সুখের_সন্ধানে পর্ব_২৪

0
337

#সুখের_সন্ধানে
#পর্ব_২৪
আমি প্রতিনিয়ত ফোন করে সব খোঁজখবর নিচ্ছি বাসার। মিথিলার সাথে আর আম্মার সাথে কথা বলেই রাতে ঘুমাতে যাওয়া আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। মেহরাব আর আর প্রিয়র সাথে প্রতিদিন হয়ত কথা হয় না তবে ওদের খোঁজখবর নিয়ম করেই নেওয়া হয়। এখানে এসেছি এই দিন বিশেক হয়েছে। এর মধ্যে রাতে ঘুমাতে যাওয়া ছাড়া আমাদের বিশ্রামের সুযোগ নেই। প্রচুর ঘাপলা সব সেক্টরে। আমি আর সেলিম সবদিক সামলাতে সামলাতে হিমশিম খাবার মতো অবস্থা! সেলস ডিপার্টমেন্টের ম্যানেজার মাহাতাব সাহেবের মাঝে ঘাপলার অভাব নেই। উনার নামই প্রথমে আমরা সন্দেহের খাতায় লিখেছি। সেলিম অন্যান্য দিক নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আমি মাহাতাবকে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করলাম । তবে খানিকটা অবাক হলাম মাহাতাবের এত এত সমস্যা ধরা পড়ার পরেও সেলিম কেন যেন নির্লিপ্তভাব দেখাচ্ছে ওর ব্যাপারে। কোনো একশানে যেতে চাচ্ছে না। আমার কাছে ব্যাপারটা মোটেও ভালো লাগছে না। ওকেই প্রথমে আমার নজরদারীতে নিলাম। ওর পেছনে গোয়েন্দা লাগালাম ওর সব হালচিত্র জানার জন্য। মাত্র দুই দিনের মাঝেই ওর জন্ম থেকে এখন অবধি যত নাড়ি নক্ষত্র আছে সব পেয়ে গেলাম । মাহাতাবের দুইটা ছেলে আছে। সিলেট শহরেই নিজের বেশ বড় সড় আলিশান একটা সাত তলা বাড়ি আছে। বউ বাচ্চা সেখানে থাকলেও সে থাকে ফ্যাক্টরীর পাশে এপার্টমেন্ট ভাড়া করে। উনি ছুটির দিনে যায় পরিবারের কাছে। যতদূর জানলাম খুব ভালো কোনো পরিবার থেকে উঠে আসে নি। খুব অভাবী সংসারের ছেলে। অথচ অর্থ সম্পদের যে হিসেব নিকাশ পেলাম তাতে মনে হলো কোনো আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়েছে। নইলে এই বেতনে এত কিছু করা কখনই সম্ভব নাহ! অনেক বছর ধরে এই কোম্পানীতে আছে সে। বলা যায় শুরুর দিক থেকে এই কোম্পানীর সাথে আছে। তবে তখন কমিশনে কাজ করত। কিন্তু এখন পুরো সেলস ডিপার্টমেন্ট তার ইশারায় চলে। বিদ্যাবুদ্ধি অবশ্য ভালোই আছে। উনার বাসার এড্রেস যোগাড় করলাম । সেলিম অন্য ঝামেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আমি আর এসব কিছু জানালাম না। তাছাড়া এটা এখন মুখ্য সমস্যাও না। উনি পুকুর চুরি যে হরদম করছে এটা আমি নিশ্চিত । বছরের শেষের দিক না হলেও কোম্পানীতে এখন নতুন করে পুনঃঅডিটিং চলছে। ঢাকা থেকে টিম এসেছে। একদম নতুন টিম। তাই ঘাপলা হবার কোনো আশাঙ্কাই নেই। এর আগের অডিট টিম পয়সা খেয়ে উলটাপালটা রিপোর্ট করেছে হেড অফিসে। তাই এবার প্রিয় নিজে টিম পাঠিয়েছে। এই টিমে ওর বন্ধু সাজিদও আছে। তাই আমি নিশ্চিত অডিটিং নিয়ে। সাজিদ খুব ভালো ছেলে। ও আর প্রিয় একসাথে এইচ এস সি পর্যন্ত পড়েছে। একজন সিএ হিসেবে অল্প বয়সেই ছেলেটা বেশ সুনাম কুড়িয়েছে । খুব ব্রিলিয়্যান্ট স্টুডেন্ট ছিল ছাত্রজীবনে। সাজিদদের কোম্পানী থেকেই অডিট করছে। সেলিম সেইদিকটাই সামলাচ্ছে। আমিও বেশকিছু রিপোর্ট রেডি করে দিয়েছি যেগুলি আমার আয়ত্তে ছিল। আপাতত এই সাইডে কাজ না থাকায় আমি মাহাতাবের পেছনে মনোযোগ দিলাম । লোকটার চেহারার মাঝেই কেমন একটা বাটপার বাটপার ভাব। কথা বলার সময় সোয়াসেড় তেল দিয়ে ভিজিয়ে দেয় এমন ভাব। কিন্তু ভেতরে ভেতরে দুষ্টুবুদ্ধির অভাব নেই। সেলিমের কাছে কতবার এ নিয়ে নালিশ গেছে তাও এটাকে এখানে বহাল তবিয়তে রেখেছে। বুঝতে পারছি না আসলে রহস্য কী? তার উপর সিলেট শহরের উপর সম্প্রতি সাততলা বাড়ি করা , একটা আবাসিক হোটেলের কাজ চলছে সিলেট শহরেই। এসব চাট্টিখানি কথা না একেবারেই। আর খুচরা খুচরো সম্পদের তো অভাব নেই।

সব চিন্তার মাঝে নতুন চিন্তা যোগ হয়েছে আবার। ইদানিং মিথিলার সাথে যখন কথা হয় প্রিয়র কথা জিজ্ঞেস করলে কেমন যেন একটু এড়িয়ে যায়। মিথিলা মিথ্যে কথা বলতে পারে না এটা আমি ভালো করেই জানি। প্রিয় খুব গোছানো ধরনের মানুষ ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু ছেলেটা আমার কিছুদিন ধরে কেমন যেন অগোছালো হয়ে গিয়েছে এটা আমি নিজেও খেয়াল করছি। মিথিলা ভালো করে কিছু বলছেও না। তবে আমার সাথে কথা বলে যতটুকু বুঝলাম প্রিয় নাকি আজকাল খুব রাত করে বাসায় ফিরে। আমি প্রিয় কে জিজ্ঞেস করলে সে বলেছে অফিসের কাজের চাপে এত দেরি হয়। তার বাবার কাজের চাপ তার উপরে পড়েছে দেরি হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু মিথিলার সাথে কথা বলে কেন যেন মনে হয় কিছু একটা ঘাপলা তো আছেই। ও হয়তো আমাকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতে কথাটা বলছে না।

বারবার শুধু আমাকে এখানের কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি ঢাকায় ফেরার তাগাদা দিচ্ছে। আমিও মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম এই মাহাতাবের কেসটা কিছুটা সল্ভ করেই দু-এক দিনের জন্য হলেও আমি ঢাকাতে যাব। বাচ্চাদেরকে রেখে এতদিন দূরে থাকা হয় না বহুদিন ধরে। তাই ওদেরকে দেখার জন্য মনটা ছটফট করছে।
পরের দিন আমাদের এই অফিসের আরেকটা মেয়ে নাম জেসমিন ওকে নিয়ে আমি সিলেট শহরে অবস্থিত মাহাতাবের বাসাতে পৌঁছালাম। মাত্রই হয়তো কয়েক বছর হয়েছে বাড়ির কাজ শেষ হয়েছে একদম চকচকে দেখতে।
ভাগ্যটা দেখলাম বেশ সুপ্রসন্ন। দরজায় চকচক করে একটা টু লেট এর সাইনবোর্ড ঝুলছে। দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করতেই বলল, সাততলার একটা ফ্লোর ভাড়া হবে। আমি ভাড়া নেওয়ার জন্য কথা বলতে চাইলাম মালিকের সাথে। আমি বারবার উপরে সরাসরি মালিকের সাথে কথা বলার জন্য যেতে চাইলেও দারোয়ান রাজি হলো না।
পরে কি আর করা ওই নাম্বারে আমি ফোন দিলাম। এক মহিলা ফোন ধরল ।বেশ সুমিষ্ট কণ্ঠস্বর।
আমি বাসা ভাড়া নেয়ার সব শর্তে রাজি হয়ে গেলাম। এবং আজকেই বাসা ভাড়া অ্যাডভান্স করে যাব এটা বলে উনার সাথে দেখা করার চাইলাম। উনিও রাজি হয়ে গেলেন। দারোয়ানকে ফোনে হয়তো বলে দিয়েছে তাই এবার আর আটকালো না। আমরা সরাসরি তিন তলাতে মালিকের বাসায় চলে এলাম। ড্রইং রুমে বসে আছি মিনিট পাঁচেক হলো । উনি এখনো আসেননি তবে ওনার মেইড এসে আমাদের জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থা করল। তিনতলা চারতলা মিলিয়ে ডুপ্লেক্স করা। ভেতরে বেশ দামি দামি আসবাবপত্রে সাজানো। বাসাটা খুব সুন্দর।

আমি ধ্যানমগ্ন হয়ে চারপাশটায় দেখছি হঠাৎ আমার সামনে এসে সালাম দিয়ে যে মহিলা দাঁড়াল তাকে দেখে আমি যেন ভুত দেখার মত চমকে উঠলাম। একটুও বদলায়নি সেই আগের মতই আছে। নিজের চোখকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার অতীতে এভাবে আমার সামনে এসে কখনো ধরা দিবে এটা আমি কল্পনাতেও ভাবিনি। আমি তড়িঘড়ি করে উঠে দাঁড়ালাম। আমার সাথে থাকা জেসমিন মেয়েটাও আমাকে দাঁড়াতে দেখে উঠে দাঁড়াল।

– আপনি? কী সৌভাগ্য আমার! দাঁড়িয়ে কেন বসুন না।

– আমারও তো একই প্রশ্ন তুমি? তুমি এখানে কি করে?

– না মানে এটাতো আমারই বাড়ি। আপনিই কি আমাকে বাসা ভাড়ার বিষয়ে ফোন দিয়েছিলেন?

– জি। আমিই। আমাকে চিনে যখন ফেলেছ তখন আর অভিনয় করার দরকার নেই সরাসরিই বলি। এসেছিলাম এক কেইস সলভ করতে এখন দেখছি সমস্যা জটিল। মাহাতাব তবে তোমার স্বামী?
– জি!
– ফাইন। এখানে একের ভেতরে দুই দেখছি। আসলে এসেছিলাম মাহতাবের বিষয়ে ইনভেস্টিগেশান করতে। বলতে পারো আমি কেন এ কাজ করছি? কারণ আমি চাইনি কোনো নিরপরাধ শাস্তি পাক। মাহাতাবকে নিয়ে আমাদের টিম যে ইনভেস্টিগেশান করেছে সেখানে আমার কাছে কিছুটা ঘাপলা মনে হওয়ায় নিজেই একটু তদন্তে নেমে পড়েছি। যদিও ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেই তোমার হাজবেন্ডের জেল জরিমানা নিশ্চিত। এত বড় চোরকে এমন শাস্তি দিয়ে একটা নজির সৃষ্টি করতে চাই যাতে আর কেউ এমন কাজ না করে!
– কী এমন করেছেন, উনি?
– আচ্ছা, সেসব বলছি। আগে বলো মাহাতাব যে তোমার স্বামী এ কথা কি সেলিম জানে?
– না মানে!
– একদম সত্য বলবে! কারণ এই মুহূর্তে তোমার স্বামীর বাঁচা মরা আমার হাতে। সেলিম প্রচণ্ড ক্ষেপেছে ওর উপর। এমন সব ধারা লাগানোর পায়তারা চলছে যে আট দশ বছরের জেল নিশ্চিত । আর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হবে এটাই জেনে রাখো।
আমি ইচ্ছে করেই হেলেনকে ভয় দেখাবার জন্য বানিয়ে বানিয়ে বেশি কথা বললাম। আসলে ঘটছে উলটো। সেলিম এই মাহতাব নামের কীটের এত এত দোষ দেখার পরেও মুখ বুজে বসে আছে। কোনো একশানে যাচ্ছে না। এখন আমি বোধ হয় ক্লিয়ার হচ্ছি সবকিছু। হেলেনের মুখ থেকেই জানতে চাই বাকী কাহিনী।

– না, উনি এটা করতে পারেন না। উনি কথা দিয়েছিলেন! কিছুটা ঘাবড়ে যেয়ে বলল, হেলেন।

এর মাঝে ওর বাচ্চা দুইটিও স্কুল থেকে ফিরেছে। হেলেন তার বাচ্চাদের দেখে কিছুটা সতর্ক হলো। হাসি হাসি মুখে আমার সাথে বাচ্চাদেরকে পরিচয় করিয়ে দিলো। বড় ছেলে আসিফ ক্লাস টুতে পড়ে আর ছোট ছেলে নাসিফ কেজিতে। আমি বড় ছেলে টার দিক থেকে নিজের চোখ সরাতে পারছি না। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতেও কষ্ট হচ্ছে। অবিশ্বাসের ছুরি আমার কলিজা কে কেটে কুচি কুচি করে ফেলল যেন। মুহুর্তেই নিজেকে সামলে নিলাম। এই অবিশ্বাস আর এই কষ্ট এত আমার জন্য নতুন না । তাহলে এতো কষ্ট পাচ্ছি কেন আমি? নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে আমি বারবার আসিফের চেহারার দিকে তাকাচ্ছি! আসিফের চেহারার মাঝে স্পষ্ট সেলিমের চেহারার ছাপ! যারা সেলিমকে চেনেন তারা আসিফকে একটু নিখুঁতভাবে দেখলেই বুঝতে পারবে ব্যাপারটা।
আসিফের দিকে এমন করে তাকিয়ে থাকাটা হেলেনের দৃষ্টি এড়ালো না। সে তড়িঘড়ি করে বাচ্চাদুটিকে মেইডকে দিয়ে উপরে পাঠিয়ে দিলো।

-হ্যাঁ আমরা জেনো কোথায় ছিলাম? ও তোমার স্বামীর ব্যাপারে কথা বলছিলাম! আমি তোমাকে সংক্ষেপে ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিয়েছি! মাহাতাব কে হয়তো আজকের মধ্যেই অ্যারেস্ট করা হবে। ওর নামে প্রচুর কমপ্লেইন আছে। কিছু কিছু কমপ্লেইন তো এমন আছে যে মানুষ খুন করার অপরাধে’ সমান। আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছে যে একটা মানুষ আসলেই কি এত খারাপ হতে পারে। এ জন্যই মূলত আমি আরেকটু ভালোভাবে জানার জন্য এখানে এসেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে যেভাবে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে যাবে সেটা আমি কল্পনাতেও ভাবি নি।
যাইহোক আমার যা বোঝার বোঝা হয়ে গেছে আমি আর কোন কিছু ইনভেস্টিগেশন করে সময় নষ্ট করতে চাই না।

কথাগুলো বলেই আমি আমার সাথের মেয়েটা জেসমিনকে বললাম ,চলো আমাদের উঠতে হবে! আমার তদন্ত করা শেষ! জাহান্নামের কীটদের জাহান্নামে স্থান দেওয়া উচিত! শুধুশুধু সময় নষ্ট করার মানে নেই।

আমি উঠে যাব তখন হেলেন এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে বাধা দিল।

– প্লিজ ম্যাডাম !সবকিছু না জেনে এভাবে আপনি চলে যাবেন না। মাহাতাব এমন কোনো অপরাধ করেনি যে তার জন্য তাকে এত বড় শাস্তি দিতে যাচ্ছেন আপনারা। ওর ছোট ছোট দুইটা বাচ্চা আছে । ওদের দিকে তাকিয়ে দয়া করুন। আর সেলিম সাহেব এটা করতে পারেন না।
– কেন পারেন না? তোমার স্বামীকে বিশ্বাস করে এত বড় একটা দায়িত্বে বসিয়েছে। তোমার স্বামী কোম্পানির ফর্মুলা চুরি করে আমাদের রাইভ্যাল গ্রুপের কাছে বিক্রি করছে। এ বছর কোটি কোটি টাকা লস করছে। অথচ নিজে জিরো থেকে হিরো হয়েছে । সিলেট শহরের সম্পদের পাহাড় করেছে। আমি তার গ্রামের খোঁজ নিয়েছি সেখানেও সে প্রচুর সম্পদ করেছে।

– আপনাকে যে তথ্য দিয়েছে সে ভুল তথ্য দিয়েছে। মাহাতাবের গ্রামে কিছুই নেই। সে যদি কিছু করে থাকে সিলেট শহরে এই বাড়িটা আরো একটা হোটেলে কাজ চলছে এ ছাড়া আমাদের আর কানাকড়িও নেই।

– ওকে ফাইন ! তোমার কথাই ধরে নিলাম। ধরে নিলাম এই দুটো সম্পত্তি ছাড়া তোমাদের আর কোনো সম্পত্তি নেই। কিন্তু সিলেট শহরের মতো জায়গায় এমন একটা পজিশনে এত বড় একটা বাড়ি করা চাট্টিখানি কথা না! কত টাকা বেতন পায় তোমার স্বামী?

– হেলেন নিশ্চুপ।

– এখনো সময় আছে । আমার কাছে যদি তুমি মুখ খোলো তাহলে হয়তো তোমার স্বামী এ যাত্রায় বেঁচে যেতেও পারে । হয়তো চাকরি হারাবে তবে জেলখানার ভাত না খেয়ে তোমার রান্না ভাত খাওয়ার সৌভাগ্য হতে পারে।

আমি আমার সাথে থাকা মেয়েটাকে বাইরে অপেক্ষা করতে বললাম। যে করেই হোক হেলেনের পেট থেকে কথা বের করতেই হবে।

আজ মিথিলার দুপুরের দিকে ক্লাস। ওর জন্য যে গাড়িটা রেখে যাওয়া হয়েছে সেই গাড়িটাতে হঠাৎ করে কি যেন সমস্যা হয়েছে তাই গ্যারেজে পাঠানো হয়েছে। মেহরাবের স্কুল কাছে হওয়ায় খুব বেশি অসুবিধা হয় না। মিথিলা নিজে রিকশায় করে গিয়ে ওকে স্কুলে দিয়ে এসেছে।

প্রিয় আজ অফিসে একটু দেরি করে বের হবে। গতকাল রাত তিনটার দিকে সে বাসায় ফিরেছে তাই সকালে দেরী করে ঘুম থেকে উঠেছে। মিথিলার দেরি হয়ে যাচ্ছে দেখে মিথিলা তড়িঘড়ি করে কিছু খেয়ে নিলো।
মিথিলা রেডি হয়ে ড্রইং রুমে এসে দেখে প্রিয় সে সময় অফিসের জন্য বের হচ্ছে। সে দ্রুত পায়ে এগিয়ে যেয়ে প্রিয় কে বলল,
– ভাইয়া আমাকে একটু নামিয়ে দেবে? তুমি তো ওইদিক দিয়েই যাচ্ছ?
– ও তোর গাড়ি তো আবার গ্যারেজে। আমি তো আজকে ওদিকে যাচ্ছি না। উল্টো দিকে যেতে হবে ,আচ্ছা ঠিক আছে তুই যখন বলেছিস আমি তোকে নামিয়ে দিচ্ছি আম্মুকে কথা দিয়েছি বলে কথা। চল, চ,ল, চল ! আমার আবার দেরি হয়ে যাচ্ছে। এমনিতেই আজ দেরি করে ফেলেছি।

প্রিয় ড্রাইভ করছে । মিথিলা তার পাশের সিটে বসা। প্রিয় মাঝে মাঝে দু একটা কথা বললেও মিথিলা আড়চোখে লুকিং গ্লাসে প্রিয়র দিকে আনমনে
তাকিয়েই আছে।

চলবে….

পর্ব- ২৩
https://www.facebook.com/111576077291737/posts/361384182310924/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here