❤অবশেষে ভালোবাসি(সিজন ২)❤part:4

❤অবশেষে ভালোবাসি(সিজন ২)❤part:4
#writer:রোদেলা


ছাঁদে দাড়িয়ে আছে ফাহিম।।।দৃষ্টি আকাশের দিকে,,,বেচারার মনটা বেশ খারাপ।।কিন্তু কেনো খারাপ তা সে নিজেও বুঝতে পারছে না,,,,হঠাৎ চুরির টুনটান শব্দে পেছন ফিরে তাকালো,,,রিয়া দাড়িয়ে আছে।গায়ে তার কচুপাতা রঙের শাড়ি, ,,হাতে সবুজ চুরি,,,খোলা চুলগুলো বাতাসের সাথে পাল্লা দিয়ে উড়ছে,,,বাচ্চা মেয়েটাকে কেমন যেন বড় বড় লাগছে।।।কিন্তু হঠাৎ বড় লাগার কারণটা ধরতে পারছে না ফাহিম,,তাই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে।এদিকে যে রিয়া অস্বস্তি ফিল করছে সেদিকে খেয়াল নেই তার…….

রিয়াঃ ভাইয়া,,,মানে স্যার…..(ভয় আর অস্বস্তি ভরা কন্ঠে)ধেৎ ভাইয়া ডাকবো নাকি স্যার??আমার সবকিছুতেই কনফিউশান তবে আমার তো এর একটাও ডাকতে ইচ্ছা করছে না,,,,,আমি তো ফাহিমমমম বলে ডাকতে চাই,,,,(মনে মনে)

ফাহিমঃ এই পিচ্চি??কই হারিয়ে গেছো,???

রিয়াঃ না মানে,,,আসলে…..

ফাহিমঃ কি চায়??কিছু বলবা???(ভ্রু কুঁচকে)

রিয়াঃ জি,,আপনার ক,,,কফি।

ফাহিমঃ তোতলাচ্ছো কেন? আচ্ছা হঠাৎ শাড়ি কেন?ডাইনিং এ তো সালোয়ার দেখেছিলাম,,,

রিয়াঃ না মানে এমনি,,,ই,,ইচ্ছা হ,,লো তাই,,(পড়েছি তো আপনার জন্য,,মাথা নিচু করে বিরবির করে)

ফাহিমঃ ওরে বাবা,,,পিচ্চিদেরও আবার শাড়ি পড়ার শখ জাগে নাকি???বাট পিচ্চিদের এসব মানায় না।।পিচ্চি মানুষ তো ঠিক সামলাতে পারবে না,, উল্টে পড়ে আরো অকারেন্স ঘটাবে,,,যাও চেঞ্জ করে চকলেট খাও গিয়ে,,(বাঁকা হাসি দিয়ে)

এবার রিয়ার ব্যাপক রাগ লাগছে।।।ফাহিম কি মনে করে রিয়াকে??সে কি ফিডার খাওয়া পিচ্চি নাকি??যে সারাদিন পিচ্চি পিচ্চি করে।।এখন ওর বিয়ের বয়স হয়ে গেছে,,,এই সেপ্টেম্বরেই ১৮ তে পা দিয়েছে সে ।।।।
রিয়াঃ দ,,দেখুন আ,,আমি মোটেও পি,,পিচ্চি নই।।আমাকে পিচ্চি বলবেন না।।আ,,,আমি যথেষ্ট এডাল্ট,,,আম এইট্টিন নাও।।(মুখ গোমরা করে)

রিয়ার কথা শুনে ফাহিম হো হো করে হেসে উঠলো,,,,রিয়া এবার ভ্রু কুচঁকে তাকালো,,,কি হলো?এতো হাসির কি আছে??সে কি হাসির মতো কিছু বলেছে নাকি …..

ফাহিমঃ ওহ,,,গড,, তুমি এডাল্ট??লাইক সিরিয়াসলি??আরে এইট্টিন কোনো বয়স হলো??নক টিপলে দুধ বের হবে এখনো,,আবার এডাল্ট!!!তুমি আমার থেকে ১০ বছরের ছোট,,,,হা হা সাচ আ লিটেল বেবি,,,

রিয়া মুখ গোমরা করে দাঁড়িয়ে আছে।।ফাহিমের এই হুহা হাসি তার মোটেও ভালো লাগছে না।।যেখানে সে ফাহিমের প্রেমিকা হতে চায় সেখানে ফাহিম ওকে বারবার বাচ্চা প্রমান করতে ব্যস্ত,,রিয়ার ইচ্ছে হচ্ছে ফাহিমের মাথায় এক বালতি পানি ঢেলে দিতে অহস্যকর।।এসব ভাবতে ভাবতেই নাক মুখ ফুলিয়ে নিচে নেমে গেলো সে।এই বলদটার সামনে দাঁড়িয়ে থাকার কোনো মানেই হয় না।।ফাহিম পিচ্চি পিচ্চি বলে কয়েকবার ডেকেছে তাকে কিন্তু দাড়াঁয়নি রিয়া,,কেনো দাড়াবে?? সে কি পিচ্চি নাকি??মোটেও পিচ্চি নয় সে,,হুহ……

ফাহিমঃ যাহ বাবা,,চলে গেলো??আন্টিদের তো আন্টি বলা যায়ই না এখন দেখছি পিচ্চিদেরও পিচ্চি বলা যাবে না,,,,,মেয়েদের বুঝা সত্যি দুষ্কর(মুচকি হেসে)বাহ,,এই পিচ্চি টাকে তো একটা থেংক্স দেওয়া উচিত,,,মন খারাপ ভাবটা একদম ভ্যানিশ করে দিয়ে গেলো,,,সাচ আ ম্যাজিক…



দরজায় দাড়িঁয়ে উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছে অদিতি,,,আয়ানের রুমের দিকে নজর তার,,,,বেটা পাজি রুমে এতো কি করে সেটাই বুঝতে পারছে না অদিতি।।আরে খাটাস রুম থেকে বের হ না,,, কি আছে এতো রুমে যে রুমের সাথে চিপকে আছিস,,,অসহ্য,,,,

অদিতিঃ এই এই রিয়া,,,,

রিয়াঃ হুমম,,,কিছু বলবা???আর দরজায় দাড়িয়ে আছো কেনো??(অবাক হয়ে)

অদিতিঃনাহ,,,এমনি,,,আসলে খাওয়া বেশি হয়ে গেছে তো তাই হাটঁছিলাম,,,,হে হে(হাসার চেস্টা করে)এনিওয়ে একটা কাজ করতে পারবা??

রিয়াঃ কি কাজ আপু??(জিজ্ঞাসো দৃষ্টিতে তাকিয়ে)

অদিতিঃ আব,,,তোমার আয়ান ভাইয়াকে গিয়ে বলবা যে ফাহিম ভাইয়া উনার জন্য ছাদে ওয়েট করছে,,,,ওকে??

রিয়াঃ কিন্তু আমি তো ছাদ থেকেই আসলাম,,উনি তো কিছু বললেন না,,,

অদিতিঃ উনি টা কে??(ভ্রু কুচঁকে)

রিয়াঃ ফাহিম ভাইয়া,,না মানে স্যার(মাথা নিচু করে)

অদিতিঃ ওওওওওওও,,,,,তোমাকে হয়তো বলতে ভুলে গেছে,,,,বাট আমাকে বলেছে,,,তুমি যাও না একটু প্লিজজজজ,,,,

রিয়াঃ কিন্তু,,,,(কি জানো ভেবে)আচ্ছা ঠিক আছে।।(মুচকি হেসে)

অদিতিঃ থেংকু থেংকু সো মাচ বেবি,,,,,(জড়িয়ে দরে এক্সাইটেড হয়ে)

রিয়াঃ ওয়েলকাম,,,বাট ডোন্ট কল মি বেবি….আম নট আ চাইল্ড,,,,,(মুখ গোমড়া করে যেতে যেতে).

অদিতিঃ যাহ বাবা এর আবার কি হলো??ফরগেট ইট,,,,কাজটাতো হয়ে গেলো,,,,,ইয়াহু….

অদিতির এই মুহূর্তে নাচতে ইচ্ছে করছে।।এবার কোথায় যাবে এই সো কোল্ড আয়ান চৌধুরী…..

রাত ১২ঃ৩০…..

বিছানায় শোয়ে ফোন গুতাচ্ছে অদিতি। কিন্তু ঘুম বাবাজি তার চোখে ধরা দিলে তো।এদিকে পিপাসাও পেয়েছে খুব কিন্তু রুমে পানি নেই এক ফোঁটা।।কিন্তু পানি তো খেতে হবে তাই হাজারো বিরক্তি নিয়ে ডায়নিং এর দিকে পা বাড়ালো অদিতি….এদিকে আয়ানও পানি নিতে এসেছে।।আয়ানকে দেখেই অদিতির মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছে তবু সেদিকে না তাকিয়ে আয়ানকে দেখেও না দেখার ভান করে সোজা কিচেনে চলে গেলো অদিতি,,,,,

আয়ানঃ বাহ,,,মিস ঝগরুটে তো শান্ত হয়ে গেছে।।।একটা কিসেই এতো ইম্প্রোব?ইম্প্রেসিব,,,,আমি তো আরো ভাবছিলাম সরি বলবো,,কিন্তু নাহ,,সরি বললে আরো মাথায় উঠে নাচবে।। তার থেকে এমনি ঠিক আছে(মনে মনে)

অদিতিঃ এই রাক্ষসেরও আবার পানির দরকার পড়ে নাকি??মানুষের রক্ত চুসেও পিপাসা মিটে না আবার পানিও খেতে হয় স্ট্রঞ্জ(মনে মনে)

অদিতি আয়ানকে পাশ কাটিয়ে সিঁড়ির কাছে যেতে নিলেই আয়ান একটু জোড়েই বলে ওঠলো..

কেউ হয়তো শুধরে গেছে,,গুড ইম্প্রোব,,দারুন শিক্ষা হয়েছে মনে হয়,,,,আম প্রাউড অফ মি,,,হোয়াট আ গুড টিচার আই এম!!!

কথাটা শুনেই অদিতির মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো তবু নিজেকে সামলে নিয়ে রুমের দিকে পা বাড়ালো সে…শুধু শুধু ওর সাথে লাগতে যাওয়ার কোনো মানেই হয় না।।অদিতি কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী কাল সকাল পর্যন্ত ওয়েট করুন মিষ্টার আয়ান চৌধুরী ব্যাঙের মতো যদি না নাচিয়েছি তো আমার নামও অদিতি না।।

স্ট্রেঞ্জ,,কিছু বললো না কেন?রেগে আছে নাকি?আচ্ছা বেশি করে ফেলি নি তো?ওভাবে কিস করাটা উচিত হয় নি।।বাঙালি মেয়ে তাই হয়তো ফুলে পাম হয়ে আছে।আমার কি সরি বলা উচিত?নো নেভার…আয়ান চৌধুরী কাউকে সরি বলে না।তাছাড়া এটা ওর প্রাপ্য ছিলো।।সো সরি মিশন ক্যান্সেল।।কথাগুলো বিরবির করেই ঘরের দিকে পা বাড়ালো আয়ান….

ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে আছে অদিতি,,,কিন্তু তার দৃষ্টি প্লেটের থেকে সিড়িঁর দিকেই বেশি।।কারন আয়ান এখনো নিচে নামে নি,,,অদিতি আয়ানের রিয়েকশন দেখার জন্য এক্সাইডেট হয়ে বসে আছে,,বাট ব্যাটার কোনো খবর নেই,,,

অদিতি,,,তোর ঘাড় তেরা হয়ে যাবে।।।তারচেয়ে বরং আমাকে বল কাকে খুঁজছিস,,, আমি খোঁজ নিয়ে দিচ্ছি(বলেই কিটকিটিয়ে হেসে দিলো)

কই আপু??কা,,কাউকে খুঁজছি না তো,,,,এমনি গাড় ব্যাথা করছে তাই নাড়াচাড়া করছিলাম আরকি,,,(জোড় করে একটা হাসি দিয়ে)

হাহা বুঝি বুঝি,,,,ঘাড় ব্যাথা,নাকি মন ব্যাথা,সবই বুঝি,,(মুচকি হেসে আবার ফারিনকে খাওয়াতে খাওয়াত)

অদিতি আচ্ছা রাতে যে ইচি…..

কথাটা শেষ করতে পারলো না সাদিয়া তার আগেই ফারিনের কথায় থেমে যেতে হলো তাকে ..

নতুন আংতেল তুমি ডান্চ করচো কেন???আত কি তোমাল বাতডে???(কৌতূহল ভরা চোখে)

ফারিনের কথায় সবাই সিঁড়ির দিকে ফিরে তাকালো,,,,তাকিয়েই সবার চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম,,,,আয়ান রীতিমতো লাফালাফি করছে।।এটা ফারিনের কাছে ডান্স বলে মনে হলেও,,,বাকিদের কাছে মোটেও ডান্স বলে মনে হচ্ছে না,,,,

ভাইয়া আপনি এভাবে লাফাচ্ছেন কেনো??আর আপনি এভাবে,,,,(অবাক হয়ে)

ওওহহ হো,,দি গ্রেট মিষ্টার আয়ান চৌধুরী,,, এখন শার্টলেস হয়ে ঘুরে ঘুরে মানুষকে বডি দেখাচ্ছে,,,আহারে কি খারাপ সময় চলছে,,,কেউ তাকায় না বুঝি,,,বেচারা!!!ওদেরই বা দোষ কি এমন সাদা বাদর কে কেই বা দেখতে
চায়??

অদিতির কথায় আয়ানের আর বুঝতে বাকি রইলো না যে, এটা কার কান্ড,,,,,এই মুহূর্তে অদিতিকে মাথায় তুলে আছাড় দিতে ইচ্ছা করছে তার।।তবু নিজেকে সামলে নিলো সে….সবার সামনে রিয়েক্ট করতে চায় না সে।এই মেয়েকে তো সে পরে দেখে নিবে…

আয়ান কাউকে বডি দেখানোর জন্য ঘুরে বেড়ায় না,,,বাট কোনো লুচু মেয়ে যদি আমার বডি দেখার বাহানা হিসেবে তাওয়ালে ইচিং পাওডার মেশায়,,,দেন আই হেভ নাথিং টু ছে….(দাঁতে দাঁত চেপে)

অদিতিও এবার রাগে ফুঁসছে,..এই কানা ঢেড়শ ওকে ইনডায়রেক্টলি অপমান করছে। ওর এতোটাও খারাপ সময় আসে নি যে এই ফাজিলটার বডি দেখতে হবে তাও বাহানা করে….

ইচিং পাউডার??? (অবাক হয়ে অদিতির দিকে তাকিয়ে)তারমানে,,,,(এটুকু বলেই কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো)

নাদিয়াও বেশ বুঝতে পারছে,,,রিয়া আর ফাহিম আচঁ করতে পারলেও,,,ফারহান আর রিয়াদ বুঝে উঠতে পারছে না যে ব্যাপারটা এক্চুয়েলি কে ঘটাতে পারে,,,

আয়ান তুই বরং শাওয়ার নিয়ে নে,,,চুলকানো কমবে,,(হাসি চেপে)

নাদিয়ার কথায় সায় দিয়ে সাদিয়াও বলে উঠলো,,

হ্যা ভাইয়া,,,আপনি শাওয়ার নিয়ে নেন,,,আমি রিদকে দিয়ে মেডিসিন আনিয়ে নিচ্ছি লাগালেই ঠিক হয়ে যাবে।।তাই না অদিতি??(শয়তানী হাসি দিয়ে)

(থতমত খেয়ে)হ্যা হ্যা,,,হ,,,হয়তো,,,আই হেভ নো এক্সপেরিয়েন্স।।।আমি তো ইচিং পাওডার কখনো দেখিই নাই,,,ঠিক বলতে পারছি না…

ওহ,,রিয়েলি,,,???ওকে,,,আমি না হয় দেখিয়ে দেব,,,,(এগিয়ে গিয়ে)আই ওন্ড স্পেয়ার ইউ,,,,জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ,,,(দাঁতে দাঁত চেপে ফিসফিসয়ে)।

হুহ,,,,ইয়াহ আই উইল(মুখ ভেঙিয়ে)
।।।।
#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here