সুইটহার্ট-পর্ব:৯

0
1286

#সুইটহার্ট
#Sohani_Simu
৯.

দুই কান ধরে দাঁড়িয়ে আছি,শ্রাবণ ভাইয়া আমার সামনে এসে কান ধরা অবস্থায় উনার ফোনে একটা ছবি তুলে নিলেন।তারপর ফোনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন,
“পারফেক্ট!”

আমি এবার ঠোঁট উল্টে নেয়াজ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম,
“ও ভাইয়া আমি সরি বলছি তো।আমি তোমাকে ওয়াশরুমে লক করতে চাইনি আমি তো শ্রাবণ ভাইয়াকে লক করতে চেয়েছিলাম।”

নেয়াজ ভাইয়া হাতে থাকা রুটি বানানো বেলান নেড়ে চেড়ে বলল,”শ্রাবণ ভাইয়াকেই বা কেন লক করবি তুই?আজকে তোর মাইর হবে।”

মাইরের কথা শুনে আমি ভয় পেয়ে গেলাম।মাইর খেতে আমার খুব ভয় লাগে।আমি চিৎকার দিয়ে বললাম,

“ফুপ্পিিিি?নেয়াজ ভাইয়া আর শ্রাবণ ভাইয়া আমাকে মা..”

আর কিছু বলার আগেই শ্রাবণ ভাইয়া আমার মুখ চেপে ধরে বললেন,”এই চুপ,চুপ,ডোন্ট সাউট।শেয়ালের মতো এত চিৎকার করছিস কেন?”

আমি কান ছেড়ে দিয়ে মুখ থেকে উনার হাত সরিয়ে দিয়ে বললাম,
“ইশ!কি শক্ত হাত!আমার মুখই ভেঙ্গে গেল।”

উনি উনার ফোন আমার চোখের সামনে ধরে বললেন,”দেখ তো আমার খরগোশকে কেমন লাগছে?এখন থেকে এটাই আমার ডিসপ্লে পিকচার থাকবে।”

আমি রেগে বললাম,”না!!”

শ্রাবণ ভাইয়া মুচকি হেসে বললেন,”হুম,চল স্কুলে লেট হয়ে যাচ্ছে।”

বলেই উনি আমাকে গাড়ির ভেতরে বসিয়ে দিলেন।আমি গাড়িতে বসে নেয়াজ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে একটা মুখ ভেংচি দিলাম।নেয়াজ ভাইয়া হাতের বেলান উঁচু করে আমার দিকে ছুড়ে দেবার ভান করে বাসার ভেতরে চলে গেল।আসলে কাল আমি শ্রাবণ ভাইয়াকে ভেবে ভুল করে নেয়াজ ভাইয়াকে ওয়াশরুমে লক করে রেখেছিলাম।কাল থেকে আমি ওদের থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।সকালে আর পালাতে পারলাম না।ওয়াশরুমে দশমিনিট লক করে রাখার অপরাধে নেয়াজ ভাইয়া আমাকে দশমিনিট কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল আর শ্রাবণ ভাইয়ার ফোনের ডিসপ্লে পিকচার চেন্জ করে দেওয়ার অপরাধে উনি আমার কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি উনার ডি.পি করে দিলেন।

বিকেলে আমার বেস্টফ্রেন্ড হেমার সাথে কথা বলতে বলতে ছাদে এসে দেখি শ্রাবণ ভাইয়া আর নিতু আপু ঝগড়া করছে।নিতু আপু খপ করে শ্রাবণ ভাইয়ার হাত ধরে বলল,
“আমিও যদি ওর মতো বাচ্চামি করি তাহলে তুৃমি ওকে ছেড়ে দিবে?”

শ্রাবণ ভাইয়া হাত ঝারা দিয়ে রেগে কিছু বলতে লাগলো তখনই আমি দৌঁড়ে যেয়ে বললাম,
“এই তোমরা এভাবে ঝগড়া করছো কেন?

আমি নিতু আপুর হাত ধরতেই আপু আমার হাত খুলে নিয়ে আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে ধপ ধপ করে হেঁটে চলে গেল।আমি এক হাতে ফোন নিয়ে আপুর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।হঠাৎ শ্রাবণ ভাইয়া আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন।আমি হকচকিয়ে লাফিয়ে উঠে বললাম,
“এই,এই শ্রাবণ ভাইয়া কি করছেন।ছাড়ুন!উফ!ছাড়ুন!”

উনি আমাকে ছাড়ছেন না দেখে উনি যেই হাত দিয়ে আমার গলার নিচ দিয়ে কাঁধ ধরে আছেন সেই হাতে জোড়ে কামড় দিলাম।উনি তাও ছাড়লেন না,উনি আমার মাথার উপর উনার থুতনি রেখে দাঁড়িয়ে আছেন।আমি ঘাড় ঘুড়িয়ে উনার দিকে তাকিয়ে দেখি উনি মুচকি হাসছেন।আমি রেগে উনাকে বললাম,

“এই ছাড়ুন আমাকে।এভাবে ধরে আছেন কেন?”

উনি তাও ছাড়ছেন না আমি রেগে আবার উনার হাতে কামড় দিতেই উনি আমাকে এক ঝটকায় নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলেন আর আমার হাত থেকে ফোনটা পরে গেল।উনি উনার একহাত দিয়ে আমার দুইহাত আমার পেছন দিকে ধরে অন্যহাত দিয়ে আমার মুখের উপরের চুলগুলো সরাতে লাগলেন।আমি রাগী মুখ করে আমার দুই হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছি আর বলছি,

“আমার ফোনের যদি কিছু হয় তোর থেকে নতুন একটা কিনে নিবো।আমার হাত একবার ছেড়ে দিয়ে দেখ তোর চুল সব ছিড়ে দিবো আর তোর…..”

আর কিছু বলার আগেই উনি আমার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলেন।আমি চোখ বড় বড় করে মাথা পেছনে সরিয়ে আনতে চাইছি কিন্তু পারছিনা কারন উনি একহাতে আমার ঘাড়ের পেছনে চুলের মধ্যে দিয়ে ধরে আছেন।অনেকক্ষণ পর উনি আমার ঠোঁটে জোড়ে একটা কামড় দিয়ে ছেড়ে দিলেন।ব্যাথায় আমার কান্না চলে এসেছে।উনি আমার হাত ছেড়ে দিতেই আমি উনার বুকে কিল ঘুষি দিতে দিতে বললাম,

“আমি এক্ষণি ফুপ্পিকে বলে দিবো।”

উনি আমার দুই হাত ধরে দুষ্টু হেসে বললেন,”কি বলবা?”

আমি রেগে বললাম,”তুই আমার ঠোঁটে কামড় দিয়েছিস।সবাইকে বলে দিবো আমি।তারপর দেখ ফু্প্পি তোকে কেমন করে পেটাই।”

উনি মুচকি হেসে বললেন,”তাহলে আমিও সবাইকে বলে দিবো তুমি আমার হাতে দুবার কামড় দিয়েছো।”

আমি রেগে উনার হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে দৌঁড় দিলাম।ছাদ থেকে সোজা নিচে এসে ফুপ্পিকে নিয়ে শ্রাবণ ভাইয়ার কাছে আসলাম।তৌসিও আমাদের পেছন পেছন আসলো।উনি এখনও ছাদেই একটা বেতের চেয়ারে বসে আমার ফোন টিপছেন।আমি ফুপ্পিকে বললাম,

“তুমি এখনই শ্রাবণ ভাইয়াকে মাইর দিবে।শ্রাবণ ভাইয়া আমার ঠোঁটে অনেক জোড়ে কামড় দিয়েছে,এর আগেও চারটে থাপ্পড় দিয়েছে।”

ফুপ্পি একহাতে আমার মাথা নেড়ে বলল,”তুই নিচে যা আমি ওকে বকে দিবো।তৌসি ওকে নিচে নিয়ে যা।”

“না তুমি এখনই.. “,বলতে বলতে তৌসি আমাকে টেনে নিয়ে নিচে যেতে লাগলো।তৌসির শক্তির সাথে পারছিনা দেখে আমার আরও বেশি রাগ হলো।দুই ভাই বোন কি পেয়েছে কি এরা আমাকে?নিচে এসে দুই কোমড়ে হাত দিয়ে মুখ ফুলিয়ে তৌসির দিকে তাকিয়ে থেকে আমি দ্রুত পায়ে হেঁটে বাসা থেকে বের হতে লাগলাম।তৌসি আমার পেছন পেছন আসতে আসতে বলল,
“কোথায় যাচ্ছিস?বাগানে চল পেয়ারা পেরে নিয়ে আসবো।তুই যা আমি নেয়াজ ভাইয়াকে নিয়ে আসছি।”

তৌসি চলে গেল আমি রাগ করে বাসা থেকে বেড়িয়ে রাস্তায় চলে আসলাম উদ্দেশ্য আমাদের বাসায় যাবো।হাঁটতে হাঁটতে অনেকদূর চলে এসেছি।এভাবে হাঁটলে আমাদের বাসায় যেতে আরও ত্রিশ মিনিট সময় লাগবে।এদিকে সন্ধ্যা হয়ে গেছে তাই ভাবলাম রিক্সা নিই কিন্তু আমার কাছে তো টাকা নেই।প্যান্টের পকেটে খুঁজে পঞ্চাশ টাকার একটা নোট পেলাম।আমার খুশি আর দেখে কে,সঙ্গে সঙ্গে একটা রিক্সা ডেকে উঠে পড়লাম।দশমিনিট পর বাসায় এসে রিক্সা থেকে ধীরে সুস্থে নেমে বললাম,”এই মামা ভাড়া কত?”

উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,”চল্লিশ টাহা খালাম্মা।”

আমি উনাকে পঞ্চাশ টাকা দিয়ে ফেরত না নিয়ে বাসায় চলে আসলাম কিন্তু বাসায় এসেই আমার মুখ শুকিয়ে গেল কারন বাসায় কেউ নেই।আমার কাছে বাসার চাবিও নেই আর ফোন ও নেই তাই কাউকে ফোনও দিতে পারছিনা।দরজার সামনে কিছুক্ষণ পাইচারি করে নিচে চলে আসলাম।পুল সাইটের দিকে চেয়ারে কিছুক্ষণ মুখ ফুলিয়ে বসে থেকে ভাবলাম অন্ধকার হয়ে আসছে আমি বরং লীনা অ্যান্টির কাছে যাই।তারপর ওদের ফোন থেকে বাবাকে ফোন দিবো।আমি উঠে গিয়ে লিফটের সামনে দাঁড়ালাম।লিফট এখন আটতলায় আছে নিচে নামছে।আমি ভাবনিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম।সিকিউরিটি গার্ডের নামে বাবাকে কমপ্লাইন জানাতে হবে কারন আমি আসার পর থেকে দেখছি উনি উনার জায়গায় নেই।লিফট নিচে আসতেই আমি দরজার কাছে এগিয়ে গেলাম।দরজা খুলতেই শ্রাবণ ভাইয়াকে দেখে আমি হকচকিয়ে গেলাম।উনি আমাকে দেখে বুকে হাত দিয়ে একটা দম ছেড়ে লিফটের দেয়ালে এক হাঁটু ভাজ করে হেলান দিয়ে দাঁড়ালেন।আমার দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে কপালে পরে থাকা এলোমেলো সিল্কি চুলগুলো মাথার উপর ঠেলে তুলে দিলেন।উনাকে দেখে মনে হচ্ছে উনি যেন নিজের জীবন ফিরে পেয়েছেন।তারপর উনি শাহরুখ খানের মতো করে দুই হাত প্রসারিত করে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
“কাম”

উনি এভাবে আমাকে হাগ করতে ডাকছেন।উনার এটিটিউড দেখে আমি মুখ ভেংচিয়ে সিঁড়ির দিকে হাঁটা দিলাম।উনি দৌঁড়ে এসে আমাকে কোলে নিয়ে গাড়ির দিকে যেতে যেতে বললেন,

“কাউকে কিছু না বলে একা একা কেন এসেছিস এখানে?

আমি উনার উপর রেগে আছি তাই কোন কথা বললাম না উনার সাথে।উনি আমাকে গাড়িতে বসিয়ে সিটবেল্ট বেঁধে দিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে ড্রাইভ করতে লাগলেন।একবার আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,

“তুমি বলতে না সবার বয়ফ্রেন্ড আছে শুধু তোমারই নেই তোমারও একটা বয়ফ্রেন্ড লাগবে।আজ থেকে আমি তোমার বয়ফ্রেন্ড আর তুমি আমার সুইটহার্ট ওকে?”

আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,”না, ভাইয়া বলেছে কলেজে উঠার আগে কোনো বয়ফ্রেন্ড বানানো যাবে না আর আমি রকিকে প্রমিস করেছি কলেজে উঠলে ওকেই সবার আগে বয়ফ্রেন্ড বানাবো।তাছাড়া সিজানও বলেছে আমি কলেজে উঠলে ও ওর গার্লফ্রেন্ডের সাথে ব্রেকআপ করে আমাকে গার্লফ্রেন্ড বানাবে।এছাড়াও শৈল ভাইয়া,প্রিন্স ভাইয়া আপনার আগের থেকে বলে রেখেছে।আপনার মতো খারাপ লোককে আমি কখনও বয়ফ্রেন্ড করবো না।”

উনি মুখ মলিন করে আমার দিকে তাকিয়ে আবার সামনে তাকিয়ে বললেন,”আমি তোমাকে প্লেনে করে ঘুরতে নিয়ে যাবো তাও আমাকে বয়ফ্রেন্ড বানাবা না।”

আমি একটু নড়ে চড়ে বসে আগ্রহী হয়ে উনার দিকে তাকিয়ে বললেন,”অহ প্লেন?আমার তো মনেই ছিল না।ঠিক আছে ঠিক আছে তাহলে আপনাকেও বয়ফ্রেন্ড বানাবো।”

উনি গাড়ি সাইড করে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন,”তাহলে এখন থেকে আমি তোমার বয়ফ্রেন্ড।”

আমি না সূচক মাথা নাড়িয়ে বললাম,”না না এখন থেকে নয়।আগে আমি কলেজে উঠি তারপর আপনার আগে যারা বলে রেখেছিল তাদেরকে বয়ফ্রেন্ড করবো তারপর আপনাকে।”

উনি বললেন,”না সবার আগে আমি আর এখন থেকেই নাহলে প্লেনে ঘুরতে যাওয়া ক্যান্সেল।”

আমি একটু চিন্তায় পরে গেলাম। একদিকে ভাইয়াকে বলেছি কলেজে উঠার আগে বয়ফ্রেন্ড বানাবো না অন্যদিকে রকিকে প্রমিস করেছি ওর আগে কাউকে বয়ফ্রেন্ড বানাবো না কিন্তু শ্রাবণ ভাইয়াকে এখনই বয়ফ্রেন্ড না বানালে উনি প্লেনে ঘুরতে নিয়ে যাবেননা বলছেন।কি যে করি!আমাকে ভাবতে দেখে উনি আবার ড্রাইভ করতে লাগলেন।আমি রাস্তার দিকে তাকিয়ে ভাবতে ভাবতে হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠে বললাম,

“এই আপনার তো বিয়ে হয়ে গিয়েছে আর বেবিও আছে আপনাকে তো আর বয়ফ্রেন্ড বানানো যাবে না।ইশ!ফুপ্পিকে আপনার বিয়ের কথা বলতে একদমই মনে ছিল না।কোথায় যাচ্ছেন?তাড়াতাড়ি,তাড়াতাড়ি আপনাদের বাসায় চলুন।”

উনি ভ্রু কুচকে সামনের দিকে তাকিয়ে ড্রাইভ করতে লাগলেন।উনাকে দেখে মনে হচ্ছে উনার মন খারাপ।পুরো রাস্তা আর একটা কথাও বললেন না।উনাদের বাসায় এসে দেখি আমার বাসার সবাই এই বাসায় সোফায় বসে আড্ডা দিচ্ছে।সবাই এখানে আছে দেখে আমি সেদিকে এগিয়ে গিয়ে গলা ঝারা দিয়ে বললাম,

“এই তোমরা সবাই আমার কথা শোনো।আমি তোমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা সত্যি জানাবো।তোমরা কি জানো শ্রাবণ ভাইয়া লন্ডন গিয়ে লুকিয়ে বিয়ে করেছে আর একটা বেবিও আছে?”

আমার কথা শুনে সবাই অবাক।আমি হাসি মুখ করে পেছন ফিরে শ্রাবণ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি উনি সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যাচ্ছেন।আমি সবার দিকে তাকিয়ে বললাম,
“শ্রাবণ ভাইয়া তো চলে যাচ্ছে তোমরা কেউ কিছু বলবা না?”

সবাই আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগলো।তারপর আমাকে নিয়ে বসে অনেক যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিল যে শ্রাবণ ভাইয়া কখনও বিয়ে করেননি আর উনার কোন বাচ্চাও নেই।উনি আমাকে উনার ফিউচার বেবির কথা বলেছিলেন।আমি ঠোঁট উল্টে সবার কথা বিশ্বাস করে নিলাম।

রাতে ফ্লোরে শুয়ে সিলিং এর দিকে তাকিয়ে আছি।ডিম লাইটের হালকা সবুজ আলোই সাদা সিলিংটা দেখতে খুব সুন্দর লাগছে।নিতু আপু আর তৌসি বেডে আছে আর আমাকে ফ্লোরে নামিয়ে দিয়েছে।এই নিতু আপুর কি হয়েছে কিছু বুঝতে পারছিনা।আপু আমার সাথে ভাল করে কথা বলছেনা আর আমি কথা বললেও রেগে যাচ্ছে।অন্যদিকে শ্রাবণ ভাইয়াও সন্ধ্যার পর থেকে আমার সাথে কথা বলছেন না।আমি উনাকে সরি বলতে উনার রুমে গিয়েছিলাম উনি আমাকে রুম থেকে বের করে দিয়ে মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।ছোট ফুপ্পিরা কাল সকালে যশোর চলে যাবে তাই আজ সবাই রাত এগারোটার মধ্যেই ঘুমিয়ে গিয়েছে।কাল ছোট ফুপ্পি,নিতু আপু,নেয়াজ ভাইয়া চলে যাবে জন্য আমার মন খারাপ লাগছে আবার স্কুলে যাবোনা সেজন্য আনন্দও হচ্ছে কিন্তু এখন আমার একা একা ভাল লাগছে না।তাই ফোন নিয়ে ডাটা অন করলাম আর সাথে সাথেই হেমার মেসেজ আসলো।হেমার মেসেজ দেখতে যেয়ে দেখি শ্রাবণ ভাইয়া অনলাইনে আছেন।রকিও আছে আর আমি আসার সাথে সাথে ও আমাকে মেসেজ দিয়েছে “জানু তোমার বিল্লি তোমাকে খুব মিস করছে আর আমিও”।আমি একটা রাগী রিয়্যাক্ট দিয়ে লিখলাম ”মর কুত্তা”।তারপর শ্রাবণ ভাইয়াকে মেসেজ দিলাম “শ্রাবণ ভাইয়া”।উনি শুধু দেখে রেখে দিলেন আমাকে কিছু বললেন না।আমি আবার লিখলাম “কি করছেন??” “আপনার ঘুৃম পাচ্ছে না?” “আমারও ঘুম পাচ্ছে না।” “ধূর আপনি কথা বলছেন না,রকিকে একটা মেসেজ দিলে রকি আমাকে দশটা মেসেজ দেয়।এখনও দিতেই আছে।আপনি একটা পচাঁ ভাইয়া।”

মেসেজটা উনাকে সেন্ড করে রকির আইডিতে ঢুকে ওকে মেসেজ দিবো তখনই কি যেন একটা হয়ে গেল।একটু পরে বুঝলাম রকি ব্লক হয়ে গেছে কিন্তু আমি তো কিছু করিনি।ধীরে ধীরে সবাই বক্ল হয়ে গেল শুধু শ্রাবণ ভাইয়া বাদে।আমি আবার সবাইকে আনব্লক করতে লাগলাম।একটু পর আমার আইডিতে সামথিং ওয়েন্ট রং দেখাতে লাগলো।এখন আমি আমার আইডিতেই ঢুকতে পারছিনা।শ্রাবণ ভাইয়া আমাকে ফোন করলেন।আমি রিসিভ করে কানে ধরতেই উনি বললেন,

“চুপচাপ বেডে গিয়ে তৌসি আর নিতুর মাঝখানে শুয়ে
ঘুমিয়ে পরো,রাতে ফ্লোরে অনেক ককরোচ বের হয়।ওকে গুড নাইট মাই সুইটহার্ট,হ্যাভ আ সুইট ড্রিম।”

বলেই উনি কল কেটে দিলেন।আমি ফোন ফেলে দিয়ে ককরোচের ভয়ে লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম।বালিশ তুলে নিয়ে বেডের মাঝখানে নিতু আপুকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরলাম।

চলবে…………….!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here