বিষাক্ত প্রেমের অনুভূতি উর্মি প্রেমা (সাজিয়ানা মুনীর) পর্ব :৬

বিষাক্ত প্রেমের অনুভূতি

উর্মি প্রেমা (সাজিয়ানা মুনীর)

পর্ব :৬

গতকাল পিয়ালের সাথে সেহেরের পরিচয় হয়েছে।আর একদিনে- ই ভালো সখ্যতা।ভারী মিষ্টি মেয়ে।স্বভাব চরিত্র অনেকটা সেহেরের মতই।শুধু ধর্ম ভিন্ন।পিয়াল খ্রিস্টান ধর্মের।তার পুরো নাম পিয়াল ক্যাথলিক। যথেষ্ট ধর্ম ভীরু মেয়ে পিয়াল। খ্রিষ্টান কমিউনিটির বাহিরে খুব একটা মেলামেশা নেই তার। সেহের- ই তার প্রথম মুসলিম বান্ধবী । অল্প সময়ে দুজনের মাঝে বেশ ভাব জমেছে ।ক্লাস শেষে দুই সখী ক্যান্টিনে আড্ডা দিচ্ছে।আড্ডার মাঝে মজার ছলে পিয়াল প্রশ্ন করে,”তুমি দেখতে বেশ সুন্দরী ,অনেক প্রেমিক আছে নিশ্চয়! এমন মেয়েকে কে না চাইবে? কে না ভালোবাসবে? ”
“প্রেম? ভালোবাসা? এটা আবার কি? “সেহেরের উদাসীন উত্তর।

“ইশ, ভার্সিটিতে উঠেছ আর এখনো কোন প্রেম করনি! এটাও বিশ্বাসযোগ্য?

“কেন ভার্সিটিতে পড়তে কি প্রেমের সার্টিফিকেট লাগে ? ”

সেহেরে কথায় পিয়াল সামান্য হেসে উত্তর দেয়,”তা লাগেনা ,কিন্তু বিশ্বাস করতে খুব কষ্ট হচ্ছে এতো সুন্দরী কেউ জীবনের এতোটা বসন্ত প্রেমহীন কাটালো! প্রেম ভালোবাসার পরশ কি তোমার লাগেনি? ”

“আর প্রেম ,ভালোবাসা! যার জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত কারো বিষাক্ত নিশ্বাসে তপ্ত।অভিশাপে পূর্ন ।এমন কাউকে বসন্ত বা শীত কোনটাই প্রেমময় পরশ দেয় না।কারণ আমার কাছে ভালোবাসার আরেক নাম মৃত্যু।”তাচ্ছিল্য স্বরে সেহের বলল।

“এমন কেন বলছো? ইজ এনিথিং রং! তোমার জীবনে কেউ আছে কি! কোন প্রেমিক বা …”

“অজানা এক অভিশাপ আছে। কি পাপের ফল তা জানা নেই।আড়াল থেকে প্রহার করে আমার কাছের প্রত্যেকটা মানুষকে সে ছিনিয়ে নিচ্ছে! ”

“ওয়াও ইউ মিন সাইকো? তোমার সিক্রেট লাভার। দ্যাট’স গ্রেট! ”

“তোমার কাছে ব্যাপারটা যতটা সহজ আর সুন্দর আমার কাছে ঠিক ততটাই জটিল আর ভয়ংকর।এসব সিক্রেট সাইকো লাভার গল্প উপন্যাস মুভিতে মানায়। বাস্তবতা বড়ই ভয়ংকর।উপন্যাসে যেমন সুন্দর রোমান্টিক মনে হয় বাস্তব জীবনে মোটেও এমন নয়। অতিরিক্ত কোন কিছু- ই ভালো না।হোক তা ভালোবাসা।এটা ভালোবাসা না,পাগলামো। ভালোবাসা নামক নিকৃষ্ট অভিশাপ । যা মানুষকে অদৃশ্য এক বেড়াজালে বেঁধে ফেলে।যেখানে খোলা আকাশের নিচে শ্বাস নিলেও বিষাক্ত মনে হয়!

সেহেরের কথায় পিয়াল সামান্য ঘাবড়ালো।সেহের মন মরা হয়ে আছে।পিয়াল তা লক্ষ করে সেহেরের মুড ঠিক করতে কথার প্রসঙ্গ পাল্টায়।

দূর থেকে নিতান গাঢ় চোখে সেহেরকে দেখছে। হাতে জ্বলন্ত সিগারেট । নিতান এবার চতুর্থ বর্ষে। ভার্সিটিতে তার বেশ চলে,বড় ব্যবসায়ীর ছেলে কিনা! মেয়েরা তার কাছে খেলার পুতুল ।কাপড় বদলানোর মত গার্লফ্রেন্ড বদলায়।নিতানের চাহনি লক্ষ করে পাশ থেকে রিপন বলে,”গুরু ঐদিকে চোখ দিও না। মন্ত্রী বাড়ীর লোক। ”
“মন্ত্রীর নাতনিকেই ছাড় দেইনি এটা তো সামান্য মন্ত্রী বাড়ীর লোক! ফুলটার নাম কি? “সেহেরের দিকে আগের মত গাঢ় চোখে তাকিয়ে বলল।
“সেহের! শুনেছি আরহাম খাঁনের খুব কাছের। গতকাল নাকি পুরো ভার্সিটিকে শাসিয়ে গেছে।যেন কেউ মেয়েটার দিকে চোখ তুলে না তাকায়। ”
“তাই ? শালা একাই সব খেতে চায়! আরহাম খাঁনের কাছের মানুষ তাহলে ত ভালো করে খাতির করতে হয়।যেই ভাবেই হোক এই এক সাপ্তাহের ভেতর মেয়েটাকে আমার বেডে চাই। হোক আপসে নয়তো জোর করে। চাই মানে চাই।আরহাম খাঁনের সাথে অনেক হিসাব বাকি আছে “নিতান বিচ্ছিরি ভাবে হেসে বলল।

সেদিনের পর কয়েকদিন কেটে গেল। আজকাল আরহামকে বেশিভাগ সময় বাড়ীতে দেখা যায়।সকাল সন্ধ্যা দুজন মুখোমুখি হচ্ছে।চোখেচোখে ভাব আদানপ্রদান হচ্ছে। শুধু শব্দে প্রকাশ হতে বাকি।আজ সকাল থেকে বাড়ীতে আয়োজন চলছে।দিশা আরহাম বাড়ীর অন্যান্য সদস্য আজ বাড়ীতেই আছেন। লিয়াকে দেখতে পাত্রপক্ষ আসবে।পাত্র দাদাজানের পছন্দ ।ছেলে দেখতে শুনতে ভালো। নাম ওয়াহিদ। ফ্যামিলি বেকগ্রাউন্ডও উঁচু । বাবার হোটেল ব্যবসা সবটা ওয়াহিদ সামলাচ্ছে! দিশা সকাল থেকে প্রচণ্ড ব্যস্ত । যদিও সবটা কাজের লোক সামলাচ্ছে।তবু হাতে হাতে সবটা দেখিয়ে দিচ্ছে।সেহেরের উপরে পরেছে গুরুদায়িত্ব ।লিয়াকে সাজানো।সকাল থেকে সেহের নিচতলায় লিয়ার ঘরে।শাড়ী পরানো থেকে শুরু করে চুল স্ট্রেট করা অবধি সবটা তাকেই করতে হচ্ছে। তার উপর লিয়ার নার্ভাসনেস সামলানোর প্যারা তো আছে!
দুপুরের মাঝামাঝি পাত্রপক্ষ হাজির হয়।ওয়াহিদের বাবা মা বোন আর এক বন্ধু এসেছেন।কুশল বিনিময়াদি করে। হল ঘরে বসে সবাই আলাপআলোচনা করছেন।আলোচনার মুখ্য বিষয় আরহাম! এই অল্পবয়সে রাজনীতিতে এতোটা পরিচীতি লাভ করা তো আর চারটে খানেক কথা নয়! সবাই আরহামের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।আশরাফ খাঁন বুক চাওড়া করে নাতির গুনগান শুনছেন।দম্ভে তার বুক ফুলছে।যে যাই বলুক না কেন ,আরহাম তো তার- ই প্রতিচ্ছবি ।আলোচনার মাঝে লিয়াকে আনা হয়।দুই পক্ষের দেখাদেখি পর্ব চলছে।লিয়া প্রচণ্ড নার্ভাস।তাই পাশে দাড়িয়ে থাকা সেহেরের হাত চেপে ধরে আছে।সেহের চোখে ইশারায় শান্ত থাকতে বলল।ছেলের মা বোন লিয়াকে একের পর এক প্রশ্ন করছে।বাধ্য মেয়ের মত লিয়া সব প্রশ্নের জবাব দিচ্ছে।আলোচনার এক পর্যায় ওয়াহিদের মা সেহেরকে দেখে সবার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলেন,”আপনাদের সবাইকে চিনি।এর আগেও আলাপ হয়েছে।মেয়েটাকে ঠিক চিনলাম না! মেয়েটা কে? আপনাদের আত্মীয়? ”
ওয়াহিদের মায়ের প্রশ্নে পরিবেশ নীরব হয়। একজন অন্যজনের দিকে চাওয়াচাওয়ি করেছে। কি উত্তর দিবে বুঝে উঠতে পারছেনা।সবার মুখের সংকোচবোধ দেখে সেহের নিজের থেকে বলে,” আমি এই বাড়ীর আত্মীয়পরিজন কেউ না।আশ্রিতা মাত্র”
সেহেরের উত্তরে হল ঘরের পরিবেশ আগের রুপে ফিরে এলেও আরহামের ভ্রু কুঁচকানো।ক্রুদ্ধদৃষ্টি সেহেরের দিকে।সেহের বিনয়ের ভঙ্গিতে হল ঘরের এক কিনারা ঘেষে দাড়ায়।চোখ বরাবরের মত টলটল করছে।সত্যি তো সে এ বাড়ীর কে? সবার মাঝে তার অস্তিত্ব কি?
দিশা খানমের মেয়ের ব্যথাতুর চোখ পড়তে সময় লাগল না।ঠিক বুঝতে পারছে মেয়ের ছলছল চোখের ভাষা।পড়তে পারছে শব্দহীন অভিমান গুলো!

মধ্যাহ্নভোজের জন্য সকলে একত্রে বসেছে।দিশা মালিহা সার্ভ করছে। সেহের লিয়া দোতালার সিড়ির কাছে দোলনায় বসে। ডাইনিং টেবিল থেকে দোতলার সেগুন কাঠের ভারী দোলনাটা অনেকটাই দৃশ্যমান।ওয়াহিদের বন্ধু রিয়াদ ডাইনিং টেবিল থেকে মুগ্ধ চোখে সেহেরকে দেখছে।যেন এমন মায়াবী সুন্দরী সে দ্বিতীয়টা দেখেনি।আশেপাশের সব ভুলে সেহেরকে দেখায় মগ্ন । সেহেরের দিকে রিয়াদের এমন একাধারে তাকিয়ে থাকা আরহামের দৃষ্টি উপেক্ষা করে না।রিয়াদের দিকে চোখ মুখ শক্ত করে তাকিয়ে । প্লেটের উপর শব্দ করে কাটা চামচ চালাতে থাকে।

এই মেঘলা দিনে একলা
ঘরে থাকেনা ত মন
কাছে যাবো কবে পাবো
ওগো তোমার নিমন্ত্রণ

সেহের বিরবির করে গানের দুই লাইন গাইলো। অভিমানী মেঘেদের মত সেহেরের মনটাও আজ বেশ অভিমানী। চোখ থইথই জলে টলটল করছে। নীল সাদা বিস্তৃত আকাশের দিকে তাকিয়ে বুকে জমে থাকা অভিমানী ভারী নিশ্বাস ফেলছে।দূর অজানা থেকে কালো মেঘেরা ভেসে আসছে। হয়তো গভীর রাতে বর্ষণের রূপ নিয়ে পৃথিবীর বুকে ঝরঝরে নামবে! এটাই বুঝি আষাঢ়ের আকাশের বিশেষত্ব ।ছাদের কিনারা ঘেষে সেহের মুখ ভার করে দাড়িয়ে। সামান্য দূরে ছাউনির নিচে লিয়া ওয়াহিদ গল্প করছে।বড়দের মতামতে পাত্রপাত্রী কে আলাদা আলাপ করার সুযোগ দিয়েছে।লিয়ার জোরাজোরিতে সেহেরের আসতে হয়েছে।ওয়াহিদের সাথে তার বন্ধু রিয়াদ এসেছে। আগবাড়িয়ে কয়েকবার সেহেরের সাথে কথা বলতে চেয়েছে সেহের কোনরকম এড়িয়ে গেছে।লোকটা চাহনি তার সুবিধার মনে হয়নি।তাই ছাদের কিনারায় দাড়িয়ে টবের থাকা ফুল গাছগুলো ছুঁয়ে যাচ্ছে।

“হাই,আমি রিয়াদ ওয়াহিদের ফ্রেন্ড “আওয়াজ পেয়ে সেহের পিছনে ফিরে তাকায়।রিয়াদ এক গাল হাসি নিয়ে উৎসাহের সাথে হাত বাড়িয়ে দাড়িয়ে।সেহের কুঞ্চিত ভ্রু সটান করে ঠোঁটে জোরপূর্বক হাসি টেনে বলে,”হ্যালো ,আমি সেহের ”
রিয়াদ বাড়ন্ত হাত রিয়াদ গুজিয়ে নেয়।সেহের পাশ কাটিয়ে যেতে নিলে রিয়াদ প্রশ্ন ছুঁড়ে,”আপনি কি সবসময় কম কথা বলেন? নাকি আমার সাথে কথা বলতে চাইছেন না? ”
রিয়াদের কথায় সেহের থেমে যায়। পিছনে ফিরে সৌজন্য মূলক হাসি টেনে বলে,”এমন কিছু না ,আসলে”
“থাক কিছু বলতে হবে না।জানি মিথ্যা বলবেন,আর সুন্দরীদের মুখে মিথ্যা বড্ড বেমানান! আপনি কি জানেন আপনার চোখে অদ্ভুত এক মায়া আছে? যাকে মন ভরে দেখবেন সে- ই মোহিত হবে! ”
“মাখন দেওয়া হচ্ছে!”সেহের ফিক করে হেসে বলল।
“উহু,একদম না।সত্যিটা বললাম।কেন এর আগে কেউ আপনাকে বলেনি? ”
“এমন কিছু থাকলে তো বলবে ”
“তাহলে কেউ হয়তো আপনার গভীর চোখের দিকে চাইবার সাহস করেনি! কে চাইবে মায়ায় মোহিত হয়ে নিজের সর্বনাশ ডাকতে? ”
সেহের আবারো শব্দ করে হাসে।হাসির স্বর টেনে বলল,”আপনি তো ভারি মজার মানুষ! এতো মিথ্যা প্রশংসা কি করে করেন! বলুন তো? ”
“মিথ্যা না সুন্দরী ,ইহা আমার মনের কথা।এই মুহূর্তে কোন কবি উপস্থিত থাকলে আপনার সৌন্দর্যের বর্ণনা করে অনর্গল কয়েক পাতা কবিতা লেখে ফেলতো।তবে আমি এক্ষেত্রে চেষ্টা করে দেখতে পারি।সুন্দরী তোমার সোনার তরী হাত…..”
রিয়াদ কবিতার ছলে সেহেরের হাত ধরতে চাইলে সেহের হাত পিছনের দিকে সরিয়ে নেয়।ফলস্বরূপ হাত গিয়ে পিছনে ক্যাকটাসের কাটার উপর পরে।কাঁটা হাতে আঘাত লাগায় ব্যান্ডেজ আবারো রক্তে ভিজে।রিয়াদ তড়িঘড়ি করে সেহেরের হাত ধরে মলিন স্বরে বলে,”সরি আমার জন্য এমনটা হলো,আসলে…”
সেহের হাত ছাড়িয়ে স্বাভাবিক স্বরে বলে,”ইট’স অকে।দোষটা আমার ছিলো”

সিড়ির চিলেকোঠার উপর কাঁচের ঘরের জানালার আড়াল থেকে কারো রক্তিম দৃষ্টি তাদের পর্যবেক্ষন করছে।গাঢ় বাদামী চোখজোড়া রক্ত লাল রূপ নিয়েছে।মুঠিবদ্ধ কাঁচের গ্লাসটা হাতে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে টপটপ করে রক্ত ঝোরছে। ক্রোধে গর্জন করে বলে,”এর ফল ভয়ংকর হবে ”

লিয়াকে ওয়াহিদের পরিবারের ভীষণ পছন্দ হয়েছে।সামনের শুক্রবার আকদের দিন ঠিক করে। হাসি হাসি মুখ নিয়ে সন্ধ্যা নামার পূর্বেই ওয়াহিদরা বিদায় নিয়ে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।
তাদের বের হবার খানিক বাদে- ই আরহাম জরুরী তলবে বের হয়।সন্ধ্যা পেরিয়ে শহরের বুকে রাত নামতেই ফিরে আসে। ঘড়িতে তখন ঠিকঠিক দশটা।ওয়াহিদের বাড়ী থেকে ফোন আসে।ওয়াহিদের বাবা জানান , ঘন্টা দুয়েক আগে ওয়াহিদের বন্ধু রিয়াদের মারাত্মক এক্সিডেন্ট হয়েছে। বাঁচা মরা নিয়ে সন্দেহ । লাইফ সাপোর্টে আছে।ওয়াহিদ ভীষণ ভেঙে পরেছে। আকদের দিন পিছানোর জন্য আবেদন করছেন।খবর পেয়ে সেহেরের মন খারাপ হয়। মনে কোথাও কু ডাকছে ।ডিনার সেরে রুমে আসতেই ফোনের মেসেজ টুন বেজে উঠে।অপরিচীত নাম্বার দেখে সেহের ভয়ে কেঁপে উঠে।কাঁপা কাঁপা হাতে মেসেজ ওপেন করতে দেখে,

“তোমার হাত ছোঁয়ার দুরসাহস করেছে শাস্তি ত পাওয়ার ছিলো । তাই না? ভয় নেই জানে মারিনি। এমন অবস্থা করেছি যেন কোনদিন উঠে দাড়াতে না পারে।তোমার দিকে বাড়ন্ত প্রত্যেকটা হাত এভাবেই ঝরে পরবে। ”

সেহের ভয়ে থরথর করে কাঁপতে থাকে। ফোনটা মাটিতে পরে যায়। সে এই বাড়ী অবধি পৌছে গেছে? তবে কি এই বাড়ীতেই তার বসবাস?

চলবে….❣️

প্লিজ সবাই সবার মতামত জানাবেন ।ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 😊😊😊।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here