ভ্যাম্পায়ার_কুইন# #সিজন_2# পর্বঃ১৬

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ১৬
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমাদের নতুন টিম এখন প্রস্তুত। আমি রাতে শুয়ে আছি। সবাই ঘুমিয়ে পরেছে। তখন ভ্যালি আমার সাথে কথা বলতে লাগলো,
.
–তো তুমি রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাও?(ভ্যালি)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–শুধু আমার কিংবা ইগড্রাসিলের সাহায্যে তুমি পুরো একটা রাজ্যের সাথে লড়তে পারবে না?(ভ্যালি)
.
–হ্যা আমি জানি। ছয়টা ড্রাগন অস্ত্র দিয়েও আমরা একটা রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়তে পারবো না। কারন সকল ড্রাগনই তাদের হোস্টের শরীর থেকে ম্যাজিক পাওয়ার এবজোর্ব করে। আর বেশী ম্যাজিক পাওয়ার এবজোর্ব করলে হোস্ট মারা যেতেও পারে।(আমি)
.
–তাহলে কি করতে চাচ্ছো? চারজনে তো পুরো একটা রাজ্যের বিরুদ্ধে যেতে পারবে না।(ভ্যালি)
.
–হ্যা সেটা ঠিক। তবে আমি রাজ্যের বিরুদ্ধে যেতে চাচ্ছি না। আমার করার মধ্যে দুটো জিনিস আছে, প্রথমত হয়তো আমি রাজাকে জোর করবো সিংহাসন ছাড়ার জন্য, যেটা হয়তো সম্ভব না। কিন্তু দ্বিতীয়টা হলো গোপনে রাজাকে হত্যা করা। যেটা আমার কাছে ঠিক মনে হচ্ছে।(আমি)
.
–তো রাজাকে গুপ্তঘাতকের মতো হত্যা করবে? এটা কিন্তু সহজ না। প্যালেসে যে গার্ড থাকে।(ভ্যালি)
.
–হ্যা কোনো কিছু কাজে লাগিয়ে সেটা শেষ করতে হবে।(আমি)
.
–তোমার মাথায় কি চলছে এটা আমি কখনো বুঝতে পারছি না। অবশ্য এরকম লোকদের ভালোই লাগে, যারা মিস্ট্রিয়াস চিন্তা ভাবনা করে।(ভ্যালি)
.
–হ্যা। হ্যা। তোমার ভাবনায় তো শুধু ইগড্রাসিলই।(আমি)
.
–তোমাকে বলছি না এই কথা কাউকে না বলতে।(ভ্যালি)
.
–কাউকে তো বলি নাই।(আমি)
.
–এইযে আমাকে বলছো। যদি কেউ শুনে ফেলে।(লজ্জা পেয়ে বললো)
.
–হয়ছে হয়ছে লজ্জা পেতে হবে না। আমি শুধু ভাবছি ইগড্রাসিল উঠলে কি করবে?(আমি)
।।।
।।।
আমি ভ্যালির সাথে কথা শেষ করে ঘুমিয়ে পরলাম। সকালে উঠে হালকা নাস্তা করলাম। তারপর হ্যারিদের সাথে কথা বলতে লাগলাম।
.
–তো জ্যাক আমরা এখন কি করবো?(হ্যারি)
.
–দেখো আমরা যে কাজ করছি সেটার জন্য আমাদের অনেক তথ্যের প্রয়োজন হয়। আর সেটার জোগাড় না করা পর্যন্ত কোনো কিছু করা যাবে না।(আমি)
.
–কিসের তথ্য?(লুসি)
.
–রাজা এবং জেনারেলের সকল কালো কর্ম কোথায় আছে, কি হচ্ছে, কিভাবে হচ্ছে। তার সকল তথ্যই জোগাড় করতে হবে। এবং সেটা আমাকেই করতে হবে।(আমি)
.
–কি? তুমি করবে কিভাবে?(হ্যারি)
.
–জেনারেল আমার বাবা হওয়ার দাবী করেছিলো। যদি আসলেই আমার বাবা হয়ে থাকেন, তাহলে আমি এখন তার কাছে গেলে অবশ্যই প্যালেসে থাকার একটা ব্যবস্থা করবেন। অবশ্য এবার প্যালেসে আমার জায়গা লাগবে না। কিন্তু প্যালেসে যাওয়া আসার অনুমতিটা আমার দরকার।(আমি)
.
–ও আমি বুঝতে পেরেছি। তুমি প্যালেস থেকে সকল তথ্য বের করবে।(হ্যারি)
.
–হ্যা। দেখি আমি এখনি বেরিয়ে পরবো। তোমাদের সাথে সন্ধার একটু পরে উপরের গলিতেই দেখা হবে।(আমি)
.
–হ্যা ঠিক আছে। সাবধানে যেয়ো।(লুসি)
।।।
।।।
আমি বের হয়ে গেলাম ওদের গোপন জায়গা থেকে। পিঠে দুটো তলোয়ার রয়েছে। মুখের মাস্কের কারনে আমাকে কেউ চিনছে না। অবশ্য অনেকে সন্দেহ করছে আমাকে দেখে। সন্দেহ করারই কথা। এখন ক্যাপিটালে অনেক সন্ত্রাসী ঘুরে বেরাচ্ছে। আমি সোজা প্যালেসের দিকে চলে গেলাম। এই কয়েক বছরে প্যালেসে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমার নিজেরও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। যদিও এই জায়গায় তিনবছর সময় কেটেছে, কিন্তু আমার শরীর পাঁচবছর সময় কাটিয়েছে রুইনস অফ ড্রিমে। তাই শরীরটা একটু বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে। চেহারাও অনেকটা উজ্জল হয়েছে। জানি না আমাকে তিনবছর পর দেখে জেনারেল কি বলবে। কিন্তু আমার যতদূর মনে হয় জেনারেল কিছু বলবে না। তার সাথে দেখা হলেই বোঝা যাবে কি হয়। আপাতোতো আমি একদম প্যালেসের গেইটের সামনে দাড়িয়ে আছি। যেখানে অনেকগুলো গার্ড আমার উপরে আধুনিক অস্ত্র তাক করে দাড়িয়ে আছে। অস্ত্র গুলোকে বলে বন্ধুক। এটার মধ্য থেকে ম্যাজিকাল বুলেট বের হয়, যেটা শরীরকে ফুটো করে দিতে পারে। একজন গার্ড আমাকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো,
.
–কে তুমি? আর প্যালেসের দিকে আসছো কেনো?(গার্ড)
.
–আমি এখানে আসছি জেনারেলের সাথে কথা বলতে।(আমি)
.
–জেনারেলের অনুমতি ছাড়া কেউ তার সাথে কথা বলতে পারবে না।(গার্ড)
।।।
।।।
আমি পরিচয় দিতে পারলাম না। অনশ্য এখানে আমাকে বলতে হতো আমি জেনারেলের ছেলে। কিন্তু সেটা আমি বলতে চাই না। আমাকে আরেকটা প্লান করতে হবে। আমি পিছনের দিকে ফিরলাম। কিন্তু গেইটের মধ্য থেকে ডাক শোনা গেলো। গার্ডদেরকে অর্ডার করা হলো আমাকে ভিতরে যেতে দেওয়ার জন্য। আমিও ভিতরে চলে গেলাম। ভিতর থেকে প্রিন্সেস এলিনা আমাকে ডাক দিয়েছে। আমি প্রিন্সেস এর সামনে গেলাম। পা নিচু করে কুর্নিশ করলাম।
.
–জ্বী প্রিন্সেস।(আমি)
.
–জ্যাক তুমি তাইনা?(প্রিন্সেস)
.
–আমাকে চিনলেন কিভাবে?(আমি)
.
–বাদ দাও সেটা। আগে বলো এতোদিন কোথায় ছিলে? আমরা তো শেষ খবর পেয়েছিলাম যে তুমি একটা গুহার ভিতরে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলে, আর পাওয়া যায় নি তোমাক।(প্রিন্সেস)
.
–জ্বী। আর্কাইব থেকে সেই মিশনে যাওয়ার পর আমি গুহার মধ্যে আটকা পরেছিলাম। তবে কিভাবে এতোদিন বেঁচে ছিলাম সেটা আমি নিজেও জানি না। অবশ্য ভিতরে কি হয়েছে আমি কিছুই জানি না। পুরো তিন বছর সময় আমার ঘুমের মধ্যেই কেটেছে। যখন ঘুম ভাঙলো তখন আমি গুহার মুখের কাছে ছিলাম।(আমি)
.
–ওওও। তোমার মুখ ঢাকা ছিলো, তাই প্রথমে চিনতে পারি নি। কিন্তু তোমার চোখ দুটো দেখে দূর থেকেই চিনে ফেলেছি যে তুমিই জ্যাক।(প্রিন্সেস)
.
–আমি অনেক আনন্দিত যে আপনি আমাকে দূর থেকে দেখেই চিনতে পেরেছেন।(আমি)
।।।
।।।
প্রিন্সেস এর প্রধান গার্ড চলে এসেছে এই জায়গায় তাই আমি আর কোনো কথা বললাম না প্রিন্সেস এর সাথে। এমনিতেই আমার প্রিন্সেসদের সাথে কথা বলতে অনেক বিরক্ত লাগে। শুধু প্রিন্সেস না। সকল বড়লোকের মেয়েদেরকেই আমার বিরক্ত লাগে, যারা তাদের পরিবারের ক্ষমতায় ক্ষমতাসীন থাকে। অবশ্য এখানে বিরক্ত হওয়ার ভাব নেওয়া যাবে না। নাহলে আমার মাথা যাবে।
.
–প্রিন্সেস। আপনি কার সাথে কথা বলছেন?(আখিল)
.
–ও আখিল। দেখো জ্যাক ফেরত এসেছে।(প্রিন্সেস)
.
–কি জ্যাক?(আখিল)
.
–হ্যা।(প্রিন্সেস)
.
–এটা হয়তো নকল জ্যাক হবে। জ্যাক যে গুহার মধ্যে ঢুকেছিলো সেটার মধ্যে আজ পর্যন্ত যে ঢুকেছে কেউই ফেরত আসে নি।(আখিল)
.
–কিন্তু ও সত্যিই জ্যাক। আমি বলছি।(প্রিন্সেস)
.
–ঠিক আছে জ্যাক তোমার মুখ খুলো তাহলে, আগে চেক করতে হবে।(আখিল)
।।।
।।।
।।।
আমি আর কোনো কথা বলছি না। যদিও আখিল আমাকে দেখে রেগে গেছে। তারপরও আমি আমার মুখের মাস্ক খুললাম। আর আমার চেহারা আগের মতোই আছে, শুধু বয়সের সাথে সাথে রূপের বলদ হয়েছে কিছুটা। আগে বাচ্চা বাচ্চা লাগতো, এখন প্রাপ্ত বয়স্ক লাগে। যাইহোক জেনারেলের কাছে খবরটা মুহুর্তেই চলে যায়, এবং সে সোজা চলে আসে আমার সাথে দেখা করতে। আমি বুঝতে পারলাম হয়তো জেনারেল সত্যিই আমার বাবা হতে পারে। কিন্তু তাই বলে আমি তাকে মেনে নিতে পারি না। জেনারেল আমার সাথে কথা বললো। তার কথা মতে সে আমাকে আর আর্কাইবে কাজ করতে দিবে না। সে জানে আমি শক্তিশালী হতে চাই, এজন্য সে রয়েল মিলিটারিতে একটা পদে আমাকে দিয়ে দিবে। শুধু পদটা আমাকে চেয়ে নিতে হবে। অবশ্য আমার সাথে কি হয়েছে সেটাও শুনেছে সে। আমি প্রিন্সেসকে যা বলেছি তাকেও সেটা বলে দিয়েছি। জেনারেল আমাকে পেয়ে অনেকটা খুশি হলো। কিন্তু সেটা প্রকাশ করতে পারে নি আমার সামনে।
।।।।
।।।।
আমি এবার আর লাইব্রেরীতে জায়গা নিলাম না। আমি সোজা জেনারেলের কক্ষে চলে গেলাম। এবং জেনারেলের সাথে কথা বলতে লাগলাম।
.
–স্যার।(আমি)
.
–এখানে বাবা ডাকতে পারো আমাকে।(জেনারেল)
.
–না স্যারই ঠিক আছে আমার কাছে।(আমি)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে। কিছু লাগবে? কোন পদে যোগ দিবা সেটা ভেবেছো?(জেনারেল)
.
–না স্যার। আমার মিলিটারিতে যোগ দেওয়ার কোনো ইচ্ছা নাই। আমি প্যালেসের এলিট গার্ড হতে চাই।(আমি)
.
–আমি দুঃখিত জ্যাক। কিন্তু এলিট গার্ড মূলত রাজা নিজে সিলেক্ট করে থাকেন। আর সেটার জন্য তোমাকে প্রথমে গার্ড হতে হবে। এবং কমপক্ষে রয়েল গার্ডের চারটা ব্যাজ পেতে হবে এলিট গার্ডের অ্যাপলিকেশন করতে। আমি তোমাকে রয়েল গার্ড বানিয়ে দিতে পারবো। কিন্তু সেটার জন্যও তোমার ক্ষমতা দেখাতে হবে রাজাকে। আমার কাছে শুধু মিলিটারী ক্ষমতাই রয়েছে। তাছাড়া বাকিটুকু রাজা নিজেই করে থাকেন।(জেনারেল)
.
–ওওও। আচ্ছা তাহলে আমি রয়েল গার্ডই হতে চাই।(আমি)
.
–আচ্ছা। তাহলে বিকালে আমি তোমার এক্সিবেশন ম্যাচ এর ব্যবস্থা করে দিবো। সেখানে অনেক বড় বড় লোকেরা থাকবে। সেখানে যদি কিছুটা ভালো করতে পারো, তাহলে রাজা নিশ্চয় তোমাকে রয়েল গার্ডে নিবেন। তাছাড়া আমি রাজাকে বলেও দিবো।(জেনারেল)
.
–আচ্ছা।(আমি)
।।
।।
আমি জেনারেল এর রুম থেকে বের হয়ে গেলাম। মূলত এলিট গার্ড হলো রাজার নিজের বডিগার্ড। যারা সবসময় রাজার নিরাপত্তার কাজ করে। তারা এক একজন রাজ্যের সবচেয়ে শক্তিশালীদের একজন হয়। আমি যদি এলিট গার্ড হতে পারি, তাহলে রাজাকে হত্যা করা আমার পক্ষে একদম সহজ। আমার মূল উদ্দেশ্য এখানে রাজাকে হত্যা করা। তাছাড়া আমি রাজাকে সিংহাসন থেকে নামাতে পারবো না। সৈনিকদের সবচেয়ে বড় পদই হলো জেনারেল। কিন্তু গার্ডদের সবচেয়ে বড় পদ হলো এলিট গার্ড। ধরা হয় এক একজন এলিট গার্ড জেনারেল এবং রাজার থেকেও শক্তিশালী। এলিট গার্ডের নিচে রয়েছে রয়েল গার্ড। যারা রাজার পরিবার এবং বংশের লোকদের নিরপত্তা, শিক্ষার কাজ করে থাকে। আর সবচেয়ে নিচে রয়েছে গার্ড। যারা প্যালেসের নিরাপত্তা করে থাকে। আমার শুধু গার্ড হওয়াতে কোনো লাভ হবে না। কিন্তু রয়েল গার্ডে কিছুটা সুবিধা হবে। যদি প্যালেসের মধ্যে আমার কারো জন্য কাজের ভার পরে তাহলে সবচেয়ে বেশী ভালো হবে। মূলত আমি চাচ্ছি প্যালেসের ভিতরেই থাকতে। তাতে আমাদের কাজে সুবিধা হবে। আমি কিছুটা রেস্ট নিয়ে নিলাম। কারন বিকালেই আমার এক্সিবিশন হবে। মূলত আমাকে একজনের সাথে লড়তে হবে। হার কিংবা জেতার কোনো চিন্তা নেই আমার। কারন হার কিংবা জেতার ফলে কাউকে রয়েল গার্ডে নেওয়া হয় না। যদি রাজার বংশের কেউ নিজ থেকে কাউকে পছন্দ করে এবং তাকে নিজের রয়েল গার্ড বানাতে চাই তাহলেই একজন সিলেক্ট হয়। এখানেও অনেকেই আসবে আমার লড়াই দেখতে। যদি আমাকে কারো ভালো লাগে, তাহলেই আমাকে তার রয়েল গার্ড বানাবে।
।।।
।।।
বিকালের দিক আমাকে যেতে হলো প্যালেসের পিছনের দিকে। শুধু প্যালেসের রাজার পরিবার না। বরং বাইরে থেকেও রাজার বংশের লোকেরা এসেছে। আমি জানি না আমি কার সাথে লড়বো। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে অনেক। ভ্যালি আমার ভয় অনেকটা দূর করে দিলো আমার সাথে কথা বলে।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
অপেক্ষা করুন পরবর্তী পার্টের জন্য। কেমন হলো জানাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here