শেষ বিকেলের আদর❤️পর্ব : ৮

0
4317

#শেষ বিকেলের আদর❤️
#রিত্তিকা ইসলাম
#পর্ব : ৮

🌸
__কাজ গুলো কে করবে শুনি..?কাজের কথা বাদই দিলাম,,,,সকালের রান্নাটা কে করবে..?কি এমন চাকরি করিস যে সংসারের কাজ করার সময় হয় না।কয় টাকা বেতন পাস..? সব কাজ সেরে রান্না করে যে চুলোই যাওয়ার সেই চুলোই যা।আমার বাড়িতে থাকতে হলে কাজ করে থাকতে হবে।কাউকে বসিয়ে বসিয়ে গেলাতে পারব না আমি…..

চাচির তেতো কথা গুলো শুনে পাথরের মত শক্ত হয়ে দাড়িয়ে আছে রোশনি।মনের মধ্যে তোলপাড় হলেও বাইরে থেকে বেশ শক্ত দেখাচ্ছে ওকে। আজকে নাতাশা জামান এর আসার কথা চৌধুরি ম্যানশনে।সেই হিসেবে আজ রোশনিকে তাড়াতাড়িই যেতে বলেছিল আনোয়ারা চৌধুরি।তাই তো সকালের কাজ কিছুটা গুছিয়ে চাচিকে বলেছিলো সকালের রান্নাটা করে নিতে।রান্না করে যেতে গেলে অনেকটা দেরি হয়ে যাবে রোশনির।রান্নার কথা বলতেই এতগুলো কথা শুনতে হলো চাচির থেকে।সারা দিন তো শুয়ে বসে নয়তো পাশের বাড়িতে গিয়ে গল্প করতে করতেই কাটান উনি,,,কোনো কাজই করেন না,,,,সব রোশনিকেই একা হাতে সামলাতে হয়।কি এমন হত আজ যদি উনি রান্নাটা একটু করতেন।রোশনির হঠাৎ করেই মায়ের কথা ভিষন মনে পড়ছে।তার মা থাকলে নিশ্চয় এমন করতো না।রোশনি তো এটাও জানে না যে তার বাবা মা আদৌও বেচে আছে কি না।রোশনির মাঝে মাঝে ভিষন অভিমান হয় ওনাদের উপর।রোশনিকে একা রেখে কোথায় চলে গেছে ওরা..?বাবা মার কথা মনে হলেই রোশনির চোখের কোনে পানি জমা হয়।আজও তার ব্যতিক্রম হলো না।কেউ দেখে ফেলার আগেই তাড়াতাড়ি চোখ মুছে নিলো রোশনি।তারপর চলে গেলো রান্না করতে।আয়াশ এখনো ঘুমিয়ে আছে।রান্নাটা নিজের জন্যে না হলেও আয়াশের জন্যে তাকে করতেই হবে।চাচি নিশ্চয় ওকে রান্না করে খাওয়াবে না।তার নিজের ব্যবস্থা সে ঠিকই করে নেবে।আর সারা দিন না খেয়ে থাকতে হবে আয়াশকে।তাই তো রান্নাঘরে চলে এলো রোশনি।সে কিছুতেই তার ভাইটাকে না খাইয়ে থাকতে দেবে না।রোশনি চুলোই ভাত বসিয়ে সবজি গুলো কাটতে শুরু করে।

রান্না শেষ করে রুমে এসে দেখে আয়াশ রেডি হয়ে গেছে স্কুলে যাওয়ার জন্যে। রোশনি ওড়না দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে আয়াশের সামনে গিয়ে দাড়ালো।

___বাব্বাহ,,,আজ একাই রেডি হয়ে গেলি যে…? কি ব্যাপার হ্যা…..?

আয়াশ সুন্দর হেসে বলে উঠলো….

___কারন আমি তো আর ছোট থাকছি না।বড় হয়ে যাচ্ছি।আর বড় ছেলেরা নিজে থেকেই রেডি হতে পারে।আর এমনিতেও তোমার দেরি হয়ে গেছে আজ।পিয়া দি তোমায় অনেকবার ফোন করেছে।আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি পিয়া দি ফোন দিয়েছে।বললো তুমি যেন তাড়াতাড়ি চলে যাও।পিয়া দি ওখানে অলরেডি চলে গেছে।তুমি তাড়াতাড়ি করো বাডি…..

রোশনি আয়াশের কপালে চুমু একে দিলো। এদিকে পিয়া একা একা সবকিছু সামলাতে পারছে না।রোশনি যে কেন আজই এতো দেরি করছে বুঝতে পারছে না পিয়া।নিশ্চয় কিছু হয়েছে।পিয়া কয়েকজনকে কিছু কাজ বুঝিয়ে দেয়।তারপর পিয়া পাশে তাকাতেই দেখে ফুলের ডালা পড়ে আছে।পিয়া আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো এটা সরানোর মত কেউ নেই।তাই বাধ্য হয়ে নিজেই ফুলের ঝুড়ি হাতে তুলে নিলো।কিন্তু ফুলের ঝুড়ি অনকটা বড় হওয়ায় পিয়া সামনের দিকটা ঠিক মত দেখতে পারছে না। তবুও কোনো রকম সামনে এগুতেই কিছুর সাথে ধাক্কা খেলো। আর সাথে সাথেই ফুলের ঝুড়ি সহ মেঝেতে পড়ল।পিয়া চোখ বন্ধ করে রাগ কমানোর চেষ্টা করছে।এমনিতেই রোশনির এখনো পর্যন্ত না আসায় মেজাম খারাপ হয়ে আছে আর তার উপর কোন হাদায় ধাক্কা দিলো কে জানে।সামনে যেই থাকুক আজ তাকে পুরো ধুয়ে দেবে পিয়া।এসব ভেবেই চোখ খুলে তাকায়।সামনে দাড়ানো মানুষটাকে দেখে মাথাটা আরো এক দফা গরম হয়ে গেলো পিয়ার।এই ছেলে কি আর কিছু পায় না ধাক্কা দেওয়ার জন্যে? বার বার তাকেই কেন ধাক্কা দেয়? পিয়া চোখ মুখ শক্ত করে উঠতে নিলেই বুঝতে পারে কোমরে কেমন ব্যথা অনুভূত হচ্ছে।পড়ে গিয়ে নিশ্চয় তার কোমরটা শহিদ হয়ে গেলো।পিয়া মনে মনে ভেবে নেয় আজ যদি তার কোমর ভাঙে তবে এই বজ্জাত ছেলের মুখটাও সে ভেঙে দেবে।পিয়াকে এমন মুখ খিচে বসে থাকতে দেখে আদি বলে ওঠে…..

__আমার সাথেই কি শুধু ধাক্কা খেতে ইচ্ছে হয় নাকি..? হ্যান্ডসাম ছেলে দেখলেই ধাক্কা দিতে ইচ্ছে হয় তাই না? আর ধাক্কা দিছো দিছো,,,তো এমন ভ্যাটকায় আছো ক্যান।।।।?

আদির এমন কথা শুনে পিয়ার রাগ এবার যেন আকাশ ছুলো। চোখ মুখ শক্ত করে পিয়া বলে উঠলো…

__এই যে মাগুর মাছ,,,,সব সময় তো তুমিই আমাকে ধাক্কা দাও আবার বড় বড় কথাও ঝাড়ো।তোমাকে বলছি না আমার সামনে আসবা না…? আমার যদি আজকে কোমর ভাঙে,,,সত্যি কইতাছি,,তোমার যে কি অবস্থা করবো ভাবতেও পারবা না।….

___তুমি আবার আমাকে থ্রেট দিচ্ছো…?তোমার সাহস দেখে আমি অবাক হয়ে যায়।আদিল চৌধুরির সামনে দাড়িয়ে তুমি তাকে মারার হুমকি দিচ্ছো..?তবে আমি বুঝে গেছি,,,তুমি তো শুধু আমাকে ছোয়ার বাহানা খোজো।তাই হুট হাট এভাবে ধাক্কা দাও রাইট..?আই ডোন্ট মাইন্ড বেবি….

পিয়া তাকিয়ে দেখে আদি মুচকি মুচকি হাসছে।পিয়া চোখ রাঙিয়ে উঠতে গিয়েও ব্যথার কারনে উঠতে পারে না।আদি এবার পিয়ার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়।কিন্তু পিয়া কিছুতেই আদির হাত ধরে উঠবে না।দরকার হয় সে সারাদিন এভাবে বসে থাকবে তবুও ওই বাদর ছেলের হাত সে ধরবে না।নিজেকে কি মনে করে..? প্রিন্স চার্মিং..? হুহ,,,অন্য মেয়েরা এই সাদা বিলাই এর পিছনে ঘুরলেও পিয়া তাকে কোনো দিন কিছুতেই পাত্তা দেবে না।কিছুতেই না।পিয়ার ভাবনার মাঝেই আদি ওকে এক ঝটকায় কোলে তুলে সোফায় বসিয়ে দিলো।ঘটনাটা এতো দ্রুত ঘটলো যে পিয়া কিছু বুঝে উঠতেই পারলো না।আর যখন ব্যাপারটা বুঝতে পারলো তখন কিছু বলতে যাবে তার আগেই শিষ বাজাতে বাজাতে চলে গেলো আদিল।আর আহম্মকের মত বসে রইলো পিয়া।এভাবে কিছুক্ষণ বসে থাকার পর পিয়া উঠে দাড়ালো।এখন কিছুটা কম মনে হচ্ছে ব্যাথা পিয়ার কাছে।বেশ অনেকক্ষণ পর রোশনি চৌধুরি ম্যানশনে এসে পিয়ার সাথে কথা বলে কাজ শুরু করে দেয়।রোশনি দোতলায় যায় ডেকোরেশনের কিছু কাজ দেখতে।সব ঠিক ঠাক করে রোশনি চলে আসতে গিয়েও থেমে যায়।অধিরের রুমের দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে।কালো গোলাপের গাছটাকে বাইরে থেকে দেখতে যতোটা ভালো লাগে তার চাইতেও বেশি ভালো লাগে অধিরের রুমের খোলা বারান্দা থেকে।রোশনি ভাবে সে কি একবার গিয়ে দেখবে? আবার ভাবে না,,,,যেচে পড়ে সিংহের গুহায় ঢোকার কোনো মানে নেয়।কিন্তু আবারো মনে হয় এখন তো অধির রুমে নেই।ইনফ্যাক্ট বাড়িতেও নেই।এই সুযোগে গেলে মন্দ হয় না।শুধু একবার দেখে নিয়েই চলে আসবে।যা ভাবা তাই কাজ।রোশনি এদিক ওদিক তাকিয়ে অধিরের রুমের দরজা খুলে আস্তে করে রুমে ঢুকে যায়।রুমের মধ্যে ঢুকে এদিক ওদিক তাকাতেই চোখ বড় বড় হয়ে যায়।এতো সুন্দর করে পুরো রুম গোছানো,,,,আর রুমের জিনিস গুলোও ভিষন ইউনিক।এর আগে যদিও রোশনি এই রুমে একবার এসেছে কিন্তু এতোটা খেয়াল করে নি রোশনি।সামনে সিংহ দাড়িয়ে থাকলে কি আর এসব দেখার উপায় থাকে?

___রোশনি…? কি করছিস তুই?যখন তখন ওই বজ্জাতটা চলে আসতে পারে।এদিক ওদিক না তাকিয়ে যা করতে এসেছিস তাই করে জলদি বের হ এই সিংহের গুহা থেকে।নয়তো তোকে এখানে দেখলে একদম কাচা চিবিয়ে খেয়ে নেবে।

রোশনি নিজে নিজেই বিড়বিড় করে বারান্দার দিকে হাটা দেয়।আর বারান্দায় পৌছেই মুখে হাত দিয়ে দাড়িয়ে যায় রোশনি। যতোটা সুন্দর আশা করেছিলো তার থেকেও অনেক বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে ফুলগুলো।রোশনি বিষ্ময় নিয়ে আরো কিছুটা সামনে এগিয়ে যায়।অবাক চোখে তাকিয়ে দেখতে থাকে।মনে হচ্ছে যেন সে কোনো রুপ কথার রাজ্যে চলে এসেছে।আর সে এই রাজ্যের রাজ কুমারী। ফুলগুলো যেন তাদের রাজ কুমারীর সামনে তাদের নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ করতে ব্যস্ত।যেন সৌন্দর্যের প্রতিযোগিতা চলছে।রোশনির ঘোর যেন কাটছেই না।ইচ্ছে করছে ওদের মাঝে হারিয়ে যেতে।একটু ছুয়ে দিতে।আচ্ছা,,,, ও যদি ফুলগুলোকে আলতো হাতে ছুয়ে দেয় তাহলে কি ওরা লজ্জা পাবে…? লজ্জায় মাথা নুইয়ে নেবে? নাকি তখনও তারা তাদের সৌন্দর্য প্রকাশে মাথা উচু করেই দাড়িয়ে থাকবে? এমনই উদ্ভট চিন্তা করতে করতেই ফুলগুলোকে ছুয়ে দেয়ার দারুন ইচ্ছে জাগলো মনে।রোশনি আস্তে আস্তে কয়েক কদম এগিয়ে গিয়ে হাত বাড়িয়ে ফুলগুলোকে ছুতে যেয়েও আর ছুলো না।হাত নামিয়ে পিছনে ঘুরে দাড়ালো।রোশনির মনে হচ্ছে রুমে কেউ এসেছে।অধির নয়তো…? অধিরের নামটা মাথায় আসতেই কেপে উঠলো রোশনি।ওই বজ্জাতটা যদি জানতে পারে রোশনি চুপি চুপি এই রুমে এসেছে তাহলে আজ ও শেষ।আচ্ছা,,, এখান থেকে রোশনিকে নিচে ফেলে দিলে কি সে মরে যাবে…? নাকি শুধু কয়েকটা হাড্ডিই ভাঙবে..? নাকি অন্য কোনো উপায়ে মারবে..? রোশনি ভাবতে থাকে এখান থেকে তাকে পালাতে হবে।সেটাও অধিরকে ছাপিয়ে।রোশনি এক কোনে দাড়িয়ে রুমে উকি দেয়।যা ভেবেছে তাই।বজ্জাতটা আসার আর সময় পায়নি।এখন ও এখান থেকে বের কিভাবে হবে? কিছুক্ষন পর রোশনি দেখলো অধির ওয়াশ রুমে ঢুকলো।আর এই সুযোগে রোশনি ধিরে ধিরে বারান্দা থেকে রুমে চলে এলো।কিন্তু দরজা পর্যন্ত পৌছাতেই বুঝতে পারলো ওয়াশরুম থেকে অধির বের হচ্ছে।কারন সে স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে দরজা খোলার আওয়াজ। রোশনি ভয়ে জমে গেল যেন।কি করবে কি করবে ভাবতে ভাবতেই মনে হলো পর্দার পিছনে লুকিয়ে পড়লে মন্দ হয় না।রোশনি তাড়াতাড়ি করে পর্দার পিছনে লুকিয়ে পড়লো।এদিকে অধির ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে টাওয়াল দিয়ে হাত মুখ মুছে শরিরে জড়ানো কালো শার্টটা খুলে সোফায় ছুড়ে মারলো।আর সাথে সাথেই বেরিয়ে এলো জিম করা সুঠাম সিক্সপ্যাক বডি।রোশনি এতোক্ষন ধরে অধিরের ওপরই নজর রাখছিলো।কখন অধির সরবে আর রোশনি এখান থেকে পালাবে।অধিরকে হঠাৎ এমন উদম গায়ে দেখে রোশনির চোখ বড় বড় হয়ে যায়।লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলেও হিচকিটাকে আর আটকাতে পারলো না।হিচকির আওয়াজ কানে যেতেই অধির ভ্রু কুচকে ফেললো।তার মনে হচ্ছে এখানে রোশনি আছে।সে যখন রুমে ঢুকলো তখনই সে রোশনির গায়ের মিষ্টি গন্ধটা পেয়েছে।হয়তো পারফিউমের গন্ধ।কিন্তু প্রথমে নিজের ভুল মনে করলেও এখন মনে হচ্ছে রোশনি এখানেই আছে।অধির টাওয়াল রেখে রুমের এদিক ওদিক তাকায়।আর রোশনি মুখ চেপে ধরে দাড়িয়ে আছে।হিচকি কমার বদলে বেড়েই চলেছে ক্রমাগত।রোশনির নিজের উপরই এখন বিরক্ত লাগছে।একটু কিছুতেই কেন যে সে ঘাবড়ে যায়।ঘাবড়ে না গেলে তো আর কিচকিটা উঠতো না।অধির আশে পাশে তাকাতেই মনে হলো পর্দার পিছন থেকে আওয়াজ আসছে।তাই সেদিকটাই এগিয়ে যায়।অধিরকে আসতে দেখেই চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে নেয় রোশনি।আর শক্ত হয়ে দাড়িয়ে থাকে।অধির পর্দা সরাতে হাত তুলতেই অধিরের ফোন বেজে ওঠে।অধির আর পর্দা না সরিয়ে ফোন হাতে বেলকোনিতে চলে যায়।আর রোশনিও সময় নষ্ট না করে এক ছুটে বাইরে বেরিয়ে আসে।আর বাইরে এসে হাফ ছেড়ে বাচে।এদিকে অধির কথা শেষ করে রুমে আসতে গেলেই চোখ যায় নিচে পড়ে থাকা ছোট ঝুমকোটার দিকে।অধির ভ্রু কুচকে ঝুমকোটা তুলে নেয়।অধির ভাবতে থাকে এটা কার কানের দুল..? আর এখানেই বা কি করে এলো? পরমুহূর্তেই মনে হয় এটা রোশনির নয়তো? অধির ঝুমকাটা হাতে নিয়ে রুমে চলে আসে।তারপর পর্দা সরিয়ে দেখে কেউ নেই।দরজার দিকে তাকাতেই দেখতে পায় দরজা খোলা।অধিরের স্পষ্ট মনে আছে সে রুমে ঢুকে দরজা লক করেছিলো।অধির এবার বুঝতে পারে এখানে তাহলে রোশনিই ছিলো..।সাথে সাথেই বাকা হাসে অধির।তারপর কি ভেবে যেন ঝুমকাটা যত্ন করে কাবার্ডে রেখে দেয়।অধির এটা কেনো করলো সে নিজেও জানে না।জানতে চাইও না।ওর শুধু মনে হলো জিনিসটা ওর কাছে ভিষনই দামি আর এই দামি জিনিসটাকে তার খুব যত্নে লুকিয়ে রাখা উচিত।

এয়াপোর্টে দাড়িয়ে আছে সাহিল আর আদিল।নাতাশাকে রিসিভ করতেই এসেছে ওরা।আদি এদিক ওদিক তাকাতেই দেখলো একটা সুন্দর দেখতে মেয়ে হেটে আসছে।আদি তাড়াতাড়ি করে গলায় ঝুলানো সানগ্লাসটা চোখে পড়ে নেয়।মেয়েটা কাছাকাছি আসতেই হাত দিয়ে চুলগুলো ঠিক করতে করতে শিষ দিয়ে ওঠে।যাকে বলে ফ্ল্যাটিং শিষ।মেয়েটা মুচকি হেসে চলে যেতে নিলেই আদিও সাহিলকে ইশারাই বুঝিয়ে ওই মেয়েটার দিকে চলে যায়।আর সাহিল ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুকচি হাসে।সাহিল ভেবে পায় না এই ছেলে এক চুটকিতে মেয়ে পটিয়ে ফেলে কিভাবে..? তার তো নাতাশাকে পটাতে পুরো এক বছর তিন মাস লেগেছিলো।হয়তো এর থেকেও বেশি।সাহিলের ভাবনার মাঝেই কেউ একজন দৌড়ে এসে ঝাপটে ধরলো সাহিলকে।অন্যমনস্ক সাহিল হঠাৎ আক্রমনে টাল সামলাতে না পেরে কিছুটা পিছিয়ে গেলো।পিছনে থাকা পিলারে হাত লাগিয়ে সামলে নিলো নিজেকে।ভাগ্যিস পিলারটা ছিলো নয়তো এই এতো লোকজনের সামনে পড়ে গেলে কি বাজে ব্যাপারই না হতো।কিন্তু তার থেকেও বাজে ব্যাপার হচ্ছে এতো মানুষের সামনে তাকে এভাবে জাপটেই বা ধরলো কে..?সাহিল আশে পাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো অনেকেই ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।সাহিল মেয়েটাকে সরানোর চেষ্টা করে আস্তে করে বলে উঠলো…

___নাতাশা,,,,,?এবার তো ছাড়ো.
।দেখো,,, সবাই এদিকেই তাকিয়ে আছে।

সাহিলের বুকে লেপ্টে থাকা তরুনির মধ্যে কোনো ভাবান্তর দেখা গেলো না।সে আগের ন্যায়ই সাহিলের বুকে লেপ্টে রইলো।এয়ারপোর্টের কৌতুহলি চোখগুলোও আস্তে আস্তে ওদের দিক থেকে সরে গেলো।তবুও ছাড়া পেলো না সাহিল।সাহিল আর সরাতেও চাইলো না।নাতাশা না চাইলে ওকে এখন কোনো ভাবেই সরানো যাবে না।তখন দেখা যাবে বাড়ি পর্যন্ত তাকে এভাবেই জড়িয়ে নিয়ে যাবে এই মেয়ে।বাড়ি ভর্তি মানুষের সামনে যাচ্ছে তাই এক অবস্থা তৈরি হবে।তার থেকে এখানে এভাবে থাকাটাই বেটার মনে হচ্ছে সাহিলের কাছে।এই মেয়েটা এমনই।সহজে তো হাগ করতেই চাইবে না আর যদি তার একবার হাগ করার ইচ্ছে মাথায় চাপে তাহলে এমনই করে।আর এতো গুলো বছর দুজনে আলাদা থাকায় দুজনের প্রতি মায়াটাও যেন চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়েছে।সাহিল বুঝতে পারছে নাতাশার শরির মৃদু কাপছে।সেই সাথে বেড়ে চলেছে নিশ্বাসের গতি।সাহিল নাতাশাকে আরো একটু শক্ত করে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো।এক হাত নাতাশার মাথার পিছনে রেখে আলতো গলায় বলে উঠলো….

___রিল্যাক্স নাতাশা।এতো অস্থির হওয়ার কিছু নেই।আমি আছি তো তোমার কাছে।শান্ত হও সোনা…..

সাহিলের কথায় কিছুটা স্বাভাবিক হলো নাতাশা।কিন্তু তবুও সাহিলকে ছাড়লো না।এতোক্ষনে আদিও এসে গেছে।আর ওদের দুজনকে এভাবে দেখে সাহিলকে হালকা ধাক্কা দিলো আদি।তারপর বলে উঠলো….

__বাহ বাহ,,,,আসতে না আসতেই রোমান্স শুরু…?ভাবি,,,, বলছি সবার সামনে রোমান্স না করে বাড়িতে নিজেদের বেড রুমে করলে ব্যাপারটা ভালো হতো না..? আর তাছাড়া আমার মত মাসুম বাচ্চা দেবরের সামনেও তো এসব করা ঠিক না…।তাইনা….?

আদির কথা শুনে সাহিলের বুক থেকে মুখ তুললো নাতাশা।ডানহাতে চোখের চশমাটা ঠিক করে আদির কান টেনে ধরলো।তবুও সাহিলকে ছাড়লো না।সাহিলকে সাইড থেকে জড়িয়ে ধরেই আদির কান টেনে ধরলো নাতাশা।তারপর মিষ্টি শাষনের সুরে বলে উঠলো…

___তবে রে পাজি।তুমি মাসুম বাচ্চা..? যে হারে প্রেমের সমুদ্রে ভাসছো কবে জানি বাচ্চার বাপ হয়ে যাও তার ঠিক নেই।সে আবার নিজেকে বাচ্চা মনে করে।তুই কি ভাবিস..? তোর কোনো খবর রাখি না আমি..? দিনে কত মেয়ের সাথে ফ্লাটিং করিস তার হিসেবও আমার কাছে আছে।

আদি নিজের কান ছাড়াতে ছাড়াতে বলে উঠলো…

___উফফ আপু কি করছো…? আমি কি এখনো সেই বাচ্চাটি আছি নাকি যে তুমি আমার কান মলে দিচ্ছো..? দেখো সবাই কেমন করে দেখছে…..

__দেখুক তাতে আমার কি..? আই হেভ নো প্রবলেম।আর তোর যদি প্রবলেম থাকে তাহলে ইটস ইউর প্রবলেম।আমি এখন কান ছাড়ছি না।

___আপু প্লিজ,,,,সরি সরি ভাবি।ভাবি..? তুমি তো মিষ্টি ভাবি তাইনা বলো..? দেখো ওই মেয়েগুলো আমার এই অবস্থা দেখে মিটিমিট করে হাসছে….

আদির কথা শুনে কান ছেড়ে বাহুতে একটা চাপড় দিলো নাতাশা।আদি আর নাতাশার এমন খুনসুটি দেখে মুচকি হাসছিলো সাহিল।ওরা এমনই।আগেও যেমন ছিলো এখনো তেমনই আছে।কোনো পরিবর্তন হয়নি।এসবের মাঝেই পাশ থেকে একটা মেয়ে কথা বলে উঠলো।

___আরে ইয়ার,,,আমিও এসেছি। আমার দিকেও তো কেউ তাকাও।ভেবেছিলাম তোমাদের সারপ্রাইজ দেবো।কিন্তু তোমরা তো আমার দিকে নজরই দিচ্ছো না।

মেয়েটার গলা শুনতেই ওরা সামনে তাকালো।এতোক্ষন ওরা দিদামকে খেয়ালই করে নি।দিদাম যে আজই আসবে সেটাও তো ওরা জানে না।দিদামকে দেখে সাহিল মুচকি হাসলেও আদি মুখ গোমড়া করে দাড়ালো।এই অতি স্টাইলিশ মেয়েটাকে কিছুতেই পছন্দ হয় না তার।কি দেখে যে তার ভাই এই মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে কে জানে।সাহিল নাতাশাকে ছেড়ে দিদামের দিকে এগিয়ে গিয়ে হাগ করলো।

___হোয়াট এ প্লেজেন্ট সারপ্রাইজ..? তুমি যে আসছো বলো নি তো…?

দিদাম চোখ থেকে সানগ্লাসটা নামিয়ে বলে উঠলো….

__তোমাদের সবাইকে সারপ্রাইজ দিতে চলে এলাম।আগে থেকে বললে কি সারপ্রাইজ হতে তোমরা..? তাই না বলেই চলে এলাম।আর ইউনিভার্সও এটাই চায়…

দিদামের কথা শুনে আদি চাপা গলায় নাতাশাকে বলে উঠলো…

___এই যে শুরু হলো ইউনিভার্স। ইউনিভার্স এটা চায়,ইউনিভার্স ওটা চায়।উফফ রিডিকিউলাস….কি করে সহ্য করো বলোতো এই মেয়েকে..?ইরিটেট করে ছাড়ে একদম..

নাতাশাও চাপা গলায় ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো…

__এতো দিন ধরে একা একা সহ্য করতে করতে হাপিয়ে গেছি তাইতো নিয়ে চলে এলাম।আমি একা কেন সহ্য করবো..?

নাতাশা আরো কিছু বলবে তার আগেই দিদাম। হেসে বলে উঠলো….

__হে আদি।হোয়াটস আপ….?

আদি বিরস মুখে বলে উঠলো….

__আর হোয়াটস আপ..? আপ এখন ডাউন হয়ে গেছে…

আদির কথা শেষ হতেই তুমুল গতিতে দিদাম বলে উঠলো….

___হোয়াট হ্যাপেন্ড আদি..? ব্রেকাআপ হয়ে গেছে নিশ্চয়..? ডোন্ট ওয়ারি,,,,আমি তোমাকে রেকি পাঠাবো।পজিটিভ এনার্জি পেলে সব ঠিক হয়ে যাবে।

আদি মেকি হেসে বিড়বিড় করে বলে উঠলো…

__তাহলেই হয়েছে।হে আল্লাহ,,,,এই মেয়েকে আর ওর এই ইউনিভার্সকে সহ্য করার ক্ষমতা দাও আমায়….

আদির মুখের অবস্থা দেখে সাহিল মুচকি হাসলো।আদি যে কেন দিদামকে সহ্য করতে পারে না কে জানে।মেয়েটা তো অতোটাও খারাপ না।দেখতেও যথেষ্ট সুন্দরি আর স্টাইলিশ। আর সবচেয়ে বড় কথা ও অধিরের হবু বউ।অধির নিজে থেকেই ওকে সিলেক্ট করেছে।সেখানে অন্য কারোর কি বলার থাকতে পারে…?

ড্রয়িংরুম বসে আছে আনোয়ারা চৌধুরি।তারপাশেই দাড়িয়ে আছে পিয়া আর রোশনি।আনোয়ারা চৌধুরি ওদের বলছেন কি ফুল লাগবে।কোন কাপড় দিয়ে সাজাতে হবে।আর ওরা দুজন সেগুলো শুনে কাগজে লিখে রাখছে।তখনই সেখানে ফোনে কথা বলতে বলতে সিড়ি দিয়ে নামতে লাগলো অধির।পড়নে একটা থ্রী-কোয়াটার প্যান্ট আর এ্যাশ কালারের ফুলহাতা গেঞ্জি।পায়ে বাসায় পড়া স্লিপার।অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে অধিরকে।রোশনি অধিরের দিকে একপলক তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলো।অধির সিড়ি থেকে নামতে নামতে কথা বলতে বলতেই রোশনির দিকে তাকালো।রোশনি তখন নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।অধির ভালো করে খেয়াল করতেই দেখলো রোশনির বাম কানে দুল নেই।অধির এবার নিশ্চত হলো ওটা তাহলে রোশনিরই দুল।আর রোশনি তারমানে ওর রুমে গেছিলো।অধির ফোন কেটেও রোশনির দিকে তাকিয়ে সোজা দাড়িয়ে আছে।আনোয়ারা চৌধুরি রোশনিকে উদ্দেশ্য করে ডেকে উঠলো…

__রোশনি….?

ওনার ডাকে তৎক্ষণাৎ রোশনি বলে উঠলো….

__জ্বি দাদি…?

___বুঝতে পেরেছিস কি বললাম..?

__জ্বি দাদি।আপনি চিন্তা করবেন না। সবকিছু আপনার কথা মতোই হবে।

অধির আজ জানতে পারলো তিলোককন্যার নাম।এতো দিনে নামটাও জানা হয় নি ওর।অধিরের ভাবনার মাঝেই কেউ দৌড়ে এসে অধিরকে জড়িয়ে ধরলো।হঠাৎ এমন হওয়ায় অধির সহ সবাই চমকে গেলো।অধির ভ্রু কুচকে তাকাতেই বুঝতে পারলো এটা দিদাম।এদিকে রোশনি আর পিয়াও ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে।রোশনির কাছে মেয়েটাকে এক নাম্বারের অসভ্য আর বেশরম মনে হচ্ছে।একেতো শরিরে একটু খানি কাপড় তারউপর সবার সামনে কেমন জড়িয়ে ধরে আছে।মেয়েটাকে কেন জানি পছন্দ হলো না রোশনির।অধির বাকা চোখে একবার রোশনির দিকে তাকালো।রোশনিকে ভ্রু কুচকে তাকাতে দেখে তাড়াতাড়ি দিদামকে বুক থেকে সরিয়ে দিলো অধির।

___অধির বেবি,,,,,কেমন আছো বলো….?

দিদামের মুখে বেবি ডাক শুনে চোখ বড় বড় হয়ে গেলো রোশনির।এতো বড় দামড়া ছেলেকে কোন দিক থেকে বেবি মনে হচ্ছে সেটাই ভাবছে রোশনি।পেট ফেটে হাসিও পাচ্ছে।মুখ টিপে হেসে অধিরের দিকে তাকাতেই দেখে অধির চোখ রাঙিয়ে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।সাথে সাথেই হাসি চেপে সোজা হয়ে দাড়ায় রোশনি।অধির এবার রোশনির থেকে চোখ সরিয়ে দিদামের দিকে তাকায়।

___তুমি যে আজ আসছো বলো নি তো আগে..? কাল রাতেও যখন কথা বললাম তখনও তো বললে না…

দিদাম একগাল হেসে বলে উঠলো…

__তোমায় সারপ্রাইজ দেবো দেখেই বলিনি বেবি। ইউ নো হোয়াট….?তোমার এই সারপ্রাইজড মুখটা দেখতে আমার যে কতোটা ভালো লাগে সেটা বলে বুঝাতে পারবো না।

দিদাম আবারো অধিরকে জড়িয়ে ধরতে যাবে তার আগেই আনোয়ারা চৌধুরি সোফা ছেড়ে উঠে দাড়ালেন।ওনার দিকে নজর যেতেই দিদাম ছুটে গিয়ে ওনাকে জড়িয়ে ধরলো।

__কেমন আছো গ্রাম্মা…?

আনোয়ারা চৌধুরিও আলতো হাতে জড়িয়ে ধরলেন।টুক টাক কথা বললেন দিদামের সাথে।তখনি নাতাশা এসে ওনার পায়ে সালাম করতে ঝুকতেই উনি নাতাশার হাত ধরে দাড় করালেন।।তারপর আদুরে গলায় বলে উঠলেন…

__সেই অভ্যাসটা এখনো গেলো না তোর..? কত বার বলেছি পায়ে হাত দিয়ে সালাম করবি না।

নাতাশাও মুচকি হেসে ওনাকে জড়িয়ে ধরলো…

__এসব ছাড়ো তো দাদি।আগে বলো কেমন আছো…?কত মিস করেছি তোমায়।

আনোয়ারা চৌধুরিও মুচকি হেসে নাতাশাকে জড়িয়ে ধরলেন।মেয়েটার মধ্যে মায়ার অভাব নেই।নাতাশাকে তিনি খুবই পছন্দ করেন।কিন্তু দিদামকে তেমন একটা পছন্দ না ওনার।নেহাত অধির নিজে পছন্দ করেছে তাই তিনি কিছু বলতে পারছেন না।নয়তো এই মেয়ের সাথে অধিরের বিয়ে তিনি কিছুতেই দিতেন না।নাতাশা দাদিকে ছেড়ে অধিরের সামনে গিয়ে দাড়াতেই অধির হাত বাড়িয়ে দিলো।আর সাথে সাথে নাতাশা অধিরের বুকে হামলে পড়লো।অধির নাতাশার মাথায় হাত রাখতেই নাতাশা বলে উঠলো….

__ভেবেছিলাম তোর সাথে কথায় বলবো না। পুরো ছয় মাস তুই আমার সাথে যোগাযোগ করিস নি।কিন্তু ওইযে আমার দয়ার শরির।তুই জানিস যে আমার রাগ কিভাবে ভাঙাতে হয়।তাই সেই টেকনিকটাই ইউজ করিস সবসময়।আর আমিও সাথে সাথে গলে যায়…

নাতাশার কথা শুনে মুচকি হাসলো অধির।নাতাশাকে সে নিজের বোনের চাইতে কম ভালো বাসে না।বলতে গেলে নাতাশাই অধিরের বেস্ট ফ্রেন্ড। গত কয়েক মাস মেয়েটার সাথে কনট্রাকই করা হয়ে ওঠেনি।বরাবরের মত জিদ দেখিয়ে নাতাশা নিজেও অধিরকে ফোন বা টেক্সট করে নি।আর যখনই অধির ভুল করে আর নাতাশা ওর উপর রেগে যায় তখন ঠিক এইভাবেই অধির ওর সামনে হাত বাড়িয়ে দাড়ায়।আর নাতাশা অমনি সব ভুলে অধিরের বুকে ঝাপিয়ে পড়ে।নাতাশা অধিরের মধ্যে ওর ভাইকে দেখতে পায়।ওর ছোট্ট ভাইটা বেচে থাকলে হয়তো অধিররের মতোই হতো।অধিরের মতোই ভালবাসতো,,রাগ ভাঙাতো আর আগলে রাখতো।এরপর ওখানে অধিরের মা ঝুমা চৌধুরি আসেন।দিদামকে দেখে তার কি খুশি।দিদামও একগাল হেসে ঝুমা আন্টি ঝুমা আন্টি করতে করতে ওনার কাছে চলে গেলো।এদিকে নাতাশাকে বেশ পছন্দ হলো রোশনির।প্রথম দেখাতেই মনে হলো মেয়েটা ভিষন ভালো।আর সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে অধির আর নাতাশার সম্পর্কটাকে।ওদের বন্ধুত্বটাকে।এর মাঝেই হাতে থাকা ফোনটা কেপে উঠলো রোশনির।ফোনের স্কিনে চোখ রাখতেই দেখতে পেলো জয় ফোন করেছে।সাথে সাথেই ঠোটের কোনে হাসি ফুটলো রোশনির।যা অধিরের চোখের আড়াল হলো না।অধিরের মনে প্রশ্ন জাগলো,,,কে ফোন করেছে..? যার ফোন পেতেই রোশনির ঠোটের কোনে হাসি ফুটলো।তবে কি স্পেশাল কেউ….?

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here