ভ্যাম্পায়ার_কুইন# পর্বঃ২৬

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ২৬
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
কুয়ান আমাদেরকে নিয়ে যেতে লাগলো প্রাসাদের ভিতরে। প্রাসাদটা একটা বিশাল গাছের মধ্যে বানানো। দেওয়াল দিয়ে গাছের জড় এবং পাতা দেখা যাচ্ছে। আর বিশেষ করে যখন আমরা বেলকনিতে নেমেছিলাম তখনি বুঝতে পেরেছিলাম গাছটা কত বড়। পুরো আলফাইমের অর্ধেক জুড়ে রয়েছে এই গাছ। গাছটা উচ্চতায় তেমন বড় না হলেও চারিদিকে এটির শাখাপ্রশাখা অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়েছে। আর সকল লাইট এল্ফসদের বাসা এই গাছের শাখার উপরেই বানাতে হয়। যারা মাটিতে থাকে তারা এল্ফসদের মধ্যে সবচেয়ে নিচু বর্নের। মিনিস্টার কুয়ান আমাদের সোজা নিয়ে গেলেন রাজ দরবারে। যেখানে আলফাইমের রানী বসে আছে। তার নাম আলিয়ানা আলফাইম। আমাকে দেখার পর সম্মান জানালো আমাকে। রানী দেখতে যে এতো সুন্দর হবে আমি আগে জানতাম না। এল্ফসরা এমনিতেই সব দুনিয়ার মধ্যে সুন্দর হয়। তাদের সৌন্দর্যের কথা আমি পৃথিবীতে থাকতেও বিভিন্ন কার্টুনে দেখেছি। কিন্তু প্রথম একজন এল্ফস নারী তাউ আবার তাদের রানীকে দেখে আমার মাথা ভার হয়ে গেলো। তারপরও কন্ট্রোল করলাম নিজের মাথাকে৷ রানীর বয়স অনেক হবে সেটা তাকে দেখে কখনো ভাবা যাবে না। শুধু যদি লম্বা কান ঢেকে রাখা হয় তাহলে তাকে ১৮ বছরের মানুষ মনে হবে৷ সে যাইহোক ডেভিল কিং হয়ে একজন মেয়েকে ফ্লার্ট করতে পারি না। তাউ আবার একজন রানীকে৷ অবশ্য আমি পৃথিবীতে থাকতে কারো সাথে তেমন কথায় বলতাম না। সবাই আমাকে আলাদা ভাবতো, অনেক নির্যাতন ও করেছে। কিন্তু মনস্টার ওয়ার্ল্ডে আসার পর থেকে কেনো জানি আমার চরিত্র আস্তে আস্তে পাল্টে গেছে। লোচার্ট একাডেমীতে থাকতে, আমার সিল করা ক্ষমতার সাথে আমার আলাদা একটা মন মাইন্ড দুটোই আমার মধ্যে প্রবেশ করেছে, সোজা কথায় বলতে গেলে আমার মধ্যে এখন দুটো সত্ত্বা আছে। এক হলো এন্জেল সত্ত্বা যেটা আমি ছোট থেকেই। আর আরেকটা হলো ডেভিল সত্ত্বা। আমি ভয়ে আছি, একদিন আমার ডেভিল সত্ত্বা আমার পুরো শরীরের উপরে কন্ট্রোল করে নিবে। আর সেটা হলে আমি নিজে এখন যেটা ভাবছি সেটা ভাবতে পারবো না। আমার মধ্যে সব খারাপ ভাবনা চলে আসবে তখন। মোটকথা আমি এখনকার থেকে সম্পূর্ন উল্টো একজন হয়ে যাবো। সে যায় হোক রানীর সাথে আমার কথা হতে লাগলো,
.
–ডেভিল কিং আপনাকে স্বাগতম আলফাইমে। আমি আলিয়ানা আলফাইম। আমি পুরো আলফাইমের রানী।(আলিয়ানা)
.
–ধন্যবাদ রানী আলিয়ানা আলফাইম।(আমি)
.
–আপনি আমাকে রানী আলিয়ানা ডাকতে পারেন।(রানী)
.
–ঠিক আছে। প্রথমবার আলফাইমে আসলাম। আলফাইমের সৌন্দর্য দেখে আমি মুগ্ধ।(আমি)
.
–আপনি আপনার ইচ্ছা মতো ঘুরেন কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু শুধু আলফাইমের সৌন্দর্য আপনাকে এখানে এনেছে সেটা আমার মনে হচ্ছে না।(রানী)
.
–হ্যা ঠিক ধরেছেন।(আমি)
.
–তো বলুন কিসের জন্য এসেছেন?(রানী)
.
–আপনি হয়তো শুনেছেন লোকি এজগার্ড দখল করেছে। আর সে বিশাল বাহিনীও জোগাড় করেছে থরকে মেরে ফেলার জন্য।আর আপনি জানেন ওডিন তার ঘুম থেকে ফিরলে রাজার সিংহাসন থেকে নেমে থরকে রাজা বানাবে। থর মিওনির এর অযোগ্য হওয়ায় এখন লোকি এজগার্ডের সিংহাসন দখল করেছে। লোকি শুধু এজগার্ড নিয়ে বসে নেই, সে চাচ্ছে পুরো এগারো দুনিয়া তার মুঠোই থাকুক।(আমি)
.
–ব্যাপারটা বুঝেছি। আপনি এসেছেন আমাদের কাছ থেকে সাহায্য চাইতে।(রানী)
.
–হ্যা। আমি মাত্র ডেভিল কিং হয়েছি। তার উপর এখনি যদি আমি আমার ক্ষমতা গুলোর পুরো ব্যবহার করি তাহলে আমার ডেভিল সাইড আমাকে গ্রাস করে ফেলবে। তখন বলা যায় না লোকির মতো আমি নিজেও বাকি দশ দুনিয়ার উপরে যুদ্ধ ঘোষনা করতে পারি। তাই এখন আপনারা আমাদের সাহায্য করুন লোকির বিরুদ্ধে লড়তে। বলা তো যায় না পরের যুদ্ধ আপনাদের সাথে হতে পারে লোকির।(আমি)
.
–দেখুন আমরা কখনো কারো কাছে মাথা নত করি নি। আর কেউ আমাদের সাথে যুদ্ধ করতে চাইলে আমরা পিছনে ফিরবো না। আপনি হয়তো জানেন আমরা আজ পর্যন্ত কোনো যুদ্ধে হারি নি।(মিনিস্টার)
.
–মিনিস্টার আপনি চুপ থাকেন। ডেভিল কিং আমরা এজগার্ডকে সম্মান করি। আমাদের প্রত্যেক যুদ্ধে তারা আমাদের সহায়তা করেছে। এখন আমরা এজগার্ডের বিরুদ্ধে লড়তে পারবো না।(রানী)
.
–আমি আপনাদের এজগার্ডের বিরুদ্ধে লড়তে বলছি না। লোকির সাথে ম্যালিকিত হাত মিলিয়েছে। আপনি হয়তো জানেন সে কে?(আমি)
.
–ডার্ক এল্ফসদের রাজা।(রানী)
.
–হ্যা। ম্যালিকিত দুই লক্ষের একটা সৈন্য দিয়েছে লোকিকে। অবশ্য ম্যালিকিত এই যুদ্ধে অংশ নিবে না। সে হয়তো নতুন কোনো জিনিস নিয়ে ভেবে যাচ্ছে।(আমি)
.
–এটাও শুনেছি।(রানী)
.
–আমি জানি আলফাইম দুনিয়ার সাথে স্যয়ারতালফাইম এর যুদ্ধ মাঝে মাঝেই লাগে। আর ম্যালিকিত হয়তো লোকির এই সঙ্গকে আলফাইমকে ধ্বংস করতে কাজে লাগাবে।(আমি)
.
–তে আপনি আমাদের কি করতে বলছেন?(রানী)
.
–লোকির বাকি সৈন্য আমি দেখে নিবো। শুধু আপনারা আমাদের কিছু সেনা দিয়ে ডার্ক এল্ফসদের হারিয়ে দিবেন।(আমি)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে। আপনি যখন কষ্ট করে আমাদের কাছে এসেছেন, তাই এই একবারই আমরা আপনার সাহায্য করবো। আমাদের সেনা ডার্ক এল্ফসদের হারাবে। এর থেকে বেশী কিছু আমরা করতে পারবো না।(রানী)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে।(আমি)
.
–আপনি যখন এখানে এসেছেন। একটু রেস্ট করুন। আলফাইমের সৌন্দর্য ভোগ করুন।(রানী)
.
–না বেশী সুন্দর জিনিস বেশীক্ষন দেখলে আমার আবার সেটাকে নিজের করে নিতে মন চাই এখন। যেমন আপনি সুন্দর, তেমন আপনার আলফাইম। তাই এখানে আমার বেশীক্ষন থাকা ঠিক হবে না।(আমি)
।।।।
।।।।
আমার কথা শুনে রানী কিছুটা লজ্জা পেলো। রাজারা রানীদের সৌন্দর্যের তারিফ তো করেই এটা অস্বাভাবিক নয়। বাট আমারটা অন্য রকম ছিলো। এটাও আমি নিজে বলতে চাই নি। কেনো জানি মুখ থেকে বের হয়ে গেলো। যায়হোক এল্ফস নারী লজ্জা পেলে পুরো লাল হয়ে যায় তাদের মুখ। আর তাদের সেই লাল মুখটা দেখতে অনেক কিউট লাগে। এবার আমি টেলিপোর্টেশন স্পেল ব্যবহার করলাম। সোজা চলে আসলাম আন্ডারওয়ার্ল্ডে। আমার সিংহাসনে এসে বসলাম। আমার চার জেনারেল আমার সামনেই দাড়িয়ে আছে।
.
–মাই কিং গড অফ থান্ডারকে প্রাসাদে নিয়ে এসেছি। সে একটু বিশ্রাম করছে। একটু পরেই সে আপনার সামনে চলে আসবে।(লুসেফার)
.
–ওয়েল ডান লুসেফার এবং অর্নিজ।(আমি)
.
–মাই কিং কিছু মনে করবেন না তবে একটা কথা বলতাম আপানাকে?(কর্ডিজ)
.
–জ্বী বলো।(আমি)
.
–আমরা সেখানে গিয়েছিলাম মূলত ড্রিম কুইনকে ট্রিট করার জন্য হিলার খুজতে। কিন্তু আমরা সেটাই করতে ভুলে গেছি।(কর্ডিজ)
.
–ও হ্যা। আসলেই তো।(আমি)
।।।
।।।
এমনিতেই এল্ফস রানীকে দেখে আমি স্বপ্নের রানীর কথা ভুলো গিয়েছিলাম। তাইতো হিলার এর কথা আমার মনেই নেই। যায়হোক আবার যেতে হবে সেখানে। কিন্তু তার আগে আমি বুঝতে পেরেছি আমার শরীরের ভিতরে সমস্যা হচ্ছে। টেলিপোর্টেশন স্পেল ব্যবহার করার ফলে আমার ডেভিল সাইড আমাকে হ্রাস করার চেষ্টা করছে। মূলত আমার এন্জেল সাইডের জন্য আমি ফ্রেস মাইন্ডের একজন ছেলে৷ কিন্তু ডেভিল সাইডটা সেটার পুরো উল্টা। যদি আমার দুটো আলাদা সাইড না হতো তাহলে এমন সমস্যা হতো না। কিন্তু যেহেতু আমার ডান সাইড এন্জেল, আর বামটা ডেভিলের তাই দুটো সাইডই আমার পুরো বডি চাচ্ছে, যেহেতু আমার এন্জেল সাইড ছোট থেকেই আমার পুরো বডি দখল করে রেখে দিয়েছিলো, তাই হঠাৎ করে ডেভিল সাইড এখন নিজেই আমার পুরো বডি নিয়ে নিতে চাচ্ছে। সেটা এন্জেল সাইডকেও এখন কন্ট্রোল করতে শুরু করেছে। আমাকে খুব শীঘ্রই আমার সমস্ত ক্ষমতা কন্ট্রোলে করতে হবে। বেশী স্পেল কিংবা ম্যাজিক পাওয়ার যদি আমি এখন ব্যবহার করি তাহলে সেটা আমার ডেভিল সাইডকে আরো শক্তিশালী করে দিবে। দুটো সাইড নিউটলে রাখতে চাইলে আমাকে এন্জেল পাওয়ার ব্যবহার করা ও শিখতে হবে। কিন্তু সেটা এন্জেলদের দুনিয়াতে না গেলে আমি শিখতে পারবো না। সে যাইহোক আমার কিছু কিছু ভাবনা এখন আগের থেকে চেন্জ হয়ে যাচ্ছে সেটা আমি বুঝতে পারছি। মাথাও অনেক ব্যথা হয় একটা স্পেল ব্যবহার করলে।
.
–মাই কিং আপনি আদেশ করুন। আমি আলফাইমে গিয়ে একজন হিলার নিয়ে আসি।(কর্ডিজ)
.
–না সেটার দরকার নাই। আলফাইম আমাদেরকে ভয় পাচ্ছে। তুমি গেলে ব্যাপারটা আরো খারাপ হতে পারে। আমি যাবো।(আমি)
.
–কিন্তু মাই কিং, আপনি মাত্র ডেভিল কিং হয়েছেন। এখনি এতো স্পেল ব্যবহার করা ঠিক হবে না। আপনার কিছুদিন রেস্ট নেওয়া দরকার।(লুসেফার)
.
–না কোনো সমস্যা হবে না আমার।(আমি)
।।।
।।।
আমি সবার কথা উপেক্ষা করে আবার আলফাইমে টেলিপোর্ট হলাম। এবার আমি টেলিপোর্ট হওয়ার সময় রানীর কথা ভাবলাম। আর আমি ঠিক রানীর সামনে টেলিপোর্ট হলাম। আগের বার টেলিপোর্ট হওয়ার পর একটা জিনিস আমি খেয়াল করেছি। আমি এনাকে ভেবে স্পেল ব্যবহার করেছিলাম। আর আমি ঠিক এনার সামনেই টেলিপোর্ট হয়েছিলাম। যার পর আমি বুঝতে পেরেছি আমার এই স্পেলটা অন্য সবার থেকে আলাদা। এটার মাধ্যমে আমি যাকে ভাববো ঠিক স্পেলের সাহায্যে তার সামনে যেতে পারবো।
।।।
।।।
হঠাৎ আমার টেলিপোর্ট হওয়ার ফলে রানী চমকিয়ে গেলো। রানী এমনিতেই তার দুই গালে হাত দিয়ে তার রুমে আয়না দেখছিলেন। জানি না কি ভাবছিলেন। তবে মনে হয় আমার প্রশংসাটা তার ভালো লেগেছিলো,
.
–এভাবে হুট করে একজন রানীর রুমে আসার সাহস পেলেন কোথায়?(রানী)
.
–আমি কি জানি আপনি রুমে একা থাকবেন? আমি তো আমার স্পেল ব্যবহার করলাম। কিন্তু স্পেলও বেশ আজব দেখলেন তো। আপনি যেখানে ঠিক সেখানেই নিয়ে আসলো আমাকে।(আমি)
.
–আমি কি এখন নিজের আসল রং দেখাতে আসছেন? ভুলে যেয়েন না আমি আলফাইমের রানী। যদি আমার শরীরে একটা স্পর্শও করেন তাহলে সেটা ভালো হবে না।(রানী)
.
–ভুল বুঝতেছেন। আপনি আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দরী নারী হলেও আপনি আমার টাইপের না। তাই ভয় পাবেন না। আমি কিছুই করবো না। আমি ফেরত আসতাম না৷ তবে কারন আছে একটা আসার।(আমি)
.
–কি কারন?(রানী)
.
–স্বপ্নের দুনিয়ার রানী লুসি দ্যা ফেইরীকে লোকি অনেক গুরুতর আহত করেছে। আমাদের আন্ডারওয়ার্ল্ডের হিলার তার চিকিৎসা কিছুতেই করতে পারছে না। দুই তিন দিনের বেশী এভাবে চিকিৎসা না পেলে সে বাচবে না।(আমি)
.
–এটা তো আমি জানতাম না। লোকি তাহলে স্বপ্নের দুনিয়াতেও গিয়ে আক্রমন করেছে। বিষয়টা কম করে নেওয়া যাবে না।(রানী)
.
–হ্যা এখন আলফাইম থেকে আমার একজন হিলার প্রয়োজন যে ড্রিম কুইনকে হিল করতে পারবে।(আমি)
.
–ঠিক আছে, আমি যাচ্ছি আপনার সাথে?(রানী)
.
–আপনি যাবেন কেনো? একজন হিলার পাঠালেই তো হয়?(আমি)
.
–কেনো আপনার কি মনে হয় না আমি হিল করতে পারবো না তাকে?(রানী)
.
–না না সেটা না। আপনি পারবেন সমস্যা নাই।(আমি)
.
–ওকে চলুন তাহলে।(রানী)
।।।।।।
।।।।।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
।।।।।
।।।।।।
অপেক্ষা করুন পরবর্তী পার্টের জন্য। আগেই বলে রাখি গল্প নিয়ে অনেক ভাবতে হয়। প্রতিদিন দিতে গেলে একটু ছোট পার্ট হবে। তাই এডজাস্ট করে নিয়েন। আর হ্যা এন্জেলদের দুনিয়ার জন্য একটা সুন্দর নাম সাজেস্ট করুন। আর আগের পার্ট গুলোতে যদি এন্জেলদের নাম উল্লেখ করে থাকি তাহলে জানাবেন, কারন আমার মনে পরছে না,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here