#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ২০
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি আবারো গুপ্ত রাস্তা দিয়ে প্যালেসের মধ্যে ঢুকে পরলাম। অনেক রাত হয়েছে তাই আমি আমার রুমের মধ্যে গিয়ে শুয়ে পরলাম। আজকে পুরো দিনের মধ্যে ভ্যালি আর ইগড্রাসিলের কোনো কথা শুনতে পাইনি। তাই আমি হাতের ব্যান্ডেজ খুলে ফেললাম। দুজনেই ঘুমাচ্ছে, তাই ডাক দিলাম না আর। মনে হচ্ছে সারাদিনই ঘুমিয়েছে। মূলত আমি তলোয়ার দুটো না ধরলে ওরা সব সময়ই ঘুমাবে। ওদের ঘুম মুক্ত করতে হলে আমাকে তলোয়ার ব্যবহার করতে হবে। বিষয়টা ভালোই, কারন লোকজনের সামনে হঠাৎ দুজন কথা বলে উঠলে অনেকটা খারাপ হবে। আপাতোতো প্যালেসের অনেকেই জানে আমার কাছে ফায়ার ড্রাগনের অস্ত্র রয়েছে। এক্সিবেশন ম্যাচে আমার লড়াই দেখেছে তারা৷ আমার উচিত হয়নি ভিরুদাকে ব্যবহার করা। আমি চাচ্ছিলাম ভিরুদার ক্ষমতার দরকার পরবে না আমার জন্য। কিন্তু পরিস্থিতি আমার অনুকূলে ছিলো না। আপাতোতো সেই চিন্তা বাদ দিলাম। আমি ঘুমিয়ে পরলাম। ঘুম থেকে সকালে উঠলাম।
।।।
।।।
হাতের ব্যান্ডেজ কাপড় গুলো খুলে ফেলে রেখেছিলাম রাতে। আবার সেগুলো পরে নিলাম। রাতে প্যালেসে আসার সময় লাইব্রেরীর গুপ্ত রাস্তার শেষ প্রান্তে যেখানে ঔ ভুতুরে জায়গা ছিলো সেখানেই কালো জামাগুলো খুলে রেখে এসেছি। আমি প্যালেসে ঔটা নিয়ে আসতে চাই না। কারন অনেকেই সন্দেহ করবে তাতে। আমি কোনো রকমের প্রমান রাখতে চাই না। আজকেও নাস্তা করতে হলো উপরে উঠে। যে রাজাকে মারতে চাচ্ছি, তার সাথে এক টেবিলে বসে নাস্তা খেতে কেমন জানি লাগছে। তারপরও কিছুই করার নাই। আমি আজকেও প্রিন্সেস এলিহার পাশে বসে নাস্তা করছি। আর প্রিন্সেস এলিনা আবারো আমার পাশে এসে বসলো। মূলত সে কিছু বলতে চাচ্ছে আমাকে, কিন্তু বলার সাহস পাচ্ছে না হয়তো। নাস্তা শেষ হওয়ার পর, রাজা এবং জেনারেল প্যালেসের সকল গার্ডকে রাজ সিংহাসনে যেতে বলেছে। কারন কিছুটা হয়তো আমি বুঝতে পেরেছি। যাইহোক কিছু না জানার ভান করে আমরাও আদেশ মতো চলতে লাগলাম। আপাতোতো আমরা দশজন রয়েল গার্ড রয়েছি প্যালেসের মধ্যে। সকল রয়েল গার্ডদের মধ্যে ফার্ষ্ট এবং সেকেন্ড প্রিন্সেস এর রয়েল গার্ডই সবচেয়ে শক্তিশালী। আমি কয় নম্বরে আছি সেটা সঠিক বলতে পারছি না। তবে সম্মানের দিক দিয়ে আমি তৃতীয় স্থানে আছি, যেহেতু জেনারেল আমাকে ছেলে দাবী করেছেন, আর তিনি রাজ্যের একজন প্রিন্স। আর প্রিন্সের ছেলে প্রিন্সই হয় হয়তো। সেদিকে ভাবলাম না। রাজা তার থ্রোনে বসে আছে। আমরা সবাই এক হাটু গেড়ে দিয়ে রাজাকে সম্মান জানালাম। রাজার পাশে রয়েছে তার জেনারেল। জেনারেল বলতে লাগলেন।
.
–ক্যাপিটালে আপাতোতো কিছু সন্ত্রাসী দেখা দিয়েছে, যারা নিজেদের ব্লাক ড্রাগন দাবী করছে। আজকে ক্যাপিটালের পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রাজা পুরো রাজ্যের ব্যবসাকে নিয়ন্ত্রন করতো তাদেকে তাদেরই একজনের বাসায় নিষ্ঠুর ভাবে মৃত পাওয়া গেছে। আর সেখানেই সন্ত্রাসীরা তাদের মেসেজ দিয়েছে।(জেনারেল)
.
–তাহলে আমরা রয়েল গার্ডদের কি তাদের খুজে গ্রেফ্তার করতে হবে?(আখিল)
.
–না রয়েল গার্ড হিসাবে যেটা তোমাদের দায়িত্ব সেটা পালন করবে। তোমাদের একটাই কাজ সেটা হলো নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও তোমাদের যাদের গার্ড বানানো হয়েছে, তাদেরকে সুরক্ষা রাখা।(রাজা)
.
–জ্বী মাই কিং।(আমরা সকলে)
.
–এই নতুন সন্ত্রাসীদের আসল উদ্দেশ্য কি সেটা আমরা এখনো বুঝতে পারি নি। কিন্তু তাদের একশন দেখে মনে হচ্ছে তারা রাজ বংশের লোকদেরকেই প্রথমে টার্গেট করেছে, এতে তাদের কাছে প্রচুর শক্তি আছে সেটা বোঝায় যাচ্ছে। তাই আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। এরপরের এট্যাক প্যালেসেও হতে পারে।(জেনারেল)
.
–জেনারেল স্যার, আমার মনে হয় এটা পাশের দুই রাজ্যের কাজও হতে পারে। তারা হয়তো গোপন ভাবে আমাদের উপরে হামলা করছে।(আখিল)
.
–হ্যা সেটাও হতে পারে। সেটার জন্য আমরা সেই রাজ্যে বার্তা পাঠাবো। যদি তারা আমাদের রাজ্যে গুপ্ত আক্রমন করেই থাকে, তাহলে যুদ্ধে আমরাও নামবো।(জেনারেল)
.
–আমি ঠিক করেছি ফার্ষ্ট প্রিন্সেস এলিসা তার রয়েল গার্ড এবং কিছু মিলিটারী সেনা নিয়ে যাবে এ্যালকোর্টে এবং দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রিন্সেস এবং শুধু তাদের রয়েল গার্ড যাবে হিমরারে।(রাজা)
.
–জ্বী মাই কিং।(আমরা তিন রয়েল গার্ড এক সাথে বলে উঠলাম)
।।।
।।।
আমাদের কিছু করার নাই এখন। ভালো মতো তাদের আদেশ শুনে নিলাম। মূলত আমাদের এই পুরো দুনিয়াতে তিনটা রাজ্য আছে। প্রথমত ইগড্রোলিয়া যেটা আমাদের রাজ্যের নাম। ফায়ার ড্রাগন ইগড্রাসিলের নামেই নাম করা হয়েছিলো আমাদের রাজ্যের৷ এরপরে রয়েছে হিমরার এবং সবশেষে এ্যালকোর্ট। তবে অনেক লেজেন্ড রয়েছে আরো দুটো রাজ্যের। তবে ধারনা করা হয় সেটা অনেক আগেই একে অপরের সাথে যুদ্ধ করে ধ্বংস হয়ে গেছে। সেটা সম্পর্কে বিস্তারিত আমার কোনো জ্ঞান নেই। তবে এটা জানার অনেক আগ্রহ আমার। লোককথা হিসাবে বলা হয়, সেই বিলুপ্ত দুটো রাজ্যের মধ্যে একটার নাম হলো ছিলো এ্যাসাক অন্যটা আরসাক। লোককথা হিসাবে এ্যাসাকে রাজ করতো এন্জেলরা আর আরসাকে রাজ করতো ডেভিলরা। তাদের যুদ্ধ ইতিহাসের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ছিলো, আর তাদের যুদ্ধের ফলে দুই রাজ্য একসাথেই বিলুপ্ত হয়ে যায়। যাক আপাতোতো এসব কথা বাদ দিলাম। পরে এটা সম্পর্কে আমি সম্পূর্ন জ্ঞান অর্জন করবো।
।।।
।।।
আপাতোতো আমি প্যালেস থেকে বের হয়েছি শহরে বের হতে। কিছুটা কেনার উদ্দেশ্য করেই বের হয়েছি। প্রিন্সেস এলিহা আস্তে চেয়েছিলো আমার সাথে। তবে গেট থেকে তার বের হওয়া নিশেধ ছিলো। যেহেতু আমার প্রয়োজনীয় কিছু কিনতে হবে তাই, আমাকে বের হতে দিলো তারা। আমার আপাতোতো দুটো কাজ করতে হবে। এক হলো হ্যারিদের সতর্ক করে দিতে হবে একটু। কিছুদিন থাকতে পারবো না শহরে এটাও ওদেরকে জানাতে হবে। আর দ্বিতীয়ত হলো শহরের মধ্যে ব্লাক ড্রাগনের নাম কেমন ছড়িয়েছে সেটাও আমাকে লক্ষ করতে হবে।
।।।
।।।
আমি হাটতে হাটতে হ্যারিদের গলিতে চলে আসলাম। কোনো সাবধানতা না দেখিয়ে আমি সোজা আমার হাতে লেখা একটা চিঠি ওদের রাস্তার সামনে ফেলে দিলাম। একটা ছোট পাথর উপরে ভার হিসাবে রেখে দিলাম। হয়তো এটাই ওদের লক্ষ পরবে। আশা করি পরবে। আমি এখানে না থাকা সময়টুকু যদি ওরা কিছু করে তাহলে অনেক খারাপ হবে। তাই ওদের একটু সাবধান করা দরকার। বিশেষ করে আমাকেও সাবধান হতে হবে। আমি প্যালেস থেকে এভাবেই বের হয়ে ওদের সাথে দেখা করতে পারি না। চিঠিতে কিছু গোপন কোড দিয়ে আমি আমার লেখা লেখেছি, যেটা লুসি খুব সঠিকভাবে বুঝতে পারবে। আশা করছি অন্য কারো হাতে গেলে এটা হাবিযাবি একটা লেখায় হবে। আমি আমার কেনাকাটা করে আবার প্যালেসের দিকে রওনা দিলাম। কেনার মধ্যে দুটো বড় রুমাল কিনলাম মুখে মাস্ক বানানোর জন্য। এবং একটা টাইট ফুল হাতা জামা। এতে করে হাতের ড্রাগনের ছবি ঢাকা ব্যান্ডেজ কাপড় অনেকটা আটকা থাকবে। ব্যান্ডেজ কাপড় দেখতে একটু খারাপই লাগে। সহজেই ময়লা হয়ে যায়।
।।।
।।।
অবশ্য শহরে ব্লাক ড্রাগনের নামও ছড়িয়ে গেছে। জেনারেল বলেছিলো এই বিষয়টা একদম গোপন রাখা হয়েছে। কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছি আমরা যে মেয়ে কয়টাকে বাচিয়েছি, তারাই আমাদের নাম ছড়িয়ে দিয়েছে। হয়তো হ্যারি ওদেরকে আমাদের টিমের কথা বলেছে। বিষয়টা খারাপ না। আমি এটাই চাচ্ছিলাম। মূলত আমার ইচ্ছা হলো সাধারন জনগনের সাপোর্ট নেওয়া। আমি জানি প্রজাদের সাপোর্ট ফেলে আমি রাজাকে খুব সহজে সিংহাসন থেকে নামাতে পারবো। কিন্তু সেটা করতে গেলে অনেক প্রজাদের জীবন দিতে হবে। আর আমি সেটা চাই না। অনেক লাশের থেকে একটা লাশই আমার কাছে বেশী পছন্দের রাস্তা। প্রজাদের জীবন ঝুকিতে না রেখে সোজা রাজাকে মেরে ফেললেই সব সমস্যা শেষ হয়ে যায়। আমি প্যালেসের মধ্যে হাটতে হাটতে চলে আসলাম। অবশ্য প্যালেসের যানের ব্যবহার আমি করতে পারবো এখন থেকে যেহেতু আমি প্রিন্সেসের গার্ড হয়েছি। কিন্তু হাটাই আমার সবচেয়ে বেশী ভালো লাগে। তবে আমার ইচ্ছা হচ্ছে উড়ার। মানুষ হয়ে উড়ার ইচ্ছা করাটা বোকামি। কারন ডানা ছাড়া কেউই উড়তে পারে না। যেসব গোত্রের ডানা আছে তারা অনেক ভাগ্যমান। মূলত হ্যারি, লুসি লুসানা সবারই ডানা আছে। আবার প্রিন্সেস এলিহারও ডানা রয়েছে। তবে আমি মানুষ বলে আমার ডানা নেই।
।।।
।।।
আমাদের সময় হয়ে গেলো হিমরারে যাওয়ার জন্য। আমাদের একটা ভালো যানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। মূলত যানটা সেরকমই যেটাই করে প্রথম আমি প্যালেসে এসেছিলাম। তবে সেটার থেকে অনেক উন্নত। ভিতরে অনেকটা জায়গা রয়েছে। খাওয়ার টেবিল রয়েছে ছোট একটা এবং বসার জন্য চারটা সোফার মতো রয়েছে, যেগুলোতে আমরা শুতেও পারবো। সবচেয়ে ভালো বিষয় এই যানের হলো বাইরের সব কিছু একদম প্রতিটা দিক দিয়েই পরিস্কার দেখা যায়। ভিতর থেকে মনে হবে যানের কোনো দেওয়ালই নেই। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম এটা হয়তো কাচের মতো কোনো বস্তু দিয়ো তৈরী হবে, কিন্তু সেটা হলে সামনের দিকে আমরা চালকের জায়গা দেখতে পেতাম, কিন্তু সেটা দেখা যায় না। মূলত এই যানটা ম্যাজিকের মাধ্যমে চলে, আর এটার মধ্যে ম্যাজিকাল আয়না ব্যবহার করা হয়েছে, যেটা চোখের মতো বাইরের সকল দৃশ্য কপি করে ভিতরে আমাদের দেখাবে। বলতে গেলে এই যানেরই চোখ রয়েছে চারিদিক দিয়ে। এবং সেটা আমরা ভিতরে দেখতে পারি। এই যান প্রথম হিমরারের ডয়ারফসদের মাধ্যমেই তৈরী হয়েছিলো। পরে হিমরারের সাথে একটা চুক্তিতে এই পদ্ধতি আমাদের রাজ্যেও আনা হয়। যানের স্পিড অনেক হলেও আমাদের সময় লাগবে অনেক হিমরার পৌছাতে। হয়তো দুইদিনের মতো সময় লাগবে। কারন অনেকগুলো শহর আমাদের পারি দিতে হবে। একবার হিমরারের বর্ডারে যেতে পারলে আমরা সেখান থেকে তাদের লোকদের সাহায্যে হিমরারের ক্যাপিটালে টেলিপোর্ট হয়ে যেতে পারবো। পুরো রাস্তা প্রিন্সেস এলিনার রয়েল গার্ড আখিল ঘুমিয়ে ছিলো। সে নাকি যানে উঠলে ঘুম আটকাতে পারে না। আর প্রিন্সেস এলিহা পুরো রাস্তা বমি করতে করতে শেষ হয়ে গেছে। সেও যানে বেশীক্ষন থাকতে পারে না। তার বমি আছে। আর আমি আমার পড়া সকল বইগুলো মনে করতে করতে রাস্তা পার করেছি। আর এদিকে প্রিন্সেস এলিনা পুরো রাস্তা শুধু আমার দিকে তাকিয়েই ছিলো। অনেকটা অস্বস্তি লেগেছে। আমিও ঘুমাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা করতে পারি নি, কারন দুজন গার্ড একসাথে ঘুমালে কিছুটা খারাপ হতেও পারে। তাই পুরে রাস্তা আমাক অস্বস্তির সাথে যেতে হলো। পুরো একদিনের ক্লান্তমাখা যাত্রার পরে আমরা পৌছে গেলাম হিমরারের বর্ডার। তারা আমাদের আসার বার্তা আগেই পেয়েছিলো। তাই আমাদের যানকে সোজা ক্যাপিটালে টেলিপোর্ট করে দিলো। এখান থেকে আমাদের হিমরারের প্যালেসে যেতে হবে।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলব)))
।
।।
।।।
।।।।
মাথা ব্যথা করছে। তাই বেশী লিখতে পারি নি। আশা করি কালকে একটু বড় করবো।