ভ্যাম্পায়ার_কুইন# #সিজন_2# পর্বঃ২৫

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ২৫
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
যুদ্ধক্ষেত্র অনেক মারাত্মক রূপ নিয়েছে। আমি আশেপাশের সবার ম্যাজিক এনার্জি দেখে পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম। আমি কোনোদিনই এতো ম্যাজিক পাওয়ার কারোর মধ্যেই দেখি নি। প্রিন্সেস এলিনার টা বেশী হলেও স্বাভাবিক। কিন্তু মাত্র এখানে আসা এন্জেল এবং ডেভিলের পাওয়ার লেভেল অনেকটা মারাত্মক। একটা সময় ছিলো যখন আমি মানতাম এন্জেলরা আমাদের সাথেই বাকি গোত্রের মতো বসবাস করে, তার আগে কি ভাবতাম সেটা আমি মনে করতে পারছি না। কিন্তু প্যালেসে ঢুকার পর থেকেই আমি জেনেছি কোনো এন্জেলই আমাদের সাথে বসবাস করে না। বরং এরা অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কিন্তু হঠাৎ তারা কোথা থেকে আসলো সেটা বুঝতে পারছি না। আরেক কথা হলে ডেভিলরা মূলত এতো শক্তিশালী ম্যাজিক পাওয়ার তাদের সাথে বহন করে না, কারন হ্যারিও ডেভিল, তাছাড়া আমি অনেক ডেভিল দেখেছি যাদের মধ্য থেকে এরকম মারাত্মক ম্যাজিক পাওয়ার বের হয় না। এখানে যেসব ডেভিল রয়েছে তাদের ম্যাজিক পাওয়ারের সংস্পর্শে আসলে বমি চলে আসতে চাই। অনেকটা সিনিস্টার ধরনের ফিলিংস হয় তাদের ম্যাজিক পাওয়ারের সংস্পর্শে এসে।
।।।
।।।
এন্জেল মেয়েটার পিঠের মধ্য দিয়ে তলোয়ার ঢুকে গেলোও সে ঠিক মতো প্রথমে চারজনের ক্ষত হিল করে দিলো। এরপর তার চার ডানার মধ্যে একটা ডানা তলোয়ারটা তার পিঠ থেকে বের করে দিলো। কিছুটা ব্যথা তো পেয়েছে সেটা বোঝায় যাচ্ছে। তবে সাথে সাথে তার ক্ষত ঠিক হয়ে গেলো। আমি দাড়িয়ে আছি। কিছুই করতে পারছি না আমি। শুধু আমি নই আমার সাথে হ্যারি, লুসি এবং লুসানাও কিছুই করতে পারছে না। তবে প্রিন্সেস এলিনা তার ভ্যাম্পায়ার ফর্মে দাড়িয়ে আছে আমাদের সামনে। এক কথায় সেই আমাদের গার্ড দিচ্ছে এখন। আমি কখনো ভাবতে পারি নি এমন কোনো পরিস্থিতে আমি পরবো। আমি এমনি সময় মৃত্যুকে ভয় পেতাম না। তবে কেনো জানি না এই ডেভিলদের ম্যাজিক পাওয়ার আমার মনে মৃত্যুর ভয় নিয়ে এসেছে। আমার শুধু এখন এখান থেকে পালিয়ে যেতে মন চাচ্ছে। আমি প্রিন্সেসকে বলতে লাগলাম।
.
–প্রিন্সেস আমাদের আর এখানে থাকা ঠিক হবে না। এখানে পরিস্থিতি আমাদের হাতের বাইরে চলে গেছে।(আমি)
.
–হ্যা পরিস্থিতি আমাদের হাতের বাইরে চলে গেছে সেটা আমিও বুঝতে পারছি। এই পুরো বন জুড়ে একটা ম্যাজিকাল ব্যারিয়ার বানিয়ে রাখা হয়েছে, এর কারনে আমি টেলিপোর্ট ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারবো না।(প্রিন্সেস)
.
–তাহলে তো এখন আমরা এখানেই মারা যাবো।(আমি)
.
–আমি ভাবতে পারছি না, নিজেদের ব্লাক ড্রাগন বলো, জনগনের হকের জন্য লড়ো, আর একটু প্রতিকূল পরিবেশে এই তোমাদের হাল। আমি বিশেষ করে জ্যাকের কাছ থেকে এটা আশা করি নি, যে কিনা আমার গার্ড আপাতোতো।(প্রিন্সেস)
।।।
।।।
প্রিন্সেসের কথাটা সঠিক। কিন্তু আমি নিজের হাটু কন্ট্রোল করতে পারছি না। দুটো শুধু কেপেই যাচ্ছে। আমার শরীর বুঝতে পেরেছে এটা আমার লড়াই করার মতো জায়গা না। কিন্তু তারপরও আমাকে প্রিন্সেসকে সুরক্ষা রাখতে হবে। সেটার জন্য জীবন যাক তাতে সমস্যা নাই। আমাকে শুধু এটা খেয়াল রাখতে হবে আমার বন্ধুরা এবং প্রিন্সেস সঠিক ভাবে এখান থেকে চলে যেতে পারে।
।।।
।।।
উপরের লড়াইও বেশ ভয়ানক হচ্ছে। এন্জেল মেয়েটা ডেভিলটাকে বেশ ভালো টক্কর দিচ্ছে। ডেভিলটা এন্জেল মেয়েটাকে রানী বলে সম্মোহিত করেছিলো। হয়তো এন্জেলদের রানী বলে তার পাওয়ারও বেশী। সে একটা তলোয়ার নিয়ে কাছাকাছি ডেভিলটার সাথে লড়তে ছিলো। শুধু তাই নই, রানী মাঝে মাঝে তার ডানা থেকে কিছু আলোর মতো ছুড়ে মারছিলো, সেগুলো দেখতে অনেকটা ছোট বলের মতোই, তবে অনেক গুরুতর আঘাত করছিলো সেটা বুঝতে পেরেছি। ডেভিলটা রানীর সাথে লড়তে লড়তে অনেকটা ক্লান্ত হয়ে যায়, যার ফলে সে প্রায় হারার পথেই ছিলো। এন্জেল রানী তার তলোয়ার দিয়ে ডেভিলটার পেটে আঘাত করবে এমন সময় ডেভিলটার পাশে কালো ঘূর্নিঝড়ের মতো কিছু একটা দেখা গেলো। যেখান থেকে আরো দুজন ডেভিল বের হয়ে আসলো, একটা ছেলে ডেভিল এবং আরেকটা মেয়ে। মেয়েটা মাস্ক পরা থাকলেও ছেলেটার কোনো মাস্ক নেই। কোনো মাস্ক না থাকার ফলেও আমি তার চেহারা দেখতে পেলাম না। এমনিতে সামনে এন্জেল ছিলো, রাতের সময় তাদের ডানা এতো উজ্জল আলো দেই যে সামনে সব কিছু দেখা যায়। কিন্তু সেই উজ্জল আলোতেও লোকটার চেহারা দেখতে পেলাম না। তার চেহারার ঔখানে একদম কালো হয়ে আছে। হয়তো কোনো ম্যাজিকাল হুড পরেছে, যার কারনে দেখা যাচ্ছে না। লোকটা আসার পর আমাদের পা কাঁপা আরো বেড়ে গেলো। একটা কালো রঙের বিচ্ছিরী ম্যাজিক পাওয়ার বের হচ্ছিলো তার শরীর থেকে, যেটা আমাদের ভয় আরো বারিয়ে দিলো। কয়েক সেকেন্ডেই আমরা আর দাড়িয়ে থাকতে পারলাম না। আমাদের হাটুতে ভর করে বাসে থাকতে হলো। এই নতুন ছেলে ডেভিলটা কে আমি জানি না, কিন্তু এর ম্যাজিক পাওয়ার মোটেও সুবিধার না। তার কোনো ডানা নেই পিঠে, তারপরও সে উড়ছে আকাশে। লোকটা বলতে লাগলো,
.
–তাহলে এন্জেল কুইন মাটিতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেই। বেশ ভালো হলো, আজ আমাদের মধ্যের সকল লড়াই শেষ হয়ে যাবে।(লোকটা)
.
–ডেভিল কিং আইরাফ, আপনি চুক্তি করেছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে আর কোনো যুদ্ধ করবেন না। এন্জেল এবং ডেভিল সম্পূর্ন আলাদা থাকবে। কিন্তু হঠাৎ সেটা ভাঙছেন কেনো?(এন্জেল রানী)
।।।
।।।
এন্জেল রানীর মুখে ডেভিল কিং নামটা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম। আর সে যে ডেভিল কিং আইরাফ সেটার কথা শুনে হতবাক হলাম। ডেভিল কিং আইরাফের সম্পর্কে অনেক বইয়ে লেখা আছে। তাকে ডেভিল রাজ্য আরশাক বিলুপ্ত হওয়ার সময়ে সবচেয়ে শক্তিশালী রাজা হিসাবে গন্য করা হতো। কিন্তু সে এতোবছর বেঁচে থাকবে এটা কেউ ভাবে না। অনেক রহস্য রয়েছে এর মাঝে। আমি জানি হা সেগুলো জানার জন্য আমি বেচে থাকবো কিনা।
।।।
।।।
আহত ডেভিলটা নতুন মাস্ক পরা যে মেয়েটা এসেছে তার কাধে রয়েছে। ডান হাত দিয়ে সে হিল করে দিচ্ছে।
.
–তো আজ এন্জেলদের সব কাহিনী শেষ করে দেওয়া যাক, তোমাকে একটা সুযোগ দিবো আমি বাচার, যদি এ্যাসাকে যাওয়ার রাস্তা আমাকে বলে দাও।(ডেভিল কিং)
.
–সেটা কখনোই না।(এন্জেল রানী)
.
–কোনো ব্যাপার না। এমনিতেও তোমাকে আমার ভালো লেগেছে, আমি ভাবি নি এন্জেল রানী এতো সুন্দরী হবে। আমি তোমাকে আমার রানী বানিয়ে দিবো সমস্যা নেই।(ডেভিল কিং)
।।।
।।।
এন্জেল রানী রাগে ডেভিল কিং এর উপরে আক্রমন করতে লাগলে, প্রথমেই ছেট একটা লাইট বল ব্যবহার করলো যেটা অনেকটা ছোট ছিলে, তবে ডেভিল কিং সেটা হাত দিয়ে ঠাপ্পর মেরে অন্য দিকে ফেলে দেই, পাশে থাকা অনেকটা বন পুরো ধ্বংস হয়ে যায় সেই আঘাতে। আমি ভাবিও নি এতো ছোট একটা লাইট বল এতো গুরুতর কিছু করবে। এবার রানী সোজা তলোয়ার নিয়ে ডেভিল কিং এর উপরে হামলা করতে গেলো। কিন্তু সে এক হাত দিয়ে তলোয়ারটা ধরে ফেললো, এবং সেটার ব্লেড ভেঙে ফেললো। আর একটা আঙ্গুলের টোকা মারলো, যার আঘাতে এন্জেল রানী স্পিডে আমাদের দিকে পরতে চাইলো। এতোক্ষনে বাকি চারজন এন্জেলকে ঔ নতুন মাস্ক পরা মেয়ে ডেভিলটা মেরে ফেলেছে। শুধু বেঁচে আছে এন্জেল রানী। রানী উড়তে উড়তে ঠিক আমাদের দিকে চলে আসলো। এতো স্পিডে এসেছে যে আমরা নরার সুযোগও পাই নি। প্রিন্সেস একটু সরে গেলো আমাদের চারজনের উপরে এসে পরলো রানী। রানীর ডানার আঘাতে এবং তার নিচে পরার স্পিডে আমরা অনেক গুুরুতর আহত হলাম। আমার ডান পা ভেঙে গেছে, হ্যারির দুই পায়ে মোচড় এসেছে, এবং অনেক রক্ত বের হচ্ছে মাথা দিয়ে, লুসির ডান এবং লুসানার বাম হাত ভেঙে গেছে। এন্জেল রানী আহত হলেও উঠে দাড়ালো। সে আমাদেরকে হিল করতে চাইলো। তার শরীরেও অনেক ক্ষত হয়েছে, যেটা অনেক আস্তে আস্তে হিল হচ্ছে। এন্জেল রানী বলতে লাগলো,
.
–এই জায়গাটা আপনাদের জন্য সুরক্ষিত না আর। আপনারা এখান থেকে চলে যান শীঘ্রই। ডেভিল কিং অনেক শক্তিশালী।(এন্জেল রানী)
.
–আমরা পারলে যেতামই, সারা বন দিয়ে একটু আগে একটা ব্যারিয়ার ছিলো। কিন্তু এখন দুটো হয়ে গেছে। এই বনের বাইরে এখন কেউই যেতে পারবে না।(প্রিন্সেস)
.
–আমি আপনাদের হিল করে দিচ্ছি, আপনারা এই জায়গা থেকে এই সময়ের জন্য আপাতোতো চলে যান।(এন্জেল রানী)
।।
।।
ডেভিল কিং উড়ে একটু নিচে এসে বলতে লাগলো,
.
–বাহ এখানে একজন ভ্যাম্পায়ার, দুজন ফেইরী, একজন ডেভিল এবং একজন দুর্বল মানুষও আছে। যাক অনেকদিন হলো আমার কোনো বড় স্পেল ব্যবহার করি না। আজকে টেস্ট করে দেখা যাক।(ডেভিল কিং)
।।।
।।।
ডেভিল কিং তাদের আঙ্গুল আমাদের দিকে ইশারা করলো। তার হাত থেকে চিকন একটা ডার্ক ম্যাজিক বিম বের হলো। যেটা আমাদর দিকেই আসছে। রানী আমাদের হিল করার চিন্তা বাদ দিয়ে আমাদের বাচানোর চিন্তা করলো। সে একটা ঢাল বানিয়ে দিলো আমাদের সবার সামনে। কিন্তু সে ঢাল ম্যাজিক বিমকে থামাতে পারলো না। সেটা ঢালটা ভেঙে রানী বুক ভেদ করে বের হয়। আমি বিম দেখেই উঠে প্রিন্সেসের সামনে এসে দাড়িয়ে যায়, যাতে তার কোনো ক্ষতি না হয়। দুই হাতে আমার দুই তলোয়ার নিয়ে আমি সামনে দিকে ধরলাম, কিন্তু ম্যাজিক বিমের পাওয়ার এতোই যে আমার তলোয়ার দুটোর ব্লেড ফুটো হয়ে গেলো। এবং আমার বুক বরাবর ভেদ করে সেটা প্রিন্সেস এর বুকে লাগলো। বিমটা শুধু আমাদের শরীর ফুটো করলো না। বরং আমাদের শরীরের সকল ম্যাজিক পাওয়ারও চুষে নিলো। যার কারনে আমরা সবাই পাওয়ার লেশ হয়ে গেলাম। প্রিন্সেস এর পিছনে হ্যারি, লুসি এবং লুসানা ছিলো। ওদের শরীরেও এই ম্যাজিক বিম লেগেছে। বিমটা ঠিক আমর হৃদপিন্ড বরাবর লেগেছে, যেটা আমি খেয়াল করি নি। আমি পিছনে ফিরে দেখলাম প্রিন্সেসকে। তার পেটের ক্ষত ঠিক হচ্ছে না। এন্জেল রানীর শরীরও হিল হচ্ছে না। কারন কারো শরীরের মধ্যে এখন ম্যাজিক পাওয়ার নেই। আমি এরকম কখনো ফিল করি নি, প্রিন্সেস আমার ব্যথায় থাকলেও আমার দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো। আর সাথে সাথে বেহুশ হয়ে গেলো। তার চেহারা দেখে আমার হার্টবিট আর বারছে না। বরং এটা একদম থেমে গেছে। আমার শরীর শীতল হয়ে গেলো সাথে সাথে। হৃদপিন্ডের কম্পন বন্ধন হয়ে গেছে। হার্ট ফুটো হলে হয়তো এটাই হয়। আমার দম আটকে গেলো। চারিদিক অন্ধকার হয়ে গেলো। আশেপাশের সকল শব্দ আমার কানে আসা বন্ধ হয়ে গেলো। আমি কিছু দেখতে পারছি না আর, সমস্ত কিছু নিরব আমার কাছে। আমি কোথায় আছি সেটাও বুঝতে পারছি না। মনে হচ্ছে আমি মারা গিয়েছি, আর পরবর্তী জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছি এখন।
।।।
।।।
হঠাৎ আমি সামনে আলো দেখতে পেলাম। একটা ছোট দরজার মতো মনে হচ্ছে, যেটার বাইরে থেকে আলো দেখা দিচ্ছে। আমি দৌড়ে যে লাগলাম সেদিকে। অনেক দৌড়িয়েও আমি সেখানে পৌছাতে পারছি না। দেখে মনে হচ্ছে কতো কাছে, কিন্তু যতই দৌড়াচ্ছি দূরত্ব এক রকমই থাকছে।
।।।
।।।
দৌড়াতে দৌড়াতে কতক্ষন হয়েছে আমি জানি , কিন্তু যা কিছু মনে আছে, তাতে বলতে পারি আমি শুধু দৌড়িয়েই যাচ্ছি, ক্লান্ত হচ্ছি না, ঘামছি না, ক্ষুদা লাগছে না। তবে দৌড়িয়েই যাচ্ছি। আমার মাথার সমস্ত কিছু মুছে গেছে। যেসব চিন্তা ভাবনা ছিলো, সব কিছু ভুলে গেছি আমি। এখন শুধু একটা গন্তব্য আমার কাছে, সেটা হলো এই কালো অন্ধকার থেকে বের হওয়া। কিন্তু আমি ঔ দরজা পর্যন্ত যেতে পারছি না। কতটা সময় হয়েছে আমার এরকম দৌড়ানোর তা আমি নিজেও জানি না। কিন্তু হঠাৎ একটা শব্দ শুনতে পেলাম আমি,
.
–সাহায্য লাগবে দরজা পার হতে? আমি সাহায্য করবো সমস্যা নেই, শুধু বলো একবার।(অজানা একটা শব্দ)
.
–হ্যা।(আমি)
।।।
।।।
হঠাৎ আমি দৌড়িয়ে পৌছে গেলাম দরজার কাছে। এবং পার হলাম সেটা। দরজার বাইরে অনেক সুদর একটা পরিবেশ। অনেক বিশাল একটা জায়গা, তবে আমার ফোকাস যাচ্ছে সামনের একটা পুকুরের দিকে, পাশে দুটো গাছ রয়েছে। এবং গাছের উপরে দুজন বসে আছে। একজনের দাঁত দেখে বুঝতে পারলাম সে একজন ভ্যাম্পায়ার। এবং আরেকজনের সম্পর্কে আমি সঠিক ধারনা করতে পারছি না। তবে মানুষের মতোই লাগছে। তাদের কাছে গিয়ে তাদের চেহারা ভালো করে দেখতে পেয়ে আমি অবাক। দৌড়ানোর ফলে আমি আমার নিজের চেহারায় ভুলে গেছি, তারা দুজন দেখতে ঠিক আমারই মতো। কেউ দেখলে হয়তো বলবে আমরা ত্রিমজ ভাই। যাইহোক আমি অনেক অবাক হয়ে গেলাম। আমি কিছু বলবো তার আগেই ওরা বলতে লাগলো,
.
–হাই, অবাক হয়ে লাভ নেই। আমরা তোমার শরীরেরই একটা অংশ। তবে আলাদা একটা জায়গায় বন্ধি। বাদ দাও এতো কথা আপাতোতো তোমার মাথায় যাবে না।(ভ্যাম্পায়ার)
.
–ও ভ্যাম্পায়ার তুমি, এবং আমি ডিম্যান তুমি। পরিচয়টা একটু কনফিউজিং,কিন্তু কিছু করার নেই। যাইহোক আসল কথায় আসা যাক।(ডিম্যান)
.
–আমি কি স্বপ্ন দেখছি এগুলো?(আমি)
.
–না, কিন্তু অনেকটা স্বপ্নের মতোই। আমরা যে জায়গায় আছি এটা স্বপ্নের দুনিয়ার একটা অংশ, যেটার একটা বিশাল দুনিয়া ছিলো এক সময়, কিন্তু এখন আপাতোতো অনেক অংশে ভাগ হয়ে গেছে, কিছু পানির নিচে, কিছু বইয়ের ভিতরে, আবার কিছু গুহার ভিতরে।(ভ্যাম্পায়ার)
.
–ভ্যাম্পায়ার আমি এগুলো ও পরেও জানতে পারবে। আগে আসল কথা বলো ওকে।(ডিম্যান)
.
–ও হ্যা। ও আসল আমি, শুনো কতক্ষন দৌড়িয়েছো সেটা কি বলতে পারবে?(ভ্যাম্পায়ার)
.
–হয়তো আধা দিন।(আমি)
.
–ভুল। তুমি ঔ অন্ধকারে পুরো এক হাজার বছর দৌড়িয়েছো, যেটা তুমি নিজেই বুঝতে পারো নি। অবশ্য জায়গাটাই এমন। কিভাবে সময় কেটে যায় সেটা কেউই জানে হা।(ডিম্যান)
.
–এক হাজার বছর? আমি এখন সত্যিই মানছি আমি মারা গিয়েছি, এবং স্বপ্ন দেখছি।(আমি)
.
–আরে শুনো তো আমার কথা আসল আমি।(ভ্যাম্পায়ার)
।।।
।।।
আমি নিজের সাথেই কথা বলতে লাগলাম। আর দুজন বিরক্ত হয়ে আর কোনো কথায় বললো না। আমার কপালে হাত দিলো এবং দুজনই আলো হয়ে গেলো। এবং সেই আলো আমার শরীরের মধ্যে ঢুকে গেলো। একটা শব্দ শুনলাম শুধু,
.
–আমাদের মধ্যে থাকা সকল স্মৃতি তোমার মধ্যে চলে যাবে। আর আমাদের যা বলার ছিলো হয়তো তখন নিজেই জানতে পারবে।(দুজন একসাথে)
।।।
।।।
তাদের আলো আমার শরীরে প্রবেশ করার পর চারিদিক আলোকিত হতে শুরু করলো। আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। আমার মাথা ঘুরছিলো শুধু। মনে হচ্ছিলো নতুন অনেক স্মৃতি আমার মাথায় যুক্ত হচ্ছিলো, যেগুলো আগে আমার অজানা ছিলো। হঠাৎ আবার সব কিছু থেমে গেলো।
।।।।
।।।।
আমি দাড়িয়ে গেলাম। হৃদপিন্ড আমার ফুটো হয়ে গেছে। যেটা দিয়ে চুপ চুপ করে রক্ত বের হচ্ছে। আমার কাছে অনেকটা আলাদা লাগছে এখন। সকল স্মৃতি সম্পূর্ন আসে নি আমার কাছে। কিন্তু আমি কিছু কিছু ঠিকই মনে করতে পারছি। আমি কে ছিলাম, আর কি আমি।
.
–টাইম লুপ।(আমি হঠাৎ একটা স্পেল ব্যবহার করলাম)
।।।
।।।
আমি একটা সময়ের ম্যাজিক ব্যবহার করলাম। যেটা অনেক ভয়ঙ্কর। স্পেলের নাম টাইম লুপ। এটা সময়কে এক মিনিট পিছিয়ে দেই। আর এখনো সেটাই হলো। ডেভিল কিং তার আঙ্গুল দিয়ে আমাদের উপরে বিম ফায়ার করবে, ঠিক তখনি আমার পিঠ থেকে পুরো একশো হাত বের হয়ে গেলো। যেগুলো এখন পুরোপুরি আমার নিয়ন্ত্রনে। আমি হাতগুলো পরাপর একসাথে করে দিলাম। যাতে সেগুলো একটা ঢালের ব্যবস্থা করে দিতে পারে। এবং সেটাই হলো। বিমটা শক্তিশালী হলেও আমার হাতের ঢাল সেটাকে আটকে দিলো। যেহেতু এটার কাজই হলো, যেকোনো আঘাত আটকিয়ে সেটাকে দ্বিগুন করে দেওয়া তাই তার সেই ম্যাজিক বিমই আমার পুরো একশোটা হাত তার দিকেই ফেরত দিলো। পুরো একশোটা বিম তার দিকেই ফায়ার হচ্ছে। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো তাতে তার কাজ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু একশোটা বিম তার উপর তার থেকে দ্বিগুন পাওয়ারের হওয়ার পরও তার শরীরে লাগার আগেই সেগুলো উধাও হয়ে গেলো, এবং তার শরীরের পিছন থেকে দৃশ্যমান হয়ে বের হয়ে গেলো। আমার মনে হচ্ছে সে সবগুলো বিমকে টেলিপোর্ট করে দিয়েছে। আমাকে বলতে লাগলো,
.
–আমি এরকম আশা করি নি। আজকের মতো আমি চলে যাচ্ছি। কিন্তু দেখা হবে শীঘ্রই।(ডেভিল কিং)
।।।
।।।
ডেভিল কিং এবং তার সাথে থাকা দুইজন মেয়ে চলো গেলো। আমি দুটো মেয়ের শরীর থেকেই পরিচিত ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পেলাম। বুঝতে পারলাম না তারা কে? কিন্তু চেনা কেউ হবে। আমি একটা ফায়ার স্পেল তাদের দিকে মারতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেটা ট্রাই করলাম না। সেটা ট্রাই করলে এখন বিষয় টা অনেক আজব হয়ে যাবে। কারন আমার মাথার মধ্যে এমন কিছু স্মৃতি আছে, যেগুলো হয়তো এই দুনিয়াতে আমার কাছে না আসলেই ভালো হতো। তারপরও আমি কনফিউজড এখন। আমি কোন পরিচয়ে থাকবো সেটাই বুঝতে পারছি না, জ্যাকসন নাকি জ্যাকসন ব্রিট?
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
সবার বোঝার জন্য আমি একটু ভেঙে দিচ্ছি এখনি, ম্যাজিক বিমটার আঘাতে জ্যাকের ব্যাগে থাকা দুটো বইয়ের যে লক ছিলো, সেটা ভেঙে যায়। আর জ্যাকের মৃত্যুর আগেই সে বইয়ের ভিতরে প্রবেশ করে, যেহেতু দুটো বই একসাথে খুলেছে, তাই দুটো বইয়ের জায়গা একসাথে মিলিত হয়েছে, এবং বই দুটোর মধ্যে কারা ছিলো তা তো বুঝতেই পারছেন। কেমন লাগলো আশা করি জানাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here