শেষ বিকেলের আদর❤️পর্ব : ১৭

0
4163

#শেষ বিকেলের আদর❤️
#রিত্তিকা ইসলাম
পর্ব : ১৭

🌸
আকাশে মস্ত বড় চাঁদ।চাঁদ থেকে ঠিকরে পড়া আলোই চারপাশ অনেকটাই আলোকিত। আকাশে আজ মেলা বসেছে।চাঁদ তারার মেলা।এতো এতো তারা আর চাঁদকে পেয়ে আকাশ বোধ হয় ভিষন খুশি আজ।তবে খুশি নেই বারান্দায় বসে থাকা দুটো তরুনির মধ্যে।সন্ধ্যার খানিক পরেই পিয়া চলে এসেছে রোশনির ছোট্ট বাড়িটায়।যেই মেয়ে সব সময় হাসি খুশিতে মেতে থাকে সেই মেয়ের চোখে মুখে জমেছে আষাঢ়ের কালো মেঘ।এসে থেকে কোনো কথায় বলে নি পিয়া।চুপচাপ বসে থেকেছে।রোশনিও জোর করে নি।এরপর কোনো রকমে বুঝিয়ে সুঝিয়ে খাইয়ে দিতে পেরেছে ওকে।এখন ঠিক কয়টা বাজে জানা নেই
কারো।তবে অনেকটা রাত হয়েছে। বেলকোনিতে বসে আছে রোশনি। রোশনির কোলের উপর মাথা রেখে শুয়ে আছে পিয়া।রোশনি পিয়ার মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছে।মেয়েটা অনেকক্ষণ কেঁদেছে।রোশনিও আটকায় নি।কাদলে যদি মনটা হালকা হয় তবে কাদলে দোষ কি?পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষেরই কিছু ব্যক্তিগত দুঃখ থাকে।একেক জনের দুঃখ একেক রকম।তা প্রকাশের মাধ্যমও ভিন্ন।মানুষ যতোই জিবন সংগ্রামে নিজেকে শক্ত দেখাক না কেন একটা সময়ে এসে সেও দূর্বল হয়ে পড়ে।তখন একটা ভরসার হাতের দরকার হয়।যেই হাত জিবনের বাকিটা সংগ্রামে যুদ্ধ করে জয়ী হতে সাহায্য করে।

দুজনেই চুপ করে আছে।কারো মুখেই কথা নেই।বাগানের দিক থেকে ঝিঝি পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে।মাঝে মাঝে দুরের অন্ধকার থেকে দু একটা কুকুরের ডাক ভেসে আসছে।কিছুক্ষন অযথায় ডাকাডাকি করে ক্লান্ত হয়ে থেমে খানিক বাদে আবার নতুন উদ্যোমে শুরু করছে।পিয়ার দৃষ্টি শুন্যে।এখন অনেকটাই হালকা লাগছে নিজেকে।রোশনি দুরের অন্ধকারে দৃষ্টি রেখেই প্রশ্ন ছুড়লো পিয়াকে,

_আঙ্কেল কি বলছে? উনিও কি বিয়েটা করতে বলছেন?

জবাব দিলো না পিয়া।আগের মতোই শুন্যে তাকিয়ে রইলো।কিছুক্ষন চুপ থেকে মুখ খুললো রোশনি।

_আঙ্কেল হয়তো এটা ভাবছেন যে তিনি আর বেশি দিন বাচবেন না।তাই তোর একটা নিরাপদ আশ্রয়ের খোজ করছেন।আঙ্কেলের দিক থেকে দেখতে গেলে তিনি ভুল কিছু ভাবছেন না।বাবা হিসেবে তিনিও চান তার মেয়ে সুখে থাকুক।সৎ মায়ের কটু কথা থেকে রেহাই পাক।তবে তুই যেহেতু এখন বিয়ের জন্য প্রস্তুত না তাহলে আরো কিছুদিন সময় নে।আঙ্কেলকে বুঝিয়ে বল।বা আরাফের সাথে কথা বল।

রোশনির কথায় মুখ খুললো পিয়া,

_লাভ নেই রে রোশনি।আরাফ মনে হয় না রাজি হবে।আর আমি বাবাকেও মানা করতে পারছি না।সেদিন বাড়ি ফিরে দেখি বাবা ভিষন খুশি।কারন জানতে চাইলে বাবা এক গাল হেসে বলে উঠলেন তার ছোট্ট পরিটার বিয়ের সম্বন্ধ এসেছে।ছেলে সরকারি চাকরি করে।তার পরিটার সাথে নাকি ভিষন মানাবে।বাবার চোখে মুখে তখন প্রাপ্তির খুশি।আলমারি থেকে মায়ের বিয়ের শাড়ি গয়না বের করে কি পাগলামোটাই না করছিল।তার পরিকে মায়ের গয়না পড়ে বউ সাজলে কেমন দেখাবে সেসব নিয়ে কথার ঝুড়ি মেলে বসেছিল।বাবার ওই হাসিটাকে আমি কেড়ে নিতে পারি নি।বলতে পারি নি বাবা আমি বিয়ে করতে চাই না।বাবা আমার জন্যে অনেক করেছে রে রোশনি।মা মারা যাওয়ার পর আমার কথা ভেবে বাবা আর দ্বিতীয় বিয়ে করতে চান নি।মার হঠাৎ চলে যাওয়া মেনে নিতে পারি নি। ডিপ্রেশনে চলে গেলাম।খেতাম না,বাইরে বেরোতাম না,সারা দিন রুম বন্দি হয়ে থাকতাম।আমার এমন অবস্থা দেখে বাবা ভিষন ভেঙে পড়েছিল।এরপর প্রতিবেশিরা বাবাকে বোঝায় আবার বিয়ে করতে।নতুন মায়ের ভালোবাসা পেলে আমি ঠিক হয়ে যাবো এমন অনেক কথা বলে বাবাকে বিয়ের জন্যে রাজি করায়।নতুন মা আসার পরে তার আদরে সত্যি সত্যিই আমি ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে এলাম।ওনাকেই মায়ের জায়গা দিলাম।কিন্তু ধিরে ধিরে উনি বদলে গেলেন।আমার প্রতি ওনার ব্যবহার বদলাতে শুরু হলো।আস্তে আস্তে মা থেকে সৎ মায়ের রুপ ধারন করলেন।ওনার পালটে যাওয়া রুপ দেখে আবারো ভেঙে পড়েছিলাম।এরপর তোর সাথে পরিচয়।তোকে পেয়ে আবারো নতুন করে বাচতে শিখলাম।কিন্তু সৎ মায়ের কটু কথা বাড়তেই লাগলো।বাবা আমার জন্যে কিছু কিনে আনলেও উনি বাবার সাথে ঝগড়া করতেন।বাবা মুখ বুজে সব সহ্য করতো।কিছুই যে করার ছিলো না।শেষ বয়সে কিই বা করতে পারতেন? মাঝে মাঝে দেখতাম বাবা মায়ের ছবি জড়িয়ে কান্না করতো।বাবার কষ্ট একমাত্র আমিই দুর করতে পারি।বাবা সব সময় আমার বিয়ে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন।ওনার এই আশাটা কি করে নষ্ট করে দেবো বল?মেয়ে হিসেবে আমারও তো কিছু দায়িত্ব আছে।

পিয়ার কথায় ভুস করে নিশ্বাস ছাড়লো রোশনি।

-সবই ঠিক আছে।তবে আমার মনে হয় তোর একবার আরাফের সাথে কথা বলা উচিত।ওকে সবটা বুঝিয়ে বল।বল যে তুই বিয়ের জন্যে প্রিপিয়ার্ড না। তোর সময় লাগবে।এখন না হয় এংগেজমেন্টটা করে রাখুক।কিছু দিন পরে গিয়ে না হয় বিয়েটা করবে।এমন তো করতেই পারে।ওরও তোর দিকটা দেখা উচিত।এতে করে তুই মানসিক ভাবে ফিট হতে পারবি আর আঙ্কেলেরও টেনশন কমবে।

রোশনির কথায় উঠে বসলো পিয়া।রোশনির সামনা সামনি বসে বলে উঠলো,

_হ্যা এটা হলে তো ভালোই হয়।কিন্তু আরাফ কি মানবে?

_মানবে কি মানবে না সেটা পরে দেখা যাবে।আগে ওকে বলে তো দেখ।একটা কাজ কর।কালই ওর সাথে কথা বল।দেখ কি বলে।

_আচ্ছা। তাহলে আমি ওকে বলে দি কাল মিট করতে।

পিয়া ফোন নিয়ে আরাফের নাম্বারে ম্যাসেস করলো কাল মিট করার জন্যে।সাথেই সাথেই ওপাশ থেকে রিপ্লাই এলো ”ওকে””।আরাফের রিপ্লাই দেখে ভ্রু কুচকে তাকালো রোশনি।চোখ ছোট ছোট করে বলে উঠলো,

_এই ব্যাটা ফোন হাতে তোর ম্যাসেজের আশাতেই বসে ছিল নাকি এতো রাতে? সাথে সাথে রিপ্লাই…

__________________

রুম জুড়ে কালো গোলাপের মিষ্টি গন্ধ।বিশাল রুম জুড়ে কালো গোলাপের সমাহার।মোমবাতির মৃদু আলো চারপাশে।ফুলে ভরা বিছানায় বউ সাজে বসে আছে রোশনি।শরিরে কালো রঙের ভারি লেহেঙ্গা।গা ভর্তি গয়না।হাত জুড়ে মেহেদীর লাল রঙ।মাথায় লম্বা ঘোমটা দিয়ে ফুলে সাজানো খাটের উপর বসে আছে সে।মাথা নিচু করে প্রিয় মানুষের আসার প্রহর গুনছে।রোশনির অপেক্ষার প্রহর কাটিয়ে দরজা খুলে প্রবেশ করলো অধির।শরিরে কালো রঙের ডিজাইনার শেওয়ানি।অধির গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গিয়ে রোশনির সামনা সামনি বসলো।সামনে বসা মেয়েটা তার বউ ভাবতেই অন্য রকম অনুভূতি হচ্ছে অধিরের।দু হাত তুলে রোশনির লম্বা ঘোমটা তুলতেই সেই চিরপরিচত লজ্জা রাঙা মুখটা স্পষ্ট হলো অধিরের কাছে।রোশনির থুতনিতে হাত দিয়ে মুখ উচু করলো অধির।রোশনি এখনো চোখ নামিয়ে বসে আছে।সামনের মানুষটার দিকে তাকানোর মত সাহস হয়ে উঠছে।গা ভর্তি লজ্জা ভর করেছে তার।শরিরটাও অল্প বিস্তর কাপছে।বর সাজে অধিরকে কেমন লাগছে সেটা দেখার লোভ হচ্ছে ভিষন।কিন্তু লজ্জায় তাকাতেই পারছে না ও।অধির কিছুক্ষন রোশনির লজ্জা রাঙা মুখটার দিকে অপলক তাকিয়ে থাকলো।রোশনির হাতটাকে নিজের হাতের মুঠোই নিতেই চোখ তুলে তাকালো রোশনি।সামনে বসা সুন্দর সুঠামদেহী পুরুষটা তার স্বামি ভাবতেই অদ্ভুদ ভালোলাগা তৈরি হলো।আজ থেকে এই মানুষটার প্রতি শুধুই তার অধিকার থাকবে ভেবেই শিউরে উঠলো।লোকটা আজ থেকে তার।শুধুই তার।কথাগুলো নিজের মনে আওড়াতেই আবারো লজ্জারা এসে ভর করলো সারা শরির জুড়ে।অধির রোশনির মেহেদী রাঙা হাতটাতে ঠোট ছোঁয়াতেই কেপে উঠলো রোশনি।সারা শরির জুড়ে বয়ে গেল ঠান্ডা হাওয়া।অধির হাত ছেড়ে রোশনির কপালে ঠোট ছোঁয়ালো। সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে নিলো রোশনি।রোশনি যখন লজ্জায় কাপতে শুরু করলো অধির তখন মুচকি হেসে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো রোশনিকে।রোশনিও অধিরের বুকে মুখ লুকিয়ে নিজের লজ্জা ঢাকতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।

ঘেমে নেয়ে একাকার অবস্থা।রুমে এসি চলছে তবুও কুলকুল করে ঘামছে অধির।হঠাৎ এমন অদ্ভুদ স্বপ্নের মানে কি?এর আগে তো কখনো এমন স্বপ্ন দেখে নি সে।তাহলে আজই কেন দেখলো? আর রোশনিই কেন?মেয়েটা তার স্বপ্নে এসেও তাকে জ্বালাচ্ছে।অধির হাত দিয়ে কপাল আর গলার ঘামটুকু মুছে উঠে বসলো।দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলো ভোর হয়ে এসেছে।অধির একগ্লাস পানি খেয়ে উঠে দাড়ালো।ফ্রেশ হয়ে এসে এক মগ কফি বানিয়ে চলে গেল বেলকোনিতে।এখনো পুরো পুরি সকাল হয় নি। এখনো আলো ফোটেনি।আবছা অন্ধকারে ছেয়ে আছে চারপাশ।অধির কফির মগটা পাশে রেখে রেলিং এ হাত রেখে দাড়ালো।স্বপ্নের কথা মনে উঠলেই শরিরটা অদ্ভুদভাবে কেপে উঠছে।অধির কফির মগে চুমুক দিয়ে কালো গোলাপগুলোর দিকে তাকালো।অধিরের স্বপ্নে রোশনি ঠিক এমন কালো গোলাপ দিয়ে সাজানো ঘরেই বসে ছিল তার বউ সেজে।বউ কথাটা মনে আসতেই চমকে উঠলো অধির।শব্দটা অদ্ভুদ লাগলো আজ।অধির হাত বাড়িয়ে গোলাপ স্পর্শ করতেই হাতে কাটা ফুটলো।সাথে সাথেই মৃদু আওয়াজ করে হাত সরিয়ে নিলো।আঙুল থেকে কিছুটা রক্ত বের হচ্ছে।অধির নিজের মনেই আওড়াতে লাগলো গোলাপ ছুঁতে গেলে কাটার অাঘাত তো পেতেই হবে।অধির রক্তটুকু মুছে আবারো গোলাপে হাত রাখলো।আলতো ভাবে ছুঁয়ে দিতেই গোলাপের পাপড়িতে জমে থাকা শিশিরের কনা গুলো অধিরের হাতে লেপ্টে গেল।অধিরের কাছে কেন জানে না গোলাপ গুলোকে আজ অদ্ভুদ রকম সুন্দর লাগছে।গাছটাকে শখের বশে লাগালেও কোনো দিন তেমন করে খেয়াল করা হয়নি। আজ মনে হচ্ছে এর সৌন্দর্য মারাত্বক।যেমন মারাত্বক রোশনির লজ্জা রাঙা মুখটা।কিছুক্ষন এটা ওটা চিন্তা করে জগিং এর জন্য বেরিয়ে পড়লো অধির।

রোশনি রিকশা থেকে নেমে বিশাল গেইটের সামনে দাড়াতেই দারোয়ান তাড়াতাড়ি গেইট খুলে দিলো।রোশনি দারোয়ানের দিকে চেয়ে বাকা হেসে গুনগুনিয়ে ভেতরে চলে গেলো।এলিভেটরের সামনে আসতেই ঢোক গিললো রোশনি।বন্ধ জায়গায় তার ভিষন ভয়।একা সে কিছুতেই এর মধ্যে থাকতে পারবে না।তাই ঠিক করলো সিঁড়ি দিয়েই উপরে উঠবে।চার তলায় সিঁড়ি ভেঙে যাওয়া ব্যাপার না।রোশনি এলিভেটরের সামনে থেকে সরে যেতেই অধির এসে দাড়ালো।অধির এলিভেটরে প্রবেশ করতেই হুরমুড়িয়ে ঢুকে পড়লো রোশনি।এমন ঘটনায় ভ্রু কুচকে তাকালো অধির।রোশনি পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখলো কিলার লুক নিয়ে দাড়িয়ে আছে অধির।পুরো কালো গেট আপের সাথে ফুল এ্যাটিটিউড নিয়ে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।অদ্ভুদভাবে আজ রোশনির ড্রেসআপও পুরো কালো।রোশনি কপাল কুচকে সেটাই লক্ষ্য করছে।তারপর কালকের ঘটনা মনে পড়তেই লজ্জায় লাল হয়ে উঠছে।রোশনির লজ্জা রাঙা মুখ দেখতেই ভোর রাতের স্বপ্নের কথা মনে পড়ে গেলো অধিরের।অধির দাতে দাত চেপে রোশনির বাহু শক্ত করে ধরে এলিভেটরের দেয়ালে চেপে ধরলো।হঠাৎ এমন হওয়ায় ঘাবড়ে গেলো রোশনি।হঠাৎ এমন করার কারন খুজে পেলো না।আর এমন রেগেই বা গেলো কেন? লোকটার কি মাথায় কোনো সমস্যা আছে নাকি? কোনো স্বাভাবিক মানুষ তো এমন কারন ছাড়া হুটহাট রেগে যায় না।রোশনির ভাবনার মাঝেই। মুখ খুললো অধির।চোয়াল শক্ত করে বলে উঠলো,

_কি শুরু করেছো আমার সাথে? কেন শান্তিতে থাকতে দিচ্ছো না আমায়? কেন আমায় এলোমেলো করে দিয়ে হারিয়ে যাচ্ছো? কেন আমার চিন্তা জুড়ে তুমি থাকছো? তোমার সাহস কি করে হয় অধির চৌধুরির স্বপ্নে এসে তাকে এলোমেলো করে দেওয়ার?আমার থেকে দুরে থাকবে বুঝেছো তুমি? আমার কাছে আসার চেষ্টাও করবে না।তোমার মায়ায় জড়াতে চাইছো আমায়?অধির চৌধুরি কারো মায়ায় জড়াবে না।এরপর থেকে আমার চিন্তা,আমার স্বপ্ন এমনকি আমার সামনে আসার চেষ্টাও করবে না।নয়ত জ্বালিয়ে দেবো।আমার কাছে আসলে জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাবে।নেক্সট টাইম আমার স্বপ্নে আসার চেষ্টাও করো না।

অধিরের বলা কথাগুলো সব মাথার উপর দিয়ে গেলো রোশনির।কি সব হরবর করে বলে গেল লোকটা? চিন্তা, স্বপ্ন কি ছিলো এগুলো? রোশনি কিছু না বুঝে তাকিয়ে রইলো অধিরের রাগি মুখের দিকে।লোকটার মাথায় যে সত্যি সমস্যা আছে সে ব্যাপারে আর কোনো সন্দেহ নেই রোশনির।নয়তো পাগলের মত এসব কি বলে গেল? অধির বেশ শক্ত করে রোশনির বাহু চেপে ধরে রেখেছে।ব্যাথায় যেন অবশ হয়ে যাচ্ছে জায়গাটা।রোশনি কোনো রকম মুখ খুলে বলে ওঠে,

_আমার লাগছে মিষ্টার চৌধুরি।

রোশনির কথায় হুশ এলো অধিরের।এতোক্ষন কি করছিল ও বুঝতে পেরে সাথে সাথে রোশনিকে ছেড়ে দুরে সরে দাড়ালো।অকারনেই যে সে বেশি রিয়াক্ট করে ফেলেছে বুঝতে পেরেই নিজের প্রতি রাগ লাগছে অধিরের।অধির বাকা চোখে রোশনির দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো রোশনি ছলছল চোখে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে আছে।স্লিভলেস কামিজ হওয়ায় বাহুটা একেবারে স্পষ্ট।চেপে ধরা জায়গাটা লাল টকটকে হয়ে আছে।ফর্সা হাতটাতে যা বেশ করেই ফুটে উঠেছে।রোশনির এমন অবস্থা দেখে ভিষন মায়া হলো অধিরের।মেয়েটাকে অকারনেই বার বার আঘাত দিয়ে ফেলছে অধির।অধির চোখ বন্ধ করে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করলো।রোশনির চোখ ছলছল করছে।লোকটা তাকে বিনা কারনে বারবার অাঘাত করছে।যখনই ওনার প্রতি একটু ভালো অনুভূতি তৈরি হচ্ছে তখনি আঘাত করে বসছেন।নিজের আসল রুপে ফিরে আসছেন।রোশনি বুঝে গেছে এই অসভ্য লোকটা মোটেও ভালো মানুষ নয়।অসভ্য আর অ্যারোগেন্ট একটা মানুষ।রোশনি লাল হয়ে যাওয়া জায়গায় হাত বুলাতে বুলাতেই হঠাৎ কেপে উঠলো লিফ্ট।রোশনি ঘাবড়ে তাকালো।অধির ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।বেশ কিছুক্ষন পরেও যখন লিফ্টের দরজা খুললো না তখন মুখ খুললো রোশনি।ভয়ার্ত গলায় বলে উঠলো,

_কি হলো? দরজা কেন খুলছে না?

রোশনির কথায় ওর দিকে তাকালো অধির।রোশনিকে বেশ বিচলিত দেখাচ্ছে এই মুহূর্তে।অধির চাপা গলায় বলে ওঠলো,

_মেবি কোনো প্রবলেম হয়েছে।

অধিরের কথায় ভয়ে শিউরে উঠলো রোশনি।কাধ থেকে ব্যাগ ফেলে দিয়ে লিফ্টের দরজা ধাক্কাতে শুরু করলো।

_কেউ আছেন? দরজা খুলুন প্লিজ।শুনছেন?এই দরজা খুলছে না কেন?আমার দম আটকে যাচ্ছে।প্লিজ কেউ খুলে দিন।

রোশনি ভিষন প্যানিক হয়ে পড়ছে।রোশনিকে এমন হাসফাস করতে দেখে রোশনির দিকে এগিয়ে এলো অধির।উত্তেজিত হয়ে প্রশ্ন করলো,

_রোশনি হোয়াট হ্যাপেন্ড? এতো প্যানিক হচ্ছো কেন? একটু অপেক্ষা করো এখনি দরজা খুলে যাবে।

রোশনি জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে নিতে বলে উঠলো,

_আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে মিষ্টার চৌধুরি।প্লিজ আমাকে এখান থেকে বের করুন…

রোশনিকে এমন ডেস্পারেট হতে দেখে অধির দ্রুত রোশনিকে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরলো।রোশনিও অধিরের কোর্ট খামছে ধরলো।অধির রোশনির মাথার পিছনে হাত রেখে আস্তে করে বলে উঠলো,

_রিলাক্স রোশনি।কিচ্ছু হয় নি।আমি আছি তো।আমি থাকতে তোমার কোনো ভয় নেই।চোখ বন্ধ করে লম্বা শ্বাস নাও।নিজেকে শান্ত করো।এখুনি দরজা খুলে যাবে।জাস্ট রিলাক্স,,,,, আমি আছি তোমার সাথে…

অধিরের কথায় রোশনি চোখ বন্ধ করে লম্বা শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করলো।কিছুক্ষণের মাঝে অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এলো।তবুও অধিরকে ছাড়লো না।বেশ অনেকক্ষণ পরে লিফ্টের দরজা খুলে গেল।দরজার বাইরে একটা লোক দাড়িয়ে আছে।অধির আর রোশনিকে এভাবে দেখে খানিক অবাক চোখে তাকালো ওদের দিকে।নিজেকে যথাসম্ভব সামলে বলে উঠলো,

_আর ইউ ওকে স্যার?

লোকটার কথায় রোশনি অধিরকে ছেড়ে দাড়ালো।নিচ থেকে ব্যাগ তুলে বেরিয়ে এলো লিফ্ট থেকে।অধির রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে উঠলো,

_এলিভেটরে প্রবলেম হয়েছে চোখে দেখোনি? এখানে কি ঘাস কাটার জন্যে রাখা হয়েছে তোমাকে?

লোকটা ভয়ে ভয়ে তাকালো অধিরের দিকে।অধিরের রাগ সম্পর্কে মোটামুটি ধারনা তার আছে।

_সরি স্যার।আমি আজকেই ঠিক করার ব্যবস্থা করছি।

অধির চোয়াল শক্ত করে বলে উঠলো,

_আজকে নয় স্টুপিড,,,এখনি ঠিক করানোর ব্যবস্থা করো।

_ওকে স্যার।

অধির পাশে তাকিয়ে দেখলো রোশনি নেই।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অধিরও হাটা দিলো নিজের কেবিনের দিকে।এদিকে রোশনি নাতাশার কেবিনে আসতেই দেখে সাহিল আর নাতাশা অনেকটা কাছাকাছি।ওদের দেখেই চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে যায় রোশনি।সাহিল চেয়ারের উপর বসে আছে আর নাতাশা ওর কোলের উপর বসে।এতটুকুতে সীমাবদ্ধ থাকলেও চলতো কিন্তু নাতাশা রিতিমত সাহিলের গালে কামড় দিয়ে ধরে আছে।রোশনি অধিরকে মনে মনে বকতে বকতে নক না করেই ঢুকে পড়েছে।এসে যে এমন একটা পরিস্থিতিতে পরতে হবে তা ভাবতেই পারে নি রোশনি।এদিকে রোশনির আসাতে নাতাশা সাহিলের গালে একটা কামড় দিয়ে উঠে দাড়ালো।সাহিল ব্যাথায় ”আউচ” শব্দ করে উঠলো।গালে হাত ঘষতে ঘষতে রাগি চোখে নাতাশার দিকে তাকালো।বিনিময়ে নাতাশা ফ্লায়িং কিস ছুড়ে রোশনির দিকে এগিয়ে গেল।রোশনিকে চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে থাকতে দেখে হালকা হেসে বলে উঠলো নাতাশা,

_চোখ খুলতে পারো।

নাতাশার কথায় চোখ মেলে তাকালো রোশনি।রোশনি ভিষন লজ্জা লজ্জা চোখে তাকিয়ে করুন গলায় বলে উঠলো,

_সরি আপু।নক না করেই চলে এসেছি।

_ইটস ওকে গুড়িয়া।এই তোমার হাতের এখানে এতো লাল কেন..? কি হয়েছে দেখি…

নাতাশার কথায় নিজের হাতের দিকে তাকালো রোশনি।ওড়না দিয়ে হাত ঢাকার চেষ্টা চালিয়ে মৃদু হেসে বললো,

_আসলে এলার্জিতে এমনটা হয়েছে।ডোন্ট ওয়ারি আপু,,,কিছুক্ষণ পর ঠিক হয়ে যাবে।

নাতাশা আর কিছু বললো না।রোশনিকে বসতে বলে নিজের কাজে লেগে গেলো।রোশনি সাহিলের দিকে তাকাতেই চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।সাহিলের দুই গাল সহ গলা সব লাল হয়ে আছে।আর এগুলো যে সব নাতাশার কামড়ের দাগ সেটাও বুঝতে পারলো রোশনি।সাহিল রোশনির দিকে তাকাতেই দেখলো রোশনি ওর দিকেই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।রোশনির এমন তাকানোতে অস্বস্তিতে পড়ে গেলো সাহিল।ভ্রু চুলকে দুর্বোধ হাসলো।সাহিল অস্বস্তি বোধ করছে বুঝতে পেরে রোশনিও মেকি হাসলো।এরপর ফোন করার অজুহাতে কেবিন থেকে বেরিয়ে এলো।বাইরে বেরিয়ে পিয়ার নাম্বারে ডায়াল করলো।প্রথম বারেই ফোন রিসিভ করলো পিয়া।

_কিরে,,, কথা হয়েছে তোদের?

ওপাশ থেকে ক্লান্ত গলায় বলে উঠলো পিয়া,

_আর বলিস না।ব্যাটা নাকি জ্যামে আটকে আছে।বিশ মিনিট ধরে ওয়েট করছি আমি।এখনো আসার নাম নেই।প্রয়োজনটা আমার তাই দাতে দাত চেপে আমাকেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

_আচ্ছা। কি বলে আমাকে জানাস।আর চাপ নিস না।ব্যাটা রাজি না হইলেও কেমনে রাজি করাইতে হয় আমার জানা আছে।প্যারা নিস না।টেক এ চিল পিল…

রোশনির কথায় হেসে দিলো পিয়া।রোশনির কথার প্রত্যুত্তরে পিয়া কিছু বলবে তার আগেই কাচের দরজা ঠেলে ভেতরে এলো আরাফ।আরাফকে দেখে পিয়া পরে কথা বলছি বলে ফোন কাটলো।আরাফ আসতেই পিয়া হেসে বসতে বললো।আরাফ কিছুক্ষন পিয়ার দিকে চেয়ে থেকে মুখ খুললো,

_কি খাবে বলো?

_জাস্ট একটা কোল্ড কফি হলেই চলবে।

আরাফ ভ্রু উচিয়ে বললো,

_আর ইউ সিউর?

পিয়া হাসার চেষ্টা করে মাথা নাড়ালো।আরাফ ওয়েটারকে ডেকে এক হট কফি আর একটা কোল্ড কফি অর্ডার করলো।কয়েক মিনিটের মাথায় কফি দিয়ে গেলো ওয়েটার।আরাফ গরম কফিতে ছোট চুমুক দিয়ে বলে উঠলো,

_হঠাৎ ডাকার কারন?

আরাফের কথায় কফির মগ রেখে সোজা হয়ে বসলো পিয়া।কিভাবে শুরু করবে বুঝতে না পেরে একটু নড়েচড়ে বসলো।অারাফ সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছে পিয়াকে।

_তুমি মনে হয় আনকমফরটেবল ফীল করছো? ডোন্ট ওয়ারি।বলো কি বলতে চাও।

পিয়া কিছু অস্বস্তি নিয়ে মুখ খুললো,

_দেখুন মিষ্টার আরাফ।আমি জানি না আপনি আমার কথা শুনে কেমন রিয়াক্ট করবেন? বা আমার কথাকে আদৌও পাত্তা দিবেন কি না? দেখুন আমি অন্য মেয়েদের মত লজ্জাবতি,গুনবতি কোনোটাই না।বাকি মেয়েদের মত ইমোশোনালও নই আমি।তবে হ্যা,,,কথা যদি আমার বাবাকে নিয়ে হয় তবে আমি এই একটা জায়গাতেই ইমোশোনাল। বলতে পারেন বাবাই আমার একমাত্র সফট কর্নার। এতো কথা বলে লাভ নেই।আসল কথায় আসি।সোজা কথা সোজা ভাবে বলতেই অভ্যস্ত আমি।আমি এখন বিয়ের জন্য মেন্টালি প্রিপিয়ার্ড না।আর বাবা এই বিয়েটা নিয়ে অনেক আশা করে আছেন।তাই বাবাকে আমি মানাও করতে পারছি না।

কথাগুলো একদমে বলে থামলো পিয়া।আরাফ আগের মতোই শান্ত হয়ে বসে আছে।কফি মগে চুমুক দিয়ে খুবই শান্ত গলায় প্রশ্ন করলো আরাফ,

_তো আমাকে কি করতে বলছো? বিয়েটা ভেঙে দিতে?

_না তেমনটা নয়।আপনাকে বিয়ে করতে আমার কোনো আপত্তি নেই।তবে আমি মানসিক ভাবে প্রস্তুত নই বিয়ের জন্য।আমার সময় লাগবে।আই নিড সাম টাইম…

_তা কতোক্ষন লাগবে?আই মিন এক সপ্তাহ,দশ দিন?

_ছয় মাস।আমার ছয় মাস সময় লাগবে।আর আমি অপরিচিত কাউকে বিয়েও করতে চায় না।আপনাকে জানতে চায়।ব্যস,,,ছয় মাস সময় দিন আমায়।আর আপনি চাইলে এখন এংগেজমেন্ট করে রাখতে পারেন।আমার এতে কোনো আপত্তি নেই।

পিয়ার কথায় কিছুক্ষন চুপ থেকে কফিটা শেষ করলো আরাফ।পিয়া আরাফের দিকেই তাকিয়ে আছে।মুখ দেখে কিছু বোঝা যাচ্ছে না কি চলছে ভেতরে।আরো কিছুক্ষণ চুপ থেকে মুখ খুললো আরাফ।

_ওকে ফাইন।ছয় মাস দিলাম তোমায় সময়।একচুয়ালি আমিও এটাই চাইছিলাম।যাকে বিয়ে করবো,যার সাথে সারা জিবন কাটাবো তাকে ভালো করে জানবো না?আমি মায়ের সাথে কথা বলবো এই ব্যাপারে।এংগেজমেন্টের ডেইট না হয় পরে এক সময় জানিয়ে দেবো।এখন উঠি,,,,,মাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে চেক-আপ এর জন্যে।টেক কেয়ার….

আরাফ উঠে দাড়িয়ে হাত এগিয়ে দিতেই পিয়া চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ায়।মুচকি হেসে হাত মেলায় আরাফের সাথে।আরাফ বাই বলে বেরিয়ে যায়।আরাফ চলে যেতেই হাফ ছেড়ে বাচে পিয়া।চেয়ারে ধপ করে বসে লম্বা শ্বাস নেয়।আরাফ যে এতো সহজে মেনে নেবে একদমই আশা করে নি পিয়া।পিয়া কফির মগে চুমুক দিতেই কে যেন ধপ করে ওর পাশে এসে বসে পড়ে।আকস্মিক ঘটনায় চমকে ওঠে পিয়া।নিজেকে সামলে পাশে তাকাতেই দেখে আদি বসে আছে।আদিকে দেখেই মেজাজ বিগড়ে যায় পিয়ার।এই মাথা ব্যাথাকে একদমই সহ্য হয় না ওর।অসভ্য রকমের বদের হাড্ডি এই ছেলে।পিয়া চেতে উঠে বললো,

_এটা কোন ধরনের ভদ্রতা? এভাবে বসার মানে কি?আর তুমি এখানে কি করছো? ওঠো বলছি…

পিয়ার কথাকে খুব একটা পাত্তা দিলো না আদি।আগের মতোই বসে রইল। পিয়াকে রাগতে দেখে বলে উঠলো,

_বাপরে,,কোল্ড কফি খেয়েও মাথা ঠান্ডা হয় নি? ওয়েটার,,,,,,?? ম্যামের জন্যে আরো একটা কোল্ড কফি প্লিজ…

আদির কথায় রাগি চোখে তাকালো পিয়া।ওয়েটার এসে কফি রেখে চলে যেতেই আদি বলে উঠলো,

_নাও কফিটা খেয়ে নাও।মাথা ঠান্ডা হয়ে যাবে।বাই দা ওয়ে,,ছেলেটা কে ছিল? তোমার ভাই..?

পিয়া দাতে দাত চেপে বলে উঠলো,

_ছেলেটা আমার ভাই হউক বা জামাই তাতে তোমার লাভটা কোথায় আমায় একটু বলবে?

_লাভ ক্ষতি দুটোই আছে।দেখো,,ছেলেটা যদি তোমার ভাই হয় তবে আমার লাভ।তোমার সাথে লাইন মারার একটা সুযোগ পাবো।আর যদি তোমার জামাই হই তাহলে আমার ক্ষতি।তোমার সাথে ফ্লাটিং করার চান্সই পাবো না।ব্যাপারটা আমার জন্যে ভিষনই কষ্টদায়ক।

_আচ্ছা…?এইজ কত তোমার..?

পিয়ার কথায় ওর দিকে সোজা হয়ে বসলো আদি।

_কেন? দেখো ছেলেদের কখনো বয়স জিজ্ঞেস করতে নেই।

আদির কথায় সরু চোখে তাকালো পিয়া।ওর জানা মতে মেয়েদের কখনো বয়স জিজ্ঞেস করতে নেই শুনেছে।কিন্তু ছেলেদের?এমন কথা কোনো দিন শুনেছে বলে মনে পড়ছে না।অবশ্য আদির থেকে এমন কথায় আশা করা যায়।

_বাজে কথা না বলে বলো তোমার বয়স কত?

-এমনিতে তো বিশ বছর আটমাস চলছে। তুমি উনিশ ধরে নাও।আই ডোন্ড মাইন্ড..

কথাটা বলেই চোখ টিপলো আদি।পিয়া দাতে দাত চেপে বলে উঠলো,

_তুমি জানো আমার বয়স কতো? তোমার থেকে আমি চার মাসের বড়।সেই হিসেবে আমি তোমার সিনিয়র।আর সিনিয়রদের সাথে ফ্লাট করা ঠিক নয়।এতে জুনিয়রদের চোট পাওয়ার আশঙ্কা থাকে।বাই দা ওয়ে,,,কফিটা বরং তুমিই খাও।এটা তোমার বেশি প্রয়োজন।বাই মাথা ব্যাথা।আশা করি দ্বিতীয়বার আর আমাদের দেখা হবে না।

আদিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই চোখে সানগ্লাস দিয়ে বেরিয়ে গেল পিয়া।আদি ওর যাওয়ার দিকে দাত কটমট করে তাকিয়ে থেকে কফিতে চুমুক দিল।তখনই চিকন পাতলা একটা মেয়ে বেবি বেবি করতে করতে ছুটে এলো অাদির দিকে।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here