বিষাক্ত প্রেমের অনুভূতি উর্মি প্রেমা (সাজিয়ানা মুনীর) পর্ব :৩৮

বিষাক্ত প্রেমের অনুভূতি

উর্মি প্রেমা (সাজিয়ানা মুনীর)

পর্ব :৩৮

সিগারেটের বিষাক্ত ধোঁয়া প্রকৃতির সতেজ ধোঁয়ার সাথে মিলিয়ে যাচ্ছে।দূর আকাশে থালার মত চাঁদটার এক ফালি জ্যোৎস্না বারান্দার মেঝেতে আছড়ে পড়ছে ।সিগারেটের ফিল্টার গুলো বারান্দার মাটিতে শিউলি ফুলের মত বিছিয়ে আছে।রুমের ভেতর থেকে চাপা কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। ধীরে ধীরে আওয়াজ আরো গাঢ় হচ্ছে।আর নিজেকে অনেকবার আটকাতে চাইলো কিন্তু পারল না। সেহেরের চাপা কান্নার আওয়াজে আরহামের হৃদ মাঝারের আসমানে ঘন কালো মেঘ জমেছে। বুকে হাজার মন ভারী ব্যথা অনুভব করছে। এই বুঝি নিশ্বাস আটকে আসবে।আরহাম সিগারেটে শেষ টান দিয়ে মাটিতে ফেলে পায়ের নিচে পিষিয়ে ফেলে।তারপর দ্রুত পায়ে ঘরের দিকে অগ্রসর হয়।দরজা ভিড়ানো । আরহাম সজোরে দরজায় ধাক্কা দিলো ।কাঠের দরজাটা দেয়ালে বাড়ি লেগে বিকট শব্দ হয়। শান্তি নিরিবিলি ঘরটা বিকট শব্দে কেঁপে উঠে।কিন্তু এই প্রখর শব্দটা সেহেরের কান অবধি যেন পৌঁছাল না। সেহের সেই আগের মত বিছানায় মুখ গুজে কান্না করছে।আরহাম বেশ কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে বিছানার দিকে তাকিয়ে থাকে।সেহেরের কান্নার আওয়াজ আরহামের ভেতর আগুনটা দাউদাউ করে জ্বলছে। ভেতরটা জ্বলে পুঁড়ে ছারখার হচ্ছে।আরহাম আচমকা বিছানায় উঠে সেহেরকে পেছন থেকে জড়িয়ে নেয়।সেহেরের পিঠে মুখ গুজে বেশ শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে।কোন এক অদ্ভুত ঐন্দ্রজালিক শক্তিতে সেহেরের কান্না থেমে যায়।পুরোপুরি নিথর শক্ত হয়ে শুয়ে থাকে।খানিকের জন্য দুনিয়াদারি সব কিছু ভুলে গেছে। মাথা পুরোপুরি শূন্য ।কিছুক্ষণ পর পিঠে কামিজের অংশটা ভেজা ভেজা অনুভব করে। উনি কি তবে কাঁদছে? সেহের ভাবনা জগত থেকে বেরিয়ে পেছন ফিরতে চাইল। কিন্তু কোন কাজ হলো না । আরহাম বেশ শক্ত করে সেহেরের সাথে লেপটে আছে। সেহের জোর খাটাল কিন্তু আরহামের শক্তির সাথে পেরে উঠতে পারল না। এক সময় আর মেনে জানালার বাহিরের চোখ ফিরে চাইল। দূর আকাশে চাঁদটা যেন তাদের দিকেই তাকিয়ে । আচ্ছা ,চাঁদটা ড্যাবড্যাব করে কি এমন দেখছে? আকাশের পানে তাকিয়ে সেহের বেশ কিছুক্ষণ ভাবল ।ফলাফল প্রত্যেকবারের মত শূন্য । কোনো উত্তর মিলল না।বাহিরের হিম শীতল ঠান্ডা হাওয়া দুজনকে ছুঁয়ে যাচ্ছে।রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথে শীতও তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।সেহেরের গায়ের পশম কাটা দিয়ে উঠেছে।উড়না দিয়ে কোনরকম নিজেকে ঢাকতে চাইলে, আরহাম হুট করেই সেহেরকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নেয়।নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে বুকের উষ্ণতায় জড়িয়ে নেয়।সেহের তখনো ঠকঠক কাঁপছে।আরহামের স্পর্শ যেন কাঁপুনির মাত্রা আরো দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।আরহাম সবটাই আঁচ করতে পারছে । সেহের চোখ নামিয়ে রেখেছে । একবারের জন্যও মাথা উঁচু করে আরহামের মুখের দিকে তাকাচ্ছে না।চোখ গুলো আরহামের হালকা লোমশ বুকে আটকে।পাঞ্জাবির উপরের দু বোতাম খোলা থাকায় বুকের কিছুটা অংশ দেখা যাচ্ছে।কিছু একটা মনে করে সেহের অন্যদিকে চোখ ফিরিয়ে নেয়।আচকা কপালে আরহামে ঠোঁটের আলতো স্পর্শ অনুভব করে।একটা ,দুটো করে আস্তে আস্তে চুমুর সংখ্যা বাড়ছে।সেই সাথে তীব্রতাও। আরহাম ধীরে ধীরে সেহেরকে নিজের সাথে আরো গভীর ভাবে জড়িয়ে নিচ্ছে।সেহের চোখমুখ খিঁচে বন্ধ করে নেয়।কপাল ছুঁয়ে আরহামের ওষ্ঠদ্বয় ধীরেধীরে নিচের দিকে নামছে।সেহেরের বন্ধ চোখের পাতায় গভীর করে চুমু খাচ্ছে ।
আরহাম সেহেরের যতটা কাছে আসছে ধীরেধীরে সেহেরের ভয় ভীতি লজ্জা ততটা প্রখর হচ্ছে।কোন এক অজানা ভয়ে বুকটা ধুকধুক করছে।মনে কোণে কোথাও এক অপরাধবোধ কাজ করছে।ভালোবাসাহীন আরহামের এতোটা গভীরের যাওয়া ঠিক হচ্ছে? যদি এটা খানিকের মোহ হয়? ভোরের আলো ফুটতেই যদি আরহামে মত ঘুরে যায়? মিহির প্রতি প্রেম জেগে উঠে? মোহে খানিকের জন্য আটকানো গেলেও চিরকালের জন্য বেঁধে রাখা যায় না! সেহের দূরে সরে যেতে চাইলে মন সাই দেয় না।আরহামের এতোটা কাছে এসে দূরে সরে যাওয়ার জোর সেহেরের ভেতর নেই।মন অদূর থেকে এক চাপা চিৎকার ভেসে আসছে।চাপা আওয়াজে বলছে,”সেহের আরহাম তোর স্বামী ,নিজের স্বামীর মাঝে ডুবে যাওয়া অপরাধের কিছু নয় ।এখনি সময় নিজের অধিকার বুঝে নেওয়ার! ” মনের মাঝে আরহামকে নিজের করার তীব্র এক লালসা কাজ করছে।কিন্তু বিবেক বারবার বাঁধা দিচ্ছে।সেহেরের ভেতর অন্ত রণ চলছে।মন আর বিবেকের যুদ্ধে সেহের ক্লান্ত হয়ে পড়ে।বুক চিড়ে এক ভারী কান্নার আওয়াজ বেরিয়ে আসে। আরহাম মাত্রই সেহেরের ওষ্ঠদ্বয় নিজের আয়ত্তাধীন করবে এরই মাঝে সেহেরের কান্নার আওয়াজে আরহামের হুস ফিরে। চোখ খুলে সেহেরের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকায়।সত্যিই কি ,আরহামের স্পর্শ সেহেরকে যন্ত্রণা দেয়? আরহাম স্থির চোখে তাকিয়ে ভাবল। হাতের বাঁধন হালকা হতেই সেহের বিছানা ছেড়ে উঠে বসে। জানালার দিকে ফিরে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে হাউ মাউ চিৎকার করে কাঁদতে লাগে। বুকের লুকানো কষ্ট গুলো চোখের পানির রূপ নিয়ে যেন বেরিয়ে আসছে! আরহাম পেছন থেকে সেহেরের দিকে স্তব্ধ পাথর চোখে তাকিয়ে থাকে।নিজের উপর ভীষণ রাগ হচ্ছে।ভীষণ রাগ।সেহেরের কষ্ট কমাতে এসে উল্টো বাড়িয়ে দিয়েছে।হাত শক্ত করে মুষ্টি বদ্ধ করে দক্ষিণের জানালার কাচে সজোরে বাড়ি দেয়।সেহের ভয়ে কেঁপে উঠে। আরহামের হাতে জানালার টুকরো টুকরো কাচ গুলো বিঁধে আছে।হাত থেকে টপটপ রক্ত পড়ছে।সেহের রক্ত দেখে থরথর কাঁপতে থাকে।রক্ত থামানোর জন্য দিশাহারা হয়ে রুমে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত কাপড় খুঁজতে লাগে। কোন কিছু না পেয়ে নিজের গায়ের উড়না আরহামের চোটে ঠেসে ধরে। অশ্রুধারা গাল বেয়ে বেয়ে ঝরছে।যেন চোট আরহামের না তার লেগেছে।সেহের কান্না জড়িত তেজি স্বরে বলে,”আপনার সমস্যা কি? এতো রাগ কেন আপনার? সব সময় সব কিছুতে রাগ দেখাতে হবে?…কত খানি লেগেছে….কতোটা রক্ত ঝরেছে…এর পর থেকে এমন কিছু করলে…আমি …আমি ….সত্যি সত্যি আপনার থেকে অনেক দূরে চলে যাবো …অনেক দূর”
সেহের থেমে থেমে কান্না জড়িত গলায় বলছে।কান্নায় বার বার গলায় কথা আটকে যাচ্ছে। আরহাম শান্ত চোখে সেহেরকে দেখছে। বাধ্য ছেলের মত সেহেরের প্রত্যেকটা কথা মন দিয়ে শুনছে।সেহেরের এভাবে বউদের মত অধিকার নিয়ে শাসানটা ভীষণ ভালো লাগছে।সেহের আরহামের সামনে নিজের কান্না লুকানোর বৃথা চেষ্টা চালাচ্ছে।সেহেরের চোখের জল আরহামের চোখ এড়ায় না।নিচ থেকে টান দিয়ে তুলে সেহেরকে নিজের বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে নেয়।সেহেরও আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না।শব্দ করে কান্না করতে লাগে।আরহাম চোট লাগা হাত সেহেরের পিঠে বুলিয়ে দিতে দিতে বলে,”সরি ,আর কখনো এমন রাগ দেখাবো না। সরি লাভ। প্লিজ ডোন্ট ক্রাই ”
সেহের থামল না। কান্নার বেগ আরো বাড়ল। কান্নারত অবস্থা বলল,”কেন এমন করেন? কেন সব সময় এতোটা কষ্ট দেন। আপনার এসব কাজে আমার কষ্ট হয়।আপনাকে হারানোর ভয় আমাকে ভীষণ পুড়ায়। আমি পারবো না আপনাকে অন্য কারো সাথে শেয়ার করতে। পারবো না আমি আপনার চোখে আমি ব্যতীত অন্য কারো জন্য ভালোবাসা দেখতে।কজ ,আই লাভ ইউ।অনেক ভালোবাসি আপনাকে।অনেক! ”
সেহেরের কথা গুলো আরহামের বুকে তীরের মত বিঁধল।মুহূর্তেই শরীরটা অদ্ভুত এক ঝিমুনিতে কেঁপে উঠে।হুট করে সেহেরের কোমড় ছেড়ে দুগাল নিজের দুহাতের ভাজে নিয়ে নেয়। শক্ত করে চেপে ধরে কিছু বুঝে উঠার আগেই সেহেরের ওষ্ঠদ্বয় নিজের রুক্ষ ওষ্ঠে মিলিয়ে নেয়।গাঢ় করে চুমু এঁকে দিতে থাকে। অদ্ভুত ভালো লাগার আবেশে সেহের চোখ বুঝে নিলো।চোখের কোণ বেয়ে দু ফোটা অশ্রু ঝরে।সুখের অশ্রু।বেশ সময় নিয়ে আরহাম সেহেরের ঠোঁট ছাড়ল।সেহেরের কপালের সাথে কপাল মিলিয়ে বড় বড় নিশ্বাস ফেলছে।সেহেরের ও একই হাল। চোখ বুঝে আছে বুকটাও ধুকধুক করছে। ঠোঁট জোড়া টকটকে লাল হয়ে আছে।ভীষণরকম জ্বলছে ।নাকে ডগা লাল হয়ে আছে। গাল গুলোও লজ্জায় ভারী । আরহাম নেশাপ্রবণ চোখে সেহেরের দিকে তাকায়।সেহেরের দু গলায় নিজের দুহাত রেখে সেহেরকে আরো কাছে টেনে আনে। সেহের তখনো চোখ বুঝে।ঠকঠক কাঁপছে।আরহাম এক দৃষ্টিতে সেহেরের দিকে তাকিয়ে।ধীরে ধীরে অদৃশ্য এক মায়্য জড়িয়ে যাচ্ছে।মাথা কেমন জানো ঝিমঝিম করছে।চোখে অদ্ভুত এক ঘোর।সারা শরীর জুড়ে অদ্ভুত এক কম্পন।প্রত্যেকটা রক্তবিন্দু তড়িৎ বেগে ছুটছে।আরহাম ধীরে ধীরে সেহেরের আরো কাছে এগিয়ে যায়।সেহেরের নাকের ডগায় প্রগাঢ় চুমু দেয়।এভাবেই আলতো করে চুমু দিতে দিতে সেহেরের কান অবধি পৌঁছায়।কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,”মেরে ফেলবে কি? বুক তোলপাড় করার জন্য তোমার ম্যাজিকাল থ্রি ওয়ার্ড- ই যথেষ্ট ।এই লজ্জা মাখা মুখ দেখিয়ে কি মেরে ফেলবে? এই দেখো ,হার্ট কতটা ফাস্ট চলছে।”
আরহাম সেহেরের নরম হাত বুকের বাঁ পাশে রাখল । সেহের লজ্জায় দ্রুত হাত সরিয়ে নিলো।এখনো কাঁপছে । জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিলো । মন এখনো খচখচ করছে। আবেগপ্রবণ হয়ে তো নিজের মনের কথা আরহামকে বলে দিলো । কিন্তু আরহামের মনে কি সে আছে? এসব ভেবেই সেহের দূরে সরতে চাইল।কিন্তু পারল না।তার পূর্বেই আরহাম আটকে ফেলে।আরহাম ফ্লোরে হাঁটু গেড়ে বসে।সেহেরের হাতে নিজের হাতে নিয়ে মাথানত করে গভীর এক চুমু খায়। সেহের আরহামের কাণ্ডে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে।আরহাম মাথা তুলে সেহেরের চোখে চোখ রেখে স্পষ্ট স্বরে বলে,”আমার জীবনে তুমি ছাড়া দ্বিতীয় কেউ নেই। আমার সবটাই শুধুই তুমি। আমি বারে বারে বলেছি ,আবারো বলছি মিহি আর আমি জাস্ট গুড ফ্রেন্ড । সেদিন রাতে আমি ড্রাংক ছিলাম না।অসুস্থ হয়ে পড়ে ছিলাম ।তুমি টেনশন করবে বলে মিহি কিছু জানায়নি । আমার জীবনের প্রথম আর শেষ প্রেম শুধুই তুমি ।যেদিন প্রথম তোমাকে দেখেছি সেদিন থেকেই তোমার প্রেমে মায়ায় বেঁধে গেছি। তুমিহীন প্রত্যেকটা প্রহর বিষাদময় ।
আই লাভ ইউ সেহের ,লাভ ইউ মোর দ্যান এনিথিং! ”
সেহেরের চোখ থেকে টপটপ করে পানি ঝোরছে।বোকাসোকা মুখ করে দ্রুত স্বরে বলল,” তবে লিয়া যে বলল ,আপনি অন্যকাউকে ভালোবাসেন।আপনার বাচ্চা গার্লফ্রেন্ড আছে? ”
আরহাম সেহের কথায় কিঞ্চিত হাসে।পকেট থেকে ফোন বের করে গ্যালারী থেকে একটি ছবি সেহেরের সামনে ধরে।ফোনে ভেসে উঠা ছবির দিকে তাকিয়ে সেহের বিষম খায়। এটাতো পাঁচ বছর আগের সেই প্রতিযোগিতার ছবি ।সেহের মুখে চকলেট কামড়ে ধরে পায়ের ঘুঙুর বাঁধছে। আরহামের কাছে এই ছবি এলো কি করে? মা দিয়েছে? এসব ভেবে সেহের গোল গোল চোখে আরহামের দিকে তাকায়।আরহাম সেহেরের প্রশ্নসূচক দৃষ্টি দেখে মুচকি হেসে উত্তর দিলো ,”সেই প্রতিযোগিতায় গেস্ট হিসাবে আমিও ছিলাম ।হাজার হাজার মানুষের মাঝে আমার চোখ আটকায় তোমাতে ।কেন জানো মনে হচ্ছিল আমি তোমাকে চিনি , এর আগেও আমি তোমাকে দেখেছি । তোমার সেই সরল চাহনী আমাকে অগোছালো করে দিয়েছিল।প্রথম দেখায় তোমার প্রেমে ডুবে গিয়েছিলাম। আমার পিচ্ছি গার্লফেন্ড মিহি না তুমি! ”
“তারমানে এখানে আসার পর আপনি আমার সাথে যা করেছেন জেনেশুনে ইচ্ছে করে করেছেন? ইচ্ছে করে অপরিচিতদের মত এম আচরণ করেছেন? রাগ দেখিয়েছেন? ”
সেহের কাঁদো কাঁদো মুখ করে বলল।আরহাম সেহেরের গাল টেনে বলল,” পাঁচবছর নির্ঘুম রাত শত শত রাত কাটিয়াছি ,এর শাস্তি তো তোমাকে দেওয়ার ছিল তাই না? ”
সেহের আরহামের হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে বলে,”ছুঁবেন না আমাকে! আপনি কি করে আমার সাথে এমন করতে পারলেন? এসব করার আগে আপনার একটু দয়া মায়া হয়নি? হার্টলেস লোক কোথাকার! ”
সেহের রাগে বির বির করতে করতে আরহামের সামনের থেকে উঠে যেতে চাইলে আরহাম টান দিয়ে সেহেরকে বিছানায় ফেলে।চেপে ধরে নেশাপ্রবণ গাঢ় স্বরে বলে,” কি চাও এক্ষুনি মরে যাই? পাঁচ বছর তোমাকে কাছে পাবার অপেক্ষা করেছি।বিয়ের পর এতোদিন তোমার অনুমতি পাবার অপেক্ষা করেছি।আজ যখন তোমার অনুমতি পেয়েছি দূরে সরে যাবো ? উহু ,ইম্পসিবল ! আই কান্ট ওয়েট এনি মোর! আই নিড ইউ রাইট নাও। ”
আরহামের ধারাল চাহনি আর মোহিত কথার ঘোরে সেহের আটকে গেছে।আরহাম থেকে দূরে সরার মত সাধ্যি সেহেরের নেই।ফ্যালফ্যাল চোখে আরহামের দিকে তাকিয়ে । আরহাম ঘোরলাগা চোখে চেয়ে।সেহের কিছু বলার জন্য মুখ খুলবে তার পূর্বেই আরহাম তার ঠোঁটের ভাজে সেহেরের ঠোঁট মিলিয়ে নেয়।জানালা দিয়ে আকাশে চাঁদটা উঁকি দিয়ে আছে।প্রণয়পাখিদের মিলন তিথি যেন অদূর আকাশের চাঁদটাকেও লজ্জায় ফেলছে। তাই তো মুখ লুকাতে মেঘেদের আড়াল হচ্ছে।

চলবে….❣️

প্লিজ সবাই সবার মতামত জানাবেন । ভুল ত্রুটি ক্ষমাত দৃষ্টিতে দেখবেন😊😊😊।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here