প্রিয়তমা পর্ব-২ ৩

0
3666

#উপন্যাস
#প্রিয়তমা (২য় ৩য় পর্ব)
লেখা-শারমিন মিশু
পলির বড় ভাই পিয়াসের তিন ঘনিষ্ঠ বন্ধু আনাস, সজিব ও শাওন ঢাকা থেকে বিয়ে উপলক্ষে ওদের বাড়িতে এসেছে। আনাস অবশ্য আসতে চায়নি। কিন্তু শেষে পিয়াসের জোরাজুরিতে আসতে হলো। আনাস এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে একেবারে আনকম্পোটেবল ফিল করে। তাই ও নিচে চলে আসছিলো৷ গ্রামের পরিবেশ অন্যরকম ভালো লাগে ওর। ছোটবেলা থেকে শহরে বেড়ে ওঠা তারপরও গ্রামের পরিবেশটাই ওকে টানতো বেশি। আনাস বাগানের সামনে বসেছিল। মায়ের ফোন আসাতেই আনাস কথা বলতে বলতে এগিয়ে সামনের দিকে যাচ্ছিলো। একটা নারী অবয়ব দেখে ও কিছুটা ভড়কে গিয়েছিলো। এখানে ও নতুন চারপাশ তেমন চিনেওনা। কিন্তু এতক্ষণ তো এখানে কেউ ছিলনা। কিছুটা সাহস নিয়ে সামনে আগাতেই নারী অবয়বটা দৌঁড়ে সরে গেলো। আনাস নিজেও ভয় পাচ্ছিলো ভূত প্রেত ওতো হতে পারে। মনে মনে দোয়া কালাম পড়তে পড়তে রুমে চলে গেলো তখনি।
অনুষ্ঠান শেষ হলো রাত দুটোয়। পলি স্টেজ থেকে উঠে সোজা লামিয়ার কাছে চলে আসলো। আসার পর থেকে এক কথা বলে যাচ্ছে। তুই কেন আমাকে হলুদ ছোঁয়াচ নি জানিস আমার কত কষ্ট লাগছে। তোর উপর রেগে আছি আমি।তুই আমার ব্রেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে ও এমনটা করতে পারলি। কি হতো ওখানে গেলে।
-দেখ পলি!! আমি কিন্তু এখানে আসতাম না। শুধু তোর আর খালামণির মন রাখতে আসা। আমি একটু হলুদ ছোঁয়ায়নি বলে তোর এতো কষ্ট লাগছে। তাহলে ভেবে দেখ তুই ওতো আরেকজনকে প্রতিনিয়ত ঠকাচ্ছিস। সে তোর দিকে তাকিয়ে আছে তুই কখন তাকে ডাকবি। কাল তোর জীবনের একটা বিশেষ দিন
-মানে আমি কাকে ঠকাচ্ছি? কে সে?
-ওইযে উপরে বসে আছে উনাকে। তিনি তোর আমার আমাদের রব আল্লাহ।
-কি বলছিস কি তুই? একটু বুঝিয়ে বলবি?
-আচ্ছা আমাকে একটা কথা বলতো তুই আজকে কয় ওয়াক্ত নামাজ পড়েছিস?
-এক ওয়াক্ত ও না।
-কেন পড়িসনি?
-আসলে সারাদিন অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।
-শুধু এটার জন্য নামাজ পড়িসনি?
-না কিন্তু অনেকে বলেছে ওজরের মাসয়ালা আছে। পরে আদায় করলে চলবে।
-হায়রে মুসলিম জাতি!!! ওজরের মাসয়ালা দেখাচ্ছিস? এটা কোন ধরনের ওজর পেশ করছিস যেটাকে ইসলাম সমর্থনই করেনা।
শুন পলি কাল থেকে তোর নতুন জীবন শুরু হবে। আজ এই মুহূর্ত অবদি তুই কারো আদরের মেয়ে কারো বোন।কিন্তু কাল ঠিক এই সময়ে তুই হবি কারো স্ত্রী, কারো বউমা, কারো মামি,চাচী তোর দায়িত্ব বেড়ে যাবে। হয়তো তাদের স্বার্থে তোকে তোর কিছু ইচ্ছেকে বিসর্জন দিতে হবে। তোকে বদলে যেতে হবে। বাবার অধীন থেকে বরের অধীনে চলে যাবি। তুই জানিস না তারা কেমন হবে না হবে। তোর উচিত ছিল আল্লাহর কাছে আজ বেশি বেশি করে দোয়া প্রার্থনা করা। তার দরবারে কান্নাকাটি করা। কিন্তু না তুই সবার মন রক্ষার্থে নিজেকে সং সাজিয়ে বসে ছিলি। ফটোশুটে ব্যস্ত ছিলি। আমি বলছিনা এসব করা ঠিক না। বিয়েতে মেয়েরা হাতে মেহেদীর রঙে রাঙাবে। হলুদ দিয়ে হাত রীরের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে যাতে বরের দৃষ্টি তার নব বধূর দিকে আকর্ষিত হয়। ইসলামে ও এসব আছে কিন্তু এভাবে নাচ গান উৎসব করে নয়। কি হবে এসব করে যদি এর পরের জীবনটা শান্তি না থাকে। কোন লাভ নেই!!! আফসোস!!! আমরা কখন বুঝবো নিজেদের ভালো। তুই আপুকে দেখনা ভালোবেসেই তো বিয়ে করেছিল। কিন্তু শান্তি আছে? নেই। কেন তা হয়তো তোকে আর বুঝাতে হবেনা। এই যে তুই দিনরাত তোর হবু বরের সাথে ফোনে কথা বলছিস,মার্কেটিং করতে যাস এটাকি ঠিক? কবুল বলার আগ পর্যন্ত ও তোর জন্য পরপুরুষ। যার সাথে কথা বলা পুরোপুরি হারাম তোর জন্য। বলা তো যায়না কার মতের কখন পরিবর্তন হয়। তোর ভালোর জন্য বলছি যদি ভুল কিছু বলি ক্ষমা করে দিস।
-পলি এতক্ষণ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে লামিয়ার কথা শুনছিলো। ওর কথা শেষ হতেই ওকে শক্ত করে জড়িয়ে কেঁদে দিলো । জানিস কখনো এভাবে ভেবে দেখিনি। নিজেকে আধুনিকতার রঙে রাঙিয়ে তুলতে ব্যস্ত ছিলাম। তুই আমার এতো প্রিয় কেন জানিস? কারণ তোর কাছে আসলে আমি শান্তি খুঁজে পাই।
-লামিয়া বললো,,আরে আরে কি করছিস কি পুরো জামাটা মেহেদীতে ভরিয়ে দিয়েছিস তো।
-পলি কান ধরে উফ!!! সরি মনে ছিলনা আবেগে জড়িয়ে নিয়েছি।
-আচ্ছা এখন ঘুমা। রাত অনেক হয়েছে। কাল তো আপনার বিয়ে পলি জি। লামিয়া দুষ্টুমির হাসি হেসে আর আগামী কাল রাতে এমনিতে চাইলেও আপনি ঘুমাতে পারবেন না।
-ওর কথায় লজ্জামাখা কন্ঠে পলি হেসে দিলো। বাব্বাহ!!! লামিয়া তোকে দেখে বুঝা যায়না তুই দুষ্টামি ও করতে পারিস।
আচ্ছা একটা কথা বলতো লামিয়া তুই তোর ভবিষ্যত বরকে নিয়ে কোন স্বপ্ন দেখিস না। সে কেমন হবে বা কি?
-হুম দেখি। আর মেয়ে যখন হয়েছি বিয়ে আজ না হয় কাল করতেই হবে। আমি চাই সে হবে শুধু আমার মনের মত।একজন আদর্শ পুরুষ। অতিরিক্ত সৌন্দর্য তার চাইনা হ্যান্ডসাম হতে হবেনা,না বিত্তবান হতে হবে তাকে।
তার হৃদয়টা সুন্দর হলেই হবে। ইসলামের আলোয় তার জীবনটা হবে আলোকিত।আমি হতে চাই তার চোখে পৃথিবীর সেরা সৌন্দর্য্যময়ী নারী আর সে আমার চোখে সেরা সৌন্দর্য্যমন্ডিত পুরুষ। আমাকে নিয়ে আমার হাত ধরে যে আখেরাতে জান্নাত যাওয়ার রাস্তাটা পার হবে।জান্নাতে সে হবে আমার সঙ্গী।
সে হবে আমার শুধু আমার প্রিয়তম,,, আর আমি হবো তার প্রিয়তমা জীবনসঙ্গীনি।
ব্যাস এতটুকুই।
-যদি এরকম না হয়?
-তাকে আমি আমার মত করে নিবো। কারণ নারী সব পারে। যে ঘরে নারী সঠিক পথে থেকে ইসলামী জীবন মেনে চলে সে ঘরে ইসলামের সুবাতাস বইবেই।
-আল্লাহ তোর চাওয়াগুলো কবুল করুক।
-আমিন।
পরদিন ভোরো লামিয়া নামাজ পড়ে ঘুমায়নি। সারা বাড়িতে পিনপতন নিরবতা। সারারাত জাগার ফলে সবাই এখন বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। আর বিয়ের অনুষ্ঠান হবে কনভেনশন সেন্টারে। সেজন্য কারো কাজের ঝামেলা নাই। লামিয়া বাহিরে বাগানে কতক্ষণ হাটাহাটি করলো। এখন আশেপাশে কেউ নেই। আর ভোরের আবহাওয়া অনেক ভালো শরীরের জন্য।
লামিয়া কিচেন রুমে আওয়াজ শুনে ওদিকে যেতেই দেখলো খালামণি কাজ করতেছে। লামিয়া পিছন থেকে বলে উঠলো কি করছো খালামণি?
-উনি পিছন তাকিয়ে,,, ও আমার মামনি যে!! কখন উঠেছিস তুই?
-আমি তো অনেক আগেই উঠেছি। তুমি এখন কি রান্না করছো কিচেনে?
-আর বলিস না সবার নাস্তার জন্য হোটেলে অর্ডার দেয়া হয়েছে। কিন্তু পিয়াসের বন্ধুরা এসেছে ঢাকা থেকে। তাদের তো যেমন তেমন সমাধার করা যায়না। স্পেশাল গেস্ট বলে কথা!! ওরা তো কখনো আসেনি আমাদের বাসায়। তাই ওদের জন্য কিছু নাস্তা তৈরি করছি।
-আচ্ছা দাও আমি করছি কি করতে হবে বলো।
-তুই বরং ঝিনুক পিঠাটা বানিয়ে নে।
-আচ্ছা
পিয়াস অাম্মু আম্মু বলে সোজা কিচেনে ঢুকে গেলো। লামিয়া তাড়াতাড়ি ওড়নাটা টেনে দিলো মাথার উপর। পিয়াস লামিয়াকে খেয়াল করতেই সরি বলে বেরিয়ে গেলো। সবাই জানে লামিয়া যথেষ্ট পর্দানশীন তাই সবাই ওর সাথে সেভাবেই চলে।
পিয়াস ভাইয়া বাহিরে থেকে বললো আম্মু নাস্তা রেডি হলে তাড়াতাড়ি দাও। আমরা একটু বাহিরে যাবো ঘুরতে।
খালামণি নাস্তা পাঠিয়ে দিয়ে লামিয়াকে বললো,,, মা তুই চা টা একটু বসিয়ে দে আমি একটু কাজ সেরে আসছি। চা হলে তোর ভাইয়াকে ডেকে দিস।
লামিয়া মাথা নেড়ে সায় জানালো।
লামিয়া চা বানিয়ে নিয়ে পিয়াসের রুমের দরজায় টোকা দিলো বললো ভাইয়া চা নিয়ে যাও। তারপর ওখান থেকে চলে গেলো।
পিয়াস চা নিয়ে আসতেই সজিব বললো,,, মেয়েটা কে রে?
-পিয়াস বললো,,, কোন মেয়েটা?
-তোকে চায়ের জন্য ডাকলো যে?
-তুই দেখছিস কেমনে?
-আরে ও চলে যেতেই পিছন থেকে একটু দেখলাম।
-ও হচ্ছে আমার খালাতো বোন লামিয়া।
-তাহলে তো দেখতেই হবে একবার। তোর খালতো বোন মানে তো আমাদের ও ।একটু লাইন মারা যায় কিনা দেখি।
-কোন লাভ নাই ভাই।ও তোর টাইপ না।
-শাওন বললো,,, মানে?
-ও আমার বোন হয় তাও আমি ওকে দেখিনি কখনো। সেই ছোটবেলায় একটু দেখেছি এখন মনে ও নাই ওর চেহারা। পর্দা করে চলে সবসময়। কারো সাথে দেখা দেয়না
-সজিব শব্দ করে হেসে বলে উঠলো,,,তার মানে হুজুর টাইপ মেয়ে। হুজরানি। যাক অন্তত আমাদের আনাস হুজুরের সাথে তো মিলবে। আমি ভাবতাম আমাদের আনাস ই শুধু নিরামিষ। এখন দেখছি না আরো কেউ আছে ওর মতো নিরামিষ।
আনাস ছাড়া ওরা তিনজন শব্দ করে হেসে উঠলো।
আনাস একটু রাগ দেখিয়ে কি শুরু করেছিস কি তোরা যাবি নাকি বাহিরে?
পিয়াস হাসি থামিয়ে বললো,,,সরি সরি দোস্ত চল।
লামিয়া নিজেকে ভালো করে হিজাবে আবৃত করে অনুষ্ঠানে গেলো। ওর বাবা আর ভাইয়া সরাসরি অনুষ্ঠানের জায়গায় উপস্থিত হয়েছে। লামিয়া মায়ের পিছু পিছু হাটছিলো। বিয়ের কনে মাত্র পার্লার থেকে আসলো।
লামিয়া মায়ের কাছে বসে বললো,,, আম্মু আমি কিন্তু আব্বুর সাথে এখান থেকে বাসায় চলে যাবো।
-কি শুরু করেছিস কি লামিয়া। আমরা পরশু চলে যাবো।
-আমার ভালো লাগছেনা আম্মু।
-তোর কোথায় ভালো লাগে বলতো? সবসময় বাসা ছাড়া তোর কোথাও ভালো লাগে নাকি।
-আম্মু প্লিজ।
-সরবি এখান থেকে। ওর বাবার দিকে তাকিয়ে বললো,,, বুঝাও একটু তোমার আদরের মেয়েকে।
-বাবা বলে উঠলো,,, কি হয়েছে আমার মেয়ের?
-বাসায় যাওয়ার জন্য জিদ ধরে বসে আছে।
-কি হয়েছে আব্বুকে বলো মা?
-আব্ব ওখানে আমার ভালো লাগেনা।
-কেন?
-ওখানে পিয়াস ভাইয়ার বন্ধু ছাড়া আরো অনেক ছেলেরা আছে আমার অস্বস্তি লাগছে।
-কিন্তু বাসায় ও তোমার একা থাকা ঠিক হবেনা মা। আর লাবিব আজ এখানে থাকবে। একটু কষ্ট করে থাকো। তোমার আম্মু তো আছে।
-ফারিহা বললো,,, আব্বু তোমার ছোট মেয়ের ঢং দেখে বাঁচিনা যত্তসব!!! মনে হয় ও একলা পর্দা করে দুনিয়াতে আর কোন মানুষ নাই।
-উনি ফারিহাকে ধমকে উঠে,,, তুমি চুপ থাকো। সবাইকে নিজের মত ভেবোনা। ও তোর তোমার মতোনা না।
লামিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো মা আমার কথা শুনো।
-লামিয়া আচ্ছা আব্বু
পরদিন সবাই পলির শশুররবাড়ি গিয়েছে। লামিয়া ওর আম্মু আর খালামণি ছাড়া। সন্ধ্যার সময় সবাই ফিরে আসাতে বাড়ি আবার সরগরম হয়ে উঠেছে। নতুন বর বউ কে আনা হয়েছে। জামাই বরনসহ কত কি হাবিজাবি রীতিনীতি পালন করার পর বাড়িটা শান্ত হলো। তারপর জামাই আদর তো চলছে তোড়জোড়ে। পলির চাচাতো ফুফাতো বোনরা নতুন দুলাভাইয়ের সাথে সেইকি আড্ডা জুড়িয়ে দিয়েছে। কি অসভ্য মেয়েগুলা অন্যের জামাইয়ের সাথে এতো কিসের গাঁ ঘেষাঘেষি অসহ্য!!!
আর এদিকে পলি এসে থেকে লামিয়ার সাথে গল্প জুড়ে দিয়েছে।শশুড়বাড়ি কে কি দিলো ,, কি কি করেছে ওকে নিয়ে যাওয়ার পর। লামিয়ার এই মুহূর্তে ভালো লাগছেনা এসব শুনতে। তাই পলিকে বললো,, কিরে তুই নতুন জামাই রেখে আমার সাথে গল্প করছিস। এখন তোর উচিত তোর বরের পাশাপাশি থাকা। তা না তুই এখানে বসে আছিস যা বরকে গিয়ে সময় দে।
এমনিতে লামিয়ার মন মেজাজ খারাপ হয়ে আছে। পিয়াস ভাইয়ার দুইটা বন্ধু কাল থেকে ওকে একরকম বলতে গেলে মানসিক টর্চার করে যাচ্ছে। বিয়ে বাড়িতে একটু নিরিবিলিতে বসার কোন একটা জায়গা নাই।তার উপর চ্যাঁচড়া দুইটা পিছনে লেগেই আছে। কি একটা অভদ্রতা। যেখানে যাচ্ছে সেখানে ওরা। কাউকে কিছু বলতে ও পারছেনা সইতেও পারছেনা। কেলেংকারী ঘটে যাবে কাউকে বললে কিনা কি বুঝে বসে থাকে। উল্টা ঝামেলা হবে। তাই সকাল হওয়ার অপেক্ষায় আছে ও। সকালে আম্মু না গেলে ও চলে যাবে।
পরদিন সকালে লামিয়া খালামণিকে বুঝিয়ে বাসায় চলে আসলো ওর ভাইয়ের সাথে………

চলবে……

#উপন্যাস
#প্রিয়তমা (৩য় পর্ব)
লেখা – শারমিন মিশু
আজ একমাস ধরে ফারিহাকে নিয়ে ওর পরিবারের লোকেরা অনেক বিপাকে আছে। মেয়েটা কোন ভাবেই আর ওর জামাইয়ের কাছে ফিরবেনা। প্রয়োজনে রাহাতকে ও ডিভোর্স দিবে তারপর ও যাবেনা। অনেক ঝামেলা চলছে দুজনের মাঝে। ওর মা বাবা ওকে অনেক জিজ্ঞেস করেও কিছু জানতে পারেনি। বাবা মা ওর চিন্তায় অস্থির। লামিয়া উনাদের আশ্বস্ত করলো যে ও বোনকে বুঝাবে এটা নিয়ে যেন উনারা চিন্তা না করে।
ফারিহা বাহিরে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলো এই মুহুর্তে লামিয়া দরজায় নক করলো আপু ভিতরে আসবো?
-আয়
-তুই কি কোথাও যাচ্ছিস?
-হুম সোমার বার্থডে পার্টি আছে আজ ওখানে যাচ্ছি। তুই কি কিছু বলবি?
-হুম তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।
-এখন সময় নাইরে। রাতে ফিরলে বলিস।
-আচ্ছা
ফারিহা বেরিয়ে গেলো। লামিয়া এই মুহুর্তে ওকে বাহিরে বেরুতে নিষেধ করতে পারতো কিন্তু করেনি। কারন ফারিহা রেগে গেলে মূল কথাগুলো আর বলা হতোনা। তাই আস্তে ধীরে ঠান্ডা মাথায় বুঝাতে হবে। এভাবে হুটহাট করে তো সম্পর্ক করা যায়না আবার ভাঙ্গা ও যায়না।
ফারিহা ফিরলো রাত এগারোটায়। তাই তখনো ও কিছু বলেনি। সকালে ফারিহা উঠার আগেই লামিয়া বোনের রুমে গিয়ে বসে রইলো। আজ যে করেই হোক বলতে হবে। যত দেরি হবে ততই সমস্যা বাড়বে।
ফারিহা চোখ খুলে ছোট বোনকে দেখে বললো,,, তুই এতো সকালে আমার রুমে কেন?
-আপু তুই বোধহয় ভুলে গেছিস আমি তোকে বলেছি তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।
-ও সরি,,,সরি,, ভুলেই গেছিরে। বল কি বলবি?
-আগে ফ্রেশ হয়ে নে।
-ফারিহা ফ্রেশ হয়ে এসে বল কি বলবি?
-তুই রাহাত ভাইয়ার ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নিয়েছিস? তুই কি ও বাড়িতে আর ফিরে যাবিনা?
-ওই বেয়াদবটার সাথে সংসার করার প্রশ্নই আসেনা। আমার কথার কোন দাম নেই ওর কাছে। মা বাবা বলতে বলতে জানোয়ারের বাচ্ছাটা পাগল হয়ে আছে। অসভ্য লোক একটা!!!!
-আপু সংযত ভাষায় কথা বল। উনি এখনো তোর হাজব্রেন্ড। কতবড় পাপ করে ফেলেছিস কথা গুলো বলে জানিস?
-হাজব্রেন্ড তো কি হয়েছে?তাকে কি আমার মাথায় তুলে নাছতে হবে? যাতো জ্ঞান দিবিনা আমাকে।
-লামিয়া এবার বোনকে জড়িয়ে ধরে আপু প্লিজ তুই ঠান্ডা মাথায় আমার কথাগুলো শুন প্লিজ আপু। আমি তোকে অনেক ভালোবাসি আপু। তাই তোর কোন ক্ষতি আমি চাইনা
-ফারিহা নিজেকে কিছুটা শান্ত করে বললো,,, হুম বল।
-দেখ আপু আমাকে তোর ছোটবোন না বন্ধু হিসাবে জেনে কথাগুলো শুনবি? আপু সম্পর্ক কোন ঠুনকো জিনিস নয় যে চাইলে ভেঙ্গে ফেলবি। একটু ভেবে সিদ্ধান্ত নিস। রাগের মাথায় এতবড় সিদ্ধান্তটা নিসনা।
-ভাবাভাবির কিছু নেই আমি ওর সাথে থাকতে পারবোনা।
-আপু প্লিজ মাথা গরম করিসনা । তুই জানিস আল্লাহর কাছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হালাল কাজটা কি? ডিভোর্স/তালাক। আমাদের সমাজে ডির্ভোসী নারীকে কেউ ভালো চোখে দেখেনা। প্রতি পদে তোকে অপদস্ত হতে হবে। বিয়ে নামক সম্পর্কটা এমন একটা সম্পর্ক যা একবার ভেঙ্গে গেলে চাইলে তুই আবার জোড়া লাগাতে পারবিনা।
তোদের এতো ভালোবাসা ছিল আজ কেন একজনের প্রতি আরেকজনের এতো বিরস ভাব? তিক্ততায় ভরে গেছে তোদের সম্পর্কে। কারণ কি জানিস? কারণ ভালোবাসার প্রধান এবং প্রথম দুটি শর্ত সন্মান এবং বিশ্বাস।
তোরা কেউ কাউকে বিশ্বাস করিসনা, সন্মান দিতে জানিসনা। একজনের প্রতি আরেকজনের শ্রদ্ধাবোধ নেই তোদের।তোরা আজো একজনকে ভালোবাসিস কিন্তু নিজেদের ইগোর জন্য তা প্রকাশ করতে পারিসনা।
ভাইয়াকে যতটা জানি ও তোর মতো এতো বেশি আধুনিক মন মাইন্ডের না। কিছু মনে করিস না আপু তুই একটু বেশি উশৃঙ্খল।
-ফারিহা কান্না কন্ঠে বললো,,,, তুই আমার বোন হয়ে এরকম দোষারোপ করছিস আমাকে?
ও ওর বাবা মার কথায় উঠবস করে সবসময়। বিয়ের আগে এই করবো সেই করবো বলে কত কি বলেছে। আর এখন আমার দাম নাই। রাহাত আমাকে একটু ও ভালোবাসেনা। বাবা মাই সব।
-লামিয়া মুচকি হেসে বললো,,, কে বলেছে ভালোবাসেনা আসলে তোর হিংসে হচ্ছে ও কেন তোর কথায় চলেনা তার জন্য। দেখ তোর হাজবেন্ড হওয়ার ভাইয়া তাদের ছেলে। বাবা মায়ের জন্য ভালোবাসা আর স্ত্রীকে ভালোবাসা সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার। তুই তোর জায়গা উনারা উনাদের জায়গায়। বেচারা কি করবে বলতো একদিকে বাবা মা যারা তাকে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছে । আর অন্যদিকে তুই যে উনার সারজীবনের চলার পথের সঙ্গী। তার পক্ষে কাউকে বাদ দেয়া সম্ভব নয়।
-কিন্তু ও কি বিয়ের পর থেকে কখনো আমাকে সময় দিয়েছে । কখনো বুঝতে চেয়েছে আমি কি চায়?
-তুই বুঝতে চেয়েছিস কখনো তাকে? সারাদিন তোর কাটে বাহিরে বাহিরে। সে পুরুষ মানুষ সারাদিন অফিস শেষে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে। ঘরে এসে যদি স্ত্রীর হাসিমাখা মুখ না দেখতে পায় তাহলে তার মনে শান্তি থাকে। তুই উনি বাসায় ফিরতে না ফিরতে তার কাছে তার বাবা মায়ের নামে অভিযোগ শুরু করে দিস তখন কার ভালো লাগে।
সে ফিরেছে আগে তার সাথে একটু হাসিমুখে কথা বলবি পরে আস্তে ধীরে সব বুঝিয়ে বলবি। আপু তোর উগ্র মেজাজ সেটা তুই ভালো করে জানিস আমি আর কি বলবো। শালীনতা তোর মাঝে নাই বললেই চলে
তুই যেভাবে মর্ডান ড্রেস পড়ে চলাফেরা করিস এটা সবার চোখেই লাগবে। বাড়ির বউ যদি রাস্তার মেয়েদের মত করে চলাফেরা করে তখন কেউ সহ্য করবেনা। তুই কালও রাত করে ফিরেছিস এভাবে প্রায় প্রতিদিন তুই ফিরিস। এটা তোর বাবার বাড়ি তাই কেউ কিছু বলেনা। কিন্তু মনে রাখতে হবে ওটা তোর শশুড়বাড়ি। শুন মাঝে মাঝে পরের স্বার্থে নিজেকে পরিবর্তন করতে হয়। হয়তো তুই তার মত হবি নয়তো তাকে তোর মত গড়ে নিবি। কিন্তু তোর চলার পথ সঠিক নয় তাই ভাইয়া তোর মত হতে পারেনি। তাই তোকে উনার মনের মত হতে হবে।তবেই শান্তির দেখা পাবি নয়তো না।
– ফারিহা সুর কিছুটা নরম করে অভিযোগের মত করে বললো,,,আমি মেয়ে বলে কি আমার কোন স্বাধীনতা থাকবেনা।
আর শুধু কি আমি রাহাত ও তো রাত করে ফিরে।
-কেন স্বাধীনতা থাকবেনা তোর। প্রতিটা নারী স্বাধীনতা চায়।তুই বাদ থাকবি কেন?
দেখ আপু আমি ও নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি কিন্তু নির্লজ্জতা পছন্দ করিনা। আপু স্বাধীনতা মানে আসন বদল নয় যার যার জায়গা থেকে নিজ নিজ কর্তব্য সম্পন্ন করতে হয় ওটাই স্বাধীনতা।
আর একটা কথা কোন ঘরে নারী যদি মহা নারী হতে চায় সে সংসারে মহামারী ছড়াবে আর পুরুষ যদি মহা পুরুষ হতে চায় তাহলে সে কাপুরুষ হয়ে দাঁড়াবে। একজনের প্রতি আরেকজনের সন্মান থাকা চাই,,, বিশ্বাস থাকা চাই।
তোর শশুরশাশুড়ির একমাত্র সন্তান ভাইয়া। বউয়ের কথায় যদি ছেলে যদি তাদের ছেড়ে যায় তাহলে তাদের কতটা কষ্ট হবে বুঝতে পারিস।
আমাদের কথা ভাব,,, আমাদের ভাই বিয়ের পর তার বউয়ের কথায় আমাদেরমা বাবা কে ছেড়ে আলাদা হয়ে যায় কেমন লাগবে?
আপু ভালোবাসার শক্তি অনেক। তোর শশুর শাশুড়ি যদি তোর সাথে খারাপ আচরণ ও করে তুই তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করবি। তাদের শশুর শাশুড়ি নয় নিজের বাবা মা মনে করে সন্মান করবি,,, ভালোবাসবি। একদিন তাদের চোখে হয়ে উঠবি পৃথিবীর সেরা বউমা।
ভাইয়ার প্রতি আলাদা টেক কেয়ার করবি। পুরুষ মানুষ ভালোবাসার কাঙাল।ভালোবাসার টানে সে তোর কাছে আসবেই। স্বামীর কাছে একজন আদর্শ জীবন সঙ্গিনী পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। স্বামির চোখে পৃথিবীর সেরা নারী হবি তুই।
-ফারিহা এতক্ষণ নিরবে কাঁদছিলো এ পর্যায়ে বললো,,,এখন আমি কি করবো তুই বল আমাকে? তুই যা বলবি আমি তাই করবো। ও কি আমাকে ফিরিয়ে নিবে? মা বাবা কি ক্ষমা করবে?
-কেন নিবেনা? না নিলে জোর করে আদায় করে নিবি নিজের অধিকার। আর তাছাড়া উনি হয়তো একটু রাগ করেছে। সে তোকে এখনো ভালোবাসে। তোর ভালোবাসা তার কাছে প্রকাশ করলে দেখবি তার রাগের বরফ গলে পানি হয়ে গেছে।
আর আঙ্কেল আন্টি রাগ দেখালে পা ধরে মাপ চাইবি। আপন মানুষের কাছে মাথা নত হলে লজ্জা নেই।
তুই ফিরে যা আপু। নিজেকে একটু পরিবর্তন কর। ওটা তোর নিজের সংসার। ওটাই তোর বাড়ি। এটা আমদের বাবার বাড়ি। বাবার বাড়িতে মেয়েরা অতিথি হয়েই থাকে। আর স্বামির বাড়ি আমাদের নিজের বাড়ি।
জীবনকে ইসলামের আলোয় রাঙিয়ে তুলার চেষ্টা কর। কেননা একমাত্র ইসলামই তার অনুসারীদেরকে ভদ্রতা,বিনয়,শালীনতাও যুক্তিবাধিতার শিক্ষা দেয়। হীনতা ও দীনতার শিক্ষা ইসলাম দেয়না।আমি জানি তুই শয়তানের প্ররোচনায় পড়েছিস। শয়তান প্রতি পদে আমাদের ধোঁকা দেয়ার চেষ্টায় থাকে। তুই যখন ইসলামকে আঁকড়ে ধরবি কোরআনের শিক্ষায় নিজেকে আলোকিত করবি শয়তান তোকে ধোঁকা দিতে পারবেনা।
আমি জানি পারবি তুই। কথা দে আমার কথাগুলো ভেবে আরেকবার নিজেকে সুযোগ দিবি।
-ফারিহা বোনকে জড়িয়ে ধরে বললো ইনশাআল্লাহ!!! পারবো আমাকে পারতেই হবে!!! পারতেই হবে। অকারণে তোর উপর রাগ দেখাতাম বকাঝকা করতাম কখনো আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করিস নি। তুই আজ আমার চোখের কালো পর্দা সরিয়ে দিয়েছিস। সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছিস।
আল্লাহ তোকে ভালো রাখুক এতোটুকু দুঃখ যাতে তোকে না ছোঁয় সব সময় আল্লাহর কাছে চাইবো। তোর ঋণ কি দিয়ে শোধ করবো?
-আরে আপু ছাড়!!ছাড়!!দম বন্ধ হয়ে মরে যাবোতো। তখন আর ঋণ শোধ করতে পারবিনা। বাব্বাহ এভাবে কেউ জড়িয়ে ধরে!!!!
দুবোন একসাথে হেসে উঠলো।
নাস্তা শেষ করে ফারিহা রেডি হতে শুরু করলো ও ফিরে যাবে আজ নিজের ঠিকানায়। আজ থেকে হয়ে যাবে অন্য এক ফারিহা। লামিয়া বললো,,,আপু বাবাকে দিয়ে ভাইয়াকে ফোন করে বাসায় আনি। আমার মনে হয় ভাইয়ার সাথে ও ব্যাপারটা আলোচনা করা দরকার। তারপর না হয় উনার সাথে তুই যাবি?
-নারে আমার জন্য আর কাউকে অপদস্থ হতে হবেনা। আমি নিজেই সব মিটিয়ে নিবো।সমস্যা যখন আমিই সৃষ্টি করেছি সেটার সমাধান ও আমি করবো।
-আপু আমার কথায় তুই কষ্ট পেয়েছিস তাইনা ?
-নারে পাগলি। তোর উপর আমার একটু ও রাগ নেই। প্রতিটি মানুষের জীবনে একজন মানুষ থাকে তাকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমার সেই টার্নিং পয়েন্ট টা তুই। দেখিস তুই অনেক ভালো থাকবি।
-লামিয়া একটা বোরখা এগিয়ে দিয়ে বললো আপু আজ থেকে শুরু কর জীবনের নতুন অধ্যায়।
-ফারিহা বললো, ইনশাআল্লাহ!!! আল্লাহ আমাকে কবুল করুন।
ফারিহা বাবা মায়ের রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে বললো,,,, আব্বু ভেতরে আসবো?
ওর বাবা মা দুজনে অবাক!!!
ওর আব্বু চোখে বিস্ময় নিয়ে বলে উঠলো,,, এ কাকে দেখছি আমি!”! কোন স্বপ্ন দেখছি নাতো আমি?
লামিয়া বলে উঠলো,,, না আব্বু স্বপ্ন নয় সামনে যা দেখছো পুরোটাই সত্যি। তোমার সামনে তোমার বড় রাজকন্যা দাঁড়িয়ে আছে। নিজের সংসারে ফিরে যাচ্ছে দোয়া করে দাও।
আব্বু বলে উঠলো,,, আলহামদুলিল্লাহ।
-ফারিহা বললো,,, আব্বু দোয়া করো আমার জন্য। আর পারলে ক্ষমা করে দিও এই অভাগা মেয়েটাকে।
-আব্বু কান্না মাখা স্বরে বলে উঠলো,,, আমার মা তার ভুল বুঝতে পেরেছে এর চেয়ে বেশি আনন্দ আমার আর কিছুতে নেই। আল্লাহর রহমতের ছায়া আমার মেয়ের উপর পড়েছে। আল্লাহ তাকে হেদায়েতের আলো দান করেছে। এর বেশি খুশি আমি কখনো হইনি। ভালো থাকিস মা।
-মা বললো,,,মাশাআল্লাহ্!!! কত সুন্দর লাগছেরে তোকে হিজাবে আবৃত অবস্থায়। ভালো থাকিস। ওদের কথামতো চলার চেষ্টা করিস। স্বামির মনে কষ্ট দিসনা। শশুরশাশুড়ির যত্ন নিস তাহলে আমরা ও ভালো থাকবো।
-আব্বু বললো,,, তুই কি একা যেতেযাচ্ছিস মা।
-হ্যা আব্বু।
-কিন্তু একা যাওয়া ঠিক হবেনা তোর।দাঁড়া আমি নিয়ে যাবো।
-না আব্বু আমি একা যাবো। ও বাড়ির পরিবেশ এখন কি অবস্থায় আছে আমার জানা নাই। তোমাকে কোন কারনে অপমানিত হতে হলে আমি তা মেনে নিতে পারবোনা।
-তাহলে তোর ভাইয়া তোকে নিয়ে যাবে। লাবিব তোকে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে আসবে।
-আচ্ছা।
লাবিব এসে ফারিহাকে দেখে বলে উঠলো,,, মাশাআল্লাহ্!! অবশেষে আমার বোনটার বোধোদয় তো হলো।
ফারিহা বিদায় নিয়ে চলে যেতেই বাবা মা দুজন লামিয়াকে জিজ্ঞেস করলো মা এতোবড় অসম্ভব সম্ভব করলি কি করে?
লামিয়া বললো,,, আব্বু অসম্ভব বলে পৃথিবীতে কিছু নেই। আমাদের অন্তরের মধ্য থেকে মিথ্যা আর ভুলের কালো পর্দাটা সরিয়ে নিলেই ভালো মানুষটা বেরিয়ে আসবে বলেই নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালো…..
চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here