ভ্যাম্পায়ার_কুইন# পর্বঃ১২

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ১২
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
–হ্যা। আমি লংস্টার রাজ্য হতে বিতারিত জ্যাসন ব্রিটের বড় সন্তান প্রিন্স জ্যাকসন ব্রিট।(আমি)
।।।
।।।
আমার কথা শুনে আশে পাশের সবাই অবাক হয়ে গেলো। বিশেষ করে এনা নিজেই অবাক হয়ে গেলো। এমন সময় জেসি সময় আটকে দিলো আমাকে ধরে।
.
–কিরে তুই কি করছিস?(জেসি)
.
–কেনো?(আমি)
.
–এভাবে এখানে আমাদের পরিচয় ছেড়ে দিলে তো আমাদের ক্ষতি হবে।(জেসি)
.
–কিছুই হবে না।(আমি)
.
–তুই কিভাবে বলতেছিস সেটা। এমনিতেই লংস্টারের সাথে ব্লাক লোটাসের ঝামেলা। আমরা এখানে পরে গেলে তো আমাদের বন্ধী করে রাখবে।(জেসি)
.
–দেখিস কি হয়।(আমি)
।।।
।।।
জেসি ওর জায়গায় চলে গিয়ে আবার সময়কে নিজের মতো করে দিলো। ওর পাওয়ারটা আমার সেরকম লাগে। নিজের এবং অন্যের সময় কিছুক্ষনের জন্য আটকে দিতে পারলে তো কথায় নাই। তার উপরে আবার ও জায়গাকে কন্ট্রোল করতে পারে। ওর আশে পাশে হাফ কিলোমিটার জায়গায় ও মুহুর্তের মধ্যেই চলে যেতে পারে।
.
–কিন্তু সবাই তো জানে প্রিন্স জ্যাকসন ব্রিট মারা গেছে।(রাজা)
.
–আমার আম্মা আমাকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন ত্যাগ করেছে।(আমি)
.
–জ্যাসন আর আমি খুব ভালো বন্ধু ছিলাম। ওর এই কার্যের পর থেকেই আমার আর ওর ভিতর লড়াই শুরু হয়। আর সেই লড়াই আজ দুই রাজ্যের বিরুদ্ধে চলে আসছে।(রাজা)
.
–…(আমি চুপ করে রইলাম)
.
–আজকে এখানে জ্যাসনকে ও ডেকেছি আমি। ভালো একটা শকিং নিউজ দিবো জ্যাসনকে।(রাজা)
.
–কি বলবেন?(আমি)
.
–তুমি শুধু সেটা আমার উপরে ছেড়ে দাও। শুধু এইটা বলো আমার মেয়েকে কি তুমি পছন্দ করো?(আমার কানে কানে রাজা বললো)
.
–পছন্দ না। আমি এনাকে ভালোবাসি অনেক।(কথাটা একটু জোরেই বল্লাম)
।।।
।।।
আমার কথা শুনে এনা সহ পুরো হলের লোকজন অবাক হয়ে গেলো। পুরো লোকজন অবাক হওয়ার কথায় কারন একজন লোক রাজার কাছে তার মেয়েকে ভালোবাসে বলে জানাচ্ছে সেটা শুনে রাজা কি বলে সেটা শোনার জন্য। আর এনা খুশিতে কেঁদে দিয়েছে। কারন আমি এখনো নিজে ওকে ভালোবাসার কথা সরাসরি বলি নি।
.
–তো ইয়াং ম্যান। আমার মেয়েকে প্রপোজ করো যদি ও তোমাকে মেনো নেই তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই।(রাজা)
.
–ওকে মহারাজ।(আমি)
।।।
।।।
আমার ব্লেজারের পকেটে একটা কালো গোলাপ ফুল ছিলো। আমি সেটাকে হাতে নিলাম। হ্যারি আমার কাছে এসে বলতে লাগলো,
.
–কি বড় ভাই কালো গোলাপ দিয়ে মানুষ প্রপোজ করে?(হ্যারি)
.
–তাহলে?(আমি)
.
–এই গোলাপ লোকের মনের অবস্থা দেখে রল বদলাতে পারে। কি রঙ লাগবে সেটা ভেবে ফুলের উপরে হাত দিলেই রঙ বদলে যাবে।(হ্যারি ফুলের রং লাল করে দিলো)
.
–ধন্যবাদ হ্যারি।(আমি)
।।।
।।।
আমি এনার কাছে গিয়ে এক হাটু গেরে বসলাম। পুরো রোমান্টিক হয়ে ওকে প্রপোজ করে হবে তো। সিনেমার কয়েকটা ডায়ালোগ মেরে ওকে প্রপোজ করে দিলাম।
.
–প্রিন্সেস এলিনা কোয়াডার্ট ওইল ইউ ম্যারি মি?(আমি)
.
–অবশ্যই।(কেদে দিয়ে হ্যা বলে দিলো)
।।।।
।।।।
সবাই জোরে হাততালি দিতে লাগলো, এতোক্ষনে আমি দেখতে পেলাম লংস্টারেরে রাজা জ্যাসন ও এসেছে। তার চেহারা কিভাবে ভুলতে পারি। দেখতে অনেকটা আমার মতোই। সরি আমি দেখতে অনেকটা তার মতোই। এসেছে রানী আর দুই সন্তানের সাথে। পিছনে রয়েছে রয়েল গার্ড। এখন এনার বাবা বলতে লাগলেন।
.
–লেডিস এন্ড জেন্টেলম্যান্ট। আপনারা আজ এখানে এসেছেন আমার বড় কন্যা প্রিন্সেস এলিসা কোয়াডার্ট আর পুরো মনস্টার রাজ্যের ৩য় ব্যাচধারী হান্টার আমার ছোট ভাই লর্ড ভল্ডেমর্ট এর বড় পুত্র ভায়মীর কোয়াডার্ট এর বিয়ের অনুষ্ঠানে। আজ এই খুশির দিনে আপনাদের আমি আরো একটা খুশির খবর দিতে চাই। আজ আমার ছোট মেয়ে প্রিন্সেস এলিনা কোয়াডার্ট এবং লংস্টার রাজ্যের রাজা জ্যাসন এর বড় পুত্রের আজ এনগেজমেন্ট হবে।(রাজা)
।।।।
।।।।
সবাই হাততালি দিচ্ছে। কিন্তু জ্যাসন মশাই হাততালি দিচ্ছে না। সবাই মনে মনে অবাক হচ্ছে। অনেকে আমাকেই জ্যাসন এর সন্তান মেনে নিয়েছে। কিন্তু সন্তান হলেও এখানে একটু ঝামেলা আছে। সবাই ভাবছে আমিই জ্যাসনের একমাত্র সন্তান। বলাবলিও করছে সেটা। তখন রাজা জ্যাসনের ছোট ছেলে বলে উঠতে লাগলো,
.
–বাবা কি হচ্ছে এখানে। আমি এখানে কোনো এনগেজমেন্ট করতে আসি নি।(প্রিন্স কহিল বললো)
.
–রাজা কোয়াডার্ট কি হচ্ছে কি? আমি কখন বলেছি প্রিন্স কহিলের সাথে প্রিন্সেস এলিনার এনগেজমেন্ট হবে। আর মাত্রই তো একটা ছেলে তোমার মেয়েকে প্রপোজ করলো।(বাবা এনার বাবাকে বললো)
.
–আমি কি বলেছি তোমার ছোট পুত্রের সাথে এলিনার এনগেজমেন্ট হবে?(এনার বাবা)
.
–কি বলতে চাচ্ছো তুমি?(বাবা)
.
–জ্যাক বাবা এদিকে আসো তো?(এনার বাবা আমাকে ডাকলো)
.
–জ্বী মহারাজ।(আমি)
।।।
।।।
বাবা আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমার চেহারা আর নাম শুনেই বুঝতে পারলেন আমি কে। কারন আমার চেহারা অনেকটা তার মতোই, আর আমার নাম তো তার দেওয়ায়।
.
–এই হলো লংস্টার রাজ্যের রাজা জ্যাসন ব্রিটের বড় সন্তান জ্যাকসন ব্রিট। অবশ্য জিনিসটা আমাদের লংস্টার মহারাজ গোপন রেখেছে। তিনি তার ছেলেকে গোপনে মানুষদের মধ্যে রেখে এসেছিলেন।(এনার বাবা সকলের উদ্দেশ্যে বললো)
.
–তো আমি কখন বলেছি আমার বড় পুত্র জ্যাকসনের সাথে তোমার কন্যার এনগেজমেন্টে রাজি হবো।(বাবা অনেকটা ঘেমে গিয়ে বললো)
.
–আপনি হয়তো ভুলে গেছেন আমি লংস্টার থেকে বিতারিত। রাজ্যের কেউ জানে ও না আমি বেচে আছি কিনা।(আমি)
.
–কিন্তু তুমি তো একটা চিঠি লিখেছিলে যে ফেরত এসেছো তুমি। আর আজ তো আমাদের রাজ্যে ফেরত যাওয়ার কথায় তোমার।(বাবা)
.
–হ্যা কিন্তু পথিমধ্যে কি ভেবে যেনো মন পরিবর্তন করলাম।(আমি)
.
–দেখো তুমি বিতারিত নও। আমি তোমাকে মেনে নিয়েছি তুমি আমার বড় সন্তান।(বাবা)
.
–হ্যা তাহলে তো সব ঠিকঠাক। মহারাজ আমি এনগেজমেন্ট করতে প্রস্তুত। আমার বাবা নিজেই মেনে নিয়েছেন আমাকে।(আমি এনার বাবাকে বললাম)
।।।
।।।
রাজা জ্যাসন রাজার কথা শুনে কে আর। আমাকে নিয়েই এনার সাথে এনগেজমেন্ট করিয়ে দিলো। এখানে রাজা জ্যাসন কিছুই করতে পারবে না। কারন বাকি তিন রাজারাও আছে। কোনো কিছু করলেই একটা যুদ্ধ লেগে যাবে এখানে। তাই চুপ চাপ বসে আছে। আমাদের এনগেজমেন্টের পরে এনার বোনের বিয়েও হয়ে গেলো। বিয়ের শেষে নাকি একটা বিশাল অনুষ্ঠান। আমি নিজেও জানি না কি অনুষ্ঠান। কিন্তু এনার বাবা আমার কাছে এসে বললো,
.
–আমার একটা স্পেশাল পাওয়ার আছে।(রাজা)
.
–কি সেটা মহারাজ।(আমি)
.
–এখন থেকে আমি তোমার ফাদার ইন ল্। তাই রাজ দরবারের বাইরে আঙ্কেল ডাকো।(রাজা)
.
–ঠিক আছে আঙ্কেল।(আমি)
.
–আমি অন্যের মনে কি চলছে সেটা শুনতে পারি।(আমার কাধে হাত দিয়ে বললেন)
.
–মানে লোকজন কি ভাবছে সেটা পরতে পারেন।(আমি জিজ্ঞেস করলাম)
.
–হ্যা। তোমার বাবার মনের খবর জেনে তো অবাক হলাম।(ডান হাতের ওয়াইন এর গ্লাসে চুমুক দিয়ে বললো)
.
–কি ভাবছে তিনি?(আমি)
.
–এই প্রথম বার আমার থেকে হেরে গিয়েছে। অপমানটা সহ্য করতে পারছে না। ওর স্ত্রী ওকে একটা বুদ্ধি দিচ্ছে।(রাজা)
.
–….(আমি চুপ করে রইলাম)
.
–একটু পরে একটা ফাইট টুর্নামেন্ট হবে। সেখানে সব রাজ্যের একজন করে লড়বে। রাজারা এমন অনুষ্ঠানে সাথে করে নিজের সবচেয়ে শক্তিশালী লোককেই নিয়ে আসে। আর তোমার বাবা নিয়ে এসেছে তোমার ছোট ভাইকে। তোমার বাবা চাচ্ছে আমি আমার তরফ থেকে আমার নতুন জামাইকে পাঠায়। কারন পুরো রাজ্যের মধ্যে সেই সবচেয়ে শক্তিশালী।(রাজা)
.
–….(আমি চুপ করে রইলাম)
.
–সে চাচ্ছে ভায়মীরকে একদম মেরে ফেলতে। এতে করে আমার উপরে প্রতিশোধ নেওয়া হবে তার অপমানের।(রাজা)
.
–কহিল ব্রিট তাহলে লংস্টারের সবচেয়ে শক্তিশালী?(আমি)
.
–হ্যা।(রাজা)
.
–তাহলে মহারাজ আপনি আপনার তরফ থেকে আমাকে পাঠান।(আমি)
.
–পাগল হয়েছো? তুমি এখনো লড়াই এর সম্পর্কে কিছুই জানো না। এক সেকেন্ড ও টিকটে পারবে না ওর কাছে। আর ওর বড় ভাই বলে তোমাকে রেহায় দিবে না একটুও।(রাজা)
.
–আপনাকে আমাকে নিয়ে কিছুই ভাবতে হবে না।আপনি শুধু ওর সাথে আমার লড়াইয়ের ব্যবস্থা করে দিন।(আমি)
।।।
।।।
আমি জানি রাজা মন পরতে পারে। তাই আমি মনে ইচ্ছা করেই ভালো একটা জিনিস ভাবতে লাগলাম। এনার বাবা ভালো মানুষ সেটা তাকে দেখলেই বোঝা যায় কিন্তু রাজা জ্যাসনের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র পেলে সেটা না করে থাকতে পারে না। দুজনে ভালো বন্ধু হলেও আজ দুজন সেরা শত্রু। আমি জানি না কিসের এতো শত্রুতা। কিন্তু মনে হয় না আমার বাবার বদলে যাওয়ায় এমন শত্রুতা হয়েছে। শত্রুতা আরো গভীর হবে।
।।
।।
একটু পরেই অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেলো। প্রথমেই দ্বিতীয় রাজ্য সি জারের একজন সেনাপতি আসলো তার সাথে লড়লো পঞ্চম রাজ্য এক্সরির একজন হান্টার। জে জিতলো তার সাথে লড়াই হলো চতুর্থ রাজ্য অসিয়াসের একজন হান্টার গিল্ডের লিডারের সাথে। সেখান থেকে গিল্ডের লিডার জিতলো তার সাথে লড়াই হলো রাজা জ্যাসন এর ছোট পুত্র মানে আমার ছোট সৎ ভাই কহিলের সাথে। আমি ওদের ফাইট দেখে পুরো অবাক হয়ে গেলাম। এমনিতেও আগের গুলো মারাত্মক ছিলো। যেভাবে ম্যাজিক ব্যবহার করে লড়াই করছিলো ওরা। তাতে তো মতে হচ্ছিলো এটা ওদের বা হাতের কাজ কিন্তু আমি তো তেমন ম্যাজিক ব্যবহার করতেই পারি না

।।
আর কহিল যেভাবে লড়ছিলো। পুরো মারাত্মক। লড়তে লড়তে গিল্ডের মাস্টারের জীবন চলে গেলো। কহিল তার বুকের মধ্য দিয়ে বরফ ঢুকিয়ে দিয়েছে। কিন্তু একটু পর গিল্ড মাস্টারের শরীর ঠিক হতে শুরু করলো। দেখলাম ম্যাজিক অনেক অস্থির জিনিস। একজন লোক তাকে ম্যাজিক দিয়ে হিল করে দিচ্ছে। যা দেখলাম তাতে বুঝলাম কহিলের এট্রিবিউট হলো Ice। বরফ বানাতে পারে হাওয়ার মধ্য থেকেই। আমি তো নিজেও জানি না আমার এট্রিবিউট কি? কিন্তু আমার ভয় নেই কারন কিছু জিনিস তো আমি ও করতে পারি। আর আমার কাছে এক্সোনিয়া আছে। যখন দরকার পরবে হালকা ব্যবহার করতে পারবো। আমি দাড়িয়ে ছিলাম। এনা আমার পাশে দাড়িয়ে আছে আমার হাত ধরে। ও কিছু বলছে না। কারন ও রেগে আছে। রাগ করেছে কেনো সেটা তো জানিই। আমি ওকে বলি নি আমি প্রিন্স তাই।

।।।।।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন ১৩ তম পর্বের জন্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here