সুইটহার্ট-পর্ব:৭

0
1309

#সুইটহার্ট
#Sohani_Simu
৭.

স্কুল থেকে শ্রাবণ ভাইয়ার সাথে বাসায় ফিরছি।শ্রাবণ ভাইয়া ড্রাইভ করছেন আর আমি উনার পাশে বসে সিটে হেলান দিয়ে চুপচাপ জানালার দিকে তাকিয়ে আছি।হঠাৎই গাড়ি থেমে গেল।আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখি এটা একটা ফাঁকা রাস্তা,আমাদের বাসা আরও অনেক দূরে।শ্রাবণ ভাইয়ার দিকে তাকাতেই উনি আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার গালে কপালে জ্বর চেক করতে করতে বলছেন,
“তোর কি শরীর খারাপ করছে?জ্বর নেই তো।”

আমি বিরক্ত হয়ে উনার হাত সরিয়ে দিয়ে বললাম,”আমি আর স্কুলে যাবোনা।”

উনি আমার দিকে কিঞ্চিত ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বললেন,”হুয়াই?”

আমি কিছু না বলে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে থাকলাম।শ্রাবণ ভাইয়াও আর কিছু বললেন না।উনি আবার ড্রাইভিং শুরু করতেই আমি উনার দিকে তাকিয়ে মুখ মলিন করে বললাম,
“সন্ধ্যায় সব গুলো পড়া শেষ করার পর আমাকে একটু ম্যানার্স শিখাবেন?আপনি না পারলে ভাইয়াকে বলে আরেকটা টিচার নিতে হবে।”

উনি রাস্তার ধারে গাড়ি সাইড করলেন।আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে বললেন,”তোকে কি কেউ কিছু বলেছে?কে কি বলেছে?”

আমি মন খারাপ করে বললাম,”ফ্রেন্ডরা স্কুলের বাগানের কিছু ফুল গাছ চুরি করেছিল ম্যাম আমাকে জিজ্ঞেস করছে তাই আমি সব সত্যি বলে দিয়েছি।ওরা আমাকে রুঢ় বলেছে আর বলেছে মা নেই তাই কেউ নৈতিকতা…….”

এটুকু বলতেই আমি কান্নায় ভেঙ্গে পরলাম।শ্রাবণ ভাইয়া ব্যস্ত হয়ে আমার পাশে এগিয়ে এসে আমাকে একপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,”যে তোকে রুঢ় বলবে সে নিজেই একটা রুঢ় আর মা নেই তো কি হয়েছে?সবার মা থাকতে হবে এমন তো কোন মানে নেই আর তোর যথেষ্ট ম্যানার্স আছে।অন্যদের মতো লোক দেখানো মিথ্যে ম্যানার্স শিখার দরকার নেই তোর।”

উনি দুইহাত আমার গালে রেখে বললেন,”সবাই তো সত্যিগোপন রাখতে ভালোবাসে আর তুই সবার সামনে সত্যি বলে দিস তাই সবাই রাগ করে তোকে রুঢ় বলে।তুই কিন্তু কখনও মিথ্যে কথা বলবিনা।মিথ্যে বলে ডিসেন্ট হওয়ার চেয়ে সত্যি বলে রুঢ় হওয়া অনেক ভাল।আর আন্মুর ডায়েরীতে কি লিখা আছে দেখিস নি?”

আমি কান্না থামিয়ে নাক টেনে বললাম,”আমি সত্যকে ভালোবাসি।সত্য বললে, সত্যের সাথে থাকলে যদি নিজের মৃত্যুও হয় তাহলে আমি সেই মৃত্যুকেও ভালোবাসি।”

উনি টিস্যু দিয়ে আমার চোখ মুছতে মুছতে বললেন,
“মিথ্যে বলবি কখনও?”

আমি বললাম,”কখনও না।”

উনি মুচকি হেসে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বললেন,”তুই আরও রুঢ় হবি,আই লাভ ইউর রুঢ়নেস মাই সুইটহার্ট।”

আমি একটু নড়ে চড়ে বসে বললাম,”আপনি সবাইকে এরকম করে সুইটহার্ট বলেন কেন?”

উনি সামনের দিকে তাকিয়ে বললেন,”আমার একটাই সুইটহার্ট তাকেই বেশি বলতে পারিনা আর তুই বলছিস সবাইকে বলি?”

আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,”সকালে ফোনে কাকে যেন বললেন।”

উনি হালকা হেসে বললেন,”আমার সুইটহার্টকেই বলেছি তুই হয়তো বুঝতে পারিসনি।তুই যা মাথা মোটা আর অবুঝ!”

আমি রেগে বললাম,”আমি মাথা মোটা?আপনার থেকে ভাল স্টুডেন্ট আমি।আপনার রোল নাম্বার যেন কত?আপনি ফেলু ভাই।স্কুলে সব সাবজেক্টে ফেইল করেছেন তাই আপনার রোল অত বেশি।”

উনি মুচকি হেসে বললেন,”তাও আমি তোর থেকে ভাল পড়াশুনা করতে পারি।তুই তো হাইয়ার ম্যাথ কিছুই পারিস না,আমিই সব করে দিই আর কাল ইংলিশ কি যেন বললি।উচ্চারণ করতেই মুখ ভেঙ্গে যাচ্ছিলো তো।”

বলেই উনি হাসতে লাগলেন।আমি রেগে উনার চকচকে সাদা হাতে খামছি দিয়ে দিলাম।উনি আরও বেশি হাসতে লাগলেন।আমি মুখ ফুলিয়ে সিটে হেলান দিয়ে বললাম,

“সৃজনশীল ম্যাথ আমি ভাল পারিনা আর ইংলিশ আপনিই পারেন না।আপনি সাটারডে কে স্যাটার ডেই,
টুয়েসডে কে ঠুইস ডেই আর ওয়েডনেস ডে কে ওয়েন্স ডেই বলেন।আপনার আবার নার্সারি স্কুলে যাওয়া উচিত।”

উনি মুচকি হেসে বললেন,”হুম আমাদের বেইবির সাথে নার্সারিতে যাবো ইনশাআল্লাহ্।”

আমি কৌতুহুলি হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,”আপনার বেবি আছে?এই আপনি বিয়ে করেছেন?লন্ডনে যেয়ে লুকিয়ে বিয়ে করেছেন?আমি ফুপ্পিকে বলে দিবো।”

উনি গাড়ি থামিয়ে সিটবেল্ট খুলে নামতে নামতে রাগী কন্ঠে বললেন,”উল্টা পাল্টা কিছু বলবি তো থাপ্পড়ও খাবি।”

আমিও গাড়ি থেকে নেমে বললাম,”চারটে থাপ্পড়ের প্রতিশোধ এইবার আমি নিয়েই ছাড়বো।”

বলেই আমি বাসার উদ্দেশ্যে এক দৌড় দিলাম।উনি আমার পেছন পেছন হেঁটে আসতে লাগলেন।আমাকে রুমে পৌঁছে দিয়ে তবেই উনি বাসায় যাবেন তারপর সন্ধ্যায় এসে আমাকে রাত দশটা পর্যন্ত পড়িয়ে চলে যাবেন আবার সকাল নয়টায় আমার সাথে স্কুলে যাবেন।আমার এক্সামের কদিন সবাই উনাকে আমাদের বাসাতেই থাকতে বলে কিন্তু উনি থাকেন না।

সন্ধ্যায় বেলকুনিতে বেতের ঝোলাতে বসে বাম হাতের ছিলে যাওয়া কালো চামড়া খুটলে তুলছি আর শ্রাবণ ভাইয়ার জন্য ওয়েট করছি।উনি আসলেই পড়তে বসবো।আজকাল একা একা পড়তে একটুও ভাল লাগেনা কিন্তু অনেকক্ষণ ওয়েট করার পরও শ্রাবণ ভাইয়া আসলেন না তাই আমি টয়কে কোলে নিয়ে শ্রাবণ ভাইয়ার কাছে ফোন দিলাম।উনি কল রিসিভ করতেই আমি বললাম,

“এই মাস্টার কোথায় আপনি?এতক্ষণও আসছেন না কেন?”

উনি বললেন,”আসছি রে বাবা,তুমি হোমওয়ার্ক গুলো করে নাও ততক্ষণ।নিতু,নেয়াজ আর তৌসিও যাবে তাই দেরি হচ্ছে।”

আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,”ওরা আসবে?ইয়ে…তাহলে আজকে ছুটি,আপনার আসার দরকার নেই।”

উনি কিছু না বলে কল কেঁটে দিলেন।আমি ঠোঁট উল্টে ফোন নিয়ে রুমে আসলাম।নিতু আপু আসছে শুনে আমার সবগুলো লিপস্টিক ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে লক করে রাখলাম কারন নিতু আপু ওগুলো দেখলেই নিজের ঠোঁটে লাগায়।আমি আবার অন্যের ঠোঁটে লাগানো জিনিস নিজের ঠোঁটে লাগাতে পারিনা।লিপস্টিক গুলো সামলে রেখে টয়কে নিয়ে আমি ভাবির রুমে গেলাম।ভাবি বেলকুনিতে কারও সাথে ফোনে কথা বলছে দেখে আমি সোফায় বসে টয়কে আদর করতে লাগলাম।হঠাৎই ভাবির কন্ঠে আমার নাম শুনে আমি একটু সজাগ হয়ে ভাবির কথা শোনার চেষ্টা করলাম।
ভাবি বলছে,

“জুঁই তো অনেক ছোট আছে।তোর দুলাভাই এখন ওকে বিয়ে দিবেনা।………..।কি কথা বলবি, জুঁই ওসব কিছু বুঝেনা।……….।প্রেম করবি?……….।তবে আমি বলবো জুঁইয়ের থেকে দূরে থাকিস নাহলে তোর কপালে শনি আছে।…..।ওকে বাই।”

ভাবি রুমে ঢুকতেই আমি বললাম,”কার সাথে কথা বললা ভাবস?আমাকে নিয়ে কি কথা বলছিলা?”

ভাবি অপ্রস্তুত হয়ে বেডে বসে বলল,”তুই সব শুনেছিস?”

আমি টয়কে কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে বললাম,”হ্যা শুনেছি।”

ভাবি হেসে বলল,”আমার কাজিন শুভ ফোন করেছিল।তোর কথা খুব বলে।”

আমি ভ্রু কুচকে বললাম,”আমি চিনি না।”
ভাবি রুম থেকে যেতে যেতে বলল,”চিনার দরকারও নেই।দাদির কাছে যাবো চল।”

আমরা দাদির রুমে এসে গল্পের আসর জমালাম।আটটায় ভাইয়া আর বাবা বাসায় আসলো।বাবা এসেই সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে রহিমা খালাকে চা করতে বলল।বাবাকে আজ খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছে।আমি যেয়ে বাবার পেছনে দাঁড়িয়ে বাবার মাথা ম্যাসাজ করে দিতে লাগলাম।বাবা চোখ বন্ধ করে বলল,

“শ্রাবণ আসেনি আজ?”

আমি বললাম,”না কিন্তু নিতু আপু, নেয়াজ ভাইয়া আর তৌসিকে নিয়ে আসতে চেয়েছেন।”

বাবা চোখ খুলে বলল,”পড়াশুনার কি খবর? ঠিক মতো করছিস তো?”

আমি কিছু বলবো তখনই কলিং বেল বেজে উঠলো।তৌসিরা এসে গেছে ভেবে আমি দৌঁড়ে দরজা খুলতে গেলাম।হাসি খুশি মুখ করে দরজা খুলে দেখি শ্রাবণ ভাইয়া দরজার সামনে খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে আছেন।কালো শার্ট প্যান্ট পরলে উনাকে একটু বেশিই সুন্দর লাগে।আমি উনার দিকে তাকিয়ে আছি দেখে উনি ভ্রু কুচকে বললেন,”কি দেখছিস?সর সামনে থেকে।”

আমি অপ্রস্তুত হাসি দিয়ে বললাম,”তৌসিরা কোথায়?ওরা আসেনি?”

উনি আমাকে সাইডে সরিয়ে দিয়ে ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বললেন,”ওদের নিয়ে আসার থেকে তোকে নিয়ে যাওয়ায় বেটার হবে।তাড়াতাড়ি পড়া শেষ করে চল।”

আমি দরজা লাগিয়ে মন খারাপ করে নিজের রুমে চলে আসলাম।এখন আমার পড়তে একদমই ইচ্ছে করছেনা।কোথায় ভেবেছিলাম সবার সাথে মজা করবো তা নয় এখন এই বোরিং পড়াশুনা নিয়ে পরে থাকতে হবে।শ্রাবণ ভাইয়া বাবার সাথে কথা বলে একটু পরই রুমে আসলেন।আমার পাশে চেয়ার টেনে বসে বললেন,”ম্যাথ বের কর আগে।”

আমার আজ একটুও পড়ার ইচ্ছে নেই।আজ আমি উনার সাথে গল্প করবো কিন্তু কি গল্প করবো বুঝতে পারছিনা।আমি হুদায় উনাকে বললাম,

“আপনার প্রিয় কালার কি ব্ল্যাক?”

উনি উনার শার্টের দিকে একবার দেখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,”হুম,বক বক পরে করবি আগে আজকের পড়া শেষ কর।”

আমি বই বন্ধ করে উঠে দাঁড়িয়ে বললাম,”আচ্ছা আপনি ওদের রেখে আসলেন কেন?আমার একটুও ভাল লাগছে না।আচ্ছা চলুন আজকে আমরা কথা বলি।”

উনি আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে বললেন,”কি কথা বলবি?”

আমি উনার কাছে এসে দাঁড়িয়ে বললাম,”এই ধরুন আপনার প্রিয় ফল,ফুল,পাখি এসব কি?”

উনি মুচকি হেসে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,”মাই ফেভারিট ফ্লাওয়ার ইজ জেসমিন ফ্লাওয়ার।”

আমি অবাক হয়ে বললাম,”জেসমিন?আপনি জানেন জেসমিন মানে জুঁই ফুল?আমার নামও জুঁই আর আপনার প্রিয় ফুলও জুঁই।জেসমিন জুঁই দুটো একই ফুল।ইংলিশে আমার নাম জেসমিন,বাহ!তাহলে আপনার ইংলিশ নাম কি?এপ্রিল মানে বৈশাখ,মে মানে জৈষ্ঠ্য,জুন মানে আষাঢ় আর জুলাই মানে শ্রাবণ।এই আপনার ইংলিশ নেম হলো জুলাই।আপনাকে তাহলে জুলাই ভাইয়া, না জুলাই স্যার বলে ডাকবো।”

উনি হাসতে হাসতে উঠে দাঁড়ালেন।এমন ভাবে হাসছেন যেন আমি কোন কৌতুক বলেছি।আমি মুখ ফুলিয়ে উনার দিকে তাকাতেই উনি হাসি থামিয়ে সিরিয়াস হয়ে আমার দুই গালে হাত রাখলেন।কিছু সময় একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বুড়ো আঙুল দিয়ে আমার ঠোঁট নেড়ে ফিসফিস করে বললেন,

“এত বক বক করো কেন হুম?বেশি বক বক করলে আমার তো এগুলো খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে।হুয়াই সো কিউট!”

বলেই উনি আমার ঠোঁটের কাছে মুখ আনলেন।আমি উনাকে দুই হাত দিয়ে ঠেলে এক ইঞ্চিও সরাতে পারলাম না।একটু পর উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন,

“আজকে ছেড়ে দিলাম কিন্তু এরপর বেশি কিউটনেস দেখালে তোমার এটা গুম করে দিবো।”

আমি ভ্রু কুচকে রুম থেকে আসতে আসতে বললাম,”ভাইয়া কে বলতে হবে তুমি আমার মুখ খেয়ে ফেলতে চেয়েছো।মুখ খেয়ে ফেললে আমি কথা বলবো কি দিয়ে!!”

উনি আমার দিকে আসতে আসতে বললেন,”নো,কাউকে বলবিনা তুই।ওই দাঁড়া,জুঁই?শীট!!!”

কে শুনে কার কথা, আমি এক দৌঁড়ে ভাইয়ার রুমে গেলাম।ভাইয়া বেডের উপর হেলান দিয়ে বসে ল্যাপটপ চালাচ্ছিলো আর ভাবি সোফায় বসে ফোন টিপছিল। আমি যেয়ে ভাইয়ার কাছে বসে বললাম,

“ভাইয়া জানো শ্রাবণ ভাইয়া আমার মুখ খেয়ে ফেলবে বলছে।গুম করে দিতে চেয়েছে।”

ভাইয়া কিছু বলল না।এমন ভাব করলো যেন কিছু শোনেই নি।আমি ভাবির দিকে তাকিয়ে দেখি অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি ভাইয়ার হাত ঝাকিয়ে বললাম,”তুমি শ্রাবণ ভাইয়াকে কিছু বলবানা?মুখ না থাকলে আমি কথা বলবো কি করে আর খাবোই বা কি করে??”

ভাইয়া বিরক্ত হয়ে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে বলল,”এই শিরি দেখো তো ও কি বলছে।ওকে নিয়ে যাও এখান থেকে।আমি ইম্পর্টেন্ট কাজ করছি।”

ভাবি আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে বাহিরে নিয়ে আসলো।আমার রুমে আসতে আসতে বলল,”আরে শ্রাবণ তোকে ভয় দেখিয়েছে।তুই নিশ্চয় পড়া করিস নি,বেশি কথা বলেছিস?”

আমি বললাম,”হুম আমি আজকে পড়তে চাইনি আর অনেক কথা বলেছি।”

রুমে এসে দেখি শ্রাবণ ভাইয়া টেবিলের উপর কনুই রেখে কপাল ধরে বসে আছেন।আমরা যেয়েই বললাম,”ভাইয়া ইম্পর্টেন্ট কাজ করছে তাই আসলো না।এই ভাবস তুমি শ্রাবণ ভাইয়াকে বলে দাও তো আমাকে যেন আর ভয় না দেখায়।”

ভাবি হাসতে হাসতে বলল,”ঠিক আছে বলে দিবো,তুই এখন পড়।তুই না পড়লে শ্রাবণ তো তোকে ভয় দেখাবেই।”

শ্রাবণ ভাইয়া উঠে দাঁড়িয়ে সিরিয়াস হয়ে বললেন,”ভাবি আমি বাসায় গেলাম।”

বলেই উনি চলে যেতে লাগলেন।আমি বেডের উপর থেকে ফোন নিয়ে উনার পেছনে যেতে যেতে বললাম,”আরে আমিও যাবো তো।আমাকেও নিয়ে চলুন।তৌসিরা আসলোনা তাহলে আমাকেই যেতে হবে।”

বকবক করতে করতে আমিও উনার সাথে গাড়িতে এসে বসলাম।পুরো রাস্তা একটার পর একটা কথা বললাম কিন্তু শ্রাবণ ভাইয়া হু হা কিছু বললেন না।একটা কথাও বলেননি উনি।ফুপ্পির বাসায় এসে ফুপ্পিদেরও বলে দিলাম।এত ভয়ঙ্কর কথা কেউ সিরিয়াসলি নিচ্ছে না দেখে আমার রাগ হচ্ছে তাই আর কাউকে কিছু বললাম না।রাতের খাবার খেয়ে বেডের মাঝখানে শুয়ে পরলাম।তৌসি আর নিতু আপু বিরক্ত হয়ে ফ্লোরে বিছানা করে শুয়ে পরলো।আমি একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।

চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here