ভ্যাম্পায়ার_কুইন# #সিজন_2# পর্বঃ৩৩

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৩৩
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী

.
চারজন মিলে লুডু খেলছিলো, তবে আমি সেটা বন্ধ করে দিলাম৷ থর এবং ড্রাকুলা দুজনে জানালা দিয়ে প্যালেসের উপর থেকে লাফ দিলো৷ আমি এতোক্ষন ড্রাকুলার গ্রাভিটি কন্ট্রোল থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছিলাম, তবে মুক্ত হতে পারি নি, ড্রাকুলা নিজে আমাকে মুক্ত করার পর আমি উঠতে পেরেছি। ড্রাকুলার ক্ষমতা এতো হবে সেটা আমি বুঝতে পারি নি। আমি থরের কথা শুনে বুঝতে পেরেছি তারা কিভাবে এখানে আটকা পরেছিলো। দুনিয়া ধ্বংস হওয়ার আগেই থর এর মিওনির থর এর হাতে চলে আসে। এবং মিওনির তাকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো। তখন লোকি থরকে হত্যার উদ্দেশ্যে থরের বাম হাত জড়িয়ে ধরে। থর তার ডান হাত দিয়ে মিওনির ধরে ছিলো, যেটা তাকে অচেনা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছিলো। আলোর স্পিডে মিওনির তাকে এবং লোকিকে সোজা লিম্বো ডাইমেনশনে নিয়ে যায়। আর তারপরেই তারা এখানে আটকা পরে যায়। বাইরের সম্পর্কে তাদের কোনো জ্ঞানই নেই৷ আমিই তাদেরকে বাইরের দুনিয়া সম্পর্কে বলেছি। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো এই যে প্যালেস এটা কোনো প্যালেস না, বরং এটা ইংল্যান্ডের একটা হোটেল। যেটার মালিক ড্রাকুলা। ড্রাকুলার হোটেলের নাম ট্রান্সেলভেনিয়া। তবে একটা দাবা খেলায় সে থরের সাথে হেরে যায়, যার জন্য তার হোটেলের নাম চেন্জ করে এজগার্ড রেখে দেই থর। যাইহোক ড্রাকুলা এই দুনিয়া ধ্বংসের অনেকটা আগেই বুঝতে পেরেছিলো কিছু একটা খারাপ জিনিস হবে, তাই সে তার পুরো হোটেলকে লিম্বো ডাইমেনশনে নিয়ে আসে। তার হোটেলে এরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে, যার কারনে কোনোদিনও খাবারের অভাব হবে না। খাবার কোনোদিন নষ্টও হবে না। আর হোটেলের চারিদিক দিয়ে একটা সুরক্ষা ব্যারিয়ার রয়েছে যেটার কারনে এই হোটেল পুরোপুরি পৃথিবীর আবহাওয়ার মতো ব্যারিয়ারের ভিতরে।
.
–আপনি যাবেন না?(আমি লোকিকে জিজ্ঞেস করলাম)
.
–আমার এসবে কোনো আগ্রহ নেই। আমি তো শুধু থরকে মেরে এজগার্ডে বসার প্লান করছি।(লোকি)
.
–তাহলে এতোদিন চেষ্টা করেন নি?(আমি)
.
–অনেক চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু ড্রাকুলার জন্য লোকির একটা প্লান ও কাজে দেই নি, সব কিছু ড্রাকুলা আগেই বুঝতে পারতো লোকির মাইন্ড পরে।(আমার ডেভিল সত্ত্বা)
.
–ওয়াও।(আমি)
.
–এই পৃথিবীর গেম গুলোও অনেক কষ্টের। কত বছর যাবৎ আমি এটা খেললাম, তারপরও ভালো করে শিখতে পারলাম না। আমাকে বের করতে হবে, কিভাবে আমি থরকে এই গেম গুলোতে হারিয়ে এজগার্ডের সিংহাসনে বসতে পারি।(লোকি)
।।।
।।।
বুঝতে পারলাম সময়ের সাথে সব বদলাতে পারে তবে লোকি কখনো বদলাবে না। যাইহোক যে রাস্তা দিয়ে থর এবং ড্রাকুলা বের হলো আমিও ঝাপ দিলাম। জানালার উপর থেকে যে এতো নিচু হবে সেটা বুঝতে পারি নি আমি। ড্রাকুলা তো ডানা ছাড়াই উরছে। আর থর মিওনির হাতে নিচে দাড়িয়ে আছি। এই হোটেলের মাঝখানে অনেকটা খোলা জায়গা আছে। নিচে লড়াই, ট্রেনিং করার মতো জায়গা বানিয়ে রেখেছে। আমি যেখান থেকে ঝাপ দিয়েছি সেটা নিচ থেকে প্রায় বিশ তলা বিল্ডিং এর সমান হবে। নিচে পরলে শরীরের কয়টা হাড় ভাঙবে আমি সেটা হিসাব করতে করতেই পরছিলাম। ডানা থাকলে হয়তো একটু সুবিধা হতো আমার। আর এক তলা নিচে ফ্লোর তখনি ড্রাকুলা তার গ্রাভিটি কন্ট্রোল দিয়ে আমাকে হাওয়ার মধ্যে ভাসমান করে দিলো। আমার আশে পাশে জিরো গ্রাভিটি হয়ে গেলো। আমি একটু স্বস্তি ফিরে পেলাম। তবে বেঁচে গেছি এটা আশা করলেও ড্রাকুলা আমার শরীরের গ্রাভিটি দশগুন বাড়িয়ে দিলো। পুরো একটা রকেট এর মতো আমি উপর থেকে নিচে পরতে লাগলাম। সাধারন ভাবে পরলে হয়তো কিছু হতো না। কিন্তু গ্রাভিটি বেড়ে যাওয়ার জন্য নিচে পরার সাথে সাথে বিশ মিটারের বেশী জায়গা গর্ত হয়ে যায়। আমার শরীরে মারাত্মক ক্ষত হয়। পুরো শরীরে কয়টা হাড় ভেঙেছে সেটা আমি বলতেই পারবো না। তবে আমি নরতেও পারছি না। আমার হিলিং ক্ষমতা কিছুই করতে পারছে না। পুরো শরীর অবশ হয়ে গেছে। হঠাৎ ড্রাকুলা বলতে লাগলো
.
–এটা আমার পৃথিবী ধ্বংস করার জন্য। মানুষ বলে জীবনে বেচে গেলে, নাহলে যদি অন্য কোনো মনস্টার হতে তুমি, তাহলে আমি এখনি মেরে ফেলতাম তোমাকে।(ড্রাকুলা)
.
–আমি কি করেছি?(আমি)
.
–কিছু করোনি বলেই তো। কিছু করলে আমার পৃথিবী আজকে জীবিত থাকতো।(ড্রাকুলা)
।।।
।।।
আমি আর কিছু বললাম না। আমার শরীর দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। যেটা ড্রাকুলা দেখে আর সহ্য করতে পারে নি। সোজা আমার কাছে এসে অনেকটা ব্লাড খেলো আমার। আমি মানুষ, তাই অনেকটা ব্লাড হারিয়েছি আমি। আর একটু হলেই আমার শরীর শক্ত হয়ে আমি মারা যাবো। এমন মনে হচ্ছিলো আমাকে কেউ ফ্রিজের মধ্যে ঢুকিয়ে রেখেছে। পুরো শরীর আমার জমে গেছে। অনেক জায়গা দিয়ে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
.
–তোমার মাঝে ভ্যাম্পায়ার ক্ষমতা আছে তাই না?(ড্রাকুলা)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–আমি একটা জিনিসই শিখাবো, সেটা হলো গ্রাভিটি কন্ট্রোল। আর সেটার জন্য তোমার এরকম অবস্থাতেই থাকতে হবে। চিন্তা নাই মারা যাওয়ার আগেই তোমাকে হিল করে দিবো।(ড্রাকুলা)
।।।
।।।
ড্রাকুলা তার হাতটা সোজা আমার বুকের মধ্যে ঢুকিয়ে দিলো। বুকটা চিড় দিয়ে সোজা তার হাত আমার হৃৎপিন্ডের উপরে রাখলো। প্রথমে হালকা কিছুটা চাপ দিলো। তারপর সেটাকে খুলে বের করে নিলো। আমার দম পুরোটা বন্ধ হওয়ার মতো হয়ে গিয়েছিলো। শরীর অবশ হয়ে যাওয়ার কারনে আমি কিছুই অনুভব করতে পারছি না। শুধু দেখছি, সাধারন কেউ থাকলে হয়তো এতোক্ষন অজ্ঞান হয়ে যেতো। কিন্তু আমি এতো ভয়ানক দৃশ্য দেখছি। নিচের বুক থেকে নিজের হার্ট বের হওয়া দেখছি কিন্তু তাতে আমার কোনো কিছু ফিল হচ্ছে না। আমার শরীরে হালকা ঝাকি দিয়ে উঠলো যখন ড্রাকুলা আমার হৃদপিন্ডকে হালকা চাপ দিয়ে সেটার ভিতরের রক্ত পান করলো। আমি বুঝতে পারছি না এতো রক্ত হারানোর পরও আমি কিভাবে জীবিত আছি?
।।।।
।।।।
আমার পুরো শরীর আস্তে আস্তে জ্বলতে শুরু করলো। পুরো দুই মিনিট সময় ড্রাকুলার হাতে ছিলো আমার হৃদপিন্ড। কিন্তু এরপর আমার শ্বাস নেওয়া একদম কষ্ট হয়ে গেলো। আমি স্বাভাবিক থাকতে পারছিলাম না আর। যেহেতু আমার হার্ট আমার শরীরে নেই, তাই নিশ্চিত আমি মারা যাবো। তবে দুই মিনিট বেচে আছি এটাই আমার কাছে অনেক। ড্রাকুলা এরপর আবার আমার হৃদপিন্ড জায়গামতো রেখে দিলো। এবং একটা হাত আমার বুকে রাখলো এবং একটা স্পেল ব্যবহার করলো। যার কারনে আমার পুরো শরীর আবার আগের মতো হয়ো গেছে। একদম ঠিক ঠাক হয়ে গেছে। থর একটু আগেও আমাদের কাছে ছিলো। কিন্তু আমার হার্ট বের করা দেখে নিজেই অজ্ঞান হয়ে পরে আছে। ড্রাকুলা বলতে লাগলো,
.
–আমি টাইম রিভার্স স্পেল ব্যবহার করেছি। এটা দ্বারা আমি যে কোনো জীবিত ব্যক্তির শারিরীক অবস্থা এক ঘন্টা পূর্বের মতো করে দিতে পারি, যদিও এটার জন্য আমার অনেক ব্লাডের প্রয়োজন হয়। আর সেটা তোমার ব্লাড দিয়ে হয়ে গেছে।(ড্রাকুলা)
.
–আমি তো ভেবেছিলাম আমি মারাই যাবো।(আমি)
.
–এতো সহজে মরতে দেওয়া যাবে না তো তোমাকে। আমার রাগ এখনো কমে নি। আর সেটাকে তোমার ট্রেনিং এই কমাবো।(ড্রাকুলা)
।।।
।।।
আমি মাত্র আশা করেছিলাম যে এতো ভয়ানক জিনিস মনে হয় একবারই হবে। কিন্তু না আমার মূলত ট্রেনিং ই এটা। ড্রাকুলা আবার আমাকে গ্রাভিটি কন্ট্রোল দিয়ে উপর থেকে নিচে ফেলে দিলো, আবারো আমার রক্ত পান করলো, এবং আবারো আমার হৃদপিন্ড বের করলো। আবার স্পেল দিয়ে আমাকে ঠিক করে দিলো। এরকম কাজ সে করতেই লাগলো।
এক বার দুই বার করলে মানা যায়। কিন্তু এতো ভয়ানক জিনিস যদি শত শত বার করা হয় তাহলে কারো মাথায় ঠিক থাকবে না। আমার মাথা পুরো ঘুরে গেলো নিজের হার্ট বারবার ড্রাকুলার হাতে দেখে। যদিও সে সময় আমি কিছুই ফিল করি নি। তারপরও আমি অনেকটা পাগলের মতো হয়ে গেলাম।
.
–আজকের মতো ব্রেক এখানেই।(আমার উপরে আবার টাইম রিভার্স স্পেল ব্যবহার করে ড্রাকুলা বললো)
।।।
।।।
আমি হাত পা ছড়িয়ে দিয়ে শুয়ে পরলাম ফ্লোরের উপরে। মাথায় এখনো আমার নিজের হার্টের ছবি ঘুরছে। আমি উঠে বমি করে দিলাম। মাথা ঘুরছে শুধু। সাথে সাথে আমি ফ্লোরে পরে গেলাম। এতোক্ষন অজ্ঞান হয়নি, কিন্তু এখন অজ্ঞান হয়ে গেলাম।
।।।।
।।।।
চোখ খুলে নিজেকে একটা গাছের নিচে পেলাম। উঠে বসলাম। পাশেই থর তার মিওনির নিয়ে ট্রেনিং করছে। জায়গাটা অনেক আজব। কোনো কিছু ধ্বংস হলে আবার সেটা আগের মতো হয়ে যায়। হয়তো এটা ড্রাকুলার টাইম রিভার্সের মতো। ড্রাকুলার ট্রেনিং আজব হলেও সেটা মর্ম সে বলেছে। গ্রাভিটি কন্ট্রোল মূলত শরীরের রক্ত চলাচলের উপরে নির্ভর করে। আমি যদি আমার শরীরের রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রন করতে পারি তাহলে গ্রাভিটি কন্ট্রোল ও ঠিকমতো করতে পারবো। রক্ত চলাচল যত বেশী নিয়ন্ত্রন করতে পারবো গ্রাভিটিও তত শক্তিশালী করতে পারবো। ড্রাকুলার কাজ আপাতোতো সময়ের জন্য শেষ। সে বলেছে আমি এখন গ্রাভিটিকে টুকটাক ভালোই ব্যবহার করতে পারবো। যদি আমি আমার এই ট্রেনিং এর মাধ্যমে থরকে গ্রাভিটি কন্ট্রোল দিয়ে হাটুতে ভর করাতে পারি, তাহলেই আমার ট্রেনিং শেষ হবে। থর আমাকে উঠা দেখে বলতে লাগলো,
.
–ঠিক আছো তো তুমি?(থর)
.
–হ্যা। আপনি তো আমার ঔ অবস্থা দেখেই বেহুস হয়ে গিয়েছিলেন।(আমি)
.
–আরে না। অতিরিক্ত অ্যালকোহল খাওয়ার জন্য আমি ঘুমিয়ে পরেছিলাম।(থর)
.
–হ্যা, বোঝা যায়।(আমি)
.
–তো দেখি তোমার ট্রেনিং কতটা কাজে দিলো?(থর)
.
–ঠিক আছে।(আমি)
।।।
।।।
আমি প্রথমে গ্রাভিটি কন্ট্রোল ব্যবহার করতে লাগলাম আমার চারপাশ দিয়ে। আমি নিজে উড়াতে চাই, তখন ড্রাকুলা ডানার সাহায্যে উড়ছিলো না। বরং সে তার আশে পাশে গ্রাভিটিকে চেন্জ করে উড়ছিলো। আমার ডানা না থাকার জন্য এই জিনিসটা ভালো হবে। এটার সাহায্যে উড়তে পারলে অনেক ভালোই হবে। আমি অনেকটা চেষ্টা করে জিরো গ্রাভিটি তৈরী করতে পেরেছি, যেটাই উড়ছিলাম না বরং ভাসছিলাম। এরকম হলে হবে না। আমাকে ঠিক মতো নিয়ন্ত্রন করা শিখতে হবে। আমি উড়ার চেষ্টা বাদ দিয়ে থরের উপরে গ্রাভিটির ব্যবহার করতে লাগলাম। অনেক চেষ্টা করেও আমি তাকে হাটুতে ভর করাতে পারলাম না। এমনকি আমার গ্রাভিটিতে সে একটু নরছেও না। তার উপরে আমার জিরো গ্রাভিটিও কাজ দিচ্ছে না। হঠাৎ ড্রাকুলা এসে বলতে লাগলো,
.
–থরকে হাটুতে ভর করানো এতোটা সহজ হবে না। কারন এমন ট্রেনিং নিয়েছে, যেটার জন্য এখন আমার গ্রাভিটি কন্ট্রোলেও তার তেমন অসুবিধা হয় না।(ড্রাকুলা)
.
–তাহলে আমি কিভাবে করবো?(আমি)
.
–সব কিছু ট্রেনিং এর উপর নির্ভর করে না। আমি আমার এই ক্ষমতাগুলো ট্রেনিং এর মাধ্যমে পাই নি। জন্ম থেকেই ছিলো আমার কাছে। শুধু সবাই যেভাবে ভাবে সেটার থেকে আলাদা ভাবলেই নিজের ক্ষমতা অন্যের থেকে আলাদা হয়ে যায়। এটাই সকল ভ্যাম্পায়ার থেকে আমাকে আলাদা বানায়।(ড্রাকুলা)
.
–আলাদা ভাবতে হবে?(আমি)
.
–হ্যা। উদাহরন স্বরূপ বলা যায়, সবাই ম্যাজিক নিয়ে ভাবে, কিন্তু তুমি আলাদা ভাবতে পারো, তুমি ম্যাজিকের সাথে সাইন্স যোগ করতে পারো।(ড্রাকুলা)
.
–সাইন্স?(আমি)
.
–হ্যা। আমার অনেক বিশাল লাইব্রেরী আছে, যেখানে পুরো বিজ্ঞানের সকল জ্ঞান সংগ্রহ করা আছে। তুমি তো বলেছিলে একটা বই একবার পরলে সেটা আর ভুলো না তুমি।(ড্রাকুলা)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–তাহলে কাজে লাগাও। সবার থেকে আলাদা চিন্তা ভাবনা করো। দেখবে তোমার ক্ষমতাগুলোও সবার থেকে আলাদা হবো। এটা করো, এরপর দেখতে আর কোনো ট্রেনিং এর প্রয়োজন হবে না।(ড্রাকুলা)

।।।
।।।
থর আমাকে নিয়ে যাচ্ছে লাইব্রেরীর দিকে। এরমাঝে অনেক কিছু জেনে নিলো নতুন দুনিয়া সম্পর্কে আমার থেকে। আমাকে লাইব্রেরীতে দিয়ে থর চলে গেলো। আমি ও বসে সকল বই এক এক করে পড়তে লাগলাম। লাইব্রেরীতে কতদিন ছিলাম তার ঠিক নাই। দিন আর রাতের কোনো দাম নেই এই জায়গার মধ্যে, সময় আটকে রয়েছে সব কিছুর জন্য এখানে। তাই যত সময় হোক সেটা আমার বয়স কিংবা অন্য কোনো কিছুতে কোনো পরিবর্তন ফেলবে না। লাইব্রেরীতে খাবার থাকার ফলে আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। বই পড়তে বসলেই একটা আলাদা নেশার মধ্যে ঢুকে যায় আমি, যেটা আগের দুনিয়ায় হতো না। একটা বই পড়লে এখন শুধু পড়তেই মন চাই। আর ক্ষমতা রয়েছে একবার একটা জিনিস পড়লে সব মনেই থাকে। সমস্ত বই শেষ করে আমি বের হলাম লাইব্রেরী থেকে। কতটা সময় গেছে সেটা আমি বলতে পারবো না। তবে আমি এরমাঝে সাইন্সের সকল তথ্য যেগুলো লাইব্রেরীতে বইয়ের মধ্যে ছিলো, সেগুলো মুখস্ত করে ফেলছি। এখন শুধু সেগুলো ব্যবহারের সময়।
।।।।
।।।।
আমি হেটে হেটে আবারো সেই রুমের দিকে যেতে লাগলাম যেখানে চারজনকে দেখেছিলাম। আবারো মুখে ডেট ফেল চুইংগাম চাবাতে চাবাতে যাচ্ছি। চারজন মিলে আবারো লুডু খেলছে বসে। বুঝতে পারছি না চারজনের কি আর কোনো কাজ নেই।
.
–আপনাদের কি আর কোনো কাজ নেই? লুডু খেলেন সব সময়?(আমি)
.
–ও জ্যাক। অনেক ইন্টারেস্টিং গেম এটা। ডিস্টার্ব কইরো না।(থর)
.
–আমি ডিস্টার্ব করছি?(আমি)
.
–সব বই পড়া শেষ তোমার?(ড্রাকুলা)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–থর, ড্রাকুলা এবং লোকি মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে নতুন দুনিয়ায় গিয়ে তারা একটা নতুন রাজ্য তৈরী করবে। আর সেখানে কি কি হবে সেটা এই ম্যাচে যে জিতবে সেই নির্ধারন করবে।(আমার ডেভিল সত্ত্বা)
.
–নতুন রাজ্য?(আমি)
.
–হ্যা।(ড্রাকুলা)
।।।
।।।
আসলেই বাজির ম্যাচ গুলো দেখতে অনেক মজাদার হয়। যেহেতু লোকি চাচ্ছে সে নতুন রাজ্যকে শাসন করবে। এদিকে থর চাচ্ছে সেই রাজ্যের নাম দিবে এজগার্ড। আর ড্রাকুলার তার চিন্তা ভাবনা আমাদের সাথে শেয়ার করছে না। অনেক মিস্ট্রিয়াস এই ড্রাকুলা। অনেক কিছু আছে যেগুলো তার সম্পর্কে আমি জানি না। তারপরও আমার দেখা শক্তিশালী ব্যক্তি সেটা মানতেই হবে। খেলা শেষ হলো, ড্রাকুলাই জিতে গেলো। আর তারা যে নতুন দুনিয়া বানাবে সেটার মধ্যে ড্রাকুলা যা বলবে সেটাই হবে আপাতোতো সময়ের জন্য।
.
–আমার নতুন রাজ্য সবার জন্যই হবে। আমি সেটাতে আমার নিজ পছন্দ মতো একজন শাসক নির্ধারন করবো। এবং সেই আমার রাজ্য পরিচালনা করবে।(ড্রাকুলা)
.
–ওয়াও। অনেক ভালো খবর।(আমি)
।।।
।৷।
আমাকে কখনো বললেও আমি রাজি হবো না। কারন রাজ্য পরিচালনার মতো কাজে আমি জরাতে চাই না। সাধারন প্রজা থাকায় অনেক ভালো।
.
–থর চলেন আমি আবার ট্রেনিং করে দেখা যাক।(আমি)
.
–সেটার দরকার পরবে না। তোমার ট্রেনিং ই এটা এখন যে, তোমার বিজ্ঞানের জ্ঞান এবং ম্যাজিকের জ্ঞান দুটোকে একসাথে ব্যবহার করা।(ড্রাকুলা)
.
–একা।(আমি)
.
–হ্যা। নাও তাহলে যেভাবে এসেছো এখানে সেভাবে একটা পোর্টাল বানাও আবার।(ড্রাকুলা)
।।।
।।।
আমি এক্সোনিয়া দিয়ে আবারো পোর্টাল বানালাম একটা। আর সেটার মধ্য দিয়ে ড্রাকুলা তার পুরো হোটেল দুনিয়ার মধ্যে নিয়ে গেলো। সবকিছু গেলেও শুধু আমিই গেলাম না তাদের সাথে। বুঝতে পারলাম না কেনো। তারা এখানে কতদিন ছিলো এটা নিজেরাও বলতে পারে না। থরের মিওনির যে কোনো জায়গায় যেতে পারলেও, রিয়েলিটি চেন্জ হওয়ার কারনে থরের মিওনির নতুন দুনিয়াতে আসতে পারে নি। আর এখানে ড্রাকুলার হোটেল না থাকলে হয়তো থর এবং লোকি দুজনেই মারা যেতো। আমার ডেভিল সত্ত্বাও নেই এখানে। হয়তো সে হোটেলের মধ্যেই আছে। আমি তেমন কিছু শিখতে পারি নি। শুধু সাইন্সের বই পড়ে মাথায় কাল্পনিক তথ্য নিয়ে দাড়িয়ে আছি। সাইন্স আগের দুনিয়ায় বাস্তব থাকলেও, নতুন দুনিয়াতে সেটা পুরো কাল্পনিক। তাই এটা দিয়ে আমি কি করতে পারি বুঝতে পারছি না। ড্রাকুলা আমাকে সবার থেকে আলাদা ভাবতে বলেছে। কিন্তু সেটা ভাববো কিভাবে, আমি হঠাৎ আমার ডান হাত দিয়ে হালকা আগুন জ্বালালাম। পুরো তালু দিয়ে আগুন বের হচ্ছে। আমি চিন্তা করতে লাগলাম। আগুন কিসের সাহায্যে জ্বলে। একটা জিনিসই পেলাম। আগুন জ্বলে অক্সিজেন এর সাহায্যে। আমি যদি আমার চারপাশের অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইড নিয়ন্ত্রন করতে পারতাম তাহলে আমার আগুনের পরিমান ও বেড়ে যাবে। আর তাতে আমার ম্যাজিক পাওয়ার বেশী প্রয়োজন হবে না। এখন শুধু আমাকে আশে পাশের অক্সিজেন নিয়ন্ত্রন করতে হবে। কিন্তু এখানে অক্সিজেন আমি পাবো না। তাই আমাকে এখান থেকে দুনিয়াতে যেতে হবে। আমি পোর্টাল দিয়ে এ্যারসাকে চলে গেলাম। আমার হাতের আগুন জ্বলা অবস্থাতেই ছিলো। কিন্তু এ্যারসাকের প্যালেসের রুমের মধ্যে আশার পর আমার হাতের আগুন অনেক বেড়ে গেলো। যেটা পুরো রুমের মধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করলো। আমি সাথে সাথে হাতের আগুন নিভিয়ে বাম হাত দিয়ে ভ্যালিকে ধরে ওর তলোয়ার দিয়ে পানির বের করলাম আর সেই পানিতে সকল আগুন নিভে গেলো। কিছুটা হলেও আমি বিজ্ঞানের ব্যবহার করতে পেরেছি
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
অপেক্ষা করুন পরবর্তী পার্টের জন্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here