ভ্যাম্পায়ার_কুইন# পর্বঃ০৬

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ০৬
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
হ্যারির কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম। কালকে তো এনা ঔ তিনজনকে সেইরকম মেরেছিলো৷ কিন্তু দোষ তো আমাদের না এখানে। দোষ করেছে ঔ তিনজন। আমাদের কেনো শাস্তি দেওয়া হবে বুঝতে পারছি না৷ সভাপতি আমাদের দিকে আসতে লাগলেন।
.
–তো মিস্টার জ্যাকসন ব্রিট। আমার ছোট ভাই আর তার বাকি দুই বন্ধুকে তাহলে তোমরা দুজনই মেরেছো। যাক আমি রাগ করি নাই। ভুল আমার ভাইয়েরই ছিলো। কিন্তু আমার ভাই কোনো মেয়ের কাছ থেকে হেরে আসবে এটা তো মেনে নেওয়া যায় না।(হ্যারি)
.
–তো কি করবেন?(এনা)
.
–স্টুডেন্ট কাউন্সিললের নিয়ম মোতাবেক কল ফাইট করতে হবে তোমাদের। যদি জিততে পারো তাহলে তোমাদের উপরে কোনো অভিযোগ হবে না। কিন্তু যদি হেরে যাও তাহলে তিনজনকে মারার মিথ্যা অভিযোগ তোমাদের উপরে দিয়ে তোমাদের শাস্তির ব্যবস্থা করবো।(হ্যারি)
.
–যা ইচ্ছা করেন আপনি। আপনার ধমকে ভয় পাবার মতো মেয়ে না আমি।(এনা)
.
–ভয় পেতে বলছে কে? ম্যাচে উপস্থিত না হলে তোমাদের ১০ আঙ্গুলের একটা থাকবে না আগেই বলে দিচ্ছি।(হ্যারি)
.
–ওকে আমরা রাজি।(জেসি)
.
–কল ফাইটের নিয়ম না জানলে লাইব্রেরী থেকে জেনো নিয়ো।(হ্যারি)
.
–আমাদের সেটার প্রয়োজন নেই। শুধু আমাদের বিরোধীদের সাবধান থাকতে বইলেন।(জেসি)
.
–হুমমম দেখা যাবে।(হ্যারি)
।।।
।।।
সবাই যার যার মতো ক্লাসে যেতে লাগলো। এনা জেসিকে বলতে লাগলো,
.
–কল ফাইটে রাজি হবার কি দরকার ছিলো?(এনা)
.
–আমাদেরকে এভাবে চ্যালেন্জ দিচ্ছিলো আমরা কি সেটা না বলতে পারি।(জেসি)
.
–কিন্তু আমরা তো কখনো কল ফাইট করি নি। আর তারপর আমরা দুজন মেয়ে।(এনা)
.
–তো ভয় পাচ্ছিস কেনো। আমরা মেয়ে বলে কি ছেলেদের মারতে পারবো না? আর এমনিতেও তো তুই কালকে ঔ তিনজনকে মারলি।(জেসি)
.
–হ্যা কিন্তু আমি শুনেছি হ্যারি নাকি জেনারেল লুসেফারের ছেলে। ওকে হারানো তো আমাদের পক্ষে কখনো সম্ভব না।(এনা)
.
–এই লুসেফারটা আবার কে?(আমি)
.
–তোকে নিয়ে কি যে করবো আমি। লুসেফার হলো Devil রাজার চার নম্বর জেনারেল।(জেসি)
.
–এই devil রাজা আবার কে?(আমি)
.
–তোকে বোঝাতে গেলে আমাদের মাথা নষ্ট হয়ে যাবে।(জেসি)
.
— সাটান ক্রস তিনিই শেষ ডেভিল রাজা ছিলেন। আর তার চারজন শক্তিশালী জেনারেল ছিলো। তার মধ্যেই জেনারেল লুসেফার একজন।(এনা)
.
–ছিলো বলতে এখন নেই?(আমি)
.
–দেখো আমাদের এই মনস্টার দুনিয়ার অনেক বড় একটা ইতিহাস রয়েছে। এখানে এক সময় মানুষ ও বাস করতো। আমরা মনস্টার মানুষ সবাই এক সাথেই বাস করতাম। দেখতে দেখতে অনেক মনস্টার ক্রমে ক্রমে হাফ মনস্টারে পরিনত হতে লাগলো। মনস্টার আর মানুষদের ভালোবাসা দেখে ডেভিল রাজা সাটানের অনেক জ্বলতে লাগলো। তখন তিনিই ছিলেন এই পুরো মনস্টার রাজ্যের একমাত্র রাজা। তার কথামতোই এখানের মনস্টাররা কাজ করতো। কিন্তু মানুষদের প্রতি তার ঘৃণা এতো বেরে গেলো যে তিনি তার চার জেনারেলকে হুকুম দিলেন সব মানুষ এবং মানুষদের সাথে যে মনস্টার আছে তাদের হত্যা করে ফেলতে।(এনা)
.
–তাহলে এখানের সব মানুষদের তিনি হত্যা করে ফেলেছিলো?(আমি)
.
–হ্যা। আর তখনি পাঁচজন সাধারন জনতা এগিয়ে আসে। তাদের মধ্যে একজন ভ্যাম্পায়ার একজন হাফ demon, একজন ফায়ার ওলফ(আগুনযুক্ত নেকড়ে বাঘ), একজন ডেভিল, আর একজন ছিলো মেমথ(হাতির মতো সূড় ওয়ালা মনস্টার)।(জেসি)
.
–আর এই পাঁচজন তাদের আচরন দ্বারা সাধারন সব মনস্টার দের নিয়ে সাটানের বিশাল বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে।(এনা)
.
–শেষে কি হয়?(আমি)
.
–সাটান হেরে যায় তার মেয়ের জন্য। তার মেয়ে সাধারন একটা মানুষকে ভালোবাসতো। সে ও সাটানের জন্য মারা যায়। তাই সাটান এর মেয়ে প্রিন্সেস সুজান রাজ দরবারের গোপন দরজা দিয়ে শত্রুপক্ষ ঢুকিয়ে দেই।(জেসি)
.
–তাহলে ডেভিল রাজা নিজের মেয়ের জন্যই হেরে যায়।(আমি)
.
–হ্যা।(এনা)
.
–তবে এখনো মনে করা হয় নতুন ডেভিল রাজা জন্ম নিবে আবার।(জেসি)
.
–জন্ম নিবে কেনো? রাজা মারা যাবার পর রাজার জেনারেলরাই তো রাজা হতে পারতো। কিংবা রাজার মেয়েই তো রানী হতে পারতো।(আমি)
.
–সবাই সেটাই ভেবেছিলো। সাটান এর মেয়ে রানী হলে এই দুনিয়া পুরো পাল্টে যেতো। কিন্তু অনেক বড় দুঃখ পেয়েছিলো সে তার ভালোবাসা হারিয়ে। তাই তিনি তখন সেই পাঁচজন যারা প্রথমে সাটানের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছিলো তাদেরকে পুরো রাজ্য পাঁচ ভাগ করে পাঁচ রাজ্য করে সেখানের রাজা বানিয়ে দেই।(এনা)
.
–হ্যা এইটুকু আমি পড়েছি। এই দুনিয়ার রানীর কাছ থেকে পাঁচ বীর যোদ্ধা পাঁচটা রাজ্যের রাজা হয়। কিন্তু যে বইতে পড়েছি সেখানে তো ডেভিলের কোনো কথা লেখা ছিলো না।(আমি)
.
–ডেভিলের কাহিনী এখনো লেখা হয়নি কোথাও। কোথাও ডেভিলকে নিয়ে লেখলেই সেটা আগুনে পুড়ে যায়।(জেসি)
.
–ওওওও।(আমি)
.
–আর ডেভিল রাজারা কখনো নিজের ইচ্ছা কিংবা জনগনের ইচ্ছায় রাজা হয় না। একটা সাধারন ডেভিলের পিঠে দিটো জেনারেলের পিঠে চারটা আর একজন রাজার পিঠে দশটা কালো পাখা থাকে। যে ডেভিলের দশটা পাখা হয় সেই ডেভিল রাজা হয়। কিন্তু এক রাজা মারা যাবার পর তার ছেলে বা মেয়েরই এই দশ পাখা হয়। কিন্তু আজ ১ হাজার বছর হয়েছে কিন্তু এখনো নতুন ডেভিল রাজা জন্ম নেই নি।(এনা)
.
–নতুন ডেভিল রাজা জন্ম নিলে কি হবে?(আমি)
.
–কি হবে আর? তার জেনারেলগুলো তাকে সিংহাসনে বসাবে আবার। আর বাকি পাঁচটা রাজারা তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে আবার।(জেসি)
.
–ওওওও।(আমি)
.
–হ্যা। আচ্ছা কল ফাইট নিয়ে কি করবি জেসি।(এনা)
.
–কি করবো আর? আমরা লড়বো। লুসেফারের ছেলে হয়ছে বলে কি হ্যারিকে হারাতে পারবো না? demon আর ডেভিলের শত্রুতা অনেক আগে থেকেই। দেখিয়ে দিবো কি করতে পারে একজন demon।(জেসি)
.
–আমি আর তুমি নাহয় কিছু একটা করলাম। কিন্তু জ্যাক কি করবে?(এনা)
.
–হ্যা এটাই ভালো সময় ওর মনস্টার পাওয়ার গুলো টেস্ট করার।(জেসি)
.
–তুই কি পাগল হয়েছিস? ও তো এখনো নিজের পাওয়ার ব্যবহারই করতে পারে না। আর দেখিস ওরা তিনজনই ডেভিল থাকবে। দুইজনকে নাহয় আমরা দুজন ধরলাম। কিন্তু আর একজন ডেভিল তো ওর অবস্থা বারোটা করে দিবে।(এনা)
.
–কিছুই হবে না ওর।(জেসি)
.
–আচ্ছা এই কল ফাইটটা কি সেটা তো বলবা আমাকে।(আমি)
.
–কোনো স্টুডেন্ট এর উপরে যদি কোনো রকম অভিযোগ আসে। আর যদি সেটার প্রমান গুরুতর হয়। তাহলে সেই স্টুডেন্ট দের একটা সুযোগ দেওয়া হয়। স্টুডেন্ট কাউন্সিলর এর তিনজনের সাথে লড়তে হবে। অভিযুক্ত মানুষটা সর্বোচ্চ পাঁচজনকে সাহায্যের জন্য ডাকতে পারবে।(এনা)
.
–আমাদের সাথে আরো দুজন আসবে না। কারন স্টুডেন্ট কাউন্সিলর এর বিরুদ্ধে কেউ লড়তে পারে না। সবার অবস্থা বারোটা হয়ে যায়। সেই ভয়ে কেউ সাহায্য করবে না। তার মানে আমাদের তিনজনকেই লড়তে হবে।(জেসি)
.
–হৃদয় তোমার আসতে হবে না। আমরা দুজনই পারবো।(এনা)
.
–পাগল হয়েছো তোমরা। আমি তোমাদের বিপদে ফেলে চলে যেতে পারি? কখনোই না। আমিও ফাইট করবো।(আমি)
.
–এইতো এটাই আমার ভাই।(জেসি)
.
–তাহলে ক্লাসের পরেই বাস্কেটবল কোর্ট এর মধ্যে ফাইট শুরু হবে। ক্লাস শেষে আমরা ঔখানেই যাবো।(আমি)
.
–ওকে।(আমি)
।।।।
।।।।
ক্লাস শেষ করলাম আমরা। শেষ করে কোর্টের দিকে যেতে লাগলাম। সবাই আমাদের কল ফাইট দেখার জন্য কোর্টের পাশে গ্যালারীতে বসলো। আমরা কোর্টের ভিতরে গেলাম। বুঝলাম না বাস্কেটবল খেলা হবে নাকি ফাইট হবে। হ্যারি এক পাশে চেয়ার নিয়ে বসে আছে। আর ওর পাশে দুজন দাড়িয়ে আছে। হ্যারি আমার বোনের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলো,
.
–আমি আশা করি নি তোমার সাথে দেখা হয়ে যাবে। তুমি এখানে পড়তেছো আমি তো জানতামই না।(হ্যারি)
.
–আমি কোথায় পড়ি না পড়ি তাতে তোর ইন্টারেস্ট কেনো রে? অনেক জ্বালিয়েছিস আজকে শোধ নিবো?(জেসি)
.
–তোমার মুখের মধুর কন্ঠ গুলো কোথায় গেলো? এভাবে তো কথা বলতে না কখনো?(হ্যারি)
.
–চুপ কর শয়তান। আজকে তোকে মেরে হার ভেঙে দিবো। ভাইয়া তুই পিছনে থাক। আমি আর এনা দেখছি।(জেসি)
.
–রুলস তো জানোই? পুরো পাওয়ার ব্যবহার করা যাবে এই জায়গাটুকুর মধ্যে।(হ্যারি)
…..
।।।
।।।
জেসি রেগে এগিয়ে গেলো। এনা ও গেলো। এনার ভ্যাম্পায়ার ফর্মে চলে গেলো এনা। ওর চুলগুলো সিলভার কালারের হয়ে যায় ওর মনস্টার ফর্মে। জেসির কোনো মনস্টার ফর্ম নেই কারন হাফ demon আমরা। হ্যারির সাথে থাকা দুজনও নিজেদের মনস্টার রূপে এগিয়ে আসছিলো। দুজনের পিঠ দিয়ে কালো দুটো পাখা বের হলো। দুজনে এগিয়ে আসছিলো। কিন্তু এনা একটাকে দিলো একটা কিক আর জেসি দিলো একটাকে ঘুষি। দুজনেই কোর্টের দুই পাশের স্টান্ডের সাথে জোরে বারি খেলো। আমি বুঝতে পারলাম জেসি ওর আর এনার সময় বাদে সবার সময় আটকে দিয়েছিলো। তারপর খুব সহজেই দুজনকে দুই দিকে নক করে ফেলে দিলো। এবার হ্যারি হাততালি দিয়ে বলতে লাগলো,
.
–আমি মৃগ্ধ জেসিকা। তুমি তো এখন শক্তিশালী হয়ে গেছো অনেক। কিন্তু তুমি কি আমার গায়ে হাত তুলতে পারবে?(হ্যারি)
.
–চুপ কর শয়তান। তোর অপেক্ষায় ছিলাম আমি অনেকদিন। কিন্তু এখন আর না। ভুলে গেছি তোকে(জেসি)
.
–ও তাই? আমি তোমার গায়ে তো হাত তুলতে পারি না। এমনকি ছেলে হয়ে তোমার বান্ধুবীর গায়েও হাত তুলতে পারবো না। তুললে আবার তুমি কষ্ট পাবা। কিন্তু জ্যাকসন ব্রিট তুমি একদম আমার বিরোধী হিসাবে উপযুক্ত।(হ্যারি)
.
–হ্যা দেখা যাবে। আমার ভাই একা নয়। আমরা ও আছি সাথে।(জেসি)
.
–ও তোমাদের দুজনের ব্যবস্থা করছি দাড়াও।(হ্যারি)
।।।।
।।।।
হ্যারির চোখ হঠাৎ লাল হয়ে গেলো। সাথে সাথে আমাদের পিছনে থাকে দেওয়াল থেকে কয়েকশ হাত বেরিয়ে আসলো। মনে হয় হ্যারি কোনো জাদুর স্পেল পরেছে। হাত গুলো এনা আর জেসিকে ধরে দেওয়ালের সাথে আটকে রাখলো।
.
–তো তুমি তাহলে জেসিকার যমজ ভাই।(হ্যারি আমার দিকে তাকিয়ে বললো)
.
–তোমাদের দুজনের মধ্যে কি চলছে জেসি?(আমি)
.
–জেসি আর ওর বান্ধুবী এখন বিজি আছে। ওরা দেখা ছাড়া কিছু করতে পারবো না। আমার গ্রাভিটি ম্যাজিকের মধ্যে আটকা পরেছে ওরা। তো তুমি জেসির আসল ভাই কিনা দেখা যাক।(হ্যারি)
।।।।
।।।।
হ্যারির হাতে একটা কালো কাটানা চলে আসলো। সেটা দিয়ে কালো ধোয়া বের হচ্ছে।
.
–এটার নাম The Black Queen। আমার অন্ধকার দিয়ে বানানো এটা। এর সামনে যা কিছু আসে সব কিছুকেই এটা তার কালো দুনিয়ার মধ্যে নিয়ে যায়।(হ্যারি)
।।।।
।।।।
চাকু তলোয়ার দেখে আমার এমনিতেই ভয় লাগে অনেক। তারপর বিশাল একটা কাটানা নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে হ্যারি। ভয়ে আমার হাত পা নরছেই না।
।।।।।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
।।।।।
মোবাইল নষ্ট থাকার কারনে একটু দেরী হয়ে গেলো গল্প দিতে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। সামনে পরীক্ষা তাই কয়েকটা পার্টই লেখতে পারবো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here