যে শ্রাবণে এলে তুমি💕💕
পর্ব:9
লিখনিতে:মৌসুমী
.
.
সিঁড়ির কাছে এসে একটুর জন্য ধাক্কা লাগেনি ফারদিন আর নিরার।কিন্তু কে আগে নিচে নামবে আর কে আগে উপরে উঠবে এটাই বুঝতে পারছেনা তারা।যেদিক দিয়ে নিরা উঠার জন্য যাচ্ছে ফারদিনো সেদিক দিয়ে নামার জন্য পা বাড়াচ্ছে,এমন করে দুজনেই খুব বিরক্ত এখন,এমনিতে দুজনেই দুজনার ওপর রেগে আছে কেউ কারো মুখের দিকে তাকাচ্ছেনা পর্যন্ত।তার মধ্যে এখন এই পরিস্থিতি।অনেকক্ষণ এভাবে চেষ্টা করার পর ফারদিন সরে একপাশে দাঁড়ালো তখন নিরা উপরে উঠে গেলো।নিরা চলে গেলে এবার ফারদিনো নেমে আসলো নিচে।
ফজিলা বেগম জমিলা বেগমকে বললেন,আম্মা আপনার ছোট ভাইয়ের জন্য মেয়ে দেখেন,বিয়ে দিতে হবেতো ,কত বয়স হয়ে গেলো,ভালো একটা মেয়ের খোঁজ করেন আম্মা।
জমিলা বেগম ফোঁকলা দাঁতে ফুকুর ফুকুর হাসি দিয়ে ফজিলা বেগমকে বললো,তোমার ব্যাটা রাজি হয়্যাছে বিহ্যার লেগ্যা যে মেয়্যা দেখবো?
ফজিলা বেগম মুখে বিরক্তিভাব নিয়ে বললো,না আম্মা হয়নি রাজি,তার সামনে তো বিয়ের কথা বলাই যাইনা।কিছুদিন আগেই ওর একটা বন্ধু বিয়ে করলো,তখন বললাম ফারদিনকে কাছে ডেকে,বাবা তোর ও বিয়ে করাঋ সময় চলে যাচ্ছে বিয়ে করে নে বাপ,আমরা বৌ,নাতি,পুতির মুখ দেখি ,সে অমনি বললো ,ক্যান ভাবিকে দেখো,তুলতুলকে দেখো তোমার বড় ছেলেতো তোমার মনের ইচ্ছা পূরণ করেছে তাইনা তাহলে আরকি,আমার কথা বাদ দাও।ভাবি আর তুলতুলকে নিয়েই চিল করো।কি বলবো মা আপনার এই ফারদিন আমার একটা কথাও শুনেনা।
জমিলা বেগম বললেন ফজিলা বেগমকে,চিন্ত্যা করো না মা,বিহ্যা একবার তোমার ব্যাটার হলেই সব ঠিক হয়্যা যাবে,তখন দেখব্যা বৌ ছাড়া কিছু বুঝছেনা।কিছু দেখছেওনা।
মাহফুজা বেগম শুয়ে আছে ,মাথাটা ধরে আছে আর সকালে যা হলো তাতে তিনি খুব ই লজ্জিত হয়েছে, বড় মেয়ের শ্বশুরবাড়ি এসে ছোট মেয়ে তার ই বড় মেয়ের দেবরের সাথে যা অসভ্যতামি করলো তাতে মাহফুজা বেগমের লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে।এই বাড়ির সবাই অবশ্য মাহফুজা বেগমকে বুঝিয়েছেন তারা কিছু মনে করেনি তারপরো মাহফুজা বেগমের খুব খারাপ লাগছে।ওই মেয়েকে নিয়ে কোন সময় শান্তি পাননা তিনি,মেয়ে এতটা বেয়াদব হয়েছে।
নিহা এসে মাহফুজা বেগমের মাথার কাছে বসলো,মাথায় হাত দিয়ে আম্মা বলে ডাকলো মাহফুজা বেগমকে।চোখ মেলে তাকিয়ে আবার চোখটা বন্ধ করলো মাহফুজা বেগম।নিহা বললো মা নামাজ পড়বেনা উঠো,অনেকক্ষণ আগেই আজান হয়েছে,আসরের নামাজটা পড়ে নাও।মাহফুজা বেগম চোখ মেলে তাকিয়ে নিহার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,নিরা কোথায়,ওকে সাবধান করবি,এরকম বেয়াদবি যেনো আর না করে,নিহা মাহফুজা বেগমের মাথায় বিলি কেটে দিতে দিতে বললো,বলবো আম্মা,তুমি ওসব নিয়ে ভেবোনা,আমার শ্বশুরবাড়ির কেউ ওসব কিছু মনে করেনি,সবাই স্বাভাবিক আছে,তুমি উঠো ,নামাজ পড়ে সবার সাথে কথা বলো,ওসব নিয়ে আর ভেবো না।
ফয়েজ উঠানে দ্বাঁড়িয়ে সেখান থেকে চিল্লিয়ে নিরাকে ডাকলো,নিরা ,নিরা নিচে আসো কথা আছে,
নিরা ঘর থেকে বেড়িয়ে নিচে আসলো ফয়েজের কাছে।
নিরা আসতেই ফয়েজ বললো,নিরা চলো হাঁটে গেলে,এখান থেকে কিছুটা দূরেই একটা বিশাল হাঁট আছে,আজ বৃহস্প্রতিবার আজ বসেছে সেই হাঁট।
নিরা আনন্দে গম গম করে বললো,কাঁকনের হাঁট তাইনা ভাইয়া,আমি নাম শুনেছি,এটা নাকি অনেকবড় হাঁট এই এলাকার,আগে নাকি সেখানে মেলাও বসতো,ফয়েজ হেসে বললো,ঠিক বলেছো নিরা সেই হাঁট এটা,আগে মেলাও বসতো,আমি গিয়েছিলাম একবার সেই মেলায় বেড়াতে।
নিরা বললো ভাইয়া আমাকে কি কিনে দিবেন হাঁটে গিয়ে,আর কিসে যাবো,আমরা কি দুজনি যাবো?
ফয়েজ সাথে সাথে বললো না আমরা দুজন না,তুমি,আমি,উৎস,সিফাত আর মিতু আমার ছোট চাচার মেয়ে।আর তুমি যা নিতে চাও নিয়ে দিবো আর আমরা ফারদিনের গাড়িতে যাবো কারণ বর্ষার দিন কখন বৃষ্টি শুরু হয়ে যাই বলাতো যাই না তাই না।
নিরা ফারদিনের গাড়ির কথা শুনে বললো,তাহলে আমি যাবোনা,আপনারা যান,ওই লোকের গাড়িতে আমি যাবোনা।আপনার গাড়ি আনলে ভালো হতো যাওয়াটা।
আহা রাগ করোনাতো,চলো কিছু হবেনা,ফারদিনের গাড়ি হলোতো কি হলো ,ও কিছু বলবেনা তুমি যাও তৈরি হয়ে এসো বলে তাড়া দিলো ফয়েজ নিরাকে।
নিরা বললো না ভাইয়া আমি ওই গাড়িতে যাবোনা আপনি অন্য গাড়ি দেখেন যদি পান তাহলে যাবো।
পাশেই সিফাত দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনছিলো,সিফাত বললো,নাজিম কাকার ভ্যান বাড়িতেই আছে,কাকাকে বলবো নাকি ভাইয়া।
ফয়েজ নিরার দিকে তাকিয়ে বললো,ভ্যানে যাবা?
নিরা সাথে সাথে বললো,ওয়াও ভাইয়া এত সুন্দর একটা যানবাহন থাকতে আপনি আপনার খচ্চর ভাইয়ের গাড়িতে যাওয়ার জন্য বলছিলেন,আমি ভ্যানে যাবো,ভ্যানে আমার উঠার খুব শখ আমি ভ্যানেই যাবো ,সিফাত যাও ভ্যান ডাকো এই বলেই আবার ওপরে চলে গেলো নিরা রেডি হতে।
নাজিম তার ভ্যান নিয়ে দ্বাঁড়িয়ে আছে মোড়ের ওপর পাকা রাস্তায়,জমিলা বেগমের বাড়ির রাস্তাটা কাঁদা কাঁদা হয়ে আছে তাই এখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে সে ফয়েজদের জন্য।
নিরা আর মিতু হেলেদুলে আসতে আসতে হেঁটে আসছে ,ফয়েজ ,উৎস,সিফাত মোড়ের কাছাকাছি ,মোড়ের ওপর গিয়ে ফয়েজ ওর একটা ভাইয়ের হাতে ফারদিনের গাড়ির চাবিটা ফারদিনকে দিয়ে আসতে বললো,ফারদিন মোড়ে বসেই একটা দোকানে চা খাচ্ছিলো ওর আরো সব ভাইদের সাথে।ছেলেটা চা দিতেই ছেলেটা হাত দিয়ে ইশারা করে ফয়েজকে দেখালো ফারদিনকে।ফারদিন ছেলেটির ইশারা মত ফয়েজের দিকে তাকালো দেখলো ওরা সব ভ্যানে উঠছে,নিরা আর মিতু বসলো সামনের দিকে,নিরা একপাশে ফয়েজ বসলো,পেছনে বসলো উৎস আর সিফাত,তুলতুল যাওয়ার জন্য কান্না করাতে এক ছেলে এসে দিয়ে গেলো ফয়েজকে।ফয়েজ তুলতুলকে ভ্যানের মাঝখানে বসিয়ে দিলো আর ভ্যানের দুইটা রড শক্ত করে ধরে বসতে বললো তুলতুলকে।তুলতুলো চোখে পানি মুখে হাসি নিয়ে আনন্দের সাথে নতুন গাড়িতে বসলো।এতক্ষণ আসার জন্য কি কান্নাটাই না কাঁদলো তুলতুল আর এখন খিলখিল করে আসছে আর সবার দিকে তাকাচ্ছে সে।ফারদিন টিনের চালের নিচে বসে বসে দেখছে ওদের আর চা খাচ্ছে।সে হয়তো বুঝতে পেরেছে নিরা যেতে চাইনি ওর গাড়িতে তাই ফয়েজ চাবিটা দিয়ে দিলো ওকে।চা খাওয়া শেষ করে উঠে দাঁড়ালো ফারদিন।তারপর নয়ন কে বললো,চল ভাই হাঁটের দিক থেকে ঘুরে আসি,অনেকদিন যাইনা সেদিকে।নয়ন বললো চল তাহলে।
ভ্যান যাচ্ছে হাঁটের দিকে ,ভ্যানকে ছাড়িয়ে শা করে গাড়ি নিয়ে আগে চলে গেলো ফারদিন।উৎস আর সিফাত ফারদিন ভাইয়া বলে চেঁচাতে শুরু করলো,একটা গাছের কাছে গিয়ে গাড়িটা থামালো ফারদিন,অপেক্ষা ভ্যানের।ভ্যান কাছাকাছি আসতেই মিতু বললো ফয়েজকে ,দেখো ভাইয়া ফারদিন ভাইয়ার গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।ভ্যান গাড়িটা থেকে একটু দূরে যেতেই ফারদিন আবার তার গাড়িটা টান দিলো তারপর ভ্যানকে ছাড়িয়ে সামনে চলে গেলো।নিরা শুধু ফারদিনের কার্যকলাপ দেখছে আর মনে মনে হিশছে,কিছু বলছেনা।এভাবেই সারারাস্তা তারা পাড় করে হাঁটে আসলো,ফয়েজ নিরাকে আর মিতুকে অনেককিছু কিনে দিলো,নিহার জন আর ওর আর সব বোনদের জন্য কিছু মিছু কিনলো।তারপর তারা গেলো খেতে।খেতে গিয়ে দেখলো ফারদিনরাও সেখানে আছে।অনেক আনন্দ করে বেড়িয়ে সবাই বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে আসলো।
জানুরে জানিসনা আকাশে আজ কি সুন্দর চাঁদ দেখা যাচ্ছে।কি যে ভালো লাগছেনা তোকে কি বলবো।আর এখানে থাকতেও কিন্তু সেই লাগছে।ভাবছি বিয়েশাদি করে গ্রামেই থেকে যাবো,শহরের কোলাহল আর ভালোলাগেনা। আর জানিস এখানকার মাটিগুলো লাল ,তোকে তো বলাই হয়নিরে তিশু এখানে এত এত তেতুলের গাছ আছে তোকে কি বলবো,অনেক তেতুলের গাছ।আর মাটির দোতলা বাড়ি সেই লাগছে।জোরে একটু হাঁটতেও একটু একটু ভয় লাগে।তবে মজাটাই বেশি বলে খিলখিল করে হাসছে নিরা।নিরার হাসির শব্দে ফারদিন বিরক্ত হয়ে ঘর থেকে দরজার কাছে আসলো কিছু কড়া কথা শুনাতে।নিরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছে।নিরাকে দেখে ফারদিনের আর কড়া কথা বলতে ইচ্ছে হলো না।চাঁদের আলোয় নিরার হাসিমুখটা দেখতে ফারদিনের ভালোই লাগছে,মুখটা কেমন চকচক করছে।আস্তে আস্তে ফারদিন কখন একদম নিরার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ফারদিন নিজেও জানেনা।ফারদিনকে হঠাৎ পাশে দেখে নিরা ভূত বলে চিল্লাতে যাচ্ছিলো তখন ই ফারদিন এক হাত দিয়ে নিরার মুখটা চেপে ধরলো।তারপর বললো আমি,আমি ফারদিন।নিরা চোখ বড় বড় করে কিছুক্ষণ ফারদিনের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ ফারদিনের হাতে দিলো এক কামড় ,সেই কামড়ছ ফারদিন আহ শব্দ করে নিরার মুখ ছেড়ে চাঁদের আলোই হাতের তালুটা দেখতে লাগলো,নিরা ছাড়া পেয়েই দৌড়ে ওর রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো।ফারদিন হাতটা ঝাড়তে ঝাড়তে নিরার রুমের দরজার কাছে গিয়ে বললো দেখে নিবো তোমাকে আমাকে কামড় দিলে কেনো,ওপাশ থেকে নিরা বলে উঠলো,বেশ করেছি,আমার মুখ চেপে ধরেছিলেন কেনো।ফারদিন বললো তোমার চিল্লানি বন্ধ করার জন্য।নিরা আর কিছু বললোনা।আর কোন সাড়া না পেয়ে ফারদিন বারান্দায় দাঁড়িয়ে চাঁদের দিকে এক মনে তাকিয়ে থাকলো।
রাত বাড়ছে সাথে বাড়ছে ফারদিনের বুকের মধ্যে হাহাকার,সেই হাহাকারে পাগল হয়ে যাচ্ছে সে,কি ভেবেছিলো আর কি হয়ে গেলো।কিছুই ঠিক হলোনা।আগে কত হাসিখুশি ছিলো সে আর এখন কারো সাথে ঠিক করে কথা বলতেও ইচ্ছে করেনা।একজন শুধুমাত্র একটা মানুষ তাকে বদলে দিলো,এক করে দিলো।সবাই আছে,সব আছে তবু মনে হয় কেউ নেই কিচ্ছু নেই।চাঁদটার দিকে তাকিয়ে বললো ফারদিন,তোর মত ই আমিও একা,বড্ড একা।চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা পানিও পড়লো ফারদিনের চোখ থেকে,সেই পানির এক বিন্দু আঙুলের ডগায় নিয়ে একবার দেখলো তারপর চলে আসলো সে নিজের ঘরে।
ভোরের আলো ফুটছে চারপাশে,মুরগের ডাক শোনা যাচ্ছে।সবাই ফজরের নামাজ আদায়ের জন্য উঠে গেছে।নিরা নামাজ পড়ে আর ঘুমাতে গেলোনা বারান্দাতে দাঁড়িয়ে আছে,এখুনো তেমন সকাল হয়নি,হালকা আলো ফুটেছে,ফারদিন দরজা খুলতেই নিরার চোখে তার চোখ পড়লো,নিরা দেখলো ফারদিনের চোখগুলো ফুলে লাল হয়ে আছে,ফারদিন নিরার দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিচে চলে গেলো।নিরা ওখানেই দাঁড়িয়ে আছে।নিচে ফারদিনের দিকে তাকিয়ে দেখছে ফারদিন কি করছে,কলতলায় গিয়ে ফারদিন ওজু করছে,তারপর ওজু করে আবার উপরে এসে ওর ঘরে চলে গেলো,এখন নামাজ পড়বে।নিচে এবার নিরা ফারদিনের মেজো চাচিকে দেখতে পাচ্ছে,তিনি রান্নাঘরে ঢুকে গেলো,রান্নার আয়োজন করবে হয়তো।নিচের ঘর থেকে জমিলা বেগমের কন্ঠ শোনা যাচ্ছে তিনি কোরআন তেলওয়াত করছে।নিরা বেশ লাগছে শুনতে।সে ঘর থেকে একটা প্লাস্টিকের চেয়ার নিয়ে এসে বারান্দায় আরাম করে বসলো।মনে মনে নিরা ভাবছে এখন এক কাপ চা পেলে মন্দ হতোনা,কিন্তু এখন সেটা চাওয়া যাবেনা।ফারদিনের ঘরের দিকে তাকিয়ে বিরবির করে বললো,এনার আমার খাওয়া সহ্য হবেনা তাই এখানে খাই খাই করা যাবেনা।
তুলতুল দৌড়ে লাফাতে লাফাতে বের হচ্ছে।নিরাকে দেখে ছুটে আসলো তার কাছে,পেছন থেকে নিহা ডাকছে কোন পাত্তা দিচ্ছেনা।নিরা কোলে তুলে নিলো।নিহাও এসে দাঁড়ালো সেখানে।নিহা নিরাকে বললো,কিরে এখানে বসে যে,ঘুমাসনি আজ আর,,নিরা মাথা দুলিয়ে বললো,ঘুম আসলোনা তাই এখানে বসে গ্রামের সকাল হওয়া দেখছি।নিহা আর কিছু বললোনা নিরাকে,তুলতুলকে বললো,চলো মা ঘরে,এতো তাড়াতাড়ি উঠতে হবেনা চলো,তুলতুল নিরাকে শক্ত করে ধরে বললো,দাবোনা আমি ঘলে,তুমি দাও(যাও)আমি খালামণির কাছে তাকবো,ছকাল দেকবো ।নিহা জোর করেও পারলোনা তুলতুলকে নিতে,শেষে না পেরে ঘরে চলে গেলো সে।নিরা আর তুলতুল এখন একে অপরকে জড়িয়ে বসে আছে।তুলতুল এবার নড়তে শুরু করলো তারপর নিরাকে বললো ওই ঘরে দাবো খালামণি,ফারদিনের ঘরের দিকে আঙ্গুল তাক করে দেখালো।নিরা নামিয়ে দিলো তুললতুলকে কোল থেকে।তুলতুল গুটি গুটি পায়ে সে ঘরে গিয়ে আস্তে করে খাটের উপর উঠলো তারপর একদম ফারদিনের পেটের ওপর গিয়ে বসলো।আচমকা তুলতুলকে পেটের ওপর বসতে দেখে চোখ মেলে তাকালো ফারদিন।একটু আগেই নামাজ পড়ে বারান্দায় একবার ভুলকি মেরে দরজা না লাগিয়েই শুয়েছে ফারদিন।চোখটা কেবলি লেগেছিলো ওমনি তুলতুলের আগমন ফারদিনের পেটের ওপর।ফারদিনকে তাকাতে দেখে খিলখিল করে হাসতে শুরু করলো তুলতুল।ফারদিন তুলতুলকে আদর করে পেট থেকে নামিয়ে পাশে শুয়িয়ে দিলো।কি ব্যাপার তুলারানি আমার ঘরে যে,ফারদিন আদর করে তুলতুলকে তুলারানি বলে।
ফারদিনের গলা ধরে তুলতুল বললো,চাচ্চু তুমি ঘুমাচ্ছিলে।ফারদিন তুলতুলের নাক টিপে দিয়ে বললো হ্যাঁ কিন্তু তুমিতো আমার ঘুম ভাঙিয়ে দিলে তুলারানি,এখন তোমাকে ঢিসুম ঢিসুম দিই বলে আস্তে করে তুলতুলকে মারছে ফারদিন,আর হাসিতে গলে পড়ছে তুলতুল সাথে ফারদিনো।সেই হাসির শব্দ বাইরে বসে শুনছে নিরা।
চলবে…..