শেষ বিকেলের আদর❤️পর্ব : ১৮

0
3804

#শেষ বিকেলের আদর❤️
#রিত্তিকা ইসলাম
পর্ব : ১৮

🌼
চেয়ারে গা এলিয়ে হতাশ চোখে বসে আছে সাহিল।নাতাশা ছোট্ট চার্জার ফানটা হাতে নিয়ে রিতিমত পায়চারি করছে।বিরক্তির চরম সীমানায় পৌছে গেছে সে।সাহিলের সামনে দিয়ে অনবরত পায়চারি করে চলেছে। সাহিল বার কয়েক নাতাশার মুখের দিকে তাকিয়ে শির দাড়া সোজা করে বসলো।ওদের থেকে কিছুটা দূরে ভ্রু কুচকে দাড়িয়ে আছে রোশনি।আশেপাশের সুক্ষ্ম বিষয় গুলোও সে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছে। এই যেমন রাগে আর বিরক্তিতে নাতাশার চশমাটা নাকের ডগায় এসে ঠেকেছে তবুও সেদিকে তার খেয়াল নেই।ফ্যান হাতে সে হেটেই চলেছে।নাতাশার দিকে তাকিয়ে সাহিল মাঝে মাঝেই নিজের মনে কিছু বিড়বিড় করছে যা বোঝার চেষ্টা চালাচ্ছে রোশনি।তবে সাহিলের মুখের অবস্থা এই মুহূর্তে সবচেয়ে অসহায় দেখাচ্ছে।তবুও রোশনির ভিষন হাসি পাচ্ছে।নাতাশার ঝাড়ি খেয়ে বেচারার নাজেহাল অবস্থা।হাতে রাখা ফ্যানটা হঠাৎই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভ্রু কুচকে তাকালো নাতাশা।এই ফ্যানটার এখনি চার্জ শেষ হতে হলো?নাতাশা রেগেমেগে ফ্যানটা সাহিলের দিকে ছুড়ে মারতেই অতি অভিজ্ঞতার সাথে সাহিল তা ক্যাচ করলো।দিদাম আপেলে কামড় বসিয়ে সাহিলের উদ্দেশ্যে ”গুড ক্যাচ”বলে উঠলো।সাহিলও এক গাল হেসে দিদামকে থ্যাংকস জানালো।ওদের এমন কীর্তিতে আবারো নিভে আসা রাগটা চেতে উঠলো।দুজনের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার তীব্র ইচ্ছে জন্মালো মনে।নাকের ঠগা থেকে চশমাটা ঠেলে দিয়ে দিদামের দিকে এগিয়ে গেলো নাতাশা।দিদাম সেদিকে খুব একটা পাত্তা দিলো না।আগের মতোই নিশ্চিন্তে বসে আপেল খেতে লাগলো।নাতাশা সরু চোখে তাকিয়ে রইলো ওর দিকে।দিদাম আপেলে বড় করে বাইট করতেই চিৎকার করে উঠলো,

_হাই আল্লাহ,,,,আমার লিপস্টিক নষ্ট হয়ে গেছে।কেউ তাড়াতাড়ি ঠিক করে দাও ইয়ার।আমার ফটোশুট করতে হবে।

দিদামের কথায় একটা মেয়ে এসে লিপস্টিকটা ঠিক করে দিলো।দিদাম মাথার ভারি ওড়নাটা হাত দিয়ে ঠিক করে উঠে দাড়ালো।নাতাশার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,

_বেবস,,,আই এম রেডি।এবার শুরু করা যাক?

_তো আপনার এতোক্ষনে মনে পড়লো এটা? আমি ভেবেছিলাম ম্যাডাম বোধ হয় ভুলেই গেছেন।বাই দা ওয়ে ম্যাম,,,আপনি আর কিছু খাবেন? আমার মাথাটা কেটে দিই?

নাতাশার কথায় চোখ মুখ কুচকে তাকালো দিদাম।মানুষের মাথা খাওয়া যায় কিনা সে বিষয়ে কোনো দিন ভাবা হয়ে ওঠে নি তার।এই বিষয়ে ভাবা উচিত।তবে এখন ভাবার সময় নেই।দিদাম নাতাশার গালে একটা চুমু দিয়ে পোজ দিতে শুরু করলো।ফটোগ্রাফারও ফটাফট ছবি তুলতে শুরু করলো।নাতাশা গাল মুছতে মুছতে চেয়ারে গিয়ে বসলো।সামনে রাখা কম্পিউটারের স্ক্রিনে দিদামের ফটোগুলোতে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করলো।ছবিগুলো দেখে খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারলো না নাতাশা।দিদামকে এই বউ সাজে খুব একটা মানাচ্ছে না।মেয়েটাকে এতো এতো ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়া দেখেছে যে বাকি ট্রিপিক্যাল ড্রেসে তাকে বড্ড মেমানান দেখাতে শুরু করেছে।নাতাশা আরো কিছুক্ষন ছবিগুলোর দিকে তাকিয়ে থেকে সাহিলের দিকে হতাশ চোখে তাকালো।নাতাশাকে এভাবে তাকাতে দেখে চেয়ার ছেড়ে উঠে এলো সাহিল।নাতাশার পাশে দাড়িয়ে নিজেও ছবিগুলো দেখতে লাগলো।

দিদামের নিজের কাছেও এই সাজ অদ্ভুদ লাগছে।এই ভারি লেহেঙ্গা, ওড়না এসবে সে অভ্যস্ত নয়।দিদাম তো আগে থেকেই প্ল্যানিং করে রেখেছে সে বিদেশি কালচারে বউ সাজবে।লম্বা সাদা গাউন, মাথায় ক্রাউন আর তার সাথে ভারি মেক আপ।দিদামের শরিরে অলরেডি র্যাশেজ বেরিয়ে গেছে।গলার দিকটা লাল টকটকে হয়ে এসেছে পুরো।হাতের কনুইও লালচে হয়ে উঠেছে।দিদাম গলা আর হাতের দিকটা মাঝে মাঝেই চুলকে উঠছে।নাতাশা ভালো করে খেয়াল করতেই দেখলো দিদামের পুরো বডিতে র্যাশ উঠে গেছে।নাতাশা আর এক মুহূর্ত দেরি না করে দিদামকে চেঞ্জ করে শাওয়ার নিতে বললো।দিদামকে পাঠিয়ে নাতাশা আর সাহিল হতাশ হয়ে চেয়ারে গা এলিয়ে দিলো।এই মুহূর্তে দিদামের জায়গায় কাকে রিপ্লেস করা যায় তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছে না ওরা।এদিকে কিছুক্ষণের মধ্যেই অধির এসে যাবে।অধির আসার আগে যে করেই হোক কাজ কমপ্লিট করতে হবে।নয়তো অধির ভিষন রেগে যাবে।আর অধিরের রাগ সম্পর্কে সবারই ভালোমত ধারনা আছে।নাতাশা এদিক ওদিক তাকাতেই চোখ গেল রোশনির দিকে।রোশনি তখন চিপস খেতে ব্যস্ত।আশে পাশে কি হচ্ছে সেদিকে তাকানোর খুব একটা সময় নেই তার।তার কাছে এখন একমনে চিপস খাওয়াটায় বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্যাকেট থেকে একটা একটা করে চিপস এর টুকরো বের করে অনবরত মুখে পুড়ে চিবিয়ে চলেছে সে।নাতাশা কিছুক্ষন এক দৃষ্টে তাকিয়ে থেকে সাহিলকে বলে উঠলো,

_পেয়ে গেছি।সাহিল তুমি এদিকে সবটা দেখো আমি দিদামের জায়গায় রিপ্লেস করার মডেল নিয়ে আসছি।

সাহিলকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই নাতাশা উঠে চলে গেল।সাহিল কিছুক্ষন নাতাশার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নিজের কাজ করতে লাগলো।এদিকে নাতাশা কিছু না বলে রোশনির হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো।হঠাৎ এমটা হওয়ায় চমকে উঠলেও দ্রুত সামলে নিলো নিজেকে।নাতাশাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,

_আরে আপু কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমায়?

রোশনি এই একই কথা বেশ কয়েকবার বলার পরেও যখন নাতাশার থেকে কোনো উত্তর এলো না তখন বাধ্য হয়েই চুপ করে গেলো রোশনি।নাতাশা রোশনিকে একটা রুমে এনে দাড় করিয়ে রুমে থাকা কয়েকজন ছেলেমেয়েকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,

-গাইজ তাড়াতাড়ি ওকে তৈরি করে দাও।দিদামের মতোই সাজাবে।সময় নেই তাড়াতাড়ি শুরু করো।ফাস্ট,,,,

এদিকে নাতাশার কথার আগামাথা কিছুই বুঝে উঠতে পারলো না রোশনি।তাকে কেন দিদামের মত সাজতে হবে? রোশনি কিছু বলার জন্যে মুখ খুলতে যাবে তার আগেই ওর সামনে এসে নাতাশা বলে ওঠে,

_এখন প্লিজ কোনো প্রশ্ন করো না গুড়িয়া।আমি যা বলছি প্লিজ কোনো প্রকার প্রশ্ন ছাড়া করে যাও।অধির আসার আগে যে করেই হোক কাজ কমপ্লিট করতে হবে। দিদামের অবস্থা তো দেখলে।আর বাকি মডেলদেরও অন্য পোশাকে ফটোশুট করা হচ্ছে।তুমি ছাড়া আর কাউকে পেলাম না।প্লিজ তাড়াতাড়ি যাও আর রেডি হয়ে এসো।

নাতাশার কথায় না করতে না পারলেও ইতস্ত করে বলে উঠলো রোশনি,

_কিন্তু আপু আমি এসব কোনো দিন করি নি।আমি কিভাবে করবো?

_আমি অাছি তো।আমি শিখিয়ে দেবো।এখন আর কোনো কথা না বলে তাড়াতাড়ি যাও,,,,

নাতাশার কথায় আর আপত্তি করলো না রোশনি। তবে মনের মধ্যে একটা চাপা নার্ভাসনেস কাজ করছে।মডেলিং এর “ম” সম্পর্কেও তার ধারনা নেই।সে কিভাবে এটা করবে? এদিকে নাতাশাকে নাও করতে পারলো না।নাতাশা চোখ দিয়ে ইশারা করতেই দুটো মেয়ে এগিয়ে এসে রোশনিকে নিয়ে চেঞ্জিং রুমে চলে গেলো।প্রায় ঘন্টা খানিক পর রোশনির সাজ কমপ্লিট করে ওরা আয়নার সামনে দাড় করালো ওকে।আয়নায় নিজেকে দেখে নিজেই স্তব্ধ রোশনি।শরিরে ভারি লাল টুকটুকে লেহেঙ্গা।তার উপর সোনালি কাজ করা।মাথার লম্বা চুলোগুলো বেনি করে সামনে এনে রাখা। তাতে বেলি ফুলের মালা প্যাঁচানো। মাথার উপরের দিকটা ডিজাইন করে বাধা।কপাল জুড়ে লাল পাথরের টিকলি।গলা,কান আর হাতে লাল পাথরের ভারি ডিজাইনের অর্নামেন্টস। মুখে ভারি মেক আপ। রোশনির আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজের চেহারা দেখে নিজেই চমকে গেলো।নিজেকে নিজের কাছেই কেমন অচেনা মনে হচ্ছে।কোনো দিন এভাবে সাজা হয়নি ওর।কোনো দিন যে এভাবে সাজতে হবে সেটা কল্পনাও করে নি।রোশনি আয়নায় নিজেকে দেখতে ব্যস্ত।পাশ থেকে একটা মেয়ের কথা শুনতেই ওর দিকে ফিরে তাকালো রোশনি।

_ম্যাম চলুন।নাতাশা ম্যাম আপনাকে নিয়ে যেতে বলেছেন।

মেয়েটার কথা শুনে আরো একবার আয়নার দিকে চোখ রাখলো রোশনি।আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে রুম থেকে বেরিয়ে এলো।এদিকে সাহিল এখনো জানে না দিদামের জায়গায় কাকে নাতাশা রিপ্লেস করছে।সাহিল চেয়ারে বসে আছে আর নাতাশা ক্রমাগত পায়চারি করছে। হঠাৎ সামনের দিকে তাকাতেই থমকে দাড়ালো নাতাশা।রোশনি মাথার লাল টকটকে ওড়নাটা ঠিক করতে করতে এদিকেই এগিয়ে আসছে।রোশনির থেকে চোখই সরাতে পারছে না নাতাশা।নাতাশাকে এমন হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে সাহিলও সামনের দিকে তাকালো।রোশনিকে সত্যিই ভিষন সুন্দর দেখাচ্ছে।সাহিল নাতাশার পাশে দাড়িয়ে আস্তে করে বলে,

_ওয়াও নাতাশা।রোশনিকে বেশ মানিয়েছে এই লুকে।আই হোপ যে দিদামের থেকে রোশনিকে দিয়েই কাজটা বেটার হবে।তোমার আইডিয়াটা দারুন।গুড জব….

রোশনি এসে নাতাশার সামনে দাড়াতেই নাতাশা রোশনির কপালে ঠোট ছোয়ালো।নাতাশার কোমল আদরে চোখের কোনে পানি জমা হলো রোশনির।নাতাশার চোখে নিজের প্রতি ভালোবাসা দেখে আজ ভিষন কান্না পাচ্ছে ওর।নাতাশা আঙুলের সাহায্যে নিজের চোখ থেকে কাজল নিয়ে রোশনির কানের পিছনে ছোয়ালো।

_কারো যেন নজর না লাগে।

নাতাশার কথায় আবারো বুকের মধ্যে কান্নারা দলা পাকিয়ে উঠলো।ধরে আসা গলায় বলে উঠলো,

_আপু আমি আপনাকে হাগ করতে পারি?

রোশনির ছলছল চোখ দেখে নাতাশারও ভিষন কান্না পাচ্ছে।মেয়েটাকে তার একটু বেশিই ভাল লাগে।এই তো কিছুদিনের পরিচয় মাত্র।ভালো করে চেনে পর্যন্ত না।আর না আছে রক্তের সম্পর্ক।তবুও দুদিনেই কেমন আপন হয়ে গেছে।কিছু কিছু সম্পর্ক আপনা আপনিই তৈরি হয়ে যায়।যে সম্পর্কে কোনো চাওয়া পাওয়ার হিসাব থাকে না।থাকে শুধু একে অন্যের প্রতি গভির টান।নাতাশা মুচকি হেসে হাত বাড়িয়ে দিতেই রোশনি সাথে সাথে নাতাশাকে জড়িয়ে ধরলো।নাতাশাও জড়িয়ে নিলো পরম আদরে।রোশনি আর নিজের চোখের পানিটাকে আটকে রাখতে পারলো না। চোখ থেকে কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো।রোশনিকে ভালোবাসার মত মানুষের এই পৃথিবীতে বড্ড অভাব।সেখানে এই মেয়েটা ওকে কত সহজেই আপন করে নিয়েছে।রোশনি কাঁদছে বুঝতে পেরে নাতাশা তাড়াতাড়ি ওকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে মিষ্টি শাষনের সুর তুলে বলে ওঠে,

_এই মেয়ে একদম কাদবে না।কেদে কেটে মেক আপ নষ্ট করলে কিন্তু মাইর দিবো।এখন এতো সেন্টি না হয়ে চলো,,,,,,

নাতাশার কথায় হেসে ফেললো রোশনি।টিস্যু দিয়ে চোখের পানিটুকু মুছে নিয়ে ভয়ার্ত গলায় বলে উঠলো,

_কিন্তু আপু,,,আমি পারবো তো? আমার ভয় করছে।

নাতাশা কিছু বলার আগেই পাশ থেকে সাহিল বলে উঠলো,

_ডোন্ট ওয়ারি রোশনি।আমরা আছি তো।ভুল হলে শিখিয়ে দেবো।সো চাপ নিও না।

নাতাশার কথামত রোশনি একের পর এক পোজ দিতে থাকলো।ফটোগ্রাফারও ফটাফট ফটো ক্লিক করতে লাগলো।প্রথম দিকে নার্ভাস ফীল করলেও ধিরে ধিরে তা অনেকটাই কমে এলো।

এদিকে লাঞ্চের সময় হয়ে এসেছে।অধিরও মাত্রই বাইরে থেকে মিটিং শেষ করে অফিসে এলো।নাতাশা রোশনিকে খুজতে এদিক ওদিক তাকাতেই দেখলো রোশনি এক কোনায় চেয়ারে বসে আছে।নাতাশা মুচকি হেসে রোশনির দিকে এগিয়ে গিয়ে ওর সামনে দাড়াতেই রোশনি চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালো।

_গুড়িয়া, আমি আর সাহিল বাইরে লাঞ্চ করতে যাচ্ছি।ইউ ক্যান জয়েন আছ….

_না আপু।আপনারা দুজন যান।আমি এখান থেকেই কিছু একটা খেয়ে নেবো।এই সাজ নিয়ে বাইরে যেতে ইচ্ছে করছে না।

_ওকে। তাহলে নিচে ক্যান্টিন থেকে কিছু খেয়ে নিও।আমি ওদের বলে যাচ্ছি।

রোশনি মুচকি হেসে মাথা নাড়াতেই নাতাশা চলে গেলো।রোশনি ভারি লেহেঙ্গা উচু করে চেয়ারের উপর বসলো।খানিক বাদে একটা ছেলে খাবারের বক্স হাতে এসে দাড়ালো রোশনির সামনে।রোশনি তখন মোবাইল স্ক্রল করতে ব্যস্ত।ছেলেটা রোশনিকে ম্যাম বলে ডাকতেই রোশনি চোখ তুলে তাকালো।

_জ্বি বলুন।

_ম্যাম,,, এটা ঝুমা ম্যাম পাঠিয়েছেন চৌধুরি ম্যানশন থেকে অধির স্যার আর আপনার জন্যে।এটা রাখুন।ঝুমা ম্যাম নিজে রান্না করে পাঠিয়েছন আপনাদের দুজনের জন্যে।

ছেলেটার কথার আগামাথা কিছুই বুঝলো না রোশনি।ঝুমা চৌধুরি কেন অধির আর ওর জন্যে খাবার পাঠাবে?রোশনিকে ভাবতে দেখে ছেলেটা টেবিলের উপর খাবারের বক্সটা রেখে দিলো।রোশনি ছেলেটার উদ্দেশ্যে কিছু বলতে যাবে তার আগেই ছেলেটার ফোন বেজে উঠলো।ফোনের দিকে তাকিয়ে ভিষন ব্যস্ত গলায় বলে উঠলো,

_আমি তাহলে যায় ম্যাম।আপনারা প্লিজ খেয়ে নিবেন।আসি ম্যাম।

রোশনিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ছেলেটা ফোন রিসিভ করে কথা বলতে বলতে চলে গেল।ওর চলে যাওয়ার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো রোশনি।খাবারের বক্সের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো ছেলেটির বলা কথাগুলো।মস্তিষ্কে আরো কিছুটা চাপ দিয়েও কথা গুলোর আগা মাথা কিছুই বুঝলো না সে।কিছুক্ষন ঠাই দাড়িয়ে থেকে খাবারের বক্সটা হাতে নিয়ে হাটা দিলো অধিরের কেবিনের দিকে।উদ্দেশ্য খাবারটা অধিরের কেবিনে পৌছে দেওয়া।
এদিকে ঝুমা চৌধুরি নিজের হাতে রান্না করেছে অধির আর দিদামের জন্যে।ড্রাইভার অসুস্থ থাকায় আজ তার ছেলে এসেছে।ঝুমা চৌধুরি ওকে বলে দিয়েছে দিদামের হাতে খাবারটা পৌছে দিতে।কিন্তু ছেলেটা দিদামকে চেনে না।আর ঝুমা চৌধুরি জানেন যে আজ বিয়ের সাজে ফটোশুট করা হবে দিদামের।তাই উনি ছেলেটাকে বলেন যে, বিয়ের সাজে যাকে দেখবে সেটাই দিদাম।ব্যস ছেলেটি রোশনিকে বিয়ের সাজে দেখে ভেবে নেয় এটাই দিদাম।অন্যদিকে দিদামের সারা শরির জুড়ে র্যাশেজ এ ভরে গেছে।তাই আর এই বিশ্রী অবস্থা নিয়ে ও চৌধুরি বাড়িতে যায় নি।তখন অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা ডক্টরের কাছে যায়।তারপর সেখান থেকে সোজা নিজের ফ্ল্যাট।

রোশনি অধিরের কেবিনের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে।ভেতরে ঢুকবে কি ঢুকবে না ভাবছে।ঝুমা আন্টি কত ভালোবেসে তার ছেলের জন্যে খাবার পাঠিয়েছে আর এটা যদি সে অধিরের কাছে পৌছে না দেয় তাহলে ব্যাপারটা ভিষনই বাজে দেখাবে।রোশনি কাপা হাতে দরজায় নক করে।ভেতর থেকে কোনো রেসপন্স আসে না।রোশনি আবারো নক করে।এবারো কোনো রেসপন্স আসে না।রোশনি ভ্রু কুচকে আরো কয়েক বার নক করেও ভেতর থেকে কোনো রেসপন্স পায় না।রোশনি ভাবে অধির হয়তো ভেতরে নেয়।এই সুযোগে খাবারের বক্সটা রেখে বেরিয়ে আসা যাবে।লোকটার মুখটাও দেখা লাগবে না।অসভ্য লোক একটা।ভেতরে কেউ নেই জেনেও অস্বস্তি নিয়ে দরজা খুলে ভেতরে এলো রোশনি।চারপাশে তাকিয়ে দেখলো সত্যিই কোথাও অধির নেই।অধিরকে না পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লো রোশনি।চারপাশে তাকাতেই হা হয়ে গেলো।কেবিনটা এতো সুন্দর আর এতো পরিপাটি করে সাজানো দেখে মনেই হচ্ছে না এটা অফিস রুম।এক সাইডে সোফাও রাখা আছে।অন্য এক পাশে দরজা দেখতে পেলো রোশনি।হয়তো বাথরুম ওইটা।রোশনি কিছুক্ষন মুগ্ধ হয়ে সবটা দেখে খাবারের বক্সটা কাচের টেবিলের উপর রাখলো।চারপাশটায় আরো একবার চোখ বুলিয়ে যাওয়ার জন্যে পা বাড়ালো।দরজা অবধি যেতে না যেতেই পেছন থেকে অধিরের গলা ভেসে এলো।সেই পুরুষালী কন্ঠে কেপে উঠলো রোশনি।নিজেকে এই মুহূ্র্তে চোর বলে মনে হচ্ছে।যে চুরি করতে গিয়ে লাস্ট মোমেন্টে এসে ধরা খেয়েছে।চোর চোর ফিলিংস নিয়ে ওভাবেই শক্ত হয়ে দাড়িয়ে রইলো রোশনি।

_হে হু আর ইউ?আমার কেবিনে কি করছো?

মেয়েটাকে ওভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুচকে গেলো অধিরের।এমন সাজে তো দিদামের থাকার কথা ছিল।তাহলে কি এটা দিদাম?কথাটা মনে আসতেই সোজা হয়ে দাড়ালো অধির।রোশনি ইতস্তত করে পেছনে ফিরে দাড়ালো।রোশনিকে দেখার সাথে সাথেই থমকে গেলো অধির।সেই সাথে থমকে গেলো হৃদপিণ্ডের চলাচল।পরমুহূর্তেই আবার তুমুল গতিতে চলতে শুরু করলো।অধিরের চোখ রোশনিতেই আটকে গেলো।পলকহীন তাকিয়ে রইলো ওর মুখের দিকে।রোশনিকে এভাবে দেখবে সেটা একবারেই আশা করে নি অধির।এটা অধিরের কাছে অনেক বড় ধাক্কা।অধির চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে কয়েকটা শ্বাস নিয়ে নিজেকে সামলে নিলো।এদিকে অধিরকে এভাবে শ্বাস নিতে দেখে ভ্রু কুচকে তাকালো রোশনি।অধির চোখ খুলে স্বাভাবিক হয়ে এগিয়ে এলো রোশনির দিকে।রোশনি আগের মতোই দাড়িয়ে রইলো নিজের জায়গায়।অধির রোশনির মুখোমুখি দাড়িয়ে প্রশ্ন করলো,

_তুমি এই সাজে? এভাবে তো দিদামের থাকার কথা ছিলো রাইট?তাহলে তুমি এভাবে কেন? আর আমার কেবিনে কি করছো?

অধিরের এতো গুলো প্রশ্ন শুনে বিরক্ত চোখে তাকালো রোশনি।এরপর সবটা অধিরকে বলতে শুরু করলো।আর তার এখানে আসার কারনটাও।রোশনি এবার চলে যাওয়ার জন্যে পা বাড়াতেই অধির বলে উঠলো,

_কোথায় যাচ্ছো?

অধিরের কথায় পিছনে ফিরে তাকালো রোশনি।কিছু বুঝতে না পেরে প্রশ্নবোধক চোখে তাকিয়ে রইলো অধিরের দিকে।অধির সেদিকে পাত্তা না দিয়ে টাওয়ালটা ছুড়ে ফেলে সোফায় গিয়ে বসলো।

_খাবারটা সার্ভ করে দিয়ে যাও।

অধিরের কথায় বিরক্ত চোখে তাকালো রোশনি।বাড়িতেও ওকে নিজের সার্ভেন্ট ভাবে আবার অফিসেও।রোশনিকে এমন ঠাই দাড়িয়ে থাকতে দেখে ধমকে উঠলো অধির।

_দাড়িয়ে আছো কেন? কি বললাম শুনতে পাও নি?

অধিরের ধমকে চমকে উঠলো রোশনি।চাপা রাগে ভেতরটা তেতে উঠলেও মুখে ভয়টা স্পষ্ট।রোশনির এমন ভয়ার্ত মুখ দেখে বাকা হাসলো অধির।মেয়েটার প্রতিটা রুপই অধিরকে এলোমেলো করে দেয়।ভ্রু কুচকে তাকানো,ভয় পেয়ে চমকে ওঠা, বিরক্তিতে নাক মুখ কুচকে তাকানো আর রাগে লাল হয়ে ওঠা চেহারা সব কিছুই গভিরভাবে আকর্ষন করে অধিরকে।অধির এতো দিনে বুঝে গেছে মেয়েটার প্রতি সে কিছুটা হলেও দূর্বল হয়ে গেছে।রোশনি বিরক্তি নিয়ে খাবারের বক্সটা নিয়ে এসে টি-টেবিলের উপর রাখে।অধিরের দেখানো জায়গা থেকে প্লেট আর পানির গ্লাস এনে খাবার বেড়ে দেয়।সব ঠিক ঠাক ভাবে টেবিলে সাজিয়ে চলে যাওয়ার জন্যে উঠে দাড়াতেই অধির মুখ খোলে।

_ওখান থেকে আরেকটা প্লেট নিয়ে এসো।

রোশনি কিছুনা বলে আরো একটা প্লেট এনে দেয়।লোকটার সাথে এখন তর্ক করতে ইচ্ছে করছে না রোশনির।এখান থেকে বেরোতে পারলেই বাচে।অধির নিজে হাতে প্লেটে খাবার বেড়ে রোশনিকে বসতে বলে।রোশনি ভ্রু কুচকে তাকায় অধিরের দিকে।অধির চোখ দিয়ে ইশারা করে বসতে।রোশনিও বিরক্ত হয়ে বসে পড়ে।অধির রোশনির সামনে প্লেট ধরে খেতে বলে।অধিরের কথায় প্রথমে অবাক হলেও পরে নিজেকে সামলে বলে ওঠে,

_থ্যাংক ইউ মিষ্টার চৌধুরি।কিন্তু আমি খেতে পারবো না।আপনি একাই খান।আমি ক্যান্টিন থেকে খেয়ে নেবো।

রোশনির কথায় অধির দাতে দাত চেপে বলে ওঠে,

_এখানে দুজনের খাবার আছে।সো আমার একার পক্ষে দুজনের খাবার খাওয়া সম্ভব নয়।আর আমি অপচয় পছন্দ করি না।সো একটা কথাও না বলে চুপচাপ খেয়ে নাও,,,,,

অধিরের কথার প্রত্যুত্তরে রোশনি কিছু বলতে যাবে তার আগেই অধির চোখ রাঙিয়ে তাকালো ওর দিকে।অধিরের চোখ দেখে আর কিছু বলার সাহস হলো না রোশনির।বাধ্য হয়ে তাই প্লেট হাতে তুলে নিলো।

অধির চামুচে করে খাবার মুখে দিচ্ছে আর রোশনির দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছে।রোশনি নিজের মত করে একমনে খেয়ে চলেছে।আশেপাশে যেন তার কোনো খেয়াল নেই।অধিরও এই সুযোগে খুটিয়ে খুটিয়ে রোশনিকে পর্যবেক্ষণ করছে।এদিকে না তাকিয়েও রোশনি বুঝতে পারছে অধির তার দিকে তাকিয়ে আছে।অস্বস্তি আর লজ্জার হাত থেকে বাচতেই সে একমনে খাবার চিবিয়ে চলেছে।খাবারটা শেষ করতে পারলেই আর এক মুহূর্ত সে এখানে দাড়াবে না।লোকটার দৃষ্টি বরাবরই ভয়ংকর।সারা শরিরের কাপন ধরিয়ে দেয়।অধির রোশনির লাল লিপস্টিকে রাঙা ঠোটের দিকে তাকিয়ে থাকে।খাবার চিবুনোর কারনে ঠোট দুটো অনবরত নড়ছে।অধির স্থীর চোখে সেদিকেই তাকিয়ে আছে।নিজেকে কেমন হিপনোটাইজড মনে হচ্ছে।রোশনি দ্রুত খাবার গিলতে গিয়ে গলায় আটকে কাশতে শুরু করলো।রোশনির কাশিতে ঘোর থেকে বেরিয়ে এলো অধির।খাবারের প্লেট সরিয়ে দ্রুত উঠে দাড়িয়ে রোশনির সামনে পানির গ্লাস ধরলো।রোশনিও বিনা বাক্যে পানির গ্লাস হাতে নিয়ে খেতে শুরু করলো।কিছুক্ষণের মধ্যে কাশি থেমেও গেলো।কাশতে কাশতে রোশনির চোখ মুখ লাল হয়ে এসেছিল প্রায়।চোখের মধ্যে টলমল করছে পানি।অধির রোশনির দিকে তাকিয়ে ধমকে উঠলো,

_একটা কাজও কি ঠিক মত করতে পারো না? অল টাইম কোনো না কোনো ঝামেলা বাধিয়ে বসো।এতো তাড়াহুড়ো করে কেন খেতে হবে? একটু হলেই কি হতো বুঝতে পারছো? নেক্সট টাইম যেন এমনটা না দেখি?

অধিরের ধমকানিতে ফুসে উঠলো রোশনি,

_আপনার জন্যেই তো এমনটা হলো।আপনি খাবার না খেয়ে আমাকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছিলেন।আপনার তাকানোতে আমার অস্বস্তি হচ্ছিলো।তাই তো তাড়াতাড়ি খেয়ে এখান যেতে যেতে চাইছিলাম।

কথাগুলো বলেই গোমরা মুখে বসে রইলো রোশনি।রোশনির এমন সোজা সাপটা কথায় খানিক ভড়কে গেল অধির।মেয়েটা বুঝলো কি করে কে জানে? ও তো এক মনে প্লেটের দিকে তাকিয়ে খাবার চিবুচ্ছিলো।অধিরের কপালে চিন্তার ভাজ পড়লো।তবে কি মেয়েদের মধ্যে এমন কোনো বিশেষ পাওয়ার আছে যার সাহায্যে না দেখেও বুঝতে পারে তার দিকে কোনো ছেলে তাকিয়ে আছে? অধির একটা শুকনো ঢোক গিলে রোশনির দিকে তাকাতেই আবারো মুখ খুললো রোশনি,

_আপনার সমস্যা কি বলুন তো?সব সময় আমার সাথে ঝাড়ি দিয়ে কেন কথা বলেন? আমাকে যদি সহ্যই না হয তাহলে যেচে পড়ে খেতে কেন বললেন? আপনার বাড়ির সবাই কত ভালো।দাদি,সাহিল ভাইয়া,নাতাশা আপু,আদি সবাই কত সুন্দর করে কথা বলে আমার সাথে।এমনকি ওই ন্যাকা ভুতনিটাও সুন্দর করে কথা বলে। এক মাত্র আপনিই সে যে আমাকে সব সময ঝাড়ির উপরে রাখেন।আপনার কোন জন্মের শত্রু লাগি আমি?

রোশনির কথা শুনে ভ্রু কুচকে তাকালো অধির।এই মেয়ে যে এতো কথা বলতে পারে তা জানা ছিলো না ওর।অধির না বোঝার মত মুখ করে বলে ওঠে,

_ন্যাকা ভুতনিটা কে?

রোশনি কিছু না বুঝেই উত্তর দেয়,

_কে আবার আপনার ওই ন্যাকা হবু বউ।এতো ন্যাকামো কইত্তে পায় কে জানে? তবে ন্যাকা হোক আর যাই হোক আমার সাথে তো ভালো করে কথা বলে।আপনার মত তো আর মুখ থেকে সব সময করলার মত তেতো কথা বের হয় না।

অধির চোয়াল শক্ত করে বলে উঠলো,

_আমার মুখ থেকে করলার মত তেতো কথা বের হয়?

_তা নয় তো কি?

রোশনি অধিরের দিকে না তাকিয়েই কথাটা বলে ওঠে।কথাটা বলতে বলতে অধিরের দিকে তাকাতেই কথা বন্ধ হয়ে যায়।অধির চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে আছে।রোশনি বুঝতে পারে সে একটু বেশিই বলে ফেলেছে না বুঝে।রোশনি একটু হাসার চেষ্টা করে বলে ওঠে,

_আমি সেটা কখন বললাম? আপনি হয়তো ভুল শুনেছেন।আমি তো আপনার যে পেট মোটা ম্যানেজার আছে না ওনার কথা বলছি।ওনার মুখ থেকে তেতো কথা বের হয়।আসলে সমস্যাটা ওনার নয়।বাড়িতে বউয়ের অত্যাচারে বেচারার এই অবস্থা।বউকে রাগ দেখাতে পারে না তো তাই এখানে এসে সবার সাথে ঝাড়ি মেরে তেতো তেতো কথা বলে।একদম আপনার মত।আই মিন করলার মত।

রোশনির কথায় ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে অধির।মেয়েটাকে আজ কেমন অদ্ভুদ দেখাচ্ছে অধিরের কাছে।মেয়েটা এসব দেখে বেড়ায় এখানে এসে?আর মেয়েটা তাকে করলার সাথে তুলনা করেছে,তার হবু বউকে ন্যাকা ভুতনি বলেছে তবুও অধিরের রাগ হচ্ছে না এই মেয়ের উপর।অন্য কেউ হলে সে এতোক্ষন মাটিতে পড়ে থাকতো।কিন্তু আজ অধির নিজেই কনফিউজড হয়ে গেছে।অধিরকে এমন দম মেরে দাড়িয়ে থাকতে দেখে রোশনি দ্রুত কেবিন থেকে বেরিয়ে গেল।আর যেতে যেতে বলে গেল,

_আমি কাউকে পাঠিয়ে দিচ্ছি ওগুলো পরিষ্কার করার জন্যে।আর এরপর থেকে রাম গরুরের ছানার মত না থেকে সবার সাথে একটু হেসে কথা বলবেন।

রোশনির কথায় সেভাবেই দাড়িয়ে রইলো অধির।মেয়েটা তাকে এখন রাম গরুর সাথেও তুলনা করলো? অধির কনফিউজড হয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে রইলো।এদিকে কেবিন থেকে বেরিয়ে একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো রোশনি।ওই অসভ্য লোকটাকে এতগুলো কথা বলতে পেরে ভিষন আনন্দ হচ্ছে। ব্যাটা সব সময় ঝাড়ির উপরে রাখে।রোশনি দরজার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে চলে গেলো।

চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here