গুলো এতো লাল হয়ে আছে কেনো? মশা কামড় দিলো নাকি? (মুচকি হেসে)

আঁচল বুঝতে পারে এটা রেহানের কারনেই হয়েছে। ব্যাটা লুচু যেভাবে আমার ঠোঁটের উপর হামলা করেছে… মনে মনে।

রিমি- কি হলো ভাবিজি বলো বলো…

আঁচল – না মানে লিপস্টিক দিয়েছিলাম আরকি।

রিমি – ওহো তাই বুঝি?

আঁচল – হুম। আচ্ছা রিমি রান্না ঘর টা কোনদিকে একটু দেখাবে প্লিজ।

রিমি – মানে! তুমি রান্না ঘরে গিয়ে কি করবে শুনি? তাছাড়া মা একটু বাহিরে গেছে এখনি চলে আসবে। মা বলে গেছে তোমাকে যেনো কোনো কাজ করতে না দিই।
যদি ফিরে এসে শুনে তোমাকে রান্না ঘরে কাজ করতে দিয়েছি জানো তো কি হবে?

আঁচল – আহা কিছু হবেনা। আমি মাকে বলবো নি। তুমি বরং আমাকে রান্না ঘর টা দেখিয়ে দাও।

রিমি – না তা হচ্ছে না। তুমি বরং আমার সাথে আমার রুমে চলো। এক সাথে গল্প করবো দু’জন।

আঁচল – হ্যা তা তো অবশ্যই করবো। এখন আগে রান্না ঘর টা দেখাও। পরে সারা দিন তোমার সাথে গল্প করবো কেমন?

রিমি – ওকে চলো তবে কোনো কাজ করো না কিন্তু। মা আমায় বকবে পরে।

আঁচলের জোরাজোরি তে রিমি আঁচল কে রান্না ঘরে নিয়ে যায়।

এদিকে… রেহান ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে আঁচল এখনো রুমে আসেনি।

রেহান – এখনো রুমে আসেনি বজ্জাতের হাড্ডি টা। ঠিক আছে আমিও দেখি তুমি কতক্ষণ রুমে না এসে থাকতে পারো। (মুচকি হেসে)

রেহান নিচে চলে আসে। নিচে এসেও আঁচলকে খুজে পায়নি।

রেহান ভাবে আঁচল হয়তো রান্না ঘরে গেছে। রেহান রান্না ঘরের সামনে যেতেই আঁচল আর রিমির কথা শুনতে পায়…..

আঁচল -আচ্ছা রিমি তোমার ভাইয়া অফিসে যায় কখন আর কখন ফেরে?

রিমি আঁচলের কথা শুনে হো হো করে হেসে দেয়।

আঁচল – হাসছো যে? (অবাক হয়ে)

রিমি – হাসবো না! তুমি কি বললে ভাইয়া আর অফিস!
ভাবিজি ভাইয়া আজ পর্যন্ত অফিসে যায়নি ইভেন ভাইয়া কোনো কাজ ও করে না। তার কাছে নাকি এই সব বোরিং লাগে।

আঁচল – তাহলে অফিস কে সামলায়?

রিমি – বাবা।

আঁচল – ওহহহ।

রিমি – ভাবি তুমি থাকো একটু আমি রুম থেকে আমার ফোন টা নিয়ে আসছি।

আঁচল – ঠিক আছে যাও।

রিমি চলে গেলে আঁচল সবার জন্য রুটি বানাতে আটা মাখতে শুরু করে।

আঁচল আটা মাখছে আর নিজে নিজে বক বক করছে…

আঁচল – ছি ছি শেষে কিনা এমন একটা ছেলের সাথে আমার বিয়ে হলো যে কিনা কোনো কাজ করে না বাবার টাকায় খায়।

আঁচল বুঝতেও পারেনি রিমি চলে গেলেও বাহিরে দাড়িয়ে একজন সব শুনছে।

চলবে…..

ডেভিল বর #পর্ব- ২+৩ #শিফা_আফরিন

0

#ডেভিল বর
#পর্ব- ২+৩
#শিফা_আফরিন
.
.
🍁
আঁচলের শরীর থেকে শাড়ি টা সরে যায়.. আঁচল তারাতারি করে শাড়িটা দিয়ে নিজের শরীর ঢেকে ফেলে।

রেহান – আমিই তো..এভাবে প্যাকেট হওয়ার কি আছে। (মুচকি হেসে)

আঁচল – ছাড়ুন আমায়। আরো কিছু করার বাকি আছে আপনার? (রেগে)

রেহান – না তা না। তবে তুমি চাইলে করতেই পারি।

আঁচল বিরক্তির সাথে রেহানের কাছ থেকে সরে যেতে নিলেই রেহান আবার আঁচল কে নিজের বুকে ফেলে দেয়।

রেহান – জানো… ওহো তোমার নামটাই তো জানা হলো না। বাই দ্য ওয়ে… তোমার নাম কী?

আঁচল রেহানের কথা শুনে রাগে গজগজ করছে। (কেমন লোক রে বাবা! বিয়ে করেছে এতো কিছু হয়ে গেলো এখনো নাকি আমার নামটাই জানে না। ইচ্ছে করে পানিতে চুবিয়ে মারি.. মনে মনে)

রেহান – কি হলো বলো?

আঁচল – জানিনা।

রেহান – আমি জানি। (মুচকি হেসে)

আঁচল রাগি ভাব নিয়ে রেহানের দিকে তাকায়।

রেহান – তুমি কি মনে করেছো কিছু না জেনেই তোমাকে বিয়ে করেছি?
আমি সব শুনেছি এবং সব জেনেই তোমাকে বিয়ে করেছি। (শান্ত গলায়)

আঁচল অবাক হয়ে রেহানের দিকে তাকায়

রেহান – হুম জিসানের কথা আমিও জানি। আচ্ছা আঁচল সব কিছু ভুলে নতুন করে জীবন শুরু করতে পারো না?
আমি কি এতোটাই খারাপ? তুমি জিসানের জন্যে আমাকে কষ্ট দিচ্ছো!

আঁচল – কষ্ট দিলাম কখন? কষ্ট দেয়ার সুযোগ দিয়েছেন আপনি? আমার কোনো কথাই তো শুনেন নি। নিজের ইচ্ছে হলো ব্যাস পূরণ করে নিলেন।

আর হ্যা জিসানের কথা যখন শুনেইছেন তবে আমাকে বিয়ে করলেন কেনো? কিশের জন্য?
আমি এখনো জিসান কেই ভালোবাসি। আর আপনি আমার সাথে জোর করে শুধু আপনার কামনা মেটাতে পারবেন।
আমি মন থেকে কখনো আপনাকে মেনে নিবো না। নেভার।

রেহান – আঁচল তুমি এখন আমার ওয়াইফ। তুমি আমার সামনে অন্য ছেলের নাম মুখে আনছো কিভাবে?

আঁচল – অন্য ছেলে না জিসানকে আমি ভালোবাসি বুঝেছেন!

রেহান রেগে একহাতে আঁচলের দু গাল চেপে ধরে বলে…

রেহান – ভালোবাসা মাই ফুট… তোর এই সব ন্যাকামি ভুলে যা। আজকের পর থেকে আমার সামনে আর কোনো দিনও কোনো ছেলের নাম নিবি না। আর রইলো তোর মনে জায়গা!!!
সেটা না পেলেও আমার কোনো আপত্তি নেই শুধু তোর শরীর পেলেই চলবে। মাইন্ড ইট। (রেগে)

আঁচলের চোখ বেয়ে পানি পড়তে থাকে। তার মানে রেহান ও শুধু তার শরীর চায়? রেহান ও ভালোবাসে নি? একটু আগেও আঁচল ভেবেছিলো রেহানের প্রতিটা স্পর্শ শুধু ভালোবাসার! কিন্তু না।
ভাবতেই আঁচলের গাল বেয়ে কয়েক ফোটা পানি পরে।

রেহান – কাঁদছো কেনো আজিব? যাই হোক.. জানো আঁচল আমার খুব ইচ্ছে ছিলো বিয়ের পর বউ এর সাথে প্রেম করবো, প্রতিদিন রাতে আমার বুকে ঘুমুতে দিবো। এখন তো দেখছি তোমার দ্বারা এসব কিছুই সম্ভব নাহ।

আঁচল অবাক হয়ে যায় রেহানের কথায়। একটু আগেই তো কত কথা বললো। এখন আবার বলছে বুকে ঘুমুতে দিবে। এই লোক টার মাঝে অনেক রহস্য!

রেহান আঁচলকে চুপ থাকতে দেখে আঁচলের দিকে তাকিয়ে দেখে আঁচল এক দৃষ্টিতে রেহানের দিকে তাকিয়ে আছে।
আঁচল কিছুক্ষন আগে রেহানের কাছ থেকে সরতে ছুটাছুটি করায় আঁচলের শরীরের অনেক টা অংশ থেকেই কাপড় সরে গেছে।
আঁচল কে এই অবস্থায় দেখে রেহানকে অদ্ভুত নেশা গ্রাস করে। রেহান নেশাসক্ত দৃষ্টিতে আঁচলের সারা শরীর দেখছে।

আঁচলের সেদিকে কোনো হুশ নেই। সে একদৃষ্টিতে রেহান কে দেখে যাচ্ছে।

রেহান – আঁচল তুমি তো দেখছি আমাকে পাগল করেই ছাড়বে। (নেশা ধরা কন্ঠে)

আঁচল রেহানের কথার কিছুই বুঝতে পারে নি। সে রেহানের চোখের দিকে তাকাতেই দেখে রেহান তাকে ঘোরগালা দৃষ্টিতে দেখছে।

আঁচল নিজের দিকে তাকাতেই চোখ দু’টো বড় বড় হয়ে যায়। আঁচল নিজের শরীর টা শাড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে রেখেছিলো। রেহানের সাথে মুচরামুচরি করে কখন যে শাড়ি সরে গেছে বেচারি টের ও পায়নি।

আঁচল – এই জন্যই খচ্চর টা এভাবে তাকিয়ে আছে… মনে মনে।
আঁচল তারাতারি করে শাড়িটা শরীরে দিতে গেলেই রেহান আটকে ফেলে।

রেহান – আমাকে পাগল করে দিয়ে এখন কি পালানোর ধান্দা করেছো নাকি?

আঁচল – মা…মানে.. (রেহানের কাছ থেকে সরতে সরতে)

রেহান – মানে টা দেখাচ্ছি…. বলেই আঁচল কে এক টানে নিজের কাছে নিয়ে আসে।
রেহান আঁচলের ঠোঁটে চুমু দিতে থাকে। একসময় কামড় দেয়া শুরু করে। আঁচলের শরীর থেকে শাড়িটা সরিয়ে ফেলে।………..
.
.
সকালে..
রেহান এখনো ঘুমাচ্ছে। আঁচলের ঘুম ভেঙে যেতেই দেখে সে রেহানের বুকে।
রেহান তাকে এমন ভাবে জড়িয়ে ধরে আছে আঁচলের ছোটার কোনো উপক্রম নেই।
আঁচল অনেক চেষ্টা করেও রেহানের কাছ থেকে ছুটতে পারছে না।

আঁচল রেহানের দিকে তাকাতেই আঁচলের চোখ আটকে যায়।
রেহান এমনি তেই সুন্দর ঘুমের মধ্যে রেহান কে আরও সুন্দর লাগছে।
আঁচল রেহান কে একদৃষ্টিতে দেখে যাচ্ছে।

এদিকে রেহান ঘুম থেকে উঠে আঁচলের কান্ড দেখে মিটিমিটি হাসছে। সেদিকে আঁচলের হুশ নেই।

রেহান – আমি জানি তোহ আমি সুন্দর। তাই বলে এভাবে তাকিয়ে থাকবে? আমার ওত লজ্জা করে নাকি,,(চোখ মেরে)

আঁচল অসস্থিতে পরে যায় ,,,

আঁচল- সরুন আপনি…. আমি উঠবো।

রেহান – কেনো বউ?

আঁচল – কেনো মানে! আমি কি আপনার সাথে সারা দিন থেকে সিনেমার অভিনয় করবো নাকি?

রেহান – উহুম… রোমান্স করবে। (মুচকি হেসে)

আঁচল – অসহ্য….. বলেই উঠে যেতে নেয়। রেহান আঁচলের হাত ধরে টান দিতেই আঁচল রেহানের বুকে এসে পরে..

চলবে…

#ডেভিল বর
#পর্ব- ৩
#শিফা_আফরিন
.
.
🍁
রেহান- উহুম… রোমান্স করবে। (মুচকি হেসে)

আঁচল – অসহ্য বলেই চলে যেতে নেয়। রেহান আঁচলের হাত ধরে টান দিতেই আঁচল রেহানের বুকে এসে পড়ে।

রেহান- এতো পালাই পালাই করো কেনো বলো তো? আমার মতো এতো হ্যান্ডসাম বর পেয়েছো.. কোথায় সারা দিন আদরে রাখবে তা না..

আঁচল – শুনুন আপনার বকবকানি শুনার বিন্দু মাত্র আগ্রহ আমার নেই। আমাকে ছাড়ুন প্লিজ।

রেহান – কেনো কোথায় যাবা?

আঁচল – আজিব! আমি শাওয়ার নিবো না?

রেহান – অহহ এই কথা। ভালো এখন যাও শাওয়ার নিতে। পরে আবার নিতে হবে বলে দিলাম তখন কিন্তু আমার উপর রাগ করতে পারবে না বলে দিলাম (চোখ মেরে)

রেহানের কথা শুনে আঁচলের চোখ বড় বড় হয়ে যায়। মনে হচ্ছে এখনি বুঝি চোখ দুইখানা বেরিয়ে আসবে।
(এই অসভ্য বলে কি!! সারা রাত তো ঘুমুতে দেয়ই নি আবার এখন…… নাআআআ আমি তোহ মরেই যাবো মনে হচ্ছে.. মনে মনে)

রেহান – কি হলো বেইবি? কি ভাবছো? দুইবার শাওয়ার নিবে নাকি এখনি…. (মুচকি হেসে)

আঁচল কি বলবে বুঝতে পারছে না। কিন্তু সে এখন কোনো ভাবেই রেহানের চক্করে পরতে চায় না।
(ধুর বাবা এখন বরং শাওয়ার নিতে যাই। পরের টা পরে দেখা যাবে। মনে মনে)

রেহান – বেইবিইইই…. আঁচল কে ঝাকুনি দিয়ে।

আঁচল – হ্যা হ্যা…

রেহান – কি এতো ভাবছো বলো তো?

আঁচল – বলছিলাম যে আমি শাওয়ার নিতে যাবো এখন।

রেহান – তার মানে তুমি দুবার শাওয়ার নিতে চাও তাই তো? (ভ্রু কুচকে)

আঁচল – হ্যা। (দু’বার না ছাই… পরের টা পরে দেখে নিবো। দেখি কিভাবে আমার নাগাল পাও হুহহ। মনে মনে)

রেহান – ঠিক বলছো তো? পরে আমার দুষ দিবে না কিন্তু। (মুচকি হেসে)

আঁচল – ওকে বাবা এখন ছাড়ুন তো।

রেহান – ছাড়তে পারি। তবে একটা শর্তে!

আঁচল – আবার কি শর্ত? আপনার কথা মতো তো দু’বার শাওয়ার নিতে রাজি হয়েছি। (অবাক হয়ে)

রেহান – হ্যা সেটা তো হবেই। কিন্তু এখন আমার মিষ্টি চাই।

আঁচল – কিহহহহ! আপনি ঘুম থেকে উঠে এখনো মুখ ধুতে যাননি আর বলছেন মিষ্টি খাবেন!! এই আপনি কি সকালে মুখ না ধুয়েই খাবার খান নাকি? ইয়াককক ছিহহ।
আপনি দেখছি আস্ত একটা খাটাস।

রেহান আঁচলের কথা শুনে হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছেনা।

রেহান – এই চুপপপ। কি সব আবল তাবল বকছো? আমি কি ঐ মিষ্টির কথা বলেছি নাকি?

আঁচল – আপনিই তো বললেন।

রেহান – ওকে বুঝেছি মুখে বলে কাজ হবেনা। আমাকেই নিতে হবে।

আঁচল – হ্যা তো আপনিই নিন না। (আমাকে দিয়ে মিষ্টি আনাবে হুহহ.. কাজের মেয়ে নাকি আমি। মনে মনে)

আঁচলের ভাবনায় জল ঢেলে দিয়ে রেহান আঁচলের কোমড় জড়িয়ে ধরে কাছে এনে আঁচলের ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।

আঁচল রেহান কে ছাড়াতে ছুটাছুটি শুরু
করে দেয়। রেহান আঁচলে আরও শক্ত করে ধরে চুমু খেতে থাকে।

৫ মিনিট পর রেহান আঁচলকে ছেড়ে দেয়।

রেহান – ব্যাস… আমার মিষ্টি খাওয়া শেষ। এবার তুমি শাওয়ার নিতে যেতে পারো। আর হ্যা সেকেন্ড টাইম শাওয়ার নিতে হবে ভুলো না কিন্তু। (চোখ মেরে)

আঁচল হা করে দাঁড়িয়ে আছে। কি বলছে রেহান। চুমু দিয়ে বলে মিষ্টি খাওয়া শেষ। তার মানে এতো খন ঐ মিষ্টির কথা বলেনি… মনে মনে।

আঁচল রেগে ওয়াশরুমে ঢুকে পরে। রেহান আঁচলের রাগ দেখে হাসতে হাসতে শেষ।

অনেক খন হয়ে গেলো আঁচলের বেরুনোর নাম গন্ধও নেই। রেহান আঁচলের জন্য ওয়েট করতে করতে হাঁপিয়ে যায়।

রেহান – এই মেয়েটা কি আজ ওয়াশরুমে থাকবে বলে ডিসাইড করলো নাকি। এতো খন লাগে ওর শাওয়ার নিতে। (রেগে)

রেহান আঁচলকে ডাকতে শুরু করে….

রেহান – আঁচল… এই আঁচল…. হলো তোমার? এতো খন ধরে কেও শাওয়ার নেয়? ঠান্ডা লেগে যাবে তো।

আঁচলের কোনো রেসপন্স নেই। রেহানের রাগ টা আরও বেরে যায়।

রেহান – আঁচল তুমি যদি এখনি না বের হও আমি কিন্তু দরজা ভেঙে ফেলবো। (দাঁতে দাঁত চেপে)

রেহান আবার আঁচলকে ডাক দিতে নিলেই দরজা খুলে যায়।
রেহান সামনে থাকা আঁচলকে দেখে থমকে যায়।
খয়েরী রং এর জামদানি শাড়ি, ভেজা চুল গুলো কোমড় অব্দি ছাড়া, শাড়ি টা পাতলা হওয়ায় আঁচলের পেট টা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে রেহান।

রেহানের কেমন জেনো ঘোর লেগে যাচ্ছে। সে আঁচলের মাথা থেকে পা পর্যন্ত পর্যবেক্ষন করে যাচ্ছে।

আঁচল রেহান কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভয়ে ঢোক গিলে।

আঁচল – (এই লুচু ব্যাটা এমন ভাবে তাকিয়ে আছে কেনো? ও কি আবার কিছু করার প্লান করছে নাকি? না বাবা এই লুচু কে বিশ্বাস করা যায় না। আমি বরং কেটে পরি এখান থেকে। মনে মনে)

আঁচল রেহানের কাছ থেকে চলে যেতে নিলেই রেহান আঁচলের হাত ধরে আটকে ফেলে।

আঁচল – এই রে যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই হলো।

রেহান আঁচলের হাত ধরে আঁচলকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে..

রেহান – কোথায় পালাচ্ছো তুমি?

আঁচল – মা.. মানে?

রেহান আঁচলের গলায় মুখ গুঁজে ঘোর লাগা কন্ঠে বলে…..

রেহান – আমাকে পাগল করে দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছো? তা তো হতে দিবো না।

আঁচল যেনো বরফ হয়ে যাচ্ছে রেহানের এতোটা কাছে আসায়।

আঁচল – আমার ক্ষিধে পেয়েছে। প্লিজ আমায় নিচে যেতে দিন। (কাঁপা কন্ঠে)

আঁচলের এমন কাঁপা কন্ঠে রেহানের নেশা টা আরও বেরে যায়।

রেহান – উহুম…. আগে আমাকে খেতে দাও। (ফিসফিস করে)

আঁচল – খাবেন তো ভালো কথা। যান ফ্রেশ হয়ে নিচে যান।

রেহান – খাবো তো তোমার দেয়া মিষ্টি বেইবি।(মুচকি হেসে)

রেহানের কথা শুনে আঁচলের বুঝতে বাকি রইলো না যে সে কি চাচ্ছে।

আঁচল – দেখুন কোনো অসভ্যতামি করবেন না। আমাকে নিচে যেতে দিন প্লিজ।

রেহান আঁচলের কথা কানে না নিয়ে এক হাতে আঁচলের কোমড় ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। আরেক হাতে আঁচলের ঠোঁটে স্লাইভ করতে থাকে।

চলবে…

ডেভিল বর #প্রথম পর্ব #শিফা_আফরিন

0

— দেখুন একদম আমায় ছুবেন না। আমি আপনাকে আমার স্বামী মানি না। এ বিয়ে ও আমি মানি না। (আঁচল)

রেহান – তুমি মানো না তো কী হয়েছে শুনি,, আমি মানি। আর কি জেনো বলছো ছুবো না তোমায়! হা হা…. আজ আমাদের বাসর আর তুমি আমার বিয়ে
করা বউ। তোমাকে বিয়ে করেছি কি আলমারিতে সাজিয়ে রাখার জন্য!

আঁচল – বসর মাই ফুট। আমি তো আপনাকে মানতেই পারি নি আবার বাসর!
আমার ধারে কাছেও আসার চেষ্টা করবেন না। নয়লে কিন্তু খুব খারাপ হবে বলে দিলাম।

রেহান – আচ্ছা! তো কি করবে তুমি? তুমি কী ভেবেছো তুমি ভয় দেখালেই আজকের মতো অমন একটা রাত আমি তোমায় না ছুঁয়েই কাটিয়ে দেবো। নোউ ওয়ে। (আঁচলে দিকে এগুতে এগুতে)

আঁচল – আপনাকে বললাম না আমার কাছে আসবেন না। আপনি এভাবে এগুচ্ছেন কেনো? (পিছাতে থাকে আঁচল)

রেহান আঁচলের কাছে চলে আসতেই আঁচল দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে চায়।
রেহান আঁচলের এক হাত ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে।

রেহান – কি মনে করো? তুমি পালাতে চাইলেই আমি তোমাকে পালাতে দিবো? তোমাকে বিয়ে করেছি কি দূরে রাখার জন্য?
তাও আবার আজকের মতো একটা রাত। এখনো ত কিছুই করলাম না আর তুমি পালিয়ে যাচ্ছো? (মুচকি হেসে)

আঁচল – ক…কি করবেন.. আ..আপনি?

রেহান – সেটা না হয় করেই দেখাই। (চোখ মেরে)

আঁচল – আমি কিন্তু চেঁচাবো। ভালোই ভালোই আমায় ছেড়ে দিন বলছি।

রেহান – ওহো তুমি আসলেই একটা বোকা। বাসর রাতে যদি এভাবে চেচাঁমেচি করো তো বাহিরে মেহমান রা আছেন। তারা কি ভাববেন বলো তো। লজ্জা কিন্তু তুমিই পাবে। আমি না। (মুচকি হেসে)

আঁচল – ছা….
আর কিছু বলতে না দিয়েই রেহান আঁচলের কোমড় ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। আঁচল নিজেকে ছাড়াতে ছুটাছুটি করতেই থাকে। রেহান আঁচলের ঠোঁট দু’টো নিজের ঠোঁট দিয়ে আঁকড়ে নেয়।
পাগলের মতো চুমু খেতে থাকে আঁচলের ঠোঁটে। রেহান আঁচলের ঠোঁটে হালকা কামড় দিতেই আঁচল রেহানের কাছ থেকে সরে যেতে চায়। রেহান আবার আঁচলকে নিজের কাছে এনে আঁচলের গলায় ঘাড়ে চুমু দিতে থাকে সাথে কামড় ও দিয়ে যাচ্ছে।

আঁচল একদিকে কামড়ের ব্যাথায় অন্য দিকে অসস্থিতে ছটফট করছে।কিন্তু রেহানের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। সে এক গভীর নেশায় ডুবে আছে।

রেহান আঁচলকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়। আঁচল উঠে যেতে নিলে রেহান আবার ধাক্কা মেরে আঁচল কে ফেলে দিয়ে নিজে আঁচলের উপর উঠে আঁচলের হাত দুটি বিছানায় সাথে চেঁপে ধরে।

রেহান – তুমি চাইলেও আজ আমার কাছ থেকে দূরে যেতে পারবে না। তোমার খারাপ লাগলেও, তুমি না মানলেও আমার কিছুই যায় আসে না বেইবি।

আঁচলের রাগে কষ্টে নিজের চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে।

রেহান স্পষ্ট আঁচলের চোখে পানি দেখতে পায় কিন্তু সেদিকে কোনো নজর না দিয়ে রেহান আবার আঁচলের ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়। আঁচলের শাড়ির আঁচল টা এক টানে সরিয়ে দিতেই আঁচল শব্দ করে কেদে দেয়।
তাও রেহান নিজের চিন্তা ভাবনা থেকে সরে নি। আঁচলের গালে গলায় কিস করতেই থাকে। আঁচলের শাড়ির কুঁচি টা খুলে ফেলতেই আঁচল বিছানার চাদর খামচে ধরে নিশব্দে কাঁদতেই থাকে।
রেহানের কানে আঁচলের কান্না পৌঁছাতে পারে নি। সে এক অজানা অনুভূতি তে ডুবে আছে।

রাত প্রায় ৩ টা…

আঁচল নিজের শাড়ী টা কোনো রকমে শরীরে পেচিয়ে বসে কান্না করেই যাচ্ছে।

রেহানকে আঁচলের মেনে না নেয়ার ও কারন আছে। কারন টা জেনে নিই….

(আঁচল কলেজে পা রাখতেই একটা ছেলের সাথে বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়। কিছু দিন যেতেই সেই বন্ধুত্ব টা ভালোবাসায় পরিনত হয়। অবস্য আঁচল রাজি ছিলো না কিন্তু জিসান (ছেলেটা) এর পাগলামো দেখে আঁচল ও তার প্রতি দূর্বল হয়ে পরে।
সেই থেকেই শুরু হয় তাদের ভালোবাসা। দু’জন দুজনকে অনেক ভালোবাসতো, অনেক কেয়ার করতো। আঁচল ও জিসান কে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলো। কিন্তু বছর পরই জিসান আঁচলের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। আঁচল চিন্তায় পরে যায়। পরদিন জিসানের সাথে আঁচলের দেখা হতেই জিসান বলে সে আঁচলের থেকে অনেক ভালো মেয়ে চায়।
সেদিন জিসান আঁচলের সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দেয়। এমনকি আঁচলের নাম্বার ও ব্লক করে দেয়।
সেই থেকে আঁচল পাগলের মতো হয়ে যায়। ঠিক মতো খায় না। কারো সাথে কথাও বলে না আঁচলের মা বাবা আঁচলকে এভাবে দেখে ঠিক থাকতে পারে না।
আঁচলের বড় ভাই রিয়াদ আঁচল আর জিসানের ব্যাপারে সব জানতে পারে।
রিয়াদ তার মা বাবাকে সব খুলে বলতেই তারা ভাবে আঁচলের বিয়ে দিলে হয়তো ওই ছেলেকে আঁচল ভুলতে পারবে। আঁচলের মা বাবা আঁচলের জন্য বিয়ে ঠিক করে কিন্তু আঁচল বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেয়।
শেষে আঁচলের বাবা আর মার কথায় এক প্রকার জোর করেই আঁচলের বিয়ে টা হয় রেহানের সাথে।
আঁচল এখনো জিসান কেই ভালোবাসে তাই সে কোনো ভাবেই রেহানের এই সব মেনে নিতে পারছে না)

— এভাবে বসেই কি সারা রাত পার করে দিবে?

হটাৎ রেহানের কথায় আঁচল ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে।

রেহান – কি হলো ঘুমাবে না? নাকি আরও আদর চাই? (মুচকি হেসে)

আঁচল রেহানের কথা শুনে প্রচুর রেগে যায়।

আঁচল – আপনি একটা অমানুষ, এভাবে আমার অনিচ্ছা স্বত্বেও আমার উপর আপনি অধিকার ফলিয়েছেন!!

রেহান – এবার থেকে সব কিছুই তোমার অনিচ্ছা স্বত্বেই হবে জান বলেই আঁচলকে হেচকা টানে নিজের কাছে আনে।

আঁচলের শরীর থেকে শাড়ি টা সরে যায়। আঁচল তারাতারি করে শাড়িটা দিয়ে নিজেকে ভালো করে ঢেকে নেয়।

রেহান – আমিই তো। এভাবে প্যাকেট হওয়ার কি আছে?? (মুচকি হেসে)

চলবে🍂

#ডেভিল বর
#প্রথম পর্ব
#শিফা_আফরিন

‘তুই’ ‘তৃধা মোহিনী’ শেষ পর্ব ছয়

0

‘তুই’

‘তৃধা মোহিনী’

শেষ পর্ব ছয়

.
দিন যায়,মাস যায় কিন্তু ধ্রুভ আর মীরার সম্পর্কের কোন উন্নতি হয় না।ধ্রুভ কাছে আসতে চেয়েছে যতবার ততবারই মীরা তাকে বাধা দিয়েছে।তার কারন এই না যে সে প্রত্যয় কে ভালোবাসতো।প্রত্যয় শুধু তার বেষ্টফ্রেন্ড ছিলো।তার সুখ দুঃখ সকল কিছুর সাথী ছিলো প্রত্যয়।

একদিন সন্ধ্যায় বেলায় প্রচুর তুমুল বেগে বর্ষণ হচ্ছে।মীরা আজকে হলুদ রাঙা শাড়ি পরেছে।ধ্রুভ এখনো অফিস থেকে ফিরে নি।তারা বনানীর একটা ফ্ল্যাট নিয়ে থাকছে।তার দাদাজান হয়তো চেয়েছিলেন এইভাবে কিছু একান্ত সময় কাটাতে যেন তারা একে অপরের ভুল বুঝাবুঝি দূর করতে পারে।

মীরা ওই সময়,’হুমায়ুন স্যারের’ ‘অপেক্ষা’ বইটা পড়ছিলো।বাইরে ঝুমঝুম বৃষ্টি হচ্ছিলো খুব।মন টা এমনিতে বিষন্নতায় ভরপুর ছিলো তার উপর এরকম ঝুমঝুম বৃষ্টি নজর কাড়ছে বারবার।গুটি কয়েক পায়ে বারান্দায় যেয়ে মীরা দুই হাত মেলে বৃষ্টি উপভোগ করছে।

বৃষ্টির ফোটা মীরার সারা শরীর ভিজিয়ে দিয়ে একাকার করছে।শিফনের শাড়িটা ভিজে লেপটে লেগে একাকার হয়ে আছে মীরার শরীরে।বৃষ্টি উপভোগ করছে মীরা।

.

অফিস থেকে বেরিয়ে মাত্র গাড়ি নিয়ে ফ্ল্যাটে পৌছালো ধ্রুভ।আজকে বেশ লেট হয়ে গেছে।শেষ মুহূর্তে একটা জরুরি মিটিং পরাতে সব এলোমেলো করে দিলো।

ফ্ল্যাটে কলিংবেল বাজালো না ধ্রুভ।সে ভাবছে হয়তো এসময় মীরা ঘুমায় না হয় পড়তে বসে তাই ডিস্টার্ব না করে নিজেই ডোর আনলক করে ভেতরে গেলো সে।গায়ের কোর্ট টা খুলে সোফায় রাখলো।টাই টাও আলগা করে নিয়ে খুলে নিলো।

নিজের রুমে যেয়ে দেখলো ধ্রুভ মীরা কোথাও নেই।বুকটা কেমন ছেৎ করে উঠলো।শার্টের কয়েকটা বোতাম খুলে নিলো।বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে,আর এই বৃষ্টিতে সে গেলো কোথাও ভেবে পাচ্ছে না।

ধ্রুভ বাহিরে দিকে বের হবে তার আগেই তার নজর গেলো বারান্দায় বৃষ্টি উপভোগ করার পরীর দিকে।বুকের হৃদস্পন্দন টা থমকে গেছে।পা টা নিজের অজান্তেই তার দিকে ছুটে চলছে।

যেতে যেতে মীরার পিছনে যেয়ে দাড়ালো ধ্রুভ।মীরা দাড়িয়ে বৃষ্টির পানিতে নিজেকে ভিজাচ্ছে।ধ্রুভর নিজেকে বেসামাল লাগছে মীরাকে দেখে এই অবস্থায়।তার দুই হাত প্রসারিত করে মীরার কোমর জড়িয়ে ধরলো।ঠান্ডা হাত হয়ে গেছে বৃষ্টির কারনে কিন্তু মীরার পেট টা নরম তুলতুলে আর গরম হয়ে আছে।শিউরে উঠলো মীরা।অনূভতি জানান দিচ্ছে এটা আর কেও নয় ধ্রুভ ছাড়া।মীরা সামনের দিকে ঘুরে আসতে চাইলে ধ্রুভ কোমর টাকে নিজের সাথে মিশিয়ে দিয়ে বাধা দেয়।

ধ্রুভ ফিসফিস করে বলে মীরার কানের কাছে,

–‘শিসসস!’

এরকম ফিসফিসিয়ে বলা মীরার বুকের ভেতরটা বারবার নাড়া দিয়ে উঠাচ্ছে।বুকের ভেতর প্রানপাখি টা ভালোবাসা পাবার জন্য ছটফট করছে।ধ্রুভ তার ঠোট দিয়ে মীরার ঘাড় থেকে সম্পূর্ণ পানি শুষে নিচ্ছ।যত চুমু খাচ্ছে ততই যেন এর তৃষ্ণা বাড়ছে।মীরার কোমর টা কেমন জোকের মতো ধরে আছে ধ্রুভ।

এইভাবে চুমু খেতে খেতে ধ্রুভ কেমন অস্থির হয়ে গেছে।মীরাকে টান দিয়ে নিজের দিকে ঘুরিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে তার ঠোটের সাথে নিজের ঠোটের মিলন ঘটালো।মীরার কেন যেন বাধা দিতে ইচ্ছা করছে না।উজাড় করে ভালোবাসতে ইচ্ছা করছে তার ধ্রুভকে।সে ধ্রুভর চুল দুই হাত দিয়ে মুঠো করে ধরে।সেও ধ্রুভের ঠোট টা আকড়ে ধরে।চুমু খেতে খেতে তারা তাদের বেডরুমে চলে যায়।বাহিরে চলছে বিদ্যুতের আওয়াজ।আর এদিকের দুইজনের মনের ভেতর বেসামাল।

মীরার কাধ থেকে শাড়ি সরানোর সময়।ধ্রুভ থমকে গেলো।তার শ্বাস-প্রশ্বাস এতো দ্রুত চলছে যে চাইলেও আজকে সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবে না।সে মীরার দিকে চেয়ে রইলো।মীরা চোখ বন্ধ করে ধ্রুভের ঘাড় ধরে আছে।

ধ্রুভ খুব আস্তে করে বললো,

–‘মীরু?’

এই ডাক টা যথেষ্ট ছিলো মীরার বুকে আবারো তোলপাড় করার জন্য।মীরা যখন ধ্রুভের চোখের দিকে তাকালো।সে সবুজ চোখ জোড়া তে হাজারো ভালোবাসা জানান দিচ্ছে যে এইসব তার।ডুবতে চাইছে তার মাঝে।সম্মতি চাইছে।তার কাছে।মীরা ধ্রুভকে আরেকটু কাছে টানলো।দুইজনের মুখোমুখি তে একটুও ফাকা নেই।মীরার নিঃশ্বাস খুব দ্রুত পরছে আর সেই গরম নিঃশ্বাস গুলো ধ্রুভের মুখে পরছে।তারা জানান দিচ্ছে।সে শুধু তোমার।

ধ্রুভ আর অপেক্ষা না করে মীরার ঠোটের মধ্যে নিজের ঠোট চেপে ধরলো।অস্থির হয়ে নিজের শার্টের বোতাম খুলতে লাগলো।মীরার কাধ থেকে শাড়ি সরিয়ে দূরে ফেললো।হালকা করে পেটে চাপ দিলো।এরকম সুখে মীরার মরে যেতেই মন চাচ্ছে।

আলো নিভে গেলো।ভালোবাসার প্রজাপতি গুলো খেলা করছে।একে অপরের আলিঙ্গনে কেও ব্যস্ত আছে।

.
দুই বছর পর,

হাসপাতালের করিডোরে ধ্রুভ দাড়িয়ে আছে।একটু পর বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পাওয়া গেলো।একটা নার্স তোয়ালে তে একটা বাচ্চা নিয়ে আসছে।নার্সটা হাসিমুখে বললো,

–‘মেয়ে হয়েছে স্যার।’

ধ্রুভ বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে নার্সকে জিজ্ঞেস করলো,

–‘আমার মীরু?’

নার্স মুচকি হেসে বললো,

–‘শি ইজ অলসো অলরাইট।আপনি দেখা করতে পারেন যেয়ে।’

নার্স ধ্রুভের হাতে বাচ্চা দিয়ে চলে গেলো।ধ্রুভ বাচ্চার দিকে তাকিয়ে তার কপালে চুমু দিলো।বাচ্চাকে কোলে নিয়ে মীরার কাছে গেলো।

হাসপাতালের বেডে স্যালাইন ঝুলন্ত অবস্থায় মীরা চোখ বন্ধ করে আছে।ধ্রুভ আস্তে করে যেয়ে ডাকলো,

–‘মীরু?’

মীরা চোখ মেলে দেখলো তার স্বামী আর সন্তানকে।ধ্রুভ তার সন্তানকে মীরার পাশে শুয়ে দিয়ে বললো,

–‘আমাদের মীধা।’

মীরা হাসলো ধ্রুভের নাম শুনে।মীরার ঠোটে একটা শক্ত চুমু খেয়ে ধ্রুভ বললো,

–‘আমার শুধু তুই।’

সমাপ্ত

‘তুই’ ‘তৃধা মোহিনী’ |পর্ব পাঁচ|

0

‘তুই’

‘তৃধা মোহিনী’

|পর্ব পাঁচ|

.
‘এরকম খেলা আমি খেলবো না।সরেন।’

মীরা ধ্রুভকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বললো।ধ্রুভের কোন নড়চড় নেই।সে মীরার ঘাড় নিজের নাক ঘষতে ব্যস্ত।সে বললো,

‘মীরা কেন বুঝিস না তোকে কতোটা চাই আমি।’

ধ্রুভ কথাটা বলে মীরা গায়ে ঢলে পরলো।বেহুশ হলো নাকি নেশাতে বুদ হয়ে গেলো মীরা বুঝতে পারলো না।তবে,ধ্রুভের ভারী জিম করা শরীরের ভার মীরা নিতে পারছে না।সে আস্তে আস্তে ধ্রুভকে বেডে শুইয়ে দিয়ে বললো,

‘আমি তোমাকে ঠিক কতোটা ভালোবাসি সেটা যদি তুমি বুঝতে তখন!’

মীরা প্রতিটা দীর্ঘশ্বাসে ধ্রুভের দেয়া অবহেলার নামক ক্লান্তি।

.
সকালবেলা মীরা উঠে গেছে রান্নাঘরে।রান্নাঘরে যাওয়ার কারন হলো আজকে নিজের হাতে সব বানাবে।ধ্রুভের ফেভারিট আলুর আর পরোটা আর নিজের জন্য আলু পরোটা আর পায়েশ।ব্যস,নেমে পরলো মিশনে।

ধ্রুভ ঘুম ভাঙলো যখন মাথাটা বেশ ভার লাগছে তার।মনে করার চেষ্টা করছে সে কোথায় আছে।কাল রাতে,মীরাকে বকাবকি করে নাইট ক্লাবে গেছিলো।সেখান থেকে ওভার ড্রাংক হয়ে এসেছে বাড়িতে।তারপর আর কিছু মনে নাই তার।পাশ ফিরে দেখে ঘড়িতে নয়টা বাজে।মীরাও নেই ঘরে গেলো কোথায়।এমনিতে কাল অনেক মিসবিহেভিয়ার করে ফেলেছিলো।

ধ্রুভ উঠে আগে ফ্রেশ হতে চলে গেলো ওয়াশরুমে।ফ্রেশ হওয়ার নিজের বাসি জামা-কাপড় চেঞ্জ করে নিচে যাচ্ছে মীরাকে খুজতে।ধ্রুভ সিড়ি বেয়ে নামছে আর বলছে,

‘এই মেয়ের লুকানো ছাড়া আর কোন কাজ নেই নাকি।আমাকে সি আই ডিয়ের মতো খুজাচ্ছে যে পাতা লাগাও।মীরাকা পাতা লাগাও।’

.

লাস্ট দুই ঘন্টা যাবৎ মীরা রান্নাঘরে আছে।পায়েশ আর আলুর দম হয়ে গেলেও ইউটুব দেখে কিন্তু পরোটা গুলা একটাও গোল হচ্ছিলো না।রাগে-দুঃখে মীরার কান্না আসছে।মুখে তার আটা মাখামাখি। হাতের বেশ খানিক জায়গা সে পুড়িয়ে ফেলেছে।

ধ্রুভ নিচে এসে আগে রান্নাঘরে নজর দিলো।রান্নাঘরে মীরার মুখে আটা মাখামাখি দেখে আর মীরাকে রান্নাঘরে দেখে ফিক করে হেসে দিলো ধ্রুভ।এই রুপেও মীরাকে মোহনীয় লাগছে ধ্রুভের কাছে।সে ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো মীরার কাছে।

মীরা কোমরে আঁচল গুজে পরোটা বেলছে।কিন্তু যতবারই সে বেলছে ততবারই সেটা গোল হওয়া বাদে বিভিন্ন আকৃতি ধারন করছে।ধ্রুভ পরোটার আকৃতি দেখে মীরার উপর মায়া আসার বদলে তার আটার উপর মায়া আসলো উল্টো।ধ্রুভ পিছন থেকে বলে উঠলো,

‘তুই মনে হচ্ছে আটার মার্ডার করে ফেলবি।ইশ কি হাল ওদের।’

ধ্রুভের কথা শুনে মীরা চমকে উঠে পিছন ফিরে তাকাতে গেলে তার আগেই ধ্রুভ মীরার উদাম পেটে, তার নাভীর ভাজে নিজের দুই হাত দিয়ে পিছন থেকে ধরে ফেলে।মীরার গরমে ভিজা পিঠ লেগে আছে ধ্রুভের বুকে।

মীরার উন্মুক্ত গলাতে মুখ ডুবালো ধ্রুভ।ছোট ছোট অনেকগুলা চুমু খেলো।সেই চুমুতে ঘায়েল হচ্ছে মীরা।খালি পায়ে মনে হচ্ছে ফ্লোর টাকে কেম্নে দেবে ধরে আছে সে।ধ্রুভের হাত বিচরণ হচ্ছে মীরার উদাম পেটে।

হুট করে পুড়ার গন্ধ গেলো মীরার নাকে।সে আর্তনাদ নিয়ে চিল্লিয়ে উঠলো,

‘আল্লাহ আমার আলু পরোটা শেষ।’

মীরা এতো জোরে চিল্লিয়েছে যে ধ্রুভের জানটাও ধুকপুক করছে।ধ্রুভ মীরার কোমরে একটা চিমটি দিয়ে বললো,

‘মাথার সমস্যা টা কি তোর দিন দিন বাড়তেছে।’

এদিকে ধ্রুভ যেখানে চিমটি দিয়েছে ইতিমধ্যে সেখানে জ্বলা শুরু হয়েছে।মীরা দাঁতে দাঁত কেটে সহ্য করলেও হাতে তার ছিলো বেলন চাকি। সেটা দিয়ে ধ্রুভের কোমরে দিলো এক গুতা।ধ্রুভের লাগে নি তবুও ঠাট্টা সুরে বললো,

‘আমাকে মারতে পারলি তুই?’

মীরা রেগে বললো,

‘আপনার এই প্রেম প্রেম খেলার জন্য আমার পরোটা পুড়েছে বজ্জাত লোক।’

ধ্রুভ ভ্রু কুচকে বললো,

‘এটা কি খেলা?’

মীরা থতমত খেয়ে গেলো।আসলে ধ্রুভ যা বলেছে নেশার ঘোরে বলেছে তখন।সে কিছু বলতে যাবে তার আগে ধ্রুভ তার কোমরটাকে নিজের কাছে মিশিয়ে নিয়ে বললো,

‘এইসব খেলা দ্রুত শিখাবো।তুই শুধু সাপোর্ট দিতে থাক।’

মীরা অবাকের সপ্তম পর্যায়ে যেয়ে লাল-নীল হতে শুরু করেছে।মানে এই বজ্জাত লোকের সব মনে আছে।শুধু শুধু তার সামনে নাটক করছিলো।মীরা তাড়া দিয়ে বললো,

‘ছাড়ো আমার পরোটা হয় নি এখনো তোমার জন্য।’

ধ্রুভ ছাড়লো না আরো শক্ত করে ধরে বললো,

‘এইভাবে হবে না।চল তোকে নতুন পদ্ধতিতে পরোটা বানানো শিখাই।’

মীরা আস্তে করে বললো,

‘আপনার পদ্ধতি গুলো আপনার মতোনই ক্ষাতারনাক হবে তা আপনার বলার ভঙ্গিমা দেখে বুঝেছি।’

ধ্রুভ মীরার কোমর না ছেড়ে তার কোমরের ভেতর দিয়ে হাত ঢুকিয়ে নিলো।অতঃপর সে মীরার দুই হাতের মাঝে নিজের হাত নিয়ে রুটি বেলতে আরম্ভব করলো।এইসব করতে করতে ধ্রুভ মীরার ঘাড়ে অসংখ্য চুমু দিয়েছে।মীরা শিউরে উঠে সরতে চাইলে,ধ্রুভের চোখ পাকানো দেখে থেমে গেছে।এইভাবে রুটি টেরাবেকা হলে,ধ্রুভ একটা স্টিলের বাটি তে আটার উপর চাপ দিয়ে কেটে ফেললো।যার ফলে রুটি গোলাকার হয়ে গেলো।

মীরার মুখটা বিস্ময়ে হা হয়ে গেছে।সে বললো,

‘এটা তো জানতামই না আমি।কি ইজি!’

ধ্রুভ বললো,

‘মাথায় গোবর থাকলে এইসব জানা লাগে না।’

ধ্রুভের কথায় মীরা না ফুলিয়ে উঠলো।সে বললো,

‘পদ্ধতিটা বললেই হতো।এতো ঢং না করে।’

ধ্রুভ মীরাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে তার চুল কানের পিছে গুজে দিয়ে বললো,

‘এটাকে বলে প্রেম প্রেম খেলা পদ্ধতি।শুধু নমুনা দেখালাম তোকে।এখনো রুলস দেখিয়ে তোকে অংশগ্রহণ করানো বাকি আছে।’

মীরা চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।আর মীরার গোল গোল চোখ দেখে ধ্রুভ বাকা হেসে বললো,

‘লেটার’স বেবি।’

চলবে