তুমি_যে_আমার🥀 Writer_Nondini_Nila Part_11

তুমি_যে_আমার🥀
Writer_Nondini_Nila
Part_11

বর্ষা পাথর হয়ে বসে আছে। নড়তে পারছে না! কথা বলতে পারছনা! ওর ভাষা যেনো হারিয়ে গেছে। ও নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না।
এই কিডনাপার ওকে কি বলে গেল? ও কিভাবে রিঅ্যাক্ট করবে বুঝতে পারছে না। এমন সময় এমন কথা শোনার জন্য ও মোটেও প্রস্তুত ছিল না। প্রস্তুত থাকার কথাও না।ও যে পরিস্থিতিতে আছে যেমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে সেখানে এমন কিছু অসম্ভব।লোকটার দুর্দান্ত চালাক। লোকটা কি ভেবেছে বর্ষা বোকা। লোকটা তাকে যেন তেন ভাবে যা কিছু একটা বলবে আর বর্ষা বোকার মত তার কথা বিশ্বাস করে নেবে। ইম্পসিবল। আমি ছেলেমানুষি হতে পারে, খামখেয়ালি হতে পারি, কিন্তু অতটা বোকা না। লোকটার মতলব আমি খুব ভালোমতো বুঝতে পারছি।লোকটা আমাকে এইসব বলে আমার কাছে আসার চেষ্টা করবে। ভালোবাসার জালে ফাসাবে। নিজের ওই সুন্দর চেহারা দেখিয়ে আমাকে ফাসাবে আমার আগেও কথা শত মেয়েকে না ফাঁসিয়েছে আল্লাহ জানে। আগে ভেবেছিলাম লোকটার বোদহয় মেয়েদের দিকে খারাপ নজর নেই। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি আমার ধারণা ভুল। কত খারাপ লোকটা। সেদিন মাঝরাতে ওইসব করে আবার আজকে এইভাবে আমাকে জোর করে আমার কাছে এলো‌। বলতে বলতে বর্ষা নিজের হাত নিজের ঠোঁট চেপে ধরল। ওর এখন এই ঠোট কেটে ফেলে দিতে ইচ্ছে করছে অসভ্য ফাজিল লোক। লোকটাকে খুন করতে ইচ্ছে করছে।গেঞ্জি উপরে তুলে ঠোট ঘষতে লাগলো। অসভ্য লোকটা ছোঁয়া মুছে ফেলতে চাইছে। ঠোট জ্বলছে তাই বাধ্য হয়েই সরাতে হলো হাত।

কিডন্যাপ করে আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। আমাকে মাম্মি বাপির কাছ থেকে কিডন্যাপ করে এখানে এনে বন্দি করে রেখেছে। এখন সেই আমাকে এসে বলছে,

‘আমার মনে হচ্ছে আমি তোমার উপর ভুলবশত দুর্বল হয়ে পড়েছি। জানিনা কি হচ্ছে যেখানে যাচ্ছি সেখানেই তোমার এই মুখটা ভেসে উঠছে। তোমাকে মিস করছি। তোমার চিন্তা মস্তিষ্ক থেকে বের হচ্ছে না। যুদ্ধ ময়দানে দাঁড়িয়েও কিনা আমি তোমার কথা ভাবছি। What is happening to me. Why are you thinking of me? Tell me why?’

লোকটা আমার দুগালে নিজের দুই হাত চেপে ধরে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথাটা বলছে। আমি কঠিন দৃষ্টিতে লোকটার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। নিজের হাত সুযোগ বুঝে লোকটা কে মারার জন্য উদ্যত হচ্ছিলাম। লোকটা খুব চালাক সাথে সাথে আমার হাত ধরে নেয় খপ করে। আর নিজের একহাতে আমার দুই হাত মোচড় দিয়ে ধরে।আমি আহ্ করে উঠি।লোকটা আমার দিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে বলে,

‘দুটো ভালো কথা বলেছি বলে গায়ে হাত দেওয়ার সাহস দেখাবে না। ইডিয়েট গার্ল।’

বলে লোকটা আমার হাত ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো।

আর নিজের বুকের কাছে শার্টের বোতাম খুলে উন্মুক্ত করে দিলো বুক। আর ফর্সা স্থানে লাল হ‌ওয়া দেখালো যা আমি একটু আগে খামচি দিয়ে করেছি। কপালের রগ ফুলিয়ে রেগে নিজের বুকের দিকে তাকিয়ে আমার মুখের দিকে তাকালো লোকটা। তারপর আমার কাছে এসে হাত উঠালো থাপ্পর দেওয়ার জন্য। আমি বাম কাত হয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম ভয়ে। কিন্তু গালের উপর কোন আক্রমণ না পেয়ে আস্তে আস্তে চোখ মেলে দেখলাম হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিচে নামিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি তাকাতেই গম্ভীর গলায় বলল,

‘ আজকে মাফ করলাম নেক্সট টাইম আমার গায়ে আঘাত করার চেষ্টা করলে হাত কেটে রেখে দেবো।’

বলেই চলে গেলো।
তখন থেকে আমি এমন পাথর হয়ে বসে আছি। কিছুক্ষণ পর লোকটা এসে মুড়ির বয়াম আরেকটা চিনির কৌটা রেখে গেল। আর আমার দিকে একবার তাকিয়ে বলল,

‘ তোমার খাবার খেয়ে নিও!’

বলে শয়তানি হাসি দিয়ে লোকটা চলে যাচ্ছিল।আমি সাথে সাথে পেছন থেকে বলে উঠলাম,

‘ আমি এসব খেতে পারব না আমাকে ভালো খাবার দিন। ‘

‘এর থেকে ভালো খাবার তোমার কপালে আর জুটবেনা বর্ষামনি।’
বলেই বাঁকা হাসলো।

‘এই মনিটা আবার কে? আমার নামে কোথাও মনি টনি নাই আমার নাম শুধু বর্ষা।’

‘আমি কি বলছি নাকি তোমার নামে মনি আছে এটা তো আমি এড করে নিয়েছি।’

‘আপনি আমার নামে এসব এড করবেন কেন? আমার নাম শুধু বর্ষা বলতে চাইলে বর্ষা বলবেন না হলে কিছুই বলার দরকার নাই!’

লোকটা কিছুই বলল না। দরজাটা আমার মুখের উপর ঠাস করে বন্ধ করে চলে গেল। তখন আমি বাসায় আরেকজনকে দেখলাম। যাকে দেখে আমার চোখ গুলো রসগোল্লার মতো বড় হয়ে গেল।
এই লোকটা এখানে কি করছে?

.

‘আমি ছিলাম না। তুই একা সব সামলালি। তোর এতো বড় কাজে আমি পাশে থাকতে পারলাম না। আমার ভালো লাগছে না।’

বলেই শাওন মুখটা বাংলার পাঁচের মত করে ফেলল।

‘এখনো বাচ্চাদের মত করিস নাতো শাওন! আমি তোর সাথে সিরিয়াস কথা বলতেছি।’

‘আমি তো সিরিয়াস কথাই বলছি আরিয়ান আমাকে পেছন থেকে আঘাত না করলে কি আমার সাথে পারতো না কি? একবারওকে কাছে পায়। আমাকে পেছন থেকে আঘাত করা শাস্তি আমি ওকে দেবোই।’

‘আরিয়ানের যা ব্যবস্থা করা পরে করা যাবে!’

‘তো এখন কি সিরিয়াস কথা বলতে চাইছিস?’

‘ আমার মনে হচ্ছে আমি এসব করতে পারবো না আমার হয়ে তুই কাজটা কর প্লিজ।’

‘বর্ষা ব্যাপারে কথা বলছিস?’

তূর্য এবার রেগে শাওন এর বাহুতে ঘুসি দিতে লাগল। শাওন ব্যথিত মুখ করে বলল,

‘ ভাই মারিস না কেবল সুস্থ হয়েছি। তোর মার খেয়ে তো আবার আমাকে বিছানায় পড়তে হবে। ‘

‘ আজ আমি তোকে আধমরা করে বিছানায় ফেলবো। কখন থেকে এক কথা বলে যাচ্ছি আর তুই কিনা না বুঝার ভান করছিস।’

‘ আচ্ছা সরি ভাই। এবার থাম আর বল কি বলেছিলি বর্ষা কে নিয়ে।’

তূর্য থেমে গেলো আর বললো, ‘ যা ছেড়ে দিলাম। এবার আমার সাথে মজা করলে তোকে আমি…

‘ আর করছি না। এবার বল‌।’

বর্ষাকে কিডন্যাপ করা থেকে সব বললো শাওন কে তূর্য। বর্ষাকে কিডন্যাপ করার কথা ছিলো শাওন এর কিন্তু সেটা তূর্য কে করতে হয়েছে। শাওন আহত হ‌ওয়ায়। সেই দিন শাওন আরিয়ানের সাথে মারামারীতে লিপ্ত হয়। আরিয়ান শাওনকে পেছনে থেকে আঘাত করে। আরিয়ান বিপক্ষে দলের বস।
কালো জগতের অনেক নাম ডাক ওর কিন্তু তূর্য এর থেকে কম। এজন্য আরিয়ান তূর্য কে মারতে চায়। তূর্য ওর বড় শত্রু। আর তূর্য বন্ধু শাওন ও তাই‌ তূর্যের হয়ে শাওন গেছিল আর বল স্বরুপ এসব হয়েছে।

শাওন সব শুনে বলছে, ‘ আমাদের তো এটাই ভাবা ছিলো‌। কিন্তু আমার মনে হয় কাজটা করা অপরাধ হবে। বাবার ভুলে মেয়েটাকে এতো বড় শাস্তি দেওয়াটা অন্যায় এখানে ওর তো কোন দোষ নাই।’

‘ তুই ওই মেয়ের হয়ে কথা বলছিস কেন? আর শোন শাস্তি দিতে হলে বর্ষাকেই ব্যবহার করতে হবে। কারণ ওই নিবিড় আহমেদ এর প্রাণ ভোমড়া ওনার মেয়ে। ওনার মেয়ের ক্ষতি হলে উনি সবথেকে বড় শাস্তি পাবে। যখন জানতে পারবে উনার ভুলে উনার মেয়ের সর্বনাশ হয়েছে তখনই এমনিতেই উনি ভেঙ্গে পড়বে। আর যেটা আমি চেয়েছিলাম সেটাই হবে।’

‘ তাহলে প্ল্যান মত কাজ শুরু করে দে।’

‘আমার হয়ে তুই কাজটা কর প্লিজ। আমি এসব করতে পারছিনা। ‘

‘হোয়াট!’

শাওন এক প্রকার চেঁচিয়ে উঠলো।

‘আমি অসম্ভব ভাই! তোর জন্য জান দিয়ে দেবো। সব করতে রাজি আছি। কিন্তু এটা আমাকে করতে বলিস না। আমি পারবো না।’

#চলবে

( বোনের বাসায় আসছি লেখার সুযোগ হচ্ছে না তা ও অনেক কষ্ট করে এইটুকু দেওয়ার চেষ্টা করলাম।আমার ব্যাপারটা বুঝার চেষ্টা করবেন আশা করছি। কয়েকদিন একটু লেট হতে পারে গল্প দিতে কারণ অনেক দিনের জন্য বোনের বাসায় আসছি।লকডাউন এর মাঝে বাসায় যেতে ও পারবো না। আমি অবশ্যই লকডাউন বোনের বাসায় কাটানোর জন্য আসছি। তাই গল্প দিতে একটু লেট হতে পারে প্রতিদিন না দিলে ঝ একদিন পরপর ছোট করে হলেও দেব।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here