অস্তিত্বের খোঁজে পর্বঃ১৩

0
2961

অস্তিত্বের খোজে
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ১৩

” পলা আন্টিকে বললাম কি হয়েছে আন্টি ও রকম কেন করছেন?
– পরী জানো অর্পিতা বাসায় নেই। কোথায় যেন চলে গেছে। কাল বৌদি মেয়েটাকে খুব মেরেছে। গিন্নী মাতো সেই তোমাকে ঝাড়তেছে। তুমি যেন ও দিকে যেও না।
– সেদিকে না হয় গেলাম না কিন্তু অর্পিতা কোথায় গেল। বাসার সবাই খোঁজ করেছে?




– ভোর থেকে খোঁজ করছে সবাই। কিন্তু কোন খোঁজ পায়নি। বাসার মান সম্মানের ভয়ে থানায় ও যেতে পারছেনা।
– আমি একটা হাই তুলে বললাম চিন্তা করোনা এসে যাবে। ও যে ভীতু অন্তত এই ধরনের কাজ করবেনা।
– পরীর কথা শুনে পলা একদম বাক্কেল হয়ে গেল। এই মেয়ে বলে কি। অর্পিতা বাসায় নেই এর দেখি কোন চিন্তায় নেই। কিছুদিন আগেও কি মিল ছিল ২ জনের আর এখন!




– সকাল ১১ টা বেজে গেল অর্পিতার কোন দেখা নেই। বাসার সবাই ভেঙ্গে পড়েছে। আমি নিচে নেমে সোফায় গিয়ে বসে চুপ করে আছি।
– এই পরী তুমি না বললা অর্পিতা নাকি চলে আসবে! কই এলো না তো।
– হুম আন্টি সেটাই ভাবছি খুব চিন্তার বিষয় দেখছি।




– বিমলা দিদুন আমার সামনে এসে ও দিদি ভাই বলে চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠল। অনিতা আন্টি রুম থেকে নাকি বেরই হয়নি। এক কান্নায় আছে।
– পরী! মাকে যদি কাল ওভাবে কথা না বলতে হয়ত আজ অর্পিতা বাসায় থাকত। রেগুলার ১টার পর ১ টা সমস্যা বাসায় তুমি দাড় করাচ্ছো। আমাদের বাঁচার মত পথ রাখছোনা তুমি।
– নিদ্রা আপুর কথা শুনে ফ্যাল ফ্যাল করে ওনার দিকে চেয়ে আছি আমি।
– দিদুন ও এই সুযোগে আমাকে ইচ্ছা মত ঝাড়লো। আমার আর গায়ে লাগছে না। এমনিতেই মহিলা আমায় দেখতে পারেন না আর আজ আবার এই বিপদের সময়। কথার মেশিন সেই থেকে চালু করেছে এখন অবদি থামছেই না। কি বাচাল মহিলারে।




– আমি একটা তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে দিদুন কে বললাম আর যাই হোক আপনার ওমন নাতনী বাসা থেকে বের হয়নি। একটু খুজে দেখেন বাসায় আছে বলে উপরে উঠতেই অনিল আঙ্কেল বলল পরী এই সময় এধরনের কথা বললেই কি নয়!



– আমি পিছন ফিরে বললাম আপনাকেই এতক্ষন খুজছি আঙ্কেল আসেন আমার সাথে আপনার ভীতু মেয়ে কই আছে আপনাকে দেখিয়ে দেই।


– দেখছেন বাবা কি রকম মুখের ভাষা। দেন দেন আর ও তেল দেন। কিছু না বলে মাথায় উঠেছে।(নিদ্রা)


– আমি ও দিকে কোন কথা না বলে উপরে উঠতেই শুভ্রকে পেলাম। ওর চোখমুখ লাল হয়ে গেছে। এমনিতেই যে গৌর রং তার গায়ের তার ভিতর কান্না হয়ত করেছে। লাল আপেলের রং ধারন করেছে যেন। দেখে বেশ দয়া হলো।


– শুভ্রর হাত ধরে ওকে আমার সাথে নিয়ে গেলাম। এই প্রথম শুভ্রর হাত নিজ ইচ্ছায় ধরেছি তাও কোন অভিমানে নয়।
– ওকে নিয়ে ছাদে আসলাম। ও অবাক হয়ে কেবল কথা বলতে লাগবে আমি মুখে হাত দিতে চুপ থাকতে ইশারা করলাম। ও একদম চুপ।




– পাশে চিলাকোঠা রুমে ঢুকলাম ২জন। শুভ্রতো নাক সিটকাচ্ছে।
– অর্পিতা অনেক নাটক দেখাইছো বের হয়ে আসো। তোমাকে কেউ কিছু বলবেনা দেখ তোমার শুভ্রদা এসেছে।
– কোন সাড়াশব্দ নেই। শুভ্র রেগে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
– ওর চেহারা দেখে আমি একটা বড়সড় ঢোক চিপলাম এবং বললাম ও ভাবে তাকিয়ে কেন আছো! অর্পিতা এখানেই আছে।
– শুভ্র হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বলল মজা করা বাদ দাও। মনতো চাচ্ছে কষিয়ে ২ থাপ্পড় লাগাই কিন্তু তোমার কপাল ভাল আমার মোড অফ বলেই পা বাড়াল।




– অহ এতদিন তাহলে খুশির ঠেলায় আমার গায়ে হাত তুলেন মি. শুভ্র! আজ…….ব বলেই একটা ভাঙ্গা আলমারির পাশ থেকে অর্পিতাকে হাত ধরে টেনে আনলাম।
– আমি ওর গায়ে হাত দিতেই ও হাউমাউ করে ডুকরে কেঁদে ওঠে।
– অর্পিতার কান্না শুনে শুভ্র পিছন ফিরে দাড়িয়ে পড়ল। অর্পিতা আমার থেকে হাত ছাড়িয়ে ছুটে গিয়ে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল। শুভ্র আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর ওর ২ চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে পড়ছিল ২ গাল দিয়ে টপ টপ করে। আহ্ কি ভালবাসা ২ ভাইবোনের।




– নাহ্ একে এভাবে দেখলে হবে না শেষে ওর মায়ায় পড়ে যেতে পারি বলে নিচে নেমে আমার রুমে এসে বই নিয়ে বসলাম। সামনে পরীক্ষা অনেক পড়া বাকি আছে।




– শুভ্র অর্পিতাকে নিয়ে নিচে নামতেই সবাই হা করে ওদের দিকে তাকিয়ে রইল। পলা দৌড়ে অনিতার রুমে গিয়ে বলল বৌদি অর্পিতাকে পাওয়া গেছে। আমরা ছোট বেলা থেকে অর্পিতাকে দেখে আসছি আর পরী কয়েক দিনের মেয়ে হয়ে ওর সব কথা বুঝে ফেলল?




– আজ ভার্সিটিতে যেতে চাইলাম তাও যাওয়া হলো না এই অর্পিতার জন্য। যাই হোক ওকে পাওয়া গেছে। একদিন কথার ছলে বলেছিল রাগ করে থাকলে ও ঐ জায়গায় গিয়ে লুকায়। আগে বিস্বাস করিনি এখন করতে হলো ওর কান্ড কারখানা দেখে।




– দিনগুলো বেশ ভালয় কাটছিল। আমি আমার মত চলি। মৃদুল, পড়াশুনা, দাদুর সাথে মাঝে মাঝে বাহিরে যাওয়া বেশ চুটিয়ে ইনজয় করছি।




– একদিন নিদ্রা আপু এসে বলল পরী চল রেডী হও।
– আমি খানিকটা অবাক হয়ে বললাম কই যাবো আপু?
– আমরা বাহিরে যাচ্ছি। তোমার দাদা, আমি,শুভ্র, অর্পিতা একটা কাজে যাচ্ছি। তুমি কি মনে করবা তাই বলতেও পারছিনা। চলতো রেডী হও বলে আমার হাতে একটা শাড়ী ধরিয়ে দিল।
– আপু আমি শাড়ী পড়তে পারিনাতো।
– যাও মাকে বল উনি দারুন শাড়ী পড়াতে পারেন বলে চলে গেলেন।




– আমি বাধ্য হয়ে অনিতা আন্টির কাছে গেলাম।
– আমাকে দেখে উনি বলল কিছু বলবে?
– না মানে এই শাড়ীটা পড়তাম একটু পড়িয়ে দিবেন! নিদ্রা আপু আপনার কাছে আমাকে পাঠিয়ে দিল।
– তুমি কি নিদ্রাদের সাথে যাচ্ছো?
– হুম আপু জোড় করল তো তাই।
– উনি কিছুটা ভ্রু কুচকে বলল তোমাকে সেখানে কেন নিয়ে যাচ্ছে আমি বুঝতে পারছিনা। তবে নিজেকে সামলিয়ে রাখ। উনি বলল ব্লাউজ আর পেটিকোট পড়ে নাও আমি আসছি বলে দরজা ভিরে দিয়ে চলে গেল।




– আমি ব্লাউজ গায়ে দিতেই মা বলে ডেকে কেউ দরজা খুলে ভিতরে ঢুকল।
– আমি চট করে ওড়না শরীরে জড়িয়ে ফেললাম। আল্লাহ্ দরজাটা নক্ করতে ভুলে গেছি। কোন পুরুষ মানুষ আসলো না তো!




– দরজা নক করে পোশাক বদলাতে পারনা! আমার জায়গায় যদি দাদা বা বাবা আসতো তাহলে কি সম্মান টা থাকত? নিজের টা তো নেই সাথে আমারটাও রাখবা না দেখছি।
– আমি চেতে উঠে বললাম এই দেখছো তো দরজা বন্ধ নক করে আসতে পারোনা! আবার বড় বড় মুখের বুলি ঝাড়ছো?




– মার রুমে আমি যখন ইচ্ছা তখন আসব…… তোমাকে কি সেধে আসতে হবে?(শুভ্র)
– আপনি যাবেন! বলতেই অনিতা আন্টি রুমে এসে পড়ল।
– এবার শুভ্র বেশ লজ্জা পেয়ে গেল।
– এই তোরা কি সবসময় ঝগড়া করেই যাবি। নিজেদের উপর কি দয়ামায়াও নাই। আর শুভ্র তুই এখানে কেন?
– একটা কাজে আসছি মা। পরে বলব বলেই চলে যেতেই অনিতা বলে উঠল পরী কে কি ওখানে যাওয়া খুব দরকার?
– হুম খুব বলেই শুভ্র চলে গেল।
– অনিতা বিষন্ন মনে পরীকে শাড়ী এবং মাচিং করে জুয়েলারি এবং সুন্দর করে খোপা বেঁধে দিল।
– পরী তোমাকে আমার খুব পছন্দ। খুব সখ ছিল কিন্তু তোমাকে হয়ত আর নিজের ছেলের বউ হিসাবে রাখতে পারবনা আর। সাবধানে চলে যাও।



– আমি ওখান থেকে আমার রুমে এসে মোবাইল আর পার্স নিয়ে সোজা কারে বসলাম।
– কিছুক্ষন পর ওরা সবাই এলো।
– অর্পিতা পরীকে ডেকে নিয়ে আয় তো বলে শুভ্র ডোর খুলতেই আমায় দেখতে পেল।
– অর্পিতা যাওয়া লাগবেনা ও এখানেই আছে। আমার পাশে এসে নিদ্রা ও অর্পিতা বসল।
কৌশিক আর শুভ্র সামনে। শুভ্র ড্রাইভ করছে।




– ১ ঘন্টা পর আমরা একটা বিলাশ বহুল রেস্টুরেন্ট এ এসে নামলাম গাড়ি থেকে। জিবনে প্রথম শাড়ী পড়েছি। হাটতে পারছিনা ঠিক মত। তবুও কষ্ট করে হাটতে লাগলাম।
– একটা টেবিলে আমাদের বসতে বলে শুভ্র খাবার অর্ডার দিল।
– অর্পিতা আমরা এখানে কেন এসেছি?
– দাদার জন্য বউ দেখতে?
– মানে?
– শুভ্রদা র জন্য মেয়ে দেখতে আসছি। মেয়েটা শুভ্রদার কলিগ। আজ পছন্দ হলে বিয়ে ঠিক হয়ে যাবে।
– অর্পিতার কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম। এর জন্যই তখন আন্টি আসতে নিষেদ করছিল!




– আমি খুব অপমান বোধ করছিলাম। আমাকে দেখানোর জন্য প্লান করে এরা এখানে নিয়ে আসল!
– আমি চুপ করে মাথা নিচু করে বসে আছি। শুভ্র মনে হয় বার বার তাকাচ্ছে।

– পরী আজ তোমাকে জাষ্ট ওয়াও লাগছে বলে নিদ্রা আপু আমার দিকে তাকালো।

– আমি স্মিত হাসি দিয়ে ধন্যবাদ জানালাম।
– খাবার চলে আসল। একটার নামও আমি জানিনা। সব বিদেশী খাবার। দেখলেই গা গুলাচ্ছে।
– একটু পর একটা মেয়ে এবং একটা ছেলে সাথে তার ওয়াইফ আসল।
– বুঝলাম এই মেয়েটিকে দেখতেই আসছে ওরা। আমি অর্পিতার সাথে কথা বলতে বাস্ত হয়ে গেলাম।



– মেয়েটির নাম নিতু। নিতু এসে একদম শুভ্রর পাশে বসল। যা পারে তা করুক আমার কি তাতে বলে খেতে লাগলাম।
– মেয়েটি কে শুভ্র! বলে নিতু ভ্রু কুচকে শুভ্রেরর দিকে তাকালো।
– আমাদের বাসায় থাকে মুসলিম মেয়ে। পরী নাম ওর। বিবাহিত ও।
– আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে ওর দিকে তাকালাম। ও একটু হাসল।




– ওরা ২ জন ২ জনকে পছন্দও করেছে
একটা দিন দেখে বাসায় অবিভাবক পাঠিয়ে দিবে আর্শিবাদের জন্য ডেট করতে।
– শুভ্র বেশ মনে হয় খুশিতে আছে। ন্যাকামো দেখলে শরীর জ্বলে যায়।




– ঘন্টা ২ য়েক গল্প করল ওরা এর পর নিতু বলল কিছু মনে না করলে একান্তে শুভ্রর সাথে কথা বলতাম।
– আরে এখানে মনে করার কি আছে যাও তোমরা।
– ওরা বাহিরে চলে যেতেই আমি নিদ্রা আপুকে বললাম আপু আমরা তাহলে বাসায় যাই বলে অর্পিতাকে নিয়ে বের হলাম।



“- আমি আর অর্পিতা একটা রিক্সা নিয়ে বাসার পথে আসতে লাগলাম।
– অর্পিতা তোমরা প্লান করে আমাকে এখানে এনেছো তাই না?
– ও আমার কথা শুনে চুপ করে থাকল।
– কথাটা বাদ দায়ে ওকে বললাম সেই ছেলের সাথে কি তোমার সম্পর্ক এখনও আছে অর্পিতা!
-ও থতমত খেয়ে বলল কেন দিদি?
– অল্প বয়স আবেগে পড়ে গেছ তাই বুঝতে পারছোনা কি সর্বনাশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছো।
– ও আমাকে খুব ভালবাসে দিদি।
– ও কিসে পড়ে?
– তোমার সেম ক্লাসে।
– ওকে চল আজ ওকে পরীক্ষা করি। যদি তুমি ঠিক থাক আমি নিজে তোমাকে সবসময় হেল্প করব আর যদি আমি ঠিক থাকি তোমাকে ওকে ছাড়তে হবে। প্রমিস!
– ওকে বলে অর্পিতা ওর বফ কে কল দিয়ে আসতে বলল।




– আমি কিছুটা দুরত্বে বসে আছি আর মৃদুলের সাথে চ্যাট করছি।
– অর্পিতার বফ এসে ওকে জড়িয়ে ধরে বিভিন্ন কথা বলতে লাগল। অনেকক্ষণ পরে অর্পিতা উঠে আড়ালে গেল। এবার আমার কাজ। আমি ছেলেটির সামনে গিয়ে বললাম ভাইয়া আমাকে একটা হেল্প করবেন?
– ছেলেটি আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে বলল জ্বী আপু বলেন কি করতে হবে। বসুন এখানে।
– আমি বসে ফোনের বিভিন্ন সফটওয়ার সম্পর্কে জিঙ্গাসা করতে লাগলাম।
– টোপ ফেলেছি এখন ব্যাটা গিললেই হয়।
– আপু আপনার নাম কি!
– ফারিয়া।
– কিসে পড়েন?
– সব ডিটেলস্ বললাম। এবার আসি ভাইয়া।
– আপু আপনার নাম্বারটা দেওয়া যাবে!
– ওকে বলে দিলাম।
– লাষ্ট মুহুত্বে বলেই ফেলল আপু আপনি এত সুন্দর কেন?
– জানিনা বলে একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে আসলাম। মনে হয় কাজ হয়েছে।



– অর্পিতাকে নিয়ে বাসায় আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। বেচারা অর্পিতার মুখ শুকিয়ে গেছে।
– বাসায় এসে ফ্রেস হতেই অর্পিতা চলে আসল আমার রুমে।
– দিদি নোমান কিন্তু ও রকম ছেলে না। আর তুমি সুন্দর অনেক তাই যে কেউ তোমার সাথে একটু কথা বলবে।
– তাই! তোমার শুভ্র দা কে বলো তো কোন মেয়ের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে?
– আমি বিশ্বাস করি ও কখনও তাকাবেনা।
– তাহলে তুমি দাদাকে কেন ভালবাস না দিদি। দাদাকে কেন কষ্ট দাও।
– আমি চুপ করে থেকে বললাম তুমি বুঝবা না।



– কথা শেষ না হতেই নোমানের ফোন। আমি অর্পিতাকে দেখিয়ে দিয়ে বললাম দেখ তোমার ভদ্র হিরো কল দিয়েছে!
– স্পিকারে ফোন দিয়ে কথা চলতে লাগল।
– আপনি কি রিলেশন করেন ভাইয়া সাথে একটা মেয়েকে দেখলাম।
– আরেহ না ওটা আমার ছোট বোন ছিল।
– আপনি করেন রিলেশন?
– না তেমন কাকে পাওয়া যায়নি যে আমাকে বুঝবে।
– কি বলেন আপনাকে দেখে তো আমি ফিদা হয়ে গেছি। বলে অনেক কথা বলল।
– শেষে এক পর্যায়ে প্রপোজ করে বসে।
– অর্পিতা রাগে কল কেটে দিল।
– অর্পিতা আশা করি প্রমিস টা রাখবা। ও চোখের পানি মুছে চলে গেল রুম থেকে।




– হায়রে জিবন।
– রাত ১০ টার দিকে পলা খাবার দিয়ে গেল পরীকে।
– খাবার খেয়ে একটু পড়লাম। ঘড়িতে দেখলাম রাত ১২.১০ মিনিটে মৃদুল কে কল দিলাম। কিন্তু ধরলনা। কয়েকবার দিতেই কেটে দিল। আমার রাগ চরম পর্যায়ে পৌছে গেল। রুম থেকে বের হয়ে ছাদে গেলাম। আকাশে আধখানা চাঁদ। বেশ আলো ছড়াচ্ছিল। খুব বাতাশ হচ্ছিল মনে হয় বৃষ্টি হবে।




– এমন সময় মৃদুলের কল এলো। প্রথমে ধরলাম না। আবার দিল। আবার দিল। এভাবে ৭ বার দেওয়ার পর ধরলাম।
– জান সোনা আমার কলিজা স্যরি বাহিরে ছিলাম তাই দেরী হয়ে গেল বলে কয়েকটা কিস করল।
………………………………..?
– কথা বল সোনা এমন করছো কেন! আমার কষ্ট হয়না বুঝি?
………………………………….?
– I Love you jan কথা বল।
– তুমি এভাবে কেন কথা বলছো। আর এত রাত অবদি কই ছিলা?
– স্যরি কাজে ছিলাম একটু আদর করনা।
– বিষন্ন মনে কয়েটা কিস করলাম এই প্রথম ওকে।
– মৃদুল…….?
-…………………?
– এই মৃদুল বলতেই কল কেটে গেল।
ধুর ভাল লাগেনা। নেটওর্য়াক প্রবলেম।



– কতদিন থেকে এই প্রেমলীলা চলছে পরী?
– আমি থমকে গিয়ে পিছন ফিরে দেখি শুভ্র।
– আমার পুরো শরীর জমে ঠান্ডা হয়ে গেল। আমি থতমত হয়ে গিয়ে বললাম মানে!
– আমার সামনে এসে ঠাশশশ্ করে একটি চড় দিয়ে বলল কত দিন থেকে চলছে এসব! ছেলেটার কে?
– আমি ওকে ধাক্কা দিয়ে বললাম ও মৃদুল ওকে আমি ভালবাসি। প্লিজ আমাকে মুক্ত করে দাও। আমার আর এজিবন ভাল লাগেনা।



– আমি কাঁদছি আর ও অন্ন দিক ফিরে কাঁদছে। আমার উপায় নেই আর।
– এমন সময় ও আমার কাছে এসে শক্ত করে ধরে বলল আমার মধ্য কি নেই যা তুই মৃদুল নামে ছেলেটার মধ্য পাইছিস?
– ধর্ম যেটা তোমার মধ্য নেই যা ওর ভিতর আছে। আর তুমি কি নেশা করেছো শুভ্র।
– শুভ্র আমার কথায় কান না দিয়ে বলল তোর জন্য কত কেঁদেছি জানিস। জোরে কাদতে পারিনা লজ্জায়। রুমে হাই পাওয়ারে বক্সে song চালিয়ে দিয়ে কাঁদি আমি আর তুই অন্য ছেলের সাথে প্রেম করে বেরাস? তোর আর অর্পিতার মধ্য পার্থক্য কি থাকল।
– শুভ্র প্লিজ আমাকে মুক্তি দাও……….
– মুক্তি বলতেই জোগে বৃষ্টি নামতে শুরু হল। ও আমার একদম কাছে একে আমার ঠোটে কিস করে বলল আমি রোজ এভাবে নিতুকে আদর করব তোর কিছু হবেনা?
– না।
– এবার আমার ঘাড়ে, ঠোটে, বুকে, পিঠু কিস করে বলল আবার ভেবে দেখ তুই স্যতি কষ্ট পাবি না তো?
– না না না আমায় ছাড় বলছি বলে ধাক্কা দিলাম।
– ও আমাকে আবার ঠাশশশ্ করে চড় মেরে বলল ভাল যখন বাসিস না আমার জিবনে কেন এলি। মৃদুল কি জানেনা তুই বিবাহিতা মেয়ে।
– আমি ফিকরে উঠে বললাম যানে।
– তাহলে নিশ্চয় বলেছিস আমাদের মধ্য শারিরীক সম্পর্ক হয়নি!
……………………………?
– আমি জানিতো এটাই তোর মেইন অস্ত্র। সুযোগটা আমি তোকে দিয়েছি। আর না বলে পরীর ওড়নাটা একটানে খুলে ফেলল। ভালবাসা যখন বুঝিস না তাহলে দেখ কেমনে ভাল বাসতে হয় বলেই ওর ২ হাত মুঠোর ভিতর ধরে।
– আমি কিন্তু চিৎকার দিব শুভ্র ছেড়ে দাও বলছি তুমি নেশার ভিতর আছো। এই অবস্থায় ভুল করোনা পস্তাবে কিন্তু।
– দে না চিৎকার তোর গলার জোর কত আছে। সবাই দেখুক শুভ্র কাপুরুষ না বউকে কিভাবে শায়েস্তা করতে হয় সেটা জানা আছে বলে আমাকে জড়িয়ে ধরল।
– আমি উপায় না পেয়ে ওর হাতে কামড় দিলাম। ও আমাকে আবার একটা চড় বসিয়ে দিয়ে বলল এবার দেখ কামড় দেওয়ার কি জ্বালা বলে ঘাড়ে কামড় বসিয়ে দিল। আমি শব্দ করতেই ও ওর ঠোট দিয়ে আমার ঠোট চেপে ধরল।



– শারিরীক সম্পর্ক ছাড়া শুভ্র সব কিছু করে পরীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল ফ্লোরে।
– মৃদুলকে বলিস আমি তোর পুরো শরীর ব্যবহার করেছি। আবার যদি যোগাযোগ করিস বাঁকিটাও পুরুন করব। দেখি ও এবার তোকে কেমনে গ্রহন করে। আমার ভালবাসা দেখেছিস কিন্তু ক্রোধ দেখিস নি।

– আজ থেকে কষ্টের দিন গোনা শুরু করে দে। এত এতটা আঘাত পাবি যে নিজের ভুলগুলো শুধরানোর জন্য আমাকে আর খুজে পাবিনা বলে শুভ্র চলে গেল।

চলবে________________

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here