খুনশুটি_ভালোবাসার পর্ব ১

0
4107

#খুনশুটি_ভালোবাসার💞❤️💞
#Nishi_khatun (Angel_Frozen)
#part:_01

আমাকে বিয়ে করবেন মিস্টার রাজ ভাইয়া।
প্লিজ প্লিজ বিয়ের জন্য রাজী হয়ে জান।
বলে বিরক্তিকর ভাবে তাকিয়ে থাকে।
অনুর মুখের রাজকে বিয়ের জন্য এমন আকুল আবেদন শুনে এদিকে আরেকজন তেলেবেগুনে জ্বলতে থাকে।

বেচারা রাজ তার সামনে অনুকে দেখে বুঝতে পারে আজ আমার কপালে এই মেয়ে সাথে করে ঘূণিঝড় আইলাকে আনবে।না জানি আজ আমার ভাগ্যে কি আছে বলে মনে মনে দোয়া ইউনুছ পাঠ করতে থাকে।

এদিকে রক্তরাঙা চোখ করে অনুর সামনে গিয়ে দাঁড়ায় আরিয়ান।আবির আরিয়ানের পাশে দাঁড়িয়ে বুঝতে চেষ্টা করছে তার বোন এখানে কি করতে আসছে?
আর রাজের মতো প্লে-বয়ের কাছে এসে কেনো তার বোন বিয়ের কথা বলছে।

হঠাৎ অনুর এমন কাহিনী দেখে আবিরের মাথা কাজ করছিল না।তাই সে নিরবে সবটা বুঝতে অযথা চেষ্টা করে সময় নষ্ট করছিল।

আবিরের মাথা কাজ না করলে কি হবে।
অন্যজনের মাথায় ঠিকি রক্ত টগবগ করে ফুটছিল।

আবির অনু কে কোনো কিছু বলার আগে অনুর গালে কষে দুই তিনটা থাপ্পড় পড়ে।

অনু গালে হাত দিয়ে ছলছল নয়নে সামনের মানুষের দিকে তাকিয়ে আছে।তোতলাতে তোতলাতে বলে,”আ-রি-য়া-ন ভা-ই-য়া আআমামাকে!”

অনু কথাটা ক্লিয়ার করে বলার আগে আবারো আরিয়ান অনুকে একটা থাপ্পড় দিয়ে জোড়ে ভয়ার্ত কন্ঠে বলে,”নাক টিপলে এখনো দুধ বেয়ে পড়বে।সে আসছে ভার্সিটির নাম করা প্লে-বয় কে বিয়ের প্রস্তাব দিতে।এই বেয়াদব মেয়ে তোমার যে নিজের নাক-লজ্জা নেই তা বুঝলাম তবে তোমার সাথে যে আমাদের সম্মান জড়িয়ে আছে সে দিকে খেয়াল আছে?”

আবির আরিয়ান কে কিছুই বলে না।
কারণ আরিয়ানের জায়গাতে আবিরের এই কাজ করা দরকার ছিলো।

আবির রাগী দৃষ্টিতে অনুর দিকে অগ্রসর হয়ে এসে ওর হাত চেপে ধরে বলে,”তুই কোন কারণে ভার্সিটিতে প্রথম দিন এসেই এতো ছেলে-মেয়ের সামনে নিজের আত্মসম্মান বির্সজন দিতে আসছিস?”

অনু কান্না জড়িত কন্ঠে বলে,”ভাইয়া তোমরা আমার পুরো কথা শোনবার আগেই আমাকে আসামী বানিয়ে ফাঁসির রায় দিয়ে দিচ্ছ।সেখানে আমি আর কি বলবো বলো?আমি কি জানি না এই ভার্সিটিতে আমার যমরাজ থুক্কু আমার ভাইয়ারা পড়ে।তাদের চোখের সামনে ভুল করেও তো ভুল করতে পারবো না।নয়তো কেউ একজন আজরাইল হয়ে আমার জান কবজ করে নিয়ে যাবে।”

আরিয়ান এসে দাঁতের উপর দাঁত চেপে বলে,”ফাইজলামি রেখে আমার কথার উওর দাও!
রাজ কে কেনো বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দিচ্ছিলে? ”

অনু মনে মনে বলে,”রাজ কে মনে ধরছে।রাজ কে বিয়ে করে আমার বাপের জামাই বানামু রে ভাই।
তবে আপনার মুখের উপর একথা কইতে পারবো না যমরাজ জ্বি।এমন কথা বলার সাহস নাই!”

আবির বলে,”কি হলো অনু আরিয়ানের কথার উওর দিচ্ছিস না কেনো?”

এমন সময় সেখানে অনুর পাশেই ওর কয়েকজন ক্লাসমেট রিমা,আদিল,সবুজ,রিদি,এসে হাজির হয়।

আরিয়ান ওদের সবাই কে একবার রাগে অগ্নিদৃষ্টিতে ভালো করে দেখে।এরপর অনুর দিকে একটা প্রশ্নবোধক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকে!

অনু আবির কে বলে,”ভাইয়া তুমি তো রিমা আর রিদিকে চেনো।এরা দুজন আমাদের ভার্সিটির নতুন বন্ধু,তবে আমাদের পুরাতন বান্দরী,এ হচ্ছে আদিল, আর ও সবুজ।”

আরিয়ান বলে,”বাব্বাহ ভার্সিটিতে পা রাখতে না রাখতেই তোর বোনের দেখ কতো-শত বন্ধুও জুটে গেছে দেখছিস।”

এমন সময় রিমা বলে,”আরিয়ান ভাইয়া অনুর কোনো দোষ নেই আসলে…”

আবির রিমাকে থামিয়ে বলে,”এই তোরে কেউ ওকালতি করতে ডাকছে এখানে?আগবাড়িয়ে অনুর হয়ে সাফাই গাইতে আসবি না বুঝতে পারছিস!”

রিমার বুঝতে বাকি রইলো না।আজ অনুর কপালে দুক্ষু আছে।আরিয়ান ভাইয়ার যে রাগ তার সাথে আবির ভাইয়াও রেগে মুম্বাই মরিচ হয়ে আছে।

রিদি রিমাকে আস্তে করে বলে,”আমাদের সবার চুপ থাকাটা উওম।নয়তো ডিটারজেন্ট পাউডার ছাড়া ভালো করে ধুয়ে দিবে।অযথা এতো পরিষ্কার হতে চাই না।”

একটুপর অনুদের সামনে একটা রেগিং করার গ্যাং এসে হাজির হয়।সে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিল রাইদুল ইসলাম ইরাদ।ইরাদের সাথে তার বন্ধুদের দল ও আছে।
সেখানে রাইসা,তৃষা,সোহম আরো অনেকেই আছে।

ইরাদ অনুর দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে বলে,”বাব্বাহ হিজাবী কন্যা তুমি তো ফাটিয়ে দিয়েছো।তোমাকে যা টাস্ক দিয়েছি তা তো খুব ভালো মতো কমপ্লিট করেছো।
কিন্তু এখানে এতো মানুষের ভীরের কারণ কি সোনা?”

আরিয়ান আবির দুজনে অনুর দিকে তাকিয়ে আছে।ওদের তাকিয়ে থাকা দেখে অনু মাথা নিচু করে রাখে।

আবির অনুকে উদ্দেশ্য করে বলে,”ছিঃ ছিঃ ছিঃ তুই শেষ পর্যন্ত ভার্সিটির প্রথম দিন রেগিং এর স্বীকার হয়েছিস।আমাদের দুই বন্ধুর নাক এভাবে কাটাতে লজ্জা করলো না একবার ও?”

ইরাদ বলে,”এই আবির তোদের সাথে ঐ মেয়ে কী সম্পর্ক রে?তোদের কেনো এতো দরদ উতলে পড়ছে?আর তোদের সম্পর্ক ও কীভাবে নষ্ট করছে?”

আরিয়ান বলে,”ইরাদ আমাদের পারসোনাল বেপারে তোর ঐ লম্বা নাক না ঢুকালেও চলবে।”

ইরাদ বলে,”তোর পারসোনাল বেপার যখন তখন তো নাক গলাতেই হবে।নয় আমার আবার পেটের ভাত হজম হবে না।তুই জানিস তো দোস্ত। ”

আবির এসে বলে,”ইরাদ তুই আমাদের থেকে দূরে থাকবি।তোর মতো খারাপ কাজ আমরা করি না।সারাদিন লেখাপড়ার নামে কলেজে এসে গুণ্ডামি করিস।অসহায় ছেলেমেয়েদের অযথা রেগিং করে বিরক্ত করিশ।”

আরিয়াত আবির সরিয়ে অনুর কাছে এসে বলে,”তোমার থেকে এমন কিছু কখনো আশা করি নাই। বলে ওরা চলে যেতে থাকে।”

এমন সময় অনু এসে রাজ কে বাদরের মতো থাপ্পড় দিতে শুরু করে।শালার রাজ তুই আমার জীবনে কালো বিড়াল।যে সময় আমার সামনে আশিস তখনি আমাকে কেনো না কোনো বিপদে থাক্কা দিয়ে ফেলেছিস।আজও ভার্সিটিতে প্রবেশ করার সময় তোর সাথে দেখা হয়ছে দেখে ঐ বুইড়া বেডা আমারে তোর মতোর লুচ্চা পোলারে প্রপোজ করতে বলছে।তোরে আমি বাড়ি থেকে বেড়োবার আগে বার বার ফোন দিয়ে নিষেধ করছি আজ ভার্সিটিতে আসবি না তবুও আসছিস।
কেন রে কেন?একদিন না আসলে কি হতো?

অনুর এমন উদ্ভট ব্যবহার আর কথায় সেখানে উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে যায়।

ইরাদ বলে,”কী সুন্দরি আগে থেকে মনে হচ্চে তোমাদের চেনাজানা আছে?”

এবার অনু রাজ কে ছেড়েদিয়ে এসে সোজা ইরাদের গালে একটা থাপ্পড় মেড়ে দেয়।

ইরাদ বলে,”তোমার এতোবড় সাহস তুমি আমাকে থাপ্পড় দাও?”

অনু দুই তা নোংরা পরিষ্কার করার মতো পরিষ্কার করতে করতে বলে,”ভার্সিটিতে প্রবেশ করার পর যখন আপনি আমাকে এমন কাজ করতে বলছেন তখনি আপনা গালে বসিয়ে দেওয়া দরকার ছিলো।তবে সমস্যা নেই তখন ভুলে গেছি এখন পুশিয়ে দিয়েছি। ”

বলে অনু সেখানে থেকে চলে যেতে লাগে।
তখন ইরাদ অনুর ওড়ান পেছন থেকে টেনে ধরে।

অনুর সামনে আরিয়ান দাঁড়িয়ে ছিলো।সে ইরাদের হাত থেকে অনুর ওড়নাটা ছাড়িয়ে নিয়ে আস্তে করে বলে,”আর যাই করিশ না কেনো!আমার কলিজার দিকে হাত দিতে আসিস না প্লিজ।”

ইরাদ বলে,”যে হাতের মালিক আমাকে স্পর্শ করার সাহস করেছে তাকে তো শাস্তি পেতেই হবে।”

আরিয়ান বলে,”অনুকে সব বিপদ থেকে বাঁচাতে আমাকে ওর সামনে পাবি।”

ইরাদ একটা বাঁকা হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।

অনু আবির কে জড়িয়ে ধরে কান্না করে বলে,”ভাইয়া আগে কেনো বলো নাই তোমাদের ভার্সিটি আসলে এমন সব জঙ্গলি প্রাণিজগৎ এর সাথে দেখা হবে?”

আরিয়ান অনুর কান টেনে ধরে বলে,”সব সময় এতো আগ বাড়িয়ে ঝামেলা বাঁধাতে কে বলে তোমাকে?কী দরকার ছিলো অযথা ইরাদের গালে থাপ্পড় দেওয়ার?”

অনু বলে,”আপনার কী দরকার ছিলো আমাকে থাপ্পড় দেওয়ার?আমি যাদের জন্য থাপ্পড় খেয়েছি সব গুলোরে ফেরত দিয়ে গাঁয়ের জ্বালা মিটিয়ে নিয়েছি।”

আরিয়ান বলে,”নাহ তোমাকে এ জীবনে মানুষের মতো মানুষ করা সম্ভব না।মাফ চাই।”

এতো কাহিনী শেষে রাজ এসে এদের সবার সামনে দাঁড়িয়ে বলে,”যতো দোষ করবে অনু তার শাস্তির ভাগিদার কেনো আমাকে হতে হবে?”

কেউ কোনো উওর না দিয়ে যে যার মতো চলে যায়।

(আসসালামু আলাইকুম! আপনাদের সবার মাঝে আবারো নতুন গল্প নিয়ে হাজির হলাম।আশা করি গল্পটা ভালো লাগবে।আর হ্যা গঠনমূলক মন্তব্য করবে।নাইচ নেক্সট লিখলে গল্পটা রেগুলার পোষ্ট করবো না।কথাটা সবাই মাথায় রাখবেন। ধন্যবাদ 🙂)



চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here