সুখের_সন্ধানে পর্ব_২৩

0
402

#সুখের_সন্ধানে
#পর্ব_২৩

মেহরাব এখন অনেকটাই মানিয়ে নিয়েছে এই পরিবেশে। দেখতে দেখতে প্রায় বছর পেরিয়ে গেছে এ বাড়িতে আসার। সেলিম আর আমার শাশুড়ি কখনো কিছু বললেও তেমন গায়ে মাখে না আর। বাবার কাছে মাঝে মাঝে যায়। তবে থাকে না কখনো। দূরে থাকতে থাকতে বাবা ছেলের মাঝে এখন বেশ তফাৎ । পারুলের একটা ছেলে হয়েছে। তাকে নিয়ে আদিখ্যেতার শেষ নেই স্বামী স্ত্রী দুজনেরই। মাঝে মাঝে ভেবে অবাক হই। কার সংসার , কার থাকার কথা অথচ কে থাকছে। পারুল তার আগের সংসারের ছেলে সাদমান আর ছোটো ছেলে রাদমানকে নিয়ে টুম্পার সাজানো সংসারে রাজত্ব করছে। এখন আসাদও ব্যবসায় বাণিজ্য নিয়ে কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। এই সুখের দিনগুলিতে আমার বোনটা নেই। এই দিন দেখার জন্য কত সাধনা করেছে টুম্পা। অথচ আজ সবকিছুর পেছনে ওর অবদান থাকা স্বত্তেও কোথায় টুম্পা আর কোথায়ই বা টুম্পার আদরের দুই সন্তান মিথিলা আর মেহরাব! বুক চিড়ে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। পৃথিবীটা আসলেই মায়া। দু’দিনের মেহমান হয়ে কত মায়া , কত মোহে জড়িয়ে কত শত অন্যায় করছি প্রতিনিয়ত। হায়রে সাধের জীবন ! হায়রে বাহাদুরি!

আমাদের সিলেটের ব্যবসায়ে থেকে হঠাৎ একের পর ধ্বসের খবর আসছে। ওখানে কোটি কোটি টাকা ইনভেস্ট করা হয়েছে। বিশাল বড় সিমেন্ট ফ্যাক্টরি। এই অফিসের কিছু দায়িত্ব আমার শ্বশুর বেঁচে থাকতেই আমাকে দিয়ে গিয়েছিলেন। আমি নিয়মিত অফিসে না গেলেও অনলাইনে সব খোঁজখবর ঠিকই রাখছি। জরুরী মিটিংগুলিও অনলাইনে সেরে ফেলি। গতবছরের আগ পর্যন্ত অবশ্য আমি প্রচুর একটিভ ছিলাম এখানে। কীভাবে কীভাবে যেন আগের থেকে একটু ঢিলেমি দিয়ে কিছুটা দূরে সরে এসেছি। আসল কথা হলো ম্যানেজমেন্ট। সেলিমও আর আগের মতো একটিভভাবে কাজ করছে না। মানুষ দিয়ে কী আর সব পার্ফেক্টভাবে সম্ভব? ব্যবসায়ের একের পর এক এমন লসের খবর শুনে সেলিমের মতো আমারও মাথায় হাত! বিশাল বড় লোনের বোঝা মাথায় এই ব্যবসায়ের জন্য। কয়েক’শ কোটি টাকার ব্যবসায়। কিন্তু এভাবে যদি চলতে থাকে অন্য ব্যবসায়ের উপরও প্রভাব পড়বে খুব অল্প দিনেই। সেলিম অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিলো সে আপাতত নিজেই সিলেটে যেয়ে ব্যবসায় হ্যান্ডেল করবে। সব সমস্যার একটা যথাযথ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকাটাই এই মুহূর্তে তার খুবই প্রয়োজন। ঢাকায় হেড অফিসে সেলিমের দায়িত্ব পড়ল প্রিয়র ঘাড়ে। এতদিন বাবার সহকারী হিসেবে কাজ করে বেশ হাত পাকিয়েছে। প্রিয় এখন পড়াশুনা শেষ করে পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী। আর ব্রাঞ্চ অফিসে আছে সেলিমের ছোটো ভাই সজল। সিলেটের অফিসের ফিন্যান্সিয়াল সাইডের ডিটেইলস আমার নখদর্পণে। এত বছর এই সাইডটা আমি সামলেছি। প্রতিদিনের আয় ব্যয় সব আমাকেই দেখতে হয়েছে টানা আট বছর। আব্বা মারা যাবার পর দায়িত্ব থেকে কিছুটা দূরে সরে গিয়েছিলাম। কিন্তু এখন যে অবস্থা দেখছি তাতে দূরে থাকাটা সম্ভব নয়। এই সব ব্যবসায় আমার শ্বশুরের অনেক স্বপ্নের , অনেক সাধনার। এগুলি এভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে চোখের সামনে আমি কেন যেন ভাবতেই পারছি না। জানিনা আদৌ কিছু করতে পারব কি না! তবে আমার সীমিত জ্ঞানটুকু কাজে লাগাতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে । কেন যেন মনে হচ্ছে আমি যদি কিছুই না করি তবে হয়ত আমার শ্বশুরের আত্মা কষ্ট পাবে। সেলিমের যথেষ্ঠ জ্ঞান আছে , বুদ্ধি আছে । কিন্তু তার সমস্যা সে প্রচণ্ড অস্থির! বিপদের সময় হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। সবসময় আমার শ্বশুর তার মাথার উপর গাইড ছিলেন বিধায় কখনও এমন পরিস্থতি তাকে ফেস করতে হয়নি।

সিদ্ধান্ত নিলাম আমিও সেলিমের সাথে সিলেট যাব। আম্মাকেই প্রথমে এ কথা জানালাম । আম্মাও এ নিয়ে ভীষণ অস্থির। আম্মা জানেন আমি যখন সেলিমের থেকে আলাদা হয়ে এ বাড়িতে ছিলাম তখন আমার শ্বশুরের সাথে সিলেটের ব্যবসায় বাণিজ্যের অনেক খোঁজখবর রাখার পাশাপাশি বেশ কিছু দায়িত্বও পালন করেছি খুব ভালোভাবে। তাই সবকিছু চিন্তা করে তিনি অনুমতি দিলেন সিলেটে যাবার। আমাকে আশ্বস্ত করলেন ঢাকার বাসার সবকিছু সে দেখে রাখতে পারবে। তাছাড়া আমার শাশুড়ি এখন বেশ ভরসা করেন মিথিলার উপর। মিথিলা পড়াশুনার পাশাপাশি ঘর গৃহস্থালিতেও খুব দক্ষ হয়েছে দিনদিন। মিথিলা সবশুনে মন খারাপ করলেও সবদিক ভেবে আমাকে নিশ্চিন্তে সিলেটে যাবার জন্য বলল।
সেলিমের কাছে সিলেটে যাবার কথা বললে প্রথমে রাজী না হলেও পরে যখন বুঝিয়ে বললাম তখন সে রাজী হলো। সেলিম শুরু থেকেই ব্যবস্থাপকীয় কাজবাজ সামলালেও ফিন্যান্সিয়াল সাইডের ডিটেইলস আমিই দেখতাম । আব্বার পাশে বসে সবকিছু দেখতে দেখতে সবকিছু এখন মোটামুটি আমার নখদর্পণে। সেলিমও এ কথা ভালো করেই জানে। তাই হয়ত এই মুহূর্তে তার একজন সহকারী হিসেবে আমাকে ভাবতে সে আর অগ্রাহ্য করল না।

আগামীকালই আমরা রওয়ানা হচ্ছি। মিথিলা , মেহরাব , প্রিয়কে ডেকে সবকিছু বুঝিয়ে দিলাম। যার যার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিলাম। আম্মা আমাদের বারবার আশ্বস্ত করলেন ঢাকার সবকিছু সে ঠিকঠাক দেখে রাখবেন । ওদের নিয়ে চিন্তা করতে মানা করলেন। তাছাড়া সিলেট তো বেশি দুরত্বের পথ না। তাই কিছুটা চিন্তামুক্ত হলাম । সিলেট যাবার জন্য প্রয়োজনীয় গোছগাছ সেরে নিলাম খুব তাড়াতাড়ি করে। মিথিলাও আমাকে সাহায্য করছিল। ভীষণ মন খারাপ মেয়েটার। হওয়াই স্বাভাবিক। এই প্রথম এ বাড়িতে আমাকে ছাড়া থাকছে। ওকে আমার শাশুড়ি আর মেহরাবের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে কিছুটা নির্ভার হলেও ওকে নিয়ে ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেলাম। মেয়েটা একা সব দিক সামলে নিজের পড়াশোনা করায় মনোযোগ দিতে পারবে তো! আমার গাড়ি আর ড্রাইভারকে রেখে গেলাম মিথিলা আর মেহরাবের ডিউটি করার জন্য।
মোটামুটি সব গোছগাছ শেষ করে প্রিয়র রুমে গেলাম। দরজা একটু খোলাই ছিল। প্রিয় রকিং চেয়ারে বসে খুব আয়েশ করে কারো সাথে কথা বলছিল। আমি বুঝতে পারলাম বিন্দু নামের ওই মেয়ের সাথেই কথা বলছে। এই এক বছর ধরে ছেলেটাকে বলছি ওর সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিতে কিন্তু কেন যে দিচ্ছে না বুঝতে পারছি না। তবে সম্পর্ক যে বেশ গড়িয়েছে সে আমি বেশ টের পাচ্ছি। আমি একটা কাশি দিয়ে ওর পাশে দাঁড়ালাম ।

– আম্মু, তুমি? ঘুমাওনি এখনো?

– তুমিও তো ঘুমাওনি। সকালে অফিস আছে তো! এত রাত জাগলে অফিসে যেয়ে খারাপ লাগবে তো!

– – এই তো এখনি ঘুমাবো। একটু দেরি হয়ে গেল। কিছু বলবে আম্মু। বসো না , প্লিজ!

– তেমন কিছু বলব না। তোমাকে দেখতে এলাম এই তো! আর তোমাকে আরেকটা দায়িত্ব দিব, বাবা। আমি কবে ফিরি কী জানি! বাবা, আমি খুব চিন্তা হচ্ছে মিথিলার জন্য। মেয়েটা খুবই সোজাসরল তা তো তুমি জানোই। এই কঠিন দুনিয়ায় চলতে গেলে এতটা সহজসরল হলে কী চলে? কিন্তু ও মনে হয় না কোনোদিন বদলাবে! আমি সবার সামনে এই দায়িত্বটা তোমাকে দেই নি। কে আবার কীভাবে নেয় তাই। বাবা, আমার অবর্তমানে মিথিলার সব দায়িত্ব আমি তোমাকে দিয়ে যেতে চাই। ওর ভার্সিটির খোঁজখবর আমি ক’দিন বাদে বাদেই নিতাম । এখন কে নিবে বলো! একটু ওর পড়াশুনার খোঁজখবর যদি নিতে পারতে সপ্তাহে একবার! আর ওর পরীক্ষার প্রস্তুতির দিকেও একটু খেয়াল রেখ। তাছাড়া মেয়েদের আরো কত রকমের সমস্যা রয়েছে। তুমি একটু ওর সুবিধা অসুবিধা সম্মন্ধে খেয়াল রাখবে, বাবা।

– ঠিক আছে , আম্মু। কথা দিলাম। তুমি নিশ্চিন্তে থাকো একদম।

– চিন্তা কমিয়ে দিলে , বাবা।

মিথিলা আজকাল ঘর গৃহস্থালি নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। বাসার সব চাকর বাকর এখন ওর ইশারায় চলে। কোন বেলায় কী রান্না হবে ওকেই ঠিকঠাক করতে হয়। অবশ্য সব ক্ষেত্রে সে তার দাদীর পরামর্শ নিয়েই করে। প্রিয়র দাদি আগের মতো খুব বেশি উপর নিচ করতে পারে না। খাবার ওয়াক্ত ছাড়া সে নিচে নামে না একদমই। মিথিলা মেহরাবের দিকেও খুব খেয়াল করছে। ওর পড়াশোনা নিয়ে খুব ভাবে সে। দাদীর কখন কী লাগবে , কী খাবে সব ব্যাপার নিয়ে মাথা খাটায় সে।
ইদানিং প্রিয় বেশ রাত করে বাসায় ফেরে। প্রিয় না ফেরা পর্যন্ত সে জেগে থাকে। প্রিয় বেশ আগে থেকেই নিয়ম করে ক্লাবে যায়। হালকা পাতলা ড্রিংক করে এটাও সবাই জানে। তবে অবশ্যই লিমিটের ভেতরে থাকে সে। কখনো মাতলামি করেছে বলে মিথিলার মনে পড়ে না। ইদানিং প্রিয়র দেরি করে বাসায় ফেরাটা মিথিলার ঠিক ভালো ঠেকছে না। একবার ভেবেছে ব্যাপারটা সে তার রূম্পা মাকে জানাবে কিন্তু জানাল না। রূম্পা মা ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করছে আজকাল। আবার নতুন টেনশান দিতে মন চাইল না তার।

আজ প্রিয় রাত দুইটার সময় বাসায় ফিরে দেখে সবাই ঘুমিয়ে গেছে। বাসা একদম চুপচাপ। কিছুটা চিন্তামুক্ত হলো। আজ প্রয়োজনের চেয়ে কিছুটা বেশিই ড্রিংক করে ফেলেছে সে। সাথে ড্রাইভার না থাকলে বাসায় আসতে বেশ বেগ পেতে হতো তাকে। তবে আসতে আসতে এখন নেশা কেটেছে অনেকটকাই। তবে শরীর থেকে দুর্ঘ্রাণ ভুরভুর করে বেরুচ্ছে।
সিড়ি দিয়ে উঠতে যাবে তখন মিথিলার ডাকে প্রিয় চোর ধরা পড়ার মতো করে ঘুরে দাঁড়াল ।

– কিরে ঘুমাস নি?

– না , ভাইয়া! তুমি আজ এত দেরি করলে যে?

– এই তো একটু দেরি হয়ে গেল!

– খাবে না। ফ্রেশ হয়ে এস । আমি খাবার দিতে বলছি।

– নারে খেয়ে এসেছি। আজও খাবো না।

– ওহ!

মিথিলা চলে যাচ্ছিল তখন কী মনে করে প্রিয় বলল, কিরে তুই খাসনি? কেমন মুখ শুকনা মনে হচ্ছে।

– না , মানে!

– না মানে কী? খাসনি তাই তো! কিন্তু খাসনি কেন রে, গাধা?
– তুমি খাওয়ার পর খাই আমি।

– কেনো? আমার পেটের সাথে তোর পেট কী বাঁধা? যাহ, খেয়ে নে!

– না ,ভাইয়া। ভীষণ ঘুম পাচ্ছে। আজ আর খাব না বলে মিথিলা রুমের দিকে রওয়ানা হলো।

– প্রিয় এসে পথ আটকাল। বললেই হলো? আমি তো প্রায়দিনই খেয়ে আসি আর তুই এভাবে প্রতিদিনই না খেয়ে থাকিস? ডিসগস্টিং! চল খাবি!

– কিছুটা ইতস্তত করে মিথিলা আস্তে করে বলল, আমার কথা বাদ দাও। ভাইয়া , তুমি এসব কেন খাও? রূম্পা মা জানলে কতটা কষ্ট পাবে তুমি জানো?

– তুই কিছু বলেছিস নাকি কিছু আম্মুকে?

– না এখনো বলিনি। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে আমি কতক্ষণ মুখ বন্ধ রাখতে পারব জানি না। তুমি তো সবই জানো। নিজেই কেন নিজের এমন ক্ষতি করছ?

– আরেহ! এই তো অল্পসল্প খাই। বেশি না একদমই। দেখেছিস আমি কতটা হুশে আছি। আমাকে কী মাতাল মনে হয়? একদমই না!

– কিন্তু একটু একটু করতে করতে তো তুমি ধীরেধীরে আরো বেশি ড্রিংক করছ। এই একমাসে অনেক বদলেছ তুমি! কী এমন হলো যে তুমি এমন হয়ে গেলে?

– আরেহ, কিছুই হয়নি। চল খাবি।

– খাওয়ার ইচ্ছা নেই। তুমি শুয়ে পড়ো।

– সত্যিই খাবি না?

– না , বলছি তো! তোমার শরীর থেকে যেভাবে গন্ধ আসছে তাতে আমি কিছু মুখে দিলে বমি চলে আসবে! সরি , কিছু মনে করো না , ভাইয়া।

মিথিলা হনহন করে রুমের দিকে চলে গেল। ক’দিন ধরেই প্রিয়কে এ কথা জিজ্ঞেস করবে করবে করে সাহস পাচ্ছিল না। আজ অনেক সাহস করে সে জিজ্ঞেস করেই ফেলল। নিজের সাহস দেখে নিজেই অবাক মিথিলা। প্রিয় আবার কী থেকে কী বলে! ভীষণ ভয় পায় মিথিলা তাকে। তাই আর কিছু শোনার আগেই পালিয়ে বাঁচল তখনকার মতো।

প্রিয় রুমে এসে আর ফ্রেশ হওয়ার ধার ধারল না। ওইভাবেই ঘুমিয়ে গেল সে। মিথিলা কী মনে করে এক গ্লাস গরম দুধ নিয়ে প্রিয়র রুমে আসে। প্রিয়কে ওই অবস্থায় দেখে খুব মায়া লাগল। সে একবার চাইল প্রিয়কে ঠিকঠাক করে শুইয়ে দিবে। কিন্তু খুব ভয় পেয়ে গেল। প্রিয় যদি টের পায়। তার গায়ে হাত দিয়েছে ভেবে যদি আবার রেগে যায়! তাই আর কিছু না বলেই দরজা টেনে দিয়ে এসে নিজের রুমে চলে গেল । কেন যেন তার মনে হলো টুম্পা মাকে সবকিছু জানানো দরকার । না হলে প্রিয়র যদি সত্যিই কোনো ক্ষতি হয়ে যায়?

চলবে…

(আজ ছোটো করেই দিলাম । ইন শা আল্লাহ , কাল আবার দিব।)

পর্ব- ২২
https://www.facebook.com/111576077291737/posts/359932109122798/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here