আয়নামতী পর্ব-৩৯

0
2020

#আয়নামতী
#পর্ব_৩৯
#পুষ্পিতা_প্রিমা

বাগানবাড়িতে ফুল তোলার কাজ চলছে। আয়না ও হাত লাগিয়েছে। সকাল সকাল রূপা এসে হাজির। কোলে সায়ান। আয়না বিস্মিত হলো। বলল

‘ ওকে নিয়ে এসেছিস কেউ জানে?

রূপা মিটমিট করে হাসলো। সায়ান আয়নাকে দেখে ঠোঁট টানলো। আয়না হেসে কোলে নিয়ে ফেলল তাকে। আদরে আদরে ভরিয়ে দিয়ে বলল

‘ কোলে নিলাম তো। আব্বার কি আমার জন্য মন পুড়ছে?

সায়ান চুপটি করে বুকের সাথে লেগে থাকলো। আয়না কপালে মাথায় চুমু দিতে দিতে রূপাকে বলল

‘ কি হলো বললি না যে? আম্মা তোকে বকবে না? তুই এতদূর ওকে নিয়ে হেঁটে এসেছিস? এভাবে আসা ঠিক হয়নি।

‘ তোমার বর এনে দিয়েছে।

‘ বর? প্রফেসর?

‘ হুমম।

‘ গাড়িতে করে এসেছিস?

‘ হুমম।

‘ উফ তাহলে তো ঠিক আছে। আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম। আম্মা কিছু বলেনি? ভাবি?

‘ ছোটসাহেবকে জেম্মা বলছে ‘ শোনো জামাই আমার ভাইরে তাড়াতাড়ি নিয়া আসবা। তার ফুপুর কোলে দিয়া আদর খাওয়ায় আবার পাঠাই দিবা। আমি আমার ভাইরে ছাড়া থাকিত পারিনা।

আয়না হেসে দিল। বলল

‘ তাই নাকি? আব্বা আদর খেতে এসেছে? এই আব্বা আদর তো খাইছেন আর কি কি খাবেন আপনি?

সায়ান উঃ উঃ শব্দ করলো। আয়না তাকে আর ও আদর করে দিল। বলল

‘ আব্বা কথা বলা কখন শিখবে?

রূপা বলল

‘ ও কথা বলা শিখলে তোমাকে আনামতী ডাকবে।

‘ চুপ। বেশি পেকে গেছিস? প্রফেসর কোনদিকে?

রাস্তার মোড়ে শার্টকোর্ট পড়া কতগুলো সাহেবের সাথে কথা বলছে দেখলাম। আয়না বলল, আচ্ছা আমি বাবুকে ঘরে নিয়ে যাই। একটু দুধে পাউরুটি ভিজিয়ে খাওয়ায়। তুই ও চল। সন্দেশ খাবি? তোর ছোটসাহেব এনেছে।

‘ কাল ভাই আনছে সন্দেশ। খেয়েছি। আবার খাব। এইখানে নিয়ে আসো। আমি ওখানে যাব না।

‘ আচ্ছা আমি যাই আর আসি। তুই এখানে থাক। তোর ফুল তুলতে হবে না।

রূপা মাথা দুলিয়ে বলল

‘ আচ্ছা।

সায়ানকে দেখে আনহিতা আর শায়লা বেগম অবাক হলো। বলল

‘ বাবুটা কোথা থেকে? আর কে এসেছে?

‘ রূপার সাথে এসেছে।

অনিমা দৌড়ে আসলো। আবার আয়নার সামনে এসে থেমে গিয়ে বলল

‘ আমাকে একটু দেওয়া যাবে। আমি আবার বাচ্চা মারিনা।

‘ আপনি বাচ্চা মারেন কখন বললাম?

সায়ান খিকখিক করে হেসে দিল। ঝাপ দিল অনিমার কোলে। যেন কতবছর ধরে চেনে। অনিমা হেসে বলল

‘ মা আমাকে বাবুটা কিভাবে চেনে জানো? ওই দাদার মেজবানে আসছিল না৷ তখন কোলে নিয়েছিলাম সেইথেকে। কি মিষ্টি? তুমি জানো সারাক্ষণ কোলে থাকবে কিন্তু কাঁদবেনা। খিদে পেলে মাকে খুঁজে। ওইদিন খিদে পেয়েছে বুঝলে। আমি তো বুঝতে পারিনি। ও ছোট হাতটা দিয়ে আমার বুকে আঁচড় কাটতে শুরু করলো। মুখ ঘষে ঘষে কান্না করতে লাগলো। শেষমেশ ওর মাকে যখন দিলাম তখন একদম শান্ত।

আনহিতা বলল

‘ বাচ্চাদের ভাষাটাই এমন৷
সায়ান আবার হাসলো। আনহিতা বলল

‘ বৌমা বাবুকে কিছু খাওয়ায়। ও মেহমান না?

অনিমা নিয়ে গেল। বলল

‘ আমি খাওয়ায়। আমি, আমি।

হেসে ফেলল আনহিতা। অনিমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলল

‘ ওর মেয়েটা ও বাবুর বয়সী হতো বেঁচে থাকলে।
শায়লা বেগম বললেন।

‘ আবার হবে হবে।

আনহিতা বলল

‘ ডাক্তার তো অমির পরেই বলেছে আর বাচ্চা হবে না। যাও হলো তা আল্লাহ নিয়ে গেল।
থাক ওসব কথা। ও শুনলে মন খারাপ হয়ে যাবে। আল্লাহ একটা দিল তো ছাতা । ওটা নিয়ে থাকুক।
আয়না ওদের কথা চুপচাপ শুনলো।

________________

আম্মার কোলে ছেড়ে দিয়ে আসবেন একদম। ওদের একা ছেড়ে দেবেন না। মনে থাকবে?

‘ থাকবে।

মাথা দুলিয়ে বলল অনুরাগ।

‘ বাগানের কাজ শেষ?

‘ নাহ, এখনো অনেক বাকি। আপনি আগে ওদের ছেড়ে দিয়ে আসুন।

‘ ঠিক আছে।

সায়ানকে নিয়ে হাঁটা ধরলো অনুরাগ। আয়না আবার দৌড়ে এল । শাড়ির সাথে লেগে হোঁচট খেতেই অনুরাগ এক হাত দিয়ে ধরলো। বলল

‘ আহা আস্তে।

‘ আরেকটু দিন আদর করে দিই।

সায়ানকে দিয়ে দিল অনুরাগ। আয়না সায়ানের সারাগালে চুমু খেল। বুকের সাথে কিছুক্ষণ চুপচাপ চেপে ধরে রেখে মাথায় চুমু খেল, তারপর বলল

‘ আবার আসিও আব্বা।

সায়ান হাসলো। আঙুল দেখিয়ে বলল

‘ আঃ।

আয়না বলল

‘ বাহ।

অনুরাগ বলল

‘ টা টা বলেন সায়ান সাহেব।

সায়ান ছোট্ট হাত নাড়িয়ে বলল,

‘ তাত তাত তা।

আয়নার চোখ জ্বলজ্বল করে উঠলো। কিছু বলতে ও পারলো না সে। কথা বুজে আসছে। ছোট্ট হাতটা ধরে হাতটাতে চুমু দিল সে। অনুরাগকে বলল

‘ আপনার জন্য আমাকে এখানে থাকতে হচ্ছে। নইলে আমি ওদের সাথে থাকতাম। আমার আব্বাটাকে সারাক্ষণ আদর করতে পারতাম।

‘ আহা বাচ্চার জন্য কাঁদতে হয়? আমাকে বলবে তো ভাই। যতই চাইবে ততই পাইবে।

‘ কোথা থেকে? আপনি কি আবার বাচ্চার ফ্যাক্টরি খুলেছেন নাকি?

অনুরাগ হেসে উঠলো সশব্দে। চারপাশ কাঁপিয়ে দেওয়া সেই হাসি। আয়নামতীর রাগ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সেই হাসি। নাকের ডগায় রাগ এনে দেওয়ার মতো সেই হাসি। অনুরাগ যেতে যেতে হাসলো। আর আয়না ফোঁসফোঁস করতে লাগলো। অনুরাগ কিছুদূর গিয়ে বলল

‘ নাগিনী!

____________

প্রায় সপ্তাহখানেক পরের কথা। সায়ানের আকীকা করা হয়েছে। তাই দাওয়াত পড়েছে মেয়ে আর ছেলের শ্বশুরবাড়ি। দুপুরের আয়োজন। নাতির আকীকার জন্য গরু দিতে চেয়েছিলেন নাওয়াজ শেখ। আয়ান বারণ করে দিয়েছিল। সে যতটুকু পারে ততটুকু করবে। কারো কিচ্ছু নেবে না। নাওয়াজ শেখ এতে ব্যাথিত হলেন। অনুরাগ একটা ছোট্ট পাঞ্জাবি, একটি হাঁটাহাঁটি করার জন্য গোল গাড়ি, আর এক গাদা ছোট শার্ট প্যান্ট দিল সায়ানকে। সাথে একটা ছোট্ট আংটি। রূপার আংটি। শায়লা বেগম বলেছিলেন মুসলমান ছেলেদের স্বর্ণ পরিধান হারাম। আয়শা বেগম বেশ ধার্মিক মানুষ। ওনি তা অপছন্দ করবেন। তাই রূপার আংটি দিল অনুরাগ।
আয়ানের উপর ক্ষেপে থাকলো নামিরা। তার বাবার কোনোকিছু কেন নিচ্ছে না আয়ান। কি দোষ করেছে তার বাবা? আয়ান তা টের ও পেল, নামিরা তার সাথে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলছে না। ফুলেফুলে থাকছে। আয়ান ঘরে এসে জিজ্ঞেস করলো
‘ আমার উপর রেগে আছ মিরা?
‘ নাহ।
‘ উত্তরটা তো তাই বলে দিল৷
‘ রাগ করব কেন?
‘ গরু কেনার টাকা নিইনি বলে।
‘ তুমি পয়সাওয়ালা হয়েছ। এখন পরের টাকা নেবে কেন?
‘ মিরা?
নাক টানতে টানতে ফুঁপালো নামিরা। বলল
‘ তুমি আমাকে শাসাচ্ছ?
‘ নাহ মিরা। তোমাকে বুঝানোর চেষ্টা করছি। তোমার বাবার ওসব দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
‘ নাতি হয় সায়ান। আমার বাবার নাতি হয়।
‘ ওনি চাননি তুমি আর সায়ান আমার কাছে থাকো। সেজন্য ওনি আমি বেঁচে আছি এই খবরটা জেনে ও চুপ করে ছিল। আমাকে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছিল তোমার বিয়ে দিয়েছেন ওনি। আর একটা বাচ্চা ও হয়েছে।
আওয়াজ করে কেঁদে উঠলো নামিরা।
‘ ও এই ব্যাপার ছিল তাহলে? আর তুমি তা বিশ্বাস করে ফেললে। এই তুমি আমাকে ভালোবাসো?
‘ মিরা আমি তখন অসুস্থ ছিলাম। শারিরীক মানসিক। আমি বিশ্বাস করিনি৷ সেদিনই ছুটে এসেছি তোমার কাছে, এসে দেখলাম সত্যিই বাচ্চা তোমার কোলে।
‘ হ্যা অন্যের বাচ্চা। তুমি মরে গেলে আর আমি আরেকজনকে বিয়ে করে বাচ্চা ও নিয়ে নিলাম। বাহ সাব্বাশ মিঃ আয়ান।
আয়ান দুহাত বাড়িয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ফেলল নামিরাকে। বলল
‘ আমি দুঃখিত মিরা। আমি সত্যি ভালোবাসি তো। সত্যি। আমার উপর প্লিজ রেগে থেকো না। মিরা আমার উপর রেগে থাকতেই পারেনা। মিরা রেগে আছে?
কান্নার বাঁধ ভাঙলো মিরার। বাবা এতকিছু করেছে কেন বলোনি আমায়?
‘ খবরদার মিরা। ওনাকে কিচ্ছু বলবে না। ওনি এখন সবটা মেনে নিয়েছেন। ভুল বুঝতে পেরেছেন। বলবে না।
নামিরা কেঁদেই গেল। আয়ান শক্ত চুম্বন বসালো তার কপালে।

_____________

শীতের প্রকোপ বেড়েছে। কনকনে ঠান্ডা পড়ছে। বারান্দায় শাল গায়ে দাঁড়িয়ে রইলো আয়না। রাত প্রায় দেড়দুইটা। অনুরাগ চট্রগ্রামের মহাজন হাঁটের দিকে এক সম্মেলনে গিয়েছে। ফিরতে দেরী হবেও বলেছে। আনহিতার গা কাঁপিয়ে জ্বর এসেছিল সন্ধ্যায়। ঔষধ পেটে পড়তেই ঘুমে ঢলে পড়লেন তিনি।

বারান্দা পায়চারী করলো আয়না। ঘুম এসেছে তার ও। চোখ লালচে হয়ে যাচ্ছে। হাত পা ঠান্ডায় জমে যাচ্ছে। ঘরে পা রাখতেই গাড়ির আওয়াজ শোনা গেল। কাঁপা-কাঁপা পায়ে নিচে চলে এল সে। দরজা খুলতেই অনুরাগকে দেখতে পেল। হেসে ফেলল সে। অনুরাগ হাসিটা ফিরিয়ে দিল নিজে হেসে। বলল

‘ অপেক্ষা? তা ও আয়নামতী?

‘ আয়নামতী ভালো তাই এতদিন টিকে আছে। নইলে তৃতীয় বিয়ের জন্য মাঠে নামা দরকার পড়তো মিঃ চৌধুরী।

‘ আয়নামতীর মতো বউ পাওয়া গেলে চোখবন্ধ করে, বিয়ে করে নেব ।

‘ আয়নাকে পাবেন কিন্তু আয়নামতী খুবি দুর্লভ এই জগতে। তাই আশা ছেড়ে দিন
বিয়ে পাগলা পুরুষ।

অনুরাগের হেলে পড়লো আয়নার দিকে। ফিসফিস করে বলল

‘ লোকে তো বউপাগলা ডাকে। এখন কি হবে?

‘ কি আর হবে? আপনার জন্মই হয়েছে অদ্ভুত অদ্ভুত উপাধি পাওয়ার জন্য।

‘ আর উপাধি দেওয়ার জন্য আয়নামতী।

হেসে উঠলো আয়না। বলল

‘ হাতের ব্যাগে কি?

‘ আমার ব্যাক্তিগত জিনিস?

‘ আমি ছাড়া আবার ব্যাক্তিগত কি?

রেগে বলল আয়না।

‘ তুমি আমার ব্যাক্তিগত মানুষ। তোমার জন্য যা আনব সেগুলো ও ব্যাক্তিগত৷

ঠোঁট পুনরায় হাসি চড়লো আয়নার।

আনহিতাকে দেখতে গেল অনুরাগ। ঘুমন্ত মায়ের কপালে চুমু আঁকলো সে। গায়ের উপর ভালোভাবে কাঁথা দিয়ে ঢেকে দিল। পায়ের আঙুলগুলো টেনে দিতেই আয়না বলল

‘ কি করছেন?

‘ সকালে উঠে মা যখন দেখবে আঙুল আর ফুটছেনা তখন বুঝে যাবে আমি রাতে তাকে দেখতে এসেছি। এটা আমি ছোটবেলা থেকে করে আসছি। তখন রাত করে কোচিং থেকে ফিরলে এমনটা করতাম।

‘ নতুন কিছু আবিষ্কার করলাম আজ।

অনুরাগ হাসলো। মায়ের কপালে দ্বিতীয় চুম্বন এঁকে দিয়ে বলল

‘ আমার মা আর সবার মা গুলো বেঁচে থাক হাজার বছর।

আয়না হেসে বলল

‘ আপনি তো খারাপ মানুষ। এসব কথা ভালো মানুষরাই বলে।

অনুরাগ বলল

‘ তুমি বিশুদ্ধ করে দাও তো দেখি তাহলে।

‘ আমি খারাপ কাজ করিনা।

হেসে উঠলো অনুরাগ। ঘর থেকে বের হয়ে দরজা বন্ধ করলো। যেতে যেতে বলল

‘ তাহলে আমি করি?

আয়না তার পেছনে। প্রশ্ন ছুঁড়লো।

‘ কি? খারাপ কাজ কি কম করেছেন নাকি? আর ও করতে মন চাইছে? খারাপ মানুষ!

অনুরাগ চট করে থেমে গেল। ফিরলো আয়নার দিকে। আয়না ও সাথে সাথে থেমে গিয়ে বলল

‘ কি হলো?

‘ কি কি খারাপ করেছি দেখি বলোতো।

‘ বলব?

‘ হুম।

‘ তাহলে শুনুন। প্রথমত বিয়ে ভেঙেছেন আমার। দ্বিতীয়ত আমার বাগান পুড়িয়েছেন। আমাকে জোর করে বিয়ে করেছেন। ইচ্ছে করে করে ছুঁয়েছেন। আমাকে পুরোপুরি বন্দী করে ফেলেছেন। সব খারাপ কাজ।

হাওয়ায় ভাসলো যেন আয়না।

‘ আশ্চর্য কোলে নিয়েছেন কেন? ধুরর কেউ দেখলে আমি শেষ। নামান। আল্লাহ আমি মরে যাব লজ্জায়। দেখবে তো ।

‘ জ্বীন-ভূত ছাড়া আর কিছু নেই এখানে আপাতত।

‘ জ্বীন-ভূত?

‘ হ্যা।

ভয়ার্ত চোখ আয়নার।

‘ ওসবে ভয় পাই না আমি। নামান বলছি।

‘ নামাবো না।

‘ তো?

‘ আরাম করে করে কোলে চড়ছো। আবার গলার জোর কত? আমাকে কেউ এভাবে চড়ালে মাথায় তুলে রাখতাম।

আয়না হেসে ফেলল। ভালো করে অনুরাগের গলা আঁকড়ে ধরে মিহি গলায় বলল

‘ তাই নাকি? মাথায় তুলে কিভাবে? শিখিয়ে দিন। আমি তুলে রাখব আপনায়।

‘ সিন্ধুকে তুলে রাখো। মাথায় তোলার দরকার নেই।

‘ সিন্ধুক? কি সিন্ধুক?

‘ হৃদয়সিন্ধুক।

মোলায়েম চাহনি আয়নার। হাসিমিশ্রিত চোখ।

‘ কোল থেকে কি নামাবেন না?

‘ কথা ঘুরাচ্ছ?

‘ জানলেই তো।

‘ তুমি জানো। জেনেই মারো।

‘ এবার তো নামান। আর কতক্ষণ? ধুরর।

‘ ঘুমানোর জায়গায়।

‘ নির্লজ্জ!

‘ শুধু বউয়ের কাছে।

হেসে ফেলল অনুরাগ। আয়নাকে নামিয়ে দিল বিছানায়। বলল

‘ চুপচাপ শুয়ে থাকো। আমি এক্ষুনি আসছি।

‘ আমি ঘুম।

‘ ঘুম ভাঙতে জানি।

_________

তিনটা কাঠগোলাপ কানের কাছে টের পেল আয়না। হাত দিয়ে ছুঁয়ে বলল
‘ কোথা থেকে?
‘ অনেক কষ্টে যোগাড় করেছি। তোমাকে এখন আর ও সুন্দর দেখাচ্ছে আয়নামতী।
‘ আমি লজ্জা পাচ্ছিনা কেন?
‘ কেন? পাওয়া তো উচিত।
‘ সেটাই কিন্তু পাচ্ছি না কেন?
‘ চোখ বন্ধ।
‘ কেন?
‘ আর ও একটা উপহার।
‘ করলাম।
অনুরাগ খুব সন্তর্পণে ব্যাক্তিগত কাজ সাড়লো গালে, চোখের পাতায়,ললাট,নাকের ডগায় আর চিবুকে। ধড়ফড়িয়ে উঠলো আয়না। বলল
‘ দরজার কাছে সাদা শাড়ি পড়া একটা বুড়ি দাঁড়িয়ে আছে দেখলাম। দেখুন না। সরুন।
অনুরাগ বলল,
‘ বুড়িটা নাতি নাতনির মুখ দেখাতে বলল।
চাপা হাসিতে মত্ত হল আয়না। অতঃপর একটা সময় এসে অনুরাগ তাকে ঘুমঘুম গলায় ডাকল
‘ আয়নামতী! বুড়িটা তো তোমার পাশে ঘুমাচ্ছে।
আয়না দুম করে মারলো অনুরাগের বুকে। বলল
‘ বেয়াদব লোক ঘুমের ভেতর ও মশকরা করে।

চলবে,,,,,
মাগোমা লুমান্টিক গল্প ও কেউ লিখে নাকি? 😒😒

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here